প্রধানমন্ত্রী
অপরাধীদের রুখতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: মেট্রোরেলে তাণ্ডব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশব্যাপী সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের অপরাধীরা যাতে বিচারের মুখোমুখি হয় ও শাস্তি পায় তা নিশ্চিত করতে দেশবাসীকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে মিরপুর-১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, 'দেশের জনগণকে এই অপরাধীদের বিচার করতে হবে, আমি তাদের কাছে বিচার চাইছি।’
মেট্রোরেল নির্মাণের সঙ্গে জড়িতরা এমন ধ্বংসযজ্ঞ দেখে চোখের জল ফেলছেন বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেন তারা এটা করল? এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং আমি তা করে দেখিয়েছি, এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যখন পরবর্তী স্তরে উন্নীত হচ্ছে তখন দেশকে পেছনে টেনে নিতে চাচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেন, এটা আমার প্রশ্ন এবং আমি জানি না এর উত্তর কে দেবে।’
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, জনগণকে সেবা, সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্য দিতে যেসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছিল সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল নির্মাণ করতে সরকারকে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে এবং এটি নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্মাণ করা হয়েছিল।
যাদের আগে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো, মেট্রোরেল সেই গণমানুষের দুর্ভোগ লাঘব করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলে কেন এ ধরনের হামলা হচ্ছে, সেটাই আমার প্রশ্ন।’
মেট্রোরেল ও এর সেবা আন্তর্জাতিক মানের বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘কী ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম এখানে! এ দেশের মানুষ এটা করতে পারে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কিন্তু এখানে সেটা করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্র এই ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তিনি মানুষের কল্যাণ ও সুখের জন্য সবকিছু করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, শিক্ষা ও যোগাযোগ নিশ্চিত করেছি। এসব উন্নয়নের সুফলভোগী কারা? দেশের গণমানুষ। মেট্রোরেলের ওপর এত ক্ষোভ কেন, সেটাই আমার প্রশ্ন।’
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বোঝাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে যে বিষয়টি আদালতে রয়েছে এবং তাদের যেন হতাশ না হতে হয় সেজন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কিন্তু শীর্ষ আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত তারা থেমে থাকেনি, ধৈর্য ধরতে রাজি হয়নি। এখন তারা তাদের দাবি আদায় করে নিচ্ছে, প্রথমে এটা এক দফা ছিল, এখন আট দফা।’
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে যে বিএনপি-জামায়াত জোট এ ধরনের তাণ্ডব চালানোর সুযোগ পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী কারা? এই মেট্রোরেল ও ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনগুলো মেরামত করতে কতদিন লাগবে জানি না।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতার সময় ভাঙচুরের শিকার স্টেশনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ পরিদর্শনের সময় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ক্ষয়ক্ষতি এবং পুনরায় চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা।
এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত ১৮ জুলাই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করাই ছিল বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ধারণা ছিল, দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে পারে।
বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এডিটরস গিল্ডের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, বার্তা প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি জানতাম, (৭ জানুয়ারি) ইলেকশন করতে দেবে না। তারপরও আমরা ইলেকশন করে ফেলেছি। (তারা বলেছিল) ইলেকশন করার পর ইলেকশন গ্রহণযোগ্য হবে না, সেটাও গ্রহণযোগ্য আমরা করতে পেরেছি। সরকার গঠন করতে পেরেছি। আমার ধারণা ছিল, এ ধরনের একটা আঘাত আবার আসবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৪ সালের নির্বাচনের আগে-পরেও বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা এবং হাজার হাজার মানুষকে আহত করে।
কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার পেছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল।... এই যে লোক চলে আসা, এবার আমরা কিন্তু আগে থেকে খবর পেয়েছি- লোক ঢুকবে। গোয়েন্দা দিয়ে সব হোটেল, কোথায় থাকতে পারে, সেগুলো নজরদারিতে আনা হয়েছে। কিন্তু ওরা সেখানে ছিল না; এরা চলে এসেছে ঢাকার ঠিক বাইরের পেরিফেরিতে (সংলগ্ন এলাকায়)।’
আরও পড়ুন: ক্রমবর্ধমান সামুদ্রিক খাবারের চাহিদা মেটাতে সমুদ্র সম্পদে বিনিয়োগ করুন: প্রধানমন্ত্রী
‘সারা বাংলাদেশ থেকে শিবির-জামায়াত এরা কিন্তু এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু ছাত্রদলের ক্যাডাররাও সক্রিয় ছিল। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, এতে এরাও (বিএনপি) সক্রিয় ছিল।’
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা জিনিস খেয়াল করবেন, তখনও কিন্তু লাশ পড়েনি। অথচ স্টেট ডিপার্টমেন্টের (যুক্তরাষ্ট্রের) বক্তব্যে এসে গেল- লাশ পড়েছে। লাশের খবর তাদের কে দিল? তাহলে লাশ ফেলার নির্দেশটা কে দিয়েছে, এটারও খবর নেওয়া দরকার। তারপর কিন্তু লাশ পড়তে শুরু করল।’
তিনি বলেন, ‘আমি এমন কোনো ঘটনা দেখতে চাই না, যাতে দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়ে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয়। তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার টার্গেট করেছিল।’
দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে পঙ্গু করার উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের প্রতি যারা সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের বোঝার সক্ষমতা নিয়ে এসময় প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী মহলের একমাত্র লক্ষ্য দেশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা এবং গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ যে গণতন্ত্র ভোগ করে আসছে তা বন্ধ করা।
সাম্প্রতিক সহিংস পরিস্থিতিতে কারফিউ দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি তো চাইনি আমাদের গণতান্ত্রিক ধারায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটুক, আমাদের কারফিউ দিতে হোক।... একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে এটা আমাদের কাম্য ছিল না। কিন্তু আজ না দিয়ে কোনো উপায় ছিল না; না দিলে আরও যে কত লাশ পড়ত, তার হিসাব নেই।’
তিনি বলেন, ‘যখন তারা (শিক্ষার্থীরা) ঘোষণা দিল যে, চলমান নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত নয়, তখনই আমরা সেনাবাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দেশবাসীকে সব ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে অনুরোধ করব, যারা এভাবে দেশের সর্বনাশটা করল- গণমানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধি, তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য, তাদের জীবনমান উন্নত করার জন্য যতগুলো স্থাপনা তৈরি করেছি, সবগুলোতেই তারা আঘাত করেছে, সবগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। (এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে) ক্ষতিটা কার? নিশ্চয়ই জনগণের। এখানে তো জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে; এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে। কারণ এরা তো কোনোদিনই কোনো দেশে ভালো কিছু করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক এই তাণ্ডবের টার্গেট ছিল আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দাবি তারা করেছিল কোটা সংস্কারের, যতটুকু চেয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি দিয়েছি। যখন তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো, তারপরও তারা এ জঙ্গিদের সুযোগ করে দিল কেন? কোটা আন্দোলনকারীদের কিন্তু জাতির কাছে একদিন এ জবাব দিতে হবে। কেন মানুষের এত বড় সর্বনাশ করার সুযোগ করে দিল?’
‘আমরা সবসময় তাদের সহানুভূতি দেখিয়েছি। তাদের সবসময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছি; কিন্তু যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে কখনো ক্ষমা করা যায় না।’
মত বিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য দেন এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল বাবু।
সভায় আরও বক্তব্য দেন- জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ডিবিসি টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল ইসলাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা জার্নালের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নাগরিক টেলিভিশনের হেড অব নিউজ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, আরটিভির হেড অব নিউজ মামুনুর রহমান খান, দৈনিক আমাদের সময় ও বিজনেস পোস্টের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল আলম, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাজাহান সর্দার, ডিবিসি টেলিভিশনের নিউজ এডিটর জায়েদুল আহসান পিন্টু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজ আশিষ সৈকত, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, ৭১ টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ, কিংস নিউজের হেড অব নিউজ নাজমুল হক সৈকত প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে আ. লীগের নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
বাংলাদেশে পেরোদুয়া গাড়ি উৎপাদন করতে মালয়েশিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
দলমত নির্বিশেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সবসময় সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ২০২৪-২৫ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা এটা সব সময় মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘নিজের জীবনের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে, পরিবার-পরিজন, বাবা-মাসহ সবকিছু ফেলে রেখে তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যার যা কিছু আছে তা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।’
তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশের বিজয় অর্জিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তাদের সব সময় সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া উচিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জানেন মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের হয়তো তার দলের প্রতি সমর্থন নেই, হয়তো অন্য দলে চলে গেছেন বা অন্য কোনো কারণ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সহকারী জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ
তিনি বলেন, ‘তারা যেখানেই যাক, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। এটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ যে তারা এই দেশকে মুক্ত ও বিজয়ী করতে তাদের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। তাদের অনেকে পঙ্গু হয়েছে।’
মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুকে পরাজিত করে বিজয় এনে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘তাই এক্ষেত্রে আমি মনে করি, তাদের সম্মানই হতে হবে সর্বোচ্চ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক মুক্তিযোদ্ধা তার মতের সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন, তার দলের সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন, কিন্তু তারপরও তারা মুক্তিযোদ্ধা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবাইকে সম্মান করি। এদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে তাদের এই সম্মান দিয়ে দিক এটাই চাই আমরা।’
একসময় মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত ছিল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। তারা গর্ব করে বলতে পারে আমি মুক্তিযোদ্ধা।’
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা মাথায় রেখেই আমাদের দেশের সর্বস্তরের মানুষদের কাউকে অবহেলা করা হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সংখ্যালঘু আছে, প্রতিবন্ধী মানুষ আছে, অটিস্টিক আছে। সরকার তাদের সবার প্রতি সহানুভূতিশীল।
তিনি বলেন, 'তারা যেন সমাজের সকল সুযোগ-সুবিধা পায়, তারা যেন পিছিয়ে না পড়ে সেদিকে আমরা বিশেষ নজর রাখছি।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের ফেলোদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়ার আগে দেশের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের অনেক কিছু দেওয়ার আছে। ভবিষ্যতে আপনাদেরই দেশকে আরও উন্নত করতে হবে।’
জনগণের টাকায় ফেলোশিপ নিয়ে তারা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন এই বিষয়টি তাদের মনে রাখতে বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবেন, আপনাদের উচ্চশিক্ষায় যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তা জনগণের টাকা। জনগণের সেবায় আপনাদের বিশেষ নজর দিতে হবে।’
ডিগ্রি শেষ করে দেশে ফেরার পর দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ বছর ১১ জন পিএইচডি এবং ৩৯ জন মাস্টার্স ফেলোশিপ পেয়েছেন।
বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করতে এ পর্যন্ত ৩০৮ জন মাস্টার্স ফেলো ও ১১৬ জন পিএইচডি ফেলোকে প্রায় ৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ২১৫ জন মাস্টার্স ফেলো এবং ২৬ জন পিএইচডি ফেলো ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।
তিনটি ক্যাটাগরিতে এই ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে- সরকারি কর্মকর্তা (বিসিএস), সরকারি কর্মকর্তা (নন-বিসিএস) ও অন্যান্য (বেসরকারি পরীক্ষার্থী)।
সব সেক্টরের সম্পদের সক্ষমতা বাড়াতে ২০১৮ সালে এই ফেলোশিপ চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটকে (জিআইইউ) এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছেন এই ফেলোরা।
ফেলোশিপ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
ফেলোশিপ পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে কয়েকজন পিএইচডি ও মাস্টার্স ফেলো তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ ও এর জনগণের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার জানা তারা।
অনুষ্ঠানে ফেলোশিপের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিজেদের রাজাকার বলতে পারে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী চান তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করুক ভারত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি চান ভারত তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করুক, কারণ এটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত।
তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আমি ভারতকেই অগ্রাধিকার দেব। ভারতের হাতে তিস্তা নদীর পানি রয়েছে। সুতরাং তাদের প্রকল্পটি করা উচিত এবং তারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে এখানে যা প্রয়োজন তা দেবে।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক চীন সফরের ফলাফল নিয়ে তার সরকারি বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, চীন তিস্তা প্রকল্প সম্পর্কে কিছু প্রস্তাব নিয়ে এসেছে এবং সম্ভাব্যতা যাচাইবাছাই করেছে। এদিকে ভারতও প্রস্তাব দিয়েছে এবং সম্ভাব্যতা যাচাইবাছাই করবে।
তিনি বলেন, ভারতের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হওয়ার পর সরকার বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
ট্রাম্পের ওপর বন্দুক হামলার নিন্দা প্রধানমন্ত্রীর
দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, “আমি যখন অভিযান শুরু করেছি, তখন দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেব না, তারা যেই হোক না কেন বা তাদের অবস্থান যাই হোক না কেন। এমনকি আমি এটাও বিবেচনা করব না, কে আমার কাছের বা কে নন। যেহেতু আমি 'জিরো টলারেন্স' নীতি ঘোষণা করেছি সেহেতু এটা অবশ্যই বাস্তবায়ন করব।”
আরও পড়ুন: আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই: কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
৮ থেকে ১০ জুলাই চীনে তার সাম্প্রতিক দ্বিপক্ষীয় সফরের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের অনিয়ম দূর করে দেশকে একটি সুস্থ ব্যবস্থায় নিয়ে যাওয়া তার দায়িত্ব।
তিনি বলেন, ‘অভিযান অব্যাহত থাকবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই অভিযান চালানো হলে আমার সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, এটা আমি মনে করি না। না, আমি এটা বিশ্বাস করি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় এখন বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির বিষয় সম্পর্কে জনগণ জেনে গেছে।
তিনি বলেন, ‘অতীতে কেউ দুর্নীতির বিরুদ্ধে এভাবে অভিযান চালায়নি।’
তিনি বলেন, তার সরকার আগেই দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সামাজিক এই অভিশাপের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সফলভাবে এটি করেছি। এখন আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং এটি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তার বাড়িতে আগে কাজ করা একজন পিয়ন এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক এবং হেলিকপ্টার ছাড়া চলতে পারে না। তিনি এটি জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি ও শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাতের মামলার বিচারেরও সমালোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ওপর বন্দুক হামলার নিন্দা প্রধানমন্ত্রীর
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
ট্রাম্পের ওপর বন্দুক হামলার নিন্দা প্রধানমন্ত্রীর
শনিবার নির্বাচনি জনসভায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা সত্যিই দুঃখজনক। তিনি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। আমরা অবশ্যই তার ওপর এ ধরনের হামলার নিন্দা জানাই।’
আরও পড়ুন: চীন সফর বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত: শেখ হাসিনা
সম্প্রতি চীন সফরের ফলাফল তুলে ধরতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আমেরিকা সব সময় তাদের গণতন্ত্র নিয়ে গর্ববোধ করে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো জায়গায় কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন।
শেখ হাসিনা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, 'গণতন্ত্রের অগ্রপথিক যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি সভ্য দেশে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটল তা আমাদের প্রশ্ন।’
রিপাবলিকান পার্টি এই হামলার জন্য সরকারকে দোষারোপ করেনি এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সরকারকে দায়ী করা হতো।’
শনিবার পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনি সমাবেশে এ হামলা করা হয়। বুলেটের আঘাতে অল্পের জন্য বেঁচে যান ট্রাম্প। তবে তার কান সামান্য কেটে যায়, মুখমণ্ডল থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। এরপরই তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনা হয়। এ সময় হামলাকারী ও সমাবেশে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি নিহত হন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই: কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
গণভবনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. নলিনী তাভিসিনের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে জোর দেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: জাতীয় অগ্রগতিতে খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
এসময় থাই বিনিয়োগকারীদের তাদের পর্যটন ব্যবসার বিকাশের জন্য কক্সবাজারে একটি বিশেষ জমি বরাদ্দের প্রস্তাব করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'থাই বিনিয়োগকারীরা যাতে তাদের পর্যটন ব্যবসা বিকশিত করতে পারে সেজন্য কক্সবাজারে একটি পৃথক জমি দিতে পারে বাংলাদেশ।’
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান।
থাই ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দল নিয়ে চার দিনের সরকারি সফরের অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকায় পৌঁছেছেন থাইল্যান্ডের মন্ত্রী ও থাই বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. নলিনী।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। সুনীল অর্থনীতির জন্য দেশের সমুদ্রসীমাকে কাজে লাগানোর ওপরও জোর দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্রসীমা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আমাদের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। থাই বিনিয়োগকারীরা এখানে তাদের দক্ষতা কাজে লাগাতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিতে পারে।’
এসময় ড. নলিনী বলেন, তারা বাংলাদেশে জ্বালানি, লজিস্টিকস, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সামুদ্রিক খাদ্য এবং পর্যটন খাতে সম্ভাবনা খুঁজে বের করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, 'তারা এখানে সক্রিয়ভাবে অংশীদার খুঁজছেন এবং সে লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।’
হালাল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে আগ্রহ প্রকাশ করে থাই প্রতিনিধিদল জানায়, তাদের হাজার হাজার হালাল খাদ্য পণ্য রয়েছে এবং বৈশ্বিক ও জাতীয় উভয় বাজার ধরতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার একটি চমৎকার সুযোগ দেখতে পায়।
নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, 'এই খাতে সহযোগিতা করার এবং বৈশ্বিক ও জাতীয় বাজারে যুক্ত হতে বাংলাদেশের জন্য একটি অসাধারণ সুযোগ রয়েছে।’
বৈঠকে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন।
আরও পড়ুন: আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই: কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার অনুসন্ধান করতে রপ্তানিকারকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই: কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
আদালত সমাধান না দেওয়া পর্যন্ত কোটা পদ্ধতির বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালত বা আদালত যখন রায় দেন তখন নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না। বিষয়টির সমাধান আদালতেই করতে হবে।’
রবিবার (১৪ জুলাই) সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চীন সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন রবিবার
কোটা আন্দোলনকারীদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা আইন মানে না, আদালতকে সম্মান করে না, সংবিধান বোঝে না, সরকারি কাজকর্ম বোঝে না।
তিনি আরও বলেন, 'হ্যাঁ, তারা মেধাবী, কিন্তু এসব বিষয়ে তাদের ধারণা থাকতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আদালত আন্দোলনকারীদের আইনি পদ্ধতিতে তাদের যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু তারা রাজপথে বিক্ষোভের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে পছন্দ করছে বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে এবং আদালত রায় দিয়েছেন, তাই এই মুহূর্তে রায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কোনো অধিকার আমার নেই এবং সংবিধানও আমাকে তা করার অনুমতি দেয় না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আদালতে এর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছু করার নেই। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা তাদের মেনে নিতে হবে। অন্যথায় আমাদের কিছু করার নেই এবং তারাও আন্দোলন চালিয়ে যাবে (কোনো ফল ছাড়াই)।’
বিক্ষোভের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু তারা যদি পুলিশের ওপর হামলা এবং যানবাহন ভাঙচুরের মতো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তাহলে আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার অনুসন্ধান করতে রপ্তানিকারকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
জাতীয় অগ্রগতিতে খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
রবিবার সফল রপ্তানিকারকদের মধ্যে জাতীয় ট্রফি দেবেন প্রধানমন্ত্রী
সফল রপ্তানিকারকদের মধ্যে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের ট্রফি পাবে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান।
প্রধানমন্ত্রী রবিবার (১৪ জুলাই) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ ট্রফি তুলে দেওয়া হবে।
এ উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর টিসিবি ভবনে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
আরও পড়ুন: শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
এসময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য ঘোষণার পর থেকে হস্তশিল্পকে যেন রপ্তানি করা যায় সেলক্ষ্যে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। রপ্তানি বাড়লে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। রপ্তানি বাণিজ্যকে বাড়াতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি সহায়ক ভূমিকা রাখবে। চীন, ভারত, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার সুবিধা নিতে কর্মতৎপরতা চালাচ্ছে। সম্প্রতি চীন সফরে বাংলাদেশকে ম্যানুফেকচারার হাব করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেখছি, যাতে চীনা সরকার সহযোগিতা করবে৷ রপ্তানি বাড়াতে ভারত সফরে বিমসটেক কী করে আরও কার্যকর করা যায় তা আলোচনা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল ব্যবসা, বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশে আসবে।’
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, আরজেএসসির নিবন্ধক (অতিরিক্ত সচিব) মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণে বাছাই কমিটির মাধ্যমে মোট ৩২টি খাতের রপ্তানিকারকদের মধ্যে থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের রপ্তানি আয়, আয়গত প্রবৃদ্ধি, নতুন পণ্যের সংযোজন, নতুন বাজারে প্রবেশ, কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন ইত্যাদি মূল্যায়নপূর্বক বিজয়ী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি খাতের জন্য কৃতি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ ট্রফি প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়া সব খাতের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি’ শিরোনামে একটি বিশেষ ট্রফিসহ (স্বর্ণ) মোট ২৯টি স্বর্ণ, ২৭টি রৌপ্য ও ২১টি ব্রোঞ্জ ট্রফি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রপ্তানি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে ইপিবি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
অর্থনৈতিক কূটনীতিতে জোর দিয়ে করেছেন প্রধানমন্ত্রী: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
‘প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্য নিরসনে বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন’
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য নিরসনে বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। গত ১৬ বছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৯ লাখ কোটি টাকা। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সামাজিক নিরাপত্তায় এত বেশি বরাদ্দ বিরল।’
শুক্রবার (১২ জুলাই) চট্টগ্রম সার্কিট হাউসে ছয়টি জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে জেন্ডার বাজেটের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৫ আগে বাংলাদেশ যেমন দেখেছিলাম, সেই বাংলাদেশ এখন অনেক বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর রূপান্তরকারী নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। বেড়েছে গড় আয়ু, কমেছে শিশু ও মাতৃমৃত্যুহার।’
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা সংবিধানে অসহায় মানুষের জন্য সরকারি সাহায্য লাভের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করে সামাজিক নিরাপত্তাকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি ভূমি ও গৃহহীন মানুষের পুনর্বাসন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে গৃহহীণ ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য আশ্রয়ণ, ঘরে ফেরা, একটি বাড়ি একটি খামার, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার মতো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো চালু করেন।’
চট্রগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম মোর্শেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) চট্টগ্রামের সহসভাপতি ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ জেলা পুলিশ ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চট্রগ্রামের মহানগরের ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত ১৪১ জন রোগী ও রোগীর স্বজনদের মাঝে ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করেন।
আরও পড়ন: ট্রেড ডিজিটালাইজেশনে লেনদেন দ্রুত-নিরাপদ হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
এসডিজি অর্জনে সরকার সঠিক পথে রয়েছে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী