চীন
চীনে এসসিও সম্মেলন ও সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন কারা
চীনের বন্দরনগরী তিয়ানজিনে শুরু হয়েছে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) দুই দিনব্যাপী সম্মেলন। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের আমন্ত্রণে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন পুতিন-মোদিসহ আরও প্রায় ২০টি দেশের নেতারা।
এরপর বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর উপলক্ষে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও ২০ জনের বেশি বিশ্বনেতা অংশ নেবেন।
এসসিও সম্মেলন কোথায় হচ্ছে, কারা অংশ নিচ্ছেন
বোহাই সাগরের তীরে চীনের বন্দরনগর তিয়ানজিনে এ বছর এসসিও সম্মেলনের আয়োজন হয়েছে। ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বরে দুই দিনের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০০১ সালে এসসিও প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এটিই জোটটির সবচেয়ে বড় বৈঠক হতে চলেছে। বিভিন্ন দেশের ২০ জনের বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন এসসিও সদস্যদেশ—রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো, কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিয়য়েভ, কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভ ও তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুসহ আরও কয়েকজন নেতার এ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ানের মহাসচিব কাও কিম হর্নও সম্মেলনে অংশ নেবেন।
সবাই কুচকাওয়াজে থাকছেন না
বেইজিংয়ে বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে এবার প্রদর্শিত হবে চীনের সর্বাধুনিক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, যার মধ্যে রয়েছে ১০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান এবং অসংখ্য ট্যাংক ও ক্ষেপণাস্ত্র।
এসসিও ফোরামের অনেক উচ্চপর্যায়ের অতিথি এক হলেও সামরিক কুচকাওয়াজে কিছু ভিন্নতা থাকবে।
ভারত, মিসর ও তুরস্কের নেতারা এসসিও সম্মেলনে থাকলেও কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন না। তবে কায়রোর একজন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা দেশটির প্রতিনিধিত্ব করবেন।
অন্যদিকে, এসসিও সম্মেলনে না থাকলেও সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। এর মধ্যে দিয়ে ছয় বছর পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন কিম।
আরও পড়ুন: চীনে সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন কিম জং উন
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর এটিই হবে বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক কোনো অনুষ্ঠানে তার প্রথম অংশগ্রহণ। তাছাড়া কিমের এ সফর ২০১৯ সালের পর চীনে তার প্রথম সফর হতে যাচ্ছে।
এমন একটি সময় শি, পুতিন ও কিম একসঙ্গে বসতে চলেছেন, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। তিয়েনআনমেন স্কয়ারের এই বৈঠক পশ্চিমা বিশ্বে একটি স্পষ্ট ঐক্যের বার্তা দেবে বলে ধারণা করছেন অনেক বিশ্লেষক।
কাগজে-কলমে নিরপেক্ষ অবস্থান নিলেও মস্কোর আগ্রাসনকে নিন্দা জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়াকে অস্ত্রের যন্ত্রাংশ বিক্রির অভিযোগও রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে। এদিকে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে যুদ্ধে সহায়তার জন্য সেনা পাঠিয়েছে।
এ ছাড়াও কুচকাওয়াজে যোগ দিচ্ছেন মিয়ানমারের সেনা সরকারপ্রধান মিন অং হ্লাইং। তিনি ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
তাছাড়া কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ ক্যানেল এবং কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ও জিম্বাবুয়ের নেতারাও কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকবেন।
এই আয়োজনে অংশ নেওয়া একমাত্র ইউরোপীয় রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন রাশিয়া-ঘনিষ্ঠ সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচ এবং স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো।
৯৪ দিন আগে
বিডিআরসিএসকে ১৫ লাখ ডলারের জরুরি বন্যা মোকাবিলার সরঞ্জাম দিলো চীন
বন্যায় জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিকে (বিডিআরসিএস) অনুদান হিসেবে ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের সরঞ্জাম দিয়েছে চীন সরকার।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ঢাকায় বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদরদপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সরঞ্জাম হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ১০০টি ইঞ্জিনসহ রাবার বোট, ১৫টি ওয়াটার পিউরিফিকেশন ইক্যুপমেন্ট, ১০টি ডিজেল জেনারেটর, ৬সেট সমুদ্রের পানি লবণমুক্তকরণ যন্ত্র, ৫০০টি লাইফ ভেস্ট, ৫০০টি রেসকিউ হেলমেট, ৫০০ জোড়া রেসকিউ বুট, ৫০০ জোড়া হ্যান্ড গ্লাভস, ৩০০টি সামুদ্রিক ফার্স্ট এইড কিট, ২৫০টি রেসকিউ রোপ, ২৫০ সেট রেসকিউ রোপ ব্যাগ, ১০০ সেট লাইফ র্যাক্ট, ৫০টি ফ্লোট প্লেট, ৫০টি রেসকিউ প্যানেল এবং ২৫টি সফট স্ট্রেচার।
অনুষ্ঠানে ফারুক ই আজম বলেন, বাংলাদেশ বন্যা ও প্রকৃতির দুর্যোগের ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। প্রতিটি দুর্যোগে সরকার মানবিক সংগঠনসমূহের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টায় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার কাজ করে। চীন সরকারের এ সহায়তা আমাদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, সারা দেশে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে। আমি বিডিআরসিএসকে অনুরোধ করছি যাতে কার্যকরভাবে এই সরঞ্জামের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, স্বেচ্ছাসেবকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিশ্চিতকরণ এবং উদ্ধার কার্যক্রমে এসকল সরঞ্জমাদির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।
উপদেষ্টা বলেন, এই হস্তান্তর বাংলাদেশ এবং চীনের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং সহযোগীতারই প্রতিফলন। আমরা এই সংহতিকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার প্রত্যাশা করছি।
আরও পড়ুন: সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৮৪ বিদ্যালয়, ফেরত গেল সাড়ে ১২ কোটি টাকা
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস-চেয়ারম্যান ড. তাসনিম আজিম, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির বাংলাদেশস্থ হেড অব ডেলিগেশন আলবার্তো বোকানেগ্রা, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব ড. কবির মো. আশরাফ আলম এবং বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার মো. আমিনুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
১০০ দিন আগে
ইউনানে বাংলাদেশিদের জন্য উচ্চমানের চিকিৎসাসেবার প্রতিশ্রুতি চীনের
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য উচ্চমানের ও ঝামেলামুক্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীনের ইউনান প্রদেশ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটাল’ পরিদর্শনকালে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের এই আশ্বাস দেন প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় সরকারি হাসপাতালের প্রধানরা।
ইউনান প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কমিশনের উপপরিচালক ওয়াং জিয়ানকুন জানান, তারা আন্তর্জাতিক রোগীদের ন্যায্যমূল্যে উচ্চমানের সেবা দেওয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। তাদের এই পাইলট হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়া বাংলাদেশি রোগীরা অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি রোগীদের সহায়তায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার এবং ঢাকায় আমাদের দূতাবাস স্বাস্থ্যসেবা খাতে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে ২৩ সদস্যের ওই গণমাধ্যম প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন সরকার। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে অংশ নেয়।
সেশনে হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট জেং ঝিং, মেডিকেল প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক শি হংবিন এবং আন্তর্জাতিক মেডিকেল বিভাগের পরিচালক হান রুইসহ চীনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
সেখানে ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, রোগীর স্বজনদের থাকার ব্যবস্থা, যাতায়াত ব্যয়, বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগ, লিয়াজোঁ অফিস, ফলো-আপ চিকিৎসা ও বিল পরিশোধ প্রক্রিয়া এবং মৃতদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার উচ্চ খরচ নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন চীনা কর্মকর্তারা।
ওয়াং জিয়ানকুন বলেন, আমরা বাংলাদেশি রোগীদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবগত রয়েছি তা সমাধানের চেষ্টা করছি।
চীনা কর্তৃপক্ষকে তাদের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান প্রতিনিধি দলের প্রধান আজাদ মজুমদার। এতে তারা বাংলাদেশি রোগীদের ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে পারবে বলে মত দেন তিনি।
কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত ছয় মাসে ৬৭ জন বাংলাদেশি রোগী লিভার সিরোসিস, স্তন ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন।
চীনের স্থানীয় ফরেন অফিসের আয়োজিত ভোজসভায়ও বাংলাদেশি রোগীদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। প্রতিনিধি দলটি শুক্রবার (৮ আগস্ট) কুনমিংয়ের আরও কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১১৮ দিন আগে
চীনে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ৭ হাজার, কঠোর অবস্থানে সরকার
চীনজুড়ে ফের ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস। এবার মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দেশটির ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক সংক্রমণ এড়াতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে দেশটির সরকার।
মশার উৎপত্তিস্থল অনুসন্ধানে ড্রোন ব্যবহার, মশারি, জীবাণুনাশক স্প্রে থেকে শুরু করে জড়িতদের জরিমানা করার মতো বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে চীন।
বুধবার (৬ আগস্ট) পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এর অধিকাংশই হংকংয়ের নিকটবর্তী ম্যানুফ্যাকচারিং হাব ফোশান শহরে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তমানে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে।
চিকুনগুনিয়া মূলত মশাবাহিত একটি রোগ। এই ভাইরাসের কারণে ডেঙ্গুর মতো জ্বর ও জয়েন্টে ব্যথা হয়। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
চীনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শহরের সড়ক, আবাসিক এলাকা, নির্মাণস্থলসহ অন্যান্য স্থানে জীবাণুনাশক স্প্রে করার খবর দেখানো হয়েছে। এমনকি কর্মীরা অফিস ভবনে প্রবেশের আগে কিছু জায়গায় স্প্রে করা হচ্ছে।
পড়ুন: প্লাস্টিক দূষণে বছরে দেড় লাখ কোটি ডলারের স্বাস্থ্যঝুঁকি
দেশটিতে মশারোধে খালি বোতল, ফুলদানি বা অন্যান্য স্থানে জমাট পানি ফেলে না দিলে ১০ হাজার ইউয়ান (প্রায় ১,৪০০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্র চীনের গুয়াংডং প্রদেশে, যেখানে ডংগুয়ানসহ অন্যান্য শিল্পকেন্দ্র অবস্থিত, ভ্রমণ এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে বোলিভিয়া ও ভারত মহাসাগরের কিছু দ্বীপরাজ্যও বিপৎসীমার মধ্যে রয়েছে। ব্রাজিলও ভাইরাসের প্রভাব ব্যাপক দেখেছে।
চীনে ভারী বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রা পরিস্থিতি আরও অবনতি করেছে। ২০০৩ সালের মারাত্মক সার্স মহামারির পর থেকে চীন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এবার ফোশানে রোগীদের ন্যূনতম এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।
মশার লার্ভা খাওয়া মাছ ব্যবহার ও বড় মশাদের মাধ্যমে ভাইরাসবাহী মশাদের শিকার করার চেষ্টা নিয়েও খবর এসেছে। জাতীয় পর্যায়ে সভা হয়েছে এবং প্রোটোকল গৃহীত হয়েছে, যা চীনের ভাইরাস সংক্রমণ থামানোর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
১২০ দিন আগে
বাংলাদেশের মানসম্মত উন্নয়নে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের ভালোমানের উন্নতি অর্জনে সহায়তা করতে সামরিক বাহিনীসহ বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদারে ইচ্ছুক চীন।
বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, চীন একটি সমান ও সুশৃঙ্খল বহুপক্ষীয় বিশ্ব এবং একটি সর্বজনীনভাবে উপকারী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের পক্ষে। বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ‘চীনের নীতিতে আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণ বা প্রভাবের ক্ষেত্রগুলোর কোনো স্থান নেই’। চীন একটি সাধারণ, ব্যাপক, সহযোগিতামূলক এবং টেকসই পদ্ধতির উপর জোর দেয় এমন একটি নিরাপত্তা ধারণা প্রতিষ্ঠার পক্ষে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও।
পড়ুন: উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনা: বহু হতাহতের ঘটনায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
রাষ্ট্রদূত ইয়াও গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ ও গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ (জিসিআই) এগিয়ে নেওয়ার এবং মানবজাতির জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যতের একটি সম্প্রদায় গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানোর উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, চীন সবসময় বাংলাদেশের সকল জনগণের প্রতি সুপ্রতিবেশীসুলভ নীতি অনুসরণ করে আসছে এবং চীন-বাংলাদেশের উন্নত সম্পর্ককে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নিয়েছে।
এনডিসির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট রিয়ার অ্যাডমিরাল একেএম জাকির হোসেন, বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনীর ১০০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা ও বিদেশি সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ২০২৫ সাল একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কারণ, জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং বিশ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধের ৮০তম বর্ষ পূরণ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যের শেষে, রাষ্ট্রদূত ইয়াও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি, ব্রিকস ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে দর্শকদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে মতবিনিময় করেন।
১৩৫ দিন আগে
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগে ‘নতুন সহযোগিতা’ প্রত্যাশা চীন ও কানাডার
চীন ও কানাডা বাণিজ্য বৈচিত্র্য ও বিনিয়োগে বাংলাদেশের কাছে ‘ব্যাপক সহযোগিতা’ প্রত্যাশা করেছে। একই সঙ্গে দেশগুলো জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের ফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠককালে চীন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একথা জানান।
শুক্রবার (১১ জুলাই) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৩২তম এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বৈঠককালে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের সংস্কার উদ্যোগে চীনের পূর্ণ সমর্থনের কথঅ জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া চিকিৎসা পর্যটন এবং পানি ব্যবস্থাপনার মতো অনেক অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে চীনের সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের কথা স্মরণ করে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে টেক্সটাইল, জ্বালানি, হালকা প্রকৌশল ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পড়ুন: শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ অব্যাহত থাকবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে চীনের দেওয়া রাজনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি রোহিঙ্গা সংকটের জরুরি ও তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এই বিষয়ে চীনের সমর্থন কামনা করেন।
জাতিসংঘসহ আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান তৌহিদ হোসেন।
পরে বিকালে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে বাণিজ্য ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য এবং সহনশীলতা তৈরির মাধ্যমে এটি বাড়ানোর বিষয় প্রাধান্য পায়।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কানাডার সমর্থন দেওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পড়ুন: সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ঢাকা–ইসলামাবাদের সঙ্গে কাজ করছে বেইজিং: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
১৪৭ দিন আগে
ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন চীনের, মিলতে শুরু করেছে সুফল
পর্যটক টানতে ভিসা নীতি শিথিল করেছে চীন। ৭৪টি দেশের নাগরিকদের বিনা ভিসায় ভ্রমণের সুযোগ দিয়েছে দেশটি। এর ফলে ধীরে ধীরে আবারও বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে চীনে।
নতুন নীতি অনুযায়ী, ৭৪টি দেশের নাগরিকরা চীনে প্রবেশের পর টানা ৩০ দিন পর্যন্ত ভিসা ছাড়াই অবস্থান করতে পারছেন যা আগের নিয়মের তুলনায় অনেক বড় পরিবর্তন।
ইউরোপ, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মোট ৭৪টি দেশকে এ পর্যন্ত ৩০ দিনের ভিসা ছাড় দিয়েছে চীন। চলতি মাসের ১৬ জুলাই এই তালিকায় আজারবাইজান যুক্ত হলে মোট দেশের সংখ্যা দাঁড়াবে ৭৫টিতে।
মূলত পর্যটন, অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি বা ‘সফট পাওয়ার’ বাড়াতে ধারাবাহিকভাবে ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার বাড়াচ্ছে চীন।
দেশটির জাতীয় অভিবাসন প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২ কোটির বেশি বিদেশি পর্যটক ভিসা ছাড়াই চীনে প্রবেশ করেছেন, যা মোট বিদেশি পর্যটকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এবং আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।
ভিসা ছাড়াই চীন ভ্রমণ করা অস্ট্রিয়ায় বসবাসকারী জর্জিয়ার নাগরিক জর্জি শাভাদজে বেইজিংয়ের বিখ্যাত ‘টেম্পল অব হেভেন’ ঘোরার সময় বলেন, ‘ভিসা আবেদন ও প্রক্রিয়া নিয়ে যে ঝামেলা, তাতে চীনের এই সিদ্ধান্ত ভ্রমণপিপাসুদের অনেক সুবিধা দেবে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত: ট্রাম্প
তারপরও চীনে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা তুলনামূলক কম, দেশটির বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রই এখনও দেশীয় পর্যটকে ঠাসা। তা সত্ত্বেও গ্রীষ্মের ছুটিতে বিদেশি পর্যটকের বড় ঢল নামতে পারে বলে আশা করছে পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ট্যুর গাইডরা।
দীর্ঘ ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ইংরেজিভাষী গাইড গাও জুন বলেন, ‘আমি পর্যটক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। সবটা আমি একা সামলাতে পারছি না।’
জুন জানান, চাহিদা সামলাতে তিনি এখন নতুন একটি ব্যবসা শুরু করেছেন, যেখানে ইংরেজিভাষী ট্যুর গাইড তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
কঠোর কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর ২০২৩ সালের শুরুতে চীন বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়। তবে ওই বছর মাত্র ১ কোটি ৩৮ লাখ পর্যটক চীন সফর করেন, যা মহামারি শুরু হওয়ার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালের তুলনায় অনেক কম।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও মালয়েশিয়ার নাগরিকদের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশের অনুমতি দেয় চীন। এরপর থেকে ইউরোপের প্রায় সব দেশকেই এই সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।
গত মাসে লাতিন আমেরিকার পাঁচটি দেশ এবং উজবেকিস্তান এই সুবিধা পায়, এরপর যুক্ত হয় মধ্যপ্রাচ্যের আরও চারটি দেশ। তবে এই সুবিধা দেওয়া দেশগুলোর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের জন্যই এটি এক বছরের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।
নরওয়ের পর্যটক ওইস্টেইন স্পরসেইম জানান, নতুন নিয়মে তার পরিবারকে আর চীনের পর্যটন ভিসার জন্য ওসলোতে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে দুইবার যেতে হবে না। তিনি বলেন, ‘ওরা দূতাবাস খুব কমই খোলে। তাই আগের নিয়মে ভিসা পাওয়া খুব কঠিন ছিল।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বিষাক্ত ছত্রাক পাচারের অভিযোগে চীনা বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে মামলা
‘ওয়াইল্ডচায়না’ নামের বিলাসবহুল পর্যটন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনি ঝাও বলেন, ‘নতুন ভিসা নীতির সুবিধা আমাদের জন্য শতভাগ ইতিবাচক।’ মহামারির আগের তুলনায় বর্তমানে তাদের ব্যবসা অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
ঝাও আরও বলেন, এখন পর্যন্ত পর্যটন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রই তাদের সবচেয়ে বড় বাজার, যা বর্তমানে তাদের মোট ব্যবসার প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে ইউরোপীয় পর্যটকদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০১৯ সালের আগে যা ৫ শতাংশের নিচে ছিল, এখন তা ১৫ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ভিসা নীতির চলমান এই সুবিধা যেন স্থায়ী হয়—এমনটাই আশা করছেন তিনি।
অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ‘ট্রিপ ডটকম’ জানিয়েছে, মুক্ত ভিসা নীতির কারণে চীনে পর্যটন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ বছরের প্রথম তিন মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনগামী বিমান, হোটেলসহ অন্যান্য বুকিং প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এসব পর্যটকের ৭৫ শতাংশই ভিসা-মুক্ত সুবিধা দেওয়া দেশগুলোর।
তবে, লক্ষণীয় বিষয় হলো, চীনের সঙ্গে তুলনামূলক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও আফ্রিকার কোনো বড় দেশ এখনও এই সুবিধার আওতায় আসেনি।
১০ দিনের ‘ট্রানজিট’ সুযোগ
ভিসা-মুক্ত তালিকায় না থাকা দেশের নাগরিকদের জন্য বিকল্প পথও চালু করেছে বেইজিং। ওইসব দেশের দেশের নাগরিক যদি ভিন্ন কোনো দেশে যাওয়ার পথে চীন হয়ে ট্রানজিট করেন। যদিও ৫৫টি দেশের জন্য এই ট্রানজিট নীতি চালু রয়েছে, কিন্তু এদের অধিকাংশই ৩০ দিনের ভিসা-মুক্ত তালিকায় রয়েছে।
তবে এই সীমিত সুযোগটি কার্যত যে ১০টি দেশের জন্য সেগুলো হলো— চেক প্রজাতন্ত্র, লিথুনিয়া, সুইডেন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন, ইন্দোনেশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। ইউরোপের ধনী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যকে বাদ দিলে শুধু সুইডেনই ৩০ দিনের তালিকায় স্থান পায়নি।
সুইডেনের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে টানাপড়েনের পেছনে ২০২০ সালে সুইডিশ বই বিক্রেতা গুই মিনহাইকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া বড় কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৫ সালে থাইল্যান্ডে সমুদ্রতীরবর্তী বাড়ি থেকে গুই নিখোঁজ হন। পরে চীনের মূল ভূখণ্ডে পুলিশের হেফাজতে দেখা যায় তাকে।
১৪৮ দিন আগে
নেতৃত্ব যার কাছেই থাকুক, দ্রুত বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ চুক্তি চায় চীন
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব যার কাছেই থাকুক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন ও জনজীবনের মানোন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে চীন।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ অঙ্গীকার করেন।
তিনি বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনে প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা জরুরি। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) দ্রুত আলোচনার টেবিলে আনার আহ্বান জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ওয়েন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এই উদ্যোগ চীনা উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আস্থা ও আগ্রহ আরও বাড়াবে। বাংলাদেশি বন্ধুদের বলছি— চুক্তির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।’
সেমিনারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘আমাদের একটা প্রবণতা ছিল—প্রতিশ্রুতি দেই, বাস্তবায়ন করি না। তবে সরকার এখন সেই সংস্কৃতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। আশাকরি, আপনি (রাষ্ট্রদূত) বড় পরিবর্তন দেখবেন।’
বাংলাদেশে চীনা ব্যবসায়ী সংগঠন চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) আয়োজিত ‘চীন–বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে। এ সময়, শিল্প ও খাতভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বিডা চেয়ারম্যান ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, বিভাগ ও দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সেমিনারে অংশ নেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের নেতার কৌশলগত দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে 'সুবর্ণ জয়ন্তী' সামনে রেখে উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়ন, শিল্প ও সরবরাহ চেইন একীভূতকরণ, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
সেমিনারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সড়ক ও সেতু, বন্দর, টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস, বাণিজ্য ও সেবা, রেলপথ ও বেসামরিক বিমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং পানি ও পরিবেশ খাতভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে বাজার বিশ্লেষণ, বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ঢাকা–ইসলামাবাদের সঙ্গে কাজ করছে বেইজিং: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে চীনা কোম্পানিগুলো আরও সমৃদ্ধ হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অর্থনীতি স্থিতিশীল ও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ক্রমশ উন্নত হচ্ছে—ফলে দক্ষিণ এশিয়ার একটি নতুন বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ।’
রাষ্ট্রদূত জানান, চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগকারী গোষ্ঠী। তাদের দীর্ঘমেয়াদি অভিজ্ঞতা ও পর্যালোচনার আলোকে প্রকাশিত ১০টি প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার উপকৃত হবে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ ৩.৭ গুণ বেড়েছে। গত আগস্ট থেকে প্রায় ২০টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। এসব চুক্তির সম্ভাব্য মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে চীন।
চট্টগ্রাম চায়নিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
বাহেরচর দ্বীপে চীনের ‘অ্যাগ্রিভোলটাইক্স ইকোনমিক জোন’ সংক্রান্ত দলিল সই হয়েছে। পাশাপাশি, মোংলা বন্দর এলাকায় চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও এগিয়ে চলেছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন কেবল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকেই নয়, ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারকেও সমর্থন করে এবং বাংলাদেশ নিয়ে তাদের রয়েছে পূর্ণ আস্থা।
১৪৮ দিন আগে
সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ঢাকা–ইসলামাবাদের সঙ্গে কাজ করছে বেইজিং: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠককে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে ‘কনক্রিট সহযোগিতার’ উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে চীন এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ও যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে, তা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
‘আমরা এরইমধ্যে শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, পরিবেশ সুরক্ষা, পানিসম্পদসহ ১২টি ক্ষেত্রে কনক্রিট সহযোগিতা চিহ্নিত করেছি। এ নিয়ে কিছু ফলোআপ হবে এবং আমরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে এ ঐকমত্য বাস্তবায়নে কাজ করছি,’ বলেন তিনি।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীতে এক সেমিনারে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, সম্প্রতি কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি ছিল অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও তিন দেশের—বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের—জনগণের জীবনমান উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার একটি উদ্যোগের অংশ।
‘আমরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রয়েছি। বহু বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমি এটিকে তিন দেশের সাধারণ স্বার্থে একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখি,’ বলেন চীনের রাষ্ট্রদূত।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সহযোগিতার মূলনীতি হলো উন্মুক্ত থাকা, স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং পারস্পরিক উপকার নিশ্চিত করা। ‘আমাদের সহযোগিতা পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এটি উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ একটি প্রক্রিয়া। এটি কোনো তৃতীয় দেশকে লক্ষ্য করে নয়। এটিই আমাদের বার্তা, বলেন এই কূটনীতিক।
আরও পড়ুন: ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শুরু হচ্ছে আজ
বাংলাদেশে চীনা ব্যবসায়ী সংগঠন চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) আয়োজিত ‘চীন–বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনারে এই বক্তব্য দেন তিনি।
সেমিনারে ‘সিইএবি ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিভাগের প্রতিনিধিরা এবং দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান অবকাঠামো, সংযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, সামুদ্রিক বিষয়, তথ্যপ্রযুক্তি, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে গভীরতর সহযোগিতার জন্য একাধিক খাত চিহ্নিত করে।
চীন–দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো’র ৯ম আসর এবং চীন–দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতা বৈঠকের ৬ষ্ঠ আসরের ফাঁকে গত ১৯ জুন কুনমিংয়ে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’ অনুষ্ঠিত হয়।
২৬ জুন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করেন, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো নতুন জোট গঠনের বিষয় নেই এবং এটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিরুদ্ধে কিছু নয়।
‘আমরা কোনো জোট গঠন করছি না। এটি ছিল সরকারি পর্যায়ের একটি বৈঠক, রাজনৈতিক পর্যায়ে নয়… এখানে কোনো জোট গঠনের উপাদান ছিল না,’ গত মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন তিনি।
বৈঠকটি ভারতের বিপক্ষে কোনো কৌশল ছিল কি না— এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা হোসেন বলেন, ‘এটি অবশ্যই কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়। আমি আপনাদের তা নিশ্চিত করে বলতে পারি।’
১৪৮ দিন আগে
ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে বাণিজ্যের চোখে দেখে ওয়াশিংটন: কুগেলম্যান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ব্যাপকভাবে বিদেশি সহায়তা কমিয়েছে মন্তব্য করে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়া কিংবা রাষ্ট্রগঠনে অর্থব্যয়ে তাদের আগ্রহ ‘নিতান্তই কম’।”
এ সময়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যকার সাম্প্রতিক ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের পক্ষ থেকে ওই ফোনালাপের যে বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট হয়েছে যে ওয়াশিংটনের কাছে এখন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্ব বাণিজ্য ও আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তিগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষেত্রে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতি বিষয়ক সাময়িকী ফরেন পলিসির উইকলি সাউথ এশিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কুগেলম্যান লিখেছেন, দুই নেতা অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের (ইন্দো-প্যাসিফিক) নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে অংশীদারিত্বের বিষয়ে আলোচনা করেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তার অর্থ হলো চীনের প্রভাব মোকাবিলা।
কিন্তু এ দুটো লক্ষ্যই বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করেন এই এই দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি না হলে বাংলাদেশকে ৩৭ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়তে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবেই জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতিতে অটুট রয়েছে, এতে কোনো বড় শক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান না নেওয়ার কৌশল অনুসরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রদূত তারেক
এর আগে গেল সোমবার (৩০ জুন) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনাগুলোর একটি।
কুগেলম্যান বলেন, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। বাইডেন প্রশাসনের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনার দেশ থেকে পলায়নের পর গণতন্ত্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে উন্নয়ন সহায়তা ও কারিগরি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
ফোনালাপের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টা উভয়েই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন।’
ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত শুল্ক নীতিমালার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এ সংকট মোকাবিলায় গত এপ্রিলে জরুরি বৈঠক করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এরই অংশ হিসেবে নতুন শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি সহজ করার চেষ্টা চলছে।
চলমান আলোচনা থেকে শুল্ক সংকটের সমাধান আসবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ সরকার। আগামী ৮ জুলাই এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
১৫১ দিন আগে