নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় হত্যার ১০ মাস পর তানজিলার (২৫)নামে এক নারীর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার তানজিলার ‘কথিত’ স্বামী রাসেলের দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার ফতুল্লার দেওভোগ আদর্শ নগর এলাকার একটি ডোবা থেকে তার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাসেলকে গত বুধবার রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত তানজিলা রংপুরের মিঠাপুকুরের চিথলীর আব্দুল জলিলের মেয়ে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামির নাম রাসেল (২৯)। রাসেল রংপুরের মিঠাপুকুরের কুমুরগঞ্জের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যা: স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
এর আগে গত বছরের ৫ এপ্রিল একই ডোবা থেকে অজ্ঞাত তরুণীর গলিত মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ফতুল্লা থানার পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পিবিআই এর কাছে আসলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামি রাসেলকে গত বুধবার রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই এর পুলিশ সুপার (এসপি) মনিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল স্বীকার করে যে, গলাকাটা মাথাটি তার কথিত স্ত্রী তানজিলার খণ্ডিত মাথা।
মনিরুল ইসলাম জানান,অভিযুক্ত রাসেলের সঙ্গে নিহত তানজিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু তানজিনার পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নিলে আসামি ২০১৯ সালে পারিবারিকভাবে অন্য এক নারীকে বিয়ে করে।
ওই বিয়ের কথা শুনে তানজিলা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কলহ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে আসে এবং গার্মেন্টেসে চাকরি নেয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে মাকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার
এ সময় রাসেলের সঙ্গে তানজিলার পুনরায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় (যদিও এ সংক্রান্ত বস্তুনিষ্ঠ কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানায় পিবিআই)। এরপর থেকে ভিকটিম তানজিলা এবং আসামি রাসেল স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ফতুল্লার আদর্শ নগরে বসবাস শুরু করে।
পিবিআই আরও জানায়, বিয়ের পর থেকেই তানজিলা ও রাসেলের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। সবশেষে ২০২১ সালের ২৯ মার্চ রাতে তাদের মধ্যকার কলহের জেরে রাসেল তানজিলাকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে রান্নার কাজে ব্যবহৃত বটি দিয়ে তানজিলাকে হত্যা করে কেটে টুকরো করে পার্শ্ববর্তী ময়লার স্তুপের মধ্যে ফেলে দেয় এবং তার খণ্ডিত মাথা স্থানীয় একটি ডোবার মধ্যে ফেলে দেয়।
কোনো খোঁজ-খবর না পেয়ে তানজিলার ভাগিনা পলাশ ফতুল্লা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করে। ওই জিডির সূত্র ধরে তদন্ত কাজ শুরু করে পিবিআই।
আরও পড়ুন: ‘হিজড়া’ বলে কটুক্তির প্রতিবাদ করায় শিশু শুভকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