আন্তর্জাতিক-ব্যবসা-বাণিজ্য
চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেছেন, বন্দর নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু উন্নতি করতে হলে প্রযুক্তি, অর্থ ও দক্ষতা প্রয়োজন। বন্দর ঘিরে চার-পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বেশিরভাগ বন্দর বেসরকারি অপারেটররা পরিচালনা করে। আমরাও সেভাবে এগিয়ে যেতে চাই।
সোমবার (১০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার লালদিয়া চর কন্টেইনার ইয়ার্ড উদ্বোধন শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে কাউকে বন্দর অপারেশন করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার রাখার সক্ষমতা ৫৬ হাজার টিইউএস থেকে ৬৬ হাজারে উন্নীত হবে। যারা বিজনেস করে, তাদের জন্য লালদিয়ার চর টার্মিনাল বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ১০ হাজার কনটেইনার রাখার ক্যাপাসিটি বাড়বে।
তিনি বলেন, বন্দরকে গতিশীল করতে যে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে, সেই প্রতিষ্ঠানই কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। সব ক্ষেত্রেই দেশের স্বার্থ প্রাধান্য পাবে। বন্দর নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করবে না সরকার। ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ পায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের ঊর্ধ্বমুখী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চাপ সামলাতে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই এবং অন্তর্বর্তী সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে। লালদিয়ার চরের পরিত্যক্ত এই টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে বন্দরের কার্যক্রমও গতিশীল হবে। বন্দরের ভেতরে অব্যবহৃত পরিত্যক্ত স্থানগুলো কাজে লাগানো হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মূলত ৩২ একর জায়গার ওপর কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, যার মধ্যে ১৪ একর জায়গায় ইয়ার্ড করা হয়েছে। ফলে ১০ হাজার একক কন্টেইনার ধারণক্ষমতা এবং ১ হাজার ৫০০ ট্রাক রাখার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া ৮ একর জায়গায় হেভি লিফট কার্গো জেটির ব্যাকআপ ও ১০ একর জায়গায় এপিএম টার্মিনাল এলাকা তৈরি করা হয়েছে।
উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এরপর বে টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন টার্মিনাল, তালতলা কনটেইনার ইয়ার্ড (ইস্ট কলোনি-সংলগ্ন) উদ্বোধন করেন এবং এক্সওয়াই শেড ও কাস্টমস অকশন শেড পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মনিরুজ্জামানসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২৪ দিন আগে
এলডিসি থেকে উত্তরণ ছয় বছর পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের (গ্রাজুয়েশন) সময়সীমা ৬ বছর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, আগামী বছর বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া হবে ভুল সিদ্ধান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের বেসরকারি খাত।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি) আয়োজিত ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশন: সাম অপশনস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
সেমিনারে সূচনা বক্তব্যে আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এখনো এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। মুক্ত বাণিজ্যে বাংলাদেশের দর কষাকষির সক্ষমতা, রপ্তানি বৈচিত্র্য, শিল্পখাতে দক্ষ মানবসম্পদ, বিদেশি বিনিয়োগ আনা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু সহনশীলতা সৃষ্টি না করেই এলডিসি গ্রাজুয়েশন দেশের অর্থনীতিকে বিপদের মুখে ফেলবে।
মাহবুব জানান, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের প্রথম ঝাপটা আসবে শুল্ক বৃদ্ধির ওপর। জিএসপিসহ অন্যান্য সুবিধা হারালে দেশে রপ্তানি ৬ থেকে ১৪ শতাংশ কমে আসবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা সংস্থা দ্য থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের (টিডব্লিউএন) লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও গবেষক সানিয়া রেইড স্মিথ।
সানিয়া বলেন, অনেক দেশই এলডিসি গ্রাজুয়েশনের সক্ষমতা অর্জনের পরেও পিছু হটেছে। অ্যাঙ্গোলার মতো দেশ গ্রাজুয়েশনের এক সপ্তাহ আগে প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে। মিয়ানমারের ২০২৪ সালে গ্রাজুয়েশন হওয়ার কথা থাকলেও তারা আগ্রহ দেখায়নি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএপিআই) সভাপতি আবদুল মুক্তাদির জানান, দেশের ওষুধ শিল্প কঠিন সময় পার করছে। শীর্ষ ১০০ কোম্পানির মধ্যে ৩০ শতাংশ কোম্পানিই বাজারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। পেটেন্ট বাধ্যবাধকতা না থাকায় বর্তমানে অনেক দুর্মূল্য ওষুধ কম দামে পাওয়া গেলেও এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর দাম বাড়বে ১০ গুণ। কয়েকশত টাকার হেপাটাইটিস-বি টিকার দাম হবে ১ হাজার ডলার।
অভিযোগ জানিয়ে মুক্তাদির বলেন, ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশনে কোন কোন ওষুধে কী প্রভাব পড়বে, দাম কেমন হবে, পেটেন্ট পাওয়া কতটা কঠিন হবে সব তালিকা বিআইপির হাতে আছে। সরকারকে বারবার বলার পরেও তাদের সঙ্গে বসা যাচ্ছে না, আগ্রহ দেখাচ্ছে না তারা। যে ওষুধ শিল্প এখন বছরে ৩ বিলিয়ন ডলার রফতানি আনে—এ শিল্পের ওপর গুরুত্ব দিলে আয় দ্বিগুণ হতো।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বাংলাদেশ অবশ্যই এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাবে, তবে এখন নয়। দেশের প্রস্তুত হতে আরও সময় দরকার। দেশের জ্বালানি খাতের এমন করুণ দশার মধ্যে কোনো সমাধান না নিয়ে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে গেলে পোশাক খাতে ধস নামবে।
পড়ুন: মালয়েশিয়ার শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
‘যদিও এক বছরে ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে; এলএনজি আমদানি পর্যাপ্ত ডলার আছে, কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণ এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। গভীর সমুদ্র বন্দর এখনো প্রস্তুত হয়নি—এলএনজি আমদানি সহজ করতে আগে গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ শেষ করতে হবে,’ জানান বাবু।
লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘৬ বছরের আগে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী হবে। ২০২৬ সালের নভেম্বরে কোনোভাবেই বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া উচিত হবে না। গ্রাজুয়েশনের জন্য ২০৩২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।’
মঞ্জুর জানান, দিনকে দিন বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছে। জাহাজ ভাড়ার কারণে রপ্তানি খাতে প্রতিটি ব্যবসায়ী বিপদে। বাংলাদেশের মতো এত জাহাজ ভাড়া অন্য কোনো দেশকে দিতে হয় না। এ অবস্থায় খাত কলমে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার সক্ষমতা থাকলেও ভবিষ্যতের জন্য এটি ভুল সিদ্ধান্ত।
ঢাকা চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের রপ্তানির ৯০ শতাংশ ওষুধ, পোশাক ও চামড়াখাতে। এ খাত সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিরা বলছেন গ্রাজুয়েশনের জন্য ৬ বছর অপেক্ষা করতে হবে, সেটি সরকারের ভেবে দেখা উচিত। আর এর চেয়েও ভালো কোনো প্রস্তাব সরকারের হাতে থাকলে তাদের উচিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসা।’
ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সায় দিয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, সরকার, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে একটি সিদ্ধান্তে দ্রুত আসা উচিত। বাংলাদেশের সঙ্গে আগামী বছর নেপালও এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাবে—তাদের সঙ্গেও সমন্বয় জরুরি।
‘ব্যাংকিং খাত বাদে দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য সংস্কার আসেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে নানান বিষয় নিয়ে আলাপ হলেও অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি কেউ আমলে নেয়নি। শ্বেতপত্র কমিটির বেশিরভাগ সুপারিশই গ্রহণ করা হয়নি। এ অবস্থায় সংস্কার ছাড়া এলডিসিতে গেলে দেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও বিনিয়োগে বিপদের মুখে পড়বে,’ শঙ্কা প্রকাশ করেন সেলিম।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এলডিসির জন্য বাংলাদেশ যতটা না অর্থনৈতিক বিবেচনায় এগিয়েছে, তার থেকেও এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ ছিল বড়। বিগত সময়ের রাজনৈতিক সাফল্য দেখাতে সক্ষমতা ও প্রস্তুতি ছাড়াই এলডিসি গ্রাজুয়েশন ভালো ফল বয়ে আনবে না।
২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার কথা। এলডিসি গ্রাজুয়েশনে গেলে এতদিন স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে বাংলাদেশ যে শুল্ক ও পেটেন্ট সুবিধা পেত তা আর বলবৎ থাকবে না।
এ অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।
১১২ দিন আগে
চার মাস পর ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু
আমদানিতে সরকারের অনুমতি পাওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বেশ কয়েকটি চাল বোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করে।
বন্দরের সায়রাম ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চালের এই প্রথম চালান দেশে আনেন।
এর ফলে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে বলে ধারণা করছেন আমদানিকারকরা।
বন্দরের আমদানিকারক ললিত কেশরা জানান, দেশে চালের মজুদ ও ভোক্তা পর্যায়ে দাম স্বাভাবিক রাখতে এ পর্যন্ত বন্দরের ২৮ জন আমদানিকারক অনুমতি পেয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে দেশে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমদানির কারণে দেশে চালের বাজারে দাম অনেকটা কমে আসবে। ফলে ভোক্তারা কম দামে চাল কিনতে পারবেন।
এ দিকে বন্দরের উপ-সহকারী ইউসুফ আলী জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দরের ২৮ জন আমদানিকারক ৪০ হাজার মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি করার অনুমতি পেয়েছেন।
পর্যায়ক্রমে আরও আমদানিকারকরা চাল আমদানির অনুমতি পাবেন বলেও জানান তিনি।গত ১৫ এপ্রিল থেকে দেশে চাল আমদানি বন্ধ ছিল।
১১৪ দিন আগে
বাংলাদেশের জন্য শুল্ক ২০ শতাংশ করা স্বস্তির: বিজিএমইএ সভাপতি
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে পাল্টা শুল্ক ৩৫ থেকে কমে ২০ শতাংশ হওয়াটা আমাদের জন্য স্বস্তির বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
শুক্রবার (১ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাস নিয়ে এক অভিমতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পাল্টা শুল্ক নিয়ে গত তিন মাস ধরে আমরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলাম। অনিশ্চয়তার মধ্যে ব্যবসা–বাণিজ্য করা কঠিন। মার্কিন ক্রেতারাও পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন তারা। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ হওয়াটা আমাদের জন্য স্বস্তির।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম, প্রতিযোগী দেশের তুলনায় আমাদের পণ্যে পাল্টা শুল্ক বেশি হলে ব্যবসা কঠিন হয়ে যাবে। তবে প্রতিযোগী দেশ পাকিস্তানের চেয়ে আমাদের পাল্টা শুল্ক ১ শতাংশ বেশি হলেও ভারতের চেয়ে ৫ শতাংশ কম। এ ছাড়া চীনের চেয়ে ১০ শতাংশ কম। এটি আমাদের জন্য বড় স্বস্তির।
তবে তিনি আশঙ্কা করে বলেন, বাড়তি পাল্টা শুল্কের কারণে সাময়িকভাবে ব্যবসা কমতে পারে। তার কারণ আগের থেকে পণ্য আমদানিতে বেশি শুল্ক দিতে হবে মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে। এতে তাদের মূলধনে টান পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে তারা যদি বাড়তি অর্থায়নের সংস্থান না করতে পারে তাহলে ক্রয়াদেশ কম দেবে। তা ছাড়া বাড়তি শুল্ক শেষ পর্যন্ত ক্রেতাদের ঘাড়ে গিয়েই পড়বে। শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়লে ক্রেতারা চাপে পড়বেন। তাতে পণ্যের বিক্রি কমে যেতে পারে।
পড়ুন: শুল্ক হ্রাসে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন
গত এপ্রিলে প্রথম দফায় সব দেশের পণ্যের ওপর নূন্যতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যাকর করে ট্রাম্প প্রশাসন। সেটি মার্কিন ক্রেতারা বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করেছে। কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের চাপে আমাদের সরবরাহকারীদের সেই বাড়তি শুল্কের ভাগ নিতে হয়েছে। আমি আমাদের বিজিএমইএর (বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি) সদস্যদের বার্তা দিতে চাই, বাড়তি এই শুল্ক আমদানিকারক ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকেই দিতে হবে। আর তারা দিন শেষে সেটি মার্কিন ভোক্তাদের ওপরই গিয়ে পড়বে। ফলে এই বিশেষ বার্তা পরিষ্কার থাকতে হবে।
তিনি বলেন, চীনের ওপর এখন পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক আছে ৩০ শতাংশ। শিগগিরই দেশটির ওপর চূড়ান্ত পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে যতদূর আভাস মিলছে, তাদের শুল্কহার আমাদের চেয়ে কম হবে না। ফলে দিন শেষে চীন থেকে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থানান্তরিত হওয়া অব্যাহত থাকবে। তাতে আমাদের ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ আসবে। সে ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি সরবরাহ, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মতো বিষয়গুলো অনুকূলে থাকতে হবে।
পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যে শুল্ক কমানো ‘সন্তোষজনক’: আমীর খসরু
শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের এই নেতা আরও বলেন, যেহেতু এখন পর্যন্ত আমরা চুক্তির খসড়া বা সার সংক্ষেপ শুধু জেনেছি বিস্তারিত পাইনি, তবে আশা করি আমাদের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল দেশের ও বাণিজ্য স্বার্থ বজায় রেখেই চুক্তি সম্পাদন সম্পন্ন করেছেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পাল্টা শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশ কতগুলো প্রতিশ্রুতি ও চুক্তি করেছে, সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। তার মধ্যে গম, তুলা, এলএনজি কেনার মতো স্বল্প মেয়াদি এবং উড়োজাহাজ কেনার মতো দীর্ঘমেয়াদি বিষয় আছে। ‘এখানে কোনো গাফিলতি থাকলে আমরা পুনরায় বিপদে পড়তে পারি,’ সতর্ক করেন তিনি।
১২৫ দিন আগে
আদানি পাওয়ারের সব পাওনা মিটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ
ভারতের আদানি পাওয়ারের সরবরাহকৃত বিদ্যুতের বিপরীতে ৪৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির সব বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে বকেয়া ছিল, তা ‘সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ’ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত আদানি পাওয়ারের বকেয়ার সবচেয়ে বড় কিস্তিটি পরিশোধটি করা হয়েছে জুনে। এর আগে সাধারণত প্রতি মাসে কোম্পানিটি বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৯ থেকে ১০ কোটি ডলার করে পেত।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বকেয়া বিল, সুদের টাকা ও অন্যান্য চার্জ পরিশোধের মাধ্যমে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিটি আর্থিক ও আইনি দিক থেকে এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ যে কয়েকটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, তাও মিটে গেছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: আদানির সময়সীমা নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত: প্রেস সচিব
ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করছে আদানি পাওয়ার। সূত্র জানিয়েছে, সব পাওনা পরিশোধ হওয়ায় এখন ঢাকা কর্তৃপক্ষ আদানিকে নির্দেশ দিয়েছে, ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিটই (মোট ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট) যেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী চালু রাখা হয়।
সূত্র আরও জানায়, আদানি ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া এক সমঝোতা অনুযায়ী, গত অর্থবছরের বকেয়া জুনের মধ্যে পরিশোধ করা হলে বিলম্ব সুদ মওকুফ করার কথা। বাংলাদেশ সে শর্ত পূরণ করেছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে সময়মতো বিল পরিশোধ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ দুই মাসের সমপরিমাণ বিল (প্রায় ১৮ কোটি ডলার) সমমূল্যের একটি এলসি এবং সব বকেয়ার জন্য সার্বভৌম গ্যারান্টিও দিয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৯০ কোটি ডলার।
কোম্পানিটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার দিলীপ ঝা সে সময় জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মোট বিল ২০০ কোটি ডলার, যার মধ্যে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষ নাগাদ আদায় হয়েছে ১২০ কোটি ডলার। তবে দেরিতে পরিশোধের জন্য আরও ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিল করা হয়েছে।
১৫৫ দিন আগে
এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ
সামগ্রিকভাবে পোশাক আমদানি কমালেও গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বস্ত্র ও পোশাক বিষয়ক সরকারি দপ্তর ওটেক্সার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৪০ কোটি ডলার। সেখানে ২০২৪ সালে ৭৩৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। অর্থাৎ এই এক দশকে দেশটিতে পোশাক রপ্তানিতে ৩৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির ধারা ইতিবাচক থাকলেও করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে রপ্তানি ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে যায়। ২০১৯ সালে যেখানে রপ্তানি ছিল ৫৯২ কোটি ডলার, ২০২০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫২২ কোটিতে।
তবে ২০২০ সালে পোশাক রপ্তানির পালে ফের হাওয়া লাগে। ওই সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক আমদানি বৃদ্ধির হারকেও (২৩.৭২ শতাংশ) ছাড়িয়ে যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫১৬ কোটি ডলার, ২০২৪ সালে যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯২৬ কোটি ডলারে। অর্থাৎ, এক দশক পর দেশটির পোশাক আমদানি কমেছে বছরে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার স্থির থাকলেও করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালে বড় ধরনের ধাক্কা খায় যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি খাত। ২০১৯ সালে দেশটি ৮ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করলেও পরের বছর তা নেমে আসে ৬ হাজার ৪০৬ কোটিতে, এক বছরের ব্যবধানে যা ২৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম।
করোনা-পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দা এতটাই গভীর ছিল যে, ২০২৪ সালেও তারা ২০১৫ সালের আমদানির স্তরে ফিরে যেতে পারেনি।
ওটেক্সার প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দার সময় দেশটির ভোক্তারা তাদের ব্যয় কমিয়ে দেয়, যার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে পোশাক খাতে।
যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পোশাক বাজারের ৯৫ শতাংশ আমদানিনির্ভর। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলের আগে থেকে আরোপিত উচ্চ শুল্কহার (গড়ে ১৮.৫ শতাংশ), ক্রমবর্ধমান পরিবহন খরচ ও পোশাকের স্বল্প বিপণন আয়ুর মতো বিষয়গুলো সরবরাহ ব্যবস্থায় সমন্বয়ের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
এতসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির এই ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেশের শিল্পের সক্ষমতারই প্রমাণ দেয়।
১৫৭ দিন আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেশটির মন্ত্রীর
শ্রীলঙ্কার শিল্প ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী সুনীল হন্দুন্নেত্তি জানান, বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিতে তাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগ করতে চাইলে তাদের সর্বোচ্চ নীতি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সিলন চেম্বার অব কমার্সের বাণিজ্য আলোচনা সভায় সুনীল বলেন, শুধু বাণিজ্যিক সুবিধা নয়, আঞ্চলিক অগ্রগতির স্বার্থ অর্জনে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে প্রচুর সম্ভবনা থাকলেও তা কাজে লাগানো যায়নি। দুই দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য টেক্সটাইল, ঔষধ, জাহাজ নির্মাণ এবং ডিজিটাল পরিষেবা প্রভৃতি খাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
সুনীল হন্দুন্নেত্তি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে শ্রীলঙ্কার সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে নানাবিধ সুবিধা দিচ্ছে। শ্রীলঙ্কায় বাণিজ্য কাঠামোর সহজীকরণ, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা কমাতে দেশটি একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সহায়ক হবে।
পড়ুন: ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে কোনো সমস্যা হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
এছাড়াও তিনি দুদেশের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মধ্যকার কার্যকর সংযোগ স্থাপনের উপর জোর দেন, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে সিলন চেম্বারের চেয়ারম্যান ডুমিন্ডা হুলানগামুয়া বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কার অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু সার্কভুক্ত দেশ দুটোর মধ্যে বাণিজ্যিক পরিসংখ্যান পারস্পরিক বাণিজ্যের প্রকৃত সম্ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায় না। এখনই সময় পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির। বাংলাদেশের বেসরকারিখাতকে অত্যন্ত ব্যবসাবান্ধব ও সহনশীল। শ্রীলঙ্কা সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
ডুমিন্ডা বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে পর্যটন এবং লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই'র সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সার্কভুক্ত দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখনও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। তবে দুদেশের বেসরকারিখাতের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের লজিস্টিক অবকাঠামো, পর্যটন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, নির্মাণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তাবৃন্দ এগিয়ে আসতে পারে।
পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে ঔষধ, তৈরি পোষাক, পাদুকা, ইলেকট্রনিক্স, পাটজাত পণ্য আমদানির জন্য শ্রীলংকার উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দুদেশের মধ্যকার অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) দ্রুততার সঙ্গে স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তাসকীন। এছাড়াও সমুদ্র অর্থনীতি, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহায়তা বাংলাদেশের এখাতে দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
১৭০ দিন আগে
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে কোনো সমস্যা হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সচিবালয়ে সম্প্রতি ভারত দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহনে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘হঠাৎ করেই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। বুধবার অংশীজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।’
‘ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে কোনো সমস্যা বোধ করছি না। নিজস্ব সক্ষমতা ও রপ্তানির ক্ষেত্রে যোগাযোগের যেন কোনো ঘাটতি না পড়ে, সেজন্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি, এ সমস্যা কাটিয়ে উঠব।’
যদিও সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে—সেটি এই মুহূর্তে শেয়ার করব না। যে প্রতিবন্ধকতাগুলো আছে, সেগুলো কিছু কাঠামোগত, কিছু আবার খরচের দিক থেকে; এসব বিষয়গুলো সমন্বয় করে সক্ষমতা বাড়ানো হবে।’
এ বিষয়ে ভারতকে কোনো চিঠি দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার আপাতত এমন কিছু ভাবছে না।’
আরও পড়ুন: বেনাপোল থেকে ফেরত এলো বাংলাদেশের ৪ পণ্যবাহী ট্রাক
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধায় কী পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয় জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ৪০-৫০ হাজার টনের মতো পণ্য সড়কপথে ভারতের বিভিন্ন বন্দর, বিশেষ করে দিল্লি ও কলকাতার মাধ্যমে রপ্তানি হতো। এই পণ্যগুলো পরিবহনের জন্য নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়ে খুব তাড়াতাড়িই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক স্থগিতের বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘এটি ভালো খবর। এর ফলে দেশের বাণিজ্যে স্থিরতা আসবে।’
উপদেষ্টা আরও জানান, গতকাল (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে অনলাইনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
এ সময় শিগগিরই বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘সেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হবে।’
২৩৮ দিন আগে
ভারত থেকে দর্শনা রেলবন্দর দিয়ে এলো চালের প্রথম চালান
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা রেলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানির প্রথম চালান বাংলাদেশে এসেছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২ হাজার ৪৫০ টন চাল রেলবন্দরের ইয়ার্ডে পৌঁছায়। চালগুলো ভারতের বন্দর দিয়ে ৪২ ওয়াগনে করে বাংলাদেশে আসে।
এ সময় ভারতের রেলের পরিচালক সাগতম বালাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দর্শনা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান হাবু।
আরও পড়ুৃন: ভারত থেকে চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে আরও একটি জাহাজ
তিনি বলেন, ঢাকার পুরানা পল্টনের মেসার্স মজুমদার অ্যাগ্রোটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এ চাল আমদানি করেছে। প্রতি টন চালের মূল্য ৪৯০ ডলার। কলকাতার ৭/১ লর্ড সিনহা রোডের সৌভিক এক্সপোর্ট লিমিটেড এ চাল রপ্তানি করেছে।
দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের ম্যানেজার মির্জা কামরুল হাসান জানান, কাস্টমস পরীক্ষণ ও শুল্কায়নের পর এ চাল ঈশ্বরদী ও সিরাজগঞ্জে বুকিং হবে। সেখান থেকে ট্রাকযোগে আমদানিকারক চাল পরিবহন করবেন।
উল্লেখ্য, ভারত থেকে বাংলাদেশ সরকার এক লাখ ৫৯ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে। দর্শনা বন্দর দিয়ে এ চালের প্রথম চালান দেশে প্রবেশ করল।
৩২৩ দিন আগে
পেট্রাপোলে আসছেন অমিত শাহ, বেনাপোলে ২ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে এশিয়ার বৃহত্তম স্থলবন্দর ভারতের পেট্রাপোলে আধুনিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালটি রবিবার (২৭ অক্টোবর) উদ্বোধন করবেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এই উপলক্ষে শনিবার ও আগামীকাল রবিবার দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।
আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল চেকপেস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক থাকবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) টার্মিনালটি উদ্বোধনের কথা ছিল। রৈরী আবহাওয়ার কারণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক রাশেদুল সজিব নাজির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগামীকাল (রবিবার) পেট্রাপোলে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগমনকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজ শনিবার ও আগামীকাল রবিবার দুইদিন বেনাপোল-পেট্রপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যানেজার কমলেশ শাইনি। তবে আগামী সোমবার (২৮ অক্টোবর) থেকে আবারও এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি চালু হবে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে ৪ দিন বন্ধ আমদানি-রপ্তানি
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ ভূঁইয়া জানান, পেট্রাপোলে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বন্ধ নিয়ে তেমন কিছুই জানায়নি। তাই আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী যাতায়াত আগের মতোই স্বাভাবিক থাকবে।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, এশিয়ার বৃহত্তম পেট্টাপোল প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সীমান্তে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দুইদিন বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছেন পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আগামী সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালু হবে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরে ৩ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
৪০৪ দিন আগে