সংক্রমণ
করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
করোনা সংক্রমণের হার এক সপ্তাহে নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তবে আমরা দেখছি যে সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণের হার ছিল ২১ দশমিক ৫০ শতাংশ। সপ্তাহের শেষে ১২ ফেব্রুয়ারি এ হার এসে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিম্নমুখী রয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি নতুন রোগী শনাক্তের হার যেখানে আট হাজার ৩৪৫ জন ছিল, সেটি ১২ ফেব্রুয়ারি কমে পাঁচ হাজার ২৩ জন হয়েছে।
তিনি বলেন, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় যেসব শিক্ষার্থীরা আছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের একটি বড় অংশই টিকা নিয়েছে। সকল পরিস্থিতি যদি আমাদের অনুকূলে থাকে তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যেতেই পারে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে জানিয়ে অধিদপ্তর জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা দায়িত্বে আছেন তারা শিক্ষার্থীদের সচেতন করবেন।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে ডা. নাজমুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনের নতুন উপধরন আরও বেশি সংক্রামক: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
তিনি বলেন, আমরা করোনার সঙ্গে গত দু'বছর ধরে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। সতর্কতার সর্বোচ্চ পর্যায়টি যদি আমরা অবলম্বন করতে পারি, তাহলে মৃত্যু ও সংক্রমণ অবশ্যই কমে আসতে বাধ্য হবে। আমরা টিকা কার্যক্রম সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছি, যে কারণে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা কমে এসেছে এবং হাসপাতলে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাও কমে এসেছে। মানুষজন করোনার উপসর্গ নিয়ে নিজ বাসগৃহে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। এমনকি কোয়ারেন্টাইন সংক্রান্ত সমস্ত বিধি-নিষেধ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বই কার্যকর রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, অমর একুশে বইমেলা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে। এ মেলায় যারা অংশগ্রহণ করবেন, যেসব প্রকাশক আছেন, স্টলে যেসব কর্মচারী কাজ করবেন তারা টিকার সনদটি সঙ্গে রাখবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বইমেলায় আসবেন।
টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভাসমান মানুষদের টিকা আমরা রাজধানী দিয়ে শুরু করেছি, এখন একটি গোটা দেশেই ছড়িয়ে দেয়া হবে। তবে সারাদেশে কবে শুরু করা সম্ভব হবে সেটির নির্ধারিত তারিখ দিয়ে আমরা শুরু করতে পারবো না। যেহেতু তারা নির্দিষ্ট কোন একটি স্থানে বসবাস করে না, সেহেতু তাদেরকে একত্র করে টিকা দেয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং।
আরও পড়ুন: করোনা পজিটিভ হলে ১০ দিনের আইসোলেশন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ওমিক্রনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটেছে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
জীবাণু সংক্রমণে সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, অবহেলায় নয়; গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জীবাণু সংক্রমণে জেব্রা, বাঘ আর সিংহের মৃত্যু হয়েছে।এসময় তিনি বলেন, যে দেশ থেকে বিদেশি প্রাণী আনা হয়, সে দেশের জলবায়ু কিংবা থাকার জায়গা আমাদের দেশের মতো না। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের রোগ ও জীবাণু সংক্রমণও হয়।শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের স্বরূপ তুলে ধরতে হবে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, চিড়িয়াখানায় মারা যাওয়া প্রাণীদের একাধিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে- অবহেলায় নয়, সংক্রমণে এসব প্রাণী মারা গেছে। জেব্রার মৃত্যু জীবাণু সংক্রমণে হয়েছে। এছাড়া বিড়াল প্রজাতির প্রাণীও বিভিন্নভাবে সংক্রমিত হচ্ছে।তিনি বলেন, সকল প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার।বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ড. অমলেন্দু ঘোষ, সিলেট আইএলএসটি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় গবেষণা অপরিহার্য : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
করোনাভাইরাস সংক্রমণের রেড জোনে আরও ১০ জেলা
ঢাকা ও রাঙামাটির পর আরও ১০ জেলাকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের রেড জোন বা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ছাড়া হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে ৩২ জেলা। আর গ্রিন বা সবুজ জোনে রয়েছে ১৬ জেলা।
গত এক সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণ করে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সাত দিনে দেশজুড়ে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪০৫ জন, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের (৩ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি) চেয়ে ২৩ হাজার ৯৩১ জন বেশি। এই সময়ে শতাংশ হিসাবে শনাক্ত বেড়েছে ২২৮ দশমিক ৪৮।
করোনা সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে ১০টি জেলাকে তালিকাভুক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার অন্তত ১০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: সংক্রমণের রেড জোন ঢাকা-রাঙামাটি
লাল তালিকাভুক্ত জেলাগুলো হলো গাজীপুর, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, লালমনরিহাট, খাগড়াছড়ি ও পঞ্চগড়। আগের দুটি ঢাকা ও রাঙ্গামাটি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণের হার ২৮ দশমিক ১১ শতাংশ। রাঙামাটিতে করোনা সংক্রমণের হার ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ।
এ ছাড়া গাজীপুর করোনা সংক্রমণের হার ১০ দশমিক ৪৯, রাজশাহী ১৪.৭৪ শতাংশ, যশোর ১১ দশমিক ২১ শতাংশ, কুষ্টিয়া ১১.৩৮ শতাংশ, বগুড়া ১১.৮৪ শতাংশ, দিনাজপুর ১১.২৬ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৮ দশমিক ৪৮, লালমনরিহাটে ১০ দশমিক ৭১, খাগড়াছড়ি ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ ও পঞ্চগড় ১০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে থাকা ৩২ জেলার শনাক্তের হার অন্তত ৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাঘাইছড়িতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ৭৮, সাজেক রেড জোন
জেলাগুলো হলো সিলেট, ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, কক্সবাজার, মৌলভীবাজার, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, রংপুর, জামালপুর, নওগাঁ, ঝিনাইদহ, নাটোর, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বাগেরহাট, মাগুরা, নড়াইল, পটুয়াখালী, কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, শেরপুর, ঝালকাঠি ও ঠাকুরগাঁও।
এছাড়া এখনও করোনা থেকে ঝুঁকিমুক্ত আছে ১৬ জেলা। এই জেলাগুলোতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে।
ঝুঁকিমুক্ত জেলাগুলো হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, ভোলা, নেত্রকোণা, গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী ও মেহেরপুর।
করোনা: সমাবেশের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করবে বিএনপি
করোনা সংক্রমণের হার তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএনপি বিভিন্ন জেলায় তাদের ৩২টি সমাবেশের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা (উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশের উপর) অযৌক্তিক এবং অকার্যকর। তারপরও জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে আমরা সমাবেশের তারিখ পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সকল মহানগর এবং জেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের পুনর্নির্ধারিত তারিখে সমাবেশের প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে এই বিএনপি নেতা জানান, তারা তাদের সমাবেশ স্থগিত করেননি, শুধু তারিখ পুনর্নির্ধারণ করেছেন। ৩২টি জেলায় সমাবেশের নতুন তারিখ পরে ঘোষণা করা হবে।
নজরুল বলেন, ‘যখন স্থানীয় নির্বাচন চলছে এবং বাজার, দোকানপাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে তখন সরকার উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রন সংক্রমণের ঝুঁকি বন্ধ জায়গার তুলনায় খোলা জায়গায় কম। কিন্তু সরকার খোলা জায়গার পরিবর্তে বন্ধ স্থানে জনসমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার মূল উদ্দেশ্য হল আমাদের চলমান আন্দোলনে বাধা দেয়া। কারণ সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেও আমাদের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
তিনি বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার দ্বারা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা খুবই স্বাভাবিক।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের ১১ দফা নিষেধাজ্ঞা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য স্থানীয় সংস্থার চলমান নির্বাচনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্থানীয় নির্বাচন স্থগিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেনি। সুতরাং, জনসভায় নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণে বিস্তার রোধকল্পে সরকার বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) জনসমাগম, সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এরপরই বিএনপি সমাবেশের তারিখ পুনর্নির্ধারণের ঘোষণা দিলো।
আরও পড়ুন: নেতার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে মারামারি, ভেঙ্গে পড়লো মঞ্চ!
বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
করোনা প্রতিরোধে বেনাপোল বন্দরে সতর্কাবস্থা
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসা যাত্রী এবং পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও হেলপারের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ লক্ষ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরিচর্যায় ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি গেটে সরেজমিনে দেখা যায়, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে বন্দরে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছে এবং থার্মোমিটার দিয়ে চালক ও হেলপারের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করছে। পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করার কথা বলা হচ্ছে এবং মাস্ক বিহীন কাউকে বন্দরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
এছাড়া ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের মাস্ক এবং আরটি-পিসিআর করোনা টেস্ট ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। হেলথ অফিসারের দ্বারা ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানিং এর মাধ্যমে নিরাপদ ঘোষণা হলেই কেবল প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে শুল্ক কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি
করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নোংরা হাত দিয়ে নাক, কান ও মুখমণ্ডল স্পর্শ না করা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্কীকরণ প্রচারণার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, বিশ্বে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সে জন্য বেনাপোল বন্দরকে সার্বিক সুরক্ষার লক্ষ্যে ভারতীয় ট্রাক চালক ও হেলপারদের মাস্ক ছাড়া বন্দরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। আর একবার বন্দরের ভেতর ঢুকলে মালামাল খালাস না হওয়া পর্যন্ত বাইরে আসতে দেয়া হচ্ছে না। বন্দরের প্রবেশ দ্বারে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাপমাত্রা বেশি থাকলে বন্দরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডা. বিচিত্র মল্লিক জানান, ভারত থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীকে ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানিং করা হচ্ছে। মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান পানি দিয়ে হাত পরিস্কার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরপর আরটি-পিসিআর সনদ পরীক্ষা করে ঢোকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে ফেনসিডিল জব্দ, ৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার
ওমিক্রন কড়াকড়িতে বেনাপোলে যাত্রী যাতায়াত কমেছে
চার-পাঁচদিনের মধ্যেই হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে পূর্ণ হতে শুরু করবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক করোনাভাইরাস আক্রান্তের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে পূর্ণ হতে শুরু করবে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিসিপিএস মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ তীব্র গতিতে বাড়ছে। এক সপ্তাহ আগেও হাসপাতালগুলোতে গড়ে আড়াইশ’র মতো রোগী ছিল, যা এখন হাজার হয়েছে। যা আরও বাড়বে। এতে করে মৃত্যুও বাড়বে। আবারও চিকিৎসকদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হবে। এটা বাড়লে বেকায়দায় পড়তে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে গতকাল শনাক্তের হার যেখানে ছিল ৯ শতাংশে, তা আজ সেটা ১১ শতাংশে উঠেছে। গত ১০-১৫ দিন আগেও শনাক্ত রোগী দুই থেকে আড়াইশ’ জন থাকলে এখন সেটি তিন হাজারের কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: সংক্রমণের রেড জোন ঢাকা-রাঙামাটি
জাহিদ মালেক বলেন, বুঝতেই পারছেন সংক্রমণ কীভাবে বাড়ছে। হাসপাতালগুলো এখন শয্যা খালি থাকলেও আগামি চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। হাসপাতালগুলো রোগীতে পূর্ণ হতে শুরু করবে।
তিনি বলেন, এই অবস্থায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আরও ২০ হাজার শয্যা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের পরিস্থিতি যেন আমেরিকা ও ইউরোপের মতো না হয়, সেজন্য ১১ দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যা আগামীকাল থেকে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত মির্জা ফখরুল
করোনা পরিস্থিতির অবনতি, ফের কঠোর বিধিনিষেধ
১৫ জানুয়ারি থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে
ঢাকা, ১১ জানুয়ারি (ইউএনবি)-দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ট্রেনে ভ্রমণের সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ১৫ জানুয়ারি থেকে ট্রেনে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
এছাড়া ট্রেনের টিকিট প্রদান ও বিক্রির ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে।
সংশোধনীগুলো হলো:
সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আন্তনগর ট্রেনে বিদ্যমান আসনসংখ্যার অর্ধেক টিকিট ইস্যুকরণ;
মোট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট কাউন্টারে ও বাকি ২৫ শতাংশ টিকিট অনলাইনে ইস্যু করা;
স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট ইস্যু সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে;
জরুরি ছাড়া রেলওয়ে কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান সব কোটা পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে
টিকিট ইস্যু ও ট্রেনে ভ্রমণের সময় যাত্রীদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে;
স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে আন্তনগর ট্রেনে ক্যাটারিং সেবা ও ট্রেনে রাত্রিকালীন বেডিং সরবরাহ করতে হবে।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকায় সোমবার গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
এদিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জানিয়েছে, এসব বিধিনিষেধ আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
আরও পড়ুন: বাস-ট্রেন ও লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দিনাজপুরে ট্রাকে ধাক্কা দিয়ে ট্রেন লাইনচ্যুত
গাজীপুরে দু’ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
করোনা পরিস্থিতির অবনতি, ফের কঠোর বিধিনিষেধ
ঢাকা, ১০ জানুয়ারি (ইউএনবি)- করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকায় গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জানিয়েছে, এসব বিধিনিষেধ আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও সার্বিক করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিধিনিষেধগুলো হলো:
সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে;
দোকান, শপিংমল, বাজার, হোটেল, রেঁস্তোরাসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে;
দেশে বাড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ, মোট শনাক্ত ৩০
বাংলাদেশে আরও ৯ জনের দেহে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে সোমবার পর্যন্ত ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।
গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে শুক্রবার ১১ জনের দেহে করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়।
১১ ডিসেম্বর দেশে প্রথমবারের মতো ওমিক্রন শনাক্ত হয়। এ দিন জিম্বাবুয়ে ফেরত বাংলাদেশি দুই নারী ক্রিকেটার ওমিক্রনে আক্রান্ত হন।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনে আক্রান্তরা সকলেই সুস্থ আছেন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ঢাকার ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইডিএসএইচআই) এর দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জিআইএসএআইডি এ ফলাফল পেয়েছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহে দেশে করোনা শনাক্ত আগের সপ্তাহের তুলনায় ১১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এক সপ্তাহে ছয় হাজার ৩০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় তিন হাজার ৩৭৬ জন বেশি।’
তিনি বলেন, একই সময়ে ২৩ জন করোনা রোগী মারা গেছেন যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন কড়াকড়িতে বেনাপোলে যাত্রী যাতায়াত কমেছে
ওমিক্রন ঠেকাতে ১৫ নির্দেশনা
করোনার সংক্রমণ বাড়লে লকডাউন দেয়া হতে পারে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী হলে সরকার লকডাউন দেয়ার চিন্তা ভাবনা করতে পারে। আমরা লকডাউন চাই না, তাই করোনা নিয়ন্ত্রণে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। আগামীতে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সরকার আরও কঠোর হবেন।
শনিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ নার্সিং কলেজ মিলনায়তনে বুস্টার ডোজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
এসময় জাহিদ মালেক বলেন, ওমিক্রনের হানা থেকে সারা পৃথিবীর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। ইতোমধ্যে প্রতিষেধক হিসেবে করোনার মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট দেশের বাজারে এসেছে। তবে এই ট্যাবলেট টিকার বিকল্প নয়। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি যাদের মৃদু সমস্যা রয়েছে তারা এই ট্যাবলেট সেবন করতে পারবেন।'
স্বাস্থ্য মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাসে অন্তত চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হবে। দেশে টিকার কোনো অভাব নেই। ইতোমধ্যে টিকা দেয়ার সব ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা হয়েছে। টিকা দেয়ার জন্য নতুন আরও ছয় কোটি সিরিঞ্জ চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে।.
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তদের জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ বাজারজাত শুরু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বুস্টার ডোজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম,সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. শামসুল হক, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, জেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাফিজুর রহমান, পৌর মেয়র রমজান আলী, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশাদ উল্লাহ, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. জাকির হোসেন, সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) লুৎফর রহমান, ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পর্যটন স্পটে মাস্ক না পরায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ওমিক্রন মোকাবিলায় বুস্টার ডোজ সহায়ক হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী