জ্বালানি
নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল জরুরি: বক্তারা
সবুজ অর্থায়নকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নিবেদিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি তহবিল গঠন অপরিহার্য বলে জানিয়েছেন বক্তারা।
তারা বলছেন, নিবেদিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি তহবিল গঠন ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক অর্থায়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব হবে না।
শনিবার (১ জুন) ‘সেকেন্ড ঢাকা রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যান্ড ফাইন্যান্স টক’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা সবুজ জ্বালানি তহবিল গঠন বিষয়ে এই পরামর্শগুলো তুলে ধরেন।
রাজধানীর সামরিক জাদুঘরের মাল্টিপারপাস হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গবেষণা সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ নামে একটি সংগঠন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও জলবায়ু প্রতিবেদক তাহমিদ জামি।
বিশ্বব্যাংকের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স অ্যান্ড পি কনসালটেন্ট এম মুরশেদ হায়দার বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়নের অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য তহবিলের অভাব।
তিনি বলেন, ‘সবুজ পণ্যের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু পুনঃঅর্থায়ন স্কিম রয়েছে, কিন্তু সবুজ জ্বালানির উন্নয়নে ডেডিকেটেড নবায়নযোগ্য তহবিল নেই।’
তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ থেকে সুরক্ষা এবং উচ্চতর মুনাফা অর্থায়নের ক্ষেত্রে মূল বিষয়, যা নীতি সহায়তার মাধ্যমে নিশ্চিত করা দরকার।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য ডেডিকেটেড অর্থায়ন স্কিমের অভাবের কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের পরিচালক চৌধুরী লিয়াকত আলী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে ব্যাংকগুলোকে উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি আরও স্বীকার করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন ব্যবহারের কিছু মানদণ্ড রয়েছে যা বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা পূরণ করতে পারে না। ফলে ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা চায়।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ বিএনপির
বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের রেক্টর, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কিছু অর্থ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, এই তহবিলগুলোর আর্থিক ক্লোজিং একটি বিশাল সময় নেয়। কারণ বিনিয়োগকারীদের তহবিল গ্রহণের জন্য কিছু মানদণ্ড পূরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে ছাদে সৌর বিদ্যুতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সফল ব্যবসায়িক মডেল বিকশিত হয়নি, যার ভিত্তিতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ও ডেপুটি হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রোম, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সিদ্দিক আহমেদ এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাসটেইনেবিলিটি ইউনিটের চিফ অপারেটিং অফিসার সাব্বির হোসেন।
সেমিনারের আরেক সেশনে স্রেডার সাবেক সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, সার্বিকভাবে ভর্তুকি ভালো নয়। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে রূপান্তরে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের ক্ষেত্রে এটি অপরিহার্য।আরও পড়ুন: সেচ পাম্পের জ্বালানি নবায়নযোগ্য করলে সাশ্রয় হতে পারে ৫০০০ মেগাওয়াট: পরিবেশমন্ত্রী
সেচ পাম্পের জ্বালানি নবায়নযোগ্য করলে সাশ্রয় হতে পারে ৫০০০ মেগাওয়াট: পরিবেশমন্ত্রী
দেশে কৃষিজমির সেচের পাম্পের জ্বালানি নবায়নযোগ্য করতে পারলে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে কাজ করছে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে দ্বিতীয় ঢাকা নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্থায়ন শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, গ্রিন, ক্লিন ও জলবায়ু সহিষ্ণু অর্থনীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার উপর নির্ভরতা কমাতে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, জমির স্বল্পতার কারণে পুকুর বা জলশয়ে ভাসমান সোলার প্যানেল করে নিচে মাছ চাষ করার অথবা বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করেছি। সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করেছে। এই লক্ষ্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সব খাতের সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি অবকাঠামো ও প্রযুক্তিতে, সৌর, বায়ু, বায়োমাস ও জলবিদ্যুৎ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বিনিয়োগকারীকে আকৃষ্ট করতে, আমাদের আর্থিক প্রণোদনা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি কেবল কার্বন নির্গমন হ্রাসই করে না বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ও জীবনমান উন্নত করে।
মন্ত্রী এই রূপান্তরে উদ্ভাবনী আর্থিক উপকরণ যেমন গ্রিন বন্ড, জলবায়ু তহবিল এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের গুরুত্বের উপর জোর দেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা উন্নত বিশ্বের কাছে, ঋণ নয় অনুদান প্রত্যাশা করি। এই খাতে গবেষণা ও উন্নয়নের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার এবং সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আমাদের জাতির অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির মূল ভিত্তি করতে পারি।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশেষ রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলি আবদুল্লাহ খাসেইফ আলহুমুদ, পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান মুনিরা সুলতানা, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের অধ্যাপক এ. কে. এনামুল হক, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অলটারনেটিভ ল ইক্লেক্টিভের গবেষণা পরিচালক জেইন মৌলভী।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করতে আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
বাংলাদেশের জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ফিনল্যান্ড
বাংলাদেশের জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাত বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বৈদ্যুতিক গ্রিড ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগে আগ্রহী ফিনল্যান্ড।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিনল্যান্ডের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত কিমো লাহডিভিরতা।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, বৈদ্যুতিক গ্রিড ব্যবস্থাপনায় তার দেশের অধিক দক্ষতা রয়েছে এবং তাই তারা এ খাতে বিনিয়োগ করতে চায়।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধান করতে ফিনল্যান্ড থেকে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল শিগগিরই ঢাকায় আসবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে অবশেষে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ করতে যাচ্ছে।
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সমৃদ্ধির পথে যাত্রা মসৃণ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে জিএসপি+ সুবিধা আরও কয়েক বছর (বৃহত্তর সময়) পেতে ফিনল্যান্ডের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দেশে ফিনল্যান্ড-গুয়াতেমালা ও আয়ারল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে চমৎকার সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় তার ফিনল্যান্ড সফর এবং ২০০৮ ও ২০১৯ সালে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্মরণ করেন তিনি।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা ও কোভিড-১৯ মহামারির পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আর্থিক সহায়তা ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ভারতের নির্বাচন সম্পর্কে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের 'সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়' শীর্ষক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে 'গুড নেইবারহুড’ সম্পর্ক অনুসরণ করছে।
বৈঠকে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
আরও পড়ুন: আপনাদের যতদিন প্রয়োজন ততদিন পাশে থাকব: পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
আগামী ২ অর্থবছরে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ৮০৪ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ায় আগামী দুই অর্থবছরে এ খাতে ৮০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৩৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৪২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে।
সরকার পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ সক্ষমতা নিশ্চিত করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।’
'মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬)' শীর্ষক নথিতে বলা হয়েছে, গত দেড় দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াটে (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্যসহ) উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আরও ৩ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
এছাড়া সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন ৮ হাজার কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার ৬৭২ কিলোমিটার এবং বিতরণ লাইন ২ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৬২ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এ ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের বর্তমান সক্ষমতা প্রায় ৯০০ মেগাওয়াট।
নথিতে আরও বলা হয়, সরকার মোট ১ হাজার ১৪৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৬টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ এমএমসিএফডি গ্যাস যোগ করতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা
এছাড়া মোট ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২ হাজার ৫৭০টি সোলার সেচ পাম্প এবং গ্রিড বহির্ভূত অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের জন্য ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে বলেও ওই নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে, উৎপাদন ও সরবরাহ উভয় ক্ষেত্রেই বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৯টি গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন করা হয়েছে এবং দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ৯৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি অনুসন্ধান কূপ খনন সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা থেকে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন সক্ষমতা যোগ হতে পারে।
একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা থেকে দৈনিক আড়াই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি স্টোরেজ রি-গ্যাসিফিকেশন সক্ষমতা বাড়বে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যয় দক্ষতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার আন্তঃদেশীয় জ্বালানি পরিবহনের জন্য একটি আঞ্চলিক পাইপলাইন নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের ভিত্তিতে জ্বালানির নিয়মিত মূল্য সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি জরুরি: নসরুল হামিদ
সরকার জ্বালানি শোধনাগারের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস উভয়ের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন এবং সমতল ও উপকূলীয় অঞ্চলে উভয় জরিপের মাধ্যমে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের উপর জোর দিয়েছে।
পাশাপাশি জ্বালানি দক্ষতা ও সিস্টেম লস হ্রাসকেও অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হবে বলে এতে বলা হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি বলেছেন, গ্যাস বিতরণ খাতে সিস্টেম লস দুই বছর আগে ছিল ২২ শতাংশ, তা থেকে কমিয়ে তা এখন সাড়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিতরণে সিস্টেম লস ৭ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। জাতীয় পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে সিস্টেম লস ছিল ৪৪ শতাংশ এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ছিল ২২ শতাংশ।আরও পড়ুন: সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ঘাটতি, লোডশেডিং ছাড়িয়েছে ১৮৬০ মেগাওয়াট
বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম
মে মাসের জন্য ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের খুচরা মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের খুচরা গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে।
এপ্রিলের শেষ দিন নতুন দামসহ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
১ মে থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: বগুড়ার শিবগঞ্জে পুড়েছে তেলের গুদাম
দেখা যায়, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৭ টাকা, পেট্রোল প্রতি লিটার আড়াই টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং অকটেন ১২৬ টাকা থেকে আড়াই টাকা বাড়িয়ে ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নতুন এই দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
গত ৭ মার্চ প্রথম স্বয়ংক্রিয় মূল্য কার্যকর হয়।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলিয়ামের দামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ মার্চ দেশব্যাপী জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে 'জ্বালানি মূল্য নির্দেশিকা' জারি করে সরকার।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থানীয় মূল্য বাড়বে-কমবে এবং প্রতি মাসে সরকার এক মাস মেয়াদে এ ধরনের দাম ঘোষণা করবে।
এদিকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের দামও বাড়িয়েছে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে প্রতি ঘনমিটারে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে প্রতি ঘনমিটারে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ১ মে অর্থাৎ আগামীকাল বুধবার থেকে এ দাম কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: সয়াবিনের খোলা তেলের দাম কমলেও বেড়েছে বোতলজাত তেলের
ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের
জনশক্তি, জ্বালানি ও বিনিয়োগে সহযোগিতা জোরদারে কাতারের আমিরের সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আগামী মাসে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নির্ধারিত বাংলাদেশ সফরে জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় উভয় দেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২ দেশের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে, যেগুলো সফরকালে সই করা হবে।
আগামী ২১-২২ এপ্রিল ২ দিনের এই সফর হতে পারে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমিরের বৈঠকের পর যেসব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হবে, সেগুলো নিয়ে দুই পক্ষ এখন কাজ করছে।
সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছে।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলো বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি-৫) সাইডলাইনে আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতারের কাছে জ্বালানি বিশেষ করে এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ কাতার বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলে দেশটি।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা; অভিন্ন মূল্যবোধ, ধর্মীয় ভিত্তি, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
আরও পড়ুন: শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
শিবগঞ্জের ৭ লাখ মানুষের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ
জ্বালানির জন্য তহবিলের ঘাটতির কারণে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা। সাত লাখ বাসিন্দার অত্যাবশ্যকীয় জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত থাকায় স্বাস্থ্যসেবায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
আর এই সেবা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতাল কিংবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্বজনদের।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় স্কুলছাত্র নিহত
অ্যাম্বুলেন্স সেবার অনুপস্থিতি স্থানীয় রোগী ও স্বজনরা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো যারা বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা বহন করতে পারে না।
যারা আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যে থাকেন শুধু্ তারা এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে না। অন্যান্য জরুরি পরিবহনের জন্য অতিরিক্ত ব্যয়ের বহন করতে হচ্ছে স্বচ্ছল বাসিন্দাদেরও।
আর যাদের সামর্থ্য নেই তারা এই হাসপাতালেই সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসাস্থল ১০০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রতিদিন ৪০০ রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।
আরও পড়ুন: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স কাউন্টার!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় একটি পেট্রোল স্টেশনে ১৪ লাখ টাকার বকেয়া ঋণ রয়েছে অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি বাবদ। যার ফলে গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুর রশিদ সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন করেছেন।
তহবিল আসার পর শিগগিরই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় স্বামীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর সন্তান প্রসব!
বাংলাদেশের জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বাংলাদেশ সরকার মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) স্মার্ট মিটারিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জ্বালানির দক্ষতা বাড়াতে এবং ক্লিন এনার্জি সলিউশনে রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণচুক্তি সই করেছে।
বাংলাদেশ ও এডিবির পক্ষে যথাক্রমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং চুক্তিতে সই করেন।
ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদানকারী সংস্থাটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, স্মার্ট মিটারিং এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য ৬ লাখ ৫০ হাজার স্মার্ট প্রিপেইড গ্যাস মিটার (এসপিজিএম) ইনস্টল করে লোকসান কমাতে সরকারের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে।
প্যারিস চুক্তির অধীনে বাংলাদেশের নিজস্ব জলবায়ু প্রশমন ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে একটি হল এসপিজিএম ইনস্টল করা।
এডিবি জানিয়েছে, প্রকল্পটি বছরে প্রায় ৪ লাখ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গিনটিং বলেছেন, ‘এই প্রকল্প গ্যাস বাঁচাতে সাহায্য করবে; গ্যাসের অপচয় রোধ করা; গ্যাসের নিরাপদ ও দক্ষ ব্যবহার সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতনতা তৈরি করা; রাজস্ব প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং বিল তৈরি, সংগ্রহ ও নিরীক্ষণের খরচ কমিয়ে গ্যাস বিতরণ কোম্পানির আর্থিক কর্মক্ষমতা উন্নয়ন করে।’
আরও পড়ুন: দেশের গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি স্থিতিস্থাপকতা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য ১২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
এতে বলা হয়েছে, ‘প্রকল্পটি গ্যাস বিতরণ উপখাতের জন্য বাংলাদেশের জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও অবদান রাখবে। যেমনটি ২০২১ সালের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের আপডেট করা হয়েছে।’
প্রকল্পটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দেশের বৃহত্তম গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের রূপান্তরমূলক এবং আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে অপারেশনাল দক্ষতা বাড়ায়।
এর মধ্যে রয়েছে উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি, যেমন ইউনিফাইড মিটারিং ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত স্মার্ট মিটার এবং একটি স্বয়ংক্রিয় ওয়েব-ভিত্তিক অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের ব্যবহারের প্রচার।
১ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারের একটি সহগামী প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে এডিবি সরকারকে তার স্বল্প-কার্বন জ্বালানি রূপান্তর এবং গ্যাস বিতরণ উপখাতের জন্য মিথেন লিকেজ ক্ষতি হ্রাস পরিকল্পনায় সহায়তা করবে।
এর মধ্যে রয়েছে উদ্ভাবনী ক্লিন এনার্জি সলিউশনের উপর প্রাক-সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন তৈরি করা এবং কার্বন ক্রেডিট ব্যবহারসহ ভবিষ্যতের প্রকল্প অর্থায়নের জন্য ব্যক্তিগত পুঁজি অভিগম্যতার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা।
কারিগরি সহায়তা বিশেষ তহবিল থেকে ১ মিলিয়ন ডলার অনুদান এবং এডিবির পরিচালিত রিপাবলিক অব কোরিয়া ই-এশিয়া এবং নলেজ পার্টনারশিপ ফান্ড থেকে ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার অর্থায়ন সহায়তা করা হবে।
আরও পড়ুন: এশিয়া প্যাসিফিককে সহায়তা করতে আগামী দশকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল উন্মোচন এডিবির
বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
কয়লা-এলএনজি'র ওপর নির্ভরতা বাড়িয়ে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিরুদ্ধে কাজ করছে সরকার: সিপিডি
কয়লা ও এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়িয়ে সরকার পরিচ্ছন্ন জ্বালানি রূপান্তরের বিপরীত পথে চলতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছে থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বর্তমান পরিবর্তন' শীর্ষক ত্রৈমাসিক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সহযোগী গবেষক হেলেন মশিয়াত প্রীতি।
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, কয়লা জীবাশ্ম জ্বালানির সবচেয়ে খারাপ উৎস, বাংলাদেশে এর ব্যবহার বাড়ছে কারণ সরকার জ্বালানি রূপান্তরের বিপরীত দিকে যাত্রা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, 'জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কয়লা নির্ভরতা কমানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু কয়লার ব্যবহার ও কয়লার জন্য ব্যয় দিন দিন বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে লোডশেডিং অব্যাহত ছিল। ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের ত্রুটির কারণে লোডশেডিং বাড়ছে। জ্বালানি খাতে অনেক বিল বকেয়া রয়েছে। জ্বালানি আমদানির অসম্ভাব্যতাও আমি দেখতে পাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ ৮৫৬টি পোশাক কারখানায় নজরদারির সুপারিশ সিপিডির
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন পরিহার করে সরকার এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকছে এবং এলএনজি অবকাঠামো উন্নয়ন বাড়ছে। এর ফলে ঋণ ও বিল পরিশোধে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে বলে জানান ড. মোয়াজ্জেম হোসেন।
তিনি বলেন, 'দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ থাকলেও তা করা হচ্ছে না। গ্যাস ক্ষেত্র উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থ এলএনজি আমদানির জন্য ঋণ নেওয়া হচ্ছে। সরকারের ৪৬টি কূপ খননের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে, যা পূরণ করতে হবে।’
নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসঙ্গে ড. মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে আগ্রহী হলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ গুরুতর স্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ: সিপিডি
তিনি বলেন, ‘দক্ষতা বৃদ্ধি না করলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাবে না। প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি না করলে বিদ্যুতের উচ্চ মূল্য গ্রাহকদের ওপর চাপ বাড়াবে।’
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে লাভজনক হলেও গত তিন মাসে এর অগ্রগতি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম।
অন্যদিকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রতিনিয়ত মার্কিন ডলার অপচয় হচ্ছে। এক ডলার সঞ্চয় রাখার লড়াইয়ে এলএনজি ও কয়লা আমদানিতে ডলার খরচ হচ্ছে।
সিপিডি বলছে, বাংলাদেশে গ্যাস থেকে কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে কার্বন নিঃসরণও বেড়েছে। গত ১১ বছরে তা বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। বায়ুদূষণের কারণে মানুষের আয়ু কমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আরএমজি শিল্পে ন্যূনতম ১৭ হাজার ৫৬৮ টাকা মজুরির সুপারিশ সিপিডির
খাদ্য, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা করবে ঢাকা
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের নির্ধারিত ৭ সেপ্টেম্বরের বাংলাদেশ সফরে উভয় দেশ খাদ্য, সার, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা সংকটের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ইউক্রেন সংকটের পর থেকে সারা বিশ্বে যে জটিল পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে তা আমরা তুলে ধরব।’
রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেন ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ করতে পারে।
মঙ্গলবার ঢাকায় রুশ দূতাবাস জানিয়েছে, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতবিনিময় করবে।
আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে মোমেনের বৈঠক ৭ সেপ্টেম্বর
এর আগে গত বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সফরকালে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যু উত্থাপন করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি যেদিন এখানে আসবেন সেদিন আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। আমাদের অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনা করার আছে। আমাদের রোহিঙ্গা ইস্যুও আছে।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন বলে জানান তিনি।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর শেষে ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
মূলত ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইওআরএ (ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন) কাউন্সিলের ২২তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ল্যাভরভের গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সফরটি বাতিল করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইইউ’র সঙ্গে সংযুক্ত নয়: রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ টেলিফোনে কথা বলেন ও উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন এবং এই সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
টেলিফোনে আলাপকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সময় জটিলতার কারণে ঢাকায় আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শিগগিরই সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসারে, মোমেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: পুতিন-শি জিনপিং বৈঠক, বিচ্ছিন্ন রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য রাজনৈতিক উৎসাহ