বাঁধ
সিত্রাংয়ের প্রভাবে দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি, মেরামত হচ্ছে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাগেরহাটে দুই গ্রামের দুই হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা এলাকায় ভৈরব নদের বাঁধের একাংশ ভেঙে মাঝিডাঙ্গা ও পোলঘাট গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে।
বুধবার সকালে ভৈরব নদের পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, তিনদিন ধরে ওই দুটি গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষের বাড়িঘরে পানি জমে আছে। অনেকের বাড়িতে চুলায় পানি জমে থাকায় রান্না বন্ধ রয়েছে।
বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে নিয়ে ভাঙা বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বাঁধ মেরামত করানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিত্রাং তাণ্ডবে ফরিদপুরে ২ বাসের ওপর ভেঙে পড়ল বিশাল বিলবোর্ড
এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা বৃষ্টি আর জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম জানান, জোয়ারের পানি যাতে গ্রামে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য জরুরি ভিত্তিতে ভাঙা বাঁধ মাটি দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে।
শিগগিরই টেকসই ভাবে ওই বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
কাড়াপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির হাওলাদার জানান, এক বছরে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভৈরব নদের ওই একই এলাকায় তিনবার বাঁধ ভেঙে যায়। ওই ভাঙা স্থান থেকে পানি প্রবেশ করে মাঝিডাঙ্গা ও পোলঘাট গ্রামে। ওই দুই গ্রামের রাস্তাঘাট, ফসল, ধানখেত, মৎস্যঘের ও বাড়িঘর ডুবে থাকে।
মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। স্থায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়েছে আসছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ জানান, জেলায় তাদের মোট ৩৪০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ৩০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আর ১০০ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে যা, স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে ওই বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী পাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণের জন্য তারা একটি প্রস্তাবনা উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার সম্ভাব্যতা যাচাই হয়নি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দ্রæত মেরামতের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রয়োজনীয় সহয়তা দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দুই হাজার ১৪০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩২২টি সম্পূর্ণ এবং ১৮১৮টি আংশিক ক্ষতি হয়।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, জেলায় এক হাজার ৩৮০ হেক্টর জমির ধানসহ ফসল পানিতে আক্রান্ত হয়। এরইমধ্যে অধিকাংশ জমির পানি নেমে গেছে। ফসলের তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলায় প্রায় এক হাজার মৎস্যঘের এবং ৮০০ পুকুর ডুবে চিংড়িসহ সাদা মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: সিত্রাং তাণ্ডবে কেরানীগঞ্জে দুটি ভবন হেলে পড়েছে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে সারাদেশে ২৬ জনের মৃত্যু
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধের কাজ করতে হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধের কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেছেন, সামনে বন্যার আশংকা রয়েছে। মাঠ পর্যায় পরিদর্শন বাড়িয়ে ঝুঁকিপুর্ণ স্থান চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধের কাজ করতে হবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়নের নির্দেশসহ ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
বুধবার পানি ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাস্তবায়নাধীন এডিপিভূক্ত প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ ফারুক বলেন, আসন্ন বন্যায় ক্ষতি আরও কমাতে হবে। এর জন্য আগাম প্রস্তুতিসহ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। মেধা, সততা ও মানবিকতার সমন্বয়ে কাজ করতে হবে। এর মাধ্যমেই বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা সম্ভব। তাছাড়া বন্যা-পরবর্তী সময়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করাও জরুরি। মনে রাখতে হবে, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি লাঘবে আগাম প্রস্তুতি একটি কার্যকর উপায়।
তিনি বলেন, যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নেরও তাগিদ দেয়া হয়। এছাড়া কোথায়ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। যে যে এলাকায় বন্যার আশঙ্কা আছে সেখানকার প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনার ব্যাপারে সচেতন ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: দেশে ১০০০ খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পর্যালোচনা সভায় আটটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।
১) ১৪৮৩২.৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দোহার-মারিচর-নারিশাবাজার প্রকল্পের ইতোমধ্যে ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
২) নোয়াখালী জেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য ৩২৪৯৮.৮৫ লাখ টাকার প্রকল্পের ৭৫.৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।
৩) চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশনে ১৬২০৭৩.৫০ লাখ টাকার প্রকল্পের ১৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
৪) কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী-উলিপুর-ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর ডান তীর ভাঙ্গন রোধে ৪৪৮৩১ লাখ টাকার প্রকল্পের ৬৮.৮৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
৫) ৭২২০০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদী ভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্পের ৩১.১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
৬) ভৈরব নদীর (মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা) পুনঃখনন কাজ ২৮.৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
৭) বরিশালের কির্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল সদর উপজেলাধীন চরবাড়ীয়া এলাকা রক্ষা প্রকল্পের ৮৮ শতাংশ শেষ হয়েছে।
৮) সীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় ৪৬৬৫৯.৪৪লাখ টাকা এবং প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহপরিচালক বজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালকরা, প্রধানকৌশলীরা এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত সচিব এস.এম. রেজাউল মোস্তফা কামাল সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: ভোলাসহ উপকূল রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে সমীক্ষা চলছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
বন্যা মোকাবিলায় ১৩৯ পোল্ডার তৈরি করা হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি
জোয়ারের পানির স্রোতে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ১০টি গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা খাদ্য, পানীয় জল এবং তীব্র স্বাস্থ্য সংকটে পড়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানিতে এক হাজার একর মাছের ঘের ও ফসলি জমি ভেসে গেছে, এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রবল জোয়ারের চাপে পশ্চিম দুর্গাবাটির সাইক্লোনশ্লেটার সংলগ্ন এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকুল রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবারের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।
আরও পড়ুন: বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১০: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয়দের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে বাঁধের পাইলিং কাজ শুরু করেছে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হুমায়ুন কবির, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আক্তার হোসেন, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রমুখ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বন্যায় ১৪০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
ডিসি হুমায়ুন কবির জানান, জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাওয়ার পানি ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়া এলাকার মানুষ যেন স্থায়ী সমাধান পায় সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় ভাঙল আরেকটি বাঁধ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় রবিবার ভোরে বাঁধ ভেঙে ছায়ার হাওরে পানি উপচে পড়া শুরু হয়েছে। ফলে হাওর এলাকার কৃষকদের ধান কাটা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এমন অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেছেন স্থানীয় লোকজন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয়ের মতে, এ বছর ছায়ার হাওরে চার হাজার ৬৩৭ হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে হাওর এলাকার ৯৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় কৃষকদের দাবি, তারা হাওরের ১৫ শতাংশ ফসল তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আগাম প্রস্তুতির কারণে এবার হাওরে ক্ষতি কম হয়েছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক তকবির হোসেন জানান, ধান কাটা শ্রমিকের অভাবে তিনি তার জমির ৩০ শতাংশ ফসল তুলতে পারেননি।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, রবিবার ভোরে ছায়ার হাওর বাঁধের একটি অংশ ধসে পড়ে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে বেড়িবাঁধের মূল অংশ অক্ষত আছে।
সম্প্রতি ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ে সুনামগঞ্জ হাওর অঞ্চল।
বোরো ফসলি জমির বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হওয়ায় কৃষকদের ক্ষতি কমাতে তাড়াতাড়ি ফসল তুলতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: বন্যার পানি হাওরে ঢুকে ফসলহানির আশঙ্কা সুনামগঞ্জের কৃষকদের
‘বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় এবার ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে’
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, সুনামগঞ্জে এ বছর ২০১৭ সালের চেয়েও বেশি পানি হয়েছে। তবে বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পূর্ব) মাহবুবর রহমান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) এস এম শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কর্মচারীর বাঁধ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শত শত শ্রমিকও প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বাঁধের গোড়ায় মাটি ভর্তি বস্তাও ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ রক্ষায়ও কাজ করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, মার্চ মাসের ৩০ তারিখ প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। নদ-নদী ও হাওরে ব্যাপক পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পায়। উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওড়ে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঢলের পানি হাওড়ের পাড় উপচে তাহেরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওড়ে ঢুকছে। সর্বশেষ রবিবার রাতে দিরাই উপজেলায় হুরামন্দিরা হাওরে পানি ঢোকে। এখানে জমি আছে এক হাজার হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ২০০ হেক্টরের।
আরও পড়ুন: ভোলাসহ উপকূল রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে সমীক্ষা চলছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। আগামী বোরো মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার দেয়া হবে। এছাড়া,সারা বছর ধরে ভিজিএফসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে, যাতে খাদ্যের জন্য কেউ কষ্ট না করে। কৃষকবান্ধব সরকার হাওর অঞ্চলে ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার কৃষকদের দিচ্ছে যাতে করে উৎপাদন খরচ কম লাগে।কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ১৭টি ছোট–বড় হাওর ও বিলের পাঁচ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। প্রথম দফা পাহাড়ি ঢলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার দ্বিতীয় দফায় ঢল নামতে শুরু করেছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় ধান কাটা হয়েছে ৮৪ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমির। যা মোট ধানের ২৪ ভাগ। এবার হাওর ধান চাষাবাদ হয়েছে দুই লাখ ২২ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টন। আমরা কৃষকদেরকে বলছি, ৮০ ভাগ ধান পাকলে কাটার জন্য।উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ে ৭২৭টি প্রকল্পে ১শ২২ কোটি টাকায় ৫শ৩৬ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজ হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সময় বাড়িয়েও বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। এছাড়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দুই-তিন দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় ১৩৯ পোল্ডার তৈরি করা হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
দেশে ১০০০ খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ১০০ একর ফসল
সুনামগঞ্জে সুরমাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে একের পর এক বাঁধ ভাঙছে। আর এতে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরপাড়ের কৃষকদের বোরো ফসল।
সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের আরও একটি বাঁধ ভেঙে প্রায় ১০০ একর বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিন উপজেলার এরাইল্লা কোনা মনদিয়াতা বাঁধটি ভেঙে এ ফসলহানির ঘটনা ঘটে।
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে বিপর্যয় দেখা দেয়ায় মাথায় হাত পড়েছে ওই অঞ্চলের কৃষকদের।
বাঁধ ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবীর বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের যে বাঁধটি ভেঙেছে, সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারবো।
স্থানীয় কৃষক বিলাল মিয়া বলেন, ‘বাঁধ দিয়া কিতা (কি) লাভ হইলো, আমরা ত ফসল ঘরে তুলতে পারলাম না। এখন ছেলে-মেয়ে নিয়া সারাবছর কীভাবে কাটামু।’
কৃষক নানু মিয়া বলেন, ‘সরকার শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য। কিন্তু সে টাকা দিয়ে পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) সদস্যরা ঠিকমতো কাজ করেন না। ঠিকমতো কাজ করলে এতো অল্প পানিতে বাঁধ ভাঙতো না।’
আরও পড়ুন: কোমর পানিতে বোরো ধান কাটছে চরাঞ্চলের চাষিরা
অপর কৃষক দিলোয়ার মিয়া বলেন, ‘তাহিরপুরের এরাইল্লা কোনা মনদিয়াতা বাঁধ ভেঙে পানি এতে তলিয়ে গেছে একশো একর বোরো ফসল। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। গত এক সপ্তাহে জেলার তাহিরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা ও দিরাই এই চার উপজেলায় নয়টি বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।’
গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সেসব অঞ্চলের কৃষকের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও নতুন একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বোরো ফসলের ক্ষতি নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে কৃষকদের মাঝে।
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জেলার ১১টি উপজেলায় ফাটল দেখা দেয়া বাঁধগুলো দিনরাত পাহারায় রেখেছে হাওর পাড়ের মানুষেরা।
গত ১ এপ্রিল তাহিরপুরের নজরখালী বাঁধ ভেঙে ১২০ হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এরপর একে একে আরও আটটি বাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়াও জেলার ছোট-বড় সব হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি বাড়ছে, আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে কৃষক
সিলেটে ৪০০ বিঘা বোরো খেত প্লাবিত
বন্যা প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও বাঁধ দরকার: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যাকে বিশ্বের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব হিসেবে স্বীকার করে, বন্যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আরও বাঁধ নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব নিরসনে শুধুমাত্র গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের দিকে মনোনিবেশ করার পরিবর্তে, ভবিষ্যতে বন্যা ও অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য আরও কিছু করা দরকার।
কুইন্সল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের কিছু অংশে কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শুরু হওয়া বন্যায় কমপক্ষে ২০ জন মারা গেছে এবং হাজার হাজার বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে।
রবিবার তিনি নাইন নেটওয়ার্ক টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবিলা করা মানে শুধুমাত্র কার্বণ নির্গমন হ্রাস করা নয়। এর সঙ্গে স্থিতিস্থাপকতা ও অভিযোজনও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার দুই রাজ্যে রেকর্ড করোনা শনাক্ত
তিনি বলেন, আপনি বুশফায়ারে স্থিতিস্থাপকতা মোকাবিলা করতে চাইলে আপনাকে জ্বালানি লোড ব্যবস্থাপনা করতে হবে। আপনি বন্যা মোকাবিলা করতে চাইলে আপনাকে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
বন্যাকবলিত অঞ্চলে দ্রুত অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনীসহ অন্যান্য সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সহায়তা পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় দেশটির ফেডারেল সরকার সমালোচিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার আনাস্তাসিয়া প্যালাসজুক ফেডারেল সহায়তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন,অনেক দেরিতে এই সহায়তা পৌঁছেছে এবং তার প্রস্তাবিত ২০টি বন্যা প্রশমন ব্যবস্থার মধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে মাত্র তিনটিতে অর্থায়নের জন্য মরিসনের সমালোচনা করেছেন।
জবাবে মরিসন বলেন, ফেডারেল সরকার যত দ্রুত সম্ভব সহায়তা পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ায় ওমিক্রনে প্রথম রোগীর মৃত্যু
'জনসন অ্যান্ড জনসন'-র করোনাভাইরাসের টিকা কিনবে না অস্ট্রেলিয়া
হাওর রক্ষা বাঁধের দুর্নীতির অভিযোগে শাল্লার ইউএনও প্রত্যাহার
মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ, উপজেলা পরিষদে দোকান কোটা নির্মাণ, ভূমি অফিসে নামজারী, জলমহাল ইজারা ও হাওররক্ষা বাঁধের কাজে অগাধ দূর্নীতির অভিযোগে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল মুক্তাদির হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষের এক আদেশে এই প্রত্যাহার করা হয়। বর্তমানে দিরাই উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) অরূপ রতন সিংকে শাল্লার ইউএনও হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন: ইসির নির্দেশে সুধারাম থানার ওসি প্রত্যাহার
এর আগে গত সোমবার শাল্লা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা হাওর রক্ষা বাঁধের পিআইসি গঠনের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার দিনভর অভিযোগকারীদের উপস্থিতিতে শাল্লা ইউএনও কার্যালয়ে তদন্ত করেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ইউএনবিকে বলেন, শাল্লার ইউএনও আল মুক্তাদিরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দিরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) অরূপ রতন সিংহকে শাল্লার ইউএনও হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানদের অভিযোগ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার দিনভর তদন্ত করেছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সমাবেশে হামলা: হবিগঞ্জের এসপি ও দুই ওসির প্রত্যাহার দাবি বিএনপির
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গরুর খামারে ডাকাতি: ৬ পুলিশ প্রত্যাহার
চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের একাংশ ডেবে গেছে
৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের উত্তর পশ্চিম কোণা ডেবে গেছে। বাঁধের এ অংশটি চাঁদপুর মাদরাসা রোড এলাকার লঞ্চ ঘাটের পশ্চিমেই অবস্থিত।
এব্যাপারে বাসিন্দা গৃহিনী নাজমা বেগমসহ অন্যান্যরা ইউএনবিকে জানান, রবিবার ভোর ৬টায় মেঘনা নদীতে ঘূণির্পাকের সৃষ্টি হয়; আর তখনই ১০ মিনিটের মধ্যে এখানকার সিসি ব্লকগুলো একে একে তলিয়ে যায়। এসময় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে হঠাৎ ভাঙন
পানি উন্নয়ন বোর্রডের (পাউবো) কমর্কর্তারা জানান,বতর্মানে এখানে মেঘনা নদীর গভীরতা ২৭/২৮ মিটার।
খবর পেয়ে রবিবার দুপুর একটায় ডেবে যাওয়া অংশ পরিদর্শনে আসেন পাউবো এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
তিনি ইউএনবিকে জানান, কমপক্ষে ২৫ মিটার এলাকার ব্লক ডেবে তলিয়ে গেছে মেঘনায়। আশপাশের অংশটুকুও ভালনারেবল। সোমবার সকাল থেকে দেবে যাওয়া অংশে ব্লক ডাম্পিং করা শুরু হবে। আমাদের স্টকে ১৪৭০০ সিসি ব্লক মজুদ আছে। ঠিক কি কারণে এখানটায় হঠাৎ ব্লক ডেবে গেলো, এখনই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না। প্রচণ্ড ওয়েভ একশান হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে হুমকির মুখে হাইমচরের নদীর তীর রক্ষা বাঁধ
তিনি আরও জানান, অবশ্য আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং বাঁধ রক্ষার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন এলাকাবাসীকে।
সিরাজগঞ্জে ধসে পড়েছে শহর রক্ষা বাঁধের ১’শ মিটার
সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের পুরাতন জেলখানা ঘাট এলাকায় ভয়াবহ ধস নেমে প্রায় ১’শ মিটার বাঁধ যমুনা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
টানা প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলের পানিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে এ ধস শুরু হয়েছে। এতে শহরবাসী ও বাঁধ এলাকায় বসতীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ধস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে বালু উত্তোলন : সিরাজগঞ্জে ৮ জনের জরিমানা
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধের একাধিক স্থানের তলদেশে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে সকালে প্রবল বর্ষণের কারণে এ ভয়াবহ ধস শুরু হয়েছে। ধস ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক নিক্ষেপ করা হলেও এখনও এ ধস নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ফুটবল খেলতে গিয়ে সিরাজগঞ্জে শিশুর মৃত্যু
যমুনা নদীতে তীব্র স্রোতে ও বাঁধের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড আগে থেকে এ বাঁধের দিকে নজর না দেয়ায় এমন ভয়াবহ অবস্থা দেখা দিয়েছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, যথানিয়মেই এ বাঁধ সার্ভে করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে নারীসহ দুই জনের লাশ উদ্ধার
খবর পেয়ে বিকেলে জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ ও জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি কে.এম. হোসেন আলী হাসানসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ধস এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ধস প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ।