ফ্রান্স
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মুক্ত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ফ্রান্স কৌশলগত সম্পদ ও উন্নত প্রযুক্তিতে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মুক্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। আমরা দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণের উপর মনোযোগ দিয়ে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি। আমরা কৌশলগত সম্পদ এবং উন্নত প্রযুক্তিতে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মুক্ত করছি।’
রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোনের সম্মানে আয়োজিত এক ভোজসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সকলের জন্য ভাগাভাগি সমৃদ্ধির জন্য কৌশলগত ব্যস্ততায় যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারিত্ব যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের একাধিক সংকট মোকাবিলায় একটি অর্থবহ শক্তি হতে পারে, যা আমাদের বিশ্ব মুখোমুখি হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের নভেম্বরে তার ফ্রান্স সফরের সময় এলিসি প্রাসাদে (ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন) যে উষ্ণ আতিথেয়তা পেয়েছিলেন তার কথা স্মরণ করেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ এখানে আপনাকে এবং আপনার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাতে আমার সঙ্গে যোগ দিয়েছে।’
হাসিনা বলেন, তার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফরাসি বিপ্লবের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স আমাদের হৃদয়ে ও অন্তরে একটি বিশেষ স্থান দখল।’
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু তার আত্মনিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রচারে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেও এর প্রতিফলন ঘটেছে।
তিনি বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার আহ্বান আন্দ্রে ম্যালরাক্সের মতো বিশ্ব বুদ্ধিজীবীদের মাঝেও প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। যা বাংলাদেশে লড়াই করার জন্য অনেক তরুণকে সংগঠিত করেছিল।
তিনি ফ্রান্সে যে অনেক সাহসী সংস্কার করেছেন তার জন্য তিনি ম্যাক্রোঁর প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিশুদ্ধ বাতাসের নিঃশ্বাস হিসাবে দেখি। কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য আপনার অবস্থান মূলত আমাদের নিজস্ব বৈদেশিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দিয়েছিলেন- 'সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়'।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আপনাকে আমাদের অনন্য কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমাদের উভয় জাতিই আমাদের রন্ধনপ্রণালী, সংস্কৃতি ও ভাষাগত ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। আমাদের দুই জনগোষ্ঠীকে একে অপরের কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য আমাদের দুটি সংস্কৃতির মধ্যে আরও ইন্টারফেস এবং ফিউশন প্রচার করার সময় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য আমাদের আরেকটি উপাদেয় জনপ্রিয় স্থানীয় ফল আমড়ার জুস প্রস্তাব করতে পারি’।
১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা আসছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ
ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা আসবেন। যা বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপক্ষয়ি সম্পর্ককে ‘গভীর করার সুযোগ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ফরাসি সরকার সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ’র ঢাকা সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এসময় ফ্রান্স বাংলাদেশকে এমন একটি দেশ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যেটি ‘দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং তার অংশীদারিত্বে বৈচিত্র্য আনতে চাইছে’।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ও ফ্রান্স বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও দারুণ একতা দেখায়। বিশেষ করে প্যারিস এজেন্ডা ফর পিপলস অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটের কাঠামোর মধ্যে, যা বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে।’
যেহেতু দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, তাই ম্যাক্রোঁ তার মানবিক ফ্রন্টে; বিশেষ করে নিয়মিত বন্যার মুখে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফ্রান্সের দৃঢ়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করবেন।
বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আতিথেয়তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংহতি ক্রিয়াকলাপের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা দেশ।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে নয়াদিল্লি যাবেন।
এরপর ১০ সেপ্টেম্বর দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় আসবেন তিনি।
আরও পড়ুন: শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে পৌঁছেছে ফ্রান্স নৌবাহিনীর জাহাজ ‘এফএস সার্কাফ’
গত জুনে প্যারিসে অনুষ্ঠিত একটি নতুন গ্লোবাল ফাইন্যান্সিং প্যাক্টের জন্য শীর্ষ সম্মেলনের ফলোআপ করারও একটি সুযোগ হবে জি২০-তে।
