ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেগা প্রকল্পের ৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দুদকের কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ে বেনামি চিঠি পাঠানোর তিন মাস পর বিষয়টির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) রাতে দুদকের কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এম সাইদুর রহমানের সই করা এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেওয়া হয়।
ভুয়া দুটি বিল দাখিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক, ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারাসহ অজ্ঞাতনামা কিছু অসাধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে মেগা প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন কাজ থেকে ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়।
তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের তথ্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তথ্য চেয়েছে দুদক কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়।
তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ধাপের উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনের সর্বশেষ বিলও চেয়েছেন।
রেকর্ডের মূল কাগজ দুর্নীতি দমন কমিশন কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
আরও পড়ুন: চালক নিয়োগ: অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ায় ইবি ছাত্রলীগ সভাপতির জিডি
সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে- প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলার সম্প্রসারণ কাজ, বরাদ্দপত্র ও ১০ তলা ভবনের অনুমোদন পত্র, অনুমোদিত প্রাক্কলনের অনুলিপি, তফসিল, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, দরপত্রের তুলনামূলক বিবরণী, চুক্তির অনুলিপি, কার্যাদেশ, এমবির অনুলিপি ও চূড়ান্ত বিলের অনুলিপি।
দুদকের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রধান কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাঠানো প্রকল্পসংক্রান্ত নথি তিনি হাতে পেলেও কাগজপত্র এখনো খোলা হয়নি।
আরও পড়ুন: ইবিতে ই-পেমেন্ট সেবা চালু
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি বেনামি চিঠি আসে। চিঠিতে বলা হয়, ঠিকাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম বিলে ৬ কোটি টাকার বেশি মিথ্যা বিল করেছেন। চিঠির সঙ্গে বিল ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওই চিঠিটি আমলে নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম।
তিন মাস পর গত ৯ মার্চ তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে এবং বেনামি চিঠিতে উল্লেখিত অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পায়।
যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সিন্ডিকেট বিষয়টি পর্যালোচনা না করা পর্যন্ত আর কোনো মন্তব্য করা যাবে না বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ইবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে আবারও নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী