হেফাজতে ইসলাম
ওই নারী মামুনুলের স্ত্রী নন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রবিবার বলেছেন, সোনারগাঁও রিসোর্টে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের সাথে যে নারী ছিলেন তিনি তার স্ত্রী নন।
হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সোনারগাঁওয়ে তাণ্ডবের প্রসঙ্গে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে সংসদে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সোনারগাঁও উপজেলার একটি রিসোর্টে মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। ‘তিনি তার স্ত্রী নন। এ বিষয়ে আমি আরও ঘটনা জেনে সবাইকে জানাব।’
মন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনে ঘটনাটি প্রচারের পরে হেফাজত লোকেরা কেন রিসোর্টটিতে হামলা করেছিল তা তিনি জানেন না।
‘সেখানে কয়েকজন বিদেশি ছিলেন। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে তাদের রক্ষা করেছে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকার নমনীয় নয়, ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশব্যাপী সম্প্রতি হেফাজতের তাণ্ডবের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হঠাৎ করে এই ধরনের তাণ্ডব কেন, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।
‘আমরা তদন্ত করে দেখছি। যারাই তাণ্ডব করে থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না,’ বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার হেফাজত নেতা মামুনুলকে এক নারীসহ রিসোর্টে আটক করে স্থানীয়রা। মামুনুল হক ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন। তাকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে হেফাজত কর্মী ও তার অনুসারীরা রাতে রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে মামুনুলকে সেখান থেকে নিয়ে যায় তারা।
সাংবাদিকদের ওপর আঘাত মানে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত: ফরিদা ইয়াসমিন
সাংবাদিকদের ওপর আঘাত করা মানে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সহিংসতার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর যে হামলা ও গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তা থেকে স্পস্ট বুঝা যায় তাদের লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকদের আঘাত করা।’
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা: ৫ মামলায় আসামি প্রায় ৭ হাজার
শুক্রবার হেফাজতের সহিংসতার ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব পরিদর্শনে আসেন। পরে দলটি বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে নিহত ৫
এ সময় তারা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে কুশলবিনিময় করেন এবং আহত সাংবাদিকদের খোঁজখবর নেন।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ একটি ভয়াবহ ঘটনা। স্বাধীনতা দিবসে এ ধরণের ঘটনা মানে স্বাধীনতার মূলে আঘাত করা।
এ সময় সকল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: হেফাজতের হরতাল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেস ক্লাব ও ট্রেনে হামলা
পরিদর্শনকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বিক্ষুব্ধদের হামলায় আহত রিয়াজউদ্দিন জামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজনসহ জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব নেতারাসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সহিংসতার ঘটনায় নতুন ৭টিসহ এখন পর্যন্ত ১৯টি মামলা হয়েছে। এতে গ্রেপ্তার হয়েছে ২৪ জন।
রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না: আইজিপি
রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘মাদরাসায় এতিম শিশু ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়। রাজনীতি করার সবার অধিকার কাছে। কিন্তু রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন:স্বাধীনতার চেতনাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধারণ করতে হবে: আইজিপি
বৃহস্পতিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জেলা প্রশাসনের সার্কিট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বেনজির আহমেদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হামলার ঘটনায় তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।এ ব্যাপারে প্রত্যেকটি ঘটনার বিচার হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাছে ভিডিও ফুটেজ ও স্টিল ছবি আছে। ভিডিও ফুটেজ আর স্টিল ছবি দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে দেশপ্রেম প্রকাশ করুন: আইজিপি
‘ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। দেশের সকল মানুষ তাদের সাথে আছে। যারাই এ ধরণের ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভয়াবহ তাণ্ডবে যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে সে ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষাও আমাদের নেই,’ বলেন আইজিপি
এছাড়া তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের নৃশংস হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন করলেন পুলিশের আইজিপি
তিনি প্রেস ক্লাবে এসে হামলায় আহত প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামিসহ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি হেফাজতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের উন্নয়নে ৫ লাখ টাকা অনুদান করেন।
এ সময় পুলিশ প্রধানের সঙ্গে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের স্পেশাল শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন,জেলা প্রশাসক হায়াদ উদ দৌলা খান ও পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুরে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ
গত ২৬ মার্চ রাজধানীসহ সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ফরিদপুর জেলা বিএনপি।
ফরিদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরের মোদাররেছ আলী ইছার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু, যুবদলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল হাসান ভূইয়া পিংকু, অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু, যুবনেতা আবজাল হোসেন খান পলাশ, এ বি সিদ্দিক মিতুল, জাহাঙ্গী হোসেন প্রমুখ।
এ সময় বক্তরা অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ ও হেফাজতের কর্মসূচিতে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এর আগে সকাল ১১টার সময় একই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিএনপির আরেকটি অংশ। সেখানে বক্তব্য দেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নায়াব ইউসুফসহ অন্যান্য নেতারা।
কিশোরগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
কিশোরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের হরতালকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহরাব মিয়া বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আড়াই হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, হেফাজতের হামলা-ভাঙচুর ও তাণ্ডবের ঘটনায় সন্ত্রাস দমন ও নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হরতাল: সুনামগঞ্জে হেফাজত ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
উল্লেখ্য, রবিবার হেফাজতে ইসলামের হরতালকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। তারা বঙ্গবন্ধুর ছবিতেও অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বিপুল পরিমাণ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। কিশোরগঞ্জ শহরের গৌরাঙ্গ বাজার এলাকা থেকে পুরানথানা ইসলামিয়া মার্কেট পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে হরতালে হেফাজত-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, আটক ৫
সংঘর্ষের ঘটনায় কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ও পথচারী আহত হন।
এছাড়াও কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু বকর সিদ্দিকসহ ১২ পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবল আহত হন।
খুলনায় ঢিলেঢালাভাবে হেফাজতের হরতাল পালিত
হেফাজতে ইসলামের ডাকা রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের মধ্য দিয়ে ১৪ মাস পর দেশে আবারও হরতাল ফিরেছে। তবে এ হরতাল খুলনায় শান্তিপূর্ণ ও ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে কোথাও কোনো পিকেটিং বা বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, হরতাল প্রতিরোধ ও যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে সারা দেশের ন্যায় খুলনাতেও সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। একই সাথে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়কে হরতাল বিরোধী মহড়া দিয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
রবিবার সকালে খুলনা মহানগরীর ডাংকবাংলো মোড়, ফেরীঘাট মোড়, নিউমার্কেট বায়তুন কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু চত্বর (ময়লাপোতা মোড়), শিববাড়ী মোড় ও রূপসা ট্রাফিক মোড় ঘুরে দেখা যায়, হরতালের কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় গণপরিবহন ও লোক সমাগম তুলনামূলক কম। মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। বড় বাজার ও মার্কেট এলাকাতেও অন্যান্য দিনের চেয়ে জনসমাগম কম ছিল।
দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয় টহলও। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কোনো মিছিল মিটিং হয়নি বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হিসেবে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। সোনাডাঙ্গা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। সকাল থেকেই স্বাভাবিকভাবেই ছেড়ে যায় দুরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন।
একাধিক পথচারী জানান, এখন আর কেউ কি হরতাল মানে? তেমন কোন প্রভাব পড়েনি হরতালের।
অপরদিকে মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হরতাল, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদ বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দলীয় কার্যালয় থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর যুবলীগের আহবায়ক শফিকুর রহমান পলাশ ও পরিচালনা করেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এ দেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মৌলবাদের লেবাসে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মুজিব আদর্শে বলিয়ান হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী এসব অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।
হেফাজতের হরতাল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেস ক্লাব ও ট্রেনে হামলা
হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
হরতাল-সমর্থকরা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।
হামলার পর সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এছাড়াও হরতাল সমর্থকরা সদর উপজেলার জেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন, পুলিশ লাইন, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল স্কুল, ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সংগীত একাডেমি, ফুয়ের্তলা বাস স্ট্যান্ডসহ কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।
এ সময় তারা আলাউদ্দিন সংগীত একাডেমি ভবন, সদর উপজেলার ভূমি অফিস এবং ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল স্কুল ভবনে আগুন দেয়।
এদিকে হরতাল সমর্থকরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে হামলা করে এবং কয়েকজন সাংবাদিককে ক্লাব ভবনে আটক করে রাখে।
হরতাল সমর্থকদের হামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি আহত হয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘হরতাল সমর্থকরা বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে। এগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ।’
প্রসঙ্গত, রবিবার হেফাজতে ইসলামের ডাকা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
ফেনীতে হরতালের সমর্থনে হেফাজতের লাঠি মিছিল
সারা দেশে হরতালের সমর্থনে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা ফেনী শহরের বিভিন্ন সড়কে কয়েকদফা অবস্থান নিয়ে পিকেটিং করেছে।
রবিবার সকাল থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেলে চড়ে বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা।
সকালে মহিপাল, টাংরোড, একাডেমি রোড, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, মদিনা বাস স্ট্যান্ডসহ শহরের সব জায়গায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা হাতে লাঠি নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময় শহরেও যানবাহন চলাচল করতে বাধা দিতে দেখা যায়। এছাড়া রাস্তার পাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেয় তারা।
আরও পড়ুন: হেফাজতের হরতাল: হাটহাজারীতে সড়ক কেটে অবরোধ
চট্টগ্রামে কড়া নিরাপত্তায় হেফাজতের বিক্ষোভ
এদিকে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে শহরের প্রত্যেকটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনিক মাহমুদ বলেন, ‘শহরে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেই দিকে আমরা সতর্ক আছি। আমরা শহরের প্রত্যেকটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করেছি। এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।’
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪
মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
হেফাজতের হরতাল: হাটহাজারীতে সড়ক কেটে অবরোধ
হেফাজতে ইসলামের ডাকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে রবিবার হরতাল চলছে। শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের গুলিতে পাঁচ কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সারাদেশে রবিবার সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডাকে দলটি।
হরতাল চলাকালে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত গাড়িসহ হালকা যানবাহন চলাচল করলেও কোনো ধরনের দুরপাল্লার যাত্রীবাহী গাড়ি চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়নি।
আরও পড়ুন: সিলেটে শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে, ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার বাস
এদিকে, হরতালের সমর্থনে ভোরে ফজরের নামাজের পর বিভিন্ন এলাকায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে।
হাটহাজারীতে শুক্রবার দুপুরে সংঘর্ষের পর থেকে এখনও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা। সেখানে শুক্রবার ইটের প্রাচীর তৈরি করে অবরোধ করলেও পরে সে দেয়াল তুলে ফেলে। রবিবার ভোর থেকে রাস্তা কেটে দিয়ে খালের মতো বিশাল লম্বা গর্ত করে অবরোধ অব্যাহত রেখেছে ছাত্ররা। এর মধ্যে শনিবার দ্বিতীয়বারের মতো বিক্ষুব্ধ মাদরাসার ছাত্ররা হাটহাজারীর ডাকবাংলোতে আগুন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এব্যাপারে হাটহাজারী থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব শর্মা জানান, বেশ কিছু নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে ডাকবাংলোয় আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় তারা নিচ তলার স্টোর রুমে থাকা দুটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়।
এর আগে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষের সময় হেফাজতের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ডাকবাংলো ও স্থানীয় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে হামলা চালায়।
বর্তমানে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যাপক পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪
মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আল্লামা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, ভোর থেকে এখনও শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোরে চট্টগ্রামের হালিশহর বাকলিয়া এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে নেতা-কর্মীরা। এছাড়া রাস্তায় অবস্থান করছে। জেলার বাঁশখালী পটিয়া ফটিকছড়িতসহ বিভিন্ন উপজেলায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ চলছে।
সিলেটে শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে, ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার বাস
হেফাজতে ইসলামের ডাকে সিলেটে শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে। তবে সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। সিলেটের আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও বাস ও যাত্রীবাহী গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না।
রবিবার ফজরের নামাজের পর হেফাজতের কর্মীরা নগরীর কোর্ট পয়েন্টসহ বিভিন্ন এলাকায় মিছিল নিয়ে পিকেটিং করে। এছাড়াও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে ইট বিছিয়ে এবং কাগজ জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করে।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সকাল সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। নগরীতে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করছে।
এদিকে, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে সকল ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠেকাতে সিলেটে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী। রবিবার ভোরে হেফাজত নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নামার সাথে সাথে পুলিশও অবস্থান নিয়েছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে। হরতালের সমর্থনে হেফাজতের মিছিল চলাকালে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেলেও কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা দিচ্ছে না পুলিশ।
অপরদিকে, পুলিশের পাশপাশি সারাদিন সিলেটে মাঠে থাকবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এছাড়া নগরীতে ছয় জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও মাঠে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪
মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) পাশপাশি আমর্ড পুলিশ এবং র্যাবও মাঠে থাকছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নগরীর কোর্ট পয়েন্টে, তালতলা, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, মিরাবাজার, শিবগঞ্জ, উপশহর, মদিনা মার্কেট, মেজরটিলা, টিলাগড়সহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এবং মোড়গুলোতে অবস্থান নিয়েছে হেফাজত নেতা-কর্মীরা। থেমে থেমে স্লোগান দিচ্ছেন তারা। এছাড়াও ১৫-২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে শহরময় ঘুরে পিকেটিং করছেন হেফাজতের প্রায় অর্ধশত নেতা-কর্মী।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি এস এম আবু ফরহাদ জানান, সিলেটে শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: নওগাঁর রানীনগর ও আত্রাই উপজেলায় অর্ধ দিবস হরতাল পালিত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সংঘর্ষ এবং চারজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে রবিবার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।