সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে ১২টি ভারতীয় গরু জব্দ করেছে বিজিবি
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলা সীমান্ত এলাকা থেকে ১২টি ভারতীয় গরু জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গরুগুলোর আনুমানিক মূল্য ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ভোরে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা বাঁশতলা বিওপি এলাকায় দক্ষিণ কলোনি থেকে গরুগুলো জব্দ করে।
বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলা সীমান্তে বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮-ব্যাটালিয়নের অভিযানে চোরাচালানের ভারতীয় অবৈধ ১২টি গরু জব্দ করা হয়েছে। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দের ১২টি ভারতীয় গরুর আনুমানিক মূল্য ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘বাঁশতলা সীমান্ত এলাকা থেকে ১২টি ভারতীয় গরু জব্দ করা হয়েছে। গরুগুলো সুনামগঞ্জ শুল্ক কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
১০০ দিন আগে
চিকিৎসককে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে সুনামগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার সদস্যপদ স্থগিত
সুনামগঞ্জ শহরের একটি ক্লিনিকে ঢুকে গোলাম রব্বানী সোহাগ নামে এক চিকিৎসকের ওপর হামলা ও ছুরিকাঘাতের অভিযোগে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর রায়হান নামের এক নেতার প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠনের সব পদ স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে আনিসা হেলথ কেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ক্লিনিকের পরিচালক রুহুল আমিন বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
অভিযুক্তরা হলেন— সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিন এবং ছাত্রদল নেতা শাহনেওয়াজ সৌরভ মুবিন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’
এদিকে ঘটনার পর রায়হানের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠনের সব পদ স্থগিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রায়হান উদ্দিন তার স্ত্রীকে আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইউরিন টেস্টের জন্য ওই ক্লিনিকে নিয়ে যান। ক্লিনিকের আল্ট্রাসনোগ্রাম রুমের সামনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা নিয়ে রায়হানের সঙ্গে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. গোলাম রব্বানী সোহাগের কথাকাটাকাটি হয়।
সে সময় চিকিৎসক বলেন, ‘ভেতরে অন্য রোগীর পরীক্ষা চলছে, আপনি দরজা থেকে সরে দাঁড়ান। এ ঘটনায় তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। পরে ক্লিনিকের লোকজন রায়হান উদ্দিনকে শান্ত করেন।’
এদিকে, স্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে রায়হান ও তার স্ত্রী বাসায় চলে যান। বাসায় যাওয়ার প্রায় আধ ঘণ্টা পর রায়হান আবারও ওই চিকিৎসকের চেম্বারে ফিরে আসেন। এবার তিনি আগের ঘটনার জন্য চিকিৎসককে ‘সরি’ বলতে বলেন। তিনি তা না বলায় রায়হান ও তার সহযোগী তাকে বেধড়ক মারধর করে মাটিতে ফেলে ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে ক্লিনিকের লোকজন সোহাগকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে রায়হান উদ্দিন ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন দ্রুত ক্লিনিক ছেড়ে চলে যান।
আহত ডা. গোলাম রব্বানী সোহাগ বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রায়হান উদ্দিনের দাবি, আল্ট্রাসনোগ্রাম রুমে চিকিৎসকের সঙ্গে ডায়াগনসিসের সিরিয়াল নম্বর নিয়ে তার কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় ওই চিকিৎসক তার স্ত্রীকে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। ঘটনাটি তার স্ত্রী তাকে জানালে তিনি ভেতরে ঢুকে এর কারণ জানতে চান। তবে চিকিৎসক গোলাম রব্বানী তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। চেম্বারের কলম দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করাও শুরু করেন। কলমের আঘাত প্রতিহত করার সময় তিনি (চিকিৎসক) আহত হন।
তিনি বলেন, ‘তাকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের নির্দেশে দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সই করা চিঠিতে অভিযুক্তের সাংগঠনিক ও প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বেচ্ছাসেবক দল সুনামগঞ্জ জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিনের প্রাথমিক সদস্য পদ স্থগিতের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কারও ব্যক্তিগত অন্যায় আচরণের দায় সংগঠন নেবে না। যে কেউ অন্যায় করলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
১৩৩ দিন আগে
বর্ষাকালেও হাওরে পানি নেই, ঋণের টাকায় নৌকা বানিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা
সুনামগঞ্জের হাওরের মানুষ এখনো বলে, ‘বর্ষায় নাও, শুকনায় পাও’, অর্থাৎ বর্ষাকালে নৌকা, শুকনোর সময় পা-ই ভরসা। কিন্তু এই বর্ষায় প্রবাদটির অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। কারণ, হাওরে এখনো বর্ষা-বর্ষা ভাবটাই যে আসেনি!
বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে হাওরে এখনও আশানুরূপ পানি আসেনি। ফলে শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আক্তাপাড়া নৌকার হাটে বর্ষাকালেও চলছে ক্রেতা-খরা।
প্রায় তিন যুগ পুরোনো এই ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট বসে প্রতি শুক্রবার। হাওরাঞ্চলের যোগাযোগ, জীবিকা ও কৃষিকাজে গুরুত্বপূর্ণ বাহন হিসেবে বজরা, হিল্লা, পাতামী ও বারকীসহ নানা ধরনের নৌকা কেনাবেচা হয় এখানে। অথচ এ বছর এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় শীত-গ্রীষ্মে শুকিয়ে যাওয়া নদী, খাল-বিল এখনও পানিশূন্যতায় ধুঁকছে। ফলে হাওর এলাকায় নৌকার প্রয়োজন এখনও সেভাবে না দেখা দেওয়ায় বাজারেও রয়েছে ক্রেতার অভাব।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারজুড়ে ৩-৪ শ’ নৌকা সাজানো রয়েছে, কিন্তু সেই তুলনায় ক্রেতা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই প্রতিবারের মতো নেই বেচাকেনার ধুম। ব্যবসায়ীরা দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু দাম ও পানির অভাবে তেমন সাড়া মিলছে না।
জানা যায়, এ বছর নৌকা তৈরির উপকরণের দামও বেড়েছে। কাঠের দাম বেড়ে গেছে আগের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ। একেকটি লম্বা নৌকা বানাতে যেখানে আগে খরচ হতো ৯ হাজার টাকা, এখন তা বেড়ে ১৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।ি
আরও পড়ুন: গড়াই-তীর দখল করে চলছে অবৈধ নির্মাণ, নীরব প্রশাসন
বর্তমানে বারকী নৌকা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায়, পাতামী নৌকার দাম সেখানে ১৩ থেকে ১৫ হাজার, আর খিল্লা নৌকা পাওয়া যাচ্ছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায়। তবুও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বাড়িয়ে বিক্রি করলেও লাভ খুব বেশি হচ্ছে না। কারণ, উচ্চমূল্যে মানুষ নৌকা কিনছে না।
তাদের দাবি, ভরা মৌসুমে এই হাটে যেখানে গড়ে ১২০০ নৌকা বিক্রি হতো, এখন তা নেমে এসেছে মাত্র ৪০০টিতে। প্রতি সপ্তাহে গড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০টি নৌকা, যা আগের তুলনায় অনেক কম। নৌকার পাশাপাশি বৈঠার বাজারেও লেগেছে ধাক্কা।
আজমিরীগঞ্জ থেকে আসা বাছির মিয়া নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে একেক হাটে ১ হাজার থেকে ১২০০ বৈঠা বিক্রি করতাম, এখন তা কমে এসেছে ২ থেকে ৩ শ’তে।
৬ হাতের বৈঠা আগে যেখানে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা ছিল, এখন তা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নৌকা বাজার ঘিরে এই অঞ্চলের পাঁচ শতাধিক পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। কারিগর, কাঠ ব্যবসায়ী, বৈঠা বিক্রেতা, পরিবহন শ্রমিক ও ইজারাদারসহ অনেকে এই কর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু আষাঢ় মাস শেষ হতে চললেও এখনো বৃষ্টির পানিতে সুনামগঞ্জের নদী, খাল-বিল ভরে ওঠেনি। এদিকে, কেউ কেউ এনজিও বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা বানিয়ে থাকেন, নৌকার বাজারে জোয়ার না আসায় তারা এখন পড়েছেন আর্থিক চাপে।
শান্তিগঞ্জের রনশি গ্রামের নৌকা ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, ‘এ বছর পানি নেই, তাই ৭০টা নৌকা বানিয়েছি। অথচ, আগে বানাতাম দেড়শ-দুইশটা। এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র ৪০টা নৌকা বিক্রি হয়েছে। সারা দিন বসে থেকেও আশানুরূপ বিক্রি হয় না। ব্যাংক থেকে ঋণ করে নৌকা বানিয়েছি, অথচ লাভ তো দূরে থাক, ঋণ পরিশোধ করাই এখন বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: সাঁকো ভেঙেছে এক মাস, সাঁতরে নদী পার হচ্ছে ৮ গ্রামের মানুষ
অন্যদিকে, ক্রেতাদের মনেও একই রকমের হতাশা বিরাজ করছে। হাটে আসা বরকাপন গ্রামের আজমান আলী ও রনশী গ্রামের আখলিস আলী বলেন, মাটি কাটা, মাছ মারা, ঘাস কাটা—সব কাজে নৌকা লাগে। কিন্তু পানি না থাকায় কাজও হচ্ছে না, তাই নৌকা কেনা হচ্ছে না। তার ওপর দাম বেশি, তাই হাত গুটিয়ে আছি।
বাজারের ইজারাদার মুরাদ চৌধুরী ও সামছুদ্দিন সুনু বলেন, সাধারণত এক মৌসুমে যদি অন্তত ৫টি শুক্রবার ভালো বেচাকেনা হয়, তাহলে আমাদের লাভ চলে আসে। সেখানে এ বছর মাত্র এক সপ্তাহে কিছুটা বেচাবিক্রি হয়েছে, বাকি প্রতিটি হাটেই আমাদের নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। তবে সামনে পানি বাড়লে নৌকাও বিক্রি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা বলেন, ‘আক্তাপাড়া নৌকার হাট এই উপজেলার ঐতিহ্য। এর রক্ষণাবেক্ষণ বা সম্প্রসারণে কোনো সমস্যা হলে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখব। বাজারে সোলার লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে; পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনাও আছে। কিন্তু বৃষ্টির ওপর তো আমাদের হাত নেই!’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে কিছুদিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টি হলে নৌকা বিক্রি বাড়বে। আর ব্যবসায়ীদের মাঝেও স্বস্তি ফিরবে।’
১৫০ দিন আগে
জামালগঞ্জে পরিত্যক্ত সেতু দিয়ে ঝুঁকিতে চলাচল, দুর্ভোগে ৩৫ গ্রামের মানুষ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের দৌলতা নদীর উপর ৯৫ মিটার তেরানগর সেতুটি ৩৫ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। নির্মাণের সময়ে ত্রুটি থাকায় অল্প সময়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, ঘোষণা করা হয়েছে পরিত্যক্ত। তবুও ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে অটোরিকশা সিএনজি, মোটরসাইকেল, ট্রলিসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা বলছেন, পুরোনো এই সেতুর নির্মাণকালেই ত্রুটি ছিল। এ কারণে ২২ বছরের মাথায় যানবাহনের ভার সইতে পারছে না সেতুটি। এদিকে নতুন সেতু নির্মাণে এলাকাবাসীকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেই। একারণে চলাচলকারী মানুষজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
জামালগঞ্জ উপজেলার চলাচলের ভরসার সেতুটি ৩৫ গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হেমন্তে এটি ছাড়া ফেনারবাক ইউনিয়নের এসব গ্রামের সাথে যোগাযোগের আর কোন উপায় নেই। জানা যায়, তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রয়াত নজির হোসেন উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জামালগঞ্জে চারটি সেতু নির্মাণ করেন। সাচনা বেহেলী রোডে চৌধুরী বাড়ির পাশে, সাচনা পলক গ্রামের পিয়াইন নদীতে, তেরানগর দৌলতা নদীর উপর তেরানগর সেতু, দৌলতপুর বীনাজুরার কানাইখালী নদীর উপর তেরানগর সেতু।
আরও পড়ুন: সুরমার ভাঙনের কবলে ছাতক-আন্ধারীগাঁও-সুনামগঞ্জ সড়ক
এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০০২ সালে শুরু হয়ে ২০০৪ সালে শেষ হয়। ওই সময়ে এই পথে সাইকেল, মোটরসাইকেল ছাড়া কোনো যানবাহন চলতো না। হেঁটে সেতু দিয়ে চলাচল করতেন ৩৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। গেল প্রায় ২০ বছর হয় জামালগঞ্জ হয়ে তেরানগর সেতু পার হয়ে ফেনারবাক ইউনিয়নের লক্ষীপুর বাজার, নবীনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত পাকা সড়ক হয়েছে। প্রতিদিন এই সড়কে শতশত মোটরসাইকেল অটোরিকশা, সিএনজি, মিনিট্রাক, ট্রলি চলাচল করে। একটি উচ্চ বিদ্যালয়, দুইটি বাজার, একটি মাদরাসা এবং প্রায় অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সড়ক যোগাযোগের পথ যুক্ত হয়েছে এই সেতুকে ঘিরে।
এছাড়াও মাতারগাঁও, রাজাপুর রসুলপুর লালপুর দৌলতপুর, উজান দৌলতপুর, রাজাবাজ, খোজারগাঁও, বীনাজুরা তেঘরিয়া গঙ্গাধরপুর, ছয়হারা, কামারগাঁও, ইনাতনগর, বিজয় নগর, কাশীপুর, উদয়পুর লক্ষীপুর ভেদারপুর ফেনারবাক, চাটনিপাড়া, নাজিমনগর হটামারা, উদয়পুর ছাড়াও দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের ভাটিপাড়া, নূরনগর, আলীনগর, ইসলামপুর, সেচনী, রফীনগর ইউনিয়নের খাগাউরা, সেচনী, কিত্তাগাঁও, স্বজনপুরসহ ১২টি গ্রামের মানুষকে এই ব্রিজ পার হয়েই যাতায়াত করতে হয়।
গেল কয়েকবছর হয় ভারী যানবাহন সেতুর উপর উঠলে কাঁপতে থাকে এটি। প্রতি বছরেই উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকে সংস্কার করে অর্থের অপচয় হয়। কিছু দিনের মধ্যেই আবার খানাখন্দসহ সেতুর রেলিং ও অ্যাপ্রোচ ভেঙে যায়। ২০১৪ সালে সেতুটি জামালগঞ্জ এলজিইডি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। পরিত্যক্ত লেখা সাইনবোর্ড টাঙানোর পরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে শত শত যানবাহন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট গর্ত এবং খানাখন্দে ভরা। মাঝে মাঝে কিছু গর্ত ইট বালু দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া হলেও, বাকী গর্তগুলোর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলছে শতশত যানবাহন।
আরও পড়ুন: ভাঙন-ঝুঁকিতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট
অটোরিকশা চালক নাসির বললেন, প্রতিদিন সেতুর গর্তে পড়ে কোনো না কোনো গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। গাড়ি উঠলেই সেতু কাঁপতে থাকে, মনে হয় হেলে পড়ে যাবে। সেতুর রেলিং গাড়ির ধাক্কায় ভেঙে আরও ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সংকীর্ণ এই সেতু দিয়ে দুইটি গাড়ি একসঙ্গে চলাচল করতে পারে না।
স্থানীয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, ২০১৪ সালে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা হয়, কিন্তু নতুন করে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই সেতু দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ জন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২ শতাধিক মানুষ। এছাড়াও ছাগল ভেড়া গবাদিপশু মারা গেছে অর্ধশত। প্রতিনিয়ত ভোগান্তি আর হয়রানির শিকার হচ্ছেন ৩৫ গ্রামের মানুষ। বিগত দিনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা আশ্বাস দিলেও নতুন সেতুর বাস্তবায়ন হয়নি।
নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত চন্দ্র সরকার বললেন, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, কেউ খবর রাখছে না। সেতু ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে দায় কে বহন করবে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দ্রুত দৌলতা নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি আমাদের সকলের।
ভীমখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান তালুকদার জানান, এই সেতু দিয়ে ৪০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। ২০১৪ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও প্রতিদিন শতশত যানবাহন সেতু দিয়ে চলাচল করছে। এতে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রে বিলীন কুয়াকাটার ‘মেরিন ড্রাইভ’
জামালগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, দৌলতা নদীর উপর তেরানগর সেতুটি ২০০২ সালে শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য করা হয়েছিল। তখন এই উপজেলার কোথাও গাড়ির যোগাযোগ ছিল না। এখন এই সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়ি চলাচল করছে। সেতুটিও এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। ইতোপূর্বে উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় থেকে প্রকল্পের আওতায় দৌলতা নদীর সেতুসহ এই সংস্থার মাধ্যমে আগামী অর্থবছরে আরও কয়েকটি সেতুর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশাকরি, আগামী অর্থ বছরে অর্থ বরাদ্দ হবে এবং এই এলাকার জনসাধারণের অতিগুরুত্বপূর্ণ এই সেতু নতুন করে করা যাবে।
১৭৯ দিন আগে
সুনামগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত
সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। সোমবার (১৯ মে) ভোরে জেলার রাজাপাড়া সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ সামছু মিয়া (২৫) বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী রাজাপাড়া গ্রামের আব্দুল সাত্তারের ছেলে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুরের রাজাপাড়া সীমান্ত পিলার ১২১১ নম্বর দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে চোরাইপণ্য আনতে যান ৪-৫ জন চোরাকারবারী। এ সময় চিনাকান্দি বিজিবি ক্যাম্পের বিপরীতে ১৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রাজাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে শামসুল গুলিবিদ্ধ হন।
আরও পড়ুন: সীমান্তে চোরাকারবারিদের হামলায় দুই বিজিবি সদস্য আহত
পরে সহকর্মীরা উদ্ধার তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবির অধিনায়ক একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত যুবক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পণ্য আনতে গিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’
১৯৯ দিন আগে
অর্ধযুগ পার, সুনামগঞ্জের মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে কবে
সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীর ওপর শাহ আরেফিন (র.)-অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে ৪ ডিসেম্বর। তবে অর্ধযুগ পেরিয়ে ৭ বছরে পড়লেও সেতুটি যাদুকাটার দুপাড়ের বাসিন্দাদের মৈত্রীর বন্ধনে বাঁধতে সক্ষম হয়নি। নদীর মাঝে সেতুর কয়েকটি গার্ডার খাড়া হলেও সেতুটি পূর্ণতা পেতে এখনও অনেক কাজ বাকি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের গড়িমসির কারণে সেতুটি সংযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায় সড়কপথের সুফল পাচ্ছে না সুনামগঞ্জের চারটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। পাশাপাশি স্থানীয়দের দুর্ভোগ তো রয়েছেই। এ ছাড়াও জেলার দীর্ঘতম এই নির্মাণাধীন সেতুকে কেন্দ্র করে তিনটি শুল্ক বন্দর ও কয়েকটি পর্যটন স্পটে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের সুযোগ মিলছে না, যার নেতিবাচক প্রভাবের বলি হচ্ছে স্থানীয় কর্মক্ষম বেকার যুবসমাজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যাদুকাটা নদীর ওপর শাহ আরেফিন (র.)-অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ ৩০ মাস, অর্থাৎ আড়াই বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করার নির্দেশনা ছিল। গত ৭ বছরে সেখানে এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চারবার, তবুও কাজ শেষ হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি ও বিন্নাকুলী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটন স্পট, তিনটি শুল্ক বন্দরসহ চার উপজেলার যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু অর্ধযুগ পরেও সাধারণ মানুষ এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। এ নিয়ে স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ দখল-দূষণের কবলে ফেনীর ২৪৪ নদী ও খাল
ভারতের মেঘালয় পাহাড় আর তাহিরপুরের অপরূপ সৌন্দর্যে্যর যাদুকাটা নদীকে ঘিরে রয়েছে পর্যটন শিল্প। সেই শিল্পকে চাঙ্গা করা ছাড়াও সীমান্ত এলাকাও তিনটি শুল্ক বন্দর, সীমান্ত সড়ক হয়ে সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা-ঢাকার সড়ক যোগাযোগ এবং জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যমে পরিণত হবে এই সেতু। কিন্তু সেতুটির পূর্ব পাড়ের অংশে কাজ শেষ না করায় প্রান্তিক এই উপজেলার মানুষের স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে এসেও তা আলোর মুখ দেখছে না।
২০১৮ সালে ৪ ডিসেম্বর ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)। তমা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব। এরপর থেকে ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে ৫৭টি এবং ১৫টি স্লাবের মধ্যে ১০টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ১৮টি গার্ডার ও পাঁচটি স্লাবের কাজ সাত বছর পরেও এখনও বাকি রয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিন্নাকুলী গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলমসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। সে সময় তারা বলেন, সেতুটি সম্পন্ন হলে আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়েও অনেকের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ হতো। কিন্তু তাস বছরেও সেতুটির নির্মাণকাজ যখন শেষ হয়নি, তখন তা কবে শেষ হবে, তা নিয়ে আমরা আর কোনো আশা রাখি না।
গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে যাদুকাটার ওপর সেতু না থাকায় যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, সে কথাও বলেন তারা, নৌকা দিয়ে নদী পার হতে ৩০ মিনিট সময় লাগে আর বর্ষার সময় আরও বেশি সময় লাগে। নৌকা দিয়ে নদী পার হতে টাকাও খরচ হয়। নদী পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী কবির ভূইয়া বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা ঢাকা থেকে মালামাল কিনে সরাসরি বাজারগুলোতে নিয়ে আসতে পারছেন না শুধু সেতু না হওয়ার কারণে। এখন মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গত তিন বছর ধরে শেষ হবে বলে সময় পার করা হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না।’
বাদাঘাট ইউনিয়নের সমাজসেবক আবুল হোসেন বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, সেইসঙ্গে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের উপায় হবে। অথচ সবকিছুই এখন আটকে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: নিদ্রা সৈকত: অপার সম্ভাবনার এক নিসর্গ ভূমি
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সেতুর জন্য লাখ লাখ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। গুরুত্ব দিয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ সম্পন্ন করলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। আর এই সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইলফলক সৃষ্টি করবে।’
সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করতে কেন এত সময় লাগছে—জানতে চাইলে তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাসির বলেন, ‘বারবার বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ শেষ করা যায়নি।’ তবে ২০২৬ সালের মে মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
সেতুটির নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে বলে জানান সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনও।
২০৬ দিন আগে
আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
রাজধানীতে সাবেক এমপিসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের আরও সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১০ মে) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জ জেলার আওয়ামীলীগ মনোনীত সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম ওরফে শামীমা শাহরিয়ার (৪৫), দারুস সালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান মতি, গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআর আই) পরিচালক ও শেখ হাসিনার সহকারী প্রেসসচিব আশরাফ সিদ্দিকী ওরফে বিটু (৪৪), কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নেছার আহমেদ ওরফে নেছার উদ্দিন হাওলাদার (৩৫), দারুসসালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম (৪০), নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন সরকার (৫৫) ও দক্ষিণ বাড্ডা বাজার ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম বিপ্লব (৫৩)।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ১টায় ধানমন্ডি এলাকা থেকে শামীমা আক্তার, আশরাফ সিদ্দিকী ওরফে বিটু, দারুসসালাম এলাকা থেকে দুপুর ৩টা ৫০ মিনিটে ইমরান মতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাভারের কুমকুমারি বাজার এলাকা থেকে ৫টা ৫ মিনিটে রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে। এছাড়া লালবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রাত পৌনে ১২টায় মোশারফ হোসেন সরকারকে, বাড্ডা থানার ১৮ নং সেক্টর থেকে মহিদুল ইসলাম বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
২০৭ দিন আগে
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত
সুনামগঞ্জের ছাতকে হাওরে মাছ শিকার করতে গিয়ে বজ্রপাতে মুজিবুর রহমান (১৬) নামের এক স্কুলশিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে বাড়ির পাশে এই ঘটনা ঘটে।
মুজিবুর দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মায়েরকোল গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে এবং খুরমা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে ৩ স্কুলছাত্রীসহ নিহত ৪
মায়েরকোল গ্রামের বাসিন্দা নিহতের চাচতো ভাই মো. মুহিবুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘সকালে মাছ ধরতে গিয়ে নিজ বাড়ির পাশে সে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে।’
ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুখেলছুর রহমান আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২১০ দিন আগে
ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা
সুনামগঞ্জের হাওরে পুরোদমে চলছে ধান মাড়াইয়ের কাজ। ধান কাটা আর কেনাবেচা নিয়েও আলোচনা মুখে মুখে। তবে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। তারা ধারণা করছেন, সরকার প্রতিমণ ধানের মূল্য ১ হাজার ৪৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও, হয়তো সেটি পাবেন না।
রাজনীতিবিদ ও কৃষক সংগঠকদের পরামর্শ সরকার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এবং বেশি সংখ্যক কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনতে পারলেই কেবল ধানের নির্ধারিত মূল্য পাবেন কৃষকরা। অর্থাৎ মিলার ও ফড়িয়ারা তখন বাধ্য হবে উপযুক্ত মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে।
বাজারে ধানের মূল্য কি পরিমাণ বাড়বে বা কমবে তা অনেকটাই নির্ভর করছে রবিবার(২০ এপ্রিল) জেলা ধান ক্রয় কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্তের উপরই।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে এখন জোরেশোরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত হাওর ও হাওরেরে বাইরের খেত মিলিয়ে ২৪ শতাংশ ধান কাটা ও মাড়াই করা হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পাশাপশি খরচের জন্য ধান বিক্রয়ও করছেন কৃষকরা। এক্ষেত্রে বিপদগ্রস্ত কৃষকরা মিলার ও ফড়িয়াদের কাছে কম দামে অগ্রিম বিক্রয় করছেন ধান। আবার কেউ কেউ অপেক্ষা করছেন, সরকার ধান কেনা শুরু করলে ধানের দাম কিছুটা বাড়তে পারে, তখনই ধান বিক্রি করবেন তারা।
বিশ্বম্ভরপুরের করচার হাওরপাড়ের মুক্তিখলার এক কৃষক জানান, ধান কাটানোসহ অন্যান্য খরচ চালানোর জন্য ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম এনেছি। তাদের কথা দিয়েছি শুকনো ধান দেব প্রতিমণ ১০০০ টাকা দরে।
আরও পড়ুন: কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
একই এলাকার আরেক কৃষক মহিবুর রহমান বলেন, সাত কেয়ার (তিন কেয়ারে এক এক একর)জমিতে ধানচাষ করেছেন তিনি। এরমধ্যে চার কেয়ার বর্গা (আধা আধি দেবার চুক্তিতে) করেছেন। চার কেয়ার শ্রমিক দিয়ে কেটেছেন, সাত ভাগে একভাগ দেবার চুক্তিতে। ধান পেয়েছেন প্রতি কেয়ারে ২২ মণ। সব মিলিয়ে ১৫০ মণের মতো ধান পাবেন তিনি। ১৫ থেকে ২০ মণ ধান বিক্রয় করবেন। সরকার ধান কেনা শুরু করলে গোডাউনে এক টন দেবার চেষ্টা করবেন। না হলে মহাজনের আড়তে নিয়ে যাবেন ১৫ থেকে ২০ মণ ধান।
জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের রহিমাপুরের কৃষক মুকুল রায় বলেন, ব্যাপারী (ধান কাটার শ্রমিক) মিলাইতে পারিনি। কাল-পরশু কাটানোর চেষ্টা করবো। ভরতপুর থেকে শ্রমিক আনার চেষ্টা করছি। তারা বলেছে কেয়ারে ৩০০ টাকা নগদ এবং সাত ভাগের এক ভাগ দিতে। হাওরে হারভেস্টার মেশিন (ধান কাটার যন্ত্র) নামে না। এজন্য বিপদে পড়েছি। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর শুকিয়ে, আমরা দুই তিন ভাই মিলে দুই তিন টন ধান বিক্রি করবো। সরকারি গুদামে দিতে পারলে ভালো হত। এর আগে কোনো সময়ই দিতে পারিনি।
তাহিরপুরের বড়দলের সামায়ুন আহমদ বলেন, বিগত সময়ে ৫০ থেকে ৬০ জনের কৃষি কার্ড একজন নিয়ে গেছে। এই টাউটরাই ধান দিয়েছে। খাদ্য গোদামে ধান দিতে গেলেও তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে আমাদের বিদায় করেছে। এবার যদি সুযোগ পাই খাদ্য গোদামে ধান দেবার চেষ্টা করবো।
সামায়ুন জানান, বারো কেয়ার (এক হাল) জমি করেছেন। ছয় কেয়ার জমির ধান কেটেছেন, বাকী আছে ছয় কেয়ার। সব মিলিয়ে ২৫০ মণ ধান পাবেন।
২২৭ দিন আগে
সুনামগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
সুনামগঞ্জে দিরাই উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (৯ মার্চ) সকালে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের রণভূমি গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, রণভূমি গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান ও আশিক মিয়ার মধ্যে স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। গত দুই দিন আগে ব্যাক্তিগত একটি জায়গা বিক্রিকে কেন্দ্র করে রবিবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ জড়ান তারা। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে তিনজন গুলিবিদ্ধ, ৫ ডাকাতকে গণপিটুনি
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সংঘর্ষের পর পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।’
এছাড়া গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে বলেও জানান ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
২৭০ দিন আগে