টিআইবি
ওয়াসা চেয়ারম্যানকে অপসারণের নিন্দা টিআইবি’র
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)ঢাকা ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে অপসারণের নিন্দা জানিয়েছে। যিনি গত সপ্তাহে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা।
মঙ্গলবার টিআইবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগকারী বোর্ড চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে ঢাকা ওয়াসা অভিযুক্তদের রক্ষার উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিক শামসকে মুক্তি দিন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করুন: টিআইবি
এতে বলা হয়েছে, ‘এটি সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুর্নীতির জন্য জিরো টলারেন্স ঘোষণার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির অভিযোগকারীদের রক্ষা করার আইনি বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’
সাবেক চেয়ারম্যানের অভিযোগ বিবেচনা করে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ওয়াসার সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যানের মেয়াদ গত বছর অক্টোবরে শেষ হওয়ার পর এতদিন পেরিয়ে গেলেও নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হয়নি। অথচ, ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে বোর্ড চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ঠিক পাঁচ দিনের মাথায় নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হলো।’
তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী ঘটনাটিকে যদি ‘কাকতালীয়’ হিসেবে মেনেও নেওয়া হয়, তবুও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অভিযোগকারীকে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ‘ওয়াসা পরিচালনায় এমডির ইচ্ছা-ই শেষ কথা, আর নিজের স্বার্থ সুরক্ষায় যে কাউকে ওয়াসা থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা ওয়াসা এমডির রয়েছে’- এই অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত করা হলো।’’
আরও বলা হয়েছে, ‘‘যার ফলে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এই বার্তাই দেওয়া হলো যে ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থানের বলে অবারিত বিচারহীনতার লাইসেন্স পাওয়া যায়; প্রয়োজনে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বার্তাবাহক বা অভিযোগকারীকে, তা যে-ই হোক না কেন, তাকে স্তব্ধ করতে ‘শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার’ চর্চার ব্যবহারে কোনো দ্বিধা করা হবে না।’’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘‘ঢাকা ওয়াসাকে স্বেচ্ছাচার, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিণত করার যে অভিযোগ বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছেন, তা ২০১৯ সালে টিআইবি প্রকাশিত ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’- শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতিফলন। তাছাড়া, দীর্ঘসময় ধরে সংবাদমাধ্যমেও একই ধরনের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিহীনতার প্রকট উদাহরণ। ওয়াসায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে জবাবদিহির লক্ষ্যে তদন্ত করতে আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং আরও এক দফা দুর্নীতি ও অনিয়মের সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতার দৃষ্টান্তই স্থাপিত হলো, যা হতাশাজনক।’
বিভিন্ন সময়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করে কার্যকর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ডিএসএ বাতিলের দাবি টিআইবি’র
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন সমাধান নয়, অবিলম্বে বাতিল করুন: টিআইবি
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ডিএসএ বাতিলের দাবি টিআইবি’র
বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আবারও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সুশীল সমাজের পর্যবেক্ষণ সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সরকারকে গণমাধ্যমকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা সহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার সংগঠনটির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মঞ্জুর ই আলমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের উচিত গণমাধ্যমের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা, যাতে তারা দেশের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কোনো বাধা ছাড়াই তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক শামসকে মুক্তি দিন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করুন: টিআইবি
তিনি বলেন, দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও অন্যদিকে নির্ভীক সাংবাদিকতাও কমেছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ব্যবহার করে হয়রানি, হামলা ও মামলা-মোকদ্দমার মাধ্যমে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ ‘২০২২ ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স’-এ ১০টি স্থান পিছিয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬২তম স্থানে রয়েছে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এর ২০২৩ সূচক এই সপ্তাহে প্রকাশের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, এটির ফরাসি সংক্ষিপ্ত আরএসএফ (রিপোর্টার্স সানস ফ্রন্টিয়ার্স ) নামেও পরিচিত৷
ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করেন যে ডিএসএ আইনের অধীনে দায়ের করা প্রতি চারটি মামলার মধ্যে একটিতে সাংবাদিকদের জড়িত করার জন্য দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি যোগ করেন, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা, ন্যায়বিচারের অভাব এবং ডিএস এ’র ভয়ের কারণে সাংবাদিকরা এখন সেলফ সেন্সরশিপে জড়িত।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন সমাধান নয়, অবিলম্বে বাতিল করুন: টিআইবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন সমাধান নয়, অবিলম্বে বাতিল করুন: টিআইবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, এই আইন সংশোধন কোনো সমাধান নয়। এটি বাতিল করুন।
বুধবার (১২ এপ্রিল) টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
এতে টিআইবি জানায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অগ্রহণযোগ্যতা শুধু মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ধারার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং আইনটির যথেচ্ছ অপব্যবহারের ফলে গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ তথা জনগণের মধ্যে যে নিরাপত্তাহীনতার বিকাশ ঘটেছে, এজন্য আইনটি পুরোপুরি বাতিল করা দরকার।
এছাড়া এই আইন বাতিল করে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে শুধু ডিজিটাল পরিকাঠামো ও তার যুগোপযোগী ব্যবহারের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে নতুন আইন প্রণয়নের দাবি জানায় টিআইবি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক শামসকে মুক্তি দিন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করুন: টিআইবি
এ বিষয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালে প্রণয়নের পর থেকেই আইনটির বিভিন্ন নিবর্তনমূলক ধারার যথেচ্ছ অপব্যবহারের ফলে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, আইনটি বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণকারী ও ভিন্নমতাবলম্বীর শায়েস্তাকারী এই আইন স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী।
তিনি বলেন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাংশকে আইন লঙ্ঘনকারীতে রূপান্তরের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে এই আইন যথেচ্ছভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
এতে ভিন্নমত দমন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ, সংখ্যালঘু নির্যাতন, গভীর রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া, দীর্ঘসময় গুম করে রাখার পর মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখানো, এমনকি গ্রেফতারের পর হেফাজতে নির্যাতন, নিরাপত্তাহীনতা ও মৃত্যুর মতো ঘটনা স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে মুক্তচিন্তা, ধর্ম নিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ দমনের কৌশল হিসেবে এই আইনের ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। তেমনি সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও উগ্রধর্মান্ধতার শঙ্কাজনক বিকাশে সহায়কের ভূমিকা পালন করছে এই আইন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল মাধ্যমের নিরাপদ ও সুস্থ ব্যবহার সহায়ক একটি আইনের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে। এজন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে এবং সংশ্লিষ্ট খাতের সব অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে সুনির্দিষ্টভাবে শুধু ডিজিটাল পরিকাঠামো ও তার ব্যবহারের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
আরও পড়ুন: আদানি গ্রুপের সঙ্গে ঢাকার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নজিরবিহীন বৈষম্যমূলক: টিআইবি
হিরো আলমকে তাচ্ছিল্য করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও বৈষম্যমূলক: টিআইবি
আদানি গ্রুপের সঙ্গে ঢাকার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নজিরবিহীন বৈষম্যমূলক: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বাংলাদেশ সরকারকে আদানি গ্রুপের সঙ্গে অস্পষ্ট এবং বৈষম্যহীন বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিকে পুনর্বিবেচনা করতে এবং প্রয়োজনে বাতিল করতে বলেছে। এটি নজিরবিহীন বৈষম্যমূলক চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।
শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতের আদানি থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সই করা অসম, অস্বচ্ছ ও বৈষম্যমূলক চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত এই বিতর্কিত কোম্পানির কাছে জিম্মি হতে পারে।
এই সংস্থাটি বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে এর শর্তাবলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করতে বলেছে। একই সঙ্গে জাতীয় স্বার্থে বিশেষ করে এই চুক্তির চূড়ান্ত বোঝা দেশের জনগণকে বহন করতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়ে প্রয়োজনে চুক্তিটি বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি হবে। আবার, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে (পিপিএ) আদানি পাওয়ার থেকে এই উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্চে আদানির বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই: নসরুল
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক নির্ভরযোগ্য বিশ্লেষণে এই চুক্তিটি বাংলাদেশের জন্য অসাম্য ও অস্পষ্ট এবং নজিরবিহীন বৈষম্যমূলক চুক্তি হিসেবে বিবেচিত।
তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে চুক্তিটি বাংলাদেশের স্বার্থকে উপেক্ষা করে আদানি গ্রুপের স্বার্থকে এমনভাবে সমর্থন করেছে যে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত এই কোম্পানির হাতে জিম্মি হয়ে যেতে পারে। এই বোঝা এদেশের মানুষকেই বহন করতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ‘আদানি ওয়াচ’ সহ নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সূত্রে প্রকাশিত তথ্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে কয়লা ব্যবহৃত হবে তা আসবে আদানির মালিকানাধীন ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিতর্কিত খনি থেকে। এগুলো আদানির জাহাজে ও রেলে করে পরিবহন ও খালাস হবে আদানির মালিকানাধীন বন্দরে। আবার উৎপাদিত বিদ্যুৎ পরিবহন করা হবে আদানিরই নির্মিত সঞ্চালন লাইনে।
আরও জানা যাচ্ছে, জ্বালানি খরচসহ এই পুরো প্রক্রিয়ার ব্যয় বইতে হবে বাংলাদেশকে। যেটি বৈশ্বিক বিদ্যুৎ খাতের অভিজ্ঞতায় অভূতপূর্ব।
ফলে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের জন্য দেশের অন্য যে কোনো সরবরাহকারী থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুতের তুলনায় অস্বাভাবিক বেশি হারে মূল্য দিতে হবে।
একইভাবে, আদানির গোড্ডা প্রকল্পের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ দিতে হবে দেশি-বিদেশি উদ্যোগে পরিচালিত অন্য যে কোনো প্রকল্পের তুলনায় অগ্রহণযোগ্য বেশি হারে।’
আরও পড়ুন: নেপাল, ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ভারত: পররাষ্ট্র সচিব
হিরো আলমকে তাচ্ছিল্য করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও বৈষম্যমূলক: টিআইবি
বিএনপির ছেড়ে দেয়া সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, সর্বোপরি দেশের একজন সাধারণ নাগরিককে নিয়ে দুটি রাজনৈতিক দলের বা কারোরই এমন উপহাস করার কোনো অধিকার নেই বলে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে জানা যায় যে আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবমাননা ও উপহাসমূলক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
দেশের দুটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন বক্তব্য অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে।’ উল্টোদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘...এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তার সঙ্গে জিততে হয়।’ দুই ক্ষেত্রেই সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলমকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্যসূচক বিবেচনায় পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন দুই নেতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক রীতি অনুযায়ী পরস্পরকে নিয়ে বিষোদ্গার নতুন কিছু নয়। কিন্তু সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলমের ব্যক্তি পরিচয় ও অবস্থাকে মানদণ্ড হিসেবে দাঁড় করিয়ে দুই দল একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। সেই মানদণ্ড যে ইতিবাচক কিছু নয়, বরং এর মাধ্যমে আলম এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।”
তিনি বলেন, “পাশাপাশি দেশের ‘সাধারণ’ একজন নাগরিকের প্রতি দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের এমন আচরণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির স্থুলতাকেই জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করে।”
ড. জামান আরও বলেন, “সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং তার বয়স পঁচিশ বছর পূর্ণ হলে, কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত না হলে, দেউলিয়া না হলে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ না করলে বা আনুগত্য স্বীকার না করাসহ কিছু শর্ত পূরণে তিনি সংসদ সদস্য হতে পারবেন। সংবিধানের শর্ত পূরণের পরও আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারকেই ভুলুণ্ঠিত করে না, বরং তার সাংবিধানিক অধিকার অবজ্ঞার নামান্তরও বটে। ‘হিরো আলম নির্বাচিত হলে সংসদকে ছোট করা হতো’- এমন বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারন্তরে সংসদকে ছোট করা হয়েছে। কারণ, সংসদীয় গণতন্ত্রের চেতনা ও চর্চায় মানুষে-মানুষে বৈষম্যের প্রকাশ অগ্রহণযোগ্য।”
আরও পড়ুন: নির্বাচনে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিতে আইনি সংস্কারের সুপারিশ টিআইবির
প্রস্তাবিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ
বাংলাদেশ বিশ্বের ১২তম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ: সিপিআই ২০২২ রিপোর্টে টিআইবি
‘দুর্নীতির ধারণা সূচক-২০২২’ বা ‘করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স (সিপিআই) ২০২২’- অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২তম স্থানে রয়েছে।
মঙ্গলবার সংস্থাটির ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় বলেন, ২০২১-এর অবস্থান থেকে এক ধাপ নেমে বাংলাদেশ এ বছর ১০০-এর মধ্যে ২৫ স্কোর করেছে।
১৮০টি দেশের মধ্যে ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম। ২০২১ সালেও বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম ছিল, যেখানে ২০২০ সালে সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৬তম।
টিআইবি হলো বার্লিনভিত্তিক একটি দুর্নীতিবিরোধী নিবেদিত নাগরিক সমাজ সংস্থা। বিশ্বব্যাপী ১৮০টি দেশ এবং অঞ্চলের সরকারি ক্ষেত্রের দুর্নীতির প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিপিআই রিপোর্ট তৈরি করে টিআইবি।
আরও পড়ুন: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান টিআইবি’র
বিশ্বব্যাপী গড় স্কোর হল ৪৩। দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি দেশ ৫০-এর নিচে স্কোর করেছে, যেখানে ২৬টি দেশ তাদের সর্বনিম্ন স্কোরে নেমে এসেছে।
২০২২ সালের সিপিআই এ দেখা যায় যে বেশিরভাগ দেশ দুর্নীতি বন্ধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সূচক অনুযায়ী, এশিয়া প্যাসিফিকের ৩১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও মালদ্বীপ যৌথভাবে ৪০, শ্রীলঙ্কা ৩৬, নেপাল ৩৪, পাকিস্তান ২৭ এবং আফগানিস্তান ২৪ স্কোর করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
নির্বাচনে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিতে আইনি সংস্কারের সুপারিশ টিআইবির
বিতর্কিত ইসরায়েলি নজরদারি প্রযুক্তি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের ভয়ঙ্কর হাতিয়ার: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার অত্যন্ত বিতর্কিত নজরদারি প্রযুক্তি কেনার বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো ‘বিতর্কিত ইসরায়েলি নজরদারি প্রযুক্তি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের ভয়ঙ্কর হাতিয়ার; প্রয়োগের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার দাবি টিআইবির’ শিরোনামের এক বিবৃতিতে সংস্থাটি নিজেদের উদ্দেগ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে দুর্নীতি পর্যবেক্ষক সংস্থাটি বলেছে, সুনির্দিষ্ট নীতির অনুপস্থিতিতে এই জাতীয় প্রযুক্তির ব্যবহার বেশ কয়েকটি মৌলিক সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করার গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোন সুনির্দিষ্ট আইন ও নীতি অনুযায়ী জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এত ভয়ংকর হাতিয়ার কেনা হয়েছিল, কী উদ্দেশ্যে, কী প্রেক্ষাপটে, কার স্বার্থে তা ব্যবহার করা হবে- এ মৌলিক প্রশ্নের উত্তর জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইসরায়েলি সাবেক গোয়েন্দা কমান্ডার পরিচালিত একটি কোম্পানির কাছ থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কিনেছে, যেটি গত বছরের জুনে দেশে এসেছে।
আরও পড়ুন: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান টিআইবি’র
এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য ও যোগাযোগের গোপনীয়তা, নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে এবং সর্বোপরি মানুষের জীবন ও জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলা প্রযুক্তির ক্রয় ও ব্যবহার সম্পর্কে সরকারের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল থেকে সরাসরি কিছুই কেনা হয়নি’-সরকারের এই ব্যাখ্যার অর্থ এই না যে এই ইসরায়েলি প্রযুক্তি আমদানি করা হয়নি।’
প্রকাশিত সংবাদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে ইসরায়েল ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় সাইপ্রাসের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে প্রায় ৬০ কোটি টাকায় কেনাকাটা করা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান ইসরায়েলি মিডিয়া প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেছেন, জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কমান্ডার এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এমনকি ২০২১ এবং ২০২২ সালে এই প্রযুক্তিটি কীভাবে পরিচালনা করতে হয় তা শিখতে গ্রিসে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি এই তথ্য মিথ্যা হয়, তাহলে তা প্রমাণ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের। সর্বোপরি, এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে পৌঁছেছে, তাতে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করে একটি সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন না করা পর্যন্ত এই প্রযুক্তি ব্যবহার বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। তা না হলে জনস্বার্থকে পদদলিত করে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ নজরদারিভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
নির্বাচনে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিতে আইনি সংস্কারের সুপারিশ টিআইবির
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান টিআইবি’র
সবার জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য এবং সর্বোপরি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে পরিণত করা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সুশাসন অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সংস্থাটি।
এজন্য প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারের মাধ্যমে স্বার্থের দ্বন্দ্ব দূরীকরণ, সকল রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমসহ সকল অংশীজনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতের আহ্বান জানায় টিআইবি।
বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
৭১ শতাংশ পরিবার দুর্নীতির শিকার: টিআইবি
টিআইবি’র আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলমের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন: গণতান্ত্রিক সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
উপস্থাপিত প্রবন্ধে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনকে প্রদত্ত সাংবিধানিক বিশেষ দায়িত্ব ছাড়াও নির্বাচনকালীন সরকার ও তার প্রশাসনিক যন্ত্র বিশেষত প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের ভূমিকা নিশ্চিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে।
সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সুষ্ঠু, অবাধ প্রতিযোগিতার সুযোগ না সৃষ্টি করতে পারলে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ভোটবাক্স বা ইভিএমের ব্যবহারসহ সবকিছুই অর্থহীন হয়ে পড়ে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোট নিজে না দিতে পারা, ভোটারদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেয়া, ভোটকেন্দ্রে এবং ভোট গণনার সময় সকল দলের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গবেষণালব্ধ তথ্য উপাত্তও এসব অভিযোগের স্বপক্ষে ছিল এবং এখনও এগুলো নির্বাচন-কেন্দ্রিক উদ্বেগের কেন্দ্রীয় উপাদান হিসেবে বিরাজ করছে।
প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সকল আইন ও বিধি এমন হওয়া প্রয়োজন যাতে সকল দলের জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত হয়। এই সম-অবস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নির্বাচন কমিশনের শতভাগ নিরপেক্ষ অবস্থান নিশ্চিত করা। প্রয়োজনে আইনি সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের কার্যক্রম সীমিত রুটিন কাজে সীমাবদ্ধ করা।
এছাড়া, আনুষ্ঠানিক প্রচারাভিযানসহ নির্বাচনী আচরণ বিধিসমূহ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী বিশেষত সরকারি দলের পক্ষ থেকে মেনে চলার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।
নির্বাচনকে অর্থবহ ও জনগণের প্রতিনিধিত্বশীলতার ক্ষেত্রে কার্যকর করতে নির্বাচনী মনোনয়নকে দুর্নীতিমুক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের আশা প্রতিফলন ঘটার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
টিআইবি আশা করে, বিরোধী দল ২০১৩ এর মতো অনমনীয় পদক্ষেপ নেবেন না এবং নির্বাচন বর্জনের চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী হবেন। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সে জন্য তারা প্রয়োজনীয় বাস্তবায়নযোগ্য দাবিসমূহ পেশ করবেন।
প্রকৃতপক্ষে সরকারিদল এবং বিরোধীদল উভয়পক্ষকেই দেশ ও জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আলোচনা এবং ছাড়ের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আসা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয় প্রবন্ধে।
টিআইবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সকল অংশীজনের জন্য গ্রহণযোগ্য কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশও তুলে ধরেছে সংস্থাটি।
অংশগ্রহণমূলক বা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় ভূমিকার গুরুত্ব উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বা সকল নিবন্ধিত দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন আয়োজন নিশ্চিত করতে হলে কোন বিষয়গুলোতে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য প্রয়োজন, নির্বাচন কমিশনের উচিত তা বিশ্লেষণ করা।
এক্ষেত্রে মূল উদ্বেগের বিষয় হলো-নির্বাচনে সবার জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে একদিকে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ভূমিকা নিশ্চিতে ও অন্যদিকে মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যরা স্বপদে বহাল থেকে নির্বাচন করলে স্বাভাবিকভাবেই যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়, তা প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনের উচিত প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই একমাত্র উপায় নয়। বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক চর্চা অনুযায়ী ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে যে ধরনের রূপরেখার আওতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা অনুসরণের জন্য উল্লিখিত আইনি সংস্কার অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। তবে একইসঙ্গে নির্বাচন আয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।’
সর্বশেষ দুটি জাতীয় নির্বাচনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনের অত্যন্ত বিতর্কিত ভূমিকা মাঠ পর্যায়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার মূল কারণ ছিল, উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘নির্বাচনকালে এই সