মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলা: মুক্তিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্য গোপন করে উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এর আগে দেওয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনতাকিমকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন— ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোরোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোরোয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করেন তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ অর্থাৎ গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি। কারাগারে আছেন কয়েক বছর ধরে। গত আগস্ট মাসে এ মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশনা দিয়েছিল দেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল আপিল বিভাগ।
কিন্তু এই নির্দেশনা গোপন রেখে হাইকোর্টে চাওয়া হয় ওই আসামির জামিন। গত ২০ নভেম্বর মুক্তিকে জামিন দেন বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পর গত বুধবার মুক্তি পান তিনি। এদিকে এ আসামির মুক্তিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে সরকারের শীর্ষ মহলে।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘মামলাটি টাঙ্গাইল জেলার হলেও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ঢাকার জেলার নাম উল্লেখ করা রয়েছে। শুধু জেলার নাম ভুলই নয়, আসামির নামও ভুল লেখা হয়েছে। ছিল না কোনো টেন্ডার নম্বর।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামিন চাইতে পারেন যেকোনো আসামি। কারণ এটা আসামির অধিকার। জামিন পেতেও পারেন। তবে এভাবে ভুল তথ্য দিয়ে জামিন হাসিল করাটা কতটা ন্যায়সঙ্গত। এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। সে অনুযায়ী বিষয়টির উপর সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে গত ২০ নভেম্বর মুক্তিকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ রবিবার প্রত্যাহার করে নেন। পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।’
প্রসঙ্গত, সহিদুর রহমান মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়।
এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
পরে পুলিশ এই চারজনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। বর্তমানে এই মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মসমর্পণ
নিপুণ রায়কে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাবেক সংসদ সদস্য ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৯ অক্টোবর) এক বার্তায় শোক প্রকাশ করেন তিনি।
শোক বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের মৃত্যুতে দল হারালো একজন নিবেদিতপ্রাণ ও একনিষ্ঠ কর্মীকে।
প্রধানমন্ত্রী তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: কবি আসাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আ.লীগ নেতা আল মামুনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাঈদীকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার’ বলায় এএইচআরসি প্রতিনিধির সমালোচনা করলেন মুক্তিযোদ্ধারা
জামায়াতে ইসলামী নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের বিষয়টিকে হালকা করে দেখানোর জন্য এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের (এএইচআরসি) একজন প্রতিনিধির সমালোচনা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদরা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের সবচেয়ে জঘন্যতম মামলার অপরাধীদের রক্ষা করতে এটি উৎসাহিত করে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
তারা বলেন, দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী সাঈদীকে 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার' হিসেবে চিত্রিত করেছে এইচআরসি। ১৯৭১ সালে তিনি যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন সে সম্পর্কে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার মরিয়া প্রচেষ্টা এটি। একই সঙ্গে তার মৃত্যুর পর জামায়াত-শিবিরের লোকেরা যে সহিংসতা চালিয়েছে সে বিষয়কেও হালকা করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, ২০০৪ সালে মার্কিন সন্ত্রাসী স্ক্রিনিং সেন্টার সাঈদীকে তাদের ‘নো ফ্লাই’ তালিকায় যুক্ত করেছিল। সন্দেহভাজন উগ্রপন্থী ও সন্ত্রাসীদের সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে সেই তালিকায় নাম দেওয়া হয়।
মার্কিন ভিত্তিক লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশনের ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশিদের হত্যাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, এএইচআর-এর বিবৃতিটি এই সমর্থনকে অস্বীকার করে।
এএইচআরসি অ্যান্ড এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টারের পক্ষ থেকে লিয়াজোঁ অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে টম ল্যানটোস হিউম্যান রাইটস কমিশন আয়োজিত সাম্প্রতিক এক ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে এমন 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' মন্তব্য করেছেন। তার এক বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজন বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও সাঈদীর মতো তাদের দোসরদের হাতে যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের মানসিক যন্ত্রণাকে উপহাস করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: সাঈদীর মৃত্যুতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের ১৭ নেতা-কর্মী বহিষ্কার
টম ল্যান্টোস মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘সাঈদী একজন ইসলামিক স্কলার…। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে আপনি যদি বিরোধী দল বা ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে থাকেন তাহলে, আপনার জানাজা বা সামাজিক স্বীকৃতির অধিকার পাবেন না। এটি কোনো নতুন ঘটনা নয়।’
মুক্তিযোদ্ধা অজয় দাশগুপ্ত বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সাঈদীকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দেখানোর জন্য পাঁচ সাংবাদিকের উপর হামলা, ব্যস্ততম হাসপাতালের সামনে জামায়াত শিবিরের লোকজন রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ দিনব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় নীরব থাকায় তাকে জামায়াতের মুখপাত্র বলে মনে হয়েছে।’
তিনি ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টসের (আইএফজে) আহ্বানের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'এই সাংবাদিকদের উপর নৃশংস হামলার ঘটনার দ্রুত তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।’
তারপরও, সাঈদীকে তার পৈতৃক বাড়িতে দাফন করা হয়েছিল এবং তার জানাজায় তার অনুসারীরা অংশ নিয়েছিল। অথচ আশরাফ তার দাফনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে সরকারকে দোষারোপ করেছেন।
অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, এই বিবৃতি পাকবাহিনী ও সাঈদীর দল লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে এবং তাদের ধর্ষণ ও নির্যাতনসহ ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণার অভাব প্রকাশ করে।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের 'ভুক্তভোগী' হিসেবে চিত্রিত করে এ ধরনের আখ্যান আগে পশ্চিমা দেশগুলোতে জামায়াতের ভাড়া করা লবিস্টরা প্রচার করেছিল।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে সাঈদীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করায় ৪ ছাত্রলীগ কর্মী বহিষ্কার
নুরেমবার্গ ও টোকিওর বিচারের সময় যুদ্ধাপরাধের বিচারে পশ্চিমা শক্তিগুলো যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে তার উল্লেখ করে তারা বলেন, 'বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে।’
মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদরা বলেন, পাঁচ দশক ধরে সাঈদীর মতো যুদ্ধাপরাধীদের হাতে স্বজন হারানো লাখ লাখ মানুষের পরিবার ন্যায়বিচার পায়নি। কারণ বিএনপি-জামায়াতের আমলে পরিকল্পিতভাবে এদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে জামায়াত লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানসহ বেশ কয়েকজন লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তারা এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এড়াতে এবং কয়েক দশক ধরে এই অপরাধীদের দায়মুক্তির সংস্কৃতি অব্যাহত রাখতে ভুল তথ্য প্রচারণা চালিয়েছিল বলে জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুরে হত্যা, ধর্ষণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর, অগ্নিসংযোগ ও অপহরণের দায়ে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে তার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। ২০১৭ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ আদালত সাঈদীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দণ্ড বহাল রাখেন।
যুদ্ধাপরাধের বিচার চলাকালে পিরোজপুরের গ্রামাঞ্চলে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন, লুটপাট, জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের দায়ে 'দেলু রাজাকার' উপাধিপ্রাপ্ত সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে ২০১৫ সালে ল্যান্টোস কমিশন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটায়।
আরও পড়ুন: সাঈদীর চিকিৎসককে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই
একুশে পদক বিজয়ী কবি ও মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রফিক রবিবার (৬ আগস্ট) রাতে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
সোমবার (৭ আগস্ট) বাগেরহাটে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করার কথা রয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কবি বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন। রবিবার রাত ৯টার দিকে বরিশাল থেকে ঢাকায় আনার পথে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তারা গণমাধ্যমকে জানান, তিন দিন আগে রফিক নিজ বাড়ি বাগেরহাটে যান। রবিবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে বরিশাল শহরের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
কবি মোহাম্মদ রফিক ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরাতা ইউনিয়নের বাইতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর তিনি ঢাকার নটরডেম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। তবে, তিনি তারপর ঢাকা কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন।
সেখানে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। এটি তার সাহিত্যিক চেতনায় গভীর ছাপ ফেলে।
আরও পড়ুন: কবি মোহাম্মদ রফিকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
ঢাকা কলেজের পর রফিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১ নম্বর সেক্টরে এবং পরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেন এবং তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন।
স্বাধীনতার পর রফিক প্রথমে কলেজ শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগে যোগদান করেন।
তিনি তার কবিতার মাধ্যমে সমাজের নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। সামরিক স্বৈরশাসক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে তার রচিত ‘খোলা কবিতা’ শিরোনামের একটি কবিতা ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল।
তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘ধুলোর সংসারে এই মাটি’, ‘কীর্তিনাশা’, ‘কপিলা’, ‘স্বদেশী নিঃশ্বাস তুমিময়’, ‘মৎস্যগন্ধা’, ‘বিশখালীর সন্ধ্যা’, ‘কালাপানি’ ও ‘ত্রয়ী’।
সাহিত্যে তার অসামান্য অবদানের জন্য কবি মোহাম্মদ রফিক ২০১০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
তার অন্যান্য স্বীকৃতি ও পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার এবং জেমকন সাহিত্য পুরস্কার।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক পান্না কায়সার আর নেই
প্রবীণ সাংবাদিক এম শাহজাহান মিয়া মারা গেছেন
ঈদের দিন মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার গজনভী রোডের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১-এ মুক্তিযুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা স্বরূপ ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু এবং সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার তাদের হাতে পণ্য হস্তান্তর করেন।
স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের মতো প্রতিটি জাতীয় দিবস ও উৎসবে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: আসুন সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করি: প্রধানমন্ত্রী
তারা মোহাম্মদপুরে ১৩ তলা বিশিষ্ট আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১ নির্মাণ সহ তাদের পুনর্বাসন ও বাসস্থানের জন্য প্রধান পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে আওয়ামী লীগ সরকার সকল বাংলাদেশির জন্য একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত নিশ্চিত করবে।
ঈদের দিন প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন দেশের এই বীর সন্তানেরা।
আরও পড়ুন: সরকারের পদক্ষেপে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে পারে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম খানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার পুলিশ কর্মকর্তা, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
নুরুল ইসলাম খান বুধবার রাজধানীতে ইন্তেকাল করেছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসার সামনে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: সাবেক মহিলা লীগ নেত্রী তসলিমার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
ঢাকায় পৌঁছেছে ফারুকের মরদেহ
চিত্রনায়ক, মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মরদেহ এখন ঢাকায়।
মঙ্গলবার (১৬ মে) সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর ফটক দিয়ে ফারুকের মরদেহ বের করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দর থেকে ফারুকের মরদেহ সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর উত্তরায় তার নিজের বাস ভবনে। সেখান থেকে সব শ্রেণি পেশার মানুষের শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সকাল ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত সেখানে রাখা হবে।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরে মারা গেলেন নায়ক ফারুক
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সার্বিক ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে। বাদ জোহর প্রয়াত তারকার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বিএফডিসিতে নিয়ে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এফডিসির শ্রদ্ধা নিবেদন হবে আনুমানিক সাড়ে ৩টায়।
এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে চ্যানেল আই। সেখান থেকে বিকাল ৫ টায় গুলশান আজাদ মসজিদে বাদ আছর জানাজা নামাজ শেষে কালীগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৪ মে (সোমবার) সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন চিত্রনায়ক ফারুক।
আরও পড়ুন: চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুতে তারকাদের শোক
চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত চিত্রনায়ক, মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার এক শোকবার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা, চিত্রনায়ক ফারুক আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে মাতৃভূমির জন্য অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদান বিশেষ করে তার অভিনয় শৈলী দেশের মানুষ অনেক দিন মনে রাখবে। সংসদ সদস্য হিসেবেও তিনি জনসাধারণের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শোকবার্তায় মরহুম আকবর হোসেন পাঠানের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরে মারা গেলেন নায়ক ফারুক
অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
সিঙ্গাপুরে মারা গেলেন নায়ক ফারুক
চলে গেলেন নায়ক, মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফারুক।
মঙ্গলবার ভোরের ফ্লাইটে অভিনেতা ফারুকের লাশ ঢাকায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় আসেন নায়ক ফারুক।
অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক আজহার মাহমুদ মারা গেছেন
ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক পরিচালক নাসিরুদ্দিন মারা গেছেন
মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন হত্যার ২০ বছর পর খুনি গ্রেপ্তার
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মচারী ও জাতীয়তাবাদী রেল শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন আহমদ হত্যা মামলার ২০ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাজহারুল ইসলাম ফরহাদকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (৮ মে) দুপুরে র্যাব-৭ এ তথ্য জানায়।
এর আগে রবিবার (৭ মে) দুপুরে মহানগরীর খুলশী থানাধীন আমবাগান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামি গ্রেপ্তার: র্যাব
গ্রেপ্তার মাজহারুল নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামের মো. মফিজ মিয়ার ছেলে।
তিনি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রকৌশলী-১ কার্যালয়ে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবসার জানান, গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়াতদন্তে শফিউদ্দিন হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাজহারুল ইসলাম ফরহাদকে শনাক্ত করা হয়। পরে রবিবার অভিযান চালিয়ে খুলশীর আমবাগান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি দীর্ঘ ২০ বছর চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করেছিলেন।
জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানার উত্তর আমবাগান এলাকায় রেলওয়ে স্টাফ কোয়ার্টারে ঢুকে সন্ত্রাসী মাজহারুল ইসলাম ফরহাদের নেতৃত্বে দুবৃর্ত্তরা শ্রমিক নেতা শফিউদ্দিনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় শফিউদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে মাজহারুলসহ আরও সাত-আটজনকে আসামি করে খুলশী থানায় মামলা করেন। মামলার পর থেকে মাজহারুল আত্মগোপন থাকেন। পরে ওই মামলায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
হত্যাকাণ্ডের পর আমবাগান এলাকা ছেড়ে যাওয়া ফরহাদ সম্প্রতি আবার এলাকায় ফেরেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারের পর তিনি শফিউদ্দিন হত্যা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামি বলে স্বীকার করেন।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনায় বাবাকে হত্যার পর মাটিচাপা, ছেলে গ্রেপ্তার
কুয়াকাটায় পর্যটকদের মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২