দুর্ভোগ লাঘবে করা সেতুতেই ভোগান্তি বাড়ল টাঙ্গাইল সদরের বেড়াডোমাবাসীর। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই এলাকার লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি মাঝখান দিয়ে দেবে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গত সপ্তাহে সেতুটির ওপরের অংশে ঢালাই করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং সরে গিয়ে মাঝখানে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর গাফিলতিতে সেতুটি নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই দেবে গেছে। এর ফলে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়ল বলে জানিয়েছেন তারা।
টাঙ্গাইল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়াডোমা এলাকার লৌহজং নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করছে। আট মিটার প্রশস্ত ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ঈদের সকালে বজ্রপাতে টাঙ্গাইলে ৩ কিশোরের মৃত্যু
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ব্রিকস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড ও দ্য নির্মিত নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান বলেন, এই সেতুটির নির্মাণ কাজ অন্যজন পেয়েছিলেন। স্থানীয় এমপি তার কাছ থেকে প্রভাব খাটিয়ে কাজটি হাতিয়ে নেয়। পরে তার কর্মী আমিরুলসহ তার অনুসারীদের কাজটি দিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা কখনো সেতু নির্মাণ করা দেখেই নাই তারা সেতু নির্মাণ করতে এসেছে। এটা দুঃখজনক। নদীতে তেমন পানি ও স্রোত না থাকলেও সেতুটি দেবে গেছে। সঠিক পদ্ধতিতে মান সম্মত সেতু নির্মাণ করার দাবি জানালেও তারা সব সময় এমপির দোহাই ও ক্ষমতা দেখিয়েছে।
সরকারের অর্থের অপচয় করার জন্য ঠিকাদারদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে পুলিশের গাড়িতে হামলা, বিএনপির ৪৯ নেতাকর্মী জেলহাজতে
৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে কাজটি শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কোনো কথাই শুনে না। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কয়েক বছরের জন্য দুর্ভোগ বেড়ে গেল।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম বলেন, তারা দু’জনই ঢাকা থেকে কাজ করছেন। তিনি তাদের পক্ষে কথা বললেও তিনি আসলে ওই প্রতিষ্ঠানের কেউ নন; এটা প্রমাণ করতেও আগ্রহী তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে কোনো কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।