মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে মেয়ের মৃত্যুদণ্ড
দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রী ও দুই মেয়ে মিলে বাবাকে হত্যার দায়ে এক মেয়ের ফাঁসির আদেশ এবং অপর মেয়ে ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সময় প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরের ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত হাফেজ আবুল বাশার জেলার সালথা উপজেলার খোয়ারাগট্টি এলাকা বাসিন্দা ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নিলুফা আক্তার নিহতের মেয়ে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: নেত্রকোণা আদালতে আরও ১টি মামলা
দণ্ডপ্রাপ্ত বাকি দুজন হলো- (স্ত্রী) সাহিদা পারভিন ও (মেয়ে) হাফিজা বেগম।
মামলার বিবরণী সূত্রে জানা যায়, নিহত হাফেজ আবুল বাশার তার প্রথম স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে ফরিদপুর শহরের আলীপুর এলাকায় বসববাস করতেন। আবুল বাশার দ্বিতীয় বিবাহ করায় প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না।
এর জের ধরে ২০১৬ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে প্রথম স্ত্রী ও দুই মেয়ে মিলে বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর গভীর রাতে জবাই করে হত্যা করে।
এ ঘটনার পরের দিন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নিহতের ভাই লোকমান ফকির বাদি হয়ে হত্যা মামলা করে। মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেন।
ফরিদপুর জজ কোটের পিপি মো. নওয়াব আলী মৃধা জানান, হাফেজ আবুল বাশার হত্যা মামলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ঢাবি ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতার নামে মামলা
লক্ষ্মীপুরে মাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আমেনা বেগমকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার দায়ে তার ছেলে রেদওয়ান হোসেন মিলনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি নিজেই তার মাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলা: দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাধা নেই
দণ্ডপ্রাপ্ত মিলন রামগনক উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মিলন রাগান্বিত হয়ে তার মা আমেনাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে কাপড় ও কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টার দিকে ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা তাদের বাসার গ্লাস ভেঙে দেখতে পায় মেঝেতে আগুন জ্বলছে। পরে দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে সবাই মেঝেতে আমেনার লাশ দেখতে পায়। আগুনে আমেনার শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিলনকে আটক করে। একইদিন ভুক্তভোগী আমেনার ভাই টিপু সুলতান বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে বলা হয়, চিকিৎসার জন্য মিলনকে দুই থেকে তিনজন ডাক্তার দেখায় তার মা আমেনা। এ নিয়েই তিনি মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ফজরের আযানের আগ মুহূর্তে মিলন তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ কাপড় ও কম্বল মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
২০২২ সালের ২২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. অলিউল্লাহ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় কলেজ শিক্ষক হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলা: দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাধা নেই
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (৩ মে) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীনই আট বিচারপতির বেঞ্চ ২১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেছেন।
এতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্য করে আইনগত কোনো বাধা থাকল না। এখন তারা শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের সুযোগ পাবেন।
অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে অ্যাডভোকেট শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নিয়ম অনুসারে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে এ রায় রাজশাহীর আদালতে পাঠানো হবে। রাজশাহীর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবেন। এরপর তা কারাকর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছালে তাদের ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলার রিভিউ খারিজ, ২ আসামির ফাঁসি বহাল
জানা যায়, এর আগে গত ২ মার্চ অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামিসহ দণ্ডিত তিনজনের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যদের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
শিক্ষক তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে গত বছরের ৫ এপ্রিল রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে তাহেরের একসময়ের ছাত্র, পরে বিভাগীয় সহকর্মী মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তাহেরের বাসভবনের তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। সালাম ও নাজমুলের যাবজ্জীবন বহাল থাকে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। পরে মৃত্যুদণ্ড বহালের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর এবং যাবজ্জীবন সাজা পুনর্বিবেচনা চেয়ে সালাম পৃথক আবেদন (রিভিউ) করেন। চেম্বার আদালত হয়ে এই রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগে ওঠে। শুনানি শেষে গত ২ মার্চ আদেশ দিলেন আপিল বিভাগ।
২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরের ম্যানহোলে তাহেরের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সেদিন তার ছেলে মতিহার থানায় মামলা করেন।
মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আসামি সালাম ও নাজমুলকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক তাহের হত্যা: মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত
কিশোরগঞ্জে বিষাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে নিজ শিশুকন্যাকে হত্যা, মায়ের মৃত্যুদণ্ড
ইঁদুর মারার বিষাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে নিজ শিশুকন্যাকে হত্যার অপরাধে এক নারীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আছমা আক্তার কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার মেয়ে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজাল রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে আছমা আক্তার তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া নিজ কন্যাসন্তান শিউলি আক্তার মায়াকে জোর করে ইদুর মারার বিষাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে ও গলায় হেডফোনের তার পেঁচিয়ে হত্যা করে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, আছমা আক্তারের প্রথম স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এই দম্পতির সংসারে শিউলি আক্তার মায়া নামের একটি কন্যাসন্তান ছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে গাজীপুর জেলার এক যুবকের সঙ্গে আছমা আক্তারের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। কিন্তু দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় সে কিশোরগঞ্জে তার বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন।
আরও পড়ুন: ৪০ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করে ৯৯৯ এ মায়ের ফোন!
২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আছমা আক্তার তার বাবা-মাসহ অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে কলহে লিপ্ত হয়। কলহের এক পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া নিজ কন্যাসন্তান শিউলি আক্তার মায়াকে জোর করে ইদুর মারার একটি বিষাক্ত ট্যাবলেট খেতে বাধ্য করে। দ্বিতীয় বিষাক্ত ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় স্বজনেরা বাধা দিলে সে শিউলির গলায় হেডফোনের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করলে গুরুতর আহত হয় শিশুটি। আশংকাজনক অবস্থায় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা শিউলিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত শিউলি আক্তার মায়ার নানা সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে আছমা আক্তারকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট আছমাকে একমাত্র আসামি হিসেবে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: ফতুল্লায় শিশু হত্যায় মায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড, প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
বরিশালে সৎ মায়ের ছোড়া গরম পানিতে কিশোরের মৃত্যু!
কুমিল্লায় পরিবহন নেতাকে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লায় পরকীয়ার জেরে পরিবহন নেতাকে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামের শান্তি রঞ্জন শীলের ছেলে তাপস চন্দ্র শীল (২৫), একই গ্রামের আউয়াল কমিশনারের বাড়ির মৃত রেজাউল করিম রাজা মিয়ার স্ত্রী মোসা. আলো আক্তার (৩০) এবং একই জেলার চান্দিনা উপজেলার বশিকপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়া জয়নাল মেম্বার বাড়ির আ. সামাদ ওরফে সামাদ সরকারের ছেলে মো. রাসেদ (২৮)।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
নিহত রেজাউল করিম ওরফে রাজা মিয়া মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার পুরাতন চরচাষি ছায়েদ আলী মুন্সী বাড়ির মৃত ছোয়াব আলী বেপারীর ছেলে।
জানা গেছে, তিনি দাউদকান্দি বাসস্ট্যান্ডে গজারিয়া পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৩ জুন আ. আউয়াল কমিশনারের বসত ঘরের পাশ থেকে তার ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর তার ভাই মো. খাজা মিয়া (৪৮) বাদী হয়ে পরকীয়া প্রেমের জের ধরে রাজা মিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সন্ধেহভাজন মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী আলো আক্তারকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং অপর দুই আসামি তাপস চন্দ্র শীল ও রাসেদ এর নাম বলেন। পুলিশ অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করলে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করে।
আদালত ২০১৫ সালের ২৭ মে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। পরে ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি রাসেদ উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি মোসা. আলো আক্তার ও তাপস চন্দ্র শীল পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এই রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মামলার এজাহারকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ শিগগিরই রায় কার্যকর করার জন্য জোর দাবি জানান।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, আমরা রায়ের কপি হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
আরও পড়ুন: নাটোরে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আমেরিকা ফেরত আকবর হোসেন বাবুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিচারক নাসরিন জাহান এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- লিপি আক্তার, রহমত উল্লাহ রনি, কামাল হোসেন, তাজুল ইসলাম ও সজিব। তারা সবাই নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার উলুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা নিহতের ছোট ভাইয়ের বউ লিপি আক্তার। অন্যরা হত্যাকাণ্ডে সহযোগী।
রায়ের সময় লিপি আক্তার ও সজিব পলাতক ছিলেন। বাকি তিন আসামির সামনেই রায় পড়ে শোনান বিচারক।
আরও পড়ুন: নাটোরে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহিদ হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১ আগস্ট নোয়াখালী-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফফরগঞ্জ এলাকায় একটি ডোবার মধ্যে থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে জানা যায় যে উদ্ধার লাশ নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার উলুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমেরিকা ফেরত আকবর হোসেন বাবুলের। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম।
এ ঘটনায় কুমিল্লা লাকসাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মিল্টন রহমান বাদী হয়ে পাঁচ জনকে আসামি করে একটি হত্যা দায়ের করেন।
এতে ১৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। আসামিদের মধ্যে তাজুল ইসলাম রুবেল ছাড়া বাকি চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কেন অসাংবিধানিক নয়: হাইকোর্ট
নাটোরে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
নাটোরের সিংড়ায় কলেজছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার রায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। খালাস দেওয়া হয়েছে একজনকে।
বুধবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- সাব্বির আহমেদ, রেজাউল ওরফে রাব্বি, নাজমুল হক, রাজিবুল হাসান, রিপন ও শহিদুল। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- মনিরুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আতাউল ইসলাম ও রেজাউল করিম। খালাস দেওয়া হয়েছে নাছির নামে একজনকে। একই সঙ্গে সবাইকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে তা আদায় করে ভূক্তভোগীকে প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিশেষ পিপি আনিসুর রহমান জানান, ২০১২ সালের ১৯ অক্টোবর বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই গ্রামের ওই কলেজ ছাত্রীকে কৌশলে পাশের সিংড়া উপজেলার কলম মির্জাপুর গ্রামে নিয়ে যায় সাব্বির আহমেদ। সারাদিন ঘোরার পর রাতে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে মির্জাপুর ঈদগাহ মাঠে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় তাকে।
নাটোরে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
আরও পড়ুন: যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কেন অসাংবিধানিক নয়: হাইকোর্ট
সিলেটে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কেন অসাংবিধানিক নয়: হাইকোর্ট
যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর একমাত্র শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার ইকুইটি রাইটস অ্যান্ড গভর্নেন্স ট্রাস্টের করা এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ অ্যান্ড ড্রাফটিং শাখার সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন: স্ত্রীর মামলায় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মনজুর আলম।
আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।
যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো শাস্তির বিধান উল্লেখিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, ‘মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদণ্ড বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’
এই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ডিসেম্বরে হাইকোর্টে রিট করে সংগঠনটি। আজ (রবিবার) ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে ডাক্তার স্ত্রীর করা মামলায় ডাক্তার স্বামী গ্রেপ্তার
সিলেটে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটের গোলাপগঞ্জে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে সিলেট জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম-আতিকুর রহমান রাহেল (৩০)।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সিলেটের গোলাপগঞ্জে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবা আবদুল করিম খান (৬০) ও মা মিনারা বেগমকে (৫০) কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন আতিক হোসেন খান ওরফে আতিকুর রহমান রাহেল নামক এক ব্যক্তি।
পরে, তার ভাই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে ২৮ মার্চ গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত আতিককে গেপ্তার করে। এরপর ধারাবাহিক বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন সিলেট জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন আহমদ জানান, সকল সাক্ষ্য প্রমাণে আতিকুর রহমান দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
তবে, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সকালে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে আবদুল করিম খান এর ছেলে আতিক হোসেন খান ওরফে আতিকুর রহমান রাহেল বাড়ির সামনের গাছ কাটতে গেলে তার বাবা করিম খান ও তার মা মিনারা বেগম বাধা দেন। এসময় তাদের সঙ্গে ছেলের বাকবিতণ্ডা হলে এক পর্যায়ে আতিক হোসেন খান উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা কোদাল ও দা দিয়ে বাবা ও মায়ের ওপর হামলা করেন।
স্থানীয়রা তাদের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে ছেলে আতিক হোসেন খান ওরফে আতিকুর রহমান রাহেল পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই করিম খান মৃত্যুবরণ করেন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা মিনারা বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে মিনারা বেগমকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে হঠাৎ আবার শরীর খারাপ হয়ে গেলে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে ছেলের দাফনের পর বাবার মৃত্যু
সিলেটে অটোরিকশা চালকের লাথিতে ক্যান্সার রোগীর মৃত্যু!
মাদারীপুরে রাজিব হত্যা: ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
মাদারীপুরে রাজীব নামে এক যুবককে হত্যা মামলায় ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ মামলার রায় দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় আজিজ হত্যা: ৬ জনের যাবজ্জীবন
এ সময় আদালতে ২২ আসামি উপস্থিত ছিলেন। রায়ে চার জনকে খালাস দেয়া হয়েছে এবং বাকি তিন আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারীপুর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিংহ।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে মামা আলী হাওলাদারের নার্সারিতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন রাজিব সরদার। পথে পৌর শহরের হরিকুমারিয়া এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কয়েকজন দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর যখম করেন।
এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর সময় পথেই তিনি মারা যান।
এ ঘটনার তিনদিন পর নিহতের মামা আলী হাওলাদার বাদী হয়ে জামাল হাওলাদার, রহিম হাওলাদার, আছাদ হাওলাদারসহ ৪৭ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে সদর থানার তৎকালীন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব হোসেন তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। যুক্তিতর্ক শেষে উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে মঙ্গলবার এ আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
আরও পড়ুন: সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জয়পুরহাটে প্রতিবেশীকে হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড