বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
এ সময় এক আসামি সোহরাব ফকির ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু পলাতক।
প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তাপস ক্রান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস শুকুর খান।
রায় অপেক্ষমাণ রাখার পর প্রসিকিউটর তাপস বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। রায়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন তিনি।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস শুকুর বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তারা বেকসুর খালাস পাবেন।
তিন আসামির মধ্যে এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি এই তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে ছয় ধরনের অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ওই সময় আসামি ছিলেন তিনজন। তারা হলেন-স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্য মো. হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি (৮০), এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু (৭০) এবং সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী (৮৮)।
আঞ্জু-মঞ্জু দুই ভাই। তিনজনের মধ্যে মঞ্জু ও সোহরাব আটক ছিলেন। একই বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মঞ্জু। আঞ্জু পলাতক।
এই তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। মামলাটি তদন্ত করেন মোহাম্মদ আমিনুর রশীদ।
২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হলে ওই দিনই সোহরাব ফকিএক গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে এনায়েতউল্লাহ মঞ্জুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারে আসামিদের বিরুদ্ধে ২৩ জন সাক্ষী দিয়েছেন।
তিনজনের বাড়িই নেত্রকোনার আটপাড়া থানার কুলশ্রীতে। তবে আঞ্জু থাকেন রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার হেতেম খাঁ মেথর পাড়ায়। অপরদিকে সোহরাবের বসবাস ছিল একই জেলার মদন থানার জাহাঙ্গীরপুরে ।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নি সংযোগ, এবং দেশত্যাগে বাধ্যকরণের মতো ছয় ধরনের অপরাধের অভিযোগ পাওয়া যায়।
নেত্রকোনার আটপাড়া থানার মধুয়াখারী গ্রাম, মোবারকপুর গ্রাম, সুখারী গ্রাম এবং মদন থানার মদন গ্রামে তারা এ সব অপরাধ করেন। যার ভিত্তিতে তিজনের বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের তিনজনই একাত্তরে জামায়াতের কর্মী ছিলেন। এদের মধ্যে আঞ্জু-মঞ্জু জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশিষ্ট রয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।