অন্যান্য
ঘরে রান্নার কাজে নিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের উপায়
নানা ধরনের দুর্ঘটনার পরেও এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডারগুলোই বর্তমানে গ্যাস যোগানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। সঠিক ব্যবহারের অভাবে জীবনের জন্য এই প্রয়োজনীয় বস্তুটিই ভয়াবহ মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। ফলশ্রুতিতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার মানেই যেন ঘরের ভেতর বিপজ্জনক বিস্ফোরক নিয়ে দিন যাপন। কিন্তু কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই বাধ্য-বাধকতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হতে পারে। চলুন, দুর্ঘটনা এড়িয়ে বাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারের নিরাপত্তা মূলক কিছু পদক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক।
বাড়িতে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে ১০টি প্রয়োজনীয় সতর্কতা
.
অনুমোদিত বিক্রেতা
এলপিজি সিলিন্ডারের সুষ্ঠ ব্যবহারের প্রথম শর্ত হচ্ছে সেটি কেনার জন্য সঠিক বিক্রেতাকে বাছাই করা। কেননা শত যত্ন করলেও ত্রুটিপূর্ণ পণ্যে ভালো সেবা পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে অনেক হয়রানিরও শিকার হতে হয়, যা চূড়ান্ত অবস্থায় বিপদের কারণও হতে পারে।
তাই সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে জাতীয়ভাবে স্বীকৃত একটি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করা। তারপর তাদের সূত্র ধরে খুঁজে বের করতে হবে যে, নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের অনুমোদিত বিক্রেতা আছে কি না। এ ক্ষেত্রে তাদের বিক্রয় পরবর্তী সেবা এবং গ্যাস রিফিল সেবা সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। একজন অনুমোদিত বিক্রেতা বিক্রির পাশাপাশি দক্ষ কর্মীর মাধ্যমে সিলিন্ডার স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণের সেবা দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
উপরোক্ত নিরীক্ষণ সফলভাবে সম্পন্নের পর সিলিন্ডার কেনার মুহূর্তে প্রধান দুটি বিষয় দেখে নিতে হবে।
- সিলিন্ডারে সেই প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সিল রয়েছে কি না
- সিলিন্ডারটির সেফটি ক্যাপ সুরক্ষিত ভাবে লাগানো রয়েছে কি না
মেয়াদ থাকা গ্যাস সিলিন্ডার
একজন অনুমোদিত সিলিন্ডার সরবরাহকারী কখনোই মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করবেন না। এরপরেও কেনার সময় ক্রেতাকে এই বিষয়টি খুব গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখতে হবে। কেননা এর উপর নির্ভর করছে এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারকারির নিরাপত্তা।
গ্যাস সিলিন্ডার সাধারণত ন্যূনতম প্রতি ১০ বছরে প্রতিস্থাপন বা পুনরায় পরীক্ষা করা উচিৎ। অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখটি সিলিন্ডারের বডিতেই লিপিবদ্ধ থাকে। প্রস্তুতের তারিখ থেকে ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলে সিলিন্ডারের গুণগত মান হারাতে থাকে। ফলে সেটি পুনরায় গ্যাস রিফিলের জন্য উপযুক্ত থাকে না।
আরও পড়ুন: বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
সিলিন্ডারকে সর্বদা উপরের দিকে মুখ করে রাখা
স্পষ্ট করে ভিন্ন কোনো নির্দেশনা না থাকলে এলপিজি সিলিন্ডার উপরের দিকে মুখ করে সোজা অবস্থায় রাখা উচিৎ। উল্টো করে কিংবা যে কোনো একদিকে কাত করে রাখা যাবে না। মোট কথা এমনভাবে রাখতে হবে যেন সেটি স্থিরভাবে এক জায়গায় থাকতে পারে। এ সময় আশেপাশের কোনো কিছুর সঙ্গে সিলিন্ডারের যেন কোনো ধাক্কা না লাগে। খালি বা গ্যাস ভরা সিলিন্ডার, উভয় ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। এ অবস্থায় রাখলে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস লিক করে আগুন লাগার ঝুঁকি থাকে না।
সিলিন্ডার স্থাপনের জায়গায় সঠিক বাতাস চলাচল
বদ্ধ জায়গায় জমা হওয়া এলপিজি ধোঁয়া বিপদের লক্ষণ। তাই সিলিন্ডারের সুরক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল। এর জন্য সিলিন্ডারটি রাখার জন্য যতটা সম্ভব উন্মুক্ত পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ির যে জায়গাটি বেশি খোলামেলা সেখানে মাটির উপর সমতোলে রাখা যেতে পারে। তবে সরাসরি সূর্যালোক পড়ে এমন জায়গা থেকে দূরে রাখাই ভালো।
এতে করে বিপজ্জনক বিস্ফোরণের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসে। আর কোনো কারণে বিস্ফোরণ হলেও তা থেকে ক্ষতি অনেকটা কম হয়।
আরও পড়ুন: কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ব্যবহার কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, বিজ্ঞান কী বলে?
সিলিন্ডার স্থাপনের জায়গাটির সুরক্ষা
জঞ্জালপূর্ণ, আবদ্ধ এবং স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় সিলিন্ডার রাখা ঠিক নয়। বরং যেখানে বিশৃঙ্খলা কম এমন খোলামেলা, বিচ্ছিন্ন এবং পরিষ্কার শুষ্ক জায়গা নির্বাচন করা জরুরি। চুলার খুব কাছাকাছি তো রাখা যাই না, বরং লম্বা পাইপের সাহায্যে চুলা থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্বে সিলিন্ডারটিকে স্থাপন করতে হয়। যত বেশি দূরে রাখা যায় ততই নিরাপদ।
তবে খেয়াল রাখতে হবে- সিলিন্ডার যেন অবশ্যই শক্তভাবে মাটির উপর স্থাপিত থাকে। দুর্ঘটনাজনিত কোনো আঘাতে তা যেন কাঁত হয়ে বা সম্পূর্ণ পড়ে না যায়। বিশেষ করে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার জন্য এই মজবুত স্থাপনাটি সবচেয়ে বেশি দরকারি। অতর্কিতে রেগুলেটরে টিপ পড়ে যাওয়া বা কাঁত হয়ে পড়ে যাওয়া রোধ করতে টেকসই সিলিন্ডার স্ট্যান্ড বা শক্ত খাঁচা ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোনো ধরনের দাহ্য বস্তু সিলিন্ডারের সংস্পর্শে না আনা
কাগজ, অ্যারোসল, পেট্রোল, পর্দা এবং রান্নার তেলের মতো দাহ্য বস্তু সর্বদা এলপিজি সিলিন্ডার থেকে দূরে রাখা উচিৎ। ছোট্ট আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে এমন সবকিছুই বর্জনীয়; এমনকি ধূমপানের জন্য ম্যাচের কাঠি বা দেয়াশলাইও।
এছাড়া উচ্চ ভোল্টেজের ইলেক্ট্রনিক ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সিলিন্ডারের আশেপাশে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
রান্নার সময় করণীয়
রান্না শুরু করার আধ ঘণ্টা আগে থেকেই রান্নাঘরের দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। এতে করে তাজা বাতাস চলাচল করতে পারবে। রান্নাঘর যথেষ্ট প্রশস্ত না হলে সিলিন্ডার রান্নাঘরে রাখা উচিৎ নয়। অবশ্য বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রায় প্রতিটি রান্নাঘর অত্যন্ত ছোট। নানা ধরনের তৈজসপত্রে ঠাসা ছোট জায়গাটি কোনো ভাবেই গ্যাসের সিলিন্ডারের মতো বিপজ্জনক বস্তুর জন্য উপযুক্ত থাকে না।
রান্না শেষে চুলার চাবি বন্ধ করতে কোনো মতেই ভুলে যাওয়া চলবে না।
নিয়মিত পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ
এলপিজি সিলিন্ডারের সংযোগগুলো ক্ষয়ক্ষতি ও লিক জনিত যে কোনো লক্ষণের জন্য আগে থেকেই পরীক্ষা করে নেওয়া উচিৎ। আর একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে পরিদর্শন এই পরীক্ষার কাজে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
এর বাইরেও অনেক সময় কোনো ফাটল চোখে পড়তে পারে বা গ্যাস লিকের মতো আশঙ্কাজনক কোনো শব্দ কানে আসতে পারে। এ সময় অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে সিলিন্ডার সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা আবশ্যক।
এছাড়া শুধু সিলিন্ডারই নয়, এর সঙ্গে ব্যবহৃত বিভিন্ন খুটিনাটি পার্টসগুলোর প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখা আবশ্যক। এগুলোর মধ্যে আছে সিলিন্ডার রেগুলেটর, সংযোগ পাইপ, ভাল্ভ ক্যাপসহ নানাবিধ ছোট ছোট যন্ত্রাংশ। এগুলোতে ত্রুটি থাকা সামগ্রিক ভাবে পুরো সিলিন্ডারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে ফলপ্রসূ উপায় হচ্ছে সেই অনুমোদিত ও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান বাছাই করা। এই পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণে তারা দক্ষ কর্মী দিয়ে সার্বিক নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
সিলিন্ডার পরিবর্তনের সময় চুলা বন্ধ রাখা
গ্যাস শেষ হয়ে গেলে রিফিল করার সময় ডিস্ট্রিবিউটরের কর্মীরাই এই সাবধানতাটি অবলম্বন করবেন। এছাড়া ব্যবহারকারিদেরকেও তারা এ সময় চুলা বন্ধ রাখার কথা বলেন।
এছাড়া গ্যাস শেষ হয়ে গেলে চুলাতে এমনিতেই গ্যাসের কোনো শব্দ থাকে না। এরপরেও চুলা বন্ধ রাখাটাই উত্তম। সিলিন্ডার রিফিল হয়ে যাওয়ার পর যখন গ্যাস অপারেটর যাচাইয়ের জন্য চুলা জ্বালাতে বলবেন একমাত্র তখনি চুলা জ্বালানো যেতে পারে।
ঘরে গ্যাসের গন্ধ পেলে সঙ্গে সঙ্গে সিলিন্ডার সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো
দীর্ঘ ভ্রমণে যাওয়ার কারণে বাড়ি অনেক দিন বদ্ধ অবস্থায় থাকতে পারে। এ সময় বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশের পর সবার আগে দরজা জানালা খুলে দিতে হবে। ঘরের ভেতরে গ্যাসের কোনো গন্ধ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরকে জানাতে হবে। গ্যাস টেকনিশিয়ান আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ম্যাচের কাঠি জ্বালানো, ইলেকট্রিক সুইচ অন করা, কিংবা সিলিন্ডারের রেগুলেটরে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
শেষাংশ
গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে এই সাবধানতাগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত বিস্ফোরণ থেকে বাড়িকে সুরক্ষিত রাখার উপযুক্ত উপায়। মূলত কোত্থেকে বা কাদের কাছ থেকে কেনা হচ্ছে সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের অর্ধেক কাজই হয়ে যায়। কেননা অনুমোদিত ও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান সর্বাঙ্গীন ভাবে তাদের পণ্যের মান নিশ্চিতকরণের দিকে খেয়ালা রাখে। ফলে সিলিন্ডারের মেয়াদ, গ্যাস লিক, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, এবং গ্যাস রিফিল নিয়ে দুশ্চিন্তার অবকাশ থাকে না।
এর বাইরে ক্রেতাকে নিশ্চিত করতে হবে সিলিন্ডার স্থাপনের স্থানে বাতাস চলাচলের পরিবেশ এবং তার আশেপাশে দাহ্য বস্তু না রাখার বিষয়টি। সর্বপরি, এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডার জনিত যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য চুলার কাজ ছাড়াও প্রতিনিয়ত গ্যাস লিকের ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডিতে বুফে খেতে যেসব রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন
স্বল্প বাজেটে ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার: অনুপম নিবেদনে প্রিয়জনের মুগ্ধতা
ভালো লাগার বিমূর্ত অভিজ্ঞতাগুলোর আকর্ষণ গুরুতর আর্থিক সংকটেও যেন উপেক্ষিত হওয়ার নয়। বিশেষ করে প্রিয়জনের হাসিমুখের কাছে আর সবকিছু যেন গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে!
নিয়ত জীবিকার পেছনে ছুটতে গিয়ে হতাশাগ্রস্ত মনে প্রায় ভর করে বিতৃষ্ণা। সেখানে একটু ভিন্নভাবে কাটানো দিনগুলো শুধু প্রিয় কতক স্মৃতির জন্ম দেয় না। বরং বারবার মনে করিয়ে দেয় জীবনের প্রতিটি দিন কতটা মূল্যবান। এর মধ্যে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কাটানো আগামী দিনগুলো কতটা ভালবাসাপূর্ণ হতে পারে তার একটা ছোট্ট মহড়ার নাম ভ্যালেন্টাইন’স ডে।
বস্তুগত দিক থেকে উপহারটি ছোট-বড় যেমনি হোক না কেন, তার পেছনে সময় ও শ্রম দেওয়ার স্বতঃস্ফূর্ততা গড়ে দেয় সম্পর্কের মাপকাঠি। সেই সূত্রে চলুন, সাধ্যের মধ্যেই কিছু ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার দেখে নেওয়া যাক।
প্রিয়জনের জন্য কম খরচে ১০টি ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার
ঘর সাজানোর গাছ
শুধু শোভা বাড়াতেই নয়, একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্যও অনেকে ঘর সবুজায়নের ব্যবস্থা করেন। অনেকেই তাদের কাজের টেবিল ও তার আশেপাশে জানালাকে সাজিয়ে তুলতে পছন্দ করেন ছোট ছোট গাছের টব দিয়ে। বিশেষ করে ঘৃতকুমারি বা অ্যালোভেরা, স্নেক পাম, মাদার্স-ইন-লস টাঙ, রাবার গাছের মতো ইন্ডোর প্ল্যান্টগুলো মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে। শুধু চারার দিক থেকে এগুলোর দাম খুব বেশি নয়। মূল্যের তারতাম্যটা মূলত বিভিন্ন ধরনের টবের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে বেশ সাশ্রয়ী হয় প্লাস্টিকের টবগুলো। গাছপ্রেমীদের জন্য অনায়াসেই এটি একটি সেরা উপহার।
আরও পড়ুন: বিয়ের শাড়ি, লেহেঙ্গা ঢাকার যেখানে পাবেন: বধূ সাজের সেরা গন্তব্য
চকলেট বা ক্যান্ডি
বিশেষ দিনগুলো উদযাপনের ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই প্রিয় খাবারের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে চকলেট। বিধায় বাজারগুলোতেও নানা উৎসবে বিভিন্ন রঙের আকর্ষণীয় মোড়কে পরিবেশন করা হয় চকলেট ও ক্যান্ডিকে। মোড়ক বা চকলেট বক্স নির্বাচন করা যায় প্রিয়জনের প্রিয় রঙের ভিত্তিতে।
শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে করণীয়
১১ হাজার ভোল্টের ট্রান্সমিশন কেবলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর। ঘটনাটি কুমিল্লার সংরাইশ নামক একটি এলাকার; ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। শিশুটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোই নয়; দেশের আধুনিক শহরগুলোও মুক্ত নয় এমন নির্মম দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলো যেখানে উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ দ্বারা পরিবেষ্টিত, সেখানে শিশুর খেলার জায়গাটি নিমেষেই পরিণত হতে পারে মরণফাঁদে। এমনকি ঘরের ভেতরটাও এই ঝুঁকির বাইরে নয়। তাই শিশুর নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে প্রয়োজন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের।
এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন দেখে নিই, ঘরের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে শিশুর জীবন বাঁচাতে কি কি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
বৈদ্যুতিক শক থেকে শিশুদের রক্ষা করার উপায়
ঘরের ভেতরে প্রয়োজনীয় সাবধানতা
দেয়ালের বৈদ্যুতিক সকেটগুলো আবৃত রাখা
ঘরের দেয়ালের নিচের দিকে প্রায় সময় দেখা যায় বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসগুলো অনাবৃত থাকে। এছাড়া ব্যবহার শেষে প্লাগ খুলে ফেলার পর সেগুলো অনাবৃত অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হয়। এগুলো বাচ্চাদের হাতের নাগালেই থাকে। খেলার ছলে এগুলোর ছোট গর্তগুলোতে বাচ্চাদের হাত চলে যেতে পারে। এমন অনর্থ থেকে বাঁচতে বৈদ্যুতিক আউটলেট কভার বা সেফটি প্লাগের আবির্ভাব।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
প্লাগগুলো মূলত টু পিং ও থ্রি পিং সকেটের জন্য সামঞ্জস্য করে তৈরি করা হয়। আর কভারের ক্ষেত্রে বর্তমানের অত্যাধুনিক স্লাইডিং আবরণীগুলো ব্যবহার শেষে কোনো অ্যাডাপ্টারের প্লাগ খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সকেটটিকে ঢেকে ফেলে। এতে করে বিদ্যুৎ সংযোগের গর্তগুলো আবৃত হয়ে যায় এবং তাতে বাচ্চাদের হাত পড়লেও কোনো বিপদের আশঙ্কা থাকে না।
বিদ্যুতের কেবলগুলো গুছিয়ে রাখা
শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কেবল অর্গানাইজার। এলোমেলো করে ছড়ানো-ছিটানো কেবল বা তারগুলোতে বাচ্চাদের ছোট ছোট হাত-পা জড়িয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চঞ্চল শিশুরা ছুটে বেড়াতে যেয়ে এগুলোতে পা জড়িয়ে পড়ে যেয়ে আঘাত পেতে পারে। আর কোনো একটিতে ছোট্ট কোনো চিড় বা লিকেজ থাকলে তা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই নিদেনপক্ষে দড়ি বা ফিতে দিয়ে কেবল বা তারগুলোকে বেধে পরিপাটি করে রাখা উচিৎ।
তাছাড়া এখন অধিকাংশ ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে এগুলোর কেবল গুছিয়ে রাখার জন্য ছোট ছোট প্লাস্টিকের তার সরবরাহ করা হয়। এগুলোর যথাযথ সদ্ব্যবহার করে তার বা কেবলগুলো আড়াল করে রাখা উচিৎ। কর্ড সংগঠক ব্যবহার করে বা অতিরিক্ত কর্ডের দৈর্ঘ্য বেঁধে দড়িগুলোকে সংগঠিত এবং নাগালের বাইরে রাখুন। এটি দড়িতে ছিটকে যাওয়ার বা টানার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
ওভারলোড না করা
একটি আউটলেটে একাধিক ডিভাইস ব্যবহারের উপায় থাকলেও তার সুবিধা নেওয়া উচিৎ নয়। বিশেষ করে উচ্চ পাওয়ার রেটিংয়ের বৈদ্যুতিক আসবাব একটি আউটলেটে একটির বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে আউটলেটগুলো অতিরিক্ত গরম হয়ে সকেটের পেছনে তার বা আসবাবের কেবল পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া শর্ট সার্কিট হলে একসঙ্গে একাধিক যন্ত্র নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বিদ্যুতের প্রতিটি সংযোগের ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করা
ঘরের প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ঠিক মতো কাজ করছে কি না তা রুটিন মাফিক যাচাই করা হলে সময় মতো ত্রুটিগুলো চোখে পড়বে। এতে করে যন্ত্রপাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হবে প্রত্যেকটির নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার। আর ঘরের ভেতরে শিশুর খেলার জায়গাটিও হবে ঝুঁকি মুক্ত।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদিকে কোনোভাবেই পানির সংস্পর্শে না আনা
রান্নাঘর ও টয়লেটের বৈদ্যুতিক আউটলেটগুলোকে কোনোভাবেই ভেজা রাখা যাবে না। প্রয়োজনে নিয়মিত শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে হবে। দিনের অধিকাংশ সময়ই এই স্থানগুলোতে পানির কাজ থাকে। ফলে যে কোনো ভুলে মেঝেতে পানি পড়ে তা গড়িয়ে চলে আসতে পারে ডাইনিং বা অন্যান্য ঘরগুলোতে। পরিণতিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে শিশুর খেলে বেড়ানোর জায়গাটি।
ফ্রিজ বা ওভেনের মতো উচ্চ ভোল্টেজের যন্ত্রপাতির পেছনের স্থান কোনোভাবেই যেন পানির সান্নিধ্যে না আসে। এগুলোর কেবলে হঠাৎ পানি লেগে গেলে দ্রুত পাওয়ার অফ করে শুকনো কাপড় দিয়ে তা মুছে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে পোষা প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
সোমবার বড়দিন
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন বড়দিন উদযাপন হবে।
রঙিন আলো দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়, বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের মধ্যে উপহার বিতরণ এবং আনন্দের আদান-প্রদান এই উৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
এইদিনে গির্জাগুলোতে প্রার্থনা সেশনের আগে এবং পরে ক্রিসমাস ক্যারল ও স্তোত্র গাওয়া হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে সংবর্ধনার আয়োজন করবেন।
বাংলাদেশের আর্চবিশপ, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ধর্মীয় নেতা ও পেশাজীবীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একদল গায়ক ক্রিসমাস ক্যারল পরিবেশন করবেন।
পরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে বড়দিনের কেক কাটেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার এবং বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও স্টেশন দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
দিনটি সরকারি ছুটির দিন। জাতীয় দৈনিকগুলো বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।
‘সব ধর্মের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই স্বাধীনভাবে তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।’
রাষ্ট্রপতি জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সুখী, সমৃদ্ধ ও 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, ‘যীশু খ্রিস্টের অন্যতম লক্ষ্য ছিল বিশ্বে ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। মহান খ্রিস্ট বিপন্ন ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন এবং তিনি তার জীবনধারা ও কঠোর বৈশিষ্ট্যের জন্য মানব ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।’
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক 'সোনার বাংলাদেশ' গড়তে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাজাজ পালসার এন-২৫০: বাংলাদেশের প্রথম ২৫০ সিসি বাইক
সেরা গতির বাইকটি অধিকারে থাকা আর আভিজাত্য ও দুঃসাহসিকতার যুগপৎ উন্মাদনা যেন একে অন্যের পরিপূরক। আর এই মর্যাদাকে আরও বাড়িয়ে দিতেই যেন দেশের সড়কে চলমান বাইকের সর্বোচ্চ ইঞ্জিন ক্ষমতার সীমা উন্নীত করা হয়েছে ৩৭৫ সিসিতে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ২৭ নভেম্বর সোমবার চালু হলো বাজাজ পালসার এন-২৫০।
এর মধ্যে দিয়ে ২৫০ সিসির ইঞ্জিন দক্ষতার মাইলফলক স্পর্শ করল বাংলাদেশ অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি। চলুন, এর বিভিন্ন ফিচার, দাম, এবং সুবিধা-অসুবিধাগুলোর বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাজাজ পালসার এন-২৫০ এর ফিচার
ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশন
পালসারটি এন-২৫০ শক্তি পায় একটি সিলিন্ডার ও ৪-স্ট্রোক ইঞ্জিন থেকে। ইঞ্জিনটিকে পরিচালনা করে ২টি ভালভসহ একটি অত্যাধুনিক এসওএইচসি (সিঙ্গেল ওভারহেড ক্যামশ্যাফ্ট)।
এই মডেলের সঙ্গে থাকছে ৫-স্পিড কনস্ট্যান্ট মেশ গিয়ারবক্স। এছাড়া মোটরসাইকেলটি বিএস৬-২.০ নিঃসরণ মান মেনে চলে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকরণে বাজাজের প্রতিশ্রুতিকে ন্যায্যতা দান করে।
আরও পড়ুন: উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হোম অফিস যেভাবে সাজাবেন
মাইলেজ ও জ্বালানি দক্ষতা
একবারে ১৪ লিটার জ্বালানি ভরতে পারে, যার প্রতি লিটারে এটি মাইলেজ পায় ৩৫ কিলোমিটার। এর সঙ্গে মডেলটি শক্তি এবং জ্বালানি দক্ষতার মধ্যে একটি সর্বোত্তম ভারসাম্য বজায় রাখে।
চ্যাসিস ও সাসপেনশন
এন-২৫০ স্পোর্টস নেকেড বাইকের ক্যাটাগরির অন্তর্গত, যেখানে আবরণে রয়েছে সতর্কতার সঙ্গে তৈরি একটি শক্তিশালী চেসিস।
৩৭ মিলিমিটারের টেলিস্কোপিক ফ্রন্ট সাসপেনশন এবং নাইট্রোক্স রিয়ার সাসপেনশনসহ মনোশক যে কোনো ঝাকুনি শোষণ করতে এবং একটি মসৃণ ও নিয়ন্ত্রিত রাইড প্রদানে ভূমিকা রাখে।
মাত্রা ও ক্ষমতা
১৪-লিটার জ্বালানি ধারণ ক্ষমতা একে দীর্ঘ পথ চলার প্রশ্রয় দেয়। এটি ৭৯৫ মিলিমিটার-এর স্যাডল উচ্চতা, ১৬৫ মিলিমিটার গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স, ১৩৫১ মিলিমিটার হুইলবেস। সব মিলিয়ে পুরো বডিটির ওজন ১৬২ কেজি।
লাইটিং ব্যবস্থা
এলইডি হেডলাইট ও টেইল লাইট থেকে শুরু করে টার্ন সিগন্যাল ল্যাম্প এবং ডিআরএল (ডেটাইম রানিং লাইট) পর্যন্ত প্রতিটি উপাদান সর্বোত্তম দৃশ্যমানতা প্রদানের জন্য ডিজাইনকৃত।
দূরত্ব, ও কম জ্বালানি সংক্রান্ত আশঙ্কাজনক নির্দেশকগুলো সর্বদা রাইডারকে বাইকের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত রাখে।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
টায়ার ও ব্রেক
এন-২৫০ এর ব্রেকিং সিস্টেমে একটি ৩০০ মিলিমিটার ফ্রন্ট ডিস্ক এবং একটি ২৩০ মিলিমিটার রিয়ার ডিস্ক রয়েছে। এছাড়াও, একটি ডুয়াল-চ্যানেল এবিএস সিস্টেম সুবিধা দিচ্ছে ইঞ্জিন কিল সুইচ ও পাস সুইচের।
টিউবলেস টায়ার (সামনে: ১০০/৮০-১৭, এবং পিছনে: ১৩০/৭০-১৭) যে কোনো রাস্তায় এর বডিকে শক্ত গ্রিপে ধরে রাখে। এই টায়ার এবং অ্যালয় হুইলগুলোর সংমিশ্রণ (সামনে: ৪৩১.৮ মিলিমিটার, ও পেছনে: ৪৩১.৮ মিলিমিটার) বাইকের তৎপরতা ও স্থিতিশীলতায় অবদান রাখে।
মোটর ও ব্যাটারি
চেইন ড্রাইভ এবং ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ৮ হাজার ৭৫০ আরপিএম-এ সর্বোচ্চ ২৪.৫ হর্সপাওয়ার শক্তি প্রদান করতে সক্ষম। ৬ হাজার ৫০০ আরপিএম-এ ২১.৫ নিউটন মিটার্স পর্যন্ত টর্ক বল এর যে কোনো জড়তাকে কাটিয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের শীর্ষ ১০ পুলিশ কুকুরের প্রজাতি
কি কি সুবিধা থাকছে বাইকটিতে
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
এর ইঞ্জিন কিল সুইচ এবং পাস সুইচের ডুয়াল-চ্যানেল এবিএস সিস্টেম রাইডারের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার এক নতুন মাত্রা। এই সংমিশ্রণটি ধীরে সুস্থে থামার বিষয়টি নিশ্চিত করে, বিধায় থেমে থাকা বা চলন্ত উভয় অবস্থাতেই রাইডারের আত্মবিশ্বাস অটুট থাকে।
জ্বালানি বান্ধব
১৪-লিটার জ্বালানি ক্ষমতা এবং প্রতি লিটারে ৩৫ কিলোমিটার এর সামগ্রিক মাইলেজ, এন-২৫০কে শক্তি এবং জ্বালানি দক্ষতার মাঝে দারুণ এক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি মোটরযানটিকে আরোহীদের কাছে একটি লাভজনক পছন্দ হিসেবে উপস্থাপন করে।
বাইকের উপস্থিতি ও অবস্থা নির্দেশক
হেডলাইট, টেইল লাইট এবং টার্ন সিগন্যাল ল্যাম্পসহ উন্নত এলইডি লাইটিং সিস্টেম যে কোনো জায়গায় এর দৃশ্যমানতা বাড়ায়। এই লাইটিং জ্বালানি কমে আসা ও দূরত্ব নির্দেশক সম্বলিত গাড়ির বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে রাইডারদেরকে সঠিক জানান দেয়।
গ্রিপিং টায়ার ও ব্রেক
এর ফ্রন্ট ডিস্ক, রিয়ার ডিস্ক এবং ডুয়াল-চ্যানেল এবিএস সিস্টেমের সমন্বয় নিয়ন্ত্রিত ব্রেকিংয়ের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। টিউবলেস টায়ার ও অ্যালয় হুইলগুলোর অন্তর্ভুক্তির কারণে যে কোনো রাস্তায় একে আরোহীর সেরা পছন্দে পরিণত করবে।
আরামদায়ক
স্প্লিট-সিট ডিজাইন, অ্যাডজাস্টেবল উইন্ডস্ক্রিন এবং প্যাসেঞ্জার ফুটরেস্ট বাইকে চড়ার সময় একটি আরামপ্রদ অভিজ্ঞতা দেয়। এলইডি-আলো ঘড়ি শুধুমাত্র একটি কার্যকরী উদ্দেশ্যেই কাজ করে না বরং গাড়ির সামগ্রিক নান্দনিকতায়ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন করে।
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
বাইকটির কিছু অসুবিধা
দ্রুততায় গতির নিরবচ্ছিন্নতার ঘাটতি
সুপারবাইকটি প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার অতিক্রম করার সময় নির্দিষ্ট গতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে অস্থিরতা অনুভূত হয়। এটি দ্রুততার ক্ষেত্রে রাইডারের আত্মবিশ্বাস এবং নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে যারা হাইওয়েতে বাহনটির ক্ষীপ্রতা পরখ করতে চান, এই সীমাবদ্ধতা তাদের জন্য আশঙ্কার কারণ হতে পারে।
পুরনো মডেলের সঙ্গে সাদৃশ্য
২৫০ সিসি ইঞ্জিনের পূর্বসূরি এন-১৬০ এর মতো একই টায়ার রাখার সিদ্ধান্ত ক্রেতাদের যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হতে পারে। একটি ২৫০ সিসি বাইক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শক্তি পরিচালনা করতে এবং সর্বোত্তম গ্রিপ প্রদানের জন্য স্বাভাবিক ভাবেই একটি শক্তিশালী টায়ার কনফিগারেশনের দাবি রাখে। পূর্বসূরির মতো একই টায়ার ব্যবহার করাটা বাইকের চূড়ান্ত কর্মক্ষমতার সঙ্গে রীতিমত আপস করার শামিল।
ইঞ্জিনের সীমাবদ্ধতা
বহু প্রত্যাশিত এই যানটির ইঞ্জিনে মাত্র ২টি ভালভ দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে, যা সত্যিই এক অনাকাঙ্ক্ষিত ত্রুটি হিসেবে দেখা যেতে পারে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে একটি ৪-ভালভ ইঞ্জিন কনফিগারেশনকে প্রায়শই পাওয়ার ডেলিভারি সর্বাধিক করার জন্য আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। ২টি ভালভের সীমাবদ্ধতা বাইকটির সঙ্গের অন্যান্য মোটরসাইকেলের সঙ্গে এর প্রতিযোগিতা করার ক্ষমতাকে আশঙ্কাজনকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
৫-স্পিড গিয়ারবক্সের পুনরাবৃত্তি
৬-স্পিড কনফিগারেশনে আপগ্রেড করার পরিবর্তে ঐতিহ্যবাহী ৫-স্পিড গিয়ারবক্সের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে একটি বড় সুযোগ হাত ছাড়া করা। ৬-স্পিড গিয়ারবক্স ক্রমবর্ধমানভাবে এই ধরনের মোটরসাইকেলের জন্য অটোমোবাইল শিল্পে আদর্শ মান হয়ে উঠছে। এই অতিরিক্ত একটি মাত্র গিয়ারের অনুপস্থিতি বাইকের বহুমুখিতাকে সীমিত করতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘ ভ্রমণের সময়।
ব্লুটুথ সংযোগের অনুপস্থিতি
তথ্য-প্রযুক্তির যুগে যেখানে ডাটা স্থানান্তর বিক্রয় বাড়ানোর সেরা নির্ণায়ক, সেখানে ব্লুটুথ সংযোগের অনুপস্থিতি এই নতুন পালসারের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ত্রুটি। আধুনিক যানবাহন মানেই এখন রাইডারদের ন্যাভিগেশন, যোগাযোগ এবং বিনোদনের জন্য তাদের ডিভাইসগুলোকে নির্বিঘ্নে সংযুক্তকরণ। এই বৈশিষ্ট্যের অভাব সামগ্রিক রাইডিং অভিজ্ঞতা বাড়ানোর নিদারুণ সুযোগকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
বাইকটির মূল্য
লাল, নীল এবং কালো; এই তিনটি রঙের সঙ্গে নতুন চালুকৃত পালসারটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। সেমি-ডিজিটাল মিটারে পুরনো ধাচের নির্দেশক কাটা এবং ২-ভালভ ইঞ্জিন ইতিমধ্যেই এন-২৫০-এর থেকে কম সিসি সম্পন্ন দেশের অন্যান্য বাইকগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান বাজারে এখনো সরাসরি কোনো প্রতিযোগী না থাকলেও এই বিষয়গুলো দামের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
এছাড়া কোনো কারণে ত্রুটি দেখা দিলে তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট টুল পাওয়া যাবে কি না তাতেও রয়েছে পর্যাপ্ত সন্দেহের অবকাশ। এরপরেও সুষ্পষ্ট ভাবে মূল্যটির তুলনা করার জন্য এর সমজাতীয় বাইকগুলোর বাজারে নামা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
পরিশেষে
দীর্ঘ যাত্রার প্রমোদ অভিযানে রোমাঞ্চপ্রিয়রা নির্দ্বিধায় বাজি ধরতে পারেন এন-২৫০-এর ওপর। তবে প্রকৃত পালসার প্রেমীরা খুব সহজেই ধরে ফেলতে পারবেন এন-১৬০-এর সঙ্গে সাদৃশ্যটা। এই নিরিখে দুয়েকটি পরিবর্তনের জন্য এমন বিনিয়োগের ব্যাপারে তাদের দ্বিতীয়বার চিন্তা করা উচিৎ।
এছাড়া দ্রুততার সময় এর গতির নিরবচ্ছিন্নতার ঘাটতিটা একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি। তাই তরুণদের মধ্যে যাদের মোটরযানের সর্বশেষ গতির অভিজ্ঞতা নিতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই বাইক বেছে নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
আরও পড়ুন: পুরুষদের ফরমাল পোশাক ও স্যুট বানানোর জনপ্রিয় কিছু দেশি ব্র্যান্ড
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
অতি গুরুত্বপূর্ণ নথি হওয়া সত্ত্বেও কাগজের ড্রাইভিং লাইসেন্স তোলা নিয়ে ছিলো হাজারও ঝামেলা। গ্রাহকদের অনেকবার দ্বারস্থ হতে হতো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএর।দেশের ডিজিটালকরণ কার্যক্রম অন্যান্য রাষ্ট্রীয় পরিষেবাগুলোর মত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিকেও সহজ করতে শুরু করেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) কার্ডের মত ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে স্মার্ট কার্ড। এই বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সারা দেশ জুড়ে গাড়ি চালনায় বৈধতার স্বীকৃতি দিবে। চলুন, এই স্মার্ট লাইসেন্স কার্ড পাওয়ার উপায় জেনে নেওয়া যাক।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স কী
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে এর তদারকের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিআরটিএর নতুন পরিষেবা স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স।
এই স্মার্ট কার্ডে একজন গাড়ি চালকের জীবন বৃত্তান্ত সহ গাড়ি চালনার সব তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। এর মাধ্যমে রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় চালকের বৈধতা যাচাইয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের তদারকের কাজ খুব কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
২০১৬ সালে এই কার্যক্রম শুরু হলেও স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি নিয়ে ছিলো সমূহ জটিলতা। পূর্বে বিএসপি (বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল) পোর্টালে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আলাদা ভাবে আবেদন করতে হতো।
কিন্তু ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর এই দুটিকে একত্রীত করে একটি কম্বাইন্ড অনলাইন ফর্ম চালু করা হয়। শুধু তাই নয়, আবেদন পদ্ধতি এবং স্মার্ট কার্ড প্রদান আরও সহজতর করার জন্য এসময় আরও কিছু বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।
চলুন, এক নজরে দেখে নেয়া যাক সেই বিধিমালা।
বিআরটিএর নতুন স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর সুবিধাগুলো
১) নতুন নিয়মে আবেদনকারীকে ৩ থেকে ৪ বারের পরিবর্তে শুধুমাত্র একবার পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়। আর এই একদিনেই লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসহ বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টও সম্পন্ন করা হয়।
২) বিএসপি পোর্টালে নিবন্ধনকারীগণ ঘরে বসেই অনলাইন ভেরিফিকেশন বেজড কিউআর কোড সম্বলিত লার্নার লাইসেন্স পেয়ে যান। এটি মুলত স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত সারা দেশে মোটরযান চালনার অস্থায়ী অনুমতিপত্র।
৩) এছাড়াও এই পোর্টালের সেবার মধ্যে আছে লাইসেন্স ফি প্রদান, পরীক্ষার ফল জানা, স্মার্ট কার্ড আবেদন দাখিল, এবং আবেদনপত্র বা স্মার্ট কার্ডের বর্তমান স্ট্যাটাস জানার সুবিধা।
৪) ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর এই স্মার্ট কার্ড প্রতিটি গ্রাহকের কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বশর্ত
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের পূর্বশর্তগুলোই এই আবেদনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ গাড়ি চালনার জন্য আবেদনকারীর মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা থাকতে হবে। কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাশ হতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২১ বছর এবং অপেশাদারের বেলায় ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।
সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো-
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের জন্য যে কাগজপত্র প্রয়োজন, তার অধিকাংশই এই আবেদনের ক্ষেত্রেও দরকার। অর্থাৎ-
১) আবেদনকারীর সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩০০/৩০০ পিক্সেল)
২) রেজিষ্টার্ড ডাক্তারের নিকট থেকে সংগৃহীত মেডিকেল সনদপত্র
৩) আবেদনকারীর এনআইডি
৪) আবেদনকারীর গ্যাস/বিদ্যুৎ/পানি যে কোন ১টি (আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা তার এনআইডি থেকে ভিন্ন হলে, বর্তমান ঠিকানার ১টি ইউটিলিটি বিল)
৫) শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অতিরিক্ত নথি হিসেবে লাগবে
১) লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাসের প্রমাণপত্র
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য এই লিঙ্কগুলো দেখুন-
http://www.brta.gov.bd/site/page/511a7af4-20c8-4450-b4a6-5f92dde1b23f/-
http://www.brta.gov.bd/site/page/4258fc8f-8aec-4895-b11d-a0b33b489af2/-
উল্লেখ্য, এই নথিগুলো অনলাইন আবেদনের পূর্বেই স্ক্যান করে প্রস্তুত রাখতে হবে। পাসপোর্ট সাইজের ছবির স্ক্যান করা ফাইল ১৫০ কেবি(কিলোবাইট), আর বাকি সবগুলো ফাইলের সাইজ ৬০০ কেবির বেশি হওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়
অনলাইনে বিআরটিএর নতুন স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর আবেদন পদ্ধতি
অনলাইনে আবেদনের জন্য সরাসরি চলে যেতে হবে বিএসপি পোর্টালে (https://bsp.brta.gov.bd/)।
আবেদনের জন্য প্রথমেই নিবন্ধনের মাধ্যমে এই পোর্টালের অধীনে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
এই অ্যাকাউন্টে ড্রাইভিং সম্পর্কিত গ্রাহকের যাবতীয় তথ্য জমা থাকবে। চলুন, ধাপে ধাপে এই আবেদন প্রক্রিয়াটি জেনে নেয়া যাক-
নিবন্ধন
প্রথমে বিএসপি পোর্টালের একদম উপরে ডানদিকে ‘নিবন্ধন’ মেনুতে ক্লিক করতে হবে। পুরো নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য গ্রাহকের জন্ম তারিখ, এনআইডি এবং মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।
মোবাইল নাম্বারে আসা ওটিপি (ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড)- এর মাধ্যমে মোবাইল নাম্বারটি যাচাই করে নিতে হবে। তারপর পাসওয়ার্ড নির্ধারণের মাধ্যমে শেষ হবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া।
এখন প্রদত্ত মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে বিএসপি পোর্টালে। যারা ইতিপূর্বে নিবন্ধন করেছেন, তারা এই সাইটের ‘প্রবেশ করুন’ মেনুতে যেয়ে লগইন করে সরাসরি নিজেদের অ্যাকাউন্টে চলে যেতে পারবেন।
শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন
লগইনের পরপরই আসবে গ্রাহক ড্যাশবোর্ড। এর বামদিকে প্রদর্শিত মেনুগুলো থেকে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’- এর সাবমেনু ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন’-এ ক্লিক করতে হবে।
এবার যে নতুন পেজটি আসবে, তাতে আবেদনের পূর্বশর্ত ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট দেখানো হবে। ‘এখানে ক্লিক করুন’ লিঙ্ক থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এই ফর্মের ভিত্তিতে রেজিস্টার্ড ডাক্তার বা মেডিকেল অফিসারের নিকট থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।
উপরন্তু, পেজে উল্লেখিত শর্তগুলো মেনে ‘আমি সম্মত’ বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
আরও পড়ুন: ভুয়া এনআইডি-ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি, আটক ৫
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য
এই ধাপের মাধ্যমেই শুরু হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ৫টি ধাপ সমন্বিত আবেদন প্রক্রিয়া। যেহেতু পূর্বে একবার এনআইডি সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাই এখানে সে অনুসারে প্রাথমিক তথ্যাবলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। তারপর ২য় ধাপে যাওয়ার জন্য ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর তথ্য
এখানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভাষা, ধরণ, মোটরযানের শ্রেণি, আবেদনকারির ধরণ বাছাই করতে হবে। শিক্ষানবিশ বা লার্নার এবং স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়টি এখানেই নির্ধারণ করতে হবে আবেদনের ধরণ নির্বাচনের মাধ্যমে।
তারপর ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করলে তথ্য সফলভাবে সংরক্ষিত হয়েছে- এই মর্মে একটি পপআপ বার্তা আসবে। তাতে ‘ওকে’ করে পরের ধাপে যেতে হবে।
আবেদনকারির প্রাথমিক তথ্য
এখানে কিছু তথ্যাদি এনআইডি অনুসারে আগে থেকে প্রদর্শিত থাকবে। কিছু তথ্য টাইপ করে লিখতে বলা হবে। তন্মধ্যে লাল তারকা চিহ্নিত বক্সগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এনআইডির বাইরে আবশ্যিক তথ্য হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতা, রক্তের গ্রুপ, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা, জাতীয়তা এবং দ্বৈত নাগরিকত্ত আছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে। এরপর ‘নেক্সট’- এ ক্লিক করে পূর্বের ন্যায় পপআপ বার্তায় ‘ওকে’ করতে হবে।
ঠিকানা ও যোগাযোগের তথ্য
এই ধাপে আবেদনকারির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সহ জরুরি যোগাযোগের তথ্য অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এনআইডিতে থাকা স্থায়ী ঠিকানা বামদিকে বাংলায় প্রদর্শিত থাকবে, আর ডানদিকে সেগুলো ইংরেজিতে লিখতে হবে।
বর্তমান ঠিকানা যদি এখনও অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে ডান দিকে একইভাবে ইংরেজিতে লিখতে হবে। তা না হলে ‘না’ বাটনে ক্লিক করে পরিবর্তিত বর্তমান ঠিকানা বাম পাশে বাংলায় আর ডান পাশে ইংরেজিতে টাইপ করে লিখে দিতে হবে। তারপর সেই আগের মত ‘নেক্সট’ এবং ‘ওকে’ বাটনে ক্লিক করে পরের ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
সংযুক্তি ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ তথ্য
এই শেষ ধাপে আগে থেকে সংগ্রহে রাখা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপিগুলো সংযুক্ত করতে হবে। ‘চুজ ফাইল’-এ ক্লিক করে সফলভাবে আপলোড করার পর ‘সংরক্ষণ করুন’ বাটনে ক্লিক করলে ফাইলগুলো সংযুক্ত হয়ে যাবে। ‘দেখুন’ বাটনে ক্লিক করে তা একবার দেখে নেয়া যেতে পারে।
ডাকযোগে কার্ড প্রেরণের জন্য ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নির্দিষ্ট করা থাকবে। তবে গ্রাহক কার্ড প্রাপ্তির জন্য নিজের সুবিধা মত স্থায়ী বা বর্তমান যে কোন ঠিকানা বাছাই করতে পারেন। এমনকি এর বাইরে অন্য জায়গাও তিনি ঠিক করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ‘আদার্স’ নির্বাচন করে পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করে দিতে হবে।
সবশেষে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করার পর শেষ বারের মত তথ্য যাচাই করতে বলা হবে। এখানে কোনও পরিবর্তন প্রয়োজন হলে আবেদনকারি প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো করে নিতে পারবেন। আর সব কিছু ঠিক থাকলে ‘ফি জমা’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ফি জমা
এখানে মনে রাখা জরুরি যে, এখানে শুধুমাত্র লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
পুরো আবেদনটি প্রথমে এক নজরে দেখানো হবে। সব ঠিক থাকলে ‘ফি জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করে ‘পেমেন্ট কনফারমেশন’ পেজে যেতে হবে। এখানে মোবাইল নাম্বার সহ ফি জমা দেয়ার মাধ্যম উল্লেখ করার পর পেমেন্ট শর্তাবলির পাশের বক্সটিতে টিক মার্ক দিতে হবে। তারপর ‘নিশ্চিত’ বাটনে ক্লিক করলে ফি সফলভাবে জমা হওয়ার একটি পেজ প্রদর্শিত হবে।
এখানে ‘প্রিন্ট লার্নার’ বাটনে ক্লিক করলে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ‘হেয়ার’ বাটনে ক্লিক করলে মানি রিসিপ্ট প্রিন্ট হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিলাসবহুল গাড়ি
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স- এর জন্য আবেদন
অনলাইন আবেদনের এই অংশে আসার পূর্বে অবশ্যই ড্রাইভিং- এ দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বিএসপি পোর্টালে গ্রাহক ড্যাশবোর্ডে ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন’ মেনুতে ক্লিক করলে দেখা যাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বা অনুত্তীর্ণ হওয়ার বার্তাটি। এছাড়া আবেদনের সময় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারেও জানানো হবে পরীক্ষার ফলাফল।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্তি
‘দেখুন ও পরবর্তী ধাপ’ বাটনে ক্লিক করলে সংযুক্তির পেজটি প্রদর্শিত হবে। লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের সময় সংযুক্ত নথিগুলো এখানে আগে থেকেই সংযুক্ত দেখাবে।
আলাদা ভাবে আপলোড করতে হবে পাস লার্নার; তথা ড্রাইভিং দক্ষতা যাচাই পরীক্ষা উত্তীর্ণের প্রমাণপত্র। এছাড়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথির সংযুক্ত করা যেতে পারে।
ফি পরিশোধ
ব্যাংকের মাধ্যমে ফি দিতে হলে ‘ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা’ আর অনলাইনে দিতে হলে ‘অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ফি জমা’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
অনলাইনের ক্ষেত্রে অনলাইন পেমেন্ট পেজে ‘পে নাউ’ বাটনে ক্লিক করে পরিশোধ সম্পন্ন করতে হবে।
আর ব্যাংকের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে প্রদত্ত মানি রিসিপ্টে উল্লেখিত ই-ট্র্যাকিং নাম্বারটি সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর তা ‘ই-ট্র্যাকিং নম্বর প্রবেশ করুন’ ঘরে লিখে ‘ই-ট্র্যাকিং নম্বর যাচাই’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরিশোধের যাবতীয় তথ্য এক নজরে প্রদর্শন করা হবে। তারপর ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করলেই চূড়ান্ত ভাবে সম্পন্ন হবে ফি পরিশোধ।
আরও পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন দাখিল করা শেষ। এখন এটি বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত হলে ড্যাশবোর্ডে ই-পেপার লাইসেন্স ফর্ম প্রদর্শন করা হবে। এটি ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তির আগ পর্যন্ত বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও স্মার্ট কার্ড আসার আগ পর্যন্ত লাইসেন্সের সর্বশেষ অবস্থা দেখানো হবে ড্যাশবোর্ডে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স- এর স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি
ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড প্রস্তুতির সার্বিক কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে ড্যাশবোর্ডে তা প্রদর্শন করা হবে। পরিশেষে আবেদনে উল্লেখিত ঠিকানায় ডাকযোগে প্রেরণ করা হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ডটি।
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স- এর জন্য প্রয়োজনীয় খরচ
শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শুধুমাত্র বিএসপি পোর্টালের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হবে। যে কোনও একটি মোটরযানের জন্য ফি ৫১৮ টাকা, আর দুইটি মোটরযানের জন্য ফি ৭৪৮ টাকা।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের সময় ১০ বছর মেয়াদী অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য দিতে হবে ৪ হাজার ৫৫৭ টাকা। আর ৫ বছর মেয়াদের পেশাদার লাইসেন্সের জন্য খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৮৩২ টাকা।
শেষাংশ
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার সময় প্রথম সতর্কতা হলো প্রতিটি তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া। কোনও ভুয়া তথ্য দেওয়া হলে লার্নার এবং স্মার্ট কার্ড উভয় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন বাতিল করা হবে। শুধু তাই নয়, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্যদানকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দ্বিতীয়ত, দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। কেননা অকৃতকার্য হলে আবার নতুন করে পরীক্ষার জন্য তারিখ চেয়ে আবেদন করতে হবে। তাই নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড হাতে পেতে হলে এই বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন বাঞ্ছনীয়।
আরও পড়ুন: মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
বিশ্বের শীর্ষ ১০ পুলিশ কুকুরের প্রজাতি
মানুষের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস আর ভালোবাসার পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় ক্ষমতা শুধুমাত্র পোষা প্রাণীর থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে কুকুরকে। আনুগত্যের সঙ্গে যখন এদের বিস্ময়কর বুদ্ধিমত্তা যোগ হয় তখন অনায়াসেই এরা মানুষের এমন সঙ্গীতে পরিণত হয়, যার কোনো বিকল্প হয় না। এদের মধ্যে বিশেষ কিছু কুকুরের অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে। এগুলোকে সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। অপরাধীদের পিছু ছোটা থেকে শুরু করে লুকানো মাদকদ্রব্য উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। এগুলোর মধ্য থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ১০টি পুলিশ কুকুরের জাত সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে এই নিবন্ধে। চলুন, যে বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে কুকুরগুলোকে অন্য সব প্রজাতিদের থেকে আলাদা- তা জেনে নেওয়া যাক।
পৃথিবীর ১০টি সেরা পুলিশ কুকুরের জাত
জার্মান শেফার্ড
১৮৯৯ সাল থেকে বিভিন্ন জার্মান কুকুর ব্যবহার করে এই জাতটি তৈরি করেছিলেন ম্যাক্স ভন স্টেফানিৎস। সে সময় ভেড়া পালনের উদ্দেশ্যে তৈরি এই কুকুর পরে যেকোনো কিছু খুঁজে বের করা ও উদ্ধারসহ পুলিশের নানা কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে অ্যালসেশিয়ান নামে বহুল পরিচিত এই জাত এমনকি যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল।
এই জাতের উচ্চতা পুরুষ কুকুরের ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৬৫ সেন্টিমিটার এবং স্ত্রী কুকুরের বেলায় ৫৫ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। পুরুষ জার্মান শেফার্ডের ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি, আর স্ত্রী কুকুরের ওজন হয় ২২ থেকে ৩২ কেজি।
বিফ ওরফে ব্রায়ান নামের শেফার্ড ১৯৪৭-এর ২৯ মার্চ ১৩তম ল্যাঙ্কাশায়ার ব্যাটালিয়ান প্যারাট্রুপারদের কাজে সহায়তা করেছিল।
শেফার্ডরা এখনও সহায়ক ভূমিকা পালন করে মৃতদেহ অনুসন্ধান, মাদকদ্রব্য শনাক্তকরণ, বিস্ফোরক শনাক্তকরণ এবং মাইন শনাক্তকরণের কাজে।
বিশ্ব জুড়ে উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অ্যালসেশিয়ান সরবরাহকারী প্রসিদ্ধ নিরাপত্তা পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ডেনমার্কের এজেন্সি গার্ড ডগ পেট্রোল, ব্রিটিশ কোম্পানি আন্তর্জাতিক ভিআইপি বডিগার্ড (আইভিআইপিবি) লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্যের স্পার্টা সিকিউরিটি গ্রুপ।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
বেলজিয়ান ম্যালিনোইস
শনাক্তকরণ, গার্ড, গাইডসহ নানা পুলিশি কর্মকাণ্ডের জন্য সহায়ক এই কুকুর বিভিন্ন নামে পরিচিত। সেগুলোর মধ্যে বেলজিয়ান শেপডগ, বেলজিয়ান শেফার্ড বা চিয়েন ডি বার্জার বেলজ নামগুলো সর্বাধিক পরিচিত।
এই জাতটি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পর থেকে আজ অবধি সামরিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এই জাতের মধ্যে পুরুষ কুকুরগুলো সাধারণত ৬০ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার আর স্ত্রীগুলো ৫৬ থেকে ৬২ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজনে একটি পুরুষ কুকুর ২৫ থেকে ৩০ কেজির কাছাকাছি আর স্ত্রী কুকুর প্রায় ২০ থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওকেটজ ইউনিট, অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের অ্যান্টি-পাচিং ক্যানাইন ইউনিট ম্যালিনোইসদের ব্যবহার করে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ান আর্মিদের আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় একজন বিদ্রোহীকে বন্দি করার কাজে সহায়তার জন্য কুগা নামের ম্যালিনোইসকে ডিকিন পদক দেওয়া হয়।
ম্যালিনোইসদের মতো পুলিশ কুকুরদের পরিষেবা দানকারী প্রখ্যাত নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হলো- যুক্তরাজ্যের আইভিআইপিবি ও আমেরিকার ইন্টিগ্রিটি কেনাইন পরিষেবা।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০ কফি
ব্লাডহাউন্ড
প্রখর ঘ্রাণশক্তি সম্পন্ন শিকারীদের মধ্যে হাউন্ডের কোনো জুড়ি নেই। হরিণ, বন্য শুয়োর, খরগোশ শিকারের জন্য এদের প্রজনন শুরু হয়েছিল সেই মধ্যযুগে।
সর্বপ্রথম কে এই জাতটি তৈরি করেছিল তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু আনুমানিক ১০০০ খ্রিস্টাব্দে বেলজিয়ামের সেন্ট-হুবার্ট মঠে সন্ন্যাসীদের হাতে এর প্রথম জাতের জন্ম।
এখনও সারা বিশ্বে হাউন্ডদের ব্যবহার করা হয় আইন প্রয়োগকারীদের পলায়নরত বন্দি, নিখোঁজ ব্যক্তি ও হারিয়ে যাওয়া পোষা প্রাণীদের খুঁজে বের করতে।
একটি পুরুষ হাউন্ডের ওজন ৪৬ থেকে ৫৪ কেজি এবং স্ত্রী হাউন্ডের ওজন হয়ে থাকে ৪০ থেকে ৪৮ কেজি। পুরুষ কুকুর উচ্চতায় ৬৪ থেকে ৭২ সেস্টিমিটার হয়, যেখানে স্ত্রী কুকুরগুলো ৫৮ থেকে সর্বোচ্চ ৬৬ সেস্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ইউএস আর্মির ৬১৫-তম মিলিটারি পুলিশ কোম্পানির মাসকট হলো একটি ব্লাডহাউন্ড। আইভিআইপিবি প্রতিষ্ঠান উচ্চ প্রশিক্ষিত ব্লাডহাউন্ড সরবরাহ করে থাকে।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সেরা ১০ মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত
বক্সার
জার্মানিতে গড়ে ওঠা এই ম্যাস্টিফ জাতটি তৈরি করা হয়েছিল ওল্ড ইংলিশ বুলডগ এবং বর্তমানে বিলুপ্ত বুলেনবিসারের প্রজনন থেকে। বক্সাররা ব্র্যাচিসেফালিক হয়ে থাকে, অর্থাৎ এদের চওড়া অথচ ছোট মাথার খুলি থাকে।
একটি পুরুষ বক্সারের উচ্চতা ৫৬ থেকে ৬৪ সেন্টিমিটার আর স্ত্রী কুকুরের উচ্চতা ৫৩ থেকে ৬১ সেন্টিমিটার। পুরুষ বক্সার ওজনে ৩০ থেকে ৩২ কেজি হয়, অন্যদিকে স্ত্রী বক্সারের ওজন ২৫ থেকে ২৭ কেজির মধ্যে থাকে।
ধৈর্যশীলতা, শিশুদের প্রতি উৎসাহী ও সুরক্ষামূলক হওয়ার কারণে বক্সাররা বাচ্চাদের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি সখ্য করে নিতে পারে।
সামরিক সংঘাতে দায়িত্ব পালনের সময় বীরত্বের জন্য পাঞ্চ ও জুডি নামে বক্সার জুটিকে ডিকিন পদক দেওয়া হয়েছিল। আইভিআইপিবির পুলিশ কুকুর সেবার মধ্যে এই বক্সাররাও আছে।
আরো পড়ুন: মানুষের পরে পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান ১০ প্রাণী
ডোবারম্যান পিনসার
১৮৯০ সালের দিকে লুই ডোবারম্যান নামে জার্মানির এক কর সংগ্রাহক তৈরি করেছিলেন এই কুকুরের জাতটি। দৃঢ়চেতা ও অনুগত ডোবারম্যান বুদ্ধিমান, সতর্ক ও রক্ষক কুকুর হিসেবে পরিচিত।
পুরুষ কুকুরগুলো যেখানে ৬৮ থেকে ৭২ সেন্টিমিটার, স্ত্রী কুকুরগুলো সেখানে ৬৩ থেকে ৬৮ সেন্টিমিটারের হয়ে থাকে। পুরুষ ডোবারম্যানের আদর্শ ওজন ৪০ থেকে ৪৫ কেজি এবং স্ত্রীগুলো ৩২ থেকে ৩৫ কেজির হয়ে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রহরী কুকুর হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পর থেকে এরা জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
ক্যাপি নামের ডোবারম্যান জাপানি সৈন্যদের ব্যাপারে সতর্ক করে জীবন বাঁচিয়েছিল ২৫০ জন মার্কিন মেরিনদের। যুদ্ধে নিহত হওয়া কুকুরদের মধ্যে প্রথম সমাধিস্থ করা হয় কার্ট নামে এক ডোবারম্যানকে। সেটি পরে বিশাল এক সমাধি ক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেখানকার স্মৃতিস্তম্ভে কার্ট ও ক্যাপিসহ আরও ২৩টি ডোবারম্যানের নাম খোদাই করা আছে।
আইভিআইপিবির নিরাপত্তা কুকুর পরিষেবায় এই কুকুরটিও অন্তর্ভুক্ত আছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা ১০ পিরামিড: চিরন্তন কিংবদন্তির খোঁজে