মুক্তিযুদ্ধ
স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করে বিএনপি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে: কাদের
১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তাদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার সকালে সচিবালয়ে তার দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
দেশবিরোধী অপপ্রচার চালাতে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের সাম্প্রতিক প্রমাণের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, রাষ্ট্রের অর্জন ও ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিরোধী দল অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই এই দেশ ও মানুষের জন্য রাজনীতি করছে। দেশের সব অর্জনের সঙ্গে রয়েছে দলটি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা শেখ হাসিনার অর্জনকে বিতর্কিত করতে চায়। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেও বিতর্কিত করতে চায়।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিদের নিয়েই বিএনপির রাজনীতি: ওবায়দুল কাদের
সংলাপে কেউ না আসলেও ইসি গঠন থেমে থাকবে না: ওবায়দুল কাদের
জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
এ বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘৭৫-এর পর পদ্মা সেতু আমাদেরকে অহংকার ও মর্যাদার জায়গায় নিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করেছেন। এ বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কানেক্টিং পয়েন্ট কমলাপুর ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোতে (আইসিডি) সংযুক্ত হলেও আইসিডি পরিচালনায় সমস্যা হবে না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা আরও আইসিডি প্রতিষ্ঠা করব। সে সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’
শনিবার ঢাকায় কমলাপুরস্থ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোতে (আইসিডি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত আইসিডির মেট শ্রমিক ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: স্বপ্নের পদ্মা সেতু পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু একটি আত্মমর্যাদার নাম, একটি সাহসের নাম, বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার নাম। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অহংকারের বিজয় অর্জন করেছে। সে বিজয় এবং অহংকার; অন্ধকারে হারিয়ে যায় স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশ বিবর্ণ হয়ে যায়। সারা বিশ্বে পরিচয় পায় ক্ষুধা, দারিদ্র ও বন্যাকবলিত বাংলাদেশ। দেশে দারিদ্রতা বিক্রি করে বিভিন্ন জন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। অথচ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। দারিদ্র বিমোচন হয়নি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি দেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সপ্তম নৌবিহার পাঠিয়েও বাংলাদেশের বিজয় আটকাতে পারেনি। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি মার্কিন -বৃটিশ বেনিয়াদের সহ্য হচ্ছেনা। তারা টেনে ধরার ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্রকারীদের সম্পর্কে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীদের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি। অপপ্রচার চালিয়ে অগ্রগতি থামানো যাবে না। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু সংকট নাই। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৪তম অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশ হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, আইসিডির ম্যানেজার আহমাদুল করিম এবং আইসিডির শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তুষার খান বাবুল।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে জুনে: ওবায়দুল কাদের
কালুরঘাটে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী
চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মঙ্গলবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক ( ডিসি ) সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
এসময় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসক সম্মেলনে আমাদের মন্ত্রনালয়ের দুটি প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে একটি হলো চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ করা। কারণ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে প্রথম বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়, সেজন্য সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে। জেলা প্রশাসকদের বলেছি কোথাও জায়গা পাওয়া গেলে বা দিলে একটি স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি এর আগে যখন চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম, তখন জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম বিমানবন্দর কাছাকাছি কাট্টতলি মৌজা একটি জায়গা দেখেছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম, কাগজপত্র পাঠিয়ে দিলে সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে স্মৃতিস্তম্ভ করব।
আরও পড়ুন: বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে: তথ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে দুটি প্রস্তাব রেখে আসছি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে- ভূমির সাব-রেজিস্ট্রি অফিস আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছে, সেটার এলোকেশন অফ বিজনেস পরিবর্তন করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনলে ভাল হয়। কারণ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যক্রম ভূমি অফিসের রিলেটেড, এটি যদি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসে তাহলে কাজে গতি আসবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে। সেটা হলো- আমরা যেসব জিনিসপত্র কিনি তার জন্য ভ্যাট দোকানদাররা রাখে। কিন্তু দোকানদাররা সেই ভ্যাট ঠিকমতো জমা দেয় কিনা সে বিষয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আর জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামের দোকান থেকে যেসব পণ্য কেনা হয়; সেসব পণ্যের ক্রয় রশিদ হাতে লেখা থাকে। ফলে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা হয়। এজন্য সরকার যদি নিজ উদ্যোগে সব দোকানদের ইএফটি মেশিন সরবরাহ করে তবে রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা হবে। এতে সরকারের আয় বৃদ্ধি হবে। যদি কোনো দোকানদারের ইএফটি মেশিন কেনার সামর্থ না থাকে তবে সরকার লোন প্রদান করতে পারে। পর্যায়ক্রমে ২০টি কিস্তি বা ধাপে তাদের কাছ থেকে মূল্য কেটে নেয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ৫০ বছর হলেই বুস্টার ডোজ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র ব্যবহার করেই টিকা নিতে পারবে: শিক্ষামন্ত্রী
রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে পাসপোর্ট বাতিল করা হবে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিদেশে বসে যারা রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেয়াসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করছেন, তাদের তালিকা করা হবে। সে তালিকা অনুযায়ী পাসপোর্ট বাতিল করা হবে।’
তিনির বলেন, ‘দেখা গেছে বিদেশে থেকে অনেকে এমন মিথ্যাচার করছে যেটা...কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সে বলতে পারে, কিন্তু রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও এগুলো বললে সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। দুইটা জিনিস আমরা সবসময়ই পার্থক্য করি। একজন ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে বলতেই পারে। আরেকটা হলে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।'
আরও পড়ুন: বিএনপির প্রভু হলো পাকিস্তান: কৃষিমন্ত্রী
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ডিক্যাবের শ্রদ্ধা
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব)।
ডিক্যাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় তারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, তার পরিবারের সদস্য, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ডিক্যাব লাউঞ্জে’ বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১৬ মার্চ ডিক্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: ডিক্যাবের নতুন সভাপতি লোটাস, সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন
প্রথমবারের মতো ডিকাব মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থাপন
প্রথমবারের মতো ডিকাব মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থাপন
প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর পর প্রথমবারের মতো ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিকাব লাউঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি টাঙিয়েছে।
নতুন কমিটি গঠনের পর বৃহস্পতিবার ডিকাবের প্রথম বৈঠকে সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে নবনির্বাচিত ডিকাব কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে ‘ডিক্যাব লাউঞ্জে’ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি টাঙানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
মফিদুল হকের বোন দিলরুবা ইসলাম মারা গেছেন
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ও বিশিষ্ট লেখক মনজুরুল হকের বোন দিলরুবা ইসলাম বুধবার ভোরে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
মফিদুল হক ইউএনবিকে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটায় তিনি মারা যান।
দিলরুবা ইসলাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
দিলরুবা ইসলামের জানাজা বৃহস্পতিবার বাদ জোহর পরীবাগ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি তিন ছেলে, নাতি-নাতনি, আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু মারা গেছেন
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন
‘মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা অস্বীকার করা মানে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা’
‘প্রতিটা মানুষের জীবনে একাত্তর এসেছে। প্রতিটা মানুষকে একাত্তরে লড়াই করে বাঁচতে হয়েছে। শুধু সশস্ত্র লড়াই নয়, এর চেয়ে বড় লড়াই। জীবন ও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই। আর সেখানে বার বার আসে নারীর বিরাট ভূমিকার কথা। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের নারীর ইতিহাস অস্বীকার করা মানে শুধু ইতিহাস অস্বীকার করা নয়, বাংলাদেশকেও অস্বীকার করা।’
মঙ্গলবার ইউএনবিতে সম্প্রচারিত পডকাস্টের ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ সিরিজের চতুর্থ ও শেষ পর্ব ‘৭১ এ নারী ও যুদ্ধ সহিংসতা’ এর আলোচনায় এমনটাই বলেছেন ইউএনবি’র এডিটর অ্যাট লার্জ আফসান চৌধুরী।
একই সঙ্গে চার পর্বের এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনাও করেছেন তিনি। আফসান চৌধুরী একজন শিক্ষক, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
এর আগে ১৬ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের প্রথম পর্ব ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পরাজয়’ এবং ২৩ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘গণহত্যা ও ৭১’ এবং ২৯ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এ সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘নারী ও ৭১’।
মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নারীর যে ভূমিকা, যে অবদান- তা কী সে অর্থে স্থান পেয়েছে আমাদের ইতিহাস চর্চায়? আমাদের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধে নারীর বর্ণনায় সব সময়ই গতানুগতিক বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
নারীকে জোর করে ‘যৌনদাসী’ কিংবা পরিবার ও সমাজকে রক্ষায় নারীর আত্মাহুতি সেভাবে উঠে আসেনি আমাদের ইতিহাস চর্চায়। তেমনি উঠে আসেনি মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার করার কারণে নারীর ওপর নেমে আসা নির্যাতনের বর্ণনা।
গবেষক আফসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ছোট-ক্ষুদ্র ইতিহাস জানি। কিন্তু বৃহৎ জনগোষ্ঠীর ইতিহাস বাদ দিয়েছি। তাদের অস্বীকার করেছি।’
‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম, আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই।
মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভূমিকা বিষয়ক গবেষক সিহাবুল ইসলামের গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
বুধবার ইউএনবিতে সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠান ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘নারী ও ৭১’ এ অতিথি হিসেবে ছিলেন সিহাবুল ইসলাম। তরুণ প্রজন্মের এই গবেষক মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে হিন্দু জনগোষ্ঠী ও নারীদের ওপর পাক বাহিনীর চালানো বহুমাত্রিক নির্যাতন এবং মুক্তিযুদ্ধে এই দুই জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক অবদান নিয়ে দুটি সমৃদ্ধ বই রচনা করেছেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো নির্মম গণহত্যা নিয়ে ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ শিরোনামের চার পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে ইউএনবিতে। এর আগে ১৬ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের প্রথম পর্ব ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পরাজয়’ এবং ২৩ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘গণহত্যা ও ৭১’।
আরও পড়ুন: গণহত্যা নিয়ে ইউএনবিতে আলোচনা অনুষ্ঠান
চার পর্বের এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করছেন ইউএনবি’র এডিটর এট লার্জ আফসান চৌধুরী। তিনি একজন শিক্ষক, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন আফসান চৌধুরী।
গবেষণা করতে গিয়ে সিহাবুল ইসলাম দেখেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম, আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই। এমনকি তাদের ওপর চলা নির্যাতনের চিত্রও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণায় তেমন উঠে আসেনা।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, তেমনি এদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীদের ওপর পাকবাহিনীর চালানো বহুমাত্রিক নির্যাতনের চিত্রও আমাদের মূলধারার ইতিহাস চর্চায় উঠে আসেনি। আমাদের পত্র-পত্রিকা, পাঠ্য বই;কোথাও আমরা এইসব বিশদ ইতিহাস খুঁজে পাইনা।
গবেষক এ জন্য আমাদের গবেষকদের মানসিকতার পশ্চাদপদতাকে দায়ী করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাস জানতে গ্রামে যেতে হয়, আমাদের গবেষকরা এই কষ্টটা করতে চান না। গুগল-উইকিপিডিয়ার এই যুগে তারা,সহজ পন্থা অনুসরণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য করেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আবার গবেষক আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না।
সঞ্চালক আফসান চৌধুরীর করা এক প্রশ্নের জবাব আলোচক সিহাবুল ইসলাম আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নারীর ওপর ধর্ষণ ছাড়াও বহুমাত্রিক নির্যাতন হয়েছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী; এই নারীদের প্রকৃত ইতিহাস এই পঞ্চাশ বছরেও অদৃশ্য হয়ে আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারীর ইতিহাস ১০-২০ শতাংশও উঠে আসেনি।
আরও পড়ুন: জাতীয় গণহত্যা দিবস আজ
মুক্তিযুদ্ধে নারীর কথা বললেই আমাদের প্রচলিত গবেষণাগুলোতে শুধু শারিরীক নিপীড়নের কথাই উঠে আসে। কিন্তু নারীর অবদান শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ না। নারী সেসময় যেমন শারিরীকভাবে নির্যিাতিত হয়েছে, তেমনি অনেক নারী সরাসরি যুদ্ধ করেছে, অনেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছে। এছাড়া সেসময় অধিকাংশ সংসারের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে নারীরা। তারা ধান কেটেছে, শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছে আরও বহু কাজ করে সমাজটাকে টিকিয়ে রেখেছে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মতো নারীদের অবদানও আমাদের ইতিহাস চর্চায় না উঠে আসার কারণ হিসাবে আলোচক আমাদের গবেষকদের লিঙ্গ বৈষম্যমূলক মনোভাবকে দায়ী করেন।
সবশেষে আমাদের মূলধারার ইতিহাস চর্চায় হিন্দু ও নারীদের তথা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাস তুলে ধরার জন্য গবেষক সিহাবুল ইসলাম এ সময়ের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন। লেখা, গবেষণা, সিনেমা, অডিও-ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যম কাজে লাগিয়ে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তুলে ধরা উচিত। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই গুরু দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের হাতেই পুরো ইতিহাস চর্চার ভাগ্য নির্ধারণী পড়ে আছে। তাদের চেষ্টায়ই আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলো আমাদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণহত্যার ‘স্বীকৃতি’ আদায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) পালন করা হচ্ছে।
১৯১৪ সালের আজকের এই দিনে সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারি এ শিল্পী কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ফোক আর্ট মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার পিছনে এ মানুষটির ভূমিকা ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে কিংবদন্তি শিল্পীর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।
বেলা ১১টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।
আরও পড়ুন: লা গ্যালারিতে শুরু হলো ‘ক-সম্বন্ধীয়’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী
ঐতিহাসিকভাবে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে আঁকা ছবিগুলোর জন্য তিনি বিখ্যাত। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে কাটানো শৈশবে শিল্পের প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠেন জয়নুল। ১৯৩৩ সালে কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি। ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ছেড়ে স্থায়ীভাবে মাতৃভূমি বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ফিরে আসেন।
ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পেছনে জয়নুল সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন এবং ১৯৪৯ সালে এর অধ্যক্ষ হন। পরে এ ইনস্টিটিউট থেকেই আজকের চারুকলা অনুষদে হয়েছে।
ইনস্টিটিউট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চারুকলা অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল এবং জয়নুলের শৈল্পিক নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে শিল্পীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান এবং ইনস্টিটিউট থেকে তাকে শিল্পাচার্য (চারুকলার গুরু) উপাধিতে ভূষিত হন।
১৯৭৩ সালে জয়নুল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লেটার্স (ডি-লিট) পান। ১৯৭৫ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়। ২০০৯ সালে এ আইকনিক চিত্রশিল্পীর সম্মানে নাসা বুধ গ্রহের একটি গর্তর নাম রাখেন ‘আবেদীন ক্রেটার’।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৬ সালের ২৮ মে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মারা যান।