পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের চর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের চর ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের চর ও দোসর হয়ে কাজ করেছেন। এই সত্য উন্মোচন হওয়ায় বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত 'স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সময় কেউ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে বা মুক্তিযোদ্ধাদের কোনোভাবে সাহায্য করছে, এমন কি একবেলা খাইয়েছে বা এক গ্লাস পানি খাইয়েছে জানলেও সেসব পরিবারের ওপর নেমে আসত অকথ্য নির্যাতন। আর জিয়াউর রহমান যুদ্ধক্ষেত্রে থাকে আর তার পরিবার বেগম খালেদা জিয়া দুই সন্তান নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানিদের সঙ্গে আরাম-আয়েশে থাকে। এ থেকেই তো পরিষ্কার যে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের দোসর হিসেবে, গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন। এর তো আর ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। আর জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল চিঠি লিখেছিলেন, তোমার কাজে আমরা সন্তুষ্ট, তোমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা কর না। সেই চিঠির কপি আমার কাছেও আছে।'
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপি মিথ্যাচার করে বলে- আওয়ামী লীগ নেতারা তখন কোথায় ছিল, অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার আওয়ামী লীগ সরকার যার রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম যিনি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ। এই সরকারের অধীনেই জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে ৪০০ টাকা মাসিক বেতনে চাকরি করেছেন। যদিও কোনো সম্মুখ সমরে কখনো যাননি।'
বিএনপি স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার অনেক চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বিফল হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে ২১ বছর ধরে তারা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাসকে মানুষের কাছে আড়াল করেছে, বিকৃত করেছে। কিন্তু গত ১৫ বছরে মানুষ আবার সঠিক ইতিহাস জেনেছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণাটি পরদিন ২৬ তারিখ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান কয়েকবার পাঠ করেন। এরপর আওয়ামী লীগ নেতারা একজন সেনা অফিসারকে দিয়ে পাঠ করানোর সিদ্ধান্ত নেন।'
আরও পড়ুন: দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী সে সময়ের বর্ণনা দিয়ে বলেন, 'চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধরত মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে এমবুশ নিয়ে আছেন, নড়লে যুদ্ধের ক্ষতি হবে। তখন এ দেশের মানুষের ওপর হামলার জন্য আসা পাকিস্তানি অস্ত্র সোয়াত জাহাজ থেকে খালাস করতে পাকিস্তানিদের সঙ্গে যাওয়ার পথে জনগণের বাধার মুখে পড়া মেজর জিয়াউর রহমানকে ডেকে এনে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করানো হয়। প্রথম কয়েকবার তিনি ভুল পড়েন, আওয়ামী লীগ নেতারা ঠিক করে দিলে আবার পাঠ করেন।'
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্কুলে ছুটির ঘণ্টা বাজায় যে দপ্তরী, সে ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় না, টিভি-রেডিওতে যে উপস্থাপক সংবাদ পাঠ করে, সে ওই সংবাদ সৃজনকর্তা নয়।’
ড. হাছান আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণার একজন পাঠকমাত্র। জিয়া নিজেও কখনো নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবি করেননি, যেটি নিয়ে বিএনপি এখন মিথ্যাচার করে।'
এ সময় সমাজ উন্নয়ন ও পরিবর্তনে, তরুণ সমাজকে বিপথে যাওয়া, জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ হওয়া থেকে বিরত রাখতে পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায়, সারাদেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটাতে আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. হাছান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে এ দেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটেছিল, স্বাধীনতার পরেও তা চলেছিল। ১৯৭৫ সালের পর তা ব্যাহত হয়। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সংস্কৃতিমনা মানুষকে সারাদেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটানোর আহ্বান জানাই।
সভার আয়োজক ঢাকার সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার পরিচালনায় জোটের কার্যকরী সভাপতি স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলম, কবি রবীন্দ্র গোপ, জোটের সহসভাপতি চিত্রনায়ক ও সাংসদ ফেরদৌস আহমেদ, সহসভাপতি চিত্রনায়ক মাহমুদ কলি, যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাঁচ হাজার বছরের জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন ড. ইউনূস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউনূস সেন্টারের ‘মিথ্যাচার’ ও ইসরায়েলি ভাস্করের কাছ থেকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পুরস্কার পাওয়াকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘আমি খুব অবাক হয়েছি..... এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’
তিনি বলেন, গাজায় শিশু ও নারীসহ মানুষ হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে প্রতিবাদের একটি শব্দও শোনা যায়নি।
হাসান বলেন, ‘গাজার এই পরিস্থিতিতে অধ্যাপক ইউনূস একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। এটা কী? এটার কী মানে? এর মানে কি তারা গাজায় ইসরাইলি হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করছে?’
তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসকে ইউনেস্কো পুরস্কৃত করেনি, এটা ইউনূস সেন্টার মিথ্যা প্রচার করেছে।
ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারের ঘটনা এটিই প্রথম নয়, এর আগেও তারা একই ধরনের মিথ্যাচার করেছে বলে মন্তব্য করেন ড. হাছান।
আরও পড়ুন: ইউনেস্কো পুরস্কার পাননি ড. ইউনূস: মহিবুল হাসান
এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে 'দ্যা ট্রি অব পিস' পুরস্কার দেয়নি ইউনেস্কো।
তিনি বলেন, আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে একজন ইসরায়েলি ভাস্কর 'ট্রি অব পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে ইউনূস সেন্টার যে তথ্য প্রচার করেছে তা অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। সঠিক রেকর্ড তুলে আনা জরুরি; যাতে কোনো ভুল তথ্য আমাদের দেশের সুনাম নষ্ট না করে। এটা বাংলাদেশের জন্য অপমানজনক বিধায় এ বিষয়ে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ব্যাখ্যা পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: ইউনূসকে নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে, বিবৃতি নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউনূস সেন্টার ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে মিথ্যা দাবি অব্যাহত রাখলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন মন্ত্রী। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ড. ইউনূস এবং বাংলাদেশ উভয়ের সুনাম যাতে ক্ষুণ্ন না হয় সেজন্য অবিলম্বে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বন্ধ করার আহ্বান জানান।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো: দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস
সীমান্তে বাংলাদেশিদের মৃত্যু কমেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অতীতের তুলনায় সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে, যার ফলে দুই দেশের সীমান্তে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। কিছুদিন আগে আমি যখন ভারত সফরে গিয়েছিলাম, তখন আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছি, যাতে সীমান্তে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা যায়। অতীতের তুলনায় এখন প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে।’
লালমনিরহাট ও নওগাঁয় সাম্প্রতিক সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে।
আরও পড়ুন: জিম্মি জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, সীমান্ত এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা যেন না ঘটে তা তারা দেখতে চান।
বিজিবি ও বিএসএফ যৌথ টহল, নজরদারি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি জোরদার, অপরাধী বা বাসিন্দাদের সীমান্ত অতিক্রম রোধ এবং তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হতাহতের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, যেহেতু বিজিবি ও বিএসএফ সম্পৃক্ত রয়েছে, তারা মনে করে সীমান্ত সমস্যার সমাধান হতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জিম্মি জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত করতে সরকারের প্রচেষ্টার অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা এবং একই সঙ্গে জাহাজটিকেও উদ্ধার করা। আমি শুধু বলতে চাই, আমরা অনেক এগিয়েছি।’
আরও পড়ুন: নাবিক ও জিম্মি জাহাজ মুক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, তারা যোগাযোগ রক্ষা করছেন এবং ক্রুদের উদ্ধারে বহুমুখী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জাহাজে খাদ্য সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনায় অতীতে কখনও খাদ্য সংকট দেখা দেয়নি। আশা করছি এ ক্ষেত্রেও তা হবে না।’
বাংলাদেশি জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করার ৯ দিন পর সোমালি জলদস্যুরা মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
আরও পড়ুন: জাহাজ ও নাবিকদের বিপদমুক্ত করাই লক্ষ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সারা পৃথিবীতে গাজায় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয় আর বিএনপি-জামায়াত এই হত্যার বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। তারা ইসরাইলের দোসরে পরিণত হয়েছে, এদের চিহ্নিত করতে হবে।
বুধবার(২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে একটি হোটেলে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ইফতারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও নারী। লন্ডন, ওয়াশিংটন, সিডনিসহ বিশ্বের বহু জায়গায় এমনকি ইসরায়েলের তেল আবিবেও মানুষ এই হত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। অথচ ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে নাই, কোনো বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে এই ভয়ে। অর্থাৎ তারা আজ ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী হাছান বলেন, বিএনপি-জামায়াত ভেবেছিল একটি বড় দেশ তাদের ফিডার খাওয়াতে খাওয়াতে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কিন্তু তা হয়নি। ইসরায়েলি সেনাদের অনুকরণে তারা ঢাকায় পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। আর এখন তারা হাঁটে। হেঁটে হেঁটে লিফলেট বিতরণ করে। এটা তারা করুক, কিন্তু আগের মতো আগুনসন্ত্রাস যেন না করতে যায়, তাহলে জনগণ তাদের উচিত শিক্ষা দেবে।
এ সময় ইসলামের কল্যাণে সরকারের অবদান তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইসলাম ও আলেম সমাজের কল্যাণে যা করেছেন অন্য কোনো সরকার তা করেনি। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতিদান, প্রতিটি উপজেলায় মনোরম মসজিদ, শিক্ষকসহ মক্তব, আলেমদের সম্মান প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণ আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান এএএম একরামুল হক ও অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, যুগ্ম মহাসচিব মোশাররফ হোসেন হেলালী এবং স ম হামেদ হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মারুফ আজহারী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিএনপি জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ফিলিস্তিনে ৭ অক্টোবরের পর থেকে যেভাবে শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে সেটি মানব সভ্যতার জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এখনই যদি আমরা এটি বন্ধ করতে না পারি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়ী হয়ে থাকব।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র উত্থাপিত গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীনের ভেটোদানের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত এ নিয়ে মনোবেদনায় ভুগছি এবং বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায়, যুক্তরাজ্যে, আয়ারল্যান্ডে, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবাদ চলছে। কারণ মানুষ এই অপরাধের বিরুদ্ধে।’
