বুধবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশের এই দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল রিভিশন আবেদনটি দায়ের করেন। রিভিশন আবেদনে খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আদেশ বাতিল চাওয়া হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে আদেশ দেয়া হয়। পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত এই আদেশ দেয়।
আদেশে আদালত বলে, ‘খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর বলেছেন, তিনি বারবার আদালতে আসতে পারবেন না। এরপর ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর এবং আজও খালেদা জিয়া কারাগার কর্তৃপকে বলেছেন, তিনি আদালতে আসতে পারবেন না। অর্থাৎ আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে খালেদা জিয়া আদালতে আসতে অনিচ্ছুক। অথচ মামলার দুই আসামি প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হননি। এমন অবস্থায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে জামিনে রেখে বিচার চলবে।’
এই আদেশ বাতিল চেয়ে করা রিভিশন আবেদনের ব্যাপারে কায়সার কামাল বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু কারাগারে আদালত স্থাপন করা হয়েছে, সেটা অবৈধ। এছাড়া বেগম জিয়া অসুস্থ। তাই অসুস্থ কোনো ব্যক্তির বিচার চলতে পারে না এবং কারাগারে স্থাপন করা আদালত আইন বহির্ভূত ও অবৈধ। তাই এই দুটি বিষয় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিভিশন করেছি। আবেদনে খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে বিচার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এছাড়া রুল বিচারাধীন থাকাবস্থায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারিক কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে।’
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক।
মামলার অপর আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান। এর আগে এ মামলারও বিচার চলছিল পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে। কিন্তু গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাদণ্ড দেয়ার পর খালেদা জিয়াকে পুরাতন কারাগারে রাখা হয়। এর পর থেকে তাকে আর জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় আদালতে হাজির করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে কারাকর্তৃপক্ষ বার বারই অসুস্থতার কথা বলে এসেছে। এ অবস্থায় গত ৪ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে প্রথম দিনের মতো আদালত বসে। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে সেদিন ওই আদালতে হাজির করা হয়।