এক অজানা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস। বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, ৭৫ বছর বয়সী রাজা রাজপ্রাসাদের বাইরে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেছেন।
রাজা তৃতীয় চার্লসের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রয়েছে। সেসব ঘটনার কিছু অংশ আজ পাঠকদের সামনে তুলে হলো-
রাজা তৃতীয় চার্লস ১৯৪৮ সালের ১৪ নভেম্বর প্রিন্সেস এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপের প্রথম সন্তান স্যান্ড্রিংহামের রাজকীয় এস্টেটে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তার বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর প্রিন্সেস এলিজাবেথ হয়ে যান রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
এরপর চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিন্স অব ওয়েলস হিসেবে অভিষিক্ত হন ১৯৬৯ সালের ১ জুলাই।
১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই তিনি লেডি ডায়ানা স্পেন্সারকে বিয়ে করেন। ১৬৬০ সালের পর তিনিই প্রথম রাজকীয় উত্তরাধিকারী হিসেবে একজন ইংরেজ নারীকে বিয়ে করেন।
১৯৮২ সালের ২১ জুন প্রথম পুত্র উইলিয়াম আর্থার ফিলিপ লুইয়ের জন্মের মধ্য দিয়ে বাবা হওয়ার আনন্দ উপভোগ করেন তিনি।
প্রায় দুই বছর পর ১৯৮৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় পুত্র হ্যারির (হেনরি চার্লস আলবার্টের ডেভিড) জন্ম হয়।
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ লিডার্স ইভেন্টে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় প্রধানমন্ত্রীর
১৯৯২ সালের ১৫ জুন অ্যান্ড্রু মর্টনের বই 'ডায়ানা: হার ট্রু স্টোরি'তে বলা হয়, ক্যামিলা পার্কার বোলস নামে এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে চার্লসের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
১৯৯২ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
১৯৯৬ সালের ২৮ আগস্ট চার্লস ও ডায়ানার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন ডায়ানা।
২০০৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ক্যামিলা পার্কার বোলসকে বিয়ে করার জন্য বাগদানের ঘোষণা দেন চার্লস।
২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল তিনি একটি নাগরিক অনুষ্ঠানে ক্যামিলাকে বিয়ে করেন; তিনি ডাচেস অব কর্নওয়াল উপাধি গ্রহণ করেন।
২০১১ সালের ২৯ এপ্রিল তার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম কেট মিডলটনকে বিয়ে করেন। একই বছরের ডিসেম্বর ব্লক করোনারি ধমনীর চিকিৎসার জন্য চার্লসকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: শপথ নিয়ে মাথায় রাজমুকুট পড়লেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস
২০১৩ সালের জুনে পেটে অপারেশনের জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই বছরের ২২ জুলাই উইলিয়াম ও কেটের জ্যেষ্ঠ সন্তান প্রিন্স জর্জের জন্মের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দাদা হন তিনি। এই দম্পতির শার্লট ও লুইস নামে আরও দুই সন্তান রয়েছে।
২০১৮ সালের ১৯ মে তার দ্বিতীয় ছেলে হ্যারি মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে বিয়ে করেন।
২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল তিনি একটি নাগরিক অনুষ্ঠানে ক্যামিলাকে বিয়ে করেন; তিনি ডাচেস অব কর্নওয়াল উপাধি গ্রহণ করেন।
২০১১ সালের ২৯ এপ্রিল তার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম কেট মিডলটনকে বিয়ে করেন। একই বছরের ডিসেম্বরে ব্লক হওয়া করোনারি ধমনীর চিকিৎসার জন্য চার্লসকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর মাত্র দু’বছর পর ২০১৩ সালের জুনে পেটে অপারেশনের জন্য আবারও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০২১ সালের ৯ এপ্রিল চার্লসের বাবা প্রিন্স ফিলিপ ৯৯ বছর বয়সে মারা যান।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ সিংহাসনে আরোহণে তৃতীয় চার্লসকে রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন
২০২২ সালের ১০ মে চার্লস প্রথমবারের মতো রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি চলাফেরার সমস্যার কারণ দেখিয়ে অনুষ্ঠান থেকে সরে দাঁড়ান। রানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলোর মধ্যে একটি হলো এই প্রতিনিধত্ব করা। সেসময় এমন কার্যকলাপ রাজতন্ত্রের একটি রূপান্তর চলছে বলেই অনেকে ধারণা করেছিল।
২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর রাজা হন চার্লস।
২০২৩ সালের ৬ মে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে এক অনুষ্ঠানে রানি ক্যামিলার সঙ্গে তাকে মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ রাজা হিসেবে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে বার্লিন যান চার্লস। একই বছরের ৭ নভেম্বর পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো রাজার ভাষণ দেন তিনি।
২০২৪ সালের ২৬ জানুয়ারি বর্ধিত প্রস্টেটের চিকিৎসার জন্য তিন দিন থাকার জন্য লন্ডনের একটি হাসপাতালে প্রবেশ করেন চার্লস।
চার্লস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করে বাকিংহাম প্যালেস। রাজপ্রাসাদের বাইরে বহির্বিভাগের রোগী হিসেবে তিনি চিকিৎসা নেবেন বলেও জানানো হয়।