আইনশৃঙ্খলা
সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে: ডিবি প্রধান
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ জানিয়েছেন, দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনে অংশ নেয়া ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই জুয়েলারির দোকানের মালিক আরাভ খান পুলিশ সদস্য খুনের মামলার আসামি, এ বিষয়টি সাকিবকে জানানো হয়েছিল। তবু তিনি দুবাই গেলেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
হারুন-অর-রশিদ আরও বলেন, ‘আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম একজন খুনি, সে একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করেছে। মিডিয়াতে ও অনেকের বলার পরেও সাকিবসহ অনান্য স্টার খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে গেছেন। এবং তার স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনে যোগ দিয়েছেন।’
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ইন্টারপোলের সহায়তায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে রবিউলকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘বিতর্কিত’ সাকিবকে শুভেচ্ছা দূত না রাখার সিদ্ধান্ত দুদকের
জরিমানা চেয়ে বাংলালিংক-যমুনা ব্যাংককে সাকিবের লিগ্যাল নোটিশ
ক্ষমা চাইলেন সাকিব!
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেয়া অবৈধ: হাইকোর্ট
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে পারফরম্যান্স বোনাসের (উৎসাহ ভাতা) দেয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, কোনও বিধি প্রণয়ন ছাড়াই খেয়াল-খুশিমতো পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) করা রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যেতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামসুন নাহার লাইজু।
পরে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঢাকা ওয়াসা আইন ১৯৯৬ এ সুস্পষ্টভাবে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পানির মূল্য বৃদ্ধির কথা বলা থাকলেও কোনো বিধি প্রণয়ন ছাড়াই খেয়াল খুশিমত পানির মূল্য বৃদ্ধি এবং অবৈধভাবে ওয়ায়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেয়াকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করে ক্যাব। উভয় পক্ষে দীর্ঘদিন শুনানি হওয়ার পর যেকোনও সময় রায় দেয়ার কথা ছিল। আজ উচ্চ আদালত বিধি বহির্ভূতভাবে পানির মূল্য নির্ধারণ ও পারফরম্যান্স বোনাস দেয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরও জানান, যেহেতু অন্যায় কাজগুলো আগেই সমাপ্ত হয়েছে তাই সেসব বাতিল না করে ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে বিধি ছাড়া যেন পানির মূল্য নির্ধারণ করা না হয় এবং পারফরম্যান্স বোনাস দেয়া না হয় সে মর্মে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। মহামান্য আদালতের কাছে বিধি প্রণয়ন না হওয়ায় পর্যন্ত জুডিশিয়াল গাইডলাইন করে দেয়ার যে আবেদন ছিল তা আপাতত মঞ্জুর করা থেকে বিরত থেকেছেন এবং প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে সরকার অনতিবিলম্বে বিধি প্রণয়ন করে বিদ্যমান অসুবিধা দূর করবে।
বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছরের ৩১ জুলাই ক্যাবের পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ওই রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৬ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘পারফরম্যান্স বোনাস’ হিসেবে প্রণোদনা দেয়ার ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কোনো বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণ করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াসার এমডি বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হলে তাতে সাড়া দেননি আদালত। পরে গত বছরের ১১ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত এ বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে মূল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
সে অনুযায়ী গত ১৬ নভেম্বর ওয়াসার পক্ষে ব্যারিস্টার এ এম মাসুম একটি এফিডেভিট দাখিল করেন।
তাতে বলা হয় ২০১১-২০১২ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত ৮টি অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেয়া হয়। এর মধ্যে ২০১১-২০১২ অর্থবছরে পারফরম্যান্স বোনাস বাবদ দেয়া হয় ২ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ৫৫০ টাকা। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে দেয়া হয় ৩ কোটি ১লাখ ৩৮ হাজার ২১৯, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে দেয়া হয় ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৯২ হাজার ৮১টাকা, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দেয়া হয় ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩১০ টাকা, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে দেয়া হয় ৯ কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার ৭১৭ টাকা, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেয়া হয় ২৩ কোটি ২৩ লাখ ৭৯হাজার ২৫৩টাকা, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ২৩ কোটি ৬২ লাখ, ৪০ হাজার ৫১৫টাকা, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ১৭ কোটি ৭৮লাখ ৫১ হাজার ৫১৭টাকা।
আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওয়াসা প্রথম ৫টি অর্থবছরে ১টি করে উৎসাহ বোনাস দিলেও; ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৪টি, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪টি এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩টি উৎসাহ বোনাস দিয়েছে। তবে ২০১৩-২০১৪ এবং ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে কোনও উৎসাহ বোনাস দেয়া হয়নি।
ওয়াসার এফিডেভিটে আরও বলা হয়, ওয়াসা আইনের ধারা ২২ অনুযায়ী মূল্যস্ফীতির কারণে কোনও রকমের বিধি প্রণয়ন করা ছাড়াই বোর্ডের অনুমতি নিয়ে প্রতি বছর ৫শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধি করতে পারে। ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা-২০১০ এর ৩৪(৩) বিধি অনুযায়ী ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দিতে পারে।
এদিকে সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৫ বার ওয়াসা পানির দাম বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় বিধি তৈরি না করেই পানির দাম বাড়ানো এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে পারফরম্যান্স বোনাসের নামে টাকা বিতরণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করে ক্যাব।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘বিধি প্রণয়ন ছাড়া পানির মূল্য নির্ধারণ ১৯৯৬ সালের ওয়াসা আইনের ২১ ও ২২ ধারার পরিপন্থী।’ আদালত উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার পারফরম্যান্স বোনাস ঘোষণা ও বিধি ছাড়া পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা ওয়াসার কর্মীদের উৎসাহ বোনাসে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
ওয়াসার এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
জয়পুরহাটে প্রতিবেশীকে হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জয়পুরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিবেশীকে হত্যা মামলায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার দেবরাইল গ্রামের আহাম্মদ আলী (৭৪),তার স্ত্রী মিনা বেগম (৬২), তাদের তিন ছেলে আলতাব হোসেন (৪৫), মোন্তাজ আলী (৪১) ও এন্তাজ আলী (৩৫) এবং প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তারের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৩)।
জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল জয়পুরহাট সদর উপজেলার দেবরাইল গ্রামের আজিজুল তার বাবা ও ভাইদের নিয়ে সাংসারিক আলোচনা করছিলেন। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই সময় প্রতিপক্ষ প্রতিবেশীরা (আসামিরা) সেখানে উপস্থিত হয়ে বাবা ও ভাইসহ আজিজুলকে মারপিট করে আহত করে। পরে তাদের উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ১৭ এপ্রিল আজিজুলের ভাই মিজানুর রহমান মিঠু সদর থানায় মামলা করেন।
হাসপাতালে ২২দিন চিকিৎসা নেয়ার পর আহত আজিজুল মারা যান। ওই মামলায় দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেন।
মামলায় অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল (পিপি) ও গকুল চন্দ্র মণ্ডল বাদী পক্ষের এবং আ্যাডভোকেট আকতার বানু আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সিএনজি ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
জয়পুরহাটের ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে দাদা ও নাতির মৃত্যু
সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে যে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছুই নেই। সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে সমিতির নির্বাচনের বিষয়টির সমাধান করতে বলেছেন।প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে এটা আমাদের বিষয় না। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি বিচারপতিদেরকে ডেইলি স্টারের একটি ছবি দেখিয়ে বলেছি বাঁশ হাতে ভাঙচুরে জড়িত আইনজীবী বিএনপিপন্থী। তিনি আওয়ামী লীগ পন্থী না। উভয়পক্ষই যখন এমন করে তখন কি করণীয় জানতে চাইলে আমি বলেছি যে মমতাজ উদ্দিন ফকির ও আবদুন নূর দুলাল যখন নির্বাচন করতে গেল তখন বাধা দিচ্ছিল। সেই পর্যায়ে সেখানে পুলিশ প্রবেশ করে। আগের দিনই বারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। কারণ আগের দিন রাতেই বিএনপি সমর্থক লোকজন ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কিনা জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পরিবেশ সুষ্ঠু রখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে, অপর পক্ষ বাধা দেবে; তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে।
তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।এর আগে
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বুধবার ঘটে যাওয়া সব ঘটনা আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালতে তুলে ধরেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারা।আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ভোট গ্রহণ, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের রুমে আজ সকালে তালা লাগিয়ে দেওয়া ও বিপুল সংখ্যাক পুলিশের উপস্থিতির বিষয়গুলো তারা আদালতে তুলে ধরেন। এ সময় আপিল বিভাগের অপর সাত বিচারপতিও উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধান বিচারপতি সমিতির বিএনপি সমর্থক সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে বেলা ১১টায় তার খাসকামরায় যাওয়ার জন্য বলেন। প্রয়োজনে এ সময় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকেও ডেকে নেয়া যেতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন আদালতের কাজ করতে দিন। আপনারা দু’জন বেলা ১১টায় খাসকামরায় এসে সব বলেন। আমরা শুনব। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেব।’
পরে বেলা ১১টার পরে সমিতির বিএনপি সমর্থক সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ৫জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার খাস কামরায় সাক্ষাত করেন। এ সময় সেখানে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা তাদের সব অভিযোগ তুলে ধরেন। সবকিছু শুনে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে প্রধান বিচারপতি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের জানায়। এরপরই প্রধান বিচারপতির খাসকামরায় যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বিএনপিপন্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদিন জানান, আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে বিচার চাইতে গিয়েছিলাম। আমাদের সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী তাদের সব বক্তব্য ও অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি সব শুনে বলেছেন যে আমি এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাব।
তিনি বলেন, অতীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রধান বিচারপতি সমিতির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদককে ডাকেন। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতি বলেছেন তার নাকি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রধান এই অঙ্গনের অভিভাবকের কাছে এ ধরনের ঘটনার বিচার না পেলে আর কোথায় যাব।
এদিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা আজও নির্বাচনের বিপক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও স্লোগান দিচ্ছেন। পাশপাশি পুলিশের প্রহরায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে এক তরফাভাবে নির্বাচন চলছে।
বিকাল ৫টা পর্যন্ত আজও ভোট গ্রহণ চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন: সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে ২৭ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ আদালতের
দুদকের আপিল মঞ্জুর, কাজে ফিরতে পারবেন না সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন
কোনো কারণ দর্শানো (শোকজ) ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মচারীকে অপসারণ করা সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বাতিলের বিরুদ্ধে দুদকের আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে দুদকের সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চাকরিতে ফিরতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট বিচারপতির আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে: প্রশ্ন হাইকোর্টের
আদালতে শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহউদ্দিন দোলন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশিদ আলম খান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মচারীকে অপসারণ করা সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, দুদকের আপিল মঞ্জুর করে সেই রায় আপিল বিভাগ আজ বাতিল করে দিয়েছেন।
এছাড়া এ সংক্রান্ত শরীফ যে রিট আবেদন করেছিলেন সেই রিট পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন আদালত। এর ফলে শরীফ আর চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।
২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪(২) বিধিতে বলা হয়েছে, ‘এই বিধিমালায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দর্শিয়ে কোনো কর্মচারীকে নব্বই দিনের নোটিশ প্রদান করে অথবা নব্বই দিনের বেতন নগদ পরিশোধ করে তাকে চাকরি হতে অপসারণ করতে পারবে।’
২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুসারে মো. আহসান আলী নামের দুদকের এক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। তিনি ৫৪ (২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন। সে রিটে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবর এ বিধি বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ২০১৬ সালের নভেম্বরে খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এর বিরুদ্ধে পরের বছর দুদক পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে। পরে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর দুদককে আপিল করার অনুমতি দেন। আর এই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। পরে দুদক আপিল করে।
এদিকে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক পদ থেকে চাকরিচ্যুত মো. শরীফ উদ্দিনকে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি অপসারণ করলে তিনিও দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি ও চাকরিচ্যুতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
পরে ১১ এপ্রিল তা শুনানির জন্য ওঠে। কিন্তু তখন পর্যন্ত মো. আহসান আলীর মামলায় দুদকের দুদকের রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়ায় শরীফের রিটের শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
পরে এ মুলতবি আদেশের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৬ জুন আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন শরীফ।
গত ৩ জানুয়ারি শরীফের সেই লিভ টু আপিল ও দুদকের আপিল শুনানির জন্য একসঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে।
এরপর একসঙ্গে দুই আবেদনের শুনানি শেষে গত ২ মার্চ রায়ের জন্য ১৬ মার্চ দিন ঠিক আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: বেসরকারি হজ প্যাকেজে ন্যূনতম খরচ ৬.৭২ লাখ টাকা: হাব
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের খরচ নির্ধারণ
প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বুধবার ঘটে যাওয়া সব ঘটনা প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে তুলে ধরেছেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারা।
এ সময় আপিল বিভাগের অপর সাত বিচারপতিও উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধান বিচারপতি সমিতির বিএনপি সমর্থক সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে বেলা ১১টায় তার খাসকামরায় যাওয়ার জন্য বলেন।
প্রয়োজনে এ সময় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকেও ডেকে নেয়া যেতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি: সুপ্রিমকোর্টের এফিডেভিড শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একযোগে বদলি
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন আদালতের কাজ করতে দেন। আপনারা দু’জন বেলা ১১টায় খাসকামরায় এসে সব বলেন। আমরা শুনবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেব।’
এর আগে সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে প্রথমেই সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল বিএনপি ফোরামের নেতা এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে বুধবার নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। এটা এখনও চলামান রয়েছে। আজও রুমের তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। আজও কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কি না দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? এ ছাড়া তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাই।’
এরপর সমিতির সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সমিতির একজন সদস্য হিসেবে আমি মনে করি আমাদের যে কোনো দু:খ, কষ্ট, ব্যাথা অভিভাবক হিসেবে আপনাদেরকে জানানো উচিত। সমিতির নির্বাচন হয় সব সময় উৎসবমুখর পরিবেশে। কিন্তু এবার কি হলো! আজও আমি রুমে ঢুকতে পারিনি।
তিনি বলেন, রুমের বাইরে থেকে তালা লাগানো। বুধবার আমার ওপর আক্রমন করে গাউন ছিড়ে ফেলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার একটা পুরাতন গাউন ধার করে গায়ে দিয়ে এসেছি। হাজার হাজার পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। আমার আইনজীবীরা আহত হয়েছে। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমি প্রার্থী, আমি কেন ভোট কেন্দ্রে থাকতে পারবো না?
ব্যারিস্টার কাজল আদালতে বলেন, বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে সর্বসম্মতিক্রমে একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়। ১৩ মার্চ বিকালেও সে দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেছে। হঠাৎ তার কি হলো?
আরও পড়ুন: পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ও গ্যাস লাইন পর্যবেক্ষণে প্রতি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
পরে তিনি আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। তারা আলাদা ব্যালট পেপার তৈরি করে এনে বলেছে যেভাবে বলবে, সেভাবে কাজ করতে হবে। সেজন্য সে পদত্যাগ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন সে পদত্যাগ করলেও সর্বসম্মতিক্রমে নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু না করেই তারা ভোটগ্রহণ শুরু করেছে। এরপর রাতে মনিরুজ্জামান সাহেব বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আমাকে ও সভাপতি প্রার্থীসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় একটি মামলা করা হয়েছে সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে দিয়ে। সেখানে সমিতির বর্তমান ছয়জন নেতাকেও আসামি করা হয়েছে।
এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, মি. রুহুল কুদ্দুস কাজল আমি আপনাদের সবাইকে সম্মান করি। আপনারা দুইজন ১১টার সময় আসেন। কোনো করণীয় থাকলে করবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেব বলে জানান প্রধান বিচারপতি।
এরপর সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন তার বক্তব্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, নজিরবিহীন ঘটনা। ভোটকেন্দ্রে ৩০০-৪০০ পুলিশ ঢুকে ধাক্কা দিতে থাকে। সবাই পড়ে যাচ্ছিল আর পুলিশ বুট দিয়ে পাড়িয়েছে। আমার পায়ে ব্যাথা আমি ঠিকমতো দাড়াতে পারছি না। অনেক আইনজীবী আহত। সাংবাদিকদেরকেও আহত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসময় ব্যারিস্টার রুমের তালা খুলে দেয়ার ও পুলিশ সরানোর আবেদন জানান।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা এখন বললে আদেশ হয়ে যাবে। আপনারা আসেন, তখন দেখবো।
আরও পড়ুন: এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে: প্রশ্ন হাইকোর্টের
ফারদিনের মৃত্যু: স্থায়ী জামিন পেলেন বুশরা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর মামলায় ডিবি পুলিশের দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন অব্যাহতির আবেদনের ওপর নারাজির বিষয়ে শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল ধার্য করেছেন আদালত। একই আদালত ফারদিনের বান্ধবী আয়াতুল্লাহ বুশরাকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালতে মামলার বাদী ফারদিনের বাবা নুর উদ্দিন রানার নারাজির বিষয়ে শুনানির জন্য ছিল। তবে এদিন বাদীপক্ষে নতুন আইনজীবী নিয়োগ হওয়ার বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ফারদিন হত্যা মামলা: নারাজি দিতে সময়ের আবেদন বাবার
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাব্বির আহমেদ সজীব মামলার ফটোকপি চেয়ে আবেদন করেন। নারাজির দিতে সময়ও প্রার্থণা করেন তিনি। আদালত তাদের সার্টিফাইড কপি নিতে বলেন। সময় আবেদন মঞ্জুর ১৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
অপরদিকে একই আদালতে ফারদিনের বান্ধবী আয়াতুল্লাহ বুশরার আইনজীবী জামিন স্থায়ীর আবেদন করলে শুনানি শেষে আসামির জামিন স্থায়ীর আবেদন মঞ্জুর করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাব্বির আহমেদ সজীব এসব তথ্য জানান।
এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার অব্যাহতি চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের তিন দিন পর নারায়নগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গত ৭ নভেম্বর রাতে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের লাশ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। পরে ৯ নভেম্বর রাতে তার বাবা নুর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় মামলা করেন।
মামলায় নিহতের বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বুশরাসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর বুশরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১০ নভেম্বর তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৬ নভেম্বর রিমান্ড শেষে জামিন নামঞ্জুর করে বুশরাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ৮ জানুয়ারি জামিন পান বুশরা।
আরও পড়ুন: ফারদিনের মৃত্যু: বুশরার অব্যাহতি চেয়ে ডিবি’র চূড়ান্ত প্রতিবেদন
ফারদিন হত্যা মামলা: তদন্ত প্রতিবেদন ১৪ ফেব্রুয়ারি
চাঁদপুরে জাটকা ধরার অভিযোগে আটক ৯
চাঁদপুর এলাকায় নদীর অভয়াশ্রমে চলমান দুই মাসের সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে জাটকা নিধনের দায়ে শরীয়তপুরের ৯ জেলেকে চাঁদপুরে আটক করেছে নৌ-পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬৩ কেজি জাটকা ইলিশ, দুইটি নৌকা ও ছয় লাখ ৩২ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে জাটকা ধরায় ২৫ জেলে আটক
বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান।
কামরুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত জাটকার নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিতে ও নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে চাঁদপুর সদরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে অভিযান চালানো হয়।
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর এলাকায় অভিযানে দুটি নৌকাসহ ৯ জেলেকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে সাত জনের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। বাকি দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদেরকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, আটক জেলেদের সবার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে। তারা শরীয়তপুরের জেলে হয়েও চাঁদপুরে মাছ ধরতে এসেছে। এ সময় জব্দ করা জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
আটক জাটকা ইলিশ স্থানীয় এতিম ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত উদযাপন হবে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ
জাটকা ধরার অপরাধে চাঁদপুর-শরীয়তপুরের ১৭ জেলে গ্রেপ্তার
আদালত চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন (এসসিবিএ) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে অন্তত ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত হয়েছেন।
বুধবার এসসিবিএ নির্বাচনে দুই দিনের ভোট সকাল ১০টার দিকে শুরু হলেও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের নিরপেক্ষ ব্যক্তির নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করলে তা স্থগিত করা হয়।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়লে পুলিশ আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে ১০ জন আহত হয়।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ কয়েকজন আইনজীবীর ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। আমরা বিষয়টি প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছি।’
আহতদের মধ্যে এটিএন নিউজের রিপোর্টার জাবেদ আক্তার, বৈশাখী টিভির ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম হোসেন, মানবজমিনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আবদুল্লাহ আল মারুফ, এটিএন বাংলার ক্যামেরাপারসন হুমায়ুন কবির, সময় টিভি’র ক্যামেরাম্যান সোলায়মান স্বপন, ডিবিসি’র ক্যামেরাম্যান মেহেদী হাসান, জাগো নিউজ এর রিপোর্টার ফজলুল হক ও আজকের পত্রিকার প্রতিবেদক এস এম নুর মোহাম্মদ রয়েছেন।
তাদের মধ্যে জাবেদ আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য এর আগে সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে ১৩ মার্চ তিনি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী পরিষদ মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি উপ-কমিটি গঠন করে এবং বিএনপিপন্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল এএসএম মোক্তার কবিরের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করে।
এছাড়া মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় ৩ হাজার ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ফেলে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
যে কোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ বদ্ধপরিকর: আইজিপি
পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি শত বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করছে।
যে কোনো মূল্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
মঙ্গলবার বিকালে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ লাইন্সে পুলিশের বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। দেশে আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়ে প্রায় তিন হাজার ডলার হয়েছে।
সমাপনী বক্তব্য দেন পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে বাংলাদেশ পুলিশ: আইজিপি
আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ বাড়ল দেড় বছর