যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোতে ৩০০ বিলিয়ন ডলার জরুরি তহবিল ধার দিল ফেডারেল রিজার্ভ
যুক্তরাষ্ট্রের তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো গত সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভ থেকে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ধার নিয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তথ্য জানায়।
ধারের প্রায় অর্ধেক অর্থ ১৪৩ বিলিয়ন ডলার গত সপ্তাহে ব্যর্থ হওয়া দুটি প্রধান ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক এবং সিগনেচার ব্যাংকের হোল্ডিং কোম্পানির কাছে গিয়েছে, যা আর্থিক বাজারে ব্যাপক শঙ্কা সৃষ্টি করেছে৷ ফেডারেল ব্যাংক সেই ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করেনি যেগুলো তহবিলের বাকি অর্ধেক পেয়েছে বা তাদের কতজন পেয়েছে।
ফেডারেল ব্যাংক জানিয়েছে, দুটি ব্যর্থ ব্যাংকের হোল্ডিং কোম্পানিগুলো ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন স্থাপন করেছিল, যা উভয় ব্যাংকের দখল নিয়েছে৷ তারা যে অর্থ ধার করেছিল তা তাদের বীমাবিহীন আমানতকারীদের অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। উভয় ব্যাংকের মালিকানাধীন বন্ডগুলো জামানত হিসাবে পোস্ট করা হয়েছিল। এফডিআইসি ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
এই পরিসংখ্যান গত সপ্তাহান্তে দুটি ব্যাংক পতনের পরে আর্থিক খাতে ফেডারেলের সহায়তার স্কেলের প্রথম আভাস দেয়।
বাকি টাকা নগদ সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলো ধার করেছিল- সম্ভবত, অন্তত আংশিকভাবে আমানতকারীদের পরিশোধ করার জন্য। যারা তাদের টাকা তোলার চেষ্টা করেছিল। অনেক মেগা ব্যাংক, যেমন ব্যাংক অব আমেরিকা গত সপ্তাহান্তে ব্যাংকের ব্যর্থতার পর থেকে ছোট ব্যাংকগুলো থেকে তহবিল প্রাপ্তির প্রতিবেদন করেছে৷
গত সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভ থেকে অতিরিক্ত ১৫৩ বিলিয়ন ডলার ধার এসেছে ‘ডিসকাউন্ট উইন্ডো’ নামে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রোগ্রামের মাধ্যমে। এটি সেই প্রোগ্রামের জন্য একটি রেকর্ড স্তরের পরিমাণ। ব্যাংকগুলো ডিসকাউন্ট উইন্ডো থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত ধার নিতে পারে। সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সপ্তাহে এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাত্র চার বিলিয়ন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ধার করা হয়।
ফেডারেল রিজার্ভের রবিবার ঘোষণা করা একটি নতুন ঋণ সুবিধা থেকে অতিরিক্ত ১১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ধার দিয়েছে। নতুন প্রোগ্রামটি ব্যাংকগুলোকে নগদ সংগ্রহ করতে এবং অর্থ উত্তোলনকারী যে কোনও আমানতকারীর অর্থ প্রদান করতে সক্ষম করে৷
জেপি মরগানের একজন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ফেরোলি তার গবেষণা নোটে বলেছেন যে ফেডের সহায়তা এখন পর্যন্ত ১৫ বছর আগে আর্থিক সংকটের সময় যা ছিল তার প্রায় অর্ধেক।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে অস্ট্রেলিয়া
তবে তিনি বলেছিলেন ‘এটি এখনও একটি বড় সংখ্যা,’ ‘গ্লাস অর্ধ-খালির দৃষ্টিভঙ্গি হলো যে ব্যাংকগুলোর প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। গ্লাস অর্ধ-পূর্ণ করে নেয়া হলো যে প্রক্রিয়াটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে হিসাবে কাজ করছে।’
ফেডারেল ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া গত সপ্তাহের জরুরি ঋণ দুটি ব্যাংকের পতনের একটি প্রধান কারণকে মোকাবিলা করতে চায়: সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক এবং সিগনেচার ব্যাংক বিলিয়ন ডলারের আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদ ট্রেজারি এবং অন্যান্য বন্ডের মালিকানা যা কম সুদের হার প্রদান করে।
গত বছর ধরে ফেড ক্রমাগতভাবে তার বেঞ্চমার্ক সুদের হার বাড়ায়, দীর্ঘমেয়াদী ট্রেজারি এবং অন্যান্য বন্ডের সমর্পণ বেড়েছে। এর ফলে, ব্যাংকগুলোর ধারণকৃত নিম্ন-উৎপাদন ট্রেজারিগুলোর মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
ফলে ব্যাংকগুলো তাদের ট্রেজারি বিক্রি থেকে পর্যাপ্ত নগদ সংগ্রহ করতে পারেনি যে অনেক আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে তাদের অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করছিল। এটি একটি ক্লাসিক ব্যাংক চালানোর পরিমাণ।
ফেডের বিশেষ নতুন ঋণদান কর্মসূচির সুবিধা রবিবার উদ্বোধন করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামানত হিসাবে বন্ড পোস্ট করতে এবং সেগুলো বিক্রি করার পরিবর্তে তাদের বিপরীতে ঋণ নিতে সক্ষম করে।
নতুন ঋণ সুবিধার জন্য ফেড বলেছে যে এটি জামানত হিসাবে ১৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন পেয়েছে। এটি ধার দেয়া ১১ দশমিক ৯ বিলিয়নের চেয়ে বেশি। ব্যাংক কখনও কখনও ঋণ নেয়ার আগে ফেড জামানত প্রদান করে। এটি পরামর্শ দেয় যে অতিরিক্ত ঋণ দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ও স্বাগতিকদের জন্য আরও ২৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
রোহিঙ্গা ও স্বাগতিকদের জন্য আরও ২৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
মিয়ানমারের সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী, এই অঞ্চলে চলমান সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং উদ্বাস্তুদের আতিথেয়তাকারী দেশীয় সম্প্রদায়ের জন্য আরও প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তররের মুখপাত্র নেড প্রাইস নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২০১৭ সালে যখন সাত লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে নিরাপত্তার জন্য পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল, সেই বছরের আগস্ট থেকে এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে রাখাইন রাজ্য এবং রোহিঙ্গা সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমাদের মোট সহায়তা প্রায় দুই দশমিক এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।’
