%E0%A6%8F%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত: শি জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া এবং একে অপরকে আঘাত করা ও তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে সফল হতে সহায়তা করা।
বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে শি জিনপিং এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গত ৪৫ বছর ধরে, সম্পর্কটি বেশ উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে গেছে। পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়নে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুপ্রেরণা রয়েছে। যেমন- চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বীর পরিবর্তে অংশীদার হওয়া উচিত; একে অপরকে আঘাত করার পরিবর্তে একে অপরকে সফল হতে সহায়তা করা; নেতিবাচক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে পারস্পরিক মিলের জায়গাগুলো খুঁজে বের করুন এবং মতপার্থক্যগুলো এড়িয়ে চলুন। এক কথা বলে আরেক কাজ না করে, কাজের মাধ্যমে সম্মান করুন।’
এ বছর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫তম বার্ষিকী চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও উভয় পক্ষেরই ভালো হয়- এ ধরনের সহযোগিতাকে তিনটি প্রধান নীতি হিসেবে প্রস্তাব করেন তিনি। অতীত থেকে শিখে ভবিষ্যতের জন্য কাজে লাগানোর কথাও বলেন শি।
আরও পড়ুন: চীনের আনহুই প্রদেশের সঙ্গে ডিএনসিসি’র সমঝোতা স্মারক সই
এখন এমন কিছু রূপান্তর দেখা যাচ্ছে যা গত এক শতাব্দীতে দেখা যায়নি এবং বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অশান্ত বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংলাপ জোরদার করা, মতপার্থক্য নিয়ন্ত্রণ এবং সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়া উভয় দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা।
তিনি বলেন, 'আমি আগেও অনেকবার বলেছি যে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য পৃথিবীটি যথেষ্ট বড়।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্রও চীনের উন্নয়নকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবে। চীন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি একটি মৌলিক সমস্যা যা অবশ্যই মোকাবিলা করতে হবে। সম্পর্ক সত্যিকার অর্থে স্থিতিশীল, উন্নতি এবং এগিয়ে যাওয়া।
গত বছর সান ফ্রান্সিসকোতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা সান ফ্রান্সিসকো ভিশন চালু করেছেন যা ভবিষ্যৎমুখী এবং তাদের সাধারণ বোঝাপড়া অনুসরণ করেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগ বজায় রেখেছে এবং গত কয়েক মাসে কিছু ভালো অগ্রগতি করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো কিছু সমস্যা রয়েছে যা মোকাবিলা করতে হবে যা আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। কয়েক সপ্তাহ আগে আমাদের ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও আমার মধ্যে এবারের সফরের বিষয়ে একমত হয়েছিলাম। আশা করছি আপনারা এটি ফলপ্রসূ করবেন।’
প্রেসিডেন্ট শির কাছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন। তিনি উল্লেখ করেন, সান ফ্রান্সিসকোতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও প্রেসিডেন্ট শির বৈঠকের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দ্বিপক্ষীয় মিথস্ক্রিয়া, মাদক দমন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের আদান-প্রদানের মতো ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতায় ভালো অগ্রগতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত ও চীন যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
বিশ্ব যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে তার বহুবিধতা ও জটিলতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সফরকালে তিনি যে সব স্তরের আমেরিকানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তারা সবাই মার্কিন-চীন সম্পর্কের উন্নতি দেখার আশা প্রকাশ করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন কোনো স্নায়ুযুদ্ধ চায় না, চীনের ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চায় না, চীনের উন্নয়ন দমন করতে চায় না, চীনের বিরুদ্ধে তার মিত্রতা পুনরুজ্জীবিত করতে চায় না এবং চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব করার কোনো ইচ্ছাও তাদের নেই।
যুক্তরাষ্ট্র এক চীন নীতি মেনে চলে। এটি চীনা পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে, সান ফ্রান্সিসকোতে দুই রাষ্ট্রপতি যা সম্মত হয়েছিলেন তা অনুসরণ করতে, আরও সহযোগিতা চাইতে, ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল হিসাব এড়াতে, দায়িত্বশীলভাবে পার্থক্য পরিচালনা করতে এবং মার্কিন-চীন সম্পর্কের স্থিতিশীল বিকাশ অর্জনের আশা করে।
প্রেসিডেন্ট শি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে বলেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইও বৈঠকে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-চীনের রয়েছে গভীর রাজনৈতিক আস্থা ও সহযোগিতা: শি জিনপিং
নির্বাচনি জনসভায় 'অনুপ্রবেশকারী' বলায় মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ মোদির বিরুদ্ধে
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল (ইউএনবি)-‘অনুপ্রবেশকারী’ বলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ এনেছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল। দেশটিতে সপ্তাহব্যাপী সাধারণ নির্বাচন শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর একটি নির্বাচনি সমাবেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন তিনি।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানে রবিবারের সমাবেশে মোদি বলেন, কংগ্রেস পার্টি যখন সরকারে ছিল, তখন তারা বলেছিল, দেশের সম্পদের ওপর মুসলমানদের অগ্রাধিকার রয়েছে। যদি তারা ক্ষমতায় ফিরে আসে তবে দলটি ‘আপনার সমস্ত সম্পদ একত্রিত করবে এবং যাদের আরও সন্তান রয়েছে তাদের মধ্যে বিতরণ করবে।’ মোদির এ কথার শোনার পর জনতা হাততালি উল্লাস প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, ‘তারা অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে এটি বিতরণ করবে। আপনি কি মনে করেন আপনার কষ্টার্জিত অর্থ অনুপ্রবেশকারীদের দেওয়া উচিত?’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সঙ্গে মোদির ফোনালাপ: বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে ভারতের সমর্থন অব্যাহত থাকবে
কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘অত্যন্ত অত্যন্ত আপত্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন। দলটি সোমবার ভারতের নির্বাচনকালীন দায়িত্বে থাকা কমিশনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলে।
মোদির এই মন্তব্যে মুসলিমবিরোধী প্রচারণা চালানো এবং নির্বাচনি বিধি ভঙ্গের অভিযোগে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও প্রার্থীদের ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে এমন কোনো কার্যকলাপ বা বক্তব্য প্রদান নিষিদ্ধ।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের আদর্শ আচরণবিধি অনুসারে ভোটারদের সুরক্ষিত রাখতে ‘জাতিগত বা সাম্প্রদায়িক অনুভূতিতে আঘাত করা’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মুসলিম আইনপ্রণেতা ও অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন পার্টির সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইদি রবিবার বলেন, 'মোদি আজ মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী বলার পাশাপাশি বলেছেন, মুসলিমদের অনেক সন্তান থাকে। ২০০২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মোদীর একমাত্র অঙ্গীকার হলো মুসলিমদের হেনস্থা করা ও এভাবেই ভোট আদায় করা।
কট্টর হিন্দুত্ববাদী মোদির সমালোচকরা বলছেন, ২০১৪ সালে মোদির দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে এবং ২০১৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের বৈচিত্র্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, মোদির বিজেপি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা লালন করে এবং কখনো কখনো সহিংস হয়ে উঠছে। তবে মোদির দলটি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের নীতির কারণে সমস্ত ভারতীয়রা উপকৃত হয়।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মোদির আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা আরও নির্লজ্জ হয়ে উঠেছে। হিন্দুদের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত গরুর মাংস খাওয়া বা গরু পাচারের অভিযোগে উগ্রহিন্দুরা অসংখ্য মুসলমানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বর্জন করা হয়েছে, তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং উপাসনালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। মুসলিমদের গণহত্যার জন্য কিছু প্রকাশ্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় মোদির শোক
২০০৬ সালে কংগ্রেসের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের একটি বিবৃতির ভিত্তিতে মোদি এই মন্তব্য করেছিলেন। সিং বলেন, ভারতের নিম্নবর্ণ, উপজাতি, নারী ও ‘বিশেষত মুসলিম সংখ্যালঘুদের’ সমানভাবে দেশের উন্নয়নে অংশ নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে।
সিং বলেন, ‘সম্পদের ওপর তাদের প্রথম দাবি থাকতে হবে।’ একদিন পরেই তার দপ্তর থেকে বিষয় স্পষ্ট করে জানানো হয়, মনমোহন সব পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর কথা বলছেন।
বেশিরভাগ জরিপে দেখা গেছে, মোদি ও তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত ফলাফল বের হবে ৪ জুন।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে মোদীর মন্তব্যকে 'বিদ্বেষমূলক ভাষণ' বলে বর্ণনা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ খাড়গে লেখেন, ‘ভারতের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী তার পদের মর্যাদার এতটা নীচে নামিয়ে আনেননি যতটা মোদী করেছেন।’
নির্বাচন কমিশনের কাছে করা আবেদনে দলটি বলেছে, মোদী ও বিজেপি নির্বাচনি প্রচারে বারবার ধর্ম, ধর্মীয় প্রতীক ও ধর্মানুভূতির ব্যবহার করেছে। নির্বাচনি আইন লঙ্ঘনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে আরও উৎসাহিত করেছে।
কমিশনের আচরণবিধি নিজে থেকে আইনত বাধ্যতামূলক নয়, তবে এটি নোটিশ জারি করতে পারে এবং লঙ্ঘনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রচারকারীদের স্থগিত করতে পারে।
কমিশনের এক মুখপাত্র সোমবার প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আমরা কোনো মন্তব্য করতে অপরাগতা প্রকাশ করছি।’
মোদি তার ভাষণে একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী মিথের কথাও উল্লেখ করেন, মুসলমানরা বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে হিন্দু জনগোষ্ঠীকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিন্দু ও মুসলমানদের সংখ্যা ১৪ শতাংশ বা ২০ কোটি।
সরকারি তথ্য দেখা যায়, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে মুসলমানদের মধ্যে প্রজনন হার ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। ১৯৯২-৯৩ সালে ৪.৪ থেকে ২০১৯-২১ সালের মধ্যে ২.৩-এ দাঁড়িয়েছে। একই সময় হিন্দুদের ১.৯৪ এর চেয়ে সামান্য বেশি।
মোদির বিজেপি এর আগে মুসলমানদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং তাদের বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এসব বিষয়ে মোদির সুস্পষ্ট নীরবতা তার চরমপন্থী সমর্থকদের সাহস জুগিয়েছে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে আরও ঘৃণামূলক বক্তব্য দিতে উৎসাহিত করেছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি
পাকিস্তানের প্রদেশে বন্যা সতর্কতা জারি, বহু প্রাণহানির আশঙ্কা
পাকিস্তানের একটি প্রদেশে হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ব্যাপক প্রাণহানির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বিষয়টি জানিয়েছেন।
পাকিস্তান চরম আবহাওয়ার দিনের সম্মুখীন হয়েছে, বেশ কয়েকজন মারা গেছে এবং সম্পত্তি ও কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এপ্রিলে দেশটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া বন্যায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি জেলায় হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে।
আরও পড়ুন: ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নৌকাডুবিতে নিহত ৬
তারা বলেছে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং যেকোনো বিপদের আগেই লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে।
স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুহাম্মদ কায়সার খান বলেন, ‘সময়মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে প্রত্যাশিত বন্যা পরিস্থিতির কারণে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’
প্রদেশটির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৃষ্টিজনিত কারণে গত ৫ দিনে ৩৩ শিশুসহ ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্তত ২ হাজার ৮৭৫টি বাড়ি ও ২৬টি বিদ্যালয় হয় ধসে পড়েছে অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানেও বৃষ্টিপাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের সীমিত সংস্থান রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে তাদেরকে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হতে হবে।
আরও পড়ুন: আরব আমিরাতে ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যায় ওমানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে ভোট গ্রহণ শুরু
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে ৬ সপ্তাহের নির্বাচনে শুক্রবার থেকে ভোট দিতে শুরু করেছেন লাখ লাখ ভারতীয়রা।
হিমালয় পর্বতমালা থেকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত প্রথম ২১টি রাজ্যে সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে, এর বেশ আগে থেকেই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়াতে শুরু করেন।
১ জুন পর্যন্ত চলা এই নির্বাচনে প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও বেশি, ৫ বছরের জন্য পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৫৪৩ জন সদস্যকে নির্বাচিত করবেন। ভোট গণনা হবে ৪ জুন।
এক ভোটার জানান, গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে বাঁচতে তিনি তাড়াতাড়ি এসেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের লোকসভা নির্বাচন: ৩ দিন বন্ধ থাকবে বুড়িমারী স্থলবন্দর
রেকর্ড সংখ্যায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি বলেন, ‘আমি বিশেষ করে তরুণ এবং প্রথমবারের ভোটারদের বিপুল সংখ্যায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সর্বোপরি, প্রতিটি ভোট গুরুত্বপূর্ণ!’
এই নির্বাচনকে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং এটি মোদির রাজনৈতিক আধিপত্যের সীমা পরীক্ষা করবে। মোদি জিতলে জওহরলাল নেহরুর পর তিনিই হবেন দ্বিতীয় ভারতীয় নেতা যিনি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসবেন।
বেশিরভাগ জরিপে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিস্তৃত বিরোধী জোট এবং শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলোর বিরুদ্ধে মোদি ও তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'ইন্ডিয়া আউট' ক্যাম্পেইন: বাংলাদেশের সঙ্গে 'দৃঢ় ও গভীর' সম্পর্কের কথা জানাল ভারত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নৌকাডুবিতে নিহত ৬
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি নদীতে নৌকাডুবিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নৌকাটিতে থাকা ১৫ জন যাত্রীর মধ্যে নিখোঁজ আরও তিনজনের সন্ধানে উদ্ধারকর্মীরা অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
বেসামরিক প্রশাসক বিলাল মহিউদ্দিন ভাট জানান, যাত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ছিল। এ পর্যন্ত ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই অঞ্চলের প্রধান শহর শ্রীনগরের ঝিলাম নদীতে নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে। পানির তীব্র স্রোতের মধ্যে নদী পার হওয়ার সময় একটি দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় নৌকাটি ডুবে যায়। গত কয়েকদিন ধরে এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীতে পানি বেড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ফিরদৌস আহমেদ লোন জানান, তিনি সাহায্যের জন্য মানুষের চিৎকার শুনে তাদের বাঁচাতে ছুটে যান।
লোন বলেন, ‘আমি তাদের চারজনকে নদী থেকে টেনে তুলেছিলাম, কিন্তু তার আগেই তারা মারা গিয়েছে।’
অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে ভারতে নৌ দুর্ঘটনা খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বছর ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যের একটি সমুদ্র সৈকতে ৩০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে একটি দোতলা নৌকাডুবিতে ২২ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৮ সালের মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশে গোদাবরী নদীতে নৌকাডুবিতে ৩০ জনের মৃত্যু হয়।
পাকিস্তানে তীর্থযাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৭
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাস গভীর খাদে পড়ে গিয়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ১৬ জন আহত হয়েছেন।
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্ড জানান, ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রথম দিন ও পাকিস্তানে সরকারি ছুটির দিন বুধবার রাতে তারা বেলুচিস্তানের একটি মাজারে যাচ্ছিলেন।
হজযাত্রীরা যে মাজারে যাচ্ছিলেন সেখান থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে লাস বেলা জেলায় বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১৫ জনকে পার্শ্ববর্তী সিন্ধু প্রদেশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাসটিতে চালকসহ ৩৩ জন যাত্রী ছিলেন।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তাইওয়ানে ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন, মৃত্যু বেড়ে ১৩
তাইওয়ানে ভূমিকম্পের পর ঝুঁকে পড়া একটি ভবন ভাঙার কাজ শনিবার স্থগিত করতে হয়েছে। কারণ, ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনের (আফটারশক) কারণে ভবনটি আরও গেলে পড়ে।
প্রায় ১০ তলা উঁচু এবং হুয়ালিয়েন শহরের একটি রাস্তার উপর ঝুঁকে থাকা লাল ভবনটি ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের একটি ‘আইকনিক’ নিদর্শন হয়ে উঠেছে। এই ভূমিকম্পে হুয়ালিয়েন থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে জনপ্রিয় হাইকিং গন্তব্য তারোকো ন্যাশনাল পার্কের পাথরের নিচে চাপা পড়েন মানুষজন।
শাকাডাং ট্রেইলে হতাহত তৃতীয় একজনের সন্ধান পাওয়ার পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। একই ট্রেইলে ৩ জনসহ আরও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির কারণে বিচ্ছিন্ন স্থানে ভূমিকম্পের ৩ দিন পরও ৪ শতাধিক মানুষ আটকা পড়েছেন, বেশিরভাগই তারোকো পার্কের একটি হোটেলে।
আরও পড়ুন: তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৪, আহত ৫৭
তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে বুধবার সকালের ভূমিকম্পের পর থেকে ওই এলাকায় শত শত ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন আঘাত হেনেছে। যার মধ্যে শনিবার দুপুরের কিছু আগে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
যারা বেঁচে গেছেন তারা তাদেরকে উদ্ধার করতে আসার আগে আটকা পড়া সময়ের ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
উদ্ধারকারীরা শাকাদাং ট্রেইলে পাথরের নিচে চাপা পড়ে থাকা দুটি মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য ভারী সরঞ্জাম আনার পরিকল্পনা করেছিলেন। ৩ জন নিহত ও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫ জনের একটি পরিবার রয়েছে। ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনের কারণে শুক্রবার বিকালে অনুসন্ধান ও পুনরুদ্ধার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
হুয়ালিয়েনের এক নগর কর্মকর্তা বলেন, হেলে পড়া ভবনটি ভাঙার কাজ কীভাবে এগোনো যায় তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করবেন।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে ভারী বর্ষণে ৭ জনের মৃত্যু, ১৬ ঘণ্টা পর কাদা থেকে ৪ বছরের শিশু জীবিত উদ্ধার
তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৪, আহত ৫৭
তাইওয়ানের ন্যাশনাল ফায়ার এজেন্সি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টার কিছু আগে আঘাত হানা ভূমিকম্পে হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে ৪ জন নিহত ও অন্তত ৫৭ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় ইউনাইটেড ডেইলি নিউজ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের কাছে তারোকো ন্যাশনাল পার্কে পাথর ধসে ৩ পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে।
হুয়ালিয়েনের একটি ৫ তলা বিশিষ্ট ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রথম তলাটি ধসে গেছে এবং বাকি অংশ ৪৫ ডিগ্রি কোণে হেলে পড়েছে। রাজধানী তাইপেতে পুরনো ভবন ও কিছু নতুন অফিস কমপ্লেক্স থেকে টাইলস খসে পড়েছে এবং কিছু ভবনের ধ্বংসাবশেষ পড়েছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের গ্রামে পুরনো ‘মাইন’ বিস্ফোরণে ৯ শিশু নিহত
স্কুলগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে সরিয়ে নিয়েছে। সেসময় তাদের হলুদ সুরক্ষা হেলমেট পরানো হয়েছিল। আফটারশক (ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন) অব্যাহত থাকায় কেউ কেউ তাদের রক্ষা করতে পাঠ্যবই দিয়ে ঢেকে রাখেন।
২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের দ্বীপজুড়ে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।
সকাল ৮টার ঠিক আগে সকালের ব্যস্ত সময়ে ভূমিকম্পটি আঘাত হানলেও দ্বীপটিতে প্রাথমিক আতঙ্ক দ্রুত ম্লান হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহত ৮, আহত ১২
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কেবল ৪ মাত্রার তুলনামূলকভাবে মৃদু ভূমিকম্পের আশঙ্কা করেছিল এবং সে অনুযায়ী কোনো সতর্কতা পাঠায়নি। তবুও, ভূমিকম্পটি এমন কম্পনে অভ্যস্ত লোকদের ভয় দেখানোর জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।
তাইওয়ানের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ২ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ৭ দশমিক ৪ বলে জানিয়েছে। ভূমিকম্পটি হুয়ালিয়েন থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে আঘাত হানে এবং এর গভীরতা ছিল ৩৫ কিলোমিটার।
চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের সাংহাই ও বেশ কয়েকটি প্রদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনা গণমাধ্যম। চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার আলেপ্পোতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪২
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহত ৮, আহত ১২
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই শিশু এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র আনোয়ার শাহজাদ জানান, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় মুষলধারে বৃষ্টির কারণে বাড়িঘর ধসে পড়েছে। এতে অনেকেই চাপা পড়েন।
তিনি বলেন, নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৩ থেকে ৭ বছর বয়সী ভাইবোন রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তানে এ বছর শীতকালীন বৃষ্টিপাত বিলম্বিত হয়েছে, যা নভেম্বরের পরিবর্তে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। পাকিস্তানে প্রতি বছর বর্ষা ও শীতকালীন বৃষ্টিপাত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিজনিত ঘটনায় প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩
দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে বাস খাদে পড়ে নিহত ৪৫, বেঁচে গেল ৮ বছরের শিশু
ইন্দোনেশিয়ায় নৌকাডুবি: সাগর থেকে ৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের কাছে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির পর তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে প্রাদেশিক তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা।
বৃহস্পতিবার নৌকাটির উল্টে যাওয়া হালে রাতভর গাদাগাদি করে আশ্রয় নেওয়া ৪৪ জন পুরুষ, ২২ জন নারী ও ৯ জন শিশুসহ ৭৫ জনকে উদ্ধার করে জেলে, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল।
কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলেও বেশিরভাগকেই আচেহ বারাত জেলার একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। অনেকে যাত্রাপথে পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন বলে ইউএনএইচসিআর কর্মীদের জানিয়েছেন।
শনিবার জেলেরা তিনটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানায়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় প্রস্তুত ইউএনএইচসিআর-আইওএম
রবিবার এক বিবৃতিতে বান্দা আচেহ সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির প্রধান আল হুসেইন জানান, ওই এলাকায় তল্লাশির পর তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। যাদের মধ্যে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী। তারা ডুবে যাওয়া নৌকার যাত্রী ছিলেন।
লাশগুলো আচেহ জায়া জেলার কালাং শহরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউএনএইচসিআরের কর্মী ফয়সাল রহমান বলেন, বেঁচে যাওয়া কয়েকজন মৃতদেহ শনাক্ত করতে সাহায্য করেছেন।
ফয়সাল রহমান আরও জানান, তারা নৌকায় একসাথে ছিল কি না যাচাই করতে শরণার্থীদের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করতে ও যাচাই করার জন্য বেছে নেওয়া হয়।
আচেহর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শনিবার থেকে নিকটবর্তী পানিতে মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেছে বলে খবর পেয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্র যাত্রা করে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি নৌকা থেকে প্রায় ৭০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নিখোঁজ বা নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে, যারা ২০১৭ সালে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস বিদ্রোহ দমন অভিযান থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছিল। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার এবং অধিকাংশই নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো ইন্দোনেশিয়াও জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ করতে বাধ্য নয় দেশটি। তবে সাধারণত বিপদগ্রস্ত শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৬৯ রোহিঙ্গা শরণার্থী উদ্ধার