সম্পর্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করছি: হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাই।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনেমা হল মালিকদের নবনির্বাচিত কমিটি ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে ইউরোপীয় দেশগুলো : ড. হাছান মাহমুদ
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে রাশিয়ার মুখপাত্রের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সেটির জবাবও দিয়েছে। সেটি নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, এটি দুই রাষ্ট্রের বিষয়। কেউ ছুটিতে যেতে পারে, আবার ছুটি থেকে আসতেও পারে। এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি না।
তিনি বলেন, এটি রুটিন কাজের অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। পাশাপাশি বহুমাত্রিক সম্পর্ক আছে। আমরা সে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন— নির্বাচনে বাইরের থাবা এসে পড়েছে এবং দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে৷
একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে এবারের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করা চ্যালেঞ্জ কি না- প্রশ্ন করা হলে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন চায় দেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর একটি নির্বাচন হোক।
মন্ত্রী বলেন, আমরাও সেটি চাই। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ইতোমধ্যে সারা দেশে নির্বাচনের যেভাবে সাড়া পড়েছে, যেভাবে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ নির্বাচনে থাকবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এছাড়া অন্য দলগুলো যারা এখনও নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেয়নি। তাদের অনেকেই শিগগির ঘোষণা দেবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দমন-পীড়ন চলছে।
এ ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রীর মতামত চাইলে তিনি বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিভিন্ন সময় বিবৃতি বিক্রি করে। ফলে তাদের নিয়ে আমি তেমন কোনো কথা বলতে চাই না।
তিনি বলেন, দেশে যেমন কিছু বিবৃতিজীবী আছে আর আন্তর্জাতিকভাবেও কিছু বিবৃতিজীবী আছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দেশে যে এত গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হচ্ছে, সেটি যখন তাদের বিবৃতিতে অনুপস্থিত থাকে আর অন্যটিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় সেই বিবৃতিজীবীদের নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতি দেয় যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য আর গাজায় হত্যাকাণ্ড হলে চুপ থাকে। আর বাংলাদেশে কেউ কাউকে ঘুষি মারলে বিবৃতি দেয়। এ সমস্ত বিবৃতি নিয়ে কথা বলতে চাই না। এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নেই।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী 'অপরাধীদের' বিচারের আওতায় আনা হবে: হাছান মাহমুদ
কুলিয়ারচরে সারভর্তি ট্রাকে আগুন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘গোপন’ সম্পর্ক নিয়ে কাদেরের দাবি উড়িয়ে দিল বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘গোপন’ সম্পর্ক নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারা বড় মিথ্যাবাদী’।
তারা (আওয়ামী লীগ) এতটাই ভীত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে যে তাদের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, পর্দার আড়ালে (যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) একটি সমঝোতায় পৌঁছানোয় কোনো ভয় নেই। এর মানে আপনি স্বীকার করেছেন যে আপনি এত দিন ধরে ভয় পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ভারতের কথায় মাথা ঘামানোর দরকার নেই: মির্জা ফখরুল
বুধবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ও গণতান্ত্রিক পেশাজীবী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বোঝাপড়ার কথা বলেছেন। ‘পৃথিবীতে আপনার মতো মিথ্যাবাদী খুব কমই আছে। আপনার মতো বড় মিথ্যাবাদী পৃথিবীতে আর পাওয়া যাবে না। আপনি গোয়েবলসকে ছাড়িয়ে গেছেন।’
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এর আগে মিথ্যা দাবি করেছিলেন যে, ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা ও বৈঠক হয়েছে। ‘আমরা সবাই জানি, কীভাবে তারা (বাইডেন) ছবি তোলার জন্য দৌড়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বলেছেন, দিল্লি আছে, আমরাও আছি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন। দিল্লি কি আপনাকে বলেছে যে আপনার অপকর্ম চালিয়ে যেতে হবে এবং নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই? দিল্লি কি আপনাকে জোর করে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে বলেছে? তারপর বিষয়টি পরিষ্কার করে বলুন।’
আয়োজকরা জানান, সম্মেলনে সারাদেশ থেকে শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, কৃষিবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার দেড় হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন।
ফখরুল বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, হামলা হলে তারা পাল্টা হামলা চালাবে না।
জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণকে রাজপথে নামতে উৎসাহিত করার জন্য পেশাজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অশালীন’ মন্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা এই সত্যকে উন্মোচন করেছে যে, তার নির্দেশেই এ দেশে সবকিছু ঘটছে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেলেন মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে তার (প্রধানমন্ত্রীর) বক্তব্য পরিষ্কারভাবে প্রমাণ করেছে যে, এ দেশে বিচার বিভাগের কোনো প্রয়োজন নেই এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তেরও প্রয়োজন নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও চরম ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশ।
‘তিনি মনে করেন এই দেশ তার পৈতৃক সম্পত্তি। সর্বোপরি, তিনি মনে করেন তিনি অতুলনীয় হয়ে উঠেছেন। দেশে তিনি ছাড়া আর কেউ নেই। তাহলে এত নাটক, প্রাণহানি, নির্যাতন আর এত নির্যাতনের কী লাভ? আপনি ঘোষণা করতে পারেন যে আমি এখন সম্রাজ্ঞী।’
বিএনপি নেতা বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসনের কবলে পড়েছে। ‘এই সরকার অবৈধ, কারণ এটি কোনো নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় না। তারা অবৈধভাবে সংবিধান বিকৃত করে ক্ষমতা দখল করেছে।’
তিনি বলেন, সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন আয়োজনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু দেশের জনগণ ও বিদেশিরা এর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাছাড়া যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চায়, তারা তাদের (আওয়ামী লীগ) বিশ্বাস করে না।’
ফখরুল আরও বলেন, তারা পরিষ্কারভাবে বলেছে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে তারা তা মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে এই সরকার যখন পদত্যাগ করবে তখনই একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করবেন না: মির্জা ফখরুল
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর, কিন্তু কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টির চেষ্টা করছে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর, কিন্তু কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে এবং বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) নিউ ইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যে নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র সেই নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি। আমরা জনগণের ভোটে জয়লাভ করলেও ১৯৭১ সালে আমাদের সরকার গঠন করতে দেয় নাই। বরং আমাদের উপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল আর তখন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’
আরও পড়ুন: সবার সহযোগিতা ছাড়া সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারবে না সরকার: মোমেন
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলাম গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এজন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এতো অল্প সময়ে এতো মানুষ আত্মত্যাগ করেনি। আমরা পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র জাতি যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এতো বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের মতের, চিন্তার মিল আছে। নীতিগতভাবে আমাদের দুদেশের মধ্যে মিল রয়েছে। তবে তাদের কোনো কোনো ব্যক্তিবিশেষ হয়তো আমাদের উন্নয়ন পছন্দ করছেন না, তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহবান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কেউ বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করলে তাদের মিথ্যাচারকে চ্যালেঞ্জ করতে দলমত নির্বিশেষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান তিনি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে যেসব ভালো পরামর্শ দেয় আমরা সেটা গ্রহণ করি। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে আর আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যারা নির্বাচন বয়কট করতে চায়, নির্বাচন ভয় পায়। নির্বাচন বানচাল করতে তারা সবরকমের চেষ্টা করে থাকেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ২৬তম বড় অর্থনীতিতে পরিণত হব।’
আরও পড়ুন: ভুল তথ্য-অপপ্রচার মোকাবিলা করতে প্রবাসীদের প্রতি মোমেনের আহ্বান
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ, তাই আমাদের নিজস্ব বাজারও অনেক বড়। সেজন্য আমাদের দেশের প্রতি অনেকেরই আগ্রহ বেড়েছে, কারণ আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ গুণ বেড়েছে। দারিদ্রের হার অর্ধেকের বেশি কমেছে। এসবই শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কারণে সম্ভব হয়েছে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ এবং সবজি উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়। চাল উৎপাদনে আমরা বিশ্বে চতুর্থ। আমাদের কৃষি জমি অনেক কমে গেছে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তবে আমরা এই উন্নতি করছি বলে অনেকেরই গাত্রদাহ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না। কারণ এখন আমরা বিদেশির পয়সায় চলি না। আর আমরা উন্নতি করেছি বলে অনেকের আগ্রহ বেড়েছে। অনেকেই আমাদের কাছে টানার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা কারো লেজুরবৃত্তি করতে চাই না। আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা বিজয়ের জাতি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি সুন্দর পররাষ্ট্রনীতি দিয়ে গেছেন। আর এই নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা একটা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করি।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি ড. মসিউর মালেক।
অন্যান্যের মধ্যে কবি ও সাহিত্যিক ফকির ইলিয়াস, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আব্দুল খালেক মিয়া, বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার নিউইয়র্ক প্রতিনিধি লাভলু আনসার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতৃবৃন্দ এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ঢাকা: শাহরিয়ার আলম
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
রবিবার(২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের (আরওকে) জাতীয় প্রতিষ্ঠা দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরবের অনেক নামকরা কোম্পানি: রাষ্ট্রদূত
দেশের স্বাধীনতার খুব প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৭২ সালের ১২ মে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার স্বীকৃতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
শাহরিয়ার আলম ৫০ বছরের গৌরবময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন এবং আরও গভীর, সবক্ষেত্রে সহযোগিতা তৈরি করে এই বন্ধুত্বকে আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি ভারতে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো ধরনের টানাপোড়েনের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ম্যানহাটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে আমাদের কোনো উদ্বেগ নেই। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে যারা, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসা দেবে না।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো এক চিঠিতে বাইডেন বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমাদের অংশীদারিত্ব আগামী ৫০ বছর এবং তারও বেশি সময় ধরে অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া বলেন, ভিসা নীতি ঘোষণা বিশ্বব্যাপী অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশিদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের অংশীদারদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।
এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন নয়। কারণ তারা কোনো ভুল করছে না।
শুক্রবার রাতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যেহেতু সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছে, তাই আগামী নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো কারণ নেই।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের নাম বা সংখ্যা প্রকাশ করবে না।
দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার শুক্রবার ইউএনবিকে বলেন, মার্কিন আইন অনুযায়ী ভিসা রেকর্ড গোপনীয়।
তিনি বলেন, ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকে মার্কিন সরকার ঘটনাগুলো খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।
শিলার আরও বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ পানি সম্মেলনের প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন মডেলের প্রশংসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের
সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে বাংলাদেশ-চীন একসঙ্গে কাজ করবে: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নীতি, অবকাঠামো, বাণিজ্য, আর্থিক এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও চীন আরও শক্তিশালী সহযোগিতা করতে পারে।
বৃহস্পতিবার(২১ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও উইং চিফ মো. আনোয়ার হোসেন, বিডা’র নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, বিসিসিআই’র মহাসচিব আল মামুন মৃধা, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিম এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মো. রেফায়েত উল্লাহ মৃধা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ যারা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এ যোগ দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, বিগত সাত বছরে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গতি সঞ্চার করেছে এবং বাংলাদেশিদের জীবনযাত্রার উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, আগামীতে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ শক্তিশালী জীবনীশক্তি উন্মোচন করতে থাকবে এবং চীন ও বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ ও সমৃদ্ধির রাস্তা হয়ে উঠবে।
নীতি সংযোগের বিষয়ে দুই দেশের নেতারা চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
অবকাঠামোগত যোগাযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশে ১২টি সড়ক, ২১টি সেতু এবং ২৭টি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্প নির্মাণ করেছে এবং চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল এবং পদ্মা সেতু রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পের প্রথম অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও।
আরও পড়ুন: ইইউ’র পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর ওপর নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে না: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বাণিজ্য সংযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টানা ১২ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।
বাংলাদেশ ২০১৬ সালে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগদানের পর থেকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের প্রচার চালিয়ে যাবে, চীনে আম এবং অন্যান্য উচ্চ মানের কৃষি পণ্য রপ্তানি ত্বরান্বিত করবে।’
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা এগিয়ে নেবে। সিআইআইই-এর মতো প্ল্যাটফর্মের ভালো ব্যবহার করবে, বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করবে এবং বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ চীনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাতে মানবজাতির জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রদায় গঠন করা যায়।
তিনি বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আধিপত্য খোঁজার কোনো কারণে নেই, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো ঐতিহ্য নেই এবং সম্প্রসারণ ও লুণ্ঠনের কোনো উপাদান নেই।’ তিনি বলেন, এটা বলা যায় যে বাংলাদেশের আধুনিকায়নের যাত্রায় বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ‘ভিশন-২০৪১’ এবং ‘সোনার বাংলার’স্বপ্নের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার জন্য উপযুক্ত।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের দিকনির্দেশনা নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক অবশ্যই নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা করবে।
২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের মজুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
বাংলাদেশে ৬৭০টিরও বেশি চীনা কোম্পানি কাজ করছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘এইমাত্র, আমি ১৬টি চীনা কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছি যাদের দক্ষিণ এশিয়ার সদর দপ্তর বাংলাদেশে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবেন না: বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে সজাগ থাকুন: প্রধানমন্ত্রী
আগামীতে কেউ যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আর বিকৃত করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণকে চেতনায় জাগ্রত করতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশকে গড়ে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত চেতনাকে যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ বিকৃত করতে না পারে সেজন্য সবাই সজাগ থাকুন।’
শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের নির্বাচিত চিত্রকর্ম নিয়ে “এ রেট্রোস্পেকটিভ ১৭৯৭৩-২০২৩” শীর্ষক বিশেষ শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব বলেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে মাসব্যাপী একক শিল্প প্রদর্শনীতে শাহাবুদ্দিনের ১৪০টি নির্বাচিত শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সবার জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন: জি২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা বলেন, চিত্রকর্ম মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে। তিনি বলেন, ‘শিল্পকর্মগুলো মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম ও চেতনা জাগ্রত করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আদর্শ ও ইতিহাস- সবকিছুই মুছে যাওয়ার পর কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও লেখকরা তাদের রচনায় চেতনা ধরে রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু তারা সে সময় চেতনা ধরে রেখেছিলেন, তাই আমরা, রাজনীতিবিদরা, পরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং রাজনৈতিক উপায়ে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছি। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশ গড়ার পদক্ষেপ নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরতে শুরু করেছে, যা একটি বড় অর্জন।
মাসব্যাপী প্রদর্শনীর সফলতা কামনা করে তিনি বলেন, শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তার শিল্পকর্ম বাংলাদেশের প্রকৃতি, দেশের মানুষের অবস্থা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিফলিত করে।
তিনি আরও বলেন, ‘শাহাবুদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন । এখনো তার শিল্পকর্মগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা ও চেতনা প্রতিফলিত হয়। এটি আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করে। তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, এখনও সেই অনুভূতি বহন করেন।’
প্রদর্শনী পরিদর্শনে এসে জনগণ দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
শাহাবুদ্দিন আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ তিনি তার চিত্রকর্মের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী “শাহাবুদ্দিন, এ রেট্রোস্পেকটিভ ১৯৭৩-২০২৩” শিরোনামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
প্রধানমন্ত্রী ফিতা কেটে রেট্রোস্পেকটিভের উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত শাহাবুদ্দিনের একক চিত্রকর্ম পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপু, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক খলিল আহমেদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: আপনার অর্জন খুবই আকর্ষনীয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মধ্যে আলোচনা চলছে
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে সম্পর্ককে 'কৌশলগত' পর্যায়ে নিতে চায় ঢাকা-প্যারিস
শান্তি, সমৃদ্ধি ও জনগণের জন্য অংশীদারিত্বকে ‘কৌশলগত’ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
সরকারের অসাংবিধানিক পরিবর্তন এবং যেকোনো দেশে বেআইনি সামরিক দখলের নিন্দা জানায় উভয় দেশ। একই সঙ্গে সংঘাত, সহিংসতা ও নৃশংস অপরাধের কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার আহ্বান জানান দুই দেশের নেতা।
কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য অংশীদারিত্বের কথা তুলে ধরে, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স। বিশেষ করে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের নীতি ও বহুপাক্ষিকতাবাদে অবিচল বিশ্বাসের উপর তারা জোর দিয়েছেন।
সেক্ষেত্রে ফ্রান্স ও বাংলাদেশ সব জাতির আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফরের সময় দুই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সহযোগিতার বিষয়ে স্বাক্ষরিত লেটার অব ইনটেন্টের কথা স্মরণ করে দুই দেশ।
আরও পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস দুটি সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ু জরুরি অবস্থা
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শক্তিতে বিশ্বাসী।
উভয় দেশই চারটি মূল নীতি অনুসরণ করে বৈশ্বিক অর্থায়ন কাঠামোর আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনপদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে: কোনো দেশকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং গ্রহ রক্ষণবেক্ষণের মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে না- তা নিশ্চিত করা; স্থানান্তর কৌশলগুলোর দেশের মালিকানা নিশ্চিত করা; দুর্বল অর্থনীতিগুলোকে সমর্থন করার জন্য বর্ধিত এবং অনুমানযোগ্য সংস্থানগুলোর সঙ্গে একটি আর্থিক উদ্দীপনা সরবরাহ করা এবং গ্রিনহাউজ গ্যাস শূন্যের কাছে নামিয়ে আনার পাশাপাশি প্রকৃতিবান্ধব বিশ্ব অর্জনের জন্য অতিরিক্ত বেসরকারি মূলধন সংগ্রহ করা।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স মনে করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নে প্রবেশাধিকার সহজতর করতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা আরও ত্বরান্বিত করা উচিত।
যেসব দেশ চরম বিপর্যয় মোকাবিলা করে এবং ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে সাড়া দেয় সেসব দেশকে জলবায়ু-সহনশীল ঋণ ধারাগুলোর আরও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহায়তা অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স। এর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু ঝুঁকির বিরুদ্ধে ভি২০-জি-৭ গ্লোবাল শিল্ড, যার মধ্যে বাংলাদেশ একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকিতে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সহায়তা করতে একটি তহবিলসহ নতুন অর্থায়ন ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সহায়তা করে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করতে তাদের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স।
এ বছর দুবাইয়ে একটি ফলাফলভিত্তিক কপ-২৮ আয়োজনে যোগ দিতেও সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
নবায়নযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতে বিনিয়োগসহ জলবায়ু সহনশীল বিশ্বে জরুরি রূপান্তরের লক্ষ্যে কপ-২৮-এ একটি পথ প্রণয়নের প্রত্যাশা করে দুই দেশ।
তারা জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়াই বৈশ্বিক শক্তি রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে নাবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন এবং জ্বালানি দক্ষতার জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ ও পূরণের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা থেকে সরে আসার লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স। অন্যদিকে বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যের অর্থ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে তার জ্বালানি রূপান্তর প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য একটি টেকসই সহযোগিতামূলক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্ন বিশ্বব্যাপী খাদ্য সার্বভৌমত্ব, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলছে বলে একমত প্রকাশ করেছে দুই দেশ।
এ ছাড়া নিয়মিত সংলাপের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার সমর্থনে টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থায় সহযোগিতা জোরদারে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
এ প্রসঙ্গে ফ্রান্সের নেতৃত্বে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার রেজিলিয়েন্স মিশনে (ফার্ম) বাংলাদেশের যোগদানের প্রশংসা করেছে ফ্রান্স।
পানি শোধন থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, নগর উন্নয়ন থেকে শুরু করে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবাসহ জলবায়ুভিত্তিক প্রকল্প এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রান্সের উন্নয়ন সহযোগিতা সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া বন ও জলাভূমি দ্বারা প্রদত্ত গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুসংস্থান সেবার গুরুত্বের উপর জোর দেয় দুই দেশ। সেই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও কার্বন উভয়ের গুরুত্বপূর্ণ মজুদ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে তাদের সহযোগিতা গভীর করার অঙ্গীকার করে দুই দেশের সরকার। এ ছাড়া ফ্রান্স দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বন ও এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ আইসিটি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে ফ্রান্স। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক গ্লোবাল পার্টনারশিপের মতো উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার আমন্ত্রণও জানায় ফ্রান্স।
তারা আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা পরিচালিত একটি বৈশ্বিক, উন্মুক্ত ও সুরক্ষিত সাইবার স্পেসের জন্য সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর বর্ধিত পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাইবার নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ফ্রান্স। একইসঙ্গে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গ্লোবাল ডিজিটাল কম্প্যাক্টেও একসঙ্গে কাজ করবে দুই দেশ।
সুশীল সমাজসহ জনকেন্দ্রিক যোগাযোগের জন্য অংশীদারিত্বের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সংস্কৃতিকে একটি শক্তিশালী, জনকেন্দ্রিক সংযোগের জন্য একটি প্রধান সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে।
এ ছাড়া প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে, বিশেষত অনন্য মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক মিশনের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং অন্যান্য সম্ভাব্য খনন ও পুনরুদ্ধার মিশন নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হন তারা।
উভয় দেশ তাদের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং এ ক্ষেত্রে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের প্রধান ভূমিকার কথা উল্লেখ করে।
উভয় দেশ বহুভাষিকতার গুরুত্ব স্বীকার করে বাংলাদেশে ফরাসি ভাষা এবং ফ্রান্সে বাংলা ভাষা শেখার প্রসারে প্রতিশ্রুতি দেয়।
পাশাপাশি বাংলাদেশের তরুণ কূটনীতিকদের জন্য ফ্রান্সে কূটনৈতিক ও ফরাসি ভাষার প্রশিক্ষণ দিতে সম্মত হয়েছে ফ্রান্স।
শান্তির সংস্কৃতির উন্নয়নসহ ইউনেস্কোর মধ্যে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
পারস্পরিক বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও গবেষণা সহযোগিতা জোরদার করতে চায় দুই দেশ। এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে গবেষণা সহযোগিতা জোরদার করার উপায় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান গভর্নেন্সে একজন ফরাসি সমুদ্রবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটি।
স্থাপত্য, প্রকৌশল, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সমুদ্রবিজ্ঞান, সিসমোলজি, ক্লাইমেট অ্যাকশন, টেকসই পর্যটন ও উন্নয়ন অধ্যয়নের মতো অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মানবসম্পদ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উভয় দেশ আরও বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ নিয়োগদানকে উৎসাহিত করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের কৌশলগত মাত্রাকে আরও গভীর করতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ১০-১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক সফর করেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সোমবার ঢাকায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা, স্থিতিস্থাপকতার সমর্থনে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি বিশ্বস্ত এবং অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য তাদের অভিন্ন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা-প্যারিস সম্মতিপত্র স্বাক্ষর
বাংলাদেশ সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য প্রহরীর মতো জেগে থাকুন: ছাত্রলীগের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
যেহেতু আমরা জাতির পিতার দেওয়া নীতি অনুসরণ করছি- তাই সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছি। আমাদের লক্ষ্য আমাদের দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নির্বাচন বোর্ড-২০২৩-এ ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সফলভাবে দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করেছে।
জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সরকারের লক্ষ্যে সহযোগিতার জন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াব না। আমরা সবার সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব।
তিনি বলেন, তার সরকারও সফলভাবে এই ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতিতে ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। তবে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকার উৎখাতের হুমকি বা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো লাভ হবে না: প্রধানমন্ত্রী
আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো: দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
মার্কিন কর্মকর্তাদের আগমন দু’দেশের ঘনিষ্ঠতর সম্পর্কের বার্তাবাহী: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের আগমন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার বার্তাই বহন করে।
তিনি বলেন, এই আগমনকে আমরা স্বাগত জানাই।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কর্মকর্তা এসেছেন এবং সহসাই আরও বেশ কয়েকজন আসবেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিককর্মী, আর সন্ত্রাসী গুলিয়ে ফেলেছেন বিএনপি নেতারা: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। তাদের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা রয়েছে এবং বিশ্বাঙ্গণেও বহুমাত্রিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা কাজ করি। বাংলাদেশের উন্নয়নেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরাট ভূমিকা রাখছে।
বিএনপির মহাসচিব ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের বলেছেন, ‘কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না’ এ নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের মালিক জনগণ।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় কারা যাবে সেটি নির্ধারণ করার মালিক হচ্ছে জনগণ। বিএনপির যদি কোনো নালিশ থাকে তা দিতে হবে জনগণের কাছে, বিদেশিদের কাছে নয়।
জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যানডস, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে, যুক্তরাজ্যে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেখানে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে আমাদের দেশেও ঠিক একইভাবে নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নালিশ তারা করতে পারে কিন্তু আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো নালিশ জনগণের কাছে করার জন্য, বিদেশিদের হাতে-পায়ে না ধরার জন্য।
বিএনপির সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকে শুরু হবে এমন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে নিহত হয়েছিলেন অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। চট্টগ্রাম খুব তাৎপর্যপূর্ণ। তারা তো মাঝে মধ্যেই এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দেন। তো এক দফা আন্দোলন চট্টগ্রামেই মারা যায় কি না, সেটিই দেখার বিষয়।
ভূ-রাজনীতির কোনো চাপ সরকারের ওপরে আছে কি না এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো চাপে নাই। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপি আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা করেছে, সেটি আমরা সামাল দিয়েছি।
সেটি করার সামর্থ্য বিএনপির এখন নাই এবং ভূ-রাজনীতির কারণে আর এ ধরণের আন্দোলন করা তাদের পক্ষে সম্ভবপর নয়। আমরা জানি কখন কি করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো বর্জন করেছিলো এবং তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এবং জনগণকেও বর্জন করার, ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলো।
তাদের এতো প্রচারণার মধ্যেও ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনেও জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের মূল বিষয় জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কি না। বিএনপি’র অংশগ্রহণ আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। তবে তারা যদি নাও আসে, আগামী নির্বাচনে জনগণ থাকবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না: তথ্যমন্ত্রী
জামায়াতের সঙ্গে আ.লীগের কোনো যোগাযোগ নেই: তথ্যমন্ত্রী