এই শীর্ষ সম্মেলনটি পিপলস ও প্ল্যানেটের জন্য প্যারিস এজেন্ডা প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছে। যাতে কোনো দেশকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং পৃথিবীর সুরক্ষার মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপের জন্য একটি কাঠামো সরবরাহ করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সফরের সময় জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়াও বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করবে।
প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘নারী ক্ষমতায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন-এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় সমস্যা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েছেন।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ তার প্রাসঙ্গিক তহবিলের লস এন্ড ড্যামেজ বিষয়টি বড় আকারে উত্থাপন করবে।
ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেন।
আরও পড়ুন: ফ্রান্স বাংলাদেশকে বিমান চলাচল ও সমুদ্র নিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে আগ্রহী: ফরাসি দূত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছাড়াও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
দুই নেতার নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ফ্রান্স ও বাংলাদেশ তাদের বন্ধুত্ব বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং কৌশলগত দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিত রাজনৈতিক পরামর্শের মাধ্যমে তাদের অংশীদারিত্বের সমস্ত দিক বিকাশ ও গভীর করার জন্য তাদের যৌথ ইচ্ছার কথা তুলে ধরেছে।
উভয় দেশ রাজনীতি ও কূটনীতি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য তাদের দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে।
উভয় দেশ প্রাসঙ্গিক আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় ফোরামে টেকসই এবং সহযোগিতার গুরুত্ব স্বীকার করেছে।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা উপাদানকে আরও উন্নয়নের ইচ্ছার কথা জানিয়েছে।
সেই লক্ষ্যে, উভয় দেশ সংলাপ জোরদার করতে এবং তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। বিশেষ করে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে, যা এই সফরের সময় চালু হয়েছিল।
এছাড়া তারা প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে ব্যক্ত প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিটি পক্ষের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার মধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য প্রযুক্তি স্থানান্তর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই বিষয়ে, উভয় পক্ষই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি ইচ্ছাপত্র সইকে স্বাগত জানিয়েছে।
ফ্রান্স ও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে এবং সকলের জন্য ভাগ করা সমৃদ্ধির সঙ্গে একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য একই দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালকের সাক্ষাৎ
স্কুলে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করবে ফ্রান্স: শিক্ষামন্ত্রী
নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে মেয়েদের বোরকা (মুসলিম নারীদের পরা আপাদমস্তক ঢেকে রাখা নির্দিষ্ট ঢিলেঢালা পোশাক) পরা নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল।
সোমবার (২৮ আগস্ট) ভারতের গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফ্রান্সে ১৯ শতকের সকল আইন রদ করা হয়েছে এবং দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা থেকে গোঁড়া ক্যাথলিক প্রভাব দূর করার চেষ্টা হচ্ছে।
তাই দেশটির সরকারি স্কুলে ধর্মীয় পরিচয় বহনকারী সবকিছু কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনসংখ্যার জন্য তারা আধুনিক আইন প্রণয়নে সমস্যায় পড়ছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ঘরের বাইরে নারীদের বোরকা পরার নির্দেশ
আল-জাজিরার তথ্যমতে, ফ্রান্সের সরকারি স্কুলে খ্রিষ্টানদের ক্রস, ইহুদিদের কিপ্পা অথবা মুসলমানদের হেডস্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ।
ফরাসি সরকার ২০০৪ ও ২০১০ সালে জনপরিসরে মুসলিম নারীদের পুরো মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্ত দেশটির পাঁচ মিলিয়ন মুসলমান জনগোষ্ঠীর বড় অংশকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে ফ্রান্সের টিএফ১- টিভিকে দেওয়া শিক্ষামন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের কথা বলা হয়েছে।
যেখানে শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল বলেছেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি স্কুলে আর বোরখা পড়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের কে কোন ধর্মের তা আলাদাভাবে চোখে পরা ঠিক নয়। সেজন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
হেডস্কার্ফ নিষিদ্ধ করা হলেও এতদিন বোরখা নিষিদ্ধ করা হয়নি।
ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অব মুসলিম ফেইথ (সিএফসিএম) অনুসারে, পোশাক শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয় নয়।
সিএফসিএম একটি জাতীয় সংগঠন, যা অনেকগুলো মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করে।
আরও পড়ুন: নারীরা বোরকা না পরলে জেল হতে পারে পুরুষদের!
সুইজারল্যান্ডে মুসলিমদের বোরকা-নিকাব পরা নিষিদ্ধের পক্ষে রায়
ফ্রান্সে সহিংসতার পঞ্চম দিনে ৭১৯ জন গ্রেপ্তার: মন্ত্রণালয়
ফ্রান্সে শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত অন্তত ৭১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানয়ি সময় রবিবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে এক কিশোর নিহত হওয়ার পর দেশব্যাপী সহিংসতার পঞ্চম রাতে শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত অন্তত ৭১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ৪৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সশস্ত্র পুলিশ আহত হয়েছেন এবং ৫৭৭টি গাড়ি ও ৭৪টি ভবন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন, শুক্রবার রাতের চেয়ে শনিবার রাত 'শান্ত' ছিল, যখন ১ হাজার ৩১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং ১ হাজার ৩৫০ টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
দারমানিন তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, শনিবার রাতে দাঙ্গা ও লুটপাট মোকাবিলায় দেশজুড়ে প্রায় ৪৫ হাজার ফরাসি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র প্যারিস এবং এর শহরতলিতে প্রায় ৭ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার রাতে প্যারিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলীর হে-লেস-রোজেস শহরের মেয়রের বাড়িতেও দাঙ্গাকারীরা হামলা চালায়, এতে মেয়রের স্ত্রী ও তার এক সন্তান আহত হন।
রবিবার বিকালে ফরাসি নিউজ চ্যানেল বিএফএমটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় প্যারিসের পুলিশ প্রধান লরেন্ট নুনেজ বলেছেন, দাঙ্গাকারীরা একজন মেয়রের বাড়িতে আক্রমণ করে ‘সীমা লঙ্গন করেছে’ এবং অপরাধীদের ধরার জন্য পুলিশ অবশ্যই তদন্ত করবে।
নুনেজ আশ্বস্ত করেছেন যে শহরে হওয়া সহিংসতার ব্যাপারে পুলিশ ‘খুব মনোযোগী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রয়েছে এবং রবিবার রাতে বৃহত্তর প্যারিস অঞ্চলে আবার ৭ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করা হবে।
স্থানীয় সময় রবিবার ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এদিন সন্ধ্যা ৭টা ৩০মিনিটে প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন এবং বিচারমন্ত্রী এরিক ডুপন্ড-মোরেত্তির সঙ্গে একটি ব্রিফিং করবেন।
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার একজন ফরাসি পুলিশ অফিসারের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নিহত হয়।
যে পুলিশ অফিসার তার বন্দুক থেকে গুলি চালিয়েছিলেন তিনি পরে তদন্তকারীদের বলেছিলেন যে গাড়িটি একটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এই ভয়ে তিনি এ কাজ করেছিলেন।
গত মঙ্গলবারের গুলির ঘটনার পর ফ্রান্সজুড়ে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে, যার ফলে পুলিশ ফ্রান্সের প্রধান শহরগুলোতে কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বাস দুর্ঘটনার পর আগুন লেগে নিহত ২৫
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯.০৯ কোটি ছাড়িয়েছে
শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে পৌঁছেছে ফ্রান্স নৌবাহিনীর জাহাজ ‘এফএস সার্কাফ’
পাঁচ দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে ফ্রান্স নৌবাহিনীর জাহাজ এফএস সার্কাফ। রবিবার (২ জুলাই) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের চিফ স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন ফয়েজ জাহাজটিকে স্বাগত জানান।
এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতিতে ব্যান্ড পরিবেশন করে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরদিপ্তরের (আইএসপআির) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাহাজটিকে স্বাগত জানাতে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতসহ নৌবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা ও নাবিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ নৌবাহিনী 'ক্রেতা' থেকে 'নির্মাতা' হতে চলেছে: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে সফরকারী জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘স্বাধীনতা’ অভ্যর্থনা জানায়।
বাংলাদেশে সফররত জাহাজটিতে ১৭০ জন কর্মকর্তা ও নাবিক রয়েছেন। ১২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ফ্রান্সের এই জাহাজটির অধিনায়কের দায়িত্বে রয়েছেন ক্যাপ্টেন জেরোম ডুবইস।
অবস্থানকালীন সময়ে জাহাজটির অধিনায়ক কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিট এবং চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।
চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলে অবস্থানকালীন সফরকারী জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকরা বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি, বানৌজা পতেঙ্গা, নৌবাহিনীর সমর কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘স্কুল অব মেরিটাইম ওয়ারফেয়ার এন্ড ট্যাকটিস’, চট্টগ্রাম ওয়্যার সিমেট্রিসহ চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানসমূহ পরিদর্শন করবেন। এছাড়া ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সদস্য ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্রান্স নৌবাহিনীর এ জাহাজের চট্টগ্রাম সফরের ফলে বাংলাদেশের সাথে ফ্রান্সের বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা যায়। শুভেচ্ছা সফর শেষে জাহাজটি আগামী ৬ জুলাই বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।
চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলে অবস্থানকালে সফরকারী জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকরা বাংলাদেশ নেভাল অ্যাকাডেমি, বানৌজা পতেঙ্গা, নৌবাহিনীর সমর কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণকেন্দ্র ‘স্কুল অব মেরিটাইম ওয়ারফেয়ার অ্যান্ড ট্যাকটিস’, চট্টগ্রাম ওয়্যার সিমেট্রিসহ চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করবেন। এছাড়া ফ্যান্সের নৌবাহিনীর সদস্য ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্রান্স নৌবাহিনীর এ জাহাজের চট্টগ্রাম সফরের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্রান্সের বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা যায়। শুভেচ্ছা সফর শেষে জাহাজটি আগামী ৬ জুলাই বাংলাদেশ ছেড়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
শুভেচ্ছা সফরে দেশে এলো যুক্তরাজ্যের রাজকীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে ফ্রান্সের আগ্রহ প্রকাশ
মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স।
বুধবার (২১ জুন) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই।
সাক্ষাতকালে রাষ্ট্রদূত এ আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহারকারীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়: মোস্তাফা জব্বার
সাক্ষাতকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেলিযোগাযোগ ও ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও অগ্রগতি সম্পর্কে মতবিনিময় করেন।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক তুলে ধরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘ফ্রান্স বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার এবং অকৃত্রিম বন্ধু।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশে গত সাড়ে ১৪ বছরে ডিজিটালাইজেশনের ধারাবাহিকতায় বিস্ময়কর অগ্রগতি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণ বর্তমান সরকারের অন্যতম অর্জন। এর মাধ্যমে স্যাটেলাইট ক্লাবের ৫৭তম গর্বিত সদস্যে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ দেশের টেলিভিশন চ্যানেলসমূহের সম্প্রচারসহ দুর্গম অঞ্চলে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্ন ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনে অভাবনীয় ভূমিকা রাখছে।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারে দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘোষণা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ স্থাপনের কার্যক্রম চলছে।
মন্ত্রী টেলিযোগাযোগ খাতসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত লাভজনক একটি জায়গা। তাই সরকারের বিনিয়োগ বান্ধব নীতি কাজে লাগিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতে ফ্রান্স বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
এসময় জনাব মোস্তাফা জব্বার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে স্যটেলাইট যুগে বাংলাদেশের প্রবেশে ফ্রান্সের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: প্রচলিত গণমাধ্যমের বিদ্যমান ধারা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে: মোস্তাফা জব্বার
আমরা ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ শুরু করেছি: মোস্তাফা জব্বার
ইন্দো-প্যাসিফিক: বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বাড়াতে চায় ফ্রান্স
সফররত ফরাসি কর্মকর্তা বলেছেন, ফ্রান্স বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলোর সঙ্গে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ’ সহযোগিতা থাকবে।
বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর (সাধারণ রাজনৈতিক অধিদপ্তর) বার্ট্রান্ড লরথোলারি সাংবাদিকদের বলেন, এটি আমাদের একসঙ্গে কাজ করা সাধারণ কাজগুলো বোর্ডে পর্যালোচনা করে নতুন প্রকল্প এবং উদ্যোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ দেয়।’
আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে এবং সকলের জন্য বিনিময় করে নেয়া সমৃদ্ধিসহ ‘মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক’ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য ফ্রান্স এবং বাংলাদেশ একই দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।
এক প্রশ্নের জবাবে লরথোলারি বলেন, দুই দেশ অনেক কিছু করতে পারে এবং সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা সেই প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ।
তিনি বলেন, ‘যখন আমরা নিরাপত্তার কথা বলি, তখন আমরা সামুদ্রিক পরিবহনের নিরাপত্তা, সমুদ্রে পণ্য পরিবহন এবং একসঙ্গে অবৈধ মাছ ধরার বিষয়েও কথা বলি। আমরা শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়েও কথা বলছি যেখানে বাংলাদেশের একটি লক্ষ্যণীয় অবস্থান রয়েছে।’
এর আগে, ফরাসি কর্মকর্তা বাংলাদেশের মহাপরিচালক (পশ্চিম ইউরোপ এবং ইইউ) কাজী রাসেল পারভেজের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জনগণের সঙ্গে জনগণের আদান-প্রদান, সংযোগ, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা এবং জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যাসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: জাহাজের শুভেচ্ছা সফর ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক: প্রণয় ভার্মা
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপয়, ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল এবং ডেপুটি ডিরেক্টর, ফরাসি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এফডিএ) সেসিলিয়া কর্টেস।
২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় সফরের কথা উল্লেখ করে ফরাসি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা একটি সমৃদ্ধ সম্পর্ক উপভোগ করছি। আমাদের একটি খুব মজবুত ভিত্তি রয়েছে।’
হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরের সময় দুই দেশ তাদের অংশীদারিত্বের প্রতিরক্ষা এবং সুরক্ষা উপাদানকে আরও সমৃদ্ধ করতে তাদের ইচ্ছার কথা জানায়।
সেই লক্ষ্যে উভয় দেশ সংলাপ জোরদার করতে এবং তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে, বিশেষ করে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে, যা সফরের সময় শুরু হয়েছিল।
দুই দেশ আগামী বছর প্যারিসে দ্বিতীয় আলোচনায় বসবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সৌরবিদ্যুত সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে সহযোগিতা করবে জার্মানি
নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা: ডাটা বক্স ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছে
পোখরা, নেপাল, ১৭ জানুয়ারি (ইউএনবি)-নেপালের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর শুরু করেছে। এছাড়া বিশ্লেষণের জন্য বিমানের ডেটা রেকর্ডার ফ্রান্সে পাঠাচ্ছে।
গত ৩০ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার কারণ কী তা নির্ধারণ করার চেষ্টা চলছে।
হিমালয়ের পাদদেশে নতুন খোলা পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে যাওয়ার সময় রবিবার ফ্লাইটটি একটি খাদে পড়ে যায়। এসময় বিমানে থাকা ৭২ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ জনের মৃত্যু হয়।
অনুসন্ধানকারীরা সোমবার ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার খুঁজে পেয়েছেন এবং ৩০০ মিটার গভীর (৯৮৪-ফুট-গভীর) উপত্যকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে চিরুনি অভিযান চালায় নিখোঁজ দুজনের সন্ধানে। মঙ্গলবার সকালেও একজনের লাশ পাওয়া যায়।
বিমানের প্রস্তুতকারক এটিআর-এর সদর দপ্তর টুলুসে নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জগন্নাথ নিরাউলা বলেছেন, ভয়েস রেকর্ডারটি স্থানীয়ভাবে বিশ্লেষণ করা হবে। তবে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারটি ফ্রান্সে পাঠানো হবে।
ফরাসি বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে এটি তদন্তে অংশ নিচ্ছে এবং এর প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে ছিল।
নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইন্সের চালিত টুইন-ইঞ্জিন এটিআর ৭২-৫০০টি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) পশ্চিমে রিসর্ট শহর পোখরাতে ২৭ মিনিটের ফ্লাইটটি সম্পন্ন করছিল।
তবে এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মনে হচ্ছে যে এটা টার্বোপ্রপ বিমানবন্দরের কাছে যাওয়ার সময় কম উচ্চতায় একটি স্টলে গিয়েছিল, কিন্তু কেন তা স্পষ্ট নয়।
বিমানটিতে ১৫ বিদেশি নাগরিক ও চারজন ক্রু সদস্যসহ ৬৮ জন যাত্রী ছিল। বিদেশিদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রাশিয়ান, দুইজন দক্ষিণ কোরিয়ার এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে।
পোখরা হল অন্নপূর্ণা সার্কিটের প্রবেশদ্বার এবং হিমালয়ের একটি জনপ্রিয় হাইকিং ট্রেইল।
মঙ্গলবার বিকালে পোখরার সেতি নদীর তীরে একটি শ্মশানের তুলসী ঘাটে ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। তারা দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ত্রিভুবন পাউডেল (৩৭) নামক সাংবাদিক এবং স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকের জন্য শোক জানাতে এসেছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় হাসপাতালের বাইরে শত শত আত্মীয় ও বন্ধুরা জড়ো হয়েছিল।
অনেকে একে অপরকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, যখন কেউ কেউ ময়নাতদন্তের গতি বাড়ানোর জন্য কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাচ্ছিলেন, যাতে তারা তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক স্মিথ, যিনি বোয়িং ৭৫৭ এবং ৭৬৭ বিমান চালান এবং ‘পাইলটকে জিজ্ঞাসা করুন’ নামে একটি কলাম লেখেন, তিনি সতর্ক করে বলেন যে দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনও অনেক বিবরণ জানা যায়নি।
তিনি একটি ই-মেইলে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘একটি সম্ভাবনা হল একটি ইঞ্জিনের ব্যর্থতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
বিমানের অবতরণের স্মার্টফোনের ভিডিও করা দিওয়াস বোহোরা বলেন, বিমানটি হঠাৎ বাম দিকে না আসা পর্যন্ত এটিকে অন্যান্য বিমানের মতোই সাধারণ অবতরণ মনে হচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘আমি এটা দেখেছি এবং আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম ... আমি ভেবেছিলাম যে আজ এটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরে এখানে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, আমিও মারা যাব।’
আরও পড়ুন: নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি: বাংলাদেশে ভারতীয় সহযোগিতা 'দৃশ্যমান', বললেন নসরুল
দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি এটিআর৭২, যা সারা বিশ্বের এয়ারলাইনগুলো সংক্ষিপ্ত আঞ্চলিক ফ্লাইটের জন্য ব্যবহার করে।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে একটি ফরাসি ও ইতালীয় অংশীদারিত্বে নির্মিত হয় এটি। বিমানের এই মডেলটি বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।
এর আগে তাইওয়ানে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দু'টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যার মধ্যে একটি এটিআর৭২-৫০০ ও এটিআর৭২-৬০০ বিমান।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে একটি ট্রান্সএশিয়া এটিআর ৭২-৫০০ ফ্লাইট তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে মনোরম পেঙ্গু দ্বীপপুঞ্জে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। একই তাইওয়ানিজ এয়ারলাইন পরিচালিত একটি এটিআর ৭২-৬০০।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাইপেইতে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। এসময় এর একটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হয় এবং দ্বিতীয়টি ভুলবশত বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া ২০১৬ সালে ট্রান্সএশিয়া সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করার পর ব্যবসাও বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বিমান কোম্পানির মুখপাত্র সুদর্শন বারতৌলা জানিয়েছেন, ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ছয়টি এটিআর৭২-৫০০ প্লেনের বহর রয়েছে।
নেপালে মাউন্ট এভারেস্টসহ বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে আটটির অবস্থান। এবং দেশটির বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে।
ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের এভিয়েশন সেফটি ডাটাবেস অনুসারে, ১৯৪৬ সাল থেকে নেপালে ৪২টি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রবিবারের দুর্ঘটনাটি ১৯৯২ সালের পর নেপালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। সেসময় একটি বিমান কাঠমান্ডুতে অবতরণের চেষ্টা করার সময় একটি পাহাড়ে ধাক্কা দেয় এবং এতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে থাকা ১৬৭ জন যাত্রীর সবাই প্রাণ হারান।
নিরাপত্তার মান দুর্বল উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৩ সাল থেকে নেপালের এয়ারলাইন্সকে ২৭টি দেশের ওপর দিয়ে উড়তে নিষেধ করেছে।
২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন নেপালের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নতির কথা উল্লেখ করেছে।
কিন্তু, ইইউ এর প্রশাসনিক সংস্কারের দাবি করে আসছে।
আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত: নেপালে জাতীয় শোক পালন
এমবাপ্পে বিশ্বকাপের মহাকাব্যে চমক, শেষ পর্যন্ত হার
কাইলিয়ান এমবাপ্পে বিশ্বকাপের ফাইনালে চমক দিতে আপাতদৃষ্টিতে কোথাও থেকে হ্যাটট্রিক করেছিলেন, তিনি আট গোল করে শীর্ষ স্কোরার হিসাবে টুর্নামেন্ট শেষ করেও তিনি টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয় থেকে বঞ্চিত হন।
ফ্রান্স সুপারস্টার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে একটি মহাকাব্যিক ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন যা রবিবার ৩-৩ ড্রয়ের পরে পেনাল্টি শুটআউটে নিষ্পত্তি হয়েছিল। এরপর তাকে মাঠে সান্ত্বনা দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের ডেসচ্যাম্পস বলেছেন, ‘কাইলিয়ান সত্যিই এই ফাইনালে তার চিহ্ন রেখেছেন।’
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ২-০ তে পিছিয়ে থাকা এবং খারাপ খেলার সঙ্গে সময় ফুরিয়ে যাওয়ায় এমবাপ্পে ফ্রান্সের নেতা ছিলেন। ফরোয়ার্ডও তখন পর্যন্ত প্রায় অদৃশ্য ছিল।
কিন্তু তার গোল ফ্রান্সকে ম্যাচে ফিরিয়ে নিয়ে যায়—দুবার।
প্রথমত, নিয়ন্ত্রিত সময়ের মধ্যে দেরী তারপর আবার অতিরিক্ত সময়ে ডিপ।
এমবাপ্পে ৮০তম মিনিটে পেনাল্টি নেন এবং তারপরে ৮১তম মিনিটে ভলি দিয়ে গোল করেন।
আর্জেন্টিনা এবং গ্রেট লিওনেল মেসির সঙ্গে ফ্রান্সকেও পেতে তার সময় লেগেছিল মাত্র ৯৭সেকেন্ড।
অতিরিক্ত সময়ে এমবাপ্পে দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে গোল করেন, মেসি আর্জেন্টিনাকে আবার লিড দেওয়ার প্রায় ১০ মিনিট পরে যা দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে একটি বাধ্যতামূলক দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছিল।
এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকটি ছিল বিশ্বকাপের ফাইনালে দ্বিতীয়- অন্যটি ছিল ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের স্ট্রাইকার জিওফ হার্স্টের।
আট গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট ট্রফি নিয়ে কাতার ছেড়েছেন ফরাসি এই খেলোয়ার।পেলের কেরিয়ারের মোট ১২টি বিশ্বকাপ গোলের সমান করেছেন তিনি মাত্র ২৩ বছর বয়সে ।
আরও পড়ুন: মেসির ভাগ্য পূরণ, তৃতীয় বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা
কিন্তু এমবাপ্পে ব্রাজিল বিশালতার ব্যাক-টু-ব্যাক বিশ্বকাপ শিরোপাগুলোর সঙ্গে পুরোপুরি মিল রাখতে পারেনি — উভয় খেলোয়াড়ই কিশোর বয়সে যখন তারা তাদের প্রথমটি জিতেছিল ১৯৫৮ সালে পেলে এবং ২০১৮ সালে এমবাপ্পে।
এমবাপ্পে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার এক মিনিট আগে আর্জেন্টিনার ভক্তরা তাকে কটূক্তি করতে শুরু করে।
লুসাইল স্টেডিয়ামের স্ট্যান্ড থেকে ‘ওলে, ওলে’ স্লোগান ভেসে ওঠে যখন এমবাপ্পে নিষ্পফল বলটি তাড়া করেছিলেন যখন তার প্রতিপক্ষরা এটিকে তার চারপাশে দিয়ে যায়।
এমবাপ্পে পরিস্থিতির আপাত হতাশার দিকে তার ডান হাত দিয়ে হতাশার অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন।
কিন্তু তার প্রথম দু’টি গোল করার পর এমবাপ্পে আর্জেন্টিনার ঊর্ধ্বে উঠে যায় খেলায় জয় পেতে তৃতীয় একটি গোলের সন্ধানে। তার ডার্টিং, বাঁকানো দৌড়ের ফলে একটি শট খুব উঁচুতে বিচ্যুত হয়েছিল।
অতিরিক্ত সময়ে ৩-৩ করার জন্য অবশেষে তিনি হ্যাটট্রিক পেয়ে গেলে এমবাপ্পে চতুর্থ গোলের জন্য তাড়া শুরু করেন হন। তার কার্লিং ক্রস সবেমাত্র বদলি খেলোয়াড়ের হেড র্যান্ডাল কোলো মুয়ানিকে এড়িয়ে যায় এবং আর্জেন্টিনা পেনাল্টি এলাকায় গভীর ড্রিবলের মাধ্যমে শুট করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: স্বপ্নের শিরোপা জয়ী মেসির আর্জেন্টিনা
এককভাবে খেলা জেতার শেষ প্রচেষ্টাটি পিছলে যাওয়ায় তিনি জোরে চিৎকার করলেন।
প্রথম কিকের দায়িত্ব নিয়ে পেনাল্টি শুটআউটে জয় নেয়ার চেষ্টা করেন এমবাপ্পে। তিনি পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হন ফলে ফ্রান্স ৪-২ গোলে হেরে যায়। মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে শুটআউট শুরু করার জন্য একই কাজ করেছিলেন, কিন্তু তার সতীর্থরা সবাই তাদের পেনাল্টি থেকে গোল করেছিল।
শ্যুটআউটের সময় এমবাপ্পে নিশ্চিত করেছিলেন যে তিনিই প্রথম কিংসলে কোমান এবং অরেলিয়ান চৌমেনিকে তাদের স্কোর করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে তাদের ধীর গতিতে সেন্টার সার্কেলে ফিরে যাওয়ার জন্য সান্ত্বনা দিয়েছেন।
আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার গঞ্জালো মন্টিয়েল নিষ্পত্তিমূলক কিক নেয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়ায় এমবাপ্পে কেন্দ্রের বৃত্তে নিচু হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তার হাঁটুতে হাত দিয়েছিলেন। এরপর তিনি স্কোয়াট করেন, নেট রিপল দেখেন এবং আর্জেন্টিনার উদযাপনের মধ্যে একাই চলে যান।
ডেসচ্যাম্পস অবশেষে তার খেলোয়াড়ের পিছনে এসে তার গলায় অস্ত্র দেয়। এমবাপ্পে শীঘ্রই দলের ডাগআউটে যান এবং তার আবেগ লুকানোর জন্য তার গাঢ় নীল শার্টটি তার মুখের ওপর টেনে নিয়ে একটি চেয়ারে বসে পড়েন।
খেলা শেষ হওয়ার অনেক পরে, এমবাপ্পে মাথা নিচু করে স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন এবং মেসির হাতে নিরাপদে বিশ্বকাপ ট্রফি।
আরও পড়ুন: কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: মেসি-ডি মারিয়ার জোড়া গোলে ২-০ তে এগিয়ে আর্জেন্টিনা
কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: মেসি-ডি মারিয়ার জোড়া গোলে ২-০ তে এগিয়ে আর্জেন্টিনা
লিওনেল মেসি ম্যাচের ২৩ তম পেনাল্টিতে গোল করে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন। বিশ্বকাপে এটি মেসির ১২তম গোল। এরমধ্য দিয়ে মেসি আসরের সর্বোচ্চ ছয় গোল করে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এগিয়ে গেছেন।
এরপর খেলার ৩৬ মিনিটে অসাধারণ একটি গোল করে ফ্রান্সের বিপক্ষে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন ডি মারিয়া।
আরও পড়ুন: রোমাঞ্চকর সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা নামছে কাতার বিশ্বকাপের
গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডে পোল্যান্ডের বিপক্ষে পায়ে চোট পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো আজ খেলতে নেমেছেন ডি মারিয়া।
ফ্রান্সের মতো আর্জেন্টিনাও এবার তৃতীয় বিশ্বকাপ প্রত্যাশী। এবছর আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতলে তাদের ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটবে।
১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে ম্যারাডোনার স্ট্রিং অব ভার্চুওসো পারফরম্যান্স তাকে চিরকালের জন্য আর্জেন্টিনার একজন নায়ক এবং ফুটবল বিশ্বে একজন আইকন করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: আর্জেন্টিনা ও ফান্সের শিরোপার লড়াই
আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্স ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল ২০২২: শীর্ষ তারকা খেলোয়াড় কারা