তিনি বলেন, এই নতুন তহবিলটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক অংশীদারদের মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের উভয় দিকে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদান চালাবে। যার মধ্যে প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর আতিথ্য করছে বাংলাদেশ। গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, জাতিগত নির্মূল এবং রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংঘটিত অন্যান্য ভয়ঙ্কর নৃশংসতা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় সাত লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ২০১৭ সালের আগস্টের পরের মাসগুলোতে তাদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তার আহ্বান জানাল ইউএনএইচসিআর
এই তহবিল বাংলাদেশি স্বাগতিক সম্প্রদায়ের প্রায় পাঁচ লাখ ৪০ হাজার সদস্য এবং মিয়ানমারে চলমান সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্যদের সহায়তা প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য দেশের উদারতা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আতিথেয়তার প্রশংসা করেছে। বিশেষ করে এখন যে ‘আমরা এই দীর্ঘ সঙ্কটের ষষ্ঠ বছরে আছি।’
নেড প্রাইস বলেছেন, ‘আমরা সঙ্কটের টেকসই সমাধানের জন্য কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই মানবিক সংকটের জন্য একটি সমন্বিত এবং সহযোগিতামূলক প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকার, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, স্বাগতিক সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জনগণের সঙ্গে অংশীদারিত্ব চালিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতিক্রিয়া সহ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের দুর্দশা লাঘবের প্রতিশ্রুতিতে অবিচল থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের ৬ সংস্থার তহবিল বরাদ্দ বাস্তবায়ন
বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৬৮ লাখ ছুঁইছুঁই
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার ১৬১ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৯৯ হাজার ২০৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৫২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩২ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৫ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৭ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৯ জনে।
আক্রান্তের সংখ্যায় তৃতীয় অবস্থানে আছে ফ্রান্স। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তিন কোটি ৯৬ লাখ ১৬ হাজার ৫৮০ জন এবং মারা গেছে এক লাখ ৬৪ হাজার ৯২৯ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৯০ লাখ ছুঁইছুঁই
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে ১০ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৮১৮ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ১০ জনের করোনা শনাক্ত
যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
অনুসন্ধান শেষে আগামী চার মাসের মধ্যে দুদককে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
রুলে নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার নামে অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে সোমবার রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এর আগে রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্রসচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আবদুস সোবহান মিয়াকে (গোলাপ) বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে ২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার নামে অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার নামে অনুসন্ধান করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: অনলাইন প্লাটফর্মে ফারাজ সিনেমাটি প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন। বিষয়টি নির্বাচনী হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেননি। এ তথ্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি তাদের ওয়েবসাইটে করা একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
ওসিসিআরপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মো. আবদুস সোবহান মিয়া ২০১৪ সালে প্রথম নিউইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি।
পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন।
এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)।
ওসিসিআরপির করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে পাঁচটি কনডোমিনিয়াম কিনেছিলেন আবদুস সোবহান।
সে সময় ওই সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ২৪ লাখ ডলার।
এ ছাড়া আশপাশের ভবনগুলোতে ছয় লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন তিনি।
নিউইয়র্কে কেনা এসব সম্পত্তির নথিপত্র বলছে, সম্পত্তিগুলো নগদ অর্থে কেনা হয়েছিল।
এগুলোর মালিকানায় রয়েছেন তার স্ত্রী গুলশান আরাও।
ওসিসিআরপির করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আবদুস সোবহান নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে আরও একটি সম্পত্তি (বাড়ি) কিনেছিলেন।
ওই সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ১২ লাখ ডলার।
এছাড়া ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন। এর সাত মাস আগে বাংলাদেশে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি কালো দাগ সৃষ্টি করেছে: হাইকোর্ট
ক্যালিফোর্নিয়ার পেরিস সিটিতে শহীদ মিনার উদ্বোধন
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পেরিস সিটিতে উদ্বোধন করা হলো স্থায়ী শহীদ মিনার। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত শহীদ মিনারটি বুধবার উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পেরিস সিটিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির নিরলস প্রচেষ্টা, পেরিস সিটি মেয়রের উদ্যোগে এ শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্যোগের সঙ্গে পরবর্তী সময়ে লস অ্যাঞ্জেলেসস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট সম্পৃক্ত হয়। বাংলাদেশ কনস্যুলেট, পেরিস সিটি ও আইএমএলডিসির যৌথ আয়োজনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন এবং শহীদ বেদিতে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সব ভাষাশহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলসহ বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেল, স্থানীয় কাউন্সিল মেম্বার, স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈলে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ অন্য ভাষাশহীদদের অবদানের ইতিহাস তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মতো এ শহীদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতার জন্য তিনি সিটি মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে বাংলাকে প্রথম বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালে ‘জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা’ (ইউনেসকো) ২১ ফেব্রুয়ারিকে সারা বিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের স্বীকৃতি প্রদান করে।
পেরিসবাসী প্রবাসী বাংলাদেশি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পেরিস সিটিতে এমন একটি স্থাপত্য নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁদের এ উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি শহরের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত শহীদ মিনারটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে সিটি হল ও স্থানীয় লাইব্রেরির সামনে স্থাপিত হওয়ায় তা ইতোমধ্যে স্থানীয়দের দৃষ্টি কেড়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী লস অ্যাঞ্জেলেসস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, সিটি লাইব্রেরি ও আইএমএলডিসির উদ্যোগে শহীদ মিনারের পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রীয় পাঠাগারে ‘বাংলাদেশ কর্নার’ উদ্বোধনও করেন।
আরও পড়ুন: ২১শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাতায়াতের রুট নির্ধারণ
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে সব শহীদ মিনার নির্মাণে রুল
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবেন
কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রবিবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্কটিশমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবররিন সাংবাদিকদের বলেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যারিস শহরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে একটি নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সেখানে একটি পাবলিক লাইব্রেরিতে বাংলাদেশ কর্নারেরও উদ্বোধন করবেন মোমেন। এছাড়াও তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বক্তৃতা দেবেন।
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি মোমেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে কয়েকটি বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানান সেহেলী।
আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্চে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন: মোমেন
‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক চায়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘তারা (মার্কিন) বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। তারা আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়।’
বৃহস্পতিবার মোমেন সিলেটে সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) ছিল ‘বাংলাদেশের জন্য একটি দারুণ দিন’।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তারা সকলেই বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন এবং গভীর সম্পর্কের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের আগমনের আগে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধারাবাহিক বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে: ডেরেক শোলে
মোমেন বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। তারা সম্পর্ক জোরদার করতে এসেছে।’
ডেরেক শোলে বুধবার বলেছেন, ৫১ বছর ধরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ব্যাপারে ‘আশাবাদী’।
শোলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী। আমাদের মধ্যে খুব দৃঢ় অংশীদারিত্বের ৫১ বছর পার হয়েছে। আমরা পরবর্তী ৫১ বছর এবং তার পরের সম্পর্কের জন্যও অপেক্ষা করছি। আমাদের উভয়ের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে আমাদের অনেকগুলো সম্ভানাময় ক্ষেত্রও রয়েছে; যেগুলো নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী: মার্কিন কাউন্সেলর চোলেট
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে: ডেরেক শোলে
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সেলর ডেরেক শোলে বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে যা কয়েক দশকের সহযোগিতা ও সমর্থনের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এবং আমরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও যৌথ অগ্রাধিকারের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি।"
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সেলর ডেরেক শোলে এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এক প্রতিনিধিদল ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
আরও পড়ুন: নর্ডিক দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে আরও শক্তিশালী অংশীদারিত্ব করতে আগ্রহী: কসমস ডায়ালগে রাষ্ট্রদূতেরা
বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে কাউন্সেলর শোলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকগুলোতে কাউন্সেলর শোলে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ও মানবাধিকারের সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সহযোগিতা ও একটি অবাধ ও উম্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
কাউন্সেলর শোলে বলেন, "বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এবং আমি সম্মানিত বোধ করছি যে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির পরপরই আমি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে এসেছি।"
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের উভয় দেশের জন্য আরও বেশি স্থিতিশীল, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও মানবিক সহযোগিতার পূর্ণ সম্প্রসারণের পাশাপাশি দুই দেশের জনগণের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তোলার জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করে চলেছে।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব চায় জার্মানি
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী: মার্কিন কাউন্সেলর চোলেট
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক চোলেট বলেছেন, ৫১ বছরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়ে ‘আশাবাদী’ তারা।
চোলেট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী। একটি খুব দৃঢ় অংশীদারিত্বের ৫১ বছর হয়েছে। আমরা পরবর্তী ৫১ বছর এবং তার পরেও অপেক্ষা করছি। আমাদের উভয়ের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে তবে আমাদের অনেকগুলো সাধারণ সুযোগ রয়েছে যেগুলো নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এর সঙ্গে বাংলাদেশে একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা সফর করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেছিলেন যে তারা ক্রমাগত কাজ করছে এবং বাংলাদেশকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আতিথ্য করছে এবং মিয়ানমারের মূল কারণগুলো মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র সম্মেলন ২৯-৩০ মার্চ
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, মার্কিন কূটনীতিকদের পেয়ে বাংলাদেশ খুশি। ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমি খুব খুশি, আমরা আরও ভাল দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
বুধবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন চোলেট ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে ‘সমন্বয় ও প্রতিক্রিয়া’, আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা জোরদার করা এবং ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ‘নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব’ এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘বিশাল সম্ভাবনা’ এবং ‘বৃদ্ধির সুগোগ’ দেখে।
ঢাকায় আসার আগে চোলেট বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি যে খারাপের দিকে যাচ্ছে তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সেলর বলেন, তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন এবং শরণার্থী সংকট থেকে দেশটির মানবিক প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে চাপ কমানোর চেষ্টা করছে।
কাউন্সেলর আন্ডার সেক্রেটারি পদে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেন-এর সিনিয়র নীতি উপদেষ্টা হিসেবে বিস্তৃত বিষয়ে কাজ করেন এবং তার নির্দেশিত বিশেষ কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করল বাংলাদেশ সম্মিলিত দল
মার্কিন নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র সম্মেলন ২৯-৩০ মার্চ
মার্কিন নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র সম্মেলন আগামী ২৯ থেকে ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনটির সহ আয়োজক দেশ হিসেবে কোস্টারিকা, নেদারল্যান্ডস, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং জাম্বিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার থাকবে।
মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ব্রায়ান শিলারকে কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি ২০২৩ -এর পরিকল্পনায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এমন গণতান্ত্রিক দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন যা ওই অঞ্চলের বৈচিত্র্য, দেশের আকারের বৈচিত্র্য এবং অন্যান্য গুণনীয়কের প্রতিনিধিত্ব করে।’
এদিকে বুধবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক চোলেটের।
গণতন্ত্রের জন্য দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলন ভার্চুয়ালি বিশ্ব নেতাদের একত্রিত করবে। তারপর সরকার, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সহ-আয়োজক প্রতিটি দেশে এই সমাবেশ হবে।
একটি আঞ্চলিক বৈচিত্র্যপূর্ণ সহ-আয়োজকদের সঙ্গে গণতন্ত্রের জন্য দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনের সহ-আয়োজন এই সত্যকে আরও শক্তিশালী করে যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি ‘নিরাপদ ও ন্যায্য বিশ্ব’ এর আকাঙ্ক্ষা এবং দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের ওপর ভিত্তি করে ২০২৩ সালের মার্চে পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনে দেশগুলো কীভাবে নাগরিকদের জন্য গণতন্ত্র চর্চা করে এবং বিশ্বের বড় বড় চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করবে তা তুলে ধরবে।’
আরও পড়ুন: বিনয় কোয়াত্রার সফর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে আরও জোরদার ও গতিশীল করবে: ভারত
শিলার বলেছেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেমন বলেছেন, গণতন্ত্র হলো সর্বোত্তম হাতিয়ার যা আমাদের কাছে মানুষের সম্ভাবনা উন্মোচন করে এবং তা সমস্ত মানুষের জন্য সরবরাহ করতে হবে এবং আমাদের অবশ্যই এটিকে শীর্ষে রাখতে হবে।’
প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমস্ত অংশগ্রহণকারী দেশকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায় এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য ২০২২ সালকে একটি ‘কার্যকরী বছর’ হিসাবে পরিণত করে।
শিলার আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রিত না হওয়া দেশগুলোকে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের জন্য তাদের নিজস্ব ‘কাজের বছরের’ পরিকল্পনা প্রকাশ করতে উৎসাহিত করেছে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে কোন দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে তা বিবেচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কোন দেশগুলো এই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছে এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য কর্ম বছরে অংশগ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ের টিউলিপ বাগান পরিদর্শনে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ও ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর