সেতু
সেতু নির্মাণে স্থবিরতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন ইউনিয়নের মানুষের ভোগান্তি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নরেন্দ্রপুরের কাঁচরার খালের ওপর নির্মাণাধীন একটি সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন শাহজাহানপুর, আলাতুলী ও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। ফলে প্রতিদিন প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
জানা গেছে, সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের নরেন্দ্রপুর কাঁচরার খালের ওপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার টাকা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২৩ সালে কাজ শুরু করে। চলতি বছরের ৬ মার্চ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি। পরে সময় বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু মূল কাঠামো দাঁড়িয়ে থাকলেও সংযোগ সড়কসহ বাকি কাজ আটকে আছে।
৪ দিন আগে
দুই দফতরের দ্বন্দ্বে গোমতী সেতু প্রকল্পে অচলাবস্থা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
কুমিল্লার মুরাদনগরে গোমতী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু নির্মাণ প্রকল্প এখন অনিশ্চয়তার মুখে। সেতুটি কতটা উঁচু হবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে দুটি সরকারি সংস্থা। যার ফলে মুরাদনগর–দাউদকান্দি সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পুরোপুরি থেমে গেছে, দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো এলাকাবাসী।
জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আপত্তির কারণেই স্থগিত হয়ে আছে প্রায় ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার ওই বরাদ্দ। পাউবো দাবি করছে, নতুন সেতুটি বর্তমান বেইলি সেতুর চেয়ে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে নির্মাণ করতে হবে, যাতে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়।
অন্যদিকে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, গোমতীর অন্যান্য স্থানে স্থাপিত সেতুগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু করলেই যথেষ্ট হবে।
এই মতবিরোধের জেরে সেতুর নকশা ও ডিজাইন চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে দরপত্র আহ্বানও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই সংস্থার টানাপোড়েনে গুরুত্বপূর্ণ এই অবকাঠামো প্রকল্পটি ঝুলে আছে।
বর্তমানে গোমতী নদীর ওপর রয়েছে ১৯৮৮ সালে নির্মিত একটি বেইলি সেতু, যা এখন নড়বড়ে ও জীর্ণ অবস্থায়। প্রতিদিন শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হচ্ছে। ভারী যান উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে, ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, একদিকে যানজট, অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল—এই দুইয়ের ফাঁদে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজারো মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে একই বেইলি সেতু দিয়ে চলতে হচ্ছে। সরকার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে, কিন্তু দুই অফিসের ঝগড়ায় কাজ শুরুই হচ্ছে না। আমাদের স্বপ্ন এখন হতাশা।’
২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর ৩৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর আওতায় ৩৫ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণ, ৮টি পুরনো বেইলি ব্রিজের বদলে ৫টি নতুন আরসিসি গার্ডার সেতু এবং ৩টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল।
প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়, যার মধ্যে প্রথম দুটি প্যাকেজে কাজ চলমান থাকলেও তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পাউবোর অনুমোদন না মেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান বলেন, গোমতী নদীর ওপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ সময়ের দাবি। এটি না হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে না। আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
সওজ বিভাগের কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, পাউবো যে উচ্চতা নির্ধারণ করেছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। সে পরিমাণ উচ্চতায় ডিজাইন করা সম্ভব নয়। ফলে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, পাউবো কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, আমি এখানে এক বছর ধরে আছি, বিষয়টি আমার জানা নেই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরগুলোর গাফিলতি, টালবাহানা ও সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন আটকে যাচ্ছে। তাদের দাবি, দ্রুত সমস্যার সমাধান করে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু না হলে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাবে, যা মুরাদনগরবাসীর জন্য বড় ক্ষতি হবে।
৪২ দিন আগে
কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই ভেঙে ফেলতে হলো সেতু
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কাজ না করায় পিরোজপুরের নেছারাবাদে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেটিকে ভেঙে ফেলতে হয়েছে।
নেছারাবাদ উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়নের মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে হঠাৎ করেই ধসে পড়ে। এরপর গতকাল (বুধবার) সেটিকে ভেঙে ফেলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
জানা যায়, উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি খ্রিষ্টানপাড়া থেকে মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর একটি প্যাকেজে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। এই কাজের চূক্তিমূল্য ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর সেতু দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজে কাজ না করে একজন সাব-কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিল। কাজের নিম্নমান এবং সময়সূচি না মেনে কাজ করার কারণে স্থানীয়রা কাজে বাধা দেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের ওসমানীনগরে সেতুর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদার উধাও
পরবর্তীতে আরেক সাব-কন্ট্রাক্টর গত বছরের শেষ দিকে গার্ডার ছাড়াই সেতুটির ছাদ ঢালাই দেয়। তবে এর কিছুদিন পরে ঢালাই দেওয়া অংশে ফাটল দেখা দেয়। তখন স্থানীয়দের আপত্তির মুখে এলজিইডি তদন্ত করে সেতুটির ঢালাই দেওয়া অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী গেল সোমবার সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশের অপসারণ শুরু করে।
ব্রিজে ফাটল ধরার বিষয় জানতে চাইলে সাব-কন্ট্রাক্টর পিরোজপুরের খোকন মিয়া জানান, ঢালাই দিয়ে তারা চলে যাওয়ার পরে কে বা কারা সেন্টারিং খুলে ফেলায় ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ বিষয় উপজেলা প্রকৌশলী মো. রায়সুল ইসলাম জানান, পুরো স্লাব (ছাদ) ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ করতে হবে। তবে মূল ঠিকাদারকে পাওয়া না যাওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
১৩৩ দিন আগে
কুমিল্লায় সেতুর নিচে খালে পড়ে ছিল হাত-পা বাঁধা নারীর লাশ
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুরে সেতুর নিচের খাল থেকে অজ্ঞাত এক নারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
লাশটির হাত-পা ও চোখ-মুখ রশিতে বাঁধা ছিল। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ভুট্টাখেত থেকে মাথাবিহীন নারীর লাশ উদ্ধার
দেবিদ্বার থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘ইউসুফপুর খালে হাত-পা বাঁধা এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।’
তিনি বলেন, ‘লাশটির নাম-পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।’
২৭৩ দিন আগে
নড়াইলের শেখ রাসেল সেতুর নামফলক পরিবর্তন
নড়াইল শহরের পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় চিত্রা নদীর ওপর নির্মিত শেখ রাসেল সেতুর নামফলকের মূল অংশ ভেঙে সেতুটির নতুন পুনরায় নামকরণ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সেতুর পূর্ব পাশে থাকা নামফলক ভেঙে তারা সেতুটির নাম দিয়েছেন ‘শহিদ সালাউদ্দিন সেতু’।
নাম পরিবর্তন করে গতকাল বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে সেতুর দুই পাশে বড় করে দুটি ব্যানারও টাঙানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নড়াইল জেলার সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহর নেতৃত্বে এ সময় যুগ্ম সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান, মুখ্য সংগঠক কাজী ইয়াজুর রহমানসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বলেন, দেশের কোনো স্থাপনায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পরিবারসহ কারও নাম রাখা হবে না। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নড়াইলের শহিদ সালাউদ্দিন সুমনের নামে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘শহিদ সালাউদ্দিন সেতু’ নাম দিয়েছি।
আরও পড়ুন: উলিপুরে ৫ বছরেও পুনঃনির্মাণ হয়নি দুই সেতু, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহ বলেন, ‘নড়াইলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু, যার নাম ছিল শেখ রাসেল সেতু। আজ সেটির নাম পরিবর্তন করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ সালাউদ্দিন ভাইয়ের নামে নামকরণ করে দিলাম। এরপর খাতা-কলমে সেতুটির নাম পরিবর্তনের জন্য আমরা আবেদন করব।’
তিনি বলেন, ‘নড়াইলসহ সারা দেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের নামে কোনো স্থাপনা থাকবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সব সময় রাজপথে থাকবে।’
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেলের নামে সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৯৩ দিন আগে
উলিপুরে ৫ বছরেও পুনঃনির্মাণ হয়নি দুই সেতু, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বন্যায় ভেঙে যাওয়া দু্টি সেতু ৫ বছরেও পুনঃনির্মাণ করা হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ৩টি ইউনিয়নের ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। সেতুর অভাবে এখন পাকা সড়কটি দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ওই এলাকার শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীরা।
ফলে সড়ক থাকলেও সেতুর অভাবে ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত পূর্ব পাড়ের মানুষ দুই উপজেলা থেকে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তবকপুর, ধামশ্রেণী ও চিলমারী উপজেলার থানাহাট, বানীগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত পূর্ব অঞ্চলের মানুষের দুই উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধার জন্য কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের চুনিয়ার পাড় হতে উলিপুর আজমের মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়ক ও দুটি সেতু ২০১৫ সালে ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালের বন্যায় তবকপুর ইউনিয়নের আমতলী সেতু ও চুনিয়ার পাড় সেতুটি দেবে যায় এবং সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেই তখন থেকে সেতুর অভাবে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতার পর থেকে নেই সেতু, ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার
এলাকাবাসী জানান, সড়কটি পাকা করায় দুই উপজেলার সঙ্গে এ এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু বন্যায় সেতু দুটি দেবে যাওয়ায় আবারও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এলাকাটি। চুনিয়ার পাড়ের দেবে যাওয়া সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো রকমে চলাচল করা গেলেও আমতলীর দেবে যাওয়া সেতু দিয়ে কোন কিছুরই চলাচল সম্ভব নয়। গ্রামবাসী বাধ্য হয়ে চলাচলের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে দেবে যাওয়া সেতুর পাশ দিয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে কোনো রকমে মানুষ ও বাইসাইকেল পারাপারের ব্যবস্থা করেছিল। কিছুদিন চলাচলের পর সে সাঁকোটিও ভেঙেচুরে শেষ হয়ে যায়। শুকনো মৌসুমে মানুষজন হেঁটে জমি দিয়ে চলাচল করলেও পানি হলে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা বা চার চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধ বয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য উপজেলার বাজারে নিয়ে যেতে পাচ্ছে না।
বিষ্ণু বল্লভ গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, সড়কটি হওয়ার পর রিকশা, অটোরিকশা জেএসএ, সিএনজিসহ ছোট বড় যান চলাচল করত। ফলে আমাদের খুব সুবিধা হয়েছিল। এখন সব বন্ধ, তাই পায়ে হেঁটে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়।
ট্রাক ড্রাইভার বকুল মিয়া জানান, ডিউটি শেষ করে ট্রাক মালিকের ঘরে রেখে রাত বিরাতে অটোতে চড়ে বাড়ি আসতাম। এখন হেঁটে বাড়িতে আসতে হয়।
উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম জানান, আমাদের এলাকায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা কলেজ নেই। সড়কটি নির্মাণের পর আমরা এই এলাকার মেয়েরা স্কুল ও কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেতু দেবে যাওয়ায় আমাদের কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ১৪ বছরেও হয়নি সেতু, ভেলায় চড়েই স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
অটোচালক আব্দুল খালেক জানান, সড়কটি পাকা হলে অটো চালিয়ে সংসার চলাতাম। এখন সে রোজগারে ভাটা পড়েছে।
আমতলী বাজারের ব্যবসায়ী আকবর আলী জানান, সড়ক নির্মাণের পর গ্রামীণ বাজারটি জমজমাট হয়েছিল। কিন্তু সেতু দেবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বাজারে এখন আর আগের মতো লোকজন আসে না, ব্যবসায় মন্দা চলছে।
৩০৮ দিন আগে
কালুরঘাট সেতুতে লাইটারেজ জাহাজের ধাক্কা
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট সেতুতে ধাক্কা দিয়ে সেতুর সঙ্গেই আটকে রয়েছে এমভি সমুদা-১ নামে একটি লাইটারেজ জাহাজ।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে জাহাজটি কালুরঘাট সেতুর মাঝখানে ধাক্কা দেয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভৈরব নদে কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম প্রান্তের এ কে খান ডক ইয়ার্ড থেকে প্রবল স্রোতের প্রবাহে জাহাজ ভেসে এসে সেতুতে ধাক্কা দেয় এবং আটকে যায়।
পরে খবর পেয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত ও সেতুর সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, আমরা বিষয়টি পরিদর্শন করে দেখছি। এরপর কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলা যাবে।
জাহাজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি
চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পড়ে ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু
৫৮৩ দিন আগে
দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে বাস খাদে পড়ে নিহত ৪৫, বেঁচে গেল ৮ বছরের শিশু
দক্ষিণ আফ্রিকায় বৃহস্পতিবার ইস্টার উৎসবে যাওয়ার পথে পুণ্যার্থীদের বহনকারী একটি বাস পাহাড়ি গিরিপথের একটি সেতু থেকে খাদে পড়ে এবং এতে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় লিম্পোপো প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় বেঁচে যায় শুধু ৮ বছরের একটি শিশু। বর্তমানে সে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশুটি গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানান তারা।
লিম্পোপো প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, বাসটি মামাতলাকালা সেতু থেকে ছিটকে ৫০ মিটার খাদে পড়ে যায় এবং এতে আগুন ধরে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩
প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, তল্লাশি অভিযান চলছে। তবে অনেক মৃতদেহ এতটাই পুড়ে গেছে যে তাদের চেনা যাচ্ছে না এবং এখনও অনেক মৃতদেহ গাড়ির ভেতরে আটকা রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ধারণা বাসটি পার্শ্ববর্তী দেশ বতসোয়ানা থেকে ইস্টারের জনপ্রিয় তীর্থযাত্রার আয়োজক মোরিয়া শহরে যাচ্ছিল। তারা বলছে যে মনে হচ্ছে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল এবং নিহতদের মধ্যে একজন তিনি।
দেশটির পরিবহন মন্ত্রী সিন্ডিসিওয়ে চিকুঙ্গা সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে একটি প্রচারণার জন্য লিম্পোপো প্রদেশে ছিলেন এবং দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য তার এই কর্মসূচি পরিবর্তন করেছেন বলে দেশটির পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে এবং হতাহতদের পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় নৌকাডুবি: সাগর থেকে ৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার
ব্রাজিলে ভারী বর্ষণে ৭ জনের মৃত্যু, ১৬ ঘণ্টা পর কাদা থেকে ৪ বছরের শিশু জীবিত উদ্ধার
৬১৫ দিন আগে
নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতার পর থেকে নেই সেতু, ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ইউনিয়ন ভোগডাবুড়ী। এখানে বুড়ি তিস্তা নদীর বুদুর ঘাটের অবস্থান। এই ঘাটে স্থায়ী কোনো সেতু নেই। ফলে ৬ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তারা।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫২ বছর ধরে তারা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশুরা সাঁকো দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় ঘটে দুর্ঘটনা। এজন্য ভয়ে থাকেন অভিভাবকরা।
জানা গেছে, ভোগডাবুরী ও বড়শশী ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়ি তিস্তা নদী। নদীর এপাড়ে শব্দিগঞ্জ, গোসাইগঞ্জ ও আনন্দবাজার এবং ওপাড়ে সর্দ্দারপাড়, জালিয়াপাড়া ও চিলাপাড়া। গ্রামের মানুষদের অন্য কোনো উপায় না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন।
আরও পড়ুন: ১৪ বছরেও হয়নি সেতু, ভেলায় চড়েই স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
নদীর এপাড়ে রয়েছে শব্দিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোসাইগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং কারেঙ্গাতলী উচ্চ বিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করে বুদুরঘাটের বাঁশের সাঁকো দিয়ে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকোতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
ইউনিয়ন থেকে সংসদ নির্বাচনের সময় দেওয়া হয় আশ্বাস। বুদুরঘাটে সেতু নির্মাণ করা হবে- সেই বুকভরা আশা নিয়ে দুই পাড়ের মানুষ আজও দিন গুএনছেন।
শব্দিগঞ্জ গ্রামের হবিবর, অমিনুল ও তাইজদ্দনি বলেন, ‘নদীর ওপার থেকে ছেলে-মেয়েরা নড়বড়ে সেতু দিয়ে স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া করে। প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।’
স্থানীয় সাংবাদিক কাজল বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকাবাসী দাবি করে আসছে একটি সেতু নির্মাণের। ৫২ বছর পার হলেও কেউ শোনেননি তাদের কথা।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ
বড়শশী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মঞ্জু ইসলাম বলেন, ‘নদীর দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি একটি সেতুর। ট্রেন-বাস ধরতে সেতু না থাকায় এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম কালুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার মন্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ওই আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার জানান, ‘উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে তালিকা দেওয়া হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজটি করা হবে। আর নতুন চেয়ারম্যান এই বিষয়ে তালিকা করে পাঠালে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেও জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: দীর্ঘ ৪৬ দিন পর ভেসে উঠল রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
৬৫২ দিন আগে
১৪ বছরেও হয়নি সেতু, ভেলায় চড়েই স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ি গ্রামে একটি সেতুর অভাবে ভেলায় চড়েই গত ১৪ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা পার হচ্ছে খাল।
এছাড়া মঠবাড়ি গ্রামটিকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২৫০ মিটার চওড়া একটি খাল। ২০০৯ সালে গ্রামের পার্শ্ববর্তী শাকবাড়িয়া নদীর বাঁধ ভেঙে জোয়ার-ভাটার প্রবল স্রোতে ওই খালের সৃষ্টি হয়।
এক বছর পর বাঁধ মেরামত হলেও খালটি ভরাট করা হয়নি। ফলে গত ১৪ বছর ধরে গ্রামের মানুষ ভেলায় চড়ে ও নৌকার মাধ্যমে খাল পারাপার হচ্ছেন। এতে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা।
সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার প্রতাপ স্মারণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন বলেন, কত মানুষ এসে দেখে গেছে প্রতিশ্রুতি দিয়েই গেছে, কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও গবেষণায় ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্রহ প্রকাশ
তিনি আরও বলেন, বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যেকোনো একটা উপায় হলে বই খাতা নিয়ে কোনো আতঙ্ক ছাড়াই স্কুলে আসতে পারতাম।
গ্রামবাসী জানান, খালটির পশ্চিম পাড়ে প্রতাপ স্মারণী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মঠবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া একটি কমিউনিটি ক্লিনিকও রয়েছে সেখানে। প্রথমদিকে খালের অন্য পাড় থেকে বিদ্যালয়গামী ছেলেমেয়েরা ডিঙি নৌকায় পারাপার হতো। কিন্তু নৌকা সব সময় পাওয়া যায় না। জেলেরা নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে চলে গেলে কলার ভেলায় পার হতে হয় তখন। এতে ঝুঁকি ছিল বেশি। পরে প্লাস্টিকের ড্রামের উপর কাঠের তক্তা দিয়ে স্থায়ীভাবে ভেলা বানানো হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্লাস্টিকের ড্রাম চারকোনা করে বেঁধে উপরে তক্তার পাটাতন বিছিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ এই ভেলা। খালের দুই পাশে একটি লম্বা রশি আড়াআড়িভাবে খুঁটির সঙ্গে টানিয়ে রাখা হয়েছে। লোকজন ভেলায় চড়ে নিজেরাই রশি টেনে পারাপার হচ্ছেন। সেখানকার বাসিন্দাদের ভেলায় খাল পেরিয়ে উপজেলা সদরে যেতে হয়।
প্রায় পাঁচ হাজার জনসংখ্যার বড় এ গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শাকবাড়িয়া নদী পেরিয়ে সুন্দরবন। রয়েছে একটি বাজার ও ফরেস্ট স্টেশন। খালের পূর্ব পাড়ে সুপেয় পানির সংকট থাকায় বাসিন্দারা ভেলায় খাল পেরিয়ে পশ্চিম পাড় থেকে পানি নিয়ে আসেন।
খালের পশ্চিম পাড়ের মঠবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বছরের শুরুতে ছেলে মেয়েরা নতুন বই নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে এখানে।
তিনি আরও জানান, ভেলায় পার হওয়ার সময় সেটি উল্টে শিক্ষার্থীরা খালে পড়ে যায়। আশপাশের লোকজন এসে ছোট ছোট শিশুদের উদ্ধার করলেও তাদের নতুন বইগুলো ভিজে গেছে।
তবে এ ধরনের দুর্ঘটনা বর্ষাকালে বেশি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, একটি সেতু নির্মাণ না হলে এখানকার দুর্ভোগ কমবে না।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের ডিসি পার্ক দিঘিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে হলো সাম্পান বাইচ
প্রতাপ স্মারণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক রনজিত কুমার সরকার বলেন, দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন খাল পার হয়ে যাতায়াত করে।
তিনি আরও বলেন, অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের খাল পারাপার নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। অন্তত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে মঠবাড়ি গ্রামের খালে একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়া জরুরি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার, নজরুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান, সুভাষ মণ্ডলসহ কয়েকজন জানান, প্রতিদিন ভেলায় খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে যেতে ভয় লাগে তাদের। ভেলা থেকে পড়ে গেলে বই, খাতা ভিজে যায়। অনেক সময় ভেলায় লোকজন বেশি উঠলে পার হতে পারে না তারা। এজন্য অনেক সময় ক্লাসে উপস্থিত হতে দেরি হয়ে যায়।
গ্রামের বাসিন্দা কোহিনুর আলম বলেন, ‘১৪ বছর ধরে শুনতেছি, এ জায়গায় ব্রিজ হবে। আবার শুনি খালের ওপর আড়াআড়ি বাধ হবে। কিন্তু কিছুইতো হয় না। উপায়ন্তর না দেখে স্কুলের বাচ্চাগের পারাপারের জন্যি(জন্যে) ড্রামের ভেলা বানাই দিছি। তাতেই এখন গ্রামের সব মানুষ পার হই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সাইদ বলেন, সাড়ে ১৪ বছর আগে তৈরি হওয়া খালটির পাড়ে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পারাপারে ভোগান্তি লাঘবে খালের উপর একটি সেতু হলে এই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ নিরাপদ যোগাযোগের সুযোগ পাবেন।
মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট দিয়ে এত বড় খালে সেতু বানানো সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনা করে দেখব।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এটা দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি।
আপাতত ভাসমান সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে প্রবাসীদের প্রতি হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দীকীর আহ্বান
৬৭০ দিন আগে