ড. হাছান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছিল, কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের মতে সেই প্রস্তাবে কিছু ত্রুটি ছিল। রাশিয়া ও চীনের ভেটোদানের কারণ বোধগম্য নয়, কিন্তু আমরা চাই অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি হোক, এই বর্বরতা বন্ধ হোক।’
আরও পড়ুন: ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি দেবে বাংলাদেশ
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্তে বৈধভাবে কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয়। বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকের মূল উদ্দেশ্য দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানো, যাতে জনগণের ভোগান্তি হয়।’
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বক্তৃতা শেষে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা ভারত থেকে আসা পেয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের মাঠের নেত্রীরাও ভারতীয় শাড়ি পরবেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে আপনারা ইফতার করবেন, সেহেরি খাবেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেবেন - এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।'
ড. হাছান বলেন, 'ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক যারা দিয়েছে, তাদের সঙ্গে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছে। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল, নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে আমি জানি না।'
সোমালি দস্যুদের হাত থেকে নাবিক ও জাহাজ উদ্ধার তৎপরতা
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে কী ধরনের ভূমিকা রাখা হচ্ছে- সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গতবার যখন এমভি জাহান মনি হাইজ্যাক হয়েছিল তাদের মুক্ত করতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। এখন যতদ্রুত সম্ভব তাদের মুক্ত করার চেষ্টাই আমরা করছি। এখানে অবস্থানকারী নাবিক ও জাহাজের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেভাবেই আমরা উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ‘জাহাজের মধ্যে কয়লা আছে। কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ। সুতরাং এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দাহ্য পদার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়, জাহাজের ক্ষতি হয়। সেভাবেই আমরা এগুচ্ছি এবং যারা জাহাজটি হাইজ্যাক করেছে, তারা এরই মধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করছে এবং আপনারা নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বললেও জানতে পারবেন তারাও অনেকটা আশ্বস্ত। আশা করছি, আমরা সহসাই নাবিকদের উদ্ধার করতে পারব।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন সমন্বয় সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগে চট্টগ্রামের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আন্তঃদপ্তর সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান ড. হাছান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রকল্প শেষ হতে আরও আড়াই বছর বাকি আছে। এই আড়াই বছর সময়ের মধ্যে জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সেটির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একইসঙ্গে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যাতে নিয়মিতভাবে মেনটেইনেন্স করা হয় সেটিকেও গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
আরও পড়ুন: দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে কর্মসূচির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন, আজকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য এরই মধ্যে পাঁচশ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরও তিনশ একরের বেশি জায়গা তারা পাবে, সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। এরই মধ্যে ডিপি ওর্য়াল্ড ও সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি বড় অগ্রগতি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল হলে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আরও বড় একটি নতুন বন্দর হবে, যেটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্পদ হবে এবং একইসঙ্গে এই বে-টার্মিনাল দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পণ্য সরবরাহ আমরা করতে পারব। এছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধ ও যানজট নিরসনসহ সার্বিক অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা ও প্রতি তিন মাস পরপর সমন্বয় সভা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান হাছান মাহমুদ।
চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামের উন্নয়নসংক্রান্ত সমন্বয় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ ছালাম, এম এ মোতালেব সিআইপি, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা ঘাপটি মেরে আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে গিয়ে না পেরে খেই হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে চেয়েছিল। সেজন্য তারা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে।’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চলমান রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, “স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ৯.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বেগে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক সে সময় অপশক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল। শুধু বঙ্গবন্ধু নয় স্বাধীনতারও বিরোধিতা করেছিল তারা। সেই অপশক্তির ধারাবাহিকতা এখন দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ভেস্তে দিতে, দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা প্রকাশ্যেই দেশকে পেছনে নেওয়ার জন্য ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগান দেয়।”
তিনি আরও বলেন, ‘এই রাজনৈতিক অপশক্তি বারবার দেশে গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে চেয়েছে, সেই চক্রান্তেই বিএনপি গত নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে দিবাস্বপ্নের চূড়া থেকে ধপাস করে পড়ে গিয়ে এখন হাঁটছে, লিফলেট দিচ্ছে। আপনারা হাঁটেন, দৌড়ান কিন্তু আবার যদি মানুষ পোড়ানোর অপচেষ্টা করেন, জনগণ উচিত শিক্ষা দেবে।’
‘কিছু ব্যক্তিবিশেষও এই অপশক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যারা বিশ্বের সামনে দেশকে দরিদ্র বলে অপপ্রচার চালিয়ে নিজে নানা পুরস্কার নেয়’-এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে তার কোনো চিন্তা নেই। দেশে যখন বন্যা হয় তখন তাকে পাওয়া যায় না, দেশে যখন মানুষ পোড়ানো হয় তখন তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না, দেশে যখন দুর্যোগ হয় তখন ড. ইউনুসকে বিদেশে পুরস্কার নিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।'
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ড. ইউনুসের লবিস্ট ফার্ম পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যত পুরস্কার দেওয়া হয় সেসব জায়গায় যোগাযোগ করে পুরস্কার আনে অথচ তিনি দেশের কাজে নেই -এটি অত্যন্ত হাস্যকর।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পরম আত্মত্যাগী জীবনের ওপর সংক্ষেপে আলোকপাত করেন।
ঢাকার সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান ও সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েলের পরিচালনায় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, ইসলামী চিন্তাবিদ শাইখ আকরামুজ্জামান মাদানী, যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু ও সব শহীদের আত্মার শান্তি এবং দেশ ও মানুষের কল্যাণ প্রার্থনা করে মোনাজাত পরিচালিত হয়।
দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে কর্মসূচির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে মানুষকে উৎসাহিত করা ও জনসচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধিকে সেমিনার ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির দেশ প্রতিনিধি ডোমেনিকো স্কালপেলির সঙ্গে সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি।
পৃথক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘ নারী সংস্থার দেশ প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং।
দুই কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নারী উন্নয়ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্ব আর সর্বনিম্ন মাথাপিছু জমির বাংলাদেশে খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে আবাদযোগ্য জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিকল্প নেই। মালিকানা চিহ্নিত করতে জমির মধ্যে 'আইল' দেওয়ায় বহু জমি চাষের আওতা থেকে বাদ পড়ে যায়। এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার বিষয়েও ডব্লিউএফপিকে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেবেন বলে জানান ডব্লিউএফপির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডোমেনিকো স্কালপেলি।
বৈঠকে তিনি বিদ্যালয় পর্যায়ে ও রোহিঙ্গাদের জন্য তার সংস্থার খাদ্য কর্মসূচির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: দ. কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০১১ সাল থেকে পরিচালিত স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম ও পরবর্তীতে রোহিঙ্গাদের জন্য ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা ঘাপটি মেরে আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা ঘাপটি মেরে আছে। তারা সুযোগের অপেক্ষায় আছে কখন ছোবল মারবে।’
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জিল্লুর রহমান পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় চলমান রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে আজকের রাজনীতিবিদদের অনেক কিছু শেখার আছে। সংকটে সংগ্রামে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কীভাবে ধৈর্যহারা না হয়ে অবিচল থাকতে হয়, নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল থাকতে হয়, তার উদাহরণ তিনি।’
আরও পড়ুন: দ. কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হাছান বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনায় গণতন্ত্রকে যেভাবে শেকল পরানো হয়েছিল, একজন শেখ হাসিনা না থাকলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করা সম্ভবপর ছিল না। সেই সময় শেখ হাসিনার পাশে ছায়ার মতো ছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।’
ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা প্রতিনিয়ত জাতিকে 'জ্ঞান' দিতে থাকে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তারা গত নির্বাচনের আগেও সক্রিয় হয়েছিল, আবার যদি কিছু করা যায়। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কাছে বিএনপি-জামাতের অপশক্তি যেমন পরাজিত হয়েছে, ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের স্বপ্নও তেমন ধুলিস্যাৎ হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এখন ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা, যারা দেশের ওপর শকুন আহ্বান করে, তারা ঘাপটি মেরে আছে, যদি কোনো সুযোগ কোনো সময় পাওয়া যায় ছোবল মারার জন্য। সুতরাং সতর্ক থাকতে হবে।'
আরও পড়ুন: বিএনপি জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জিল্লুর রহমান পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিশেষ অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের অনুসরণীয় নানা দিকের ওপর আলোকপাত করেন।
সভায় ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দিলীপ কুমার রায়, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহসভাপতি মো. শেখ জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যাপক জিনবোধি ভিক্ষু, ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, জিল্লুর রহমান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান খোকা, যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ, স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েল।
আরও পড়ুন: ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা ও বিএনপি একজোট হয়ে ষড়যন্ত্র করছে: তথ্যমন্ত্রী