অন্যান্য
আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন
অর্থ আত্মসাৎ, হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবং তার ভাই আলিসান চৌধুরী। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত জবাব দাখিলের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক আফরোজা তানিয়া তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহজাবীন চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, বাদীর আর্জির সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। তিনি ঘটনাস্থল উল্লেখ করেছেন হাতিরঝিল, কিন্তু মামলা করতে গেছেন ভাটারা থানায়। পরে সেখানে মামলা না নেওয়ায় সরাসরি আদালতে মামলা দায়ের করেন বাদী।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর এ মামলায় মেহজাবীন ও তার ভাই আলিসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।
গত ১০ নভেম্বর মামলাটিতে আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল। তবে তারা আদালতে হাজির হননি। এ জন্য আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, আমিরুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন পরিচয়ের সুবাদে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মেহজাবীন চৌধুরীর নতুন পারিবারিক ব্যবসার পার্টনার হিসেবে রাখার কথা বলেন। এ কারণে বাদী নগদ অর্থে এবং বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে ২৭ লাখ টাকা দেন। এরপর মেহজাবীন ও তার ভাই দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ না নেওয়ায় আমিরুল ইসলাম বিভিন্ন সময় টাকা চাইতে গেলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন আসামিরা।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আবারও পাওনা টাকা চাইতে যান তিনি। তখন তাকে ১৬ মার্চ হাতিরঝিল রোডের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলা হয়। ওই দিন ঘটনাস্থলে গেলে মেহজাবীন ও তার ভাইসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন তাকে গালিগালাজ করেন। তারা বলেন, ‘এরপর তুই আমাদের বাসায় টাকা চাইতে যাবি না। তোকে বাসার সামনে আবার দেখলে জানে মেরে ফেলব।’
বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভাটারা থানায় গেলে কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। এ ঘটনায় আমিরুল ইসলাম ২৪ মার্চ বাদী হয়ে ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
১৮ দিন আগে
ঢাকায় উনা হাইল্যান্ডের একক প্রদর্শনী: আইরিশ-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সম্পর্কে নতুন দিগন্ত
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোনো আইরিশ শিল্পীর একক প্রদর্শনী হিসেবে উদ্বোধন করা হয়েছে খ্যাতনামা আইরিশ শিল্পী উনা হাইল্যান্ডের প্রদর্শনী ‘অ্যান দুআনায়ার: ভিজুয়াল পোয়েমস অব দ্য ডিসপসেসড’।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর বারিধারার গার্ডেন গ্যালারিতে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল মাসুদ খান।
গ্যালারি কসমস ও আয়ারল্যান্ড দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ আর্ট একচেঞ্জ প্রোগ্রাম’র অংশ হিসেবে এই আয়োজন দেশদুটির মধ্যে সাংস্কৃতিক সংলাপ ও শিল্প বিনিময়ের একটি গতিশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি বলেন, ঢাকায় তিন সপ্তাহের এক সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন উনা হাইল্যান্ড। বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগে অংশ নেওয়া প্রথম আইরিশ শিল্পী তিনি। ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি পেশাদার শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন বলেও উল্লেখ করেন কেভিন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আয়াল্যান্ডের দূতাবাস না থাকলেও তারা উন্নয়ন, বাণিজ্য ও অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের সহযোগী। এ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত জানান, ঢাকায় অবস্থানকালে উনা শিল্পের মাধ্যমে স্মৃতি, নিরাময় ও সম্মিলিত প্রতিফলনের সম্পর্ক অনুসন্ধান করবেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃজনশীলতাকে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি হিসেবে দেখার দর্শন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস ও শিল্পের দৃঢ়তাকে তার কাজে তুলে ধরবেন।
এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে আরও গভীর শিল্প-সহযোগিতা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন কেভিন। তার মতে, এই উদ্যোগের ফলে শুধু আইরিশ শিল্পীরাই বাংলাদেশে আসবেন না, বরং বাংলাদেশের শিল্পীরাও আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
অনুষ্ঠানে আগত দেশ ও বিদেশের সব অতিথিকে স্বাগত জানিয়ে কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ খান বলেন, ‘শুরুতে আমি একটু চিন্তিত ছিলাম— যথেষ্ট সময় পাবো কি না, সবকিছু ঠিকভাবে হবে কি না। কিন্তু আমাদের সবার প্রচেষ্টা, আর বিশেষ করে উনা’র অক্লান্ত পরিশ্রমে সবকিছু দারুণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’
আইরিশ এই শিল্পীকে অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ, পরিশ্রমী ও দারুণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হিসেবে উল্লেখ করে মাসুদ বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে আশা করি তিনি আবারও বাংলাদেশে আসবেন।’
মাসুদ খান বলেন, শিল্পীদের স্থিতিশীলতা দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের কাজ উন্নত করতে পারেন, উদ্ভাবন করতে পারেন এবং শিল্পক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। এই দিক থেকে আয়ারল্যান্ড অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। আমাদের একে অপরের কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু আছে।
২৯ দিন আগে
ক্যাফে: কোক স্টুডিও বাংলায় হৃদয়ের সুর আর পুরনো দিনের স্মৃতির এক দারুণ ফিউশন
কিছু গান শুধু শোনা হয়, আর কিছু গান আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে—যেন একটা নতুন জায়গায় নিয়ে যেতে চায়। ঠিক তেমনি ‘ক্যাফে’ গানটি শুনলে মনে হবে বাংলা ও ল্যাটিন সুরের মিশ্রণ ঘটেছে, কারণ এটি একটি আধুনিক বাংলা গান যা ল্যাটিন সঙ্গীতের প্রভাবকে ধারণ করে।
শায়ান চৌধুরী অর্ণবের এই নতুন কাজ, ‘ক্যাফে’ ঠিক সেইরকম একটি গান ও আধুনিক বাংলা সংগীতের অংশ। যেখানে ঐতিহ্যবাহী বাংলা গানের সঙ্গে ল্যাটিন সুরের মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে।
এছাড়া একটা উষ্ণ, আবছা আলোয় ভরা ঘরকে যদি শব্দ দিয়ে ধরে রাখা যেত, সেটা এই গানটাই হতো। এটি মূলত একটি সংগীত শৈলী, যা দুইটি ভিন্ন ধারার সুর ও তালকে একত্রিত করে।
তাছাড়াও এই গানটি আমদের মধ্যে নতুন ও আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা প্রদান করে। একইসঙ্গে মনে করিয়ে দেয় যে— জীবনের "Real Magic" আসলে দুটো মনের নীরবতার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে।
আরো পড়ুন: ঢাবিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ক্যাম্পাস স্ট্যান্ডআপ কমেডি শো ‘হাসির আড্ডা'
গানটিতে বাংলা গানের স্বাভাবিক ঢঙ এবং ল্যাটিন সঙ্গীতের ছন্দ, যেমন সালসা বা অন্যান্য ল্যাটিন নাচের গানের সুরের প্রভাব থাকে। বিশেষ করে ঐতিহ্য আর নতুনত্বের দারুণ বোঝাপড়া।
এই গানের শেকড়টা মজবুত দুটো জায়গায়— একটা হলো গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের (মহীনের ঘোড়াগুলি) সেই প্রিয় নস্টালজিক সুর "আমার প্রিয় ক্যাফে", আর অন্যটা হলো এডি পালমিয়েরির ক্লাসিক "Café"-এর দারুণ ছন্দ। এছাড়া প্রযোজক শুভেন্দু দাশ শুভ খুব দক্ষতার সঙ্গে দুটো ভিন্ন ধারাকে এমনভাবে এক করে দিয়েছেন যে সুরটা শুনতে একইসঙ্গে চেনা আর দারুণ ফ্রেশ লাগে।
এদিকে তানযীর তুহিনের কণ্ঠস্বরে বাংলার সেই চেনা "নস্টালজিয়া" দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। ক্যাফে যেন ছোট ছোট ব্যক্তিগত গল্পের একটি জীবন্ত বই। এই গানের ভেতরের কথাগুলো তার আন্তরিক উষ্ণতায় যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।
গাবুর পারকাশন যেন সেই পুরনো ছন্দের ধারক, একটা জটিল অথচ মসৃণ রিদম তৈরি করেছে। আর লিভিয়া মাত্তোসের অ্যাকর্ডিয়ন ইউরোপীয় ফোক-জ্যাজের একটা জাদুকরী, মিষ্টি ছোঁয়া দিয়েছে। যখন ব্রাস সেকশন (ফ্র্যান্সিস আর অপূর্ব) বাজনা শুরু করে, তখন শান্ত গানটা যেন উড়তে শুরু করে, ভেতরের সেই নীরব ভাবনাগুলো একটা প্রাণবন্ত নাচে বদলে যায়।
আরো পড়ুন: ‘আমিই নজরুল সম্মাননা’ পেলেন খিলখিল কাজী, ইয়াসমিন মুশতারী ও অনুপম হায়াৎ
‘ক্যাফে’কে একটা ফিউশন বলার চেয়ে আগে একটা অনুভূতি বলাই ভালো। গানের নোটে বলা সেই শান্ত শক্তিকে এটা ধরে রেখেছে: শেষ বিদায়, প্রথম দেখা, বা দুটো মনের মাঝে একটুখানি চুপ থাকা। এই দারুণ মিউজিক পিসটা প্রমাণ করে যে কিছু আবেগ—যেমন নিখুঁত কফি বা নীরব মুহূর্ত—ভাষা বা দেশের সীমানা বোঝে না।
এই একটা গান তৈরি করতে যতজন যুক্ত ছিলেন, সবার জন্যেই এটা একটা দারুণ অর্জন। মিথুন চক্রবর্তী, প্রদ্যুৎ চ্যাটার্জিয়ার মতো শিল্পীরা তো আছেনই, সঙ্গে আছেন ফয়জান আর আহমদ (বুনো) এবং সৈয়দ গাউসুল আলম শাওনের নেতৃত্বে থাকা বিশাল ক্রিয়েটিভ আর সাউন্ড টিম।
তারা শুধু একটা গান বানাননি; তারা এমন একটা জায়গার নীরবতা ধরে রেখেছেন যেখানে সবার ব্যক্তিগত গল্পের টুকরোগুলো মিশে থাকে।
আরো পড়ুন: ধ্রুপদী সঙ্গীতে মুগ্ধতা ছড়াল সিদ্ধেশ্বরী ’৬৯ ব্যাচের সঙ্গীতানুষ্ঠান
৩৯ দিন আগে
ধ্রুপদী সঙ্গীতে মুগ্ধতা ছড়াল সিদ্ধেশ্বরী ’৬৯ ব্যাচের সঙ্গীতানুষ্ঠান
‘সঙ্গীত সেই বিশ্বজনীন সেতুবন্ধন, যা হৃদয়কে যুক্ত করে, শব্দের সীমা ছাড়িয়ে আত্মাকে ছুঁয়ে যায়’—এই ভাবনা কেন্দ্র করেই বুধবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারের একটি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক হৃদয়গ্রাহী ধ্রুপদী সঙ্গীতানুষ্ঠান ও আলোচনা সভা।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিদ্ধেশ্বরী ’৬৯ ব্যাচ। বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এই কনসার্টে কানায় কানায় পূর্ণ অডিটোরিয়াম পরিণত হয় সুর, তাল ও আবেগের অপূর্ব মিলনমেলায়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আদ্দীন মেডিকেল কলেজের উপদেষ্টা ডা. মুনশি আনোয়ার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিদ্ধেশ্বরী ব্যাচ ’৬৯-এর কনভেনার ফজলুল করিম আবিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রতিষ্ঠানের গর্বিত প্রাক্তন ছাত্র ও প্রজন্মের অনুপ্রেরণা— প্রফেসর মোস্তফিজুর রহমান।
ভারতের লখনৌয়ের পণ্ডিত রবিশঙ্কর ঘরানার অধীনে পণ্ডিত সমরেশ চৌধুরীর শিষ্য শ্রী অদিত্য নির্মল ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান শিল্পী ও উপস্থাপক। তিনি মনোমুগ্ধকর সুরযাত্রার মধ্য দিয়ে ধ্রুপদী সঙ্গীত ও সংস্কৃতির আন্তঃসম্পর্কিত ইতিহাস তুলে ধরেন। তার পরিবেশনায় ধ্রুপদ, খেয়াল, ঠুমরি ও ভজন ধারার বিবর্তন বাঙলা ভাষা, মানুষ ও সংস্কৃতির ইতিহাসের সঙ্গে মিলেমিশে এক হয়ে ওঠে।
বাঙলায় বর্ণনার পাশাপাশি অদিত্য নির্মল পরিবেশন করেন রাগ কৌশিক ধ্বনি, রাগ খামাজ, রাগ ভৈরবী, রাগ যামন ও রাগ বসন্ত। তিনি ছোট খেয়াল ও বাংলা খেয়ালের ধারায় পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন—যার জন্য তাকে বাংলাদেশের নবপ্রবর্তক হিসেবে গণ্য করা হয়। পরিবেশনার ফাঁকে তিনি ব্যাখ্যা করেন বাংলা ভাষা, জাতিসত্তা ও ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের পারস্পরিক সম্পর্ক, সমাজ-ধর্ম-সংস্কৃতির সংযোগ, এবং নজরুলগীতি, হাম্দ-নাত ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের ঐক্যসূত্র।
সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় নজরুলগীতির মধ্যে ‘বাগিচায় বুলবুলি তুই’ ও ‘ভরিয়া পুরণ’, যা অদিত্য নির্মল নিজেই হরমোনিয়ামে পরিবেশন করেন। পাশাপাশি আরও একটি নজরুলগীতি, কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং ঠুমরি ‘কাকরু সাজনি’ পরিবেশন করেন ধ্রুপদী ঘরানার গভীর আবেগে।
যন্ত্রসঙ্গীতে ছিলেন শ্রী দিলীপ বিশ্বাস (হরমোনিয়াম), পণ্ডিত উজ্জ্বল রায় ও রাহুল চ্যাটার্জি (তবলা)। তাঁরা তিনতাল লহরায় যুগলবন্দি পরিবেশন করে শ্রোতাদের মন জয় করেন। পণ্ডিত উজ্জ্বল রায় ভারতের খ্যাতনামা তবলাশিল্পী, যিনি পণ্ডিত স্বপন চৌধুরী, পণ্ডিত অশোক মেহতা, পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকর, পণ্ডিত যোগেশ সামসি ও পণ্ডিত স্বরাজ ভট্টাচার্যের শিষ্য। রাহুল চ্যাটার্জি তাঁর শিষ্য এবং দিলীপ বিশ্বাস প্রশিক্ষণ নিয়েছেন পণ্ডিত জ্যোতি গোহো’র কাছে।
ধ্রুপদী ও যন্ত্রসঙ্গীত ছাড়াও পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, ঠুমরি ও কবীর সুমনের বাংলা খেয়াল। সঙ্গে যুক্ত হয় জীবনানন্দ দাশ, কাজী নজরুল ইসলাম ও জসীমউদ্দিনের কবিতা ও দর্শনভিত্তিক ভাবনা, যা হাম্দ পরিবেশনার সঙ্গে মিলিত হয়ে অনুষ্ঠানে এনে দেয় আধ্যাত্মিক ও সাহিত্যিক পরিমিতি।
পুরো বিকেলজুড়ে অডিটোরিয়াম প্রতিধ্বনিত হয় করতালির শব্দে। প্রতিটি আলাপ, তান ও তালের ছন্দে বিমুগ্ধ শ্রোতারা যেন অনুভব করেন—সঙ্গীতই সেই ভাষা, যা শব্দের সীমা ছাড়িয়ে হৃদয়কে এক সূত্রে বেঁধে রাখে।
আয়োজনে নিখুঁত সমন্বয় ও আন্তরিকতার ছাপ রাখে সিদ্ধেশ্বরী ’৬৯ ব্যাচ, যাদের প্রচেষ্টা ধ্রুপদী ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রশংসিত হয় দর্শক-শ্রোতাদের কাছে।
৪২ দিন আগে
‘আমিই নজরুল সম্মাননা’ পেলেন খিলখিল কাজী, ইয়াসমিন মুশতারী ও অনুপম হায়াৎ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় নজরুল চর্চা ও গবেষণাকেন্দ্র আমিই নজরুল আয়োজন করে ‘নজরুল স্মরণে’ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো তিনজন নজরুল গুণীকে আমিই নজরুল সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন— জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংগীতশিল্পী নজরুল-দৌহিত্রী খিলখিল কাজী, প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ইয়াসমিন মুশতারী এবং নজরুল গবেষক ও লেখক অনুপম হায়াৎ।
খিলখিল কাজী বলেন, ‘সম্মাননা পেয়ে গর্বিত বোধ করছি। আমি দাদু নজরুল ইসলামকে পাশে পেয়ে বড় হয়েছি। আমাদের পরিবারে হাসি-গান ছিল জীবনের অংশ। দাদু ১৯৪২ সালে অসুস্থ হয়ে স্তব্ধ হয়ে যান। তারপর থেকে তিনি যেন শিশুর মতো হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় দাদি প্রমীলা নজরুল তার সব কাজে পাশে থেকেছেন। তাদের বাসায় সে সময় অনেকেই কবিকে দেখতে আসতেন। ছাত্রছাত্রীদের গানবাজনার আসরও বসত। এতে কবি আনন্দ পেতেন, মনে হতো তিনি আবার কথা বলা শুরু করবেন।’
তিনি বলেন, ‘দাদু ধর্মের চেয়ে মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি সারা জীবন অত্যাচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে লিখেছেন। ধর্মের বেড়া ভেঙে মানুষকেই বড় করে দেখেছেন। মানুষের চেয়ে মহান কিছু নেই— এই জয়গান তিনি গেয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কবির রচনা ও দর্শন বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। নজরুল সব ধর্মের মানুষকে মিলেমিশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তার কথা ও গান শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। স্কুল-কলেজগুলোতে কবির জন্মদিন ও প্রয়াণ দিবস পালনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে নজরুলকে পৌঁছে দেওয়া জরুরি।’
ইয়াসমিন মুশতারী বলেন, ‘বাংলাদেশকে ভালোবাসতে হবে— এই শিক্ষা আমাদের নজরুল শিখিয়েছেন। নজরুলকে ভালোবাসা মানেই বাংলাদেশকে ভালোবাসা। নজরুল মানেই বাংলাদেশ। তিনি যে অমূল্য লেখা ও সৃষ্টিকর্ম আমাদের জন্য রেখে গেছেন, সেগুলো ছড়িয়ে দিতে পারলেই বাংলাদেশ সঠিক পথে অগ্রসর হবে।’
অনুপম হায়াতের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করে তার ছেলে ইশতিয়াক রহমান। বাবার লিখিত বক্তব্য পাঠ করার সময়ে বলেন, ‘আমিই নজরুল সংগঠনের নাম উচ্চারণ করলেই নজরুলের উপস্থিতি অনুভব করি। এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে নজরুলচর্চা আরও বিকশিত হবে। কাজী নজরুল ইসলাম একজন মহাসমুদ্র। সাহিত্য থেকে চলচ্চিত্র—সকল শাখায় তিনি অনবদ্য অবদান রেখে গেছেন। মানবকবি নজরুল বেঁচে থাকলেই আমরা আমাদের অস্তিত্বে টিকে থাকব।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে দেন ‘আমিই নজরুল’-এর নির্বাহী পরিচালক আবু সাঈদ।
তিনি বলেন, ‘আমিই নজরুল চর্চা ও গবেষণাকেন্দ্র ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত নজরুল নিয়ে অনলাইন ও অফলাইনে কাজ করে যাচ্ছে। সে বছরই এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে কবির সাম্যবাদী চিন্তা ও মানবিক ভাবনা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ।’
অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. এমরান জাহান, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি, কবি রোকেয়া ইসলাম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অনুবাদক ড. এলহাম হোসেন, নজরুল গবেষক নাসির আহমেদ, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দারসহ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন শিল্পী ইয়াসমিন মুশতারী, আমিই নজরুল পরিচালক উম্মে রুমা ট্রফি, সদস্য শাহিনা পারভীন, শায়লা রহমান, সংগীতা পাল, ইশরাত জাহান, মো. সম্রাট, মোহনা রেজা ও অদ্বিতীয়া। নজরুলের অভিভাষণ পাঠ করেন আবৃত্তিকার শওকত আলী তারা। নৃত্য পরিবেশন করেন সেজুঁতি দাস।
অনুষ্ঠানটি সহযোগিতা করে মুক্ত আসর, প্রশিকা, স্বপ্ন’ ৭১ প্রকাশন, কাঠবিড়ালি প্রকাশন ও বইচারিতা।
৯৭ দিন আগে
ঢাবিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ক্যাম্পাস স্ট্যান্ডআপ কমেডি শো ‘হাসির আড্ডা'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ক্যাম্পাস স্ট্যান্ডআপ কমেডি শো ‘হাসির আড্ডা'। শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় টিএসসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই শো-এর উদ্যোক্তা ছিলেন ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী অনিদ হাসান। আসন্ন ডাকসু কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী তিনি।
অনুষ্ঠানে মোট ৮ জন স্ট্যান্ডআপ কমেডি আর্টিস্ট পারফর্ম করেন। তারা হলেন— অনিক দে অন্তু, পৌষী রাজ্জাক, তাসদিদ আশরার, মাখজুম খান শাদীদ, নীলিমা রাফি, আশরাফুল হক ইমু, শারার শায়র ও সায়েদ রিদওয়ান হোসেন বিপ্রো।
মূল পারফরম্যান্সের আগে ওপেন মাইকের আয়োজন করা হয়, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর ও বাইরের ৮ জন শিক্ষার্থী র্যান্ডম বাছাইয়ের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে প্রত্যেকে তিন মিনিট করে পারফর্ম করেন।
আয়োজক অনিদ হাসান জানান, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ট্যান্ডআপ কমেডি সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘শুরুটা আমরা করেছি। পরিকল্পনা আছে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার।’
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে এবং চলে রাত ৮টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই শোতে পুরো অডিটোরিয়াম দর্শকে পূর্ণ ছিল, এমনকি অনেককে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা গেছে।
১০৩ দিন আগে
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণ দিবস আজ
আজ ২২শে শ্রাবণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর পৈতৃকনিবাস ঠাকুরবাড়িতে তার জীবনপ্রদীপ নিভেছিল। বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবসে তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছে বাঙালি জাতি।
১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ ছিল ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট। ৮০ বছর বয়সে সেদিন পরলোকগমন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
দিনটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আলোচনা সভা, সংগীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি ও রবীন্দ্রজীবন ও সাহিত্য নিয়ে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এক সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ (বিটিভি) সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো তার জীবন, কর্ম ও প্রভাব নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
আরও পড়ুন: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
১৮৬১ সালের ৭ মে (বাংলা ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ। ১৩ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। সংগীত, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, কবিতা কিংবা প্রবন্ধ— সাহিত্যের প্রায় সব অঙ্গনেই ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃপ্ত পদচারণা।
তিনি প্রায় দুই হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন, যা রবীন্দ্রসঙ্গীত নামে স্বতন্ত্র ঘরানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে আটটি উপন্যাস, ৮৪টি ছোটগল্প, অসংখ্য কবিতা, নাটক ও প্রবন্ধ। প্রায় সাত দশকজুড়ে এসব সৃষ্টি করেছেন তিনি।
শিক্ষার প্রসারের জন্য কাজ করেছেন নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিক। ১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রথম বাঙালি হিসেবে এই সম্মাননা অর্জন করেছিলেন তিনি।
দুটি দেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা তিনি। বাংলাদেশে ‘আমার সোনার বাংলা’ এবং ভারতে ‘জন গণ মন’ জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও কবির গান সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছে। সব মিলিয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বাঙালির হৃদয়ে আজও অম্লান হয়ে আছেন অনন্ত বাসনার রবি।
১২০ দিন আগে
হৃদরোগে ওউন্ড ব্যান্ডের ভোকালিস্ট এ কে রাতুলের মৃত্যু
জনপ্রিয় ‘ওউন্ড’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট ও বেস গিটারিস্ট এবং কিংবদন্তি চিত্রনায়ক জসিমের ছেলে এ কে রাতুল আর নেই। রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার একটি জিমে ব্যায়াম করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যান্ডটির গীতিকার সিয়াম ইবনে আলম।
সিয়ামের ভাষ্য অনুযায়ী, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উত্তরার একটি জিমে ব্যায়ামের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন রাতুল। প্রথমে তাকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে লুবানা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাতুলের অকালমৃত্যুতে সামাজিক মাধ্যমে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহশিল্পী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিস্ময় ও শোক প্রকাশ করেছেন।
পড়ুন: চলে গেলেন রেসলিং কিংবদন্তি হাল্ক হোগান
২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘ওয়ান’ অ্যালবাম এবং ২০১৭ সালের ‘টু’ অ্যালবামের মাধ্যমে ‘ওউন্ড’ ব্যান্ড দেশীয় রক সংগীতে নিজস্ব একটি ধারা তৈরি করে।
রাতুল ভোকাল ও বেস গিটারিস্ট হওয়ার পাশাপাশি একজন দক্ষ মিউজিক প্রোডিউসার হিসেবেও প্রশংসিত ছিলেন। দেশের বিভিন্ন ব্যান্ডের জনপ্রিয় অ্যালবাম তৈরিতে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
চিত্রনায়ক জসিমের তিন পুত্র—এ কে সামি, এ কে রাতুল ও এ কে রাহুল—সকলেই সংগীতাঙ্গনের পরিচিত মুখ। ২০০৭ সালে বড় দুই ভাই সামি ও রাতুল ‘ওউন্ড’ ব্যান্ডটি গঠন করেন। তাদের ছোট ভাই রাহুল বর্তমানে জনপ্রিয় ‘ট্রেইনরেক’ ব্যান্ডের সদস্য।
অভিনেতা জসিম ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর ব্রেন হ্যামারেজে মারা যান। এ কে রাতুলের অকালমৃত্যু দেশের সমসাময়িক সংগীত অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
১৩০ দিন আগে
চলে গেলেন রেসলিং কিংবদন্তি হাল্ক হোগান
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন রেসলিং কিংবদন্তি হাল্ক হোগান। তিনি ছিলেন পেশাদার রেসলিংকে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় করার অন্যতম পথিকৃৎ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ক্লিয়ারওয়াটারে নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
পুলিশ জানিয়েছে, ক্লিয়ারওয়াটারে হোগানের বাড়ি থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে পৌঁছায় জরুরি সেবা দল। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ক্লিয়ারওয়াটার পুলিশ বিভাগের মেজর নেট বার্নসাইড বলেন, ‘তার মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহজনক কিছু নেই।’
হাল্ক হোগান, যার আসল নাম টেরি বোলিয়া, ১৯৮৫ সালে প্রথম রেসলম্যানিয়াতে মেইন ইভেন্টে অংশ নিয়ে বিশ্ব রেসলিংয়ের মুখ হয়ে ওঠেন।
রেসলম্যানিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ডব্লিউডব্লিউই (ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্ট) আয়োজিত একটি বার্ষিক পেশাদার রেসলিং প্রতিযোগিতা। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী পেশাদার রেসলিং ইভেন্টগুলোর একটি।
পেশাদার জীবনে অ্যান্ড্রে দ্য জায়ান্ট, র্যান্ডি স্যাভেজ ও দ্য রকের মতো কিংবদন্তিদের সঙ্গে লড়েছেন হাল্ক হোগান। তিনি ছয়বার ডব্লিউডব্লিউই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মর্যাদা অর্জন করেন।
পড়ুন: হলুদের ঝলক: টাইমলাইনে সোনালি আলোর নতুন ট্রেন্ড
হোগান ২০০৫ সালে ডব্লিউডব্লিউই হল অব ফেম-এ অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৮০’র দশকে ‘হাল্কাম্যানিয়া’ সারা আমেরিকায় ঝড় তোলে। লাল-হলুদ পোশাক, পেশিবহুল বাহু—’২৪ ইঞ্চির পাইথন’—ও বর্ণাঢ্য উপস্থিতি দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আমেরিকান সংস্কৃতির (পপ কালচার) প্রতীক।
পরবর্তীতে সিনেমা, টিভি অনুষ্ঠান ও ভিএইচ১ হুগান নোজ বেস্ট রিয়েলিটি শোতেও জায়গা করে নেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে হোগান রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ২০২৪ সালের রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দেন। একই সঙ্গে ‘রিয়েল আমেরিকান ফ্রিস্টাইল’ নামে নতুন এক রেসলিং লিগের কমিশনার হন। এই লিগটি ‘আনস্ক্রিপ্টেড’ বা পূর্বনির্ধারিত নয়।
১৯৮৪ সালে ডব্লিউডব্লিউইতে যোগ দিয়ে তিনি ‘রেসলম্যানিয়া’ যুগের সূচনা করেন। ১৯৮৭ সালে অ্যান্ড্রে দ্য জায়ান্টকে পরাজিত করা এবং র্যান্ডি স্যাভেজের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব রেসলিংয়ের ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা। পরে ১৯৯৬ সালে তিনি নিজের ইমেজ বদলে ‘হলিউড হোগান’ রূপে ডব্লিউসিডব্লিউতে নতুন ফেস (চেহারা) নিয়ে আবির্ভূত হন।
আশ্চর্যজনক ক্যারিয়ার ও ক্যারিশমায় ভরপুর হোগান নিজেই একবার বলেছিলেন, ‘আমি যেখানেই যাই, মানুষ এখনো আমাকে চ্যাম্পিয়ন বলেই দেখে।’
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
১৩২ দিন আগে
দেশের সঙ্গীত অঙ্গন ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা: দুলু
সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার শাসনামলে এদেশের সঙ্গীত অঙ্গন ধ্বংস করে দিয়েছে। সংগীত অঙ্গনকেও তিনি দলীয়করণ করেছে। জাতীয় সংসদের মতো পবিত্র জায়গাতেও সংগীতানুষ্ঠান করতে বাধ্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের শিল্পীদের বিভক্তি তার দ্বারাই হয়েছে। শিল্পীরাও গান ছেড়ে রাজনীতির মঞ্চে নেমেছিল।
রংপুর সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের যুগপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার রাতে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর সংগঠনের কোরাস পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানে দুই প্রবীণ শিল্পীকে শিল্পী সম্মাননা দেওয়া হয়। এবারে শিল্পী সম্মাননা পান আব্দুল গফুর সরকার ও তমাল কান্তি লাহিড়ি।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আলম আল-আমিন, জেলা কালচারাল অফিসার কে এম আরিফউজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন রংপুর সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি খন্দকার মোহাম্মদ আলী সম্রাট।
১৫৯ দিন আগে