বৈদেশিক-সম্পর্ক
শ্রীলঙ্কা সফরে ষষ্ঠ সামিটের প্রত্যাশা তুলে ধরলেন বিমসটেক মহাসচিব
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে।
চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তার প্রথম শ্রীলঙ্কা সফর।
সফরকালে মহাসচিব শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম ইউ এম আলী সাবরি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী রমেশ পাথিরানার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিমসটেক মহাসচিব।
এছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব অরুনি বিজয়বর্ধন, প্রধানমন্ত্রীর সচিব অনুরা দিসানায়েকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডা. পলিথা মাহিপালা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব থিলাকা জয়সুন্দরার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১২-১৩ মে ঢাকায় বিমসটেকের বৈঠক
প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ২০২২ সালের মার্চে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলনের পর থেকে বিমসটেকের অগ্রগতি এবং ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন থেকে প্রত্যাশা তুলে ধরেন মহাসচিব।
এ সময় প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে বিমসটেকের প্রতি শ্রীলঙ্কার অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
বিমসটেক মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ব্যাংককে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে বিমসটেকের আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কথা স্মরণ করেন।
বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের জনগণ যাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার সুফল পায় এজন্য বিমসটেকের গতিশীলতা বাড়াতে ও সাফল্য নিশ্চিত করতে সব স্তরে ঘন ঘন ও নিয়মিত বৈঠকের গুরুত্বের ওপর জোর দেন তিনি।
মানবসম্পদ উন্নয়নে শ্রীলঙ্কার বিমসটেকের শীর্ষস্থানীয় সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সচিব অনুরা দিসানায়েকের সঙ্গে মহাসচিবের বৈঠক হয়।
তারা বিমসটেকের মানবসম্পদ উন্নয়ন এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে বিমসটেকের কর্ম পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করতে বিমসটেক বিশেষজ্ঞ গ্রুপের (এইচআরডি) প্রথম বৈঠকের সময়সূচি নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: সহযোগিতা জোরদারে পরিকল্পনা বাস্তবে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার বিমসটেক প্রধানের
বিমসটেকের স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিকল্পনায় শীর্ষস্থানীয় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বিমসটেক স্বাস্থ্য এজেন্ডা নিয়ে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করেন ইন্দ্র মণি। এ সময় বিমসটেকের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের প্রথম বৈঠক আহ্বান নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে শ্রীলঙ্কায় বিমসটেক প্রযুক্তি স্থানান্তর সুবিধা স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করেন বিমসটেক মহাসচিব। ২০২২ সালে কলম্বোতে পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সময় এ নিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের স্মারক সই হয়েছিল। এর পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা আহ্বানের বিষয়েও আলোচনা হয়।
আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়াও বিমসটেক মহাসচিব লক্ষ্মণ কাদিরগামার ইনস্টিটিউট (এলকেআই) আয়োজিত 'বিমসটেকের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা' শীর্ষক একটি উন্মুক্ত আলোচনা কর্মসূচি এবং অ্যাডভোকাটা ইনস্টিটিউট ও বন্দরনায়েকে সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (বিসিআইএস) আয়োজিত দুটি গোলটেবিল অধিবেশনে অংশ নেন।
এই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ, গবেষক এবং শিক্ষার্থীদের মতামত ও ধারণা জানার সুযোগ পান মহাসচিব। বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে বিমসটেকের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে অনেকের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পান তিনি।
এছাড়াও শ্রীলঙ্কার সানডে মর্নিং সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার এবং টেলিভিশন মাধ্যমে আদা ডেরানার 'অ্যাট হাইড পার্ক' অনুষ্ঠানে একটি সাক্ষাৎকার দেন বিমসটেক মহাসচিব।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে: প্রধানমন্ত্রী
এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকরা ২০ এপ্রিলের মধ্যে দুবাই পৌঁছাবেন: নৌপ্রতিমন্ত্রী
সোমালিয়ার দস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের বহনকারী জাহাজ ১৯-২০ এপ্রিলের মধ্যে দুবাইয়ে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজটি এখন দুবাইয়ের পথে। এটি ১৯ বা ২০ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছাবে।’
সোমবার ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নৌপ্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে ২৩ নাবিকসহ এমভি আব্দুল্লাহ
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ২৩ জন নাবিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং সেটা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় এ বিষয়ে সজাগ ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক নৌ উইংগুলো কাজ করেছে।’
নৌপ্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দ্রুত নাবিকদের মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
ব্যাগে করে মুক্তিপণ দেওয়ার ছবি দেখা গেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এটা কোন সিনেমার ছবি আমি তো জানি না। এমন ছবি তো আমরা অনেক চলচ্চিত্রে দেখি। কোন ছবি কোথায় গিয়ে কীভাবে যুক্ত হয়েছে, কোনটার সঙ্গে কোনটা এডিট হয়েছে আমি জানি না।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘এরপরের পুরো বিষয়টি জাহাজ ও নাবিকদের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়। নাবিকরা কত দিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেছেন, সেই চুক্তি তারা বহাল রাখবেন, নাকি তারা ফিরে আসবেন।'
তিনি বলেন, তবে মালিক পক্ষ গতকাল খুব ভালো একটি কথা বলেছে। নাবিকরা যদি চান বাংলাদেশে ফিরে আসবেন, তাহলে তাদের বিমানযোগে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাদের রিপ্লেস যারা হবে, সেটা নিয়েও হয়তো তারা কাজ করছে।
আরও পড়ুন: দুপুরে সোমালিয়া উপকূলে পৌঁছাতে পারে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’
সমুদ্রপথ নিরাপদ করতে প্রস্তাবনা তৈরির কাজ চলছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
সমুদ্রপথ নিরাপদ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ একটি প্রস্তাবনা তৈরির কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌসংস্থার (আইএমও) নির্বাচিত 'সি' ক্যাটাগরির সদস্য। ১৭৪টি দেশ আইএমওর সদস্য। কীভাবে সমুদ্রপথ নিরাপদ করা যায় সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ একটি প্রস্তাবনা তৈরির কাজ করছে।
সোমবার ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নৌপ্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকরা ২০ এপ্রিলের মধ্যে দুবাই পৌঁছাবেন: নৌপ্রতিমন্ত্রী
এছাড়াও বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যাতে বিভিন্ন ধরনের সংকটের সময়ে সমুদ্রপথে চলাচল করতে পারে সেজন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরির কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যদি সংকটের সময়ে চলাচল করতে না পারে তাহলে বিশ্ব বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, অস্থিরতা বেড়ে যায়।
প্রস্তাবনাটি আইএমওতে পাঠানো হবে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাহাজগুলো বিভিন্ন সংকটের সময়ে নিরাপদে চলাচল করতে পারে সে ধরনের প্রস্তাবনা তৈরির জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তর কাজ করছে। এটি একটু সময় সাপেক্ষ বিষয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি- দ্রুত প্রস্তাবনাটি তৈরির।
ঈদের দিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্ভেয়ারদের দুর্বলতা থাকলে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ৫
তিনি আরও বলেন, 'অভ্যন্তরীণ নৌপথে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সেটা সদরঘাট হোক, ভোলায় হোক, চাঁদপুরে হোক, বরিশালে হোক, মাঝ নদীতেই হোক না কেন- প্রতিটি ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। বিভিন্ন ধরনের শাস্তি হয়।'
লঞ্চটির রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। জাহাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল অনেকে পালিয়ে গেলেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘অনেক লঞ্চ গতি ও শক্তি নিয়ে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করে। এটা সব লঞ্চ করে, ব্যাপারটা তা নয়। বিশেষ বিশেষ কিছু লঞ্চ করে, শক্তিশালী কোনো মালিক থাকলে এটা করে। আমরা সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এই জায়গাটায় আমাদের জিরো টলারেন্স।'
আরও পড়ুন: দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতায় আগ্রহী বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ও এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার(১৪ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সফররত এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ই. পি. শেত গ্রিন।
পাঁচদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ই. পি. শেত গ্রিন
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন খাতের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান ড. হাছান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পর্যটন বিভাগের সঙ্গে ‘টেকনিক্যাল কো-অপারেশনে’র মাধ্যমে এ খাতে প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতার সম্ভাবনার বিষয়ে কথা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমেরিকা-কানাডা-ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের ১৪০টি দেশে রপ্তানি হয়, এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডাকেও আমদানির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি তৈরি পোশাক, সিরামিকস, ও চামড়াজাত পণ্য এ দেশ থেকে আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশিদের জন্য তাদের দেশে ভিসা ফ্রি করলে আমরাও 'রিসিপ্রোসিটি' ভিত্তিতে তাদের জন্যও একই ব্যবস্থা বিবেচনায় নিতে পারি।’
এ সময় এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ই. পি. শেত গ্রিন তাদের দেশের বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনার কথা জানান।
মন্ত্রী গ্রিনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন দেশি শিল্পগ্রুপ পিএইচপি ফ্যামিলির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতারা এবং দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম, মন্ত্রীর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকা ত্যাগের আগে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও এফবিসিসিআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন শিল্প স্থাপনা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনসহ গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসন এবং গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তির পক্ষে এবং আমরা চাই, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে যে সব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা, তারা কার্যকর ভূমিকা নিক এবং গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক।’
রবিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার বদলা হিসেবে শনিবার রাতে তেল আবিব, পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েল জুড়ে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মত জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: আশা করি পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ সময় ড. হাছান বলেন, ‘ইসরায়েল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলা করায় ইরান এ আক্রমণের সুযোগ পেয়েছে, অন্যথায় এটি হতো না, ইরান 'রিটালিয়েট' করেছে -ইরানের বক্তব্য তাই।’
তিনি আরও বলেন, যেসব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা, তারা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে এবং গাজায় যে নির্বিচারে মানুষ হত্যা হচ্ছে, অবিলম্বে সেই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। ড. হাছান বলেন, ‘আমরা কখনোই যুদ্ধ-বিগ্রহের পক্ষে নই, আমরা শান্তির পক্ষে।’
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অপহৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক তৎপরতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে জিম্মি নাবিক ও জাহাজ নিরাপদে উদ্ধার হয়েছে। জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে ১০০ নটিক্যাল মাইল এগিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর সহযাত্রী হয়েছে।
সক্রিয় ভূমিকার জন্য জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরঅএম গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দক্ষিণ সীমান্তে মিয়ানমারের আরও ৯ বিজিপি সদস্যের দেশে প্রবেশ নিয়ে মন্ত্রী হাছান বলেন, পূর্বের ১৮০ জনসহ সবাইকে ফেরত পাঠানো নিয়ে কাজ চলছে।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি বেশি ভয়ংকর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা, তাদের পরিবারের সদস্য এবং জাপানে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রা শেষে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ অতিথিদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে স্থানীয় বাংলাদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহায়তায় উপকূলের সুবিধাবঞ্চিত ১২শ’ তরুণীর কর্মসংস্থান করেছে ব্র্যাক
ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি বেশি ভয়ংকর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি অনেক বেশি ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুরা আমাদের নাবিকদের উপর কোনো নির্যাতন চালায়নি। তারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেনি। কিন্তু বিএনপি তো মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীদের নেতৃত্বে বিএনপি অনেক সময় সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে।’
শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের লালদিঘী চত্বরে “চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক তারাই গণতন্ত্রের কথা বলে: বিএনপির উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়ে বাংলাদেশের দস্যুরা বেশি ভয়ংকর’- বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেছেন, 'দেশের মানুষ খুব দুঃখ ও কষ্টের মধ্যে আছে, সাধারণ মানুষ ভালোভাবে ঈদ পালন করতে পারেনি।’
এ বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘হয়তো মির্জা ফখরুল সাহেবদের মনে শান্তি নেই, উনাদের মনে অশান্তি বিধায় বাংলাদেশের মানুষের মনে শান্তি নেই বলছেন। কিন্তু মানুষের মনে সম্প্রীতি ও উৎসব আছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার ঈদ অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন হয়েছে এবং হচ্ছে। মানুষ এখনো ঈদ উৎসবের মধ্যে আছে। আপনারা দেখেছেন ঈদযাত্রাও এবার অনেক নির্ঝঞ্ঝাট ছিল। ঈদের সময় অনেক ঘটনা ঘটে। সে ধরনের দুর্ঘটনা এবার অপেক্ষাকৃত অনেক কম ঘটেছে। মানুষ অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়েই ঈদ উদযাপন করছে।’
আরও পড়ুন: নাবিকদের উদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, 'সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাইজ্যাক করা জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আছে। খুব শিগগিরই আপনারা সুখবর শুনতে পাবেন। আমি শুধু এটুকুই বলি, নাবিকরা খুব শিগগিরই মুক্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ। আমরা জাহাজটাও মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারব। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এরই মধ্যেই হয়েছে।'
এর আগে “চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান বলেন, 'আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন এবং আমরাও বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আজকে ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই শামিল হয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম যার যার উৎসব যে সবার সেটি আসলে বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে এই উৎসবের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তির স্থান হবে না। কেউ সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে, সবসময় করেছি, ভবিষ্যতেও করব। এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
“চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব” আয়োজক কমিটির সভাপতি জহরলাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, কাউন্সিলর রুমকি সেন গুপ্তা, মো. শাহাবুদ্দিনসহ আযোজক কমিটির নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশ থেকে অপরাজনীতি চিরতরে দূর হওয়ার প্রার্থনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রাশিয়ায় পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও পাটজাত পণ্য রাশিয়াতে আরও বেশি রপ্তানির সুযোগ নিতে চায় সরকার।
তিনি বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্যের বড় রপ্তানি বাজার হতে পারে দেশটি।
আজ মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি ম্যান্টিটস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি সম্পর্কে জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বড় অবদান রয়েছে রাশিয়ার। রাশিয়া আমাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। তারা আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং যুদ্ধ পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনে যেমন সহযোগিতা করেছে তেমনি বর্তমান সময়েও তা অব্যাহত রেখেছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি মূলধারার রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে: পাটমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনাকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাশিয়ার সহযোগিতায় রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশটিতে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্ব দিচ্ছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়। এ ক্ষেত্রে ২ দেশে বাণিজ্য মেলা করার বিষয়ে আলাচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাশিয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।’
আরও পড়ুন: সোনালী ব্যাগের জন্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা বড় বাধা হলেও আমরা জয়ী হব: পাটমন্ত্রী নানক
বাংলাদেশের পাটখাতে রাশিয়ান বিনিয়োগ আসবে কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনা চলছে। তাদের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা আসছে। আশা করি রাশিয়ার বিনিয়োগকারীরা পাটখাতে বিনিয়োগ করবে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অনেক বড় বড় কোম্পানি রাশিয়া থেকে চলে গেছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ। বিশেষ করে আমরা গার্মেন্টস, ট্যোবাকো, কৃষি পণ্য ও চামড়াজাত পণ্য নিতে চাই বাংলাদেশ থেকে। পাট ও পাটজাত পণ্য নিয়েও যথেষ্ট আগ্রহ আছে রাশিয়ার।’
এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব তসলিমা কানিজ নাহিদা, যুগ্ম সচিব গোপাল চন্দ্র দাস এবং ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাসের ৩য় সচিব ওলেগ কোজিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
জি-২০ আলোচনায় বাংলাদেশের অবদানের জন্য ব্রাজিলের কৃতজ্ঞতা: সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা বলেছেন, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংযোগ রয়েছে এবং কেবল পুনরুজ্জীবিত বহুপাক্ষিকতা, সংস্কার ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমেই তা মোকাবিলা করা সম্ভব।’
সোমবার ব্রাজিলের জি-২০ সভাপতিত্বের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো নিয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ' ব্রাজিল বিশ্বাস করে গ্রুপটির এমন একটি জাতিগত সংস্থা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করা উচিত যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় মূল বৈষম্যগুলো মোকাবিলা করেই নিজের উদ্দেশ্যগুলোতে সফল হবে।’
এ সময় জি-২০ আলোচনায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এরই মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈশ্বিক শাসন কাঠামো অভিযোজন ও বিকশিত করার সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘জি-২০ জোটটি নিজেই বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের ঠিক পরপরই তৈরি হয়েছিল। তবে এরই মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একটি মূল্যবান কাঠামো হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক শাসন কাঠামো নিয়ে গুরুতর আলোচনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে জি-২০ এর নিজস্ব অবদান রাখার সময় এসেছে।’
ভিয়েরা আরও বলেন, বিশ্বে বর্তমানে যেসব সমস্যার সমাধান সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করার জন্য জি-২০ বিশ্বের অন্যতম সেরা প্ল্যাটফর্ম বলা যায়। জি-২০ বহুপাক্ষিক শাসনের প্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত সংস্কারের জন্য যে সমর্থন দরকার, তা অর্জনে একটি অমূল্য হাতিয়ার হতে পারে।
দুই দেশের মধ্যে ৫২ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাসে এই প্রথম ব্রাজিলের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন।
ব্রাজিলের মন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ যে অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি দেখিয়েছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের যে দীর্ঘ সময়ের সম্পর্ক তা আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। বিষয়টিকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি, ঢাকায় আমার উপস্থিতি তারই সাক্ষ্য দেয়।’
২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ভারতের কাছ থেকে জি-২০-র সভাপতির দায়িত্ব পায় ব্রাজিল।
প্রেসিডেন্ট লুলার নেতৃত্বে ব্রাজিল ২০২২ সাল থেকে ৪টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে তৃতীয় দেশ (ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ব্রাজিল এবং আগামী বছর দক্ষিণ আফ্রিকা) হিসেবে এই জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বৈষম্য বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের দিক থেকে সবক্ষেত্রে জি-২০ এর এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছে ব্রাজিল।
জি-২০ জোটের সভাপতি হিসেবে ‘একটি ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব এবং টেকসই গ্রহ নির্মাণ’ নীতির অধীনে রাষ্ট্রপতি লুলা তিনটি বিষয়ে সাধারণ অগ্রাধিকার দিয়েছেন- (১) সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই; (২) শক্তি রূপান্তর এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশের ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের প্রচার এবং (৩) বৈশ্বিক শাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার।
সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাগুলো দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে মন্তব্য করেন ভিয়েরা।
তিনি বলেন, ‘ক্রমাগত ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্য; বিপর্যয়কর মানবিক পরিণতিসহ সশস্ত্র সংঘাত; জীবনযাত্রার মানে ব্যাপক বিপর্যয়; বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও ঋণের দুর্বলতা; খাদ্য ও জ্বালানির দামে উচ্চ অস্থিরতা এবং জলবায়ু সংকট তাদের মধ্যে অন্যতম।’
ভিয়েরা আরও বলেন, ‘যদিও এই সংকটগুলো আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে তবে সমানভাবে প্রভাবিত করে না। উন্নয়নশীল দেশগুলোই তাদের ফল ভোগ করে। এমনকি দেশের অভ্যন্তরেও, দরিদ্রতম ব্যক্তিরাই সবসময় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
ব্রাজিল বিশ্বাস করে যে জি-২০ হলো এমন একটি ফোরাম যা বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য সম্মিলিত সমাধানকে উৎসাহিত করতে বিশেষভাবে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের জনসংখ্যা এবং জিডিপিতে সম্মিলিত অংশ রাখার পাশাপাশি এর বৈচিত্র্যময় সদস্যপদের কারণে এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বব্যাপী এজেন্ডা গঠনে গ্রুপটির অনন্য এবং প্রভাবশালী ভূমিকা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এই প্রত্যাশা পূরণের জন্য, ব্রাজিল বিশ্বাস করে, জি-২০কে অবশ্যই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচন করতে হবে।
ব্রাজিল বিশ্বাস করে, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (ইউএনএফসিসিসি) এবং এর প্যারিস চুক্তির অধীনে সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে জি-২০ এর অর্থনীতি-বিস্তৃত প্ল্যাটফর্মগুলোর ভূমিকা এবং আর্থিক খাতের নতুন করে জড়িত হওয়া উচিত।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আন্তঃসরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) নিশ্চিত করেছে যে বিশ্ব একটি জরুরি জলবায়ু পরিস্থিতির মুখোমুখি।
ভিয়েরা বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে মানবজাতির হাতে কেবল এই দশকের শেষ পর্যন্ত সময় রয়েছে। এটি এমন একটি পরিণাম যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, বাস্তুতন্ত্র ও অবকাঠামোর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকির।
তিনি বলেন, যেভাবে অর্থনীতির কাঠামো এবং আর্থিক ক্ষেত্রগুলো একত্রিত ও পরিচালিত সেক্ষেত্রে গভীর ও ব্যাপক রূপান্তর ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিপজ্জনক হুমকির পর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে লড়াই করতে হবে মানব সমাজকে।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী তিন-চতুর্থাংশ গ্রিনহাউস গ্যাসের (জিএইচজি) নির্গমনের জন্য দায়ী এমন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোকে একত্রিত করার মাধ্যমে অংশীদারিত্ব, উচ্চ স্তরের সমন্বয় এবং নতুন নীতি ঐকমত্যের জন্য অনুঘটক হতে পারে জি-২০ জোট।
এর আগে আজ তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ব্রাজিল ও প্রেসিডেন্ট লুলার প্রতি তার শ্রদ্ধা রয়েছে জেনে আমি আনন্দিত হয়েছি।’
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট লুলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, নীতি ও অগ্রাধিকার, বিশেষ করে উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সাদৃশ্যই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ-যুক্তরাষ্ট্রের গেটি ইমেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংক্রান্ত ফুটেজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিজ্যুয়াল মিডিয়া সংস্থা গেটি ইমেজের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত ৫ এপ্রিল নিউ ইয়র্কে গেটি ইমেজ অফিসে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল এবং গেটি ইমেজের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া প্যাসিফিক টিভি অ্যান্ড সেলস ডিরেক্টর অ্যারান বার্চেনো সমঝোতা স্মারকে সই করেছেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি জরুরি: নসরুল হামিদ
এ সময় ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সমঝোতা স্মারক সইয়ের আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার গেটি ইমেজেরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ করে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদটি প্রচার হয়। এছাড়াও, মহান মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা ছবি ও সংবাদ প্রকাশ করে। এ সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে গেটি ইমেজ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভকে এসব অমূল্য দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে সহযোগিতা করবে।
এর ফলে, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যত প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার সক্ষমতা অর্জন করবে।
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশের আগ্রহকে স্বাগত জানালেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী