সিনেমা
৩ বছর পর দেশে শাবনূর, ‘মাতাল হাওয়ায়’ থাকছেন তিনি
বিশ্বের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির মতো ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিও নায়ক নির্ভর। কিন্তু আশি ও নব্বই দশকের চিত্রটা ছিল অনেকটাই ভিন্ন। একসময় যেমন পোস্টারে শাবানার ছবি থাকলেই আর কিছু লাগতো না, তেমন অবস্থা তৈরি হয়েছিল নব্বইয়ের দশকেও। আর সেই সমীকরণের শীর্ষে যে নামটি রয়েছে তিনি হলেন চিত্রনায়িকা শাবনূর।
ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় তিনিই ছিলেন প্রযোজকদের ‘টার্ম কার্ড’।
তবে আরেক বাস্তবতা হলো ঠিক সব নায়িকাদের মতো তিনিও ক্যারিয়ারের পরিণত সময়ে আড়ালে চলে গেছেন। ঘর বেঁধেছেন সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়। এরপর তাকে বিভিন্ন মৌসুমে পাওয়া গেলেও ঠিক সুতোয় গাঁথতে পারেননি নিজের ক্যারিয়ারকে। তবুও শাবনূর এখনও এদেশের দর্শকের কাছে চিরসবুজ সেই নায়িকা।
শাবনূরের ভক্তদের জন্য সুখবর হলো আবারও বড়পর্দায় ফিরছেন এই ‘স্বপ্নের রাজকুমারি’। এমনটাই জানা গেল পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর ফেসবুক পোস্ট থেকে। ‘মাতাল হাওয়া’ শিরোনামে এই সিনেমার গল্প মাহফুজ আহমেদের। আর চিত্রনাট্য লিখেছেন রায়হান খান।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে সাইমনের ‘শেষ বাজি’
চয়নিকা চৌধুরী তার ফেসবুক পেজে শাবনূরের সঙ্গে ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘তার সব সিনেমাই প্রায় আমার দেখা। তিনি ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে অবশ্যই অনেক বড় একটা জায়গায় বসে আছেন এখনও। তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি একজন ব্র্যান্ড তারকা। একজন সুপারস্টার নি:সন্দেহে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘তিনি যে এত বড় তারকা পাশাপাশি এত বিনয়ী এটা ফিল করেছি যেইদিন অষ্ট্রেলিয়াতে তিনি প্রহেলিকা দেখে আমাকে কলই শুধু করেননি, একটা দারুণ লেখাও লিখেছিলেন তার নিজের প্রোফাইলে। মাহফুজ আহমেদ বলেছিলেন, অভিনয়ের পাশাপাশি তার ব্যবহারের কথা।
যতবার তার সঙ্গে দেখা হয়েছে, তার ব্যাবহার আচার-আচরণে মুগ্ধ হয়েছি। তার ব্যাবহার দেখে মনে হয়েছে আমি তার কত আপন! কত আগের চেনা। প্রতিটি মুহুর্তে ভালোবাসা, সম্মান পেয়েছি,পাচ্ছি। মানুষ যত বড় হয়, ততই বিনয়ী হয়। আসলেই ওল্ড ইজ গোল্ড’
দীর্ঘ বিরতির পর নতুন সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন শাবনূর। তার বিপরীতে অভিনয় করবেন মাহফুজ আহমেদ। ‘মাতাল হাওয়া’ নামে এ সিনেমাটি পরিচালনা করছেন চয়নিকা চৌধুরী। গতকাল ছিল তার জন্মদিন। এদিন শাবনূরকে নিয়ে নতুন সিনেমায় অভিনয়ের কথা প্রকাশ করেন নির্মাতা। এরইমধ্যে শাবনূরের সঙ্গে চিত্রনাট্য নিয়ে বসেছেন তিনি। রিডিং সেশনে অংশ নেন দু’জনে।
শাবনূর বলেন, ‘দেশের বাইরে থাকলেও মনটা দেশেই পড়ে ছিল। হঠাৎ এবার দেশে এসেছি। গতকাল নিজের জন্মদিনে আনন্দময় সময় কেটেছে। ভালো গল্প ও চরিত্র পাইনি বলে কোনো সিনেমায় অভিনয়ে মন সায় দেয়নি। ‘মাতাল হাওয়া’র গল্প অসাধারণ। চরিত্রটিও পছন্দ হয়েছে। বেশ বিরতির পর সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছি ভেবে ভালো লাগছে। নিজেকে এখন প্রস্তুত করছি। একেবারে ফিট হয়েই পর্দায় আসতে চাই। সিনেমার কাজ করার মাধ্যমে নতুন-পুরোনো মানুষের সঙ্গে দেখা হবে। বিষয়টিই আনন্দের।’
গত ৩০ নভেম্বর ঢাকায় এসেছেন শাবনূর। তবে খবরটি এতোদিন কাউকে জানাতে চাননি। তিন বছর পর দেশে ফিরে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে তার।
আরও পড়ুন: একইদিনে বাংলাদেশের হলেও ‘ডাঙ্কি’?
নতুন বছরে সাইমনের ‘শেষ বাজি’
২০২৪ সালের শুরুতেই প্রেক্ষাগৃহে নতুন সিনেমা নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক।
‘শেষ বাজি’ শিরোনামে সিনেমাটির পোস্টার এরইমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে নতুন এক লুকে দেখা যাচ্ছে সাইমনকে।
৩০ অক্টোবর সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া ‘শেষ বাজি’ মুক্তি পাবে ১৯ জানুয়ারি। এটি পরিচালনা করেছেন মেহেদী হাসান। মানুষের জীবনে জুয়া খেলার প্রভাবকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে থ্রিলার ঘরানার সিনেমা ‘শেষ বাজি’র কাহিনি।
সাইমন সাদিক সিনেমাটি নিয়ে ইউএনবিকে বলেন, ‘এখন তো সিনেমার গল্পের সময় বদলেছে। দর্শক পর্দায় ভিন্ন আভাস চায়। এই সিনেমার গল্পটিও তেমন। কাজটি যত্ন ও সময় নিয়ে করেছি। বছরের শুরুতে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি দর্শকদের ভালো লাগবে আশা করি।’
আরও পড়ুন: রাফির পরিচালনায় শাকিব খানের ‘তুফান’
রিকুয়্যাল রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যানারে সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল।
তিনি গণমাধ্যমে জানান, গতানুগতিক প্রেমের গল্পের বাইরে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। আশা করি দর্শকদের ভালো লাগবে। আনন্দ নিয়ে সবাই হল থেকে বের হবেন।
সিনেমাটির কাহিনি ও সংলাপ লিখেছেন পারভেজ সুমন। এতে আরও অভিনয় করেছেন শিরিন শিলা, বড়দা মিঠু, রাশেদ মামুন অপু, সিলভি, সাবেরী আলম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে ‘রাজকুমার’ সিনেমার শুটিং
একইদিনে বাংলাদেশের হলেও ‘ডাঙ্কি’?
চলতি বছর শাহরুখ খানের আরও একটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। সেটি এরইমধ্যে সবার জানা। ‘ডাঙ্কি’ দিয়ে প্রথমবার রাজকুমার হিরানির পরিচালনায় দেখা যাবে শাহরুখকে। আর সিনেমাটি রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে গেল। এখন শুধু অপেক্ষা ২২ ডিসেম্বরের।
পুরো বিশ্বের সঙ্গে একইদিনে বাংলাদেশের দর্শক দেখবে ‘ডাঙ্কি’। এমনটাই আভাস দিলেন ‘পাঠান’, ‘জাওয়ান, ‘অ্যানিমেল’ আমাদানি করা প্রতিষ্ঠানের অনন্য মামুন। ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এমনটা জানান তিনি।
২ ঘণ্টা ৪১ মিনিটের সিনেমা ‘ডাঙ্কি’র ট্রেলার ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে। শাহরুখের অন্য সিনেমার চেয়ে ‘ডাঙ্কি’ নিয়ে আগ্রহের মূল কারণ পরিচালক রাজকুমার হিরানি। বলিউডের এই মাস্টারপিস ডিরেক্টরের ছোঁয়ায় নতুন এক শাহরুখকে দেখা যাবে বলে বিশ্বাস ভক্তদের।
এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন তাপসী পান্নু, ভিকি কৌশল, বোমান ইরানি।
আরও পড়ুন: পাঠান মুভি রিভিউ: বলিউড কিং শাহরুখ খানের অভিজাত প্রত্যাবর্তন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিরলেন শাহরুখ খান!
রাফির পরিচালনায় শাকিব খানের ‘তুফান’
বড় সিনেমা, বড় প্রযোজক, বড় পরিচালক, বড় নায়ক- সব মিলিয়ে বড় পর্দায় ঝড় তুলতে আসছে ‘তুফান’। যেন সব জল্পনা, কল্পনা, গুঞ্জনের অবসান হলো। এবার রায়হান রাফীর পরিচালনায় বড় পর্দায় আছে বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খান।
বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। দুই বাংলার চলচ্চিত্রের কলাবোরেশন নিয়ে আলফা আই, চরকি ও ভারতীয় স্বনামধন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ ফিল্মস এবার এক হয়েছে। এরই মধ্যে ঘোষণা করা হলো, এই তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হচ্ছে বড় পর্দার দুটি সিনেমা।
আরও পড়ুন: বিনা কর্তনে চলছে ‘অ্যানিমেল’, আটকে আছে ‘কাঠগোলাপ’
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে বিকেল ৫টায় আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলনের। সেখানেই ঘোষণা দেওয়া হয় ‘তুফান’-এর। আগামী ঈদ-উল-আজহায় মুক্তি পাবে সিনেমাটি। গত ৯ ডিসেম্বর ঘোষণা দেওয়া হয় রেদওয়ান রনি পরিচালিত সিনেমা ‘দম’-এর। যেই সিনেমার মূল চরিত্রে দেখা যাবে চঞ্চল চৌধুরীকে।
পরিচালক রায়হান রাফী সিনেমাটা নিয়ে বলেন, ‘আমি খুবই এক্সসাইটেড। কারণ একসঙ্গে আলফা, এসভিএফ ও চরকি- তিনটা বড় প্রতিষ্ঠান এক সুতোয় গেঁথে দুইটা সিনেমা বানাচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশের একমাত্র সুপারস্টার শাকিব খান তার সঙ্গে এটা আমার প্রথম সিনেমা। সবচেয়ে বড় তিনটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, একজন সবচেয়ে বড় সুপারস্টার যখন একসঙ্গে হয় তখন আসলে এই সিনেমা নিয়ে আশা করাই যায়। কেবল তো আমরা কাজ শুরু করলাম। সবার দোয়া চাই। তবে এটা নির্দ্বিধায় বলতে পারি তুফান বাংলা সিনেমার জন্য একটা মাইলফলক হতে যাচ্ছে।'
শাকিব খান নিজেও বেশ আনন্দিত কাজটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বলেছি, বাংলাদেশি সিনেমার সম্ভাবনা অপার। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও বড় একটা বাজার আছে। সারা বিশ্বে ৩০ কোটি বাংলা ভাষাভাষী রয়েছেন, তাদের শুধু ভালো মানের সিনেমা উপহার দিতে হবে। তিনটা বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যখন এক হয় তখন সম্ভাবনাটা আরও বড় হয়। বাকিটা সিনেমাপ্রেমীরাই ঠিক করে নেবেন।’
এসভিএফ-এর ডিরেক্টর ও কো-ফাউন্ডার মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘আমরা বাংলা সিনেমায় একটি নতুন অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে। কারণ এসভিএফ, আলফা-আই, চরকি ও মেগাস্টার শাকিব খানকে সঙ্গে নিয়ে এমন একটি প্রযোজনা সামনে আনতে যাচ্ছি; যা গল্প বলার স্কেলকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করবে। এই কলাবরেশন বাংলা চলচ্চিত্রকে অভূতপূর্ব বৈশ্বিক উচ্চতায় পৌঁছে দিতে প্রস্তুত। যা আমাদের সবার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসভিএফ বাংলাদেশে কান্ট্রি হেড সাকিব আর খান, চরকি ও আলফা-আইয়ের কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকরা।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে ‘রাজকুমার’ সিনেমার শুটিং
চরকির পর্দায় যৌথ প্রযোজনার ‘দম’
শুরু হচ্ছে ‘রাজকুমার’ সিনেমার শুটিং
শাকিব খানের সঙ্গে মার্কিন অভিনেত্রী কোর্টনি কফির জুটি নিয়ে ‘রাজকুমার’ সিনেমার ঘোষণা এসেছিল বেশ আগে। তবে এতদিন এ নিয়ে কোনো আলোচনা ছিল না। এরমধ্যে শাকিবের কয়েকটি সিনেমা মুক্তি পেয়ে যায়। অবশেষে শুরু হতে যাচ্ছে সিনেমাটির শুটিং।
কোর্টনি কফি এরইমধ্যে ঢাকায় এসেছেন ‘রাজকুমার’ এর শুটিংয়ে অংশ নিয়ে। রবিবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গভবনে গিয়েছিলেন শাকিব ও কফি। সেখানেই ফ্রেমবন্দি হন তারা আর সেখানেই খবরটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন সিনেমাটির পরিচালক হিমেল আশরাফ।
আরও পড়ুন: বলিউডেও দ্যুতি ছড়ালেন জয়া
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কফির সঙ্গে শাকিব ছবি পোস্ট করে লিখেছেন ‘রাজকুমার’ আসছে।
হিমেল আরও জানান, মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) থেকে ঢাকায় শুরু হবে ‘রাজকুমার’ সিনেমার শুটিং। শুটিং হবে পাবনা ও আমেরিকায়। সিনেমাটি মুক্তি পাবে আগামী বছর রোজার ঈদে।
উল্লেখ্য, বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত হওয়া রাষ্ট্রপতির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক আরশাদ আদনান, হিমেল আশরাফ, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, ‘প্রিয়তমা’র নায়িকা ইধিকা পাল ও কণ্ঠশিল্পী কোনাল।
আরও পড়ুন: বিনা কর্তনে চলছে ‘অ্যানিমেল’, আটকে আছে ‘কাঠগোলাপ’
চরকির পর্দায় যৌথ প্রযোজনার ‘দম’
বিনা কর্তনে চলছে ‘অ্যানিমেল’, আটকে আছে ‘কাঠগোলাপ’
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর চলছে। এই মাসে দুই একটি হলেও দেশকে কেন্দ্র করে বাংলা সিনেমা মুক্তি পেত। গত কয়েক বছরে সেই চর্চা কমেছে। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মুক্তির তালিকায় কোনো বাংলা সিনেমা নেই। শুধু কী তাই! ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছাড়া দেশের কোনো হলে বাংলা সিনেমা প্রদর্শনীর তালিকায় নেই। তবে বেশ চলছে সম্প্রতি আমদানি করা সিনেমা ‘অ্যানিমেল’।
বিজয়ের মাসে ‘অ্যানিমেল’ চললেও বাংলা সিনেমা ‘কাঠগোলাপ’ এর সেন্সর আটকে আছে। সেটিও প্রায় দুমাস। এ নিয়ে ফেসবুক লাইভে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলেন পরিচালক সাজ্জাদ খান। তিনি বলেন, ‘‘অদ্ভুত কারণে ‘কাঠগোলাপ’ সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে। বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব কী কারণে এটি আটকে রেখেছেন জানি না। তবে তিনি ঠিকই ‘অ্যানিমেল’ বুঝেছেন। আমার মনে হয় ‘অ্যানিমেল’ যদি দেশের কোনো পরিচালক বানাতেন সেটা এই ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব কখনো মুক্তি দিতেন না। এটিকে ব্যান্ড করা হতো। বাংলাদেশে আড়াই ঘণ্টার সিনেমা অ্যানিমেল-এ প্রচুর পরিমাণ ‘ভায়োলেন্স’ রয়েছে। আমি হয়তো ছবি আর বানাব না। কারণ এভাবে ছবি হয় না।”
সাজ্জাদ আরও বলেন, ‘আমার ছবিতে দেশবিরোধী কোনো কিছু নেই। সেন্সরে আটকে যাওয়ার মতো কিছুই নেই। অনেক উৎসবে যাচ্ছে ছবিটি। কিন্তু নিজ দেশে দেখাতে পারছি না।’
এই পরিচালকের মতোই চাপা ক্ষোভ বয়ে বেড়াচ্ছেন দেশের অনেক পরিচালক-প্রযোজকরা। প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে সেন্সরে আটকে রয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’। সিনেমাটি মুক্তির জন্য নির্মাতা অনেক দৌড়ঝাঁপ করলেও অনুমতি পাননি।
সেন্সরবোর্ডের এই সিনেমা আটকে দেওয়ার তালিকায় সম্প্রতি আলোচনা তৈরি করেছিল মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’। প্রায় এক যুগ আটকে রয়েছে এনামুল করিম নির্ঝরের ‘নমুনা’। আরও রয়েছে আলোচনায় থাকা ‘রানা প্লাজা’, ‘মর থেঙ্গারি’, ‘হরিবোল’, ‘ধাবমান’।
তালিকা ক্রমশ বড় হচ্ছে। অথচ ঈদ ছাড়া পুরো বছরের সিনেমার বাজার এখন যাচ্ছে হিন্দি সিনেমার দখলে। কারণ ‘পাঠান’, ‘জাওয়ান, ও ‘অ্যানিমেল’ এর পর শাহরুখের ‘ডানকি’ যে এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র সেটি তো বলাই যায়।
চরকির পর্দায় যৌথ প্রযোজনার ‘দম’
দুই বাংলার চলচ্চিত্রের কোলাবোরেশন নিয়ে আলফা আই, চরকি ও ভারতীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ ফিল্মস এবার এক হয়েছে। এই তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হতে যাচ্ছে বড় পর্দার দুইটি সিনেমা।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সেই সিনেমার মধ্যে একটির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ উপলক্ষে শনিবার বিকাল ৫টায় রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
খানিকটা দম নিয়ে নির্মাণে ফিরছেন আলোচিত ও জনপ্রিয় নির্মাতা রেদওয়ান রনি। ‘দম’ শিরোনামে সেই সিনেমায় মূল ভূমিকায় দেখা যাবে সময়ের ও দুই বাংলার পরিচিত তারকা চঞ্চল চৌধুরীকে।বেশ খানিকটা বিরতির পর নির্মাণে ফেরা নিয়ে পরিচালক রেদওয়ান রনি বলেন, ‘সত্য ঘটনা আমাকে সব সময়ই অনুপ্রাণিত করে। অনেক বছর পর চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এই গল্পটাই আমাকে তাড়িত করছিল। সাধারণ মানুষের ভয়াবহ মানসিক শক্তি তাকে যেকোনো ভয়ংকর বিপদ থেকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে নিমিষেই। দম চলচ্চিত্রে এই গল্পটাই বলার চেষ্টা করছি।’
‘দম’ সিনেমার মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী। পরিচালক রেদওয়ান রনির সঙ্গে তার সম্পর্কটা প্রায় ২০ বছরের।
অভিনেতা নিজেও এ তথ্য জানান।
সিনেমাটিতে অভিনয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘রনির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কটা অনেক দিনের। সে একসময় নিয়মিত নির্মাণ করেছে। কিছুদিন নিজে নির্মাণ না করলেও নির্মাণ প্রক্রিয়ার মধ্যেই ছিল। এবারের সিনেমার গল্প যখন রনি আমাকে শুনিয়েছে তখন আমি হতবাক হয়েছি। অসাধারণ একটা গল্প। আমার চরিত্রটা বেশ চ্যালেঞ্জের। সেই সঙ্গে অনেক আয়োজন ও বিগ ক্যানভাসের সিনেমা দম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে একইসঙ্গে চরকি, এসভিএফ ও আলফার মতো বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আমাদের এই সিনেমার সঙ্গে আছে। এই সিনেমাটা দুই বাংলা মিলিয়ে নতুন কোনো দিগন্তের সূচনা করবে।’
আলফা-আই স্টুডিওজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘আলফা-আই স্টুডিওস সবসময় বাংলাদেশের বিনোদন জগতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এটি একটি অগ্রগামী চিন্তার প্রোডাকশন হাউস। আমরা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম বাঙালি দর্শক ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে চায়, আমরা প্রতিবারই সেটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এবার বাংলা চলচ্চিত্রের বাজারকে উন্নত করতে এবং বিশ্বব্যাপী দর্শকের কাছে পৌঁছাতে আলফা, এসভিএফ ও চরকি এক হয়েছি।’
২৮ বছর ধরে যারা একাই বদল করে চলেছে বাংলা সিনেমার ইতিহাস! রেইনকোট, চোখের বালি, অটোগ্রাফ, ২২শে শ্রাবণ-এর মতো অসংখ্য ফিল্ম দিয়ে যারা সমৃদ্ধ করেছে বাংলা চলচ্চিত্রের ভান্ডার; বলছি এসভিএফের কথা।
এসভিএফের ডিরেক্টর ও কো-ফাউন্ডার মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের বিনোদন শিল্পের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে এসভিএফ। আমরা শুধু চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি না; বাংলা সিনেমাকে উদযাপন করে আমরা একটি সম্প্রদায়, একটি সংস্কৃতিকে লালন করছি। আমাদের লক্ষ্য বাংলা ভাষার সিনেমাকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরি করে বিশ্বের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে দেওয়া।’
চরকির ইনভেস্টর ও স্ট্র্যাটেজি প্রেসিডেন্ট যারেফ হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকেই চরকির লক্ষ্য ছিল সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে মানসম্পন্ন কনটেন্ট পৌঁছে দেওয়া। এবার চরকি ও আলফা আই ও এসভিএফ এক সঙ্গে সেই মিশনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এক হয়েছে। আমাদের বিনোদন শিল্পের কাজকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়ার এটি একটা বড় সুযোগ ও উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হতে চলেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন: অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, আদনান আল রাজীব, মাসুমা নাবিলা, পরিচালক সৈয়দ আহমেদ শাওকী, চরকির কর্মকর্তারা ও সাংবাদিকেরা।
বলিউডেও দ্যুতি ছড়ালেন জয়া
একসময় বলা হতো কলকাতার সিনেমায় বাংলাদেশের জয়া আহসান, কিন্তু বেশ কয়েক বছর পেরিয়ে জয়া এখন কলকাতা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির একজন। নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দেশের বাইরের ইন্ডাস্ট্রিতে এই অভিনেত্রীর সফলতা শুধু তাকেই নয় বাংলাদেশকেও নতুনভাবে পরিচিত করেছে। কলকতার জনপ্রিয় অনেক অভিনয়শিল্পীর চেয়ে তার সফলতার ঝুড়ি একটু বেশিই ভারি!
জয়া যে বলিউডের সিনেমায় কাজ করছেন সেটি তো আগেই সবার জানা। ‘কাড়াক সিং’ সিনেমাটি পর্দায় কবে দেখা যাবে তাকে, এ নিয়েই অপেক্ষা। কারণ, একদিকে প্রথম হিন্দি সিনেমা, অন্যদিকে তার বিপরীতে রয়েছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠি। যিনি কিনা এই সময়ে বলিউডে ওটিটির ব্যবসায় সফল কাস্টিংদের একজন।
আরও পড়ুন: কড়ক সিং: জয়ার প্রথম হিন্দি সিনেমা আসছে ওটিটির পর্দায়
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে মুক্তি পেল ‘কাড়াক সিং’। গল্পের প্লট কয়েকটি ঘটনায় এগিয়ে গেছে। যার অনেকটা জুড়েই রয়েছেন জয়া আহসান। পঙ্কজ ত্রিপাঠির সঙ্গে জয়ার রসায়ন ছিল নজরকাড়ার মতো।
জয়া প্রসঙ্গে পঙ্কজ ত্রিপাঠি ভারতের এক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘সিনেমার পিরিচালক অনিরুদ্ধ রায়ের কাছে জয়া সম্পর্কে জানি। তার বেশ প্রশংসাও শুনি। এরপর জয়ার কয়েকটি বাংলাদেশি সিনেমা দেখি।’
অন্যদিকে জয়া আহসান বলেন, ‘এই সিনেমায় আমাদের ডিরেক্টর বলেছেন একদম অভিনয় করা যাবে না। সো, যতটা আন্ডারটোন করা যায়। পঙ্কজ ত্রিপাঠি থেকে সবাই খুব সুন্দর অভিনয় করেছে, ছবিটা দেখলে বুঝতে পারবেন।’
‘কাড়াক সিং’ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন সঞ্জনা সাংঘি, মালয়ালম অভিনেত্রী পার্বতী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে সিনেমাটি করতে হয়েছে: জয়া আহসান
বিনা কর্তনে দেশের ৪৮ প্রেক্ষাগৃহে 'অ্যানিমেল'
বিশ্বব্যাপী এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে রণবীর কাপুর অভিনীত 'অ্যানিমেল'।
সন্দীপ রেড্ডির এই সিনেমা মুক্তি পায় শুক্রবার (১ ডিসেম্বর)। এরপর থেকেই বাংলাদেশেও মুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল।
তবে সেটি মাঝে আটকেও যায়। শেষ পর্যন্ত আটকে রাখা গেল না, বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে মুক্তি পেল 'অ্যানিমেল'।
দেশের ৪৮ প্রেক্ষাগৃহে চলবে এই সিনেমা। তবে পরবর্তী সপ্তাহে হল আরও বাড়বে বলে জানান আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কাট অ্যান্ড কাট এন্টারটেইনমেন্টের অনন্য মামুন।
আরও পড়ুন: ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মেঘের কপাট’ পেল ৩ পুরস্কার
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে আনকাট ছাড়পত্র পেয়েছে সিনেমাটি। তাদের জমা দেওয়া সিনেমার কোনো অংশ বাদ দিতে বলেনি। প্রাথমিকভাবে ৪৮টি স্ক্রিনে সিনেমাটি দেখানো হবে, পরে আরও বাড়বে।'
এদিকে আরেক পরিবেশক কিবরিয়া ফিল্মসের কর্ণধার গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু জানান, গ্লোবাল সংস্করণ (বিশ্বব্যাপী প্রদর্শনের জন্য) নয়, বাংলাদেশে মুক্তি পাবে ইউএই সংস্করণ (সংযুক্ত আরব আমিরাত বা আরব দেশের সংস্করণটি) চলবে।
বলা হচ্ছে রণবীর কাপুরের এখন পর্যন্ত সেরা সিনেমা 'অ্যানিমেল'। একদিনে তার অভিনয় বিবেচনা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বক্সঅফিসের ঝড়। এর আগেও এই বলিউড তারকার অনেক জনপ্রিয় সিনেমা থাকলেও 'অ্যানিমেল' সবকিছু ছাপিয়ে গেছে। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশের দর্শকের কাছে 'অ্যানিমেল' কতটা সাড়া ফেলে।
আরও পড়ুন: ওটিটিতে ঝড় তুলছে দিন-দ্য ডে!
ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মেঘের কপাট’ পেল ৩ পুরস্কার
ভারতের গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-২০২৩ এ তিনটি পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘মেঘের কপাট’।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কলকাতায় এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে ‘মেঘের কপাট’ চলচ্চিত্রের পরিচালক ওয়ালিদ আহমেদ ও প্রযোজক আফরোজা মোমেনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
পুরস্কার তিনটি হলো- শ্রেষ্ঠ বিদেশি চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক (বিদেশি চলচ্চিত্র) ও রাজকাপুর পুরস্কার।
তৃতীয়বারের মতো ড্রিমজ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এই চলচ্চিত্র উৎসবে সারাবিশ্ব থেকে ৪০০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অঞ্জন বোস (চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী), অভিজিৎ ব্যানার্জী (চলচ্চিত্র পরিচালক), সি এস কারনান (বিচারপতি, কলকাতা ও মাদ্রাজ হাইকোর্ট), জয়দীপ মুখার্জিসহ (অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট অব ইন্ডিয়া এবং সম্পাদক, অল ইন্ডিয়া লিগ্যাল এইড ফোরাম) আরও অনেকে।
উৎসবে সারাবিশ্ব থেকে ৭০ জনেরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা অংশ নেন।
কলকাতার মৌলালি যুব কেন্দ্রের স্বামী বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে ১ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভারতের গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন প্রথম পর্যায়ে সেরা নির্বাচিত ৪০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে বিকাল ৪টা থেকে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ১০ জন পুরস্কারপ্রাপ্ত পেশাদার বিচারক এই ফেস্টিভ্যালে বিচারের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: এল গার্লস স্কোয়াড সিজন-৩