���������������
কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে লড়ছেন জিন প্রকৌশলীরা
অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান
ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার: পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব আমেরিকা
এই তো ক’দিন আগেই দেশজুড়ে সদ্য প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নানা কুকীর্তির বিবরণ নিয়ে মানুষ বেশ সরব ছিল। ঢাকা ট্রিবিউন বলছে, ‘বন্দুকযুদ্ধ’, ‘ক্রসফায়ার’ অথবা ‘শ্যুটআউটের’ নামে কক্সবাজারে সংঘটিত বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ৫৬ শতাংশ একাই করেছেন ওসি প্রদীপ। ঠিক এ সময়টাতেই আমেরিকাজুড়ে আন্দোলনের জোয়ার। সাম্প্রকিত ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ অন্দোলনের মূল স্পিরিটই হলো, পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ।
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম: ভাটি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক কীর্তিমান শিল্পী
বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। আজ ১২ সেপ্টেম্বর বাউল শাহ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকী। সাধারণত উল্লেখযোগ্য কোনো গায়ক-কবি-সাহিত্যিকের মৃত্যুবার্ষিকী কিংবা জন্মবার্ষিকীতে আমরা তার কবিতা পাঠ করি, গল্প পড়ি কিংবা গান শুনে তার সৃষ্টির তাৎপর্য বুঝতে চেষ্টা করি, তাকে স্মরণ করি ও তাকে অনুভব করার মাধ্যমে দিনাতিপাত করি। তাছাড়া সারা বছরই হয়তো তার কবিতা আবৃত্তি বা গান শোনা হয়ে উঠে না, যদিও ব্যক্তিবিশেষে এর ব্যতিক্রম ঘটতে পারে। তবে আমার ধারণা, বাংলাদেশে শাহ আব্দুল করিমের ক্ষেত্রে এই চর্চার ব্যত্যয় ঘটে যায়। তার কারণ আমি নিশ্চিত করে বলে দিতে পারি যে প্রতিটি মুহূর্তে বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও শাহ আব্দুল করিমের গান বাজতে শোনা যায় কিংবা হয়তো মনের অজান্তেই কেউ গেয়ে ওঠে। এত অল্প সময়ে এতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠা শিল্পী সারা বিশ্বে হয়তো খুব কমই আছেন বলে আমার বিশ্বাস। উপরন্তু, শাহ আব্দুল করিমের গান গেয়ে অনেকেই বিখ্যাত হয়ে গেছেন এরকম নজির আছে। আমি দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা যেকোনো একটি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখতে গিয়ে যে পরিমাণ পরিশ্রম ও মেধা খরচ করেন এতে মাঝে মাঝে অবাক লাগে যে পড়লেখা না জানা, গানের ব্যাকরণ পড়তে না পারা এমন অনেকেই খুব সহজেই বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র অনায়াসে বাজাতে পারছেন। আমি নিজেও ছাত্রজীবন থেকেই দেশীয় বাদ্যযন্ত্রগুলো শেখার জন্য উৎসাহী ছিলাম, সময়ের অভাবেই হোক কিংবা যথেষ্ট চেষ্টার অভাবেই হোক সামান্য টুংটাং ছাড়া কিছুই শিখতে পারিনি, গান রচনা করা তো দূরের ব্যাপার।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন স্বভাবজাত নেতা
বঙ্গবন্ধু এক সাহসের নাম। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে যতই জানা যাবে তাতে এ বিষয়টি আরও বেশি অনুভূত হবে। হলফ করেই বলা যায়, তাঁর মধ্যে আরও বড় কিছু গুণ ছিল, তাঁর মুল্যবোধ নিয়ে কোনো স্মৃতি থাকলে সেখানেও তা দেখতে পাবেন। তাঁর এমনসব গুণাবলির জন্য তিনি মানুষের শ্রদ্ধারপ্রাত্র হয়ে ওঠেছিলেন। ইতিহাসের পাতায় থাকা বিখ্যাত সব মানুষের মধ্যে ও তাদের জীবনে এমন দেখা গেছে। এবং সে সব মূল্যবোধগুলোর মধ্যে রয়েছে- অন্যায়ে আপোস না করা, ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য আদর্শ থেকে পিছপা না হওয়া। যা আমাদের প্রিয় এ মানুষটির মধ্যে সব সময়ই ছিল। এমনকি ১৯৬৯ সালে কাওলাপিন্ডিতে গোলটেবিল বৈঠক চলাকালীন সময়ে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ওই প্রস্তাবে রাজি হননি বাংলার এ নেতা। ১৯৬৬ সালের ৬ দফার দাবিতে মুক্তি আন্দোলনে চালিয়ে যাওয়া এক স্বভাবজাত নেতার কাছে ওই সময়কার চলতি পরিস্থিতি হার মেনেছিল। তখন কেবল স্বাধীন বাংলাই ছিল তার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্য কিছুই তিনি চাননি বা করেনও নি।
চাউর গাছ: রূপে-গুণে অনন্য
পরিবেশের নানাবিধ উপাদানের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ হলো গাছ। পৃথিবীতে শত সহস্র বিচিত্র প্রজাতির গাছ গাছালি রয়েছে যেগুলো তাদের নানা রকম গুণাবলি দিয়ে নানা উপায়ে প্রাণিকূলের উপকার করে যাচ্ছে। তবে এ গাছের মধ্যে অনেক গাছকেই আমরা চিনি-জানি খুব কম। অথচ রূপে-গুণে অনন্য। সেরকম একটি গাছ হলো ‘চাউর’ গাছ।
করোনা জয়ের পর প্লাজমা ব্যাংক গড়ে তোলার গল্প
এপ্রিলের ৯ তারিখে করোনায় আক্রান্ত হই সপরিবারে। বাদ যায়নি আমার সাড়ে তিনমাস বয়সী কন্যা নামিরাহ। যেদিন আক্রান্ত হয়েছিলাম সেদিন বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৩০ জন। দেশে সংক্রমণের শুরুর সময় হওয়ায় আমি এবং পরিবারের সদস্যদের টিকে থাকার গল্পটা একটু ভিন্নরকম। ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়েছে সবাইকে। আমাদের করোনাকালীন রেমিডিসিভির কিংবা প্লাজমা থেরাপিসহ অন্যান্য যেসব চিকিৎসাব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে এখন সেগুলোর কিছুই ছিল না। তখন অনেকের ধারণা ছিল করোনা মানেই হয়তো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া।
হোয়াট ইট মিনস টু বি ব্ল্যাক ইন আমেরিকা?
আমেরিকাতে দাস প্রথা কবে শুরু হয়েছে সে আলোচনা এত গভীরে যে, সেদিকে না গিয়ে বরং আলোচনা শুরু করা যেতে পারে যখন থেকে দাস প্রথা আইন করে বিলোপ করা হলো। সালটা ১৮৬৫। এর মধ্য দিয়ে সেসময় ৩ মিলিয়ন মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। একটু গভীরভাবে ভাবলে, রাষ্ট্র চাইলে কাউকে দাস বানিয়ে রাখতে পারে, আবার চাইলেই সেই শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিতে পারে। আজকের দিন পর্যন্তও আসলে রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন, সংবিধান যারা লিখেন, সংশোধন করেন, পরিবর্তন করেন, সংযোজন করেন, তাদের হাতে অনেক ক্ষমতা। সেসময় আমেরিকাতে যারা এই ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতো তারা দীর্ঘকাল ধরে কালোদের দাস বানিয়ে রেখেছিল। সেই দাসত্ব ভাঙার জন্য শত শত বছর ধরে আন্দোলন চলতে থাকলে একসময় তারা উপলব্ধি করলো, এই অধ্যায়ের ইতি টানা দরকার। তখন সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর মাধ্যমে দাস প্রথা আইনত বন্ধ হলো। কিন্তু, এখন প্রশ্ন আসতে পারে, সম্প্রতি আমরা আফ্রিকান-আমেরকিান কমিউনিটির যে আন্দোলন দেখছি সেটা তাহলে কী? কেন এই আন্দোলন?
এই প্রশ্নের উত্তর অনেক গভীরে। "ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার"- স্লোগানের ভিতরেই অনেক কথা বলা আছে। প্রথমত, ১৮৬৫ সাল থেকে ২০২০, আসলে কালোদের জীবনের যথেষ্ঠ গুরুত্ব ও মানবিক মর্যাদা আমেরিকান সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে কারণে এই স্লোগানটাকে আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারছি না । এত বছরেও কি তাহলে কোনো পরিবর্তন আসেনি? মোটাদাগে বলতে গেলে কিছু পরিবর্তন তো এসেছেই। ১৯৫০ এবং ১৯৬০, এই দুই দশকজুড়ে আমেরিকাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ক্রমাগত আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে। তবে গুণগত পরিবর্তন যে আসেনি, তা দু-একটা ঘটনা ধরে ধরে ইতিহাসের সুতাকে সামনে আর পেছনে টানলেই খুব স্পষ্ট বোঝা যায়।
বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা
৭ই জুন ৬-দফা দিবস হিসেবে আমরা পালন করি। ২০২০ সাল বাঙালির জীবনে এক অনন্য বছর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশের জনগণের জন্য এ বছরটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী প্রবাসী বাঙালিরাও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ইউনেস্কো এ দিবসটি উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলিও প্রস্তুতি নিয়েছিল। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে একটি স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান: একজন আদর্শবান মানুষের বিদায়
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মতো মহান ব্যক্তির মৃত্যুতে জাতির কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করার দায়িত্ব অন্যদের ওপরই ছেড়ে দেব। প্রকৃতপক্ষে এর মূলায়ন করতে যাওয়াটা সবচেয়ে দুঃসাহসিক কাজ হতে পারে। বাংলাদেশকে দেয়া তার অতুলনীয় অবদানকে বলে বোঝানো সম্ভব না। মানুষকে গড়ে তোলার বিষয়ে তিনি যতটা দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছিলেন তারও কোনো তুলনা হয় না। নিখুঁত কৃতিত্বের মাধ্যমে জাতির বিবেককে জাগিয়ে তোলার জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ও যুগে যুগে তিনি অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন। সম্ভবত, তিনি এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন যার স্বভাবের এবং আচরণের সমকক্ষ কেউ নেই।
অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম ও একটি মাটির ঘর
সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি অনলাইন ক্লাস বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নানা পন্থায় চেষ্টা চালাচ্ছেন। সংখ্যাতাত্ত্বিক ও ব্যক্তিনিরপেক্ষ গবেষণা পন্থাগুলোই এক্ষেত্রে অধিক গ্রহণযোগ্য। আমি নৃবিজ্ঞানের মানুষ। সংখ্যা বা শতাংশের চেয়ে মানুষের স্বগম/ব্যক্তিসাপেক্ষ (সাবজেক্টিভ) জ্ঞান নির্ভর গল্পগুলোই বরং আমার আশ্রয়স্থল। সে মানুষ সংখ্যায় যদি একজনও হয় আর তার গল্প যদি শুনবার ও বলবার দাবি রাখে তবে তার গুরুত্ব আমার কাছে এক শতাংশও কম নয়। আজ এমনি এক শিক্ষার্থীর গল্প আপনাদের সামনে হাজির করছি।