ভারত
ঢাকায় এসেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান
ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। সোমবার (৫ জুন) বাংলাদেশের সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশে আসেন।
ভারতীয় হাই কমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের সঙ্গে ভারতীয় সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
সফরকালে জেনারেল পান্ডে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির পাসিং আউট প্যারেড পরিদর্শন করবেন।
সম্প্রতি সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিনের ভারত সফরের অনুসরণে বাংলাদেশে এ সফর করবেন জেনারেল পান্ডে।
সফরকালে ভারতের সেনাপ্রধান ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নিহত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সামগ্রিক পটভূমি পর্যালোচনা করবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বরা হয়েছে, এই উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনা ভারত ও বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন পুনর্নবীকরণের সুযোগ করে দেবে।
আরও পড়ুন: সোমবার ৩ দিনের বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান
ঢাকায় ভারতীয় সেনাপ্রধান
ভারতীয় ট্রাক চালকদের আকস্মিক ধর্মঘটে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি বন্ধ
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের আকস্মিক ধর্মঘটে রবিবার (০৪ জুন) সারাদিন কোনো ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি। এতে করে ভারতীয় এলাকায় আটকা পড়েছে শতশত পণ্যবাহী ট্রাক।
সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশি আমদানিকারকদের চিঠি দিলেও দু’পক্ষের মধ্যে কোনো বৈঠক বসেনি। তবে সোমবার থেকে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, শনিবার (০৩ জুন) কয়েকজন ভারতীয় ট্রাক চালক হিলির বেসরকারি অপারেটর পানামা ল্যান্ডপোর্টের বাইরে লোকালয়ে চলাচলে বাধা দেন পোর্টের নিরাপত্তা কর্মীরা। এ নিয়ে নিরাপত্তা কর্মীসহ স্থানীয়দের সঙ্গে ট্রাক চালকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে পিটুনির শিকার হন কয়েকজন ভারতীয় ট্রাক চালক।
আরও পড়ুন: বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
রবিবার (০৪ জুন) সকালে ভারতে ফিরে অন্যান্য ট্রাক চালকদের শনিবারের ঘটনা জানান লাঞ্ছিতের শিকার ট্রাক চালকরা। এতে ক্ষুব্ধ অন্যান্য ভারতীয় ট্রাক চালকরা আকস্মিক ধর্মঘট শুরু করে। এতে রবিবার সারাদিন ভারত থেকে আমদানির পণ্যবাহী কোনো ট্রাক হিলিবন্দরে প্রবেশ করতে পারেনি।
হিলির বাংলাদেশি আমদানি রপ্তানিকারক সংগঠনের নেতা হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালকদের বাংলাদেশি এলাকায় চলাচলে উভয় দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন যৌথভাবে কিছু নিয়ম নীতি প্রণয়ন করেছিল। তাতে ভারতীয় ট্রাক চালকদের পণ্য খালাস শেষে নিজ দেশে ফিরে যাবার আগ পর্যন্ত ল্যান্ডপোর্টে সীমিত পরিসরে চলাচল করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা বন্দরে প্রবেশের পর লোকালয়ে অবাধে চলাচল অবৈধ পণ্য বেচাকেনা, মদপানসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পরিবেশ অসনীয় করে তুলছিল। এ নিয়ে বেসরকারি অপারেটর পানামা পোর্টের নিরাপত্তা কর্মীদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে লোকালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করায় কিছুটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। এ সময় রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে ট্রাক রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল তারা। এনিয়ে স্হানীয়দের হাতে লাঞ্ছিত কয়েকজন ট্রাক চালক রবিবার সকালে দেশে ফিরে ধর্মঘটের উদ্ভব ঘটায়।
আরও পড়ুন: মে দিবস উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
সিগন্যালিং সিস্টেমের ত্রুটির কারণে প্রাণঘাতী এই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে: ভারতের রেলমন্ত্রী
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেমের ত্রুটির কারণে একটি ট্রেন ভুলভাবে ট্র্যাক পরিবর্তন করায় এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। রবিবার নয়াদিল্লি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
এরআগে, শুক্রবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে দক্ষিণ তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই যাওয়ার পথে কলকাতার প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে বালাসোর জেলায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী একটি ট্রেন, একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং আরও শতাধিক আহত হয়।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘কে এটা করেছে এবং কারণ কী তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
কয়েক দশকের মধ্যে এটি ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনার মধ্যে একটি।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, উচ্চগতিসম্পন্ন করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে প্রধান ট্র্যাক লাইনে প্রবেশ করার জন্য একটি সংকেত দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে সিগন্যালটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং ট্রেনটি পরিবর্তে একটি সংলগ্ন লুপ লাইনে প্রবেশ করেছিল; যেখানে এটি একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচগুলো অন্য ট্র্যাকে উল্টে যায়, যার ফলে বিপরীত দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয় এবং তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
যাত্রীবাহী ট্রেনে মোট ২ হাজার ২৯৬ জন যাত্রী ছিল।
আরও পড়ুন: ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮০ জনের বেশি নিহত, আহত ৯০০
পণ্য বহনকারী ট্রেনগুলো প্রায়ই পাশের একটি সংলগ্ন লুপ লাইনে পার্ক করা হয়, যাতে একটি পাসিং ট্রেনের জন্য মূল লাইন পরিষ্কার থাকে।
শনিবার সন্ধ্যায় ১৫টি লাশ উদ্ধার করা হয় এবং রাতভর ভারি ক্রেন ব্যবহার করে একটি ইঞ্জিন অপসারণের প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল।
ওড়িশার ফায়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি সার্ভিসের মহাপরিচালক সুধাংশু সারঙ্গি বলেছেন, ইঞ্জিনে কোনও লাশ পাওয়া যায়নি এবং রবিবার সকালে উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে।
মোদি শনিবার ত্রাণ তৎপরতা পরীক্ষা করতে এবং উদ্ধার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি একটি হাসপাতালও পরিদর্শন করেন, যেখানে তিনি আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কিছু রোগীর সঙ্গেও কথা বলেন।
মোদি সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কষ্ট তিনি অনুভব করছেন।
তিনি বলেন, সরকার তাদের সাহায্য করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে এবং দায়ীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
একটি ট্রেনের ১০ থেকে ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায় এবং কিছু বিধ্বস্ত কোচের ধ্বংসাবশেষ পাশের আরেকটি ট্র্যাকের উপর পড়ে।
রেল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেছেন, বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে আরেকটি পণ্যবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। যার ফলে দ্বিতীয় ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা
রেল নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতে প্রতিবছর কয়েকশো ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় মানবিক ত্রুটি বা সেকেলে সিগন্যালিং যন্ত্রপাতিকে।
১৯৯৫ সালের আগস্ট মাসে নয়াদিল্লির কাছে দুটি ট্রেন সংঘর্ষে ৩৫৮ জন মারা যায়, এটি ভারতের সবচেয়ে খারাপ ট্রেন দুর্ঘটনা।
২০১৬ সালে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ইন্দোর ও পাটনা শহরের মাঝামাঝি একটি জায়গায় লাইনচ্যুত হয়ে ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রতিদিন ভারতজুড়ে ১২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) পথ ভ্রমণ করে।
আরও পড়ুন: ভারতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২৩৩ জন নিহত, ৯ শতাধিক মানুষ আহত
ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা: বাংলাদেশিদের সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য হটলাইন
ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশিদের সম্পর্কে কোনো তথ্য বা অনুসন্ধানের জন্য একটি হটলাইন খোলা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন এ বিষয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়েছে।
আরও তথ্য জানার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে +৯১৯০৩৮৩৫৩৫৩৩ (হোয়াটসঅ্যাপ) নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ওড়িশার ফায়ার ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর সুধাংশু সারঙ্গি দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, শনিবার সকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকজন বাংলাদেশি সামান্য আহত হয়েছে: ডেপুটি হাইকমিশন
তিনি বলেন, আহত ৮০০ জনেরও বেশি যাত্রীকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কলকাতার প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ একদিকে উদ্ধারকারীরা আটকা পড়া জীবিত যাত্রীদের এবং অন্যদিকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করছে।
এর আগে শনিবার ভোরে ওড়িশার মুখ্য সচিব পি.কে জেনা একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮০ জনের বেশি নিহত, আহত ৯০০
এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা
ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকজন বাংলাদেশি সামান্য আহত হয়েছে: ডেপুটি হাইকমিশন
ভারতের কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন দেশটিতে শনিবারের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকজন বাংলাদেশি যাত্রীর সামান্য আহত হওয়ার খবর পেয়েছে। একজন কূটনীতিক ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আহত বাংলাদেশিদের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, হাইকমিশনের একটি দল দুর্ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।
ভারতে গত রাতে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ২৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
কয়েক দশকের মধ্যে দেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনায় এক ডজনেরও বগির ভেতরে আটকা পড়েছিলেন আরও শতাধিক মানুষ।
কলকাতার প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ একদিকে উদ্ধারকারীরা আটকা পড়া জীবিত যাত্রীদের এবং অন্যদিকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করছে।
এর আগে শনিবার ভোরে ওড়িশার মুখ্য সচিব পি.কে জেনা একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা
ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮০ জনের বেশি নিহত, আহত ৯০০
ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর শোক
ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮০ জনের বেশি নিহত, আহত ৯০০
ভারতে শুক্রবার দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পরে ঘটা দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮০ জন মানুষ নিহত এবং ৯ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
কয়েক দশকের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে প্রাণঘাতী এ ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকশ’ মানুষ এখনও দুর্ঘটনাকবলিত বগিগুলোর মধ্যে আটকা পড়েছে।
প্রেস ট্রাস্ট জানায়, লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেস পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে দক্ষিণ তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই যাচ্ছিল।
কলকাতার প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ একদিকে উদ্ধারকারীরা আটকা পড়া জীবিত যাত্রীদের এবং অন্যদিকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করছে।
এর আগে শনিবার ভোরে ওড়িশার মুখ্য সচিব পি.কে জেনা একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ওড়িশার ফায়ার ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর সুধাংশু সারঙ্গি দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, শনিবার সকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আহত ৮০০ জনেরও বেশি যাত্রীকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উদ্ধারকারীরা দুর্ঘটনাকবলিত বগিগুলোর মধ্যে এখনও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা
সারঙ্গি বলেন, বগিগুলোর নিচে আরও মানুষ আটকে থাকতে পারে, তবে তাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা কম।
তিনি বলেন, ‘রাত ১০টা থেকে (শুক্রবার) আমরা জীবিতদের উদ্ধার করা শুরু করি। এরপর থেকে লাশ উদ্ধার শুরু করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। আমি আমার ক্যারিয়ারে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা দেখিনি।’
দেশটির রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেছেন, একটি ট্রেনের ১০ থেকে ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে এবং কিছু ছিন্নভিন্ন কোচের ধ্বংসাবশেষ কাছাকাছি ট্র্যাকের উপর পড়েছে। দ্বিতীয় ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
প্রেস ট্রাস্ট-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মালবাহী একটি তৃতীয় ট্রেনও দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছিল, তবে রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা থাকায় উদ্ধারকারী ও পুলিশের দল শনিবার সকালেও উদ্ধার অভিযান অব্যঅহত রেখেছেন। রক্তদানের জন্য স্থানীয় হাসপাতালেও বহুসংখ্যক লোক উপস্থিত হয়েছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১২০০ উদ্ধারকারী ১১৫টি অ্যাম্বুলেন্স, ৫০টি বাস এবং ৪৫টি মোবাইল হেলথ ইউনিট নিয়ে রাতভর দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করেছে।
শনিবার ওড়িশায় শোক দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক আহত যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
গ্রামবাসীরা বলেছেন, ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে একটি বিকট শব্দ শুনে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
জীবিত এক যাত্রী রূপম ব্যানার্জি পিটিআইকে বলেছে, ‘স্থানীয় লোকেরা সত্যিই আমাদের সাহায্য করেছে। তারা কেবল মানুষদের উদ্ধার করতেই সাহায্য করেনি, আমাদের লাগেজ উদ্ধার করেছে এবং আমাদের জল খাইয়েছে।’
আরেক যাত্রী বন্দনা কালেদা বলেন, ‘আমি যখন ওয়াশরুম থেকে বের হলাম, হঠাৎ ট্রেনটি কাত হয়ে গেল। এসময় আমি আমার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলাম... সবকিছু উল্টে যায়, একজনের ওপর অন্যজন পড়তে শুরু করে।’
তিনি আরও জানান, তিনি ভাগ্যবান বলে বেঁচে গেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২৩৩ জন নিহত, ৯ শতাধিক মানুষ আহত
অপর একজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি যিনি তার নাম প্রকাশ করেননি তিনি বলেছেন যে আঘাতের সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি ভাঙ্গা অঙ্গ ও বিকৃত মুখসহ অন্যান্য যাত্রীদের দেখেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন।
মোদি এক টুইটে লিখেছেন, ‘আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক।’
আরও জানান, তিনি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ‘সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা’ দেওয়া হচ্ছে।
রেল নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতে প্রতিবছর কয়েকশো ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় মানবিক ত্রুটি বা সেকেলে সিগন্যালিং যন্ত্রপাতিকে।
১৯৯৫ সালের আগস্ট মাসে নয়াদিল্লির কাছে দুটি ট্রেন সংঘর্ষে ৩৫৮ জন মারা যায়, এটি ভারতের সবচেয়ে খারাপ ট্রেন দুর্ঘটনা।
২০১৬ সালে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ইন্দোর ও পাটনা শহরের মাঝামাঝি একটি জায়গায় লাইনচ্যুত হয়ে ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রতিদিন ভারতজুড়ে ১২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) পথ ভ্রমণ করে।
ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর শোক
ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (৩ জুন) সকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সাবেক মহিলা লীগ নেত্রী তসলিমার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
শোকবার্তায় জানানো হয়েছে, ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আহতদেরও দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা
ভারতের সর্বশেষ মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনায় শুক্রবার দুই শতাধিক মানুষ নিহত এবং ৯শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনও কয়েকশ’ মানুষ দুর্ঘটনাকবলিত রেল গাড়ির মধ্যে আটকা পড়েছে।
প্রতিদিন ভারতজুড়ে ১২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) পথ ভ্রমণ করে।
রেল নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতে প্রতিবছর কয়েকশো ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় মানবিক ত্রুটি বা সেকেলে সিগন্যালিং যন্ত্রপাতিকে।
এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
২০১৮ সালের অক্টোবর- উত্তর ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের একটি শহর অমৃতসরের উপকণ্ঠে একটি ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে আতশবাজি দেখার জন্য জড়ো হওয়া জনতার ওপর দিয়ে একটি ট্রেন ছুটে যায়। যাতে কমপক্ষে ৬০ জন মারা যায় এবং আরও কয়েক ডজন আহত হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২৩৩ জন নিহত, ৯ শতাধিক মানুষ আহত
২০১৬ সালের নভেম্বর- ইন্দোর ও পাটনা শহরের মধ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ট্র্যাক থেকে লাইনচ্যুত হয়ে কমপক্ষে ১৪৬ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছিল।
২০১১ সালের জুলাই- উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ফতেহপুরের কাছে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত এবং ২৩৯ জন যাত্রী আহত হয়।
২০১০ সালের মে- পশ্চিমবঙ্গে একটি যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ১৪৫ জন নিহত হয়। কর্তৃপক্ষ এই দুর্ঘটনার জন্য মাওবাদী বিদ্রোহীদের নাশকতাকে দায়ী করে।
২০০৫ সালের অক্টোবর- ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের ভেলিগন্ডা শহরে বন্যার পানিতে রেললাইন ডুবে যাওয়ায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে কমপক্ষে ১১১ জন নিহত হয়। এছাড়াও প্রায় ১০০ জন যাত্রী আহত হয়।
২০০২ সালের সেপ্টেম্বর- ভারতের বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনায় কলকাতা থেকে নয়াদিল্লিগামী একটি এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১২১ জন নিহত হয়।
১৯৯৯ সালের আগস্ট- গৌহাটি শহরে দুটি ট্রেন মুখোমুখি সংঘর্ষে ২৮৫ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়।
১৯৯৮ সালের নভেম্বর- উত্তরের শহর খান্নাতে দুই টেনের সংঘর্ষে ২১০ জন নিহত হয়।
১৯৯৫ সালের আগস্ট- নয়াদিল্লির কাছে দুটি ট্রেন সংঘর্ষে ৩৫৮ জন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় ৯৮ জন নিহত
ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৬০, কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত
ভারতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২৩৩ জন নিহত, ৯ শতাধিক মানুষ আহত
ভারতের ওড়িশায় শুক্রবার দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ২৩৩ জন নিহত এবং ৯ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আরও কয়েকশ মানুষ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের মধ্যে আটকা পড়ে আছে।
প্রেস ট্রাস্ট জানায়, লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেস পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে দক্ষিণ তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই যাচ্ছিল।
শনিবার ভোরে ওড়িশার মুখ্য সচিব পি.কে জেনা একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৩৩ জন মারা গেছে এবং প্রায় ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
দেশটির রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেছেন, একটি ট্রেনের ১০ থেকে ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে এবং কিছু ছিন্নভিন্ন কোচের ধ্বংসাবশেষ কাছাকাছি ট্র্যাকের উপর পড়েছে। দ্বিতীয় ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
প্রেস ট্রাস্ট-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মালবাহী একটি তৃতীয় ট্রেনও দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছিল, তবে রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রেস ট্রাস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাইনচ্যুত যাত্রীবাহী কোচের কয়েকটি মালবাহী ট্রেন থেকে গাড়িতে আঘাত করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় ৯৮ জন নিহত
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১২০০ উদ্ধারকারী ১১৫টি অ্যাম্বুলেন্স, ৫০টি বাস এবং ৪৫টি মোবাইল হেলথ ইউনিট নিয়ে রাতভর দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করেছে।
কলকাতার প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ একদিকে উদ্ধারকারীরা আটকা পড়া জীবিত যাত্রীদের এবং অন্যদিকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করছে।
গ্রামবাসীরা বলেছেন, ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে একটি বিকট শব্দ শুনে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
জীবিত এক যাত্রী রূপম ব্যানার্জি পিটিআইকে বলেছে, ‘স্থানীয় লোকেরা সত্যিই আমাদের সাহায্য করেছে। তারা কেবল মানুষদের উদ্ধার করতেই সাহায্য করেনি, আমাদের লাগেজ উদ্ধার করেছে এবং আমাদের জল খাইয়েছে।’
আরেক যাত্রী বন্দনা কালেদা বলেন, ‘আমি যখন ওয়াশরুম থেকে বের হলাম, হঠাৎ ট্রেনটি কাত হয়ে গেল। এসময় আমি আমার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলাম... সবকিছু উল্টে যায়, একজনের ওপর অন্যজন পড়তে শুরু করে।’
তিনি আরও জানান, তিনি ভাগ্যবান বলে বেঁচে গেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৬০, কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত
অপর একজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি যিনি তার নাম প্রকাশ করেননি তিনি বলেছেন যে আঘাতের সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি ভাঙ্গা অঙ্গ ও বিকৃত মুখসহ অন্যান্য যাত্রীদের দেখেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন।
মোদি এক টুইটে লিখেছেন, ‘আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক।’
আরও জানান, তিনি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ‘সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা’ দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার রাজ্যটিতে এক দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
রেল নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, ভারতে প্রতিবছর কয়েকশ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে।
১৯৯৫ সালের আগস্টে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ট্রেন দুর্ঘটনার একটিতে, নয়াদিল্লির কাছে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ৩৫৮ জন মারা যায়।
২০১৬ সালে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ইন্দোর ও পাটনা শহরের মধ্যে লাইনচ্যুত হয়ে ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
বেশির ভাগ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় মানবিক ত্রুটি বা সেকেলে সিগন্যালিং যন্ত্রপাতিকে।
প্রতিদিন দেশটির ১২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) ভ্রমণ করে।
ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় ৯৮ জন নিহত
ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মণিপুরে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে গত মাসে অন্তত ৯৮ জন নিহত এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। শুক্রবার একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও, ৪ হাজারেরও বেশি অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে; যাতে লাখ লাখ রুপির সম্পত্তি পুড়ে গেছে এবং কয়েক হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় নিজেদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকেরা ত্রাণ শিবিরে বসবাস অব্যাহত রেখেছে।
রাজ্য সরকারের সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার একটি আপিল করার পরে গত ২৪ ঘন্টায় স্থানীয়রা পুলিশের কাছে ১৪০ টিরও বেশি অস্ত্র সমর্পণ করেছে।
মৈতৈ সম্প্রদায়ের উপজাতির মর্যাদা দাবির প্রতিবাদে রাজ্যের ১০টি জেলায় ৩ মে স্থানীয়রা একটি ‘উপজাতি সংহতি মার্চ’ সংগঠিত করার পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তবে প্রধানত মৈতৈ ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৬০, কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত
স্থানীয় গণমাধ্যম অনুসারে, মৈতৈ সম্প্রদায়ের লোকেরা মণিপুরের জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ এবং বেশিরভাগ ইম্ফল উপত্যকায় বাস করে। নাগা ও কুকি সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ এবং রাজ্যের পার্বত্য জেলাগুলোতে বসবাস করে।
আরও জানা যায়, বর্তমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক আসাম রাইফেলসের ১০ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মীকে রাজ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে চার দিন কাটিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার তার সফর শেষ করে শাহ ঘোষণা করেছেন যে সংঘর্ষের বিচার বিভাগীয় তদন্ত শিগগিরই শুরু করা হবে।
রাজ্যে সহিংসতা শান্ত করার জন্য মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকির অধীনে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি শান্তি কমিটিও গঠন করা হবে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ভারতে নৌকাডুবিতে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু
ভারতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একই পরিবারের ৬ জনকে গুলি করে হত্যা