বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ বিপর্যয়: রাজধানীর পেট্রোল পাম্পগুলোতে বিশৃঙ্খলা
বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় মঙ্গলবার ঢাকার পেট্রোল পাম্পগুলোতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পেট্রোল পাম্প অপারেটরদের মতে, দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিড ব্যর্থ হওয়ার পরপরই, অনেক বাসিন্দা তাদের জেনারেটর চালানোর জন্য ডিজেল সংগ্রহ করতে পেট্রোল পাম্পে ছুটে আসেন।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘ডিজেলের উচ্চ চাহিদার কারণে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে পেট্রোলিয়াম শেষ হয়ে যায় এবং অনেক ক্রেতা পেট্রোলিয়াম কিনতে এসে ফিরে যায়।’
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের প্রায় ৪০টি পাম্পের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ ডিজেল বিক্রি করে, বাকি ৭৫ শতাংশ পাম্পে ডিজেল বিক্রি হয় না; শুধু অকটেন ও পেট্রোল বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যা ৭টায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালু হতে পারে: নসরুল হামিদ
নাজমুল হক আরও বলেন, অনেক পাম্প ডিপো থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিজেল সংগ্রহ করতে পারেনি, কারণ তাদের কয়েকজন কর্মচারী দুর্গাপূজার ছুটিতে রয়েছেন।
ফলে ডিজেল বিক্রি করা পাম্পগুলোও অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, গুলশান, বনানী ও নিকেতন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারা ডিজেল সংগ্রহ করতে অনেক রি-ফুয়েলিং স্টেশনে গিয়েছিলেন, কিন্তু পাম্প মালিকেরা তাদের মজুদে ডিজেল নেই বলে তাদের খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়: দেশের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
সময়মতো বিদ্যুৎ বিল শোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন
সন্ধ্যা ৭টায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালু হতে পারে: নসরুল হামিদ
জাতীয় পাওয়ার গ্রিড বিকল হওয়ার পর আজ বিকেল ৫টার দিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনসহ ঢাকার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি চালু হতে পারে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বঙ্গভবন ও গণভবন এবং মিরপুর ও ঢাকার অন্যান্য এলাকার কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুণরায় চালু করেছি।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা সারা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।
ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তবে ঢাকা শহরের জন্য আমি স্থিরভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি যাতে আর কোনো বিঘ্ন না ঘটে।’
নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘তারা তাড়াহুড়ো করলে তা আরও বিঘ্ন ঘটাতে পারে।’
দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিড ব্যর্থ হলে দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশ ছাড়া সারা বাংলাদেশে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি করে।
জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়: দেশের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডে বিপর্যয় হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫ মিনিট থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশ বাদে সারা দেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি)ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) কর্মকর্তাদের মতে, দেশের পূর্বাঞ্চলে, বিশেষ করে যমুনা নদীর পূর্ব দিকের জেলাগুলোর কোথাও কোথাও ট্রান্সমিশন লাইন ট্রিপ হয়েছে।
পিজিসিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, রংপুর বিভাগের মাত্র কয়েকটি জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
আরও পড়ুন: সময়মতো বিদ্যুৎ বিল শোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন
গ্রিড বিকল হয়ে যাওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে একের পর এক কেন্দ্র বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বিপিডিবির পরিচালক (জনসংযোগ) শামীম হাসান জানান, বিপিডিবি এবং পিজিসিবি উভয়ের প্রকৌশলীরা বিদ্যুৎ সঞ্চালন পুনরুদ্ধারের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।
দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ওই বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।
পিজিসিবি কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন যে তারা গ্রিড ব্যর্থতার সঠিক কারণ ও অবস্থান এখনও শনাক্ত করতে পারেনি।
২০১৭ সালের ২ মে দেশের ৩২টি জেলায় গ্রিড বিপর্যয়ের সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান নসরুল হামিদের
বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ
চার বিতরণ অঞ্চলে ডিজিটাল কল সেন্টার স্থাপন করবে বিপিডিবি
দেশের চারটি বিতরণ অঞ্চল চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লায় ২৪ ঘন্টা গ্রাহক সেবা দিতে ডিজিটাল কল সেন্টার স্থাপন করবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি)।
রবিবার ডিজিটাল কল সেন্টার স্থাপনে বেসরকারি আউটসোর্সিং সংস্থা ডিজিকনের সঙ্গে বিপিডিবি এই চুক্তি সই করে।
এর মাধ্যমে বিপিডিবি তার ৩৬ লাখ গ্রাহককে গ্রাহক পরিষেবা দিবে।
চুক্তি অনুযায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডিজিকন টেকনোলজিস লিমিটেড আগামী তিন মাসের মধ্যে ঢাকার বিদ্যুৎ ভবনে কল সেন্টার স্থাপন করবে। গ্রাহকদের সেবা প্রদানের জন্য ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কল সেন্টারটি পরিচালনা করবে বিপিডিবি।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৯ মাস ছাড়
বিপিডিবি’র কল সেন্টারটি সারা বছর ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে এবং এটি চালু হয়ে গেলে যেকোন বিপিডিবি গ্রাহক একটি অ্যাপ ব্যবহার করে বা মোবাইল ফোন থেকে ১৬১৩১ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
কল সেন্টার অভিযোগটি তাৎক্ষণিক গ্রহণ করবে এবং সমস্যাটি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে অভিযোগের অবস্থা সম্পর্কে গ্রাহকের প্রতিক্রিয়াও পাঠাবে।
গ্রাহক অ্যাপ ব্যবহার করে অভিযোগের স্থিতি ট্র্যাক করতে পারেন এবং অভিযোগের সমাধান হয়ে গেলে পরিষেবাটি মূল্যায়ন করতে পারেন।
বিপিডিবি কর্মকর্তারা তাদের স্মার্ট মোবাইল ফোন থেকে একটি ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে সেবাটি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
ডিজিকন টেকনোলজিস ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য সিস্টেমটি পরিচালনা করবে। এর মধ্যে, এটি প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার তৈরি করবে এবং জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্রাহকসেবা প্রদানে বিপিডিবির উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠানে ডিজিকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরীফ এবং বিপিডিবির দাপ্তরিক ক্রয় পরিচালক রুবিনা হক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
ডিজিকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরীফ বিপিডিবিকে অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অন্য সব কল সেন্টারকে একটি সিস্টেমে একীভূত করার পদক্ষেপ নিতে বলেন, যাতে এর যেকোনো গ্রাহক সহজেই অভিযোগ করতে পারে এবং কোনো ঝামেলা ছাড়াই সেবা পেতে পারে।
আরও পড়ুন:আগস্টে রেকর্ড ৮ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা ভ্যাট সংগ্রহ
তিনি আরও বলেন, ‘কল সেন্টার এবং এর সিস্টেমটি অবশ্যই ব্যবহারকারী বান্ধব হতে হবে এবং অভিযোগ দায়েরের জন্য পাওয়ার সেক্টরের সমস্ত সংস্থার জন্য একটি অনন্য নম্বর থাকা উচিত।’ অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নম্বর মনে রাখা অসম্ভব। ইতোমধ্যে তাদের আলাদা কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বিপিডিবিকে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) অনুসরণ করার পরামর্শ দেন যাতে মনে রাখার মতো একটি সহজ অনন্য নম্বর পাওয়া যায়।
বিপিডিবি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান ও ডিজিকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান।
তবে ডিজিকন কীভাবে চুক্তিটি পেয়েছে এবং পরিষেবা প্রদানের জন্য কত টাকা দেয়া হবে সে সম্পর্কে অনুষ্ঠানে কিছু জানানো হয়নি।
ওয়াহিদুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির আওতায় ডেসকো গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছেন তারা।
আরও পড়ুন: বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ
বরগুনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ জনের মৃত্যু
বরগুনা সদর উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।
শনিবার পুরাতন ঘর ভাঙা শুরু করলে বেলা ২টার দিকে ওই পুরাতন ঘরে থাকা মিটার সংযোগের তার ছুটে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- একই এলাকার শাহজান পহলানের ছেলে বেলায়েত পহলান (২৫), হারুন হাজীর ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. হেলাল (৩৫) এবং জলিল মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম (১৪)। গুরুতর আহত অন্যজন হলেন, একই এলাকার নিজাম খানের ছেলে আরিফ (২০)।
পরিবারের স্বজনরা জানান, দীর্ঘ আট বছর পর হেলাল প্রবাস জীবন শেষে বাড়িতে আসলে পুরাতন টিনের ঘর ভেঙে সেখানে ভবন নির্মাণের কাজ করতে চায়। পুরাতন ঘর ভাঙা শুরু করলে বেলা ২টার দিকে ওই পুরাতন ঘরে থাকা মিটার সংযোগের তার ছুটে তার শরীরে ও ঘরের টিনে লাগে। তখন হেলালকে কাজের সহযোগিতা করার সময় মামাতো ভাই বেলায়েত, প্রতিবেশী অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া রবিউল ও আরিফসহ মোট চারজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
স্থানীয়রা আহত অবস্থায় সকলকে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং একজন গুরুতর আহত থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ বরগুনা জোনাল অফিসের ডিজিএম আরব আলী জানান, পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্তর্গত, বরগুনা জোনাল অফিসের আওতায় রায়ভোগ অভিযোগ কেন্দ্রের অধীনে কদমতলী গ্রামে বিলাত হোসেন (৩৯৫/২৫০০) নামে এক গ্রাহক অফিসকে অবহিত না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে নিজেরা নিজেরা ঘর মেরামত করতে গেলে মেরামত কাজে নিয়োজিত চারজন মিস্ত্রির মধ্যে একজনের হাত থেকে টিন নিচে পড়ে গেলে মিটারটি ভেঙে যায় মিটার ভেঙে যাওয়ার ফলে টিন বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে ফলে সঙ্গে সঙ্গে চারজনের মধ্যে তিন জনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল করেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বজনদের দাবি এটি একটি দুর্ঘটনা, তাই যেন লাশ ময়নাতদন্ত না হয়।
আরও পড়ুন: মাগুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ভ্যানচালকের মৃত্যু
রাজশাহীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারীর মৃত্যু
ফের মেয়াদ বাড়ল চার রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের
ফের মেয়াদ বাড়ল ভাড়ায় চালিত (রেন্টাল) চার বিদ্যুৎকেন্দ্রের। এ ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুপস্থিতিতে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এই বৈঠকটি হয়।
কর্মকর্তারা বলছে, ভাড়া করা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হলো- একর্ন ইনফ্রাসট্রাকচার সার্ভিস লিমিটেডের চট্টগ্রামের জুলডার ১০০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নর্দান পাওয়ার সলুশনস লিমিটেডের রাজশাহীর ৫০ মেগাওয়াট কাটাখালি পাওয়ার প্ল্যান্ট, পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা কেরানীগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেডের ১০০ মেগাওয়াট কেরানীগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট, সিনহুয়া পাওয়ার জেনারেশেন কোম্পানি লিমিটেডের চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০ মেগাওয়াট আমনুয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট।
আরও পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির যৌথভাবে ১ম ইউনিট সম্পন্নের ঘোষণা
তারা বলছে, এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ভাড়ায় চালিত চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আগামী দুই বছর বিদ্যুৎ ক্রয় করবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ নিলে টাকা দেয়া হবে, না নিলে টাকা দেয়া হবে না, এমন নতুন নিয়ম শর্তের ভিত্তিতে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নতুন শর্তানুযায়ী বিদ্যুৎ ক্রয়ে নতুন শুল্ক আরোপ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ভাড়ায় চালিত কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে কেবল জ্বালানি খরচ ও নূন্যতম পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে: মোদি
যৌথভাবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১- এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা হাসিনা-মোদির
‘মোংলা বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ স্থাপনে চুক্তি সাক্ষর রবিবার
বাগেরহাটের মংলায় নিজস্ব পরিচালনার ভিত্তিতে ৫৫ মেগাওয়াট একটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বাংলাদেশ-চায়না কনসোর্র্টিয়াম –এর সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড একটি চুক্তি করবে। রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর এই চুক্তি সাক্ষর হবে।
প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান বিপিডিবি স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে ২০ বছর বিদ্যুৎ কিনবে।
এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটি চায়না-বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামকে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেয়।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, কনসোর্টিয়াম অব ইনভিশন এনার্জি, জিয়াংসু কোম্পানি লিমিটেড, চায়না, এসকিউ ট্রেডিং অ্যান্ড ইন্ঞ্জিনিয়ারিং, বাংলাদেশ ইনভিশন রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড, হংকং একটি বিশেষ যান প্রকল্পের (এসপিভি) আওতায় মোংলা গ্রিন পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ করবে।
প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিপিডিবি ওই পাওয়ার প্লান্ট থেকে ঘন্টায় প্রতি কিলোওয়াট ১৩ টাকা হারে কিনবে।
বিপিডিবি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকার চুক্তির আওতায় বেসরকারি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পুরো সময়ে দুই হাজার ৩৫ দশমিক ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করবে।
পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির যৌথভাবে ১ম ইউনিট সম্পন্নের ঘোষণা
বিপিডিবি কর্মকর্তা বলেন, চীনা-বাংলাদেশি কনসোর্র্টিয়াম টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন করদাতা ছিলেন।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) বলছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ২০২০ সালে এক হাজার ১৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতার
বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন শুরু করে মোট ২ দশমিক ৯ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তিনটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
এর আগে ২০১৫ সালের মার্চে বিপিডিবি কক্সবাজারের মহেশখালী নদীর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন খুরুসকুল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইউএস-ডিকে গ্রিন এনার্জি (বিডি) প্রকল্প চুক্তি করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের টেইলর ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ ও পিএইচ-কনসাল্টিং গ্রুপ অব ডেনমার্ক এবং মাল্টিপল গ্রিন এনার্জি অব
বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে নেয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তিটি হয়।
কিন্তু গত পাঁচ বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয় এই স্পন্সর।
বিপিডিবি’র মংলা প্রকল্পটিও ওই তিনটি প্রকল্পের মতোই একটি প্রকল্প।
কিন্তু এই পদক্ষেপটি দরদাতাদের বড় পরিসরে অংশগ্রহণ আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
পড়ুন: বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আগামী মাসে আরও উন্নতি হবে: নসরুল হামিদ
বিপিডিবি কর্মকতা বলেন, একমাত্র দরদাতা চাইনিজ ফার্ম ইনভিশন এনার্জি দরপত্রে অংশ নিয়ে দুটি স্থানের মধ্যে একটি স্থান মোংলাকে নির্ধারণ করে।
বিপিডিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. জহির আহমেদ বলেন, যে দরপত্রটি আহ্বান করা হয়েছিল তা জমাদানের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিপিডিবি দরপত্রটি ছেড়ে ছিল। এর আগে বিপিডিবি একটি ১০০ মেগাওয়াট অফশোর বায়ু বিদ্যুত প্রকল্পের জন্য দরপত্রের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু ক্রেতা খুঁজে পায়নি।
বিপিডিবি ও শ্রেডা কর্মকর্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার সহযোগিতায় দেশের বায়ু বিদ্যুৎ
শক্তি নিয়ে বেশকিছু মূল্যায়ন গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।
সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআডি) আর্থিক সহযোগিতায় ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি ল্যাবরেটরি(এনআরইএল) সারাদেশের বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাই করে নয়টি স্থানকে নির্ধারণ করেছে।
স্থানগুলোর গড় বাতাসের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৫-৭ মিটার থেকে সর্বোচ্চ ৬০-৮০ মিটার। স্থানগুলো হলো নাটোরের লালপুর, চাঁদপুর, সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রামের পারকে বিচ, ময়মনসিংহের গৌড়িপুর, হবিগঞ্জের মধুপুর চা বাগান খুলনার মোংলা বন্দরের নিকটবর্তী এলাকা দাকোপ, কক্সবাজারের ইনানী বিচ এবং রংপুরের বদরগঞ্জ।
বিদ্যুৎ বিভাগে এনআরইএন এর জমা দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব যে সকল এলাকায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে প্রতি সেকেন্ডে বাতাসের গতি ৫ দশমিক ৭৫ থেকে ৭ দশমিক ৭৫ থাকে।
সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা আদায়ে তাদের সামনে জায়গা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বায়ু বিদ্যুতের নির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরতে বাস্তবায়নকারী
সংস্থা ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি শিল্পের বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সপ্তাহে ২ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
গ্রামের বর্জ্য সংগ্রহ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
গ্রাম-গঞ্জের ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘শুধু সিটি কর্পোরেশন বা বড় শহরে নয়, প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এছাড়া কিছু কিছু পৌরসভায় ছোট ছোট আকারের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদ প্ল্যান্টের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি শুধু শহরে সীমাবদ্ধ থাকবে না।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, যদি গ্রাম এলাকার উৎপাদিত বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না করা যায় তাহলে ইকোলোজিক্যাল ব্যালেন্স নষ্ট হবে। নদী-নালা, খাল-বিল সবকিছু বর্জ্যের স্তূপে পরিণত হবে। এজন্য গ্রামের বর্জ্যগুলোকে সংগ্রহ করে পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।’
তিনি বলেন, টেকনোলজি প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। এখন যে প্রযুক্তি তাতে আগের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। বেশি উৎপাদন করা গেলে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। পরিবেশের ক্ষতি না করে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিশ্রমের কারণে সারাদেশ শতভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে। যদিও এখন রাশিয়া- ইউক্রেনের কারণে জ্বালানির কিছু সঙ্কট দেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে সব দেশে কিছু কিছু অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশ যেভাবে এটিকে সামাল দিচ্ছে তাতে আমার মনে হয় পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে প্রশংসার দাবিদার।
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্র রুখতে সকল ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, দেড় শো-দুইশ ডলারর মাথাপিছু আয়ের দেশ এখন দুই হাজার ৮২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বে যদি অপ্রত্যাশিত কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তাহলে এটি এ বছরই ৩ হাজার ডলার অতিক্রম করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশ সমভাবে চলছে না। ইউরোপসহ অনেক দেশ তাদের বিদ্যুৎ ও ফুড সাপ্লাইয়ে পরিবর্তন এনেছে। ইউরোপের অনেক দেশে স্থিতিশীল অবস্থা নেই। এর মধ্যেও বাংলাদেশ ভালো আছে। এ কথাটা কেউ বলতে চান না। পৃথিবীর অনেকে দেশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের চেয়ে অনেক বেশি লোডশেডিং দিচ্ছে। আমাদের দেশ তার চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম লোডশেডিং হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যেভাবে অব্যাহত রয়েছে এবং যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তাতে আমাদের কোনো চিন্তার কারণ নেই। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সাথে তুলনা করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে এই কথারও কোনো ভিত্তি নেই।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়া আইভী।
আরও পড়ুন: পানির মূল্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের নির্দেশ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
নেপাল থেকে বিদ্যু কিনতে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর কারনালি হাইড্রোপাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভাইপার নিগাম (এনভিভিএন) এর সঙ্গে পাওয়ার পার্সেজ অ্যাগ্রিমেন্ট(পিপিএ) চুক্তি করবে।
কাঠমান্ডুভিত্তিক নিউজ পোর্টাল উর্জা খবর নেপালের বিদ্যুৎ, পানি ও সেচ মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এক খবরে জানায়, গত বৃহস্পতিবার দুই দেশের মধ্যে একটি জয়েন্ট স্টিয়ারিং মিটিং হয়েছে যেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে পিপিএ সাক্ষর করার অঙ্গীকার করা হয়।
আশা করা হচ্ছে, সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় এই চুক্তি সাক্ষর হবে।
পিপিএ চুক্তি বাংলাদেশ-নেপালের আন্তঃসীমান্ত শক্তি বাণিজ্য পরিচালনার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ কেনার আগ্রহ দেখিয়ে আসছে।
দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্প পর্যবেক্ষকরা বলেন, ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি দেশের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা ২৫০০০ মেগাওয়াটের সঙ্গে যুক্ত হবে, যার ৪০ শতাংশ অব্যবহৃত রয়েছে। যখন জ্বালানি সংকটের কারণে দৈনিক রেশনিং করে ২০০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
তারা আরও বলছে, বাংলাদেশ নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে, পিপিএ চুক্তির আওতায় ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর নেপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে এবং এনভিভিএন ভারতীয় এলাকার মধ্যদিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে সরবরাহ করবে।
তারা বলেছে, ঢাকা ও দিল্লির দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ যদি নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় তাহলে তা ভারতীয় এলাকা দিয়ে নিতে হবে। আর এটি ভারতীয় কোম্পানি থেকে ক্রয় করতে হবে।
দিল্লিভিত্তিক জিএমআর গ্রুপের ভর্তুকিভিত্তিক জিএমআর কারনিল হাইড্রোপাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড আর ভারত সরকারের রাষ্ট্রমালিকানাধীন এনটিপিসি লিমিটেড কর্তৃক ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত
এনভিভিএন দেশটির একটি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী কোম্পানি।
এতে উল্লেখ করা হয় যে সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নেপাল থেকে ভারতীয় কোম্পানির ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়।
ভারতীয় রেগুলেটরি কমিশনের শর্তাবলী মেনে ভারতীয় কোম্পানি এনভিভিএন –এর মাধ্যমে ওই বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২৫ বছরের জন্য প্রতি কিলোওয়াট মার্কিন ৭.৭ ডলার মূল্য দিয়ে ভারতীয় জিএমআর এর উৎপাদন কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, এই আমদানি খরচ বাবদ সর্বমোট ৪০ হাজার কোটি ডলার এনভিভিএন –এর মাধ্যমে জিএমআরকে আমদানিকালীন সময়ে পরিশোধ করতে হবে।
২০১৮ সালের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন অনুযায়ী এনভিভিএন এর মাধ্যমে জিএমআর থেকে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি সাক্ষর করবে বিপিডিবি।
নেপালের নিউজ পোর্টালটি প্রতিবেদনে জানায়, বৃহস্পতিবার জ্বালানি সহযোগিতার আওতায় দ্বিপক্ষীয় পাঁচ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায় দেশ দুটি।
আলোচনায় সম্ভাব্যতার কথা বলা হয়েছে যে বাংলাদেশ প্রাথমিক পর্যায়ে নেপাল থেকে ৪০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভেড়ামারা পাওয়ার প্ল্যান্টে তার উচ্চ ভোল্টেজ সরাসরি বর্তমান কাঠামোর অপ্রয়োজনীয় ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে।
এই সম্ভাব্যতার জায়গায় দু’দেশের জ্বালানি কর্তৃপক্ষ নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ভারতীয়
এনভিভিএন-কে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষরের অনুরোধ করবে।
একইভাবে নেপাল ৬৮৩ এমডব্লিউ সানকোসি-৩ হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্টের পরিবেশ মূল্যায়নের প্রতিবেদন বাংলাদেশকে দিবে। এই বিষয়ে, বাংলাদেশ প্রকল্পের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে একটি যৌথ দল গঠন ত্বরান্বিত করার জন্য শিগগিরই প্রতিবেদনে প্রয়োজনীয় মন্তব্য করতে সম্মত হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে উর্জা জানায়, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দুই দেশের সম্মতিতে নেপাল, বাংলাদেশ ও ভারতের ভূমিতে একটি ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সোলার হোম সিস্টেমসহ সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তির খসড়া প্রস্তুত, প্রশিক্ষণ প্রদানে সহযোগিতা এবং দ্বিপক্ষীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি ভবিষ্যত নির্দেশিকা
তৈরি করতে ভারতের সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করতে চায়।
আরও পড়ুন: নেপাল থেকে বিদ্যু কিনতে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ
ফিলিপাইনে ফেরিতে অগ্নিকাণ্ডে ৮০ জনের বেশি মানুষ উদ্ধার
এফবিআই: ম্যাগাজিন ও অন্যান্য নথির সঙ্গে ‘টপ সিক্রেট’ নথি মিশিয়ে রেখেছিল ট্রাম্প
বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আগামী মাসে আরও উন্নতি হবে: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দাবি করেছেন, গতমাসের চেয়ে চলতি মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগামী মাসে আরও উন্নতি হবে।
শনিবার বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঝুঁকিতে পড়েছে। এটি বিশ্বের জ্বালানি খাতে ব্যাপকভাবে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন:সৌরবিদ্যুতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমি: নসরুল হামিদ
বিপিডিবি’র চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরি ও জ্বালানি সচিব হাবিবুর রহমান।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় জনগণকে আরও ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান পুর্নব্যক্ত করে নসরুল হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশে দৈনিক ১৬-১৮ ঘন্টা লোডশেডিং হতো।
তিনি আরও বলেন, সেই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন।
নসরুল হামিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেল অয়েল কোম্পানির পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র কিনে নিয়ে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। সেগুলো থেকে দেশের গ্যাসের চাহিদার ৪০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে।
তিনি বিদ্যুত পাওয়াকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের সংকট বেশিদিন থাকবে না: নসরুল হামিদ
গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান নসরুল হামিদের