লালমনিরহাট
লালমনিরহাট হানাদারমুক্ত দিবস আজ
আজ ৬ ডিসেম্বর, হানাদারমুক্ত দিবস পালন করছে উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে লালমনিরহাট থেকে পালিয়ে যায়। এর মাধ্যমে মুক্ত হয় পুরো জেলা।
মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে ৩ মার্চ পাকসেনারা সড়কপথে লালমনিরহাট দখল করে। দখলের পর বিহারী, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহায়তায় দখলদাররা শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এসব নৃশংসতার সাক্ষী হয়ে আছে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বহু গণকবর।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন জানান, পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টারযোগে লালমনিরহাটে পৌঁছালে স্থানীয় পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ ওসি মীর মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এতে বহু পাক সেনা ও অবাঙালি সহযোগী নিহত হয়। প্রতিশোধ নিতে দখলদাররা বাঙালিদের ওপর নির্বিচারে হামলা শুরু করে; হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং নারী-শিশুদের ওপর নির্যাতন চালায়।
তিনি জানান, মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ ত্রিমুখী আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ৬ ডিসেম্বর ভোরে তারা রাজাকার ও আলবদরদের নিয়ে লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে দুটি বিশেষ ট্রেনে রংপুর ও সৈয়দপুরের দিকে পালিয়ে যায়। তিস্তা নদী পার হওয়ার পর ফেরার পথে তারা তিস্তা রেলসেতুতে বোমা বর্ষণ করে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৩ ঘণ্টা আগে
লালমনিরহাটে ডাকবাক্স হয়ে উঠছে গল্প, যোগাযোগে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া
একসময় মানুষের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল হাতে লেখা চিঠি। সুখ-দুঃখের খোঁজখবর থেকে শুরু করে প্রেম-ভালোবাসার বার্তা, সামাজিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো সংবাদ—সবই পৌঁছাত ডাকপিয়নের ঝুলিতে থাকা সেই চিঠির মাধ্যমে। আর চিঠি আদান-প্রদানের ভরসা ছিল রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা লাল রঙের ডাকবাক্স। তবে তরুণ প্রজন্মের কাছে সেই লাল ডাকবাক্স ক্রমেই কেবল অতীতের গল্প হয়ে উঠছে।
কালের পরিক্রমায় প্রযুক্তির অগ্রগতিতে ডাকবাক্স এখন প্রায় হারিয়ে গেছে। যোগাযোগে ডাকবাক্সের জায়গা দখল করেছে মোবাইল ফোন, ই-মেইল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
এসব মাধ্যম মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় দ্রুততা এনেছে। কিন্তু এই পরিবর্তনের ফলে চিঠির কাগজে লেখা আবেগ ও সম্পর্কের অনন্য সৌরভ আজ আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে একসময় ডাকবাক্স ছিল যোগাযোগের শেষ ভরসা। পরিবারের কিশোর সদস্যদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা লেগে যেত—কে আগে গিয়ে চিঠি ফেলবে, সেই নিয়ে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কিংবা অফিস-আদালতের প্রয়োজনীয় সংবাদ—সবই যেত ডাকবাক্সের মাধ্যমে।
কিন্তু আজ এসব ডাকবাক্স ব্যবহার না হওয়ায় পড়ে আছে অবহেলায়। কোথাও ভাঙাচোরা, কোথাও আবার মরিচায় ক্ষয়ে গেছে লাল রঙ।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে একটি খাল খননে ফিরেছে কৃষকের ভাগ্য, বদলে গেছে ২৫ হাজার একর জমির চিত্র
আদিতমারী উপজেলা ডাকঘর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের শাখা অফিসগুলোতে একসময় প্রতিদিন নিয়মিত খোলা হতো ডাকবাক্স। বর্তমানে আর প্রতিদিন খোলার প্রয়োজন পড়ে না। চিঠির ব্যবহার কমে যাওয়ায় ডাকবাক্সগুলো দিন দিন অচল হয়ে পড়ছে।
লালমনিরহাট জেলা পোস্টমাস্টার নূরনবী বলেন, এই জেলায় ৮১টি পোস্ট অফিস রয়েছে। ডাকবাক্সগুলো নিয়মিত খোলা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। তবে আগের মতো আর কেউ চিঠি ফেলে না। উপজেলা ও শাখা পর্যায়ের ডাকবাক্সগুলোতে ব্যক্তিগত চিঠি এখন খুব কমই পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ডাকবীমা কার্যক্রম ও অফিস-আদালতের চিঠিপত্র ছাড়া ব্যক্তিগত চিঠি নেই বললেই চলে।
একসময় সম্পর্কের মায়াজাল আর আবেগের প্রতীক ছিল ডাকবাক্স। প্রযুক্তির যুগে সেই স্মৃতিময় যোগাযোগ মাধ্যম আজ কেবল অতীতের গল্প হয়ে যাচ্ছে।
৫৬ দিন আগে
লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ, প্রস্তুত ৪৬৮ মণ্ডপ
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে লালমনিরহাটে বইছে উৎসবের আমেজ। শহর থেকে গ্রাম—প্রতিটি স্থানেই চলছে জমজমাট প্রস্তুতি। জেলার বিপণিবিতান ও মার্কেটগুলোতে এখন চোখে পড়ছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। যা ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে।
এ উপলক্ষে দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লালমনিরহাট শহরের মার্কেটগুলোতে কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ। নারীদের শাড়ি, থ্রি-পিস, শিশুদের পোশাক, পুরুষদের শার্ট-প্যান্ট-পাঞ্জাবি, কসমেটিকস, গহনা ও ঘর সাজানোর সামগ্রী কেনার হিড়িক পড়েছে। ঋতুভিত্তিক ছাড় (সিজনাল ডিসকাউন্ট) ও ক্যাশব্যাক সুবিধার কারণে বিক্রি বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাহান শপিং কমপ্লেক্স, পাটোয়ারী শপিং কমপ্লেক্স, পৌর শপিং কমপ্লেক্স, ফ্যাশন পার্ক, চয়েস ফ্যাশন, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, একতা বস্ত্রালয়, সিটি গার্মেন্টস, আড়ং ফেব্রিক্স ও দুলাল গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দর্জির দোকানগুলোতেও ব্যস্ততা বেড়েছে।
শহরের বাটা মোড়ে কেনাকাটা করতে আসা তিলোত্তমা চক্রবর্তী বলেন, বাবার জন্য ২ হাজার টাকায় জামা-প্যান্ট, দাদুর জন্য ৮০০ টাকায় ফতুয়া কিনেছি। মায়ের জন্য শাড়ি ও বোনের জন্য পোশাক কিনতে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হয়ে গেল চাঁদপুরের শতবর্ষী দাতব্য চিকিৎসালয়
বিক্রেতারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী পোশাক আনার ফলে বিক্রি ভালো হচ্ছে। সন্ধ্যার পর ভিড় বেড়ে যায়।
প্রশাসনের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় মোট ৪৬৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬২টি, আদিতমারীতে ১১৪টি, কালীগঞ্জে ৯১টি, হাতীবান্ধায় ৭২টি এবং পাটগ্রামে ২৯টি মণ্ডপে পূজা হবে।
শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনে জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে একাধিক মতবিনিময় সভা করেছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারাও পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করছেন। বড়বাড়ী বাজারের শিবকালী ও দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নিমাই চন্দ্র পাল বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় আনন্দঘন পরিবেশে পূজার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট লালমনিরহাট সদর উপজেলার আহ্বায়ক হিরালাল রায় বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, এটি আমাদের সামগ্রিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে লালমনিরহাটে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের যে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের গর্বের বিষয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ধারা অটুট রেখে আনন্দ ও নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসব উদযাপন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিলীন হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ উৎসবের সোনালি দিন
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট লালমনিরহাট সদর উপজেলার সদস্য সচিব ধনঞ্জয় কুমার রায় বলেন, লালমনিরহাটে অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর মতো ধর্মনিরপেক্ষ নেতা থাকায় আমাদের বিশ্বাস, দুর্গাপূজার মতো বড় ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে। তার আন্তরিক সহযোগিতা ও প্রশাসনের প্রস্তুতি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই সুন্দর ধারা ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে বলে মনে করেন তিনি।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে, পাশাপাশি গোয়েন্দা সদস্যরাও সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, দুষ্কৃতিকারীদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কোনো চেষ্টাই সফল হবে না। পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আমাদের নেতাকর্মীরা একযোগে কাজ করবে।
৭৪ দিন আগে
খুঁড়ে রাখা সড়কের হাঁটু পানিতে ভাসছে ভেলা, চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কাজ করার জন্য সেটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। তাতে বৃষ্টির পানি জমে পরিণত হয়েছে নালায়, হয়ে উঠছে মরণফাঁদ। ভেলায় চড়ে সড়ক পাড়ি দিচ্ছেন স্থানীয়রা। তবে নিত্যদিন দুর্ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষের নজর নেই সংকটময় এ সড়কে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের দুহুলি–জোরগাছ জিসি সড়ক (দৈর্ঘ্য ৫ কিমি ২৫০ মিটার) উন্নয়ন প্রকল্পে ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। দরপত্র অনুযায়ী কাজ পায় বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। তারা পারফরমেন্স সিকিউরিটি জমা দিলেও কার্যাদেশ না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি।
এরই মধ্যে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সড়কের কাজ হাতিয়ে নেয় এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনায় এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী ও কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাঁশের সরু সাঁকোই আট গ্রামের মানুষের ভরসা
পরে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কাজ বন্ধ করে দিলেও আগেই প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক খুঁড়ে ফেলা হয়। এতে সড়কটি এখন পুরোপুরি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি এখন হাঁটু পানির নালায় পরিণত হয়েছে। এতে পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টকর। ভ্যান, রিকশা কিংবা অ্যাম্বুলেন্স চলাচল একেবারেই বন্ধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ সমস্যার সমাধান ও সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
৭৯ দিন আগে
লালমনিরহাটে বাসচাপায় স্কুলছাত্র নিহত, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় ইমাম ইসলাম (১৩) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার দিঘীরহাট এলাকায় ব্র্যাক কার্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমাম উপজেলার সিংগিমারী শস্য গুদাম এলাকার সৌদি প্রবাসী নুর ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় হাতীবান্ধা সহর উদ্দিন সরকার সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের ৪ জন নিহত
পুলিশ জানিয়েছে, স্কুল ছুটির পর মহাসড়ক হয়ে বাড়ি ফিরছিল ইমাম। দিঘীরহাট এলাকায় পৌঁছালে বুড়িমারী থেকে আসা ঢাকাগামী ‘ফাওমিতা পরিবহনের’ একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সে।
স্থানীয়রা জানান, তারা বাসটি আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলেও চালক পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এতে সড়কের দুপাশেই বেশকিছু যানবাহন আটকা পড়ে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হাতীবান্ধা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় কুমার জানান, ঘাতক বাসটি আটক রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৯৩ দিন আগে
মজুদ করা আলু নিয়ে বিপাকে লালমনিরহাটের কৃষক-ব্যবসায়ীরা
আলুর দাম না থাকায় হিমাগারে সংরক্ষিত আলু নিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। হিমাগারে রাখা ৬০ কেজির এক বস্তা আলুর উৎপাদন ব্যয় ও ভাড়া মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার টাকা খরচ পড়লেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এতে প্রতি বস্তায় লোকসান হচ্ছে অন্তত ৬০০ টাকা।
কৃষকরা বলছেন, বাজারে দাম না থাকায় তারা আলু বিক্রি করছেন না। ফলে হিমাগারে মজুদ কমছে না। গত বছর এ সময়ে হিমাগার থেকে ৪০ ভাগ আলু বিক্রি হলেও এ বছর এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ২০ ভাগেরও কম। এতে লোকসানের পাশাপাশি নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হিমাগার মালিকরাও।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার টন। জেলার ৯টি হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৭৮ হাজার টন আলু।
এ বছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাননি। অথচ গত বছর ভালো দাম থাকায় কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েই লাভবান হন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার অধিকাংশ ব্যবসায়ীও কৃষকদের পাশাপাশি হিমাগারে আলু মজুদ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ওএমএসের মাধ্যমে আলু বিক্রির চিন্তা করছে সরকার: কৃষি উপদেষ্টা
হিসাব অনুযায়ী, হিমাগারে আলু মজুদের সময় এক বস্তার খরচ হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। এর সঙ্গে ভাড়া যোগ করে মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। কিন্তু চার মাস সংরক্ষণের পর এখন ওই এক বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। সেখান থেকে হিমাগার ভাড়া বাদ দিলে কৃষকের হাতে থাকছে মাত্র ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
১০৩ দিন আগে
তিস্তায় পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি স্থানীয়দের
লালমনিরহাটে উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে টানা চার দিন ধরে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে করে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। তবে আজ সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও স্থানীয়দের দুর্ভোগ কমেনি।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ২টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯২ মিটার, যা বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে।
তিস্তাপাড়ের মানুষ ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, চার দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে তা টানা তিন দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়ার ফলে লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে। নদীর দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নতুন নতুন এলাকা ডুবে গেছে; পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
এর মধ্যে পাটগ্রামের দহগ্রাম; হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্দ্ধন, বাহাদুরপাড়া; সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপরে, পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ
টানা চার দিনের বন্যায় পানিবন্দি পরিবারগুলো আগে থেকেই রয়েছে চরম দুর্ভোগের মধ্যে। এখন পানি কমতে থাকলেও শুরু হয়েছে নতুন উপদ্রব। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ হানা দিচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকায়।
১১২ দিন আগে
লালমনিরহাটে সীমান্তে বিএসএফের পুশইনের চেষ্টা, ৯ বাংলাদেশি নাগরিক আটক
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ৯ বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে পুশইন করার সময় আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ভোরে বুড়িমারী সীমান্ত এলাকার মাছিরবাড়ি নামক স্থান থেকে তাদের আটক করে তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ (৬১ বিজিবি)-এর একটি টহল দল।
আটকদের মধ্যে চারজন পুরুষ, তিনজন মহিলা এবং দুই শিশু রয়েছে।
আটকদের নাম হলো— মো. মোশাররফ হোসেন (৫০), তার স্ত্রী মোছা. পারভিন আক্তার (৪০) এবং তাদের তিন ছেলে মো. রাব্বি হোসেন (২৬), মো. নাহিদ হাসান (২৪) ও মো. সজীব আলী (১৬)। এছাড়া মোশাররফ হোসেনের মা মোছা. কোহিনূর নেছা (৭০) এবং মো. রাব্বি হোসেনের স্ত্রী মোছা. বর্ষা আক্তার (২২) ও তাদের দুই শিশু সন্তান মো. রেহান হোসেন (১৮ মাস) ও মোছা. জয়া খাতুন (৩)। সকলের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ার মঙ্গলহাটা গ্রামে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে চাপে রাখতেই পুশইন করছে ভারত: মির্জা ফখরুল
বিজিবি সূত্র জানায়, আটক ব্যক্তিরা প্রায় ১০ বছর আগে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। সেখানে গুজরাট প্রদেশের শচীন এলাকায় হকারি ব্যবসা করতেন। পরবর্তীতে ৯৮ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুশইনের চেষ্টা করলে বিজিবি তাদের আটক করে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, আটক নয়জন বর্তমানে ৬১ বিজিবি'র হেফাজতে আছেন। বুধবার বিকালে তাদের পাটগ্রাম থানায় সোপর্দ করা হবে।
তিনি আরও জানান, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
১১৪ দিন আগে
লালমনিরহাটে বিদ্যুতায়িত হয়ে কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু, আহত ৩
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে যামিনী কান্ত রায় (৫২) নামে এক কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সারপুকুর ইউনিয়নের সবদল এলাকার মৃত হেদল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও তিনজন কাঠমিস্ত্রী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন—জগদীশ (৪৮), রাশেদ (২০) ও সুজন (২৬)।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, যামিনী কান্ত পাশের ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামের মহর উদ্দিনের বাড়িতে ঘর মেরামতের জন্য কাজ করছিলেন। কাজের সময় ঘরের বেড়া সরাতে গিয়ে বিদ্যুতের মিটারের তারে স্পর্শ করলে তিনি বিদ্যুতায়িত হন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে আরও তিন কাঠমিস্ত্রী বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা সুস্থ হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’
১২৮ দিন আগে
বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, ধুবনি বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তীব্র স্রোতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা এলাকায় একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ধুবনি এলাকায় একটি পুরনো বাঁধ ভেঙে গেছে, ফলে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।’
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টায় হাতীবান্ধায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২০ মিটার যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই পানি বাড়তে থাকে এবং বিকেলের দিকে স্রোতের গতি বেড়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে দ্রুতগতিতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে লোকালয়ে। বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নদীপাড়ের মানুষ ও পাউবো জানায়, কয়েক দিন ধরে ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় উজান থেকে আসছে পানি। ফলে তিস্তা নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়ে গেছে। কয়েক দিন ধরে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি, তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তা অতিক্রম করে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বাড়ছে, দেখা দিতে পারে বন্যার আশঙ্কা
গাতকাল রাত ৯টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানিপ্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের হাজার হাজার পরিবার। ডুবে গেছে তিস্তা চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ।
১২৯ দিন আগে