আদালত
নারায়ণগঞ্জে জামিন পেয়ে আদালত থেকে বের হয়ে আসামির মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জে জামিন পেয়ে আদালত থেকে বের হয়ে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত জালাল আড়াইহাজার থানার একটি জালিয়াতি মামলার আসামি।
গত বুধবার তাকে গ্রেপ্তারের পর তাকে আড়াইহাজার থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর আদালতে হাজির করে। এ সময় আসামি পক্ষের উকিল জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকে জামিন দেন।
আরও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু
জামিন পাওয়ার পরই আদালত প্রাঙ্গণেই অসুস্থ হয়ে পড়েন জালাল। পরে তার ছেলে পুলিশের সহায়তায় তাকে শহরের ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, আসামিকে আড়াইহাজার থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে সে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে জামিন দেন।
তিনি আরও বলেন, পরে বের হয়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাকে তার ছেলের সঙ্গে পুলিশ সদস্য ও লেগুনা ঠিক করে দেই। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগারে বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু
শিশু ধর্ষণ মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড
জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
কোনও মামলা ছাড়াই নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে (৪৫) র্যাবের হেফাজতে নেওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে নেওয়ার আগ পর্যন্ত যে প্রক্রিয়া তা আইনগতভাবে কতটুকু সঠিক ছিল তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, আটকের পর সুলতানা জেসমিনকে সম্মানজনক জায়গায় (থানা অথবা কার্যালয়ে) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কিনা এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া আইনগতভাবে হয়েছে কিনা? তাকে একটা অভিযোগের ভিত্তিতে তুলে নেওয়া র্যাবেরজুরিসডিকশনে (এখতিয়ার) ছিল কিনা?
রাষ্ট্রপক্ষকে আগামী বুধবারের মধ্যে এসব প্রশ্নের জবাব দাখিল করতে বলেছেন। একই সঙ্গে ওইদিন বেলা ২টায় এ ব্যাপারে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।
এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা এক রিটের শুনানিকালে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতিআহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এসব প্রশ্নের জবাব চান।
এর আগে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর গত সোমবার আদালতের নজরে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে মৃত সুলতানার সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তলব হাইকোর্টের
বিষয়টিতে শুনানির পর হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা এবং মৃত্যুর কারণ জানতে সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেখতে চান আদালত।
সুলতানা জেসমিনকে আটকের কারণ, স্থান, সময়, হেফাজতে নেওয়ার কারণ, জিজ্ঞাসাবাদ সুনির্দিষ্ট তথ্যও চান আদালত।
আর এসব তথ্য জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে এক দিনের সময় দেওয়া হয়।
আর আদালতের দৃষ্টিতে আনা ওই আইনজীবীকে বলা হয় রিট আবেদন নিয়ে আসতে।
নির্দেশমত গতকাল মঙ্গলবার আদালতে প্রতিবেদন দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। সেখানে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছিল না।
অন্যদিকে, র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ও র্যাবের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেন ওই আইনজীবী।
সোমবার বেলা আড়াইটায় এ রিটের শুনানি শুরু হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
আবেদনের আরজি তুলে ধরে রিটকারী মনোজ কুমার বলেন, ‘এ ঘটনায় কোনো বিষয়ও বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। র্যাব গঠন করা হয়েছিল দাগি চোর-ডাকাত, মাদক চোরাকারবারি ধরতে। এই নারীকে (সুলতানা জেসমিনকে) আটক করা হয় ২২ মার্চ। আর ২৪ মার্চ তার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই আইনে কাউকে গ্রেপ্তারের এখতিয়ার পুলিশের থাকলেও র্যাবের নেই। তাছাড়া ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৭ ধারা অনুসারে সুলতানা জেসমিনকে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়নি।'
আরও পড়ুন: নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিস সহকারীর মৃত্যু : অভিযোগ পরিবারের
তিনি আরও বলেন, 'কোনও অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতেই র্যাব এ ধরনের বেআইনি ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা আজ অসহায়। র্যাব যাকে ইচ্ছা তাকে তুলে নিয়ে উধাও করে দিচ্ছে। এটি (সুলতানা জেসমিনকে আটক, হেফাজত, জিজ্ঞাসাবাদ) সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে করা হয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সুলতানা জেসমিনের মাথায় আঘাত থাকার কথা বলেছেন, যা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসেছে। ফলে র্যাবের কর্মকাণ্ড ও নারীর মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। যে কারণে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।’
এরপর শুনানিতে আসেন অ্যাটর্নি জেনারেল। নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সুলতানা জেসমিনের উচ্চ রক্তচাপ ছিল।
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তুলে ধরে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ ১১ টা ৫০ মিনিটে নওগাঁ সদরের নওজোয়ান মাঠের সামনে থেকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুসারে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। পরে জনসাধারণের সামনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। তার আগে আটক ওই নারীর মোবাইল ফোন থেকে অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য ও নথি উদ্ধার করা হয়।’
২৪ ঘণ্টার বেশি সময় র্যাব ওই নারীকে আটকে রাখেনি দাবি করে আমিন উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশে সোপর্দ করতে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে আটক নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুর সোয়া ১টায় প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তার রক্তচাপ ছিল ৯০/১৬০। এরপর ওইদিন রাত ৯টা ২০ মিনিটে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তিতে রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এটি সম্পূর্ণভাবে ভুল যে, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ওই নারীকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।’
শুনানির এক পর্যায়ে আদালত বলেন, একজন নাগরিক জঘন্য অপরাধী হতে পারে। অত্যন্ত খারাপ কাজ করতে পারে। সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া (প্রসিডিউর) আছে। দিনশেষে আইনগত প্রক্রিয়া অনুযায়ী কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যখন র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করলো তখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে পুলিশ আটক করলেও একটা কথা ছিল। আইনে তাদের ক্ষমতা আছে। কিন্তু র্যাবের কি ওই আইনে সে ক্ষমতা আছে? কথা হচ্ছে র্যাব তাকে উঠিয়ে নিয়েছে, এরপরই তাকে পুলিশে দেবে। কিন্তু এখানে সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাকে উঠিয়ে নেওয়ার পর অন্তবর্তী সময়ে যেভাবে ঘটনা ঘটেছে আমাদের উদ্বেগটা সেখানে। পুরো প্রক্রিয়া আইনগতভাবে হয়েছে এবং র্যাবের কি জুরিসডিকশন (এখতিয়ার) ছিল?
আদালত আরও বলেন, সবার মনে প্রশ্ন কারণ এটা বড় করে পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সবার ধারণা তাকে র্যাবের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে। এটা একটা হাইপোথিটিক্যাল (অনুমানিক) বিষয়।
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেলেএ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আগে ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসুক। তারপর এটা বোঝা যাবে।
আদালত বলেন, সবার মনে যে প্রশ্ন, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে নাকি অন্য কিছু এটা পরিষ্কার করতে হবে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে জামাতুল আনসারের প্রশিক্ষক কমান্ডারসহ ৮ জঙ্গি গ্রেপ্তার: র্যাব
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে কোন অপরাধ করে, তাহলে তার দায় রাষ্ট্র নেবে না।
আদালত এসময় বলেন, কেউ যেন এ ঘটনায় ভিকটিম না হয়। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। এই মহিলা একজন সরকারি কর্মচারী।
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, তাকে আটকের পরই তার মোবাইলের কথোপকথনসহ যাবতীয় তথ্য প্রিন্ট আউট করা হয়েছে। টাকা যে পাঠানো হয়েছে, মোবাইলে তার ছবি রয়েছে, কথোপকথন প্রকাশ পেয়েছে। যখনই এগুলো প্রিন্ট আউট হয়েছে, তখনই তার প্রেসার বেড়ে গেছে।
এ সময় আদালত বলেন, আমাদের প্রধান উদ্বেগ হচ্ছে আইনগত প্রক্রিয়া। এর বাইরে অনুমাননির্ভর বিষয়ে যাবো না। মামলা হবে কি হবে না সেটা রাষ্ট্র ও ভুক্তভোগীর পরিবারের বিষয়।
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মামলা হবে কি হবে না সেটা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে। আর রিটকারীর যে মূল যুক্তি ২৪ ঘন্টা। এই যুক্তি তো থাকছে না। তদন্ত করতে হলে তো যুক্তি থাকতে হবে।
এসময় রিটকারী মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, পুরো বিষয়টা কতটুকু আইনসঙ্গতভাবে হয়েছে নাকি হয়নি আমি সেটার তদন্ত চাই।
আদালত বলেন, আমরা আইনী পয়েন্টে থাকতে চাই। কোনও মামলা ছাড়াই এভাবে তাকে উঠিয়ে নেওয়ার জুরিসডিকশন র্যাবের আছে কিনা?
এখানে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, র্যাবের আলাদা রেগুলেটরি আইন আছে। সেখানে কোনও ক্ষমতা আছে কিনা দেখতে হবে। এছাড়া তাকে সাড়ে ১০টায় উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং সোয়া ১টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হল। হাসপাতালে নেওয়ার আগ পর্যন্ত র্যাবের হেফাজতে রাখার এখতিয়ার আছে কিনা, একজন মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছে, তার ভিত্তিতে তাকে উঠিয়ে নিতে পারে কিনা?
র্যাব বলেছে, সে অপরাদ স্বীকার করেছে, তার কাছ থেকে কিছু ম্যাটেরিয়াল (উপাদান) সংগ্রহ করেছে-এগুলো করতে পারে কিনা? তার মাথায় আঘাতের বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। কিছু পত্রিকায় বলা হয়েছে ২২ তারিখেই ব্রেইন হ্যামারেজ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এখন তার ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট আসতে সময় লাগবে। এ অবস্থায় তাকে তুলে নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া সঠিক ছির কিনা। এর পেছনে আইনগত ভিত্তি, ময়নাতদন্ত রিপোর্টসহ তিনটি বিষয় দেখে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য আগামী বুধবার বেলা ২টায় সময নির্ধারণ করেন।
নাটোরে শিশু ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন ও একজনের ১০ বছরের আটকাদেশ
নাটোরের বড়াইগ্রামে ২০১৬ সালে শিশু ধর্ষণ মামলার রায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং শিশু আইনে একজনকে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহিম এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন সোহাগ (২৯) ও সাগর (২৭)। এদের দুইজনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে ভুক্তভোগীকে প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আটকাদেশ প্রাপ্তের নাম রনি।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় খুনের ১৫ বছর পর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
বিশেষ পিপি আনিসুর রহমান জানান, ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার ঢুলিয়া গ্রামে জলসার মেলা থেকে ১০ বছরের শিশুকণ্যাকে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী বিলের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করে সোহাগ, সাগর ও রনি নামে তিনজন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত ও প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক সোহগ ও সাগরকে যাবজ্জীবন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অপর আসামি রনিকে শিশু আইনে ১০ বছরের আটকাদেশ দেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ড
ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে বৃহস্পতিবার দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সুরাটের একটি আদালত।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এক নির্বাচনী সমাবেশে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম নিয়ে 'অবমাননাকর' মন্তব্যের জন্য দায়ের করা মানহানির মামলায় তাকে এই কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তবে, আদালত জামিনে রাহুল গান্ধীর জামিন মঞ্জুর করেছেন এবং তাকে উচ্চ আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়ে ৩০ দিনের জন্য সাজা স্থগিত করেছেন।
রায়ের পরে বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে বলেন, তিনি (রাহুল) যাই বলুন না কেন তা কংগ্রেস দল এবং দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতারা বলছেন যে বিজেপি সরকার রাহুল গান্ধীর কণ্ঠস্বরকে দমন করার চেষ্টা করছে এবং তিনি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
কংগ্রেস নেতারা আরও অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগ চাপের মধ্যে রয়েছে।
দলের প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা এই মামলায় বিচারক পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীকে আটকের পর ছেড়ে দিল দিল্লি পুলিশ
অন্যদিকে, রায়ের কয়েক ঘন্টা পরেই ভিনীত জিন্দাল নামক সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী, লোকসভার স্পিকারের কাছে কারাদণ্ডের জন্য রাহুল গান্ধীকে হাউস থেকে অযোগ্য ঘোষণা করার অভিযোগ করেন।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা করেছেন সুরাট পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে কর্ণাটকের কোলারে একটি লোকসভা নির্বাচনী সমাবেশে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়?’
গত সপ্তাহে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এইচ ভার্মার আদালত উভয় পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তি শুনানি শেষ করেন এবং চার বছরের পুরনো এই মানহানির মামলায় রায় ঘোষণার জন্য ২৩ মার্চ দিন ধার্য করেন।
রায় ঘোষণার সময় ওয়ানাডের সাংসদ রাহুল গান্ধী অন্যান্য কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি আদালতের রায়কে স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচারের অভিযোগে রাহুল গান্ধীকে তলব
পূর্ণেশ মোদীর আইনজীবী কেতন রেশমওয়ালা বলেছেন, রাহুল গান্ধীকে আইপিসির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
রাহুল গান্ধী গত বছরের জুনে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
এই মামলায় দলের প্রাক্তন প্রধান সোনিয়া গান্ধীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির একটি আদালত মামলায় এই দুই নেতাকে জামিন দিয়েছিলেন।
রাহুল গান্ধীর প্রপিতামহী ইন্দিরা গান্ধীও আদালতের প্রতিকূল রায়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং ১৯৭৫ সালের জুন মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্টে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ছয় বছরের জন্য কোনো নির্বাচিত পদে থাকা থেকে বিরত ছিলেন।
এই রায়ের ফলে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইন্দিরা গান্ধীকে নির্বাচনী অসদাচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করার সময়, বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা তাকে সংসদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করেন এবং তার ওপর যে কোনও নির্বাচিত পদে থাকার ব্যাপারে ছয় বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
আরও পড়ুন: প্রিয়াঙ্কার অবৈধ গ্রেপ্তার যোগী সরকারের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার প্রকাশ: রাহুল গান্ধী
চট্টগ্রামে আদালত চলাকালে আইনজীবীর মৃত্যু
আদালত চলাকালে পুলিশকে জেরা করার সময় হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জোবাইরুল হক নামে চট্টগ্রাম আদালতের এক আইনজীবী।
বুধবার (২২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুহাম্মদ আমিরুল ইসলামের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
মৃত আইনজীবী জোবাইরুলের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের চতুর্থ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
চট্টগ্রাম দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার দুপুরে আদালত চলাকালে ইয়াবা জব্দ করার একটি মামলায় বাদী পুলিশ কর্মকর্তাকে জেরা করছিলেন আইনজীবী জোবাইরুল।
এসময় হঠাৎ তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে আগুনে আরও একজনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২
মাদারীপুরে রাজিব হত্যা: ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও একটি মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
রবিবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার হাজিরা দেন।
মামলার আসামি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে: আইনমন্ত্রী
এছাড়া অপর আসামি সেলিম ভূঁইয়ার আইনজীবী মো. জাকারিয়া হায়দার আদালতে সময়ের আবেদন করলে আদালত সময়ের আবেদন না-মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
অপরদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন এসেছে
আবেদন পেলে খালেদার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী
উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বাগেরহাট বিএনপির ১৫ নেতা
বাগেরহাটে নাশকতা মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। সোমবার (১৩ মার্চ) বিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি এমডি সেলিম এবং বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের দ্বৈত বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, বিএনপি নেতা শাহেদ আলী রবি, সোহেল তরফদার, শহিদুল ইসলাম, এমডি সাইদ শেখ, রফিকুল নকিব, মো. আবুল হাসান, মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার, মো. ফিরোজ বিশ্বাস, শেখ সিরাজুল ইসলাম, মীর মোশাররফ হোসেন, আমিরুল শেখ ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আইয়ুব আলী মোল্লা বাবু।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে বিএনপির পদযাত্রা থেকে ২৫ নেতাকর্মী আটক
বিএনপি নেতাদের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল বলেন, নিম্ন আদালতে নেতাকর্মীদের জামিন না হওয়ায়। আমরা উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করি। বিচারপতি এমডি সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের দ্বৈত বেঞ্চ আমাদের ১৫ নেতাকর্মীকে জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে তারা কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
এর আগে গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালামের মুনিগঞ্জস্থ বাসভবন এবং পুরাতন বাজারসহ শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে নাশকতার মামলা দায়ের করে আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেই থেকে বাগেরহাট জেলা কারাগারে রয়েছে আটক নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
খুলনায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মী কারাগারে
সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে ২৭ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ আদালতের
ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে চিকিৎসা ভাতা হিসেবে নেয়া ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ৬ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে টাকা জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কাগজ আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
গত বছর ২৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ দুর্নীতির পাঁচটি মামলা বাতিল করে রায় দেন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, চিকিৎসা ভাতা হিসেবে উত্তোলন করা এই টাকা (২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা) রায়ের কপি বিচারিক আদালত গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
সেই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে গত ৬ মার্চ পৌঁছায়। এখন সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তার চালান কপি আদালতে দাখিল করা হবে বলে সোমবার (১৩ মার্চ) জানান তার অন্যতম আইনজীবী মোহাম্মদ হান্নান ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে আদালতের নিরাপত্তায় ১১ দফা নির্দেশনা প্রধান বিচারপতির
বিদেশে চিকিৎসার জন্য অবৈধ উপায়ে সরকারি অর্থ অনুমোদন এবং তা নগদে তুলে আত্মসাৎ, সরকারি বাসভবনের আসবাব কেনা ও তা আত্মসাৎ এবং অতিরিক্ত অর্থ তোলার অভিযোগে দুদক এ পাঁচটি মামলা দায়ের করে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান ও উপ-সহকারী পরিচালক এসএম খবীরউদ্দিন বাদী হয়ে ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাগুলো দায়ের করেন।
পরবর্তীতে এই পাঁচ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নেন।
এ অবস্থায় পাঁচ মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জমির উদ্দিন সরকার। হাইকোর্ট মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন।
শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৯ মে হাইকোর্ট বিভক্ত আদেশ দেন। পরবর্তীতে তৃতীয় বেঞ্চ রুল খারিজ করে দেন। এরপর তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দা থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ যেতে পারবেন না বিডিনিউজের সম্পাদক
খুলনায় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ, আদালতে অভিযুক্তের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে
খুলনায় আদালতের এজলাসে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে ভুক্তভোগীকে বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম খান বিয়ের আদেশ দিলে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, ২০২০ সালে ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজু শেখের পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর ভুক্তভোগীর আগের ঘরের ছেলেসহ তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিয়ের আশ্বাসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেপ্তার ৫
এসময় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করায় ভুক্তভোগী অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। অভিযুক্ত রাজু তাকে সন্তান নষ্ট করতে বলে এবং এরপর থেকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ভুক্তভোগী জানতে পারে ২০২১ সালের ১৬ জুন রাজু অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। ভুক্তভোগী রাজুকে ফোন দিলে রিসিভ করতো না। একবার শুধু ফোন রিসিভ করে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলতে বলে।
এরপর ২০২১ সালের ২০ জুন ভুক্তভোগী লবণচরা থানায় মামলা করে।
সেই মামলায় আজ বিচারক ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজুর বিয়ের আদেশ দেন এবং কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
আরও পড়ুন: বিয়ের আশ্বাসে রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগে চিকিৎসক গ্রেপ্তার
খুলনায় সাবেক ভিসি ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা নিতে আদালতের নির্দেশ
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. শহীদুর রহমান খান ও বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় ধর্ষণ মামালার এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম এ আদেশ দেন।
আদালতে অভিযোগকারী নারী ২০২১ সাল থেকে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যায়ে কর্মরত রয়েছেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহম্মেদ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অফিসের পঞ্চম তলায় আবাসিকভাবে থাকতেন সাবেক উপাচার্য।
আরও পড়ুন: পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা নিতে আদালতের নির্দেশ
সেখানে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রেজিস্টার ওই নারীকে খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন। ওই নারী প্রতিদিন খাবার পৌঁছে দিতেন। সেই সুবাদে তাকে বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন ভিসি।
এক পর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টায় খাবার দিতে গেলে পূর্ব থেকে পরিকল্পিতভাবে রেজিস্টারের সহযোগিতায় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে রেজিস্টার ওই নারীকে বলেন, ‘আজকের ঘটনা তুমি কাউকে বলবে না, তাহলে তোমার চাকরি থাকবে না, আর স্যারকে বলে স্যারের সঙ্গে তোমার বিবাহ করিয়ে দিব। তুমি তোমার স্বামীকে তালাক দিয়ে দাও।’
পরে ওই নারী চাকরির কথা বিবেচনা করে ও সামাজিক অবস্থান লোক-লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজ স্বামীকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তার স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে নারীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মেলামেশা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ভিসির মেয়াদ শেষ হলে খুলনা বদলি হয়ে যান এবং নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি সাবেক ভিসি খুলনাতে আসলে ওই নারী তার সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বিবাহ করার আকুতি জানান। তবে ভিসি তাতে রাজি হননি।
পরে ওই নারী স্বজনদের বিষয়টি জানিয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় এসি ল্যান্ড ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর আদেশ