বঙ্গবন্ধু
৫০ বছরে আমরা অনেক কিছুই অর্জন করেছি: শাবিপ্রবি উপাচার্য
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আজকে বিজয়ের ৫০ বছর পূর্ণ হলো। এই দিনটি বাঙালি জাতির জন্য অনন্য গৌরব উজ্জ্বল একটি দিন। এই পঞ্চাশ বছরে আমরা অর্জন করেছি অনেক কিছুই। আমাদের আর পিছু ফিরে তাকানোর সময় নেই। এখন সময় শুধু এগিয়ে যাওয়ার।’বৃহস্পতিবার বিজয় দিবসে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি শেষে এসব কথা বলেন উপাচার্য।বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে বিশ্বিবিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেছেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় প্রশাসনিক ভবন-১ এর সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য। পতাকা উত্তোলন শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং সকাল সাড়ে ৮টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি।উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, ডিন’স ফোরাম, বিভিন্ন হল প্রশাসন, কর্মকর্তা সমিতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়।
আরও পড়ুন: দেশভাগের পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়: শাবিপ্রবি উপাচার্যদিনটি উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশ গ্রহণে চিত্রাষ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন উপাচার্য। তারপর সকাল সাড়ে ১১টায় হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া বিকাল ৩টায় মুক্তমঞ্চে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শেষ হয়।কর্মসূচিতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, দপ্তর প্রধানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা: শাবিপ্রবি উপাচার্য
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শাবিপ্রবি প্রশাসনের পদক্ষেপ
ফিল্ম আর্কাইভে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন
বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে ১৫দিন ব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ স্থিরচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩৫ টি দুর্লভ স্থিরচিত্রের প্রদর্শনী হবে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা সবার জন্য স্থিরচিত্রের প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।
বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর।
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ও জাতির পিতার উপর নির্মিত চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের প্রজেকশন হলে বিকাল ৩টা থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী চলবে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যূদয়, ৭১ এর বধ্যভূমি প্রামাণ্যচিত্র ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মেঘমল্লার সিনেমার প্রদর্শনী হবে। এই চলচ্চিত্র প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত।
আরও পড়ুন: উদ্ভাবন প্রদর্শনীতে বিসিক ওয়ানস্টপ সার্ভিসের প্রথম স্থান অর্জন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পরিচালক ড. মোফাকখারুল ইকবাল, চলচ্চিত্র পরিচালক ও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মতিন রহমান, চলচ্চিত্র পরিচালক, শিক্ষক ও বিসিটিআই’র সাবেক কোর্স পরিচালক জনাব মশিহ উদ্দিন শাকের, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব জনাব সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: পূর্বাচলে অত্যাধুনিক প্রদর্শনী কেন্দ্র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীতে রোকেয়া সুলতানার শিল্পকর্ম প্রদর্শনী উদ্বোধন
বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভারতের রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন
ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বুধবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাদুঘরে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। পরে শেখ রেহানা তাকে এক সেট বই উপহার দেন।
এর আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন এবং সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি
ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ।
ভারতের রাষ্ট্রপতি, স্ত্রী, কন্যা এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ভারতীয় এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট বেলা ১১টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক অবতরণ করে। এসময় বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হামিদ ও তার স্ত্রী রাশিদা খানম তাদের স্বাগত জানান।
বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস উদযাপন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর সমাপনী অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে এই সফর করেছেন।
আরও পড়ুন: বেকারত্ব ঘোচাতে দক্ষতার ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে: রাষ্ট্রপতি
ঢাকায় আসার পর রাষ্ট্রপতি কোবিন্দকে বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এছাড়া তিনি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
একই দিন দুপুরে তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
বুধবার রাম নাথ কোবিন্দ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক করবেন। এরপর রাষ্ট্রপতি আবদুল আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন তিনি।
একই দিন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কটের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
শুক্রবার সফরের তৃতীয় দিন, ভারতের রাষ্ট্রপতি রমনা ‘কালী মন্দির’ এর সদ্য সংস্কার করা অংশের উদ্বোধন ও পরিদর্শন করবেন। তিনি মন্দিরের সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
শুক্রবার দুপুরে দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে যোগ দিতে ২৬ থেকে ২৭ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন।
দেশভাগের পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়: শাবিপ্রবি উপাচার্য
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। পরবর্তীতে ৭০'র নির্বাচনে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সকল আন্দোলনের সূতিকাগার। আর একাত্তরে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই অপারেশন সার্চ লাইটের নামে মাটিতে মিশিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।’
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, ‘দীর্ঘ নয়মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানিদের শেষ ষড়যন্ত্র ছিল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা। জাতিকে মেধাশূন্য করতে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পথ বেছে নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ৯৫১ জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের জীবনদানকে নতুন প্রজন্মের উচিৎ কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করা।’ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগকে দেশপ্রেমে উৎসাহিত করে ভবিষ্যত বাংলাদেশকে স্বনির্ভরভাবে নেতৃত্ব দানে তরুণ প্রজন্মের সর্বদা কাজ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
আরও পড়ুন: ‘টোটাল সাস্ট’ প্রকল্পে শাবিপ্রবি হবে পেপারলেস ডিজিটাল ক্যাম্পাস: উপাচার্য
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহম্মদ মহিবুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. জহির বিন আলম, অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর প্রমুখ।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে কালো ব্যাজ ধারণের মাধ্যমে দিবসটি পালন শুরু হয়। এরপর সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এছাড়া সন্ধ্যায় বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু চত্বর ও চেতনা-৭১ এ মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানিদের কাজ ছিল এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করা: শাবিপ্রবি উপাচার্য
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব ব্যক্তির নয়, রাষ্ট্রের: হাইকোর্ট
মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ছবির স্বত্ব (কপিরাইট) কোন ব্যক্তি দাবি করতে পারবেন না, এর স্বত্ব একমাত্র রাষ্ট্রের বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, কেউ কোনো প্রকাশনায় বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ছবি ব্যবহার করতে চাইলে সূত্র উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগে যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, জাতির পিতাকে নিয়ে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ বইয়ের মেধাস্বত্ব যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের জার্নি মাল্টিমিডিয়ার হলেও বইয়ে ব্যবহৃত চিত্রকর্ম ও ছবির স্বত্ব প্রকাশনী বা তার নয়। যদি বই দুটির প্রকাশিত সংস্করণে চিত্রকর্ম বা ছবির সূত্র উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা না থাকে, তাহলে সূত্র উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে একটি পৃষ্ঠা যুক্ত করতে হবে। আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনিক আর হক। আর সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
আরও পড়ুন: নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বঙ্গবন্ধুর ছবি অন্তর্ভুক্তিতে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
রিটকারীর আইনজীবী অনিক আর হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবির ওপর কোনো ব্যক্তি বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কারো কোনো স্বত্ব থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব থাকবে জনগণের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে। কেউ নিজের বলে দাবি করতে পারবে না। যারা বইগুলো এরইমধ্যে পাবলিশ করেছেন, সেগুলো তারা আবার সংগ্রহ করে প্রত্যেকটিতে লিখে দেবেন যে, বইগুলোতে ব্যবহার করা ছবির স্বত্ব প্রকাশকের নয়।
রায়ের পর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, আজ ঐতিহাসিক যে বিষয়টি হয়েছে, তা হলো বঙ্গবন্ধুর পিকটোরিয়াল এবং ইমেজেস নিয়ে আদেশ। এবং স্বাধীনতার যুদ্ধকালীন ছবি ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ছবি দিয়ে যতগুলো বই প্রকাশ হবে, সেসব ছবির কপিরাইট রাষ্ট্রের থাকবে। এটা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দাবি করতে পারবে না। এ ছবিগুলো দিয়ে যখন বই বের হবে, তখন বইয়ের কপিরাইট ব্যক্তির থাকবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের কপিরাইট নিয়ে মামলা হয়েছিল। আদালত বলে দিয়েছেন, যেহেতু মুজিববর্ষ উপলক্ষে বইগুলো ছাপানো হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে যেন বইয়ের কার্যক্রম মন্ত্রণালয় শেষ করে। এরপর যে বইগুলো প্রকাশ হবে, সেগুলোর মধ্যে যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ থাকে, যেখান থেকে ছবিগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা যায়, ৬৫ হাজার ৭০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারে’ দেয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ৩৯টি বই কেনার অনুমতি দেয়া হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেজন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৭ কোটি টাকায় আটটি বই কেনা হয়। যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের জার্নি মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ ও বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ নামে দুটি বই ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকায় এবং তার স্ত্রী শারমীনের স্বাধীকা পাবলিশার্স থেকে ‘অমর শেখ রাসেল’ নামে একটি বই তিন কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ টাকায় কেনা হয়। সে সময় অভিযোগ ওঠে, ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটি প্রকাশে লেখকের অনুমতি নেয়া হয়নি। আর বাকি দুটি বইয়ে স্বত্ব ব্যবহারের যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করা হয়নি। এর মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটি প্রথম প্রকাশ করেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ‘৩০৫৩ দিন’ প্রকাশ করেছিল কারা অধিদপ্তর।
‘অমর শেখ রাসেল’ বইটি স্বাধীকা পাবলিশার্স প্রথম প্রকাশ করলেও এর সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমেদকে না জানিয়েই তা প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধু কর্নারে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গত বছর ৩১ অগাস্ট স্বাধীন অথবা বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত বছর ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত দুটি বইয়ের মেধাস্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটিতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হককে রাখা হয়। ওই আদেশের পাশাপাশি বই দুটির মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণ করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল দেয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে অ্যালবাম তৈরির কাজ করছি: পাকিস্তানি হাইকমিশনার
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ এবং সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের স্ত্রী শারমীন সুলতানাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এর মধ্যে গত বছর ২০ অক্টোবর তদন্ত কমিটি আদালতে প্রতিবেদন দেয়। সেখানে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বই। বই দুটির প্রথম প্রকাশক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জেল। পরে প্রকাশক পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই এ দুটো বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জেল এর থাকাই বাঞ্ছনীয় বলে কমিটি মনে করে। ওই প্রতিবেদনেই বলা হয়, ‘৩০৫৩ দিন ’ বইয়ের স্বত্ব পেতে গত বছর ২৯ জানুয়ারি কারা অধিদপ্তর কপিরাইট অফিসে আবেদন করে। তখন পর্যন্ত আবেদনটি বিচারাধীন ছিল।
এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটির স্বত্ব পেতেও কপিরাইট অফিসে আবেদন করেন বইটির সম্পাদক অমিতাভ দেউরী। তার আবেদনটি গত বছর ৭ অক্টোবর খারিজ করে দেয় কপিরাইট অফিস।
নাজমুল হোসেনের আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক, ‘কপিরাইট অফিস কারা অধিদপ্তর ও অমিতাভ দেউরীর আবেদন দুটি খারিজ করেছিলেন। হাইকোর্ট রায়ে কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছেন। ফলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই দুটি শিশুদের কাছে পাঠাতে কোনো জটিলতা থাকছে না। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশিত বই দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।
আরও পড়ুন: পীরগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর মামলার আসামিদের আ’লীগে যোগদান
বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যে তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন মাত্রা
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা বিখ্যাত সড়ক ‘বঙ্গবন্ধু বুলেভার্ড’ এ বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ ভাস্কর্য উন্মোচন করা হয়েছে।
সোমবার ভাস্কর্যটি উন্মোচন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে নিরন্তর সম্প্রসারিত বন্ধুত্বের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে আজ এখানে উপস্থিত হওয়া আমার জন্য পরম সম্মান ও সৌভাগ্যের ব্যাপার।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই অসাধারণ কীর্তিটি স্থাপনের জন্য, আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে তুরস্কের জনগণ ও সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে আমার ভাই তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব মেভলুত কাভাসোগলু, আঙ্কারার জনগণ ও আঙ্কারা সিটি মেয়রকে আমার ও আমার প্রতিনিধি দলের প্রতি উষ্ণতা ও আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সুফিবাদের তীর্থস্থান হিসেবে তুরস্কের সাথে সিলেটের মিল রয়েছে: রাষ্ট্রদূত
মোমেন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্ক ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং ধর্মীয় নৈকট্যে আবদ্ধ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য উন্মোচনের এই তাৎপর্যপূর্ণ উপলক্ষ আমরা এমন এক মাসে উদ্যাপন করছি যাকে আমরা বিজয়ের মাস হিসেবে অভিহিত করি। এটি কেবল সম্পর্ককে সুসংহত করতে সাহায্য করবে না বরং এতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভাসোগলু, আঙ্কারার গভর্নর ভাসিপ শাহিন, আঙ্কারা মেট্রোপলিটন পৌরসভার মেয়র মনসুর ইয়াভাস এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: তুরস্কে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী
ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ- তুরস্ক পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা
সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের ‘সৈনিকেরা’ প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের সৈনিকেরা প্রস্তুত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্ম তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।’
রবিবার দুপুরে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২১’ উদযাপন এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইসিটি মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমি আজ বলতে পারি আমার আর কোনো দুশ্চিন্তা নাই। প্রযুক্তি শিক্ষায় এবং জ্ঞান ভিত্তিক যে সমাজ আমরা গড়তে চাই- আমাদের দেশটা সে পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের সৈনিকেরা প্রস্তুত হয়েছে।’
ডিজিটাল সেক্টরে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট ২৪ জন ব্যক্তি, দল ও সংস্থা এই পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ১২টি এবং জেলা পর্যায়ে ১২টি পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রাপকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী যুবক ও অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্ষমতা অর্জন করেছি: প্রধানমন্ত্রী
ডিজিটাল যন্ত্রপাতি রপ্তানি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঠিকভাবে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানি করা গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে তা তৈরি পোশাকসহ অন্য সব খাতকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে পোশাক রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রার সবচেয়ে বড় উৎস উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ডিজিটাল ডিভাইসের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি করা এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই খাতে তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমি মনে করি যদি আমরা এই ডিজিটাল ডিভাইসগুলো উৎপাদন এবং রপ্তানি করতে পারি। তবে এটা বাকি সব খাতকে ছাড়িয়ে যাবে। সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস খাতে রপ্তানি আয় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারের কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাতে তরুণরা ঘরে বসে তাদের প্রতিভা বিকাশ করতে পারে এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: সব বাধা ভেঙে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার প্রযুক্তির সাহায্যে বাংলাদেশের জনগণকে যে সেবা দিতে চেয়েছিল, তা ইতোমধ্যে দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম ৪০০ টাকার নিচে নামিয়েছে, যা বিএনপি সরকারের সময় ছিল ৭৮ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, আমরা ৫জি চালু করতে যাচ্ছি।
বাংলাদেশে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পাশাপাশি ১৮ দশমিক ১৩ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি ঘরে এখন ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিটি বিষয়ক সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ৪৩তম ক্ষমতাধর নারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
‘চিরঞ্জীব মুজিব’ সিনেমার মাধ্যমে জানা যাবে অজানা ইতিহাস
আগামী ৩১ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘চিরঞ্জীব মুজিব’। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের প্রজেকশন হলে রবিবার একটি সংবাদ সম্মেলন ও সিনেমাটির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে যোগ দেন সিনেমাটির নির্মাতা নজরুল ইসলাম, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর জুয়েল মাহমুদ, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, প্রযোজক লিটন হায়দারসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক কিছুই আমাদের অজানা। তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরা বঙ্গবন্ধুর সময়ে ছিলেন না। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে সেই সুযোগটা তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এ দেশ ও দেশের মানুষকে কতটা ভালোবাসতেন তা এখানে উঠে এসেছে। সিনেমাটি আমি দেখেছি। এখানে বঙ্গবন্ধুকে জীবন্তভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ, তার সংগ্রামের চিত্র ফুটে উঠেছে এখানে। আমি বিশ্বাস করি সবার কাছে সিনেমাটি ভালো লাগবে। সিনেমাটির মধ্য দিয়ে অজানা অনেক ইতিহাস জানা যাবে।'
আরও পড়ুন: সরকারি অনুদানের ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ সিনেমায় নায়িকা দীঘি
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিনেমার পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সিনেমটিতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর একটি অংশ নিয়ে সিনেমটি তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তো একদিনে গড়ে উঠেননি। বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার ঘটনা এখানে তুলে ধরা হয়েছে। ইতিহাসনির্ভর সিনেমা তৈরি করতে গেলে অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে তৈরি করতে হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমনটা ছিল।’
পরিচালক নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সিনেমাটির চিত্রনাট্য আমরা প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে দেখাই, তার কিছু কারেকশন ছিল। সে অনুযায়ী আমরা কাজ শুরু করি। অবশেষে আমরা মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। এই সিনেমায় আমার সঙ্গে যারা ছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ একটি সিনেমা মানে টিম ওয়ার্ক। সবার প্রচেষ্টায় সিনেমাটি তৈরি করতে সফল হয়েছি। সবাইকে আমন্ত্রণ জানাই সিনামটি দেখার।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত দর্শকদের জন্য 'চিরঞ্জিব মুজিব'-এর প্রদর্শনী করা হয়।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে চলচ্চিত্রটি বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পায়। ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিনেমাটির পোস্টার উন্মোচন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিববুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা রেণুর চরিত্রে দেখা যাবে চিত্রনায়িকা পূর্ণিমাকে। বঙ্গবন্ধুর বাবা ও মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যথাক্রমে খায়রুল আলম সবুজ এবং দিলারা জামান। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ও সংলাপ রচয়িতা নজরুল ইসলাম, সৃজনশীল পরিচালক জুয়েল মাহমুদ ও প্রযোজক লিটন হায়দার।
আরও পড়ুন: চরকিতে রায়হান রাফির প্রথম অনলাইন সিনেমা ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’
সিনেমা নাটকের দৃশ্যে ধূমপানের ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে হাইকোর্টের রুল
অস্ট্রেলিয়ায় বঙ্গবন্ধু ও গফ হুইটলামের জীবন ও কর্মের ওপর সেমিনার
দু’জন সমসাময়িক কিংবদন্তী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড গফ হুইটলামের জীবন, কর্ম ও রাজনৈতিক আদর্শের ওপর অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হুইটলাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরা ও কনস্যুলেট জেনারেল সিডনি যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
হুইটলাম ইনস্টিটিউটে মাসব্যাপী গফ হুইটলাম এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে, যা জানুয়ারি পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর পিটার শেরগোল্ডের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন। সেমিনারে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যারেথ ইভানস স্বাগত বক্তব্য দেন। এছাড়া ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর বার্নে গ্লোভার মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশনের শ্রদ্ধা
এসময় বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ এবং এক্ষেত্রে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির অবদানের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিকতা, বন্ধুত্ব এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিষয়ক বঙ্গবন্ধু যে বার্তা দিয়ে গেছেন তার মাধ্যমে সমসাময়িক বিশ্বের অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন এবং দু’নেতার জীবন ও কর্ম উদযাপনের মাধ্যমে দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দু’দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পারিক ঘনিষ্ঠতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যারেথ ইভানস বলেন, বঙ্গবন্ধু ও হুইটলামের পারস্পারিক যোগাযোগ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংসদীয় গণতন্ত্র দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের শক্তিশালী ভিত্তি। এ দুই নেতার চিন্তাচেতনা ও প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে ভবিষ্যতে দুই দেশ উন্নয়ন ও বাণিজ্যের উর্ধ্বে নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক বিষয়েও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে।
আরও পড়ুন: লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে তথ্যমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এবং অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার জেনি হকিং মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও সমসাময়িক বিশ্ব এবং অধ্যাপক জেনি হকিং উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক স্থাপনে হুইটলামের অবদানের ওপর আলোচনা করেন। শান্তিপূর্ণ ভারতীয় মহাদেশীয় এলাকা এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় মহান এ দু’নেতার অঙ্গীকারের বিষয়ে তাঁরা আলোকপাত করেন। জেনি হকিং স্মরণ করেন কিভাবে জনগণের মঙ্গলার্থে বঙ্গবন্ধু ও হুইটলাম তাঁদের সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন।
বঙ্গবন্ধু ও হুইটলামের স্বপ্ন ও দূরদর্শিতা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিবিধ সংস্কার ও অবদানের কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার সুফিউর রহমান এ মহান দুই নেতার বিষয়ে ও বাংলাদেশ বিষয়ে অধিক অধ্যয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এসময় প্যানেল আলোচনায় আলোচকরা এ দুই নেতার চিন্তা ও দুরদর্শিতার প্রশংসা করে বলেন,এ দুই বিশ্বনেতা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উদ্যোগ ও নীতি গ্রহণ করেন। বিভিন্ন দেশের পারস্পারিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন, শান্তি ও মঙ্গল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ও দুই নেতার প্রয়াসের ওপর তাঁরা আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিডনিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মাসুদুল আলম।
আরও পড়ুন: কলকাতা প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র’ উদ্বোধন ২৮ অক্টোবর