শেখ হাসিনা
জাতির সেবা করতে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান শেখ হাসিনার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারের শেষ সময়ে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, 'আজ আমি নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইতে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।’ ভাষণটি প্রচার হয় সন্ধ্যা ৭টায়।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের 'উদয়াচল' কবিতা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ডাক এসেছে, এখন রাস্তায় নামার সময়।”
২৪ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন দীর্ঘস্থায়ী করতে, মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কাজ করতে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তিনি আরও পাঁচ বছরের মেয়াদ চান।
আরও পড়ুন: আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হবে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পরপর তিন মেয়াদে (২০০৯-২০২৩) সাম্য ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে জনকল্যাণমুখী সমাজ বিনির্মাণের প্রক্রিয়ায় 'গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা' অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আপনাদের মূল্যবান ভোট পেয়ে আমরা যদি আবার সরকার গঠন করতে পারি, তাহলে আমরা আমাদের গৃহীত কর্মসূচির বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে সক্ষম হব। এটি আমাদের জীবনযাত্রার অবস্থার আরও উন্নতির সুযোগ দেবে।’
শেখ হাসিনা অতীতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, এই দীর্ঘ যাত্রায় তিনি যা কিছু অর্জন করেছেন তা জনগণের সমর্থন ছাড়া সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, 'আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি, তাহলে আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, বিষয়টি ক্ষমার চোখে দেখুন। আমি যদি আবার সরকার গঠন করতে পারি, তাহলে ভুলগুলো সংশোধনের সুযোগ পাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।’
শেখ হাসিনা জনগণকে তার পরিবার মনে করেন জানিয়ে তার উপর আস্থা রাখার অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, 'আসুন আমরা সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করি।’
গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী সব রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন এমন কোনো ধারণা লালন না করে, যা দেশের সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে।
ক্ষমতাসীন দলের প্রধান বলেন, তার দল ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সংসদে পাস হওয়া কোনো আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের সরকার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল এবং যখনই তারা ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, সরকার ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের খাদ্য, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছে।
দলের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ১২টি অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: অন্যরা ক্ষমতায় আসে খেতে, আওয়ামী লীগ আসে দিতে: আইনমন্ত্রী
এগুলো হলো:
১. সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চর্চা ও প্রচার করা।
২. সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে দাম রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা।
৩. কর্মসংস্থানভিত্তিক শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
৪. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
৫. সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থার যান্ত্রিকীকরণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ।
৬. কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নয়ন।
৭. গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত অবকাঠামো ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
৮. ব্যাংক বিমা ও আর্থিক খাতের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
৯. নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সাশ্রয়ী করা।
১০. সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে ব্যক্তি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
১১. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা এবং তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
১২. সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা।
গত ১৫ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ, মাথাপিছু আয় ৫ গুণ, বাজেটের আকার ১২ গুণ এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ১৩ গুণ, জিডিপির আকার ১২ গুণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ গুণ, রপ্তানি আয় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বার্ষিক রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬ গুণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৫ গুণ।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ৯ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রপ্তানি আয় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৫ গুণ হ্রাস পেয়েছে।
পানীয় জলের কভারেজ ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। স্যানিটারি ল্যাট্রিন ৪৩ দশমিক ২৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৮৪ থেকে কমে ২১ হয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ৩৬০ থেকে কমে ১৫৬ হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু এখন ৭২ দশমিক ৮ বছর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আট গুণ বেড়েছে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারের হার ২৮ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কারিগরি শিক্ষায় সাক্ষরতার হার ২২ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ ছাড়া শস্যের উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ।
তিনি বলেন, 'আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আমরা ঢাকায় মেট্রোরেল চালু করেছি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছি এবং পাতাল রেল নির্মাণের উদ্বোধন করেছি। আমরা রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছি।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র রক্ষায় আবারও শেখ হাসিনাকে প্রয়োজন: ওবায়দুল কাদের
তিনি বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ভূগর্ভস্থ সড়ক 'বঙ্গবন্ধু টানেল' নির্মাণ করেছি। কক্সবাজারে একটি দৃষ্টিনন্দন রেলওয়ে স্টেশনসহ ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১' উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, যেকোনো অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০০৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বহুগুণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০০৯ সালে জিডিপি ছিল মাত্র ১০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে জিডিপি বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ক্ষমতাসীন দলের প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক ঋণের পরিমাণ সাত গুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০০৯ সালের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা; যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
সমালোচকদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এটা দুঃখজনক যে তারা জাতির কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে না। দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করাই তাদের চরিত্র। মনে হচ্ছে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখলে এসব মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে।’
তিনি বলেন, ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ এবং আজকের বাংলাদেশের মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। মানুষ আজ উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে।
পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শান্তি চায় এবং যুদ্ধ পরিহার করে।
আমরা ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসান চাই। আমরা ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার অবসান চাই। বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে রয়েছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের স্বার্থে রবিবার ভোটকেন্দ্রে যাবেন: নারায়ণগঞ্জের জনসভায় শেখ হাসিনা
গণতন্ত্রের স্বার্থে রবিবার ভোটকেন্দ্রে যাবেন: নারায়ণগঞ্জের জনসভায় শেখ হাসিনা
বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র আছে প্রমাণ করতে রবিবারের নির্বাচনে জনগণকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিন।’
৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ফরিদপুরে আ. লীগের নেতা-কর্মীদের উপচেপড়া ভিড়
এই নির্বাচন ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে উল্লেখ করে আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তি বজায় রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, 'এই নির্বাচন যাতে না হয় সেজন্য এখনো ষড়যন্ত্র চলছে।’
সহিংসতার জন্য বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের মধ্যে কোনো মানবিকতা নেই।
তিনি বলেন, 'তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এটা তাদের ইচ্ছা, কিন্তু এদেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা কখনই মেনে নেবে না।’
আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) যাতে জনগণের সম্পদ নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির চক্রান্ত বন্ধ করতে নৌকায় ভোট দিন: ফরিদপুরে শেখ হাসিনা
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তার দলের মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (নারায়ণগঞ্জ-১), শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪), নজরুল ইসলাম বাবু (নারায়ণগঞ্জ-২) ও আবদুল্লাহ আল কায়সারের (নারায়ণগঞ্জ-৩) জন্য ভোট চেয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
বিকাল ৩টা ১৩ মিনিটে নৌকার আকৃতির বিশাল মঞ্চে উঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানসহ আওয়ামী লীগের চার প্রার্থী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল, স্লোগান ও হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে। সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে মাঠ।
শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সজ্জিত হওয়ায় পুরো নারায়ণগঞ্জ শহর উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা
বিদেশিদের হুমকি-ধমকির পরোয়া করেন না শেখ হাসিনা: কাদের
শেখ হাসিনা ভিসা নীতি ও নিষেধাজ্ঞার কোনো পরোয়া করেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিদেশি কোনো শক্তির হুমকি-ধমকির পরোয়া করেন না। তিনি ভয় পান একমাত্র স্রষ্টাকে। তিনি ভালোবাসেন বাংলাদেশের জনগণকে।’
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে ‘ভালো নির্বাচনের’ সাক্ষী হবে বিশ্ববাসী: ওবায়দুল কাদের
তিনি আরও বলেন, ‘ভালো লোকেরা নির্বাচিত হলে দেশ ভালো চলবে, নতুবা দুঃশাসন অনিবার্য।’
কাদের বলেন, ‘তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছে বোমা মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করার। এই বিএনপিকে চিরতরে লাল কার্ড দেখাতে হবে।’
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। পরে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
আরও পড়ুন: অপতৎপরতার জবাব দিতে দলে দলে ভোটকেন্দ্রে আসুন: কাদের
আওয়ামী লীগ নয়, ড. ইউনূসকে সাজা দিয়েছেন আদালত: কাদের
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে শেষ জনসভায় ভাষণ দিতে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় ফতুল্লার মাসদাইরে শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।
জনসভার মঞ্চ তৈরিসহ সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে জেলা ও নগর আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে প্রস্তুত নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা ঠেকাতে ৭ জানুয়ারি ভোট দিন: শেখ হাসিনা
ব্যানার, তোরণ ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জের লিঙ্ক রোডসহ জনসভাস্থলের আশপাশের এলাকা। জনসভা উপলক্ষে সাজানো হচ্ছে শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। জনসভার জন্য একদিকে মঞ্চ সাজানো হয়েছে। মঞ্চকে ঘিরে নিরাপ্ত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হচ্ছে। জনসভার জন্য নারী ও পুরুষের আলাদা বসার জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া জনসভার মাঠের বাইরেও নগরীর বিভিন্ন অঞ্চলে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে মাইক (লাউড স্পিকার) লাগানো হয়েছে। সেই সঙ্গে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করে জনসভার পোস্টার দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো শহর।
জনসভাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবু রযেছেন সেখানে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির চক্রান্ত বন্ধ করতে নৌকায় ভোট দিন: ফরিদপুরে শেখ হাসিনা
এ সময় শামীম ওসমান গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য নতুন বার্তা দেবেন এটাই সবার প্রত্যাশা। কারণ নারায়ণগঞ্জ হলো আওয়ামী লীগের জন্মস্থান। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নারায়ণগঞ্জের প্রত্যাশাও অনেক।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা এ দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করছেন। নিরাপত্তা রক্ষীরা ভালো কাজ করছে। তারা যেভাবে বলছে আমরা সেভাবে কাজ করছি। কিন্তু আমরা নিজেরাও নেত্রীর কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছি। আমি আশাবাদী এই সমাবেশটা নারায়ণগঞ্জের সর্বকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে।
নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন নারায়ণগঞ্জের যেমন গুরুত্ব রয়েছে, তেমনি এই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের নেতা-কর্মীদেরও গুরুত্ব রয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে লাখ লাখ মানুষের জনসমাগম হবে।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আগাম বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য চলছে মাইকিং। জনসভায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মাইকিং করছে নেতা-কর্মীরা। এদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা
বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা ঠেকাতে ৭ জানুয়ারি ভোট দিন: শেখ হাসিনা
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগের উপযুক্ত জবাব দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'শুধু ভোট দেবেন না, ভোট রক্ষাও করবেন। অগ্নিসংযোগ, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী বিএনপি ও জামায়াতকে উপযুক্ত জবাব দিন।’
সোমবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী জোয়ারে বিএনপির নেতা-কর্মী সমর্থকরাও শামিল হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত দেশকে ধ্বংস করতে চায় বলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বদা সজাগ থাকার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত আগামী নির্বাচনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আপনাদের ভোট কেড়ে নিতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী ৭ জানুয়ারি সকালে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে কেউ তাদের ভোটাধিকার ও নির্বাচন কেড়ে নিতে না পারে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা
ফরিদপুরে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা
আগামীকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ফরিদপুরে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিকাল ৩টায় ফরিদপুর জেলা শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে জনসভাকে ঘিরে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠের পূর্ব পাশে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ জানান, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সফরকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
জেলা শহরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জনসভায় আসা পুরুষ ও নারী সমর্থকদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া রাস্তার পাশে গাছ ও সমাবেশস্থল রঙ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগের টেলিগ্রাম চ্যানেল চালু
প্রায় ১ লাখ লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছেন ইশতিয়াক।
এতে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফরিদপুরের আরও তিনটি আসনের প্রার্থীরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ফরিদপুর সফর করেন এবং একই স্থানে এক জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী জোয়ারে বিএনপির নেতা-কর্মী সমর্থকরাও শামিল হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ বাংলাদেশ মেনে নেবে না।
নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'যারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে, তাদের একদিন উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আর আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে কেউ আমাদের বিষয়ে নাক গলাতে এলে আমরা তা গ্রহণ করব না। অতীতে বাংলাদেশ এটা গ্রহণ করেনি।’
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা টুঙ্গিপাড়ায় নির্বাচনী জনসভা ও কোটালীপাড়ায় সমাবেশে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেই শক্তিগুলো ব্যর্থ হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'আমরা তাদের দেখাব যে আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিজয় অর্জন করতে পারি।’ ইনশাল্লাহ, দারিদ্র্যের হার আরও কমিয়ে ধনী দেশগুলোর চেয়ে কম শতাংশে নামিয়ে এনে বাংলাদেশকে গৌরবোজ্জ্বল অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে।
বাংলাদেশের অগ্রগতির স্বার্থে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া না করার জন্য নতুন ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারা তরুণ প্রজন্ম ও যুব সমাজ থেকে এসেছেন এবং যারা প্রথমবার ভোটার হয়েছেন, তাদের প্রথম ভোট নষ্ট করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: জানুয়ারির নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি আরও বলেন, 'যারা নতুন ভোটার হবেন, তাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরও এগিয়ে যেতে, নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে অগ্রগতির বর্তমান গতি বজায় রাখতে এবং আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তার দল বিশ্বাস করে যুবশক্তি মানেই বাংলাদেশের অগ্রগতি।
তিনি বলেন, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কারিগরি শিক্ষা, প্রযুক্তিগত শিক্ষা এবং আধুনিক শিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা একটি দক্ষ ও স্মার্ট যুব সমাজ গড়ে তুলব।’
বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসংযোগ ও মানুষ হত্যা শুরু করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপি চোরাগুপ্তা হামলা করে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে: ড. মোমেন
তিনি বলেন, 'যারা জনগণকে পুড়িয়ে মারে, ক্ষতি করে বা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করে তাদের যথাযথ শাস্তি দিন, আমি সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান ও জায়গা থেকে তা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ভোট দেওয়া জনগণের অধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই আজ ভোট ও খাদ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি আপনাদের সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে কেউ এ দেশ ও এ দেশের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ তন্ময় এমপি, শেখ জুয়েলের স্ত্রী শেখ শাহানা ইয়াসমিন চম্পা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত বিশ্বে টাকা বিলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে: আইনমন্ত্রী
শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করুন: টুঙ্গিপাড়ার জনসভায় শেখ হাসিনা
আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমি চাই এই নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক।৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সুষ্ঠু জবাব দেব, যাতে কেউ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেকেই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে যাতে দেশে নির্বাচন না হয় কারণ তারা তৃতীয় দলকে ক্ষমতায় আনতে চায়।
আরও পড়ুন: বিএনপি মানুষ পোড়ায়, বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই তাদের: বরিশালে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৃতীয় পক্ষ কী করতে পারে? তারা দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারে না। আপনারা দেখেছেন ২০০৭ সালে তারা কী করেছিল।’
ফিলিস্তিনের হাসপাতালগুলোতেও ইসরায়েল বোমা হামলা চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক জিয়া লন্ডন থেকে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্স, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে ঠিক একই কাজ করছেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি বলেন, 'যদি আল্লাহ চান এবং আমরা আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে লন্ডনে অবস্থান করে আমাদের দেশের জনগণের ক্ষতি ও মানুষ হত্যার আদেশ দেন তা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে তাকে সেখান থেকে (দেশে) এনে শাস্তি দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে বরিশালে প্রধানমন্ত্রী, নগরীতে উৎসবমুখর পরিবেশ
বিএনপি মানুষ পোড়ায়, বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই তাদের: বরিশালে প্রধানমন্ত্রী
বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। কারণ তারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে।’
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বরিশাল নগরীর ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রচার সমাবেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার পাশে ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধু জনগণের কল্যাণের জন্য।
বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতি হচ্ছে মানুষ পোড়ানো উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ কি তাদের চায়? না, জনগণ তাদের চায় না।
তিনি বলেন, আমরা যখন জনগণের জন্য দেশের উন্নয়ন করি, তখন বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসংযোগ করে।
এই প্রসঙ্গে তিনি ট্রেনে সাম্প্রতিক অগ্নিসংযোগের হামলার কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, তারা একজন মা ও শিশুসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে।
তিনি ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগের কথা স্মরণ করে বলেন, তারা ২০১৩ ও ২০১৪ সালেও একই কাজ করেছিল। এখন তারা আবারও অগ্নিসংযোগ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি-জামায়াতের এসব কাজের নিন্দা জানাই।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে বরিশালে প্রধানমন্ত্রী, নগরীতে উৎসবমুখর পরিবেশ
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির মিত্র জামায়াত একাত্তরের গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ, মানুষ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল।
তাদের কয়েকজন নেতাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এক পক্ষ সন্ত্রাসী, খুনি, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী, অর্থ পাচারে জড়িত, এতিমের টাকা পাচারকারী এবং সব ধরনের অপকর্মে জড়িত; আর অন্যটি যুদ্ধাপরাধীদের।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন চায় না।
তিনি বলেন, ‘তারা এটা বানচাল করতে চায়, আমি আপনাদের অনুরোধ করছি আপনারা সবাই ৭ জানুয়ারি সকালে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আপনার প্রতীক কী হবে? তা হবে নৌকা।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে জনগণের সেবা করার জন্য শেখ হাসিনা আবারও জনগণকে স্মরণ করিয়ে দেন কীভাবে মহানবী নূহ (আ.) এর নৌকা মহাপ্লাবনের সময় মানব জাতিকে রক্ষা করেছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭০ সালে মানুষ নৌকায় ভোট দেওয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
আরও পড়ুন: জানুয়ারির নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আ. লীগের সফল পররাষ্ট্রনীতির কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তিশালী অবস্থানে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীরা রেহাই পাবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের উপর নৃশংস হামলার সঙ্গে জড়িতদের রেহাই দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘এই দেশ অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সাক্ষী। কিন্তু সাংবাদিকদের উপর এমন টার্গেট করে (কোনো আন্দোলনে) হামলার ঘটনা ঘটেনি। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছিল, তাই তারা সাংবাদিকদের মাথা লক্ষ্য করে হামলা করে। আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করার ভাষা নেই।’
বৃহস্পতিবার গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিরোধীদল বিএনপির সমাবেশে ভয়াবহ হামলায় আহত বেশকিছু সাংবাদিক বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। ‘ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির বাড়ি, জজ কোয়ার্টার ও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপরও হামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর আগে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলার কোনো নজির নেই।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারের প্রত্যাশায় উৎসবমুখর রংপুর
তিনি বলেন, ‘নির্দেশ দানকারীদের (এই ধরনের জঘন্য কাজের) অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে বানচাল করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি আহত সাংবাদিকদের খোঁজ-খবর নেন।
অনুষ্ঠানে আহত সাংবাদিকদের বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়, যা ২৮ অক্টোবর গণমাধ্যমের কর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক ও এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু এবং একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার রংপুরে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
মানুষ পুড়িয়ে হত্যা সহ্য করা হবে না: শেখ হাসিনা