আফ্রিকা
এসিড বর্জ্যে জাম্বিয়ার বৃহত্তম নদীটি এখন প্রাণহীন
চীনা-মালিকানাধীন খনি থেকে এসিড ছড়িয়ে পড়ে দূষিত হয়েছে জাম্বিয়ার সবচেয়ে বড় নদীটি। এতে লাখ লাখ মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশবিদরা।
নদীর ভাটিতে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূষণ শনাক্ত করা হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশটির উত্তরাঞ্চলের তামার খনি থেকে এসিডিক বর্জ্যের একটি টেইলিং ড্যাম (বাঁধ) ভেঙে গেলে এই দূষণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে। খনিজ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বর্জ্য রাখার জন্য এই টেইলিং ড্যাম ব্যবহার করা হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, ঘনীভূত এসিড, দ্রবীভূত কঠিন বস্তু ও ভারী ধাতবের অন্তত পাঁচ কোটি লিটার বর্জ্য কাফু নদীর স্রোতে মিশে গেছে। জাম্বিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এই নদীটি।
দেশটির কপারবেল্ট প্রদেশের পরিবেশকর্মী চিলিকওয়া মুম্বা বলেন, ‘এটি একটি পরিবেশগত দুর্যোগ যা ভয়াবহ বিপর্যয় নিয়ে আসবে।’
দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে তামার খনি উত্তোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে চীন। বিশ্বের শীর্ষ ১০ তামা উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে জাম্বিয়া একটি। স্মার্টফোন উৎপাদনের ক্ষেত্রে তামা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
বিশেষজ্ঞদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হাকাইন্দি হিচিলেমা বলেন, ‘এটি এমন একটি সংকট, যা কাফু নদীর আশপাশের লাখ লাখ মানুষ ও বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি তৈরি করছে।’
দেশটির ভেতর দিয়ে দেড় হাজার কিলোমিটারজুড়ে প্রবাহিত এই নদী। বর্তমানে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির পরিধি নির্ণয়ে তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রসুলকে আর ‘স্বাগত জানানো হবে না’ বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মর্কো রুবিও। এমন এক সময় এই সিদ্ধান্ত এসেছে, যখন আফ্রিকান দেশগুলোর বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কো রুবিও বলেন, ‘ইব্রাহিম রসুল একজন ‘জাতি-বিদ্বেষী’ রাজনীতিবিদ, যিনি আমেরিকা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন। তার সঙ্গে আমাদের আলোচনার কিছু নেই, এখন থেকে তাকে পারসোনা নন গ্রাটা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’-খবর এপি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের
এরমধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার ভূমিকার ইতি ঘটেছে। গেল ১৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে নিজের পরিচয়পত্র দেন ইব্রাহিম রসুল। যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন তিনি।
এরআগে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একই পদে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই রাজনীতিবিদ।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করতে দেখা গেছে ট্রাম্প ও তার মিত্র ইলন মাস্ককে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায়ই বেড়ে উঠেছেন ইলন মাস্ক। তাদের দাবি, দেশটিতে নতুন ভূমি আইনে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্য করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক। কখনো-কখনো নিম্ন পদ-মর্যাদার কূটনীতিকদের ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়।আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই বহিষ্কারের ঘটনা দুঃখজনক।’ এতে এ ঘটনায় প্রচলিত কূটনৈতিক রীতিনীতি অনুসরণ করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক গড়তে দক্ষিণ আফ্রিকা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
শৈশবে কেপ টাউনের একটি গ্রাম থেকে ইব্রাহিম রসুলের পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেখানকার শ্বেতাঙ্গরা। পরবর্তীতে তিনি বর্ণবাদবিরোধী প্রচারে নামেন। দেশটির বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তাকে ‘বন্ধু’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন ইব্রাহিম রসুল।
শুক্রবার জোহানেসবার্গের একটি ইনস্টিটিউটের ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে ইব্রাহিম রসুল বলেন, ‘ক্ষমতার বিরুদ্ধে, দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার ওপর শ্রেষ্ঠত্ববাদী হামলা—আমরা এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি হিসেবে দেখি, এমএজিএ আন্দোলন, দ্য মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন আন্দোলন—কেবল শ্রেষ্ঠত্বাবাদী প্রবৃত্তি থেকেই আসছে না, সুস্পষ্ট উপাত্ত বলে দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক জনমিতিক পরিবর্তনের কথা, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ নির্বাচকমণ্ডলীর সংখ্যা ৪৮ শতাংশ হতে যাচ্ছে।’
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ও প্রিটোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। গেল ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন সহায়তা বন্ধ করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। শ্বেতাঙ্গদের কাছ থেকে ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে।’
সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো কৃষক নিরাপত্তার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পালিয়ে আসতে চান, তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে মার্কিন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’
১ দিন আগে
মালিতে স্বর্ণের খনি ধসে নিহত ৪৮
মালির পশ্চিমাঞ্চলে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি স্বর্ণের খনিতে ধসের ঘটনায় কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কায়েস অঞ্চলের কেনিবা জেলার দাবিয়া কমিউনের একটি গ্রাম বিলালকোটোতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেন, খনিতে একদল নারী স্বর্ণের খোঁজার কাজ করার সময় তাদের ওপর কারিগরদের একটি ক্যাটারপিলার মেশিন পড়েছিল।
কর্মকর্তা এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন, ‘৪৮ জন নারী ঘটনাস্থলেই মারা যান।’ আরও অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় অবৈধ স্বর্ণের খনিতে ভূমিধসে নিহত ১১, নিখোঁজ ১৯
সিনহুয়াকে কর্তকর্তারা বলেন, কোনো কোনো সূত্র প্রায় ৫০ জনের মৃত্যুর খবর দিচ্ছে। তবে আপাতত মৃতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করা কঠিন, এমনকি প্রাথমিকভাবেও। কারণ, বেশ কিছু ব্যক্তি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত। এ কারণে যেকোনো মুহূর্তে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি দেশটির কৌলিকোরো অঞ্চলের কাঙ্গাবা জেলার ডাঙ্গা এলাকায় একটি স্বর্ণের খনিতে ধসের ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার স্বর্ণের খনিতে ভূমিধস: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩
২৮ দিন আগে
উগান্ডায় ইবোলা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু
উগান্ডায় ইবোলা ভাইরাস শনাক্তের পরে রোগীদের পরীক্ষামূলক টিকা দিতে শুরু করেছে দেশটি। উগান্ডায় ভাইরাসটির সুদান প্রজাতির বিস্তারে ১ জনের মৃত্যু ও দুইজন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে এক প্রতিবেদনে বলেছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
প্রথম পর্যায়ে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী কাম্পালাতে একজন নার্সের মৃত্যু ও পরিবারের আরও দুজন সদস্য আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হয়।
ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের উৎস জানতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, ইবোলা সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের যেকোনো তরল কিংবা মলমূত্রের সংস্পর্শে অন্যরা সংক্রমিত হতে পারেন। ভাইরাসটির উপসর্গ হিসেবে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দেখা দিতে পারে জ্বর। হতে পারে বমি, ডায়রিয়া, শরীর ব্যথা। এছাড়াও কিছুক্ষেত্রে শরীরের অভ্যন্তরে ও বাইরে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
কাম্পালার বিশাল ও ভ্রাম্যমাণ ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে সংক্রমণ মোকাবিলা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।
উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, ভাইরাসে প্রাণ হারানো সেই নার্স একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি আক্রান্ত হওয়ার আগে দেশের পূর্বঞ্চলের এমবেলাতে গিয়েছিলেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আগে তিনি কবিরাজের চিকিৎসাও নিয়েছিলেন।
তিনি আনুমানিক ২৩৫ জন মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন বলে ধারণা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উগান্ডা একটি ঘনবসতিপূর্ন দেশ হওয়ায় ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে হিমশিম খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তজার্তিক এইডস ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভের দেওয়া ২০০০ টিকা পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক মাতশিদিসো মোয়েতি ইবোলা ভাইরাসের প্রতিরোধমূলক টিকা পরীক্ষাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার গুরুত্বকেও তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন:দেশে প্রথমবারের মতো ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ট্রাম্প প্রশাসন সরে আসার পর এবং বিদেশি সহায়তা বন্ধের পর ইবোলায় এটিই প্রথম আক্রান্তের ঘটনা। উগান্ডায় ইতোপূর্বে ইবোলার বেশ কয়েকটি ধরণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০০০ সালে দেশটিতে ইবোলায় শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভাইরাসটি একটি ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বর হিসেবে মানব শরীরে দেখা দেয়।
২০১৮ থেকে ২০২০ সালে পূর্ব কঙ্গোর জায়ার প্রজাতির ভাইরাসটি প্রতিরোধে কার্যকর হয়েছিল আরভিএসএফ-জেইবিওভি ভ্যাকসিন। এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তির প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল। উগান্ডায় ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে পূর্ব আফ্রিকায় ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বরের প্রাদুর্ভাবের ধারাবাহিকতা বৃদ্ধি করেছে। গত মাসে তানজানিয়ায় মারবার্গ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করে। এর আগে দেশে মারবার্গ প্রাদুর্ভাব শেষ হওয়ার ঘোষণা দেয় রুয়ান্ডা।
ছড়িয়ে পড়া ইবোলা ভাইরাসটি ঠিক কিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তা নিশ্চিত করতে না পারলেও বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন সংক্রমিত কোনো পশুর কাঁচা মাংস খাওয়ার কারণে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন প্রথম সংক্রমিত ব্যক্তি।
ইবোলা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। দক্ষিণ সুদান ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ইবোলা নদীর তীরে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল ভাইরাসটি। ইবোলা নদীর নামানুসারে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:কোভিড ল্যাবসৃষ্ট ভাইরাস: আস্থা কম সিআইএ’র সিদ্ধান্তে
৪০ দিন আগে
ভূমধ্যসাগরে নৌদুর্ঘটনা: ২৩ বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর লাশ দাফন
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌদুর্ঘটনার শিকার ২৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তাদের অবয়ব দেখে বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হয়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় এমন তথ্য দিয়েছেন লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাসার।
তিনি বলেন, ২৫ জানুয়ারি রাতে লিবিয়া উপকূল থেকে একটি নৌকা ৫৬ জন যাত্রী নিয়ে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেয়। খুব সম্ভবত এদিন রাতেই নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পরে ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি উপকূলে মরদেহ ভেসে আসতে থাকে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ২৮ জানুয়ারি সাতজন, ২৯ জানুয়ারি ১১ জন, ৩০ জানুয়ারি ৩ জন ও ৩১ জানুয়ারি ২ জন—মোট ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলো আজদাদিয়া এলাকায় সমাহিত করা হয়েছে।
‘লাশগুলো পচে গিয়েছিল। এগুলো রাখার কোনো উপায় ছিল না। লাশ উদ্ধার ও দাফনের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তারা রেড ক্রিসেন্ট ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লোকজন। তারা জানিয়েছেন, অববয়ব দেখে তাদের মনে হয়েছে, লাশগুলো বাংলাদেশি নাগরিকদের। লাশগুলোর সঙ্গে কোনো ডকুমেন্ট ছিল না,’ বলেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এছাড়াও মুমুর্ষু অবস্থায় আরও দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে সম্ভবত সেনাবাহিনী বা পুলিশের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ পাইনি। বাকি যারা এখনো নিখোঁজ, তাদেরও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
৪১ দিন আগে
সুদানে হাসপাতালে হামলায় নিহত ৭০
সুদানের দারফুর অঞ্চলের অবরুদ্ধ শহর এল ফাশেরে চালু থাকা একমাত্র হাসপাতালে নৃশংস হামলায় প্রায় ৭০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি সৌদি টিচিং ম্যাটারনাল হাসপাতালে হামলার ঘটনাকে ‘আতঙ্কজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
পোস্টে টেড্রোস বলেন, হাসপাতালটি রোগীতে পূর্ণ থাকা অবস্থায় হামলাটি চালানো হয়েছে। এতে ১৯ জন আহত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আল মালহার নামে আরও একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলার কথাও জানিয়েছেন টেড্রোস।
আরও পড়ুন: সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় ৩ দিনে নিহত ৪২
স্থানীয় কর্মকর্তারা এই বর্বরোচিত হামলার জন্য সুদানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত থাকা আধাসামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করেছেন।
২০২৪ সালের মে মাস থেকে এল ফাশের অবরোধসহ সংঘাতের সময় অসংখ্য নৃশংস ঘটনার জন্য আরএসএফকে দায়ী করা হয়।
চলমান সংঘাতের কারণে শহরটির প্রায় ১০ লাখেরও বেশি বেসামরিক নাগরিকরা বাস্তুচ্যুত। তারা মাসের পর মাস সহিংসতা ও বঞ্চনা সহ্য করে চলেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া এই সংঘাতের ফলে ২৮ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে। লাখ লাখ লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া জাতিগত আফ্রিকান গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ডাব্লুএইচও এবং অন্যান্য বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলো স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
জরুরি ভিত্তিতে সুদানে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় আরও ৪৫ জন নিহত
৪৯ দিন আগে
এমপক্স শনাক্ত: সিয়েরা লিওনে জরুরি অবস্থা জারি
মাত্র চার দিনের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যক্তির শরীরে এমপক্স শনাক্ত হওয়ার পর জরুরি অবস্থা জারি করেছে আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দেশটি এই জরুরি অবস্থা জারি করে বলে এক প্রতিবেদনে বলেছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস(এপি)।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্তদের কারোরই সম্প্রতি সংক্রমিত প্রাণী বা ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার রেকর্ড নেই। প্রথম যে ব্যক্তির শরীরে এমপক্স শনাক্ত হয়, তিনি গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারির মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় পোর্ট লোকো জেলার একটি বিমানবন্দর শহর লুঙ্গিতে সম্প্রতি ভ্রমণ করেছিলেন।
এখন পর্যন্ত আক্রান্ত দুই রোগীকেই রাজধানীর ফ্রিটাউনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এমপক্স ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
এমপক্স ভাইরাসটিকে মাঙ্কিপক্সও বলা হয়। ১৯৫৮ সালে বানরের মধ্যে ‘পক্সের মতো’ রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল। ঐতিহাসিকভাবে, মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় বেশিরভাগ মানব শরীরে এসব সংক্রমণ হয়েছে। সাধারণত সংক্রামিত প্রাণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ লোকদের মধ্যে এটির সংক্রমণ ঘটে থাকে।
তবে ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো যৌন সংক্রমণের মাধ্যমে এমপক্স ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এর ফলে ৭০ টিরও বেশি দেশে প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। এর আগে আগে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের হার কঙ্গোতে। এই বছর আফ্রিকায় আনুমানিক ৪৩ হাজার মানুষের শরীরে সন্দেহভাজন ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার মৃত্যুর বেশিরভাগই ঘটেছে আফ্রিকাতে।
সিরেয়ার লিওনে ২০১৪ সালে ইবোলা প্রাদুর্ভাব হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাস। মূলত পশ্চিম আফ্রিকাকে প্রভাবিত করা এই প্রাদুর্ভাবটি। সারা বিশ্বের মোট ১১ হাজার মৃত্যুর মধ্যে সিয়েরা লিওনেই ৪ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল ভাইরাসটি। ওই মহামারিতে দেশটি তার ৭ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কর্মী হারিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে তৃতীয় ব্যক্তির শরীরে এমপক্স শনাক্ত
৬১ দিন আগে
ইথিওপিয়ায় বরযাত্রীর ট্রাক নদীতে পড়ে নিহত ৬৬
ইথিওপিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বরযাত্রীদের বহনকারী একটি ট্রাক নদীতে পড়ে অন্তত ৬৬ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দেশটির একটি হাসপাতালের পরিচালক এই তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় রবিবার(২৯ ডিসেম্বর) বিয়ের অতিথিদের ভাড়া করা পুরোনো একটি ট্রাক অতিরিক্ত যাত্রীদের নিয়ে গেলান সেতু থেকে পড়ে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসীরা বলছেন,এর আগেও এখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় সিদামা অঞ্চলের বোনা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক লেমা লাগিদে সোমবার বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ঘটনাস্থলেই ৬৪ জন এবং হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব রোগী আরও জরুরি অত্যাধুনিক চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের হাওয়াসার একটি বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রত্যন্ত গ্রামটিতে উদ্ধার অভিযান দেরিতে হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা বেশি হয়েছে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন,উত্তাল নদীতে পরে যাওয়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধার কাজে তারা কেবল লাঠি দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন।
সেরাক বোকো নামের এক গ্রামবাসী এপিকে বলেন, দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে ট্রাকে গান বাজছিল এবং স্যুট পরা লোকজন নাচছিল ও হাত নাড়ছিল।
ইথিওপিয়ার গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিয়ের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিবহনের জন্য বাসের পরিবর্তে ট্রাক ভাড়া করা সাধারণ ব্যাপার। কারণ, এতে তারা তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে এবং অনেক লোক বহন করতে পারে। ট্রাকের বেশিরভাগই পুরুষ ছিল। কারণ তাদের সাংস্কৃতিকভাবে কনেকে তার বাড়ি থেকে বরের বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফাসিল আতারা বলেন, 'সড়কটি ভালোভাবে নির্মাণ না করা এবং সতর্ক চিহ্ন না থাকায় নদীর আশপাশে নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটে। ‘
দুর্বল অবকাঠামো এবং গণপরিবহনে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বহনের কারণে ইথিওপিয়ায় অতীতেও একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত আগস্টে আমহারা অঞ্চলে একটি বাস উল্টে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়।
৭৬ দিন আগে
নাইজেরিয়ায় উৎসবে পদদলিত হয়ে নিহত বেড়ে ৩৫
নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়ো রাজ্যের রাজধানী ইবাদানে আয়োজিত শিশুদের উৎসবে পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র আদেওয়ালে ওসিফেসো সাংবাদিকদের বলেন, এ পর্যন্ত ৩৫ শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত আরও ছয়জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উৎসবের আয়োজক হিসেবে চিহ্নিত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মামলাটি ইয়াগানকুতে (ইবাদান) রাজ্য অপরাধ তদন্ত বিভাগের হোমিসাইড বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার।
বুধবার সকালে বেসরকারি আয়োজকরা ৫ হাজার শিশুকে নগদ অর্থ বিতরণের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর উৎসব শুরু হলেও পরে তা শোকে পরিণত হয়।
৮৬ দিন আগে
লিবিয়া উপকূলে ৪৯৯ অভিবাসী উদ্ধার: আইওএম
লিবিয়া উপকূল থেকে ৩৪ জন নারী ও ছয় শিশুসহ ৪৯৯ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এসব অভিবাসীদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
২৯ জন অভিবাসী নিখোঁজের কথা উল্লেখ করে আইওএম আরও জানিয়েছে, গত ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ৪৯৯ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে লিবিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৩৪৩ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে লিবিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই সংখ্যাটি গত বছরের তুলনায় চার হাজারেরও বেশি।
আইওএমর তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুটে ৬৩৫ জন নিহত এবং ৯৮২ জন অভিবাসী নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ ও নিহতদের মধ্যে লিবিয়া এবং অন্যান্য দেশ থেকে পালিয়ে আসা নাগরিকরা রয়েছেন।
২০১১ সাল থেকে অনেক অভিবাসন প্রত্যাশী ইউরোপের উপকূলে যাওয়ার জন্য লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।
৮৯ দিন আগে