হাইকোর্ট
সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল আদিলুর-নাসিরের
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করে জামিন চেয়েছেন মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি দায়ের করা হয়।
পাশাপাশি আদিলুর ও নাসিরের জামিন চেয়ে আবেদন দায়ের প্রস্তুতি চলছে। তাদের আইনজীবী মো. রুহুল আমিন ভুঁইয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক দশক আগের ঘটনায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসিরকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রায়ের পর আদিলুর ও নাসিরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর ও নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এই মামলায় আদিলুর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার হন। পরে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
১১ আগস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে অধিকারের কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটি কম্পিউটার ও দুটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। সে বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আরও পড়ুন: আদিলুর ও নাসিরউদ্দিনের বিষয়ে বাংলাদেশের আদালতের সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করে ফ্রান্স-জার্মানির যৌথ বিবৃতি
পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর ও নাসির ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্যসম্বলিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেন।
পাশাপাশি তারা মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করেন, যা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ও (২) ধারায় অপরাধ।
একপর্যায়ে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২০১৪ সালের ৮ই জানুয়ারি এই মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিন বছরের জন্য স্থগিত থাকে বিচারকাজ। পরে ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় এই মামলার শুনানি। গত ২৪ আগস্ট এ মামলায় যুক্তিতর্কের শুনানি শেষ হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আরও পড়ুন: অধিকারের আদিলুর ও নাসিরউদ্দিনের মুক্তি দাবি ফখরুলের
আইসিটি মামলায় ‘অধিকারের’ আদিলুর ও নাসিরের ২ বছরের কারাদণ্ড
পিরোজপুর ১ ও ২ আসনে সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বৈধ: হাইকোর্ট
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের নির্বাচনী আসন পিরোজপুর-১ এবং সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু’র নির্বাচনী আসন পিরোজপুর-২ এর সীমানা পুনর্নির্ধারণের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছেন। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।
সীমানা পুনর্নির্ধারণের আগে পিরোজপুর-১ আসনটি পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল। আর পিরোজপুর-২ আসনটি কাউখালি, ভান্ডারিয়া ও ইন্দুরকানি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল।
তবে নির্বাচন কমিশন গত ৩ জুন সংসদীয় আসন দু’টির সীমানা পুনর্র্নিধারণ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পিরোজপুর-১ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয় পিরোজপুর-২ আসনে থাকা ইন্দুরকানি উপজেলাকে। আর পিরোজপুর-২ সঙ্গে যুক্ত করা হয় পিরোজপুর-১ আসনে থাকা নেছারাবাদ উপজেলাকে ।
আরও পড়ুন: 'আওয়ামী নিপীড়নের শেষ ঘাঁটি আদালত': তারেকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আদেশের তীব্র নিন্দা বিএনপির
নির্বাচন কমিশনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পরবর্তীতে হাইকোর্টে রিট করেন পিরোজপুরের কাউখালীর বাসিন্দা আবু সাঈদ মিয়া, ভান্ডারিয়া পৌরসভার বাসিন্দা মো. কায়কোবাদ ও মো. আহসানুল কিবরিয়া, ইন্দুরকানী উপজেলার বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান এবং নেছারাবাদ উপজেলার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম শরীফ।
রিটের শুনানি নিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা প্রশ্নে গত ৩০ জুলাই রুল জারি করেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর ) রুল খারিজ করে রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন মিয়াজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কামাল খান দাউদ।
আরও পড়ুন: মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
ফুলপরীকে নির্যাতন: ইবির পাঁচ ছাত্রীকে নতুন করে শাস্তি আরোপের নির্দেশ হাইকোর্টের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তারেকের বক্তব্য মুছে ফেলতে বিটিআরসিকে হাইকোর্টের নির্দেশ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সব বক্তব্য ও ভিডিও কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মুছে ফেলার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এসময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা উচ্চস্বরে আদেশের প্রতিবাদ করায় আদালত কক্ষে বিশৃঙ্খল দেখা যায়। একপর্যায়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম হট্টগোলের মধ্যে আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।
বিচারপতিরা যখন আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ‘লজ্জা, লজ্জা’ বলে চিৎকার করছিলেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত বিচারপতিরা আদালতে ফিরে আসেননি।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেঞ্চের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা আপিল জমা দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ করার জন্য ২০১৫ সালে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরীন সিদ্দিকী লিনা।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি চলাকালে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। আদেশে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক এবং তারেক রহমান নিজেসহ একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
সাড়ে আট বছর পর চলতি বছরের ২ আগস্ট রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী কামরুল ইসলাম শুনানির আবেদন করেন।
৮ আগস্ট মামলার শুনানি চলাকালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
নওগাঁ আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে হাইকোর্টে তলব
নওগাঁ বারের এক আইনজীবীর বাসায় চুরির মামলায় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোর ঘটনায় ব্যাখ্যা দিতে নওগাঁ আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ আগস্ট সকাল ১০ টায় আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নওগাঁ আদালত থেকে আসামির মামলার বদলির আবেদনের শুনানিকালে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বংশী নদী দখল : সাভারের ইউএনওকে হাইকোর্টে তলব
তিনি বলেন, নওগাঁ বারের এক আইনজীবীর বাসায় চুরির মামলায় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট পি ডাব্লিউ দিয়ে আসামিকে কোর্টে হাজির করে তার মুখ থেকে শুনে জামিন দেন। আসামিকে জামিন দেওয়ায় নওগাঁ বার রেজ্যুলেশন করে সেই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা জজকে বারের সিদ্ধান্ত পাঠান। আসামি এ কারণে মামলা বদলির আবেদন করেন।
সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নওগাঁ বারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তলব করেছেন।
তিনি আরও জানান, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেলা জজ ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। ৩০ আগস্ট শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে থাকতে বলেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
প্লট বরাদ্দ বাতিলের নথি না দেওয়ায় রাজউক চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে তলব
আইডিয়াল কলেজ কেলেঙ্কারি: আগাম জামিন পেলেন মুশতাক আহমেদ
ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীকে প্রলুব্ধ করে তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ে করার অভিযোগে করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
তবে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর বয়স নির্ধারণ করতে বলেছেন আদালত। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সেফ কাস্টডিতে (নিরাপদ হেফাজত) রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে মুশতাকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মুশতাক, গতকাল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আবেদনটি ফেরত দেন। এই অবস্থায় মুশতাকের জামিন আবেদন ওই বেঞ্চে জমা দেন তার আইনজীবী। আজ বিকালে আবেদনের উপর শুনানি হয়।
জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় আদালতে হাজির হন তিনি।
আদালত ছাত্রীরও বক্তব্য শোনেন। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন বলে আদালতে বলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে দুদকের তলব
আদালত বলেছেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই তার বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ওই ছাত্রী নারী ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
এসময় বিচারক আইডিয়ালের সেই ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, আপনাকে কোনো ধরনের ভয়ভীতি কেউ দেখিয়েছে কি না, কোনো ভয় পেলে আমরা আপনাকে খাস কামরায় নিয়ে জিজ্ঞেস করি।
এসময় আইডিয়ালের সেই ছাত্রী বলেন, আমি সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় তাকে (খন্দকার মুশতাক আহমেদকে) বিয়ে করেছি। আমাকে কেউ কোনোপ্রকার ভয়-ভীতি দেখায়নি।
এর আগে ১ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলা করেন কলেজছাত্রীর বাবা।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
আরও পড়ুন: মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ওড়না পরা নিষিদ্ধ নয়: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
ইকবালের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে তার বহিষ্কারাদেশ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশের ফলে ইকবাল তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তিনি তার স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
গত ৩১ জুলাই কুবি’র উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২ আগস্ট ইকবালকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন।
ইকবাল দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিক সমিতির অর্থসম্পাদক।
ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ৯ আগস্ট আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যসহ ৮ জনকে ইকবালের পক্ষে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছিল, তিন দিনের মধ্যে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে উচ্চ আদালতে যাবেন ইকবাল।
নোটিশে আরও বলা হয়, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি।
এছাড়া তার সংবাদে উল্লিখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর থেকে প্রতীয়মান হয়, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
এছাড়া গত ৬ আগস্ট সংশ্লিষ্ট সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়ে ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে উপাচার্যের নিকট চিঠি দিয়েছেন ইকবাল। এখন পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
আইনি নোটিশে আরও বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোন বোর্ড এবং বিধি তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় কুবি প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইকবাল তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন, যার সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কার্যক্রমের কোনো সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে।
তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধু উপাচার্যের হুবুহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ (২) (খ) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছেন মর্মে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ইকবাল।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
রোগের বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের (ভিসিআরসি) মতো একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রবিবার (১৩ আগস্ট) এ রায় দেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, আদালতের আহ্বানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাশার সুপারিশসহ বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। আজ মামলাটি নিষ্পত্তি করে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিভিল এভিয়েশন এবং সিটি করপোরশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘমেয়াদে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের (ভিসিআরসি) মতো একটি সেন্টার করতে আদালত সরকারকে বলেছেন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ১২ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। এর মধ্যে বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর-প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেসব খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সম্পূরক আবেদন করেন আইজীবী তানভীর।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
এ আবেদনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি আদালত হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বেবিচককে নির্দেশ দেন। বেবিচকের চেয়ারম্যানকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এ নির্দেশনার পর সিটি করপোরেশন ও বেবিচক একাধিকবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।
গত ৬ মার্চ সেসব প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মার্চ আদালত বিমানবন্দর এলাকার মশা নিধনে কবিরুল বাশারসহ তিনজনের মতামত জানতে তাদের ডেকেছিলেন।
সে অনুযায়ী কবিরুল বাশার আদালতে বিমানবন্দর এলাকার চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকা মশামুক্ত রাখা নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রবিধান’র বিভিন্ন বিধি ও আটটি সুপারিশ প্রতিবেদনে তুলে ধরেন। কবিরুল বাশারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৯৭৫ সালে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (ভিসিআরসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
বাংলাদেশে এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে বাহক বাহিত রোগ ও বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করা যাবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে এখন পর্যন্ত ১২৬ প্রজাতির মশা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে ১৬ প্রজাতির মশা। আর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাওয়া গেছে ৯ প্রজাতির মশা।
এগুলো হচ্ছে- কিউলাস কুইনকিউফেসিয়েটাস, কিউলেক্স ট্রিটাইনায়োরিঙ্কাস, কিউলাস গেলিডাস, এডিস ইজিপটি, এডিস অ্যালবোপিকটাস, ম্যানসোনিয়া অ্যানুলিফেরা, ম্যানসোনিয়া ইউনিফর্মিস, আর্মিজেস সাবলবাটাস ও টক্সোরিঙ্কাইটস স্প্লেডেনস।
এ কীটতত্ত্ববিদ তার প্রতিবেদনে বলেছেন, প্রজাতিভেদে মশার প্রজনন স্থল, প্রজনন ঋতু ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভিন্ন। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতার জন্য এর জীবনাচরণ সম্পর্কে জানা দরকার। মশার বায়োলজি, ইকোলজি, স্বভাব পর্যালোচনা করে নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
বিমানবন্দর এলাকায় মশার প্রজননস্থল হিসেবে দুটি বড় খাল, ছোট-বড় পাঁচটি জলাশয়, খোলা ড্রেন, পরিত্যক্ত টায়ার, ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের পাত্র, গাছের কোটর এবং বিমানবন্দর ঘিরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাঁচটি ওয়ার্ড (১, ১৭, ৪৯, ৫০ ও৫২), এয়ারফোর্স এরিয়া, প্রিয়াঙ্কা হাউজিং ছাড়াও রাজউকের কিছু জায়গার কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে এ শিক্ষক বলেন, যেহেতু মশা চার কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে, তাই বিমান বন্দরকে মশামুক্ত করতে হলে এর চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মশার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তার জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কাজটি করা কঠিন নয়।
আদালত আজ শুনানি গ্রহণ শেষে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণে একটি রিসার্চ সেন্টার করতে বলেছেন।
সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুর: খোকন-কাজলসহ ১৪ জনের আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৪ আইনজীবীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে ৪ আইনজীবীকে জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. সাগর হোসেন, মো. রেজাউল করিম রেজা, মাহবুবুর রহমান খান, মো. রবিউল আলম সৈকত, নজরুল ইসলাম ছোটন, রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, মো. মাহমুদ হাসান, মো. কামাল হোসেন, মো. আনিসুর রহমান (রায়হান) ও খালেদ মাহমুদুর রহমান আদনান।
একইসঙ্গে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকায় আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, আ. কাইয়ুম ও উজ্জল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তারা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন জানালে সোমবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপাররিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। তবে সেদিন বিএনপি সমর্থক এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করতে গেলেও তা গ্রহণ করেনি শাহবাগ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গত ৩ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দু’পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতা-হাতি। এ পরিস্থিতি চলতে থাকে অন্তত ১০ মিনিট। এরই মধ্যে আইনজীবীরা সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে থাকা নেমপ্লেট খুলে ফেলেন।
পরে সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে তারা।এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আরও মারমুখী আচরণ করেন। সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারা নিজেরা ভাঙচুর করে উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া দেশের বাইরে অর্থ পাঠানোর মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয়েছে কি না, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে অর্থ বাইরে পাঠানো হয়েছিল কি না, তা জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ শিরোনামে গত ৪ আগস্ট ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রবিবার (৬ আগস্ট) হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এরপর বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে মানি লন্ডারিং রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের অভিযোগ অনুসন্ধানে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
আদালতে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনটি তুলে ধরে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী সায়েদুল হক। দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টার ‘এস আলমের আলাদিনের প্রদীপ’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কোনো রেকর্ড নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেশের বাইরে বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তবে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক জায়ান্ট এস আলম গ্রুপ সেই তালিকায় নেই।
এতে আরও বলা হয়, তবে আলম সিঙ্গাপুরে গত এক দশকে কমপক্ষে দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য সম্পত্তি কিনেছেন। সেখানেও বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ‘ ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তবে, এই পরিমাণ অর্থ ২০০৯ সালের পর সিঙ্গাপুরে এস আলমের কেবল দুটি হোটেল ও একটি বাণিজ্যিক স্পেস কেনা ৪১১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিতে আরও দেখা যায় এখন পর্যন্ত কয়েকটি কোম্পানি বৈধভাবে সিঙ্গাপুরে মোট ১ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে এবং সেগুলোর একটিও আলমের মালিকানাধীন নয়।’
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রশ্নে রুল ২ সপ্তাহে নিষ্পত্তির নির্দেশ
দুর্নীতি মামলায় তারেকের ৯ বছর, জোবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড
৩০ দিনের মধ্যে রেলের জায়গা দখলকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ
দেশের বিভিন্ন জেলায় যারা রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছে, তাদের তালিকা তৈরি করে তা ৩০ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষে সোমবার এ আবেদন করা হয়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, রুলে সারাদেশে রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন জেলায় থাকা সম্পত্তি অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
দুই সপ্তাহের মধ্যে রেলওয়ে সচিব ও মহাপরিচালক, পরিচালক, সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, বিভিন্ন জেলায় রেলওয়ের কী পরিমাণ জমি অবৈধ দখলে আছে, তা রেলওয়ের সচিব ও মহাপরিচালককে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে বলেছেন আদালত, পাশাপাশি দখলকারীদের তালিকা তৈরি করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় শত শত একর জমি অবৈধভাবে দখল করা আছে মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তিনি আদালতে বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে হাজার হাজার একর সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে, যা মূলত জনগণের সম্পত্তি এবং এগুলো উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা প্রয়োজন। আদালত হস্তক্ষেপ না করলে এসব জনগণের সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের নির্দেশ
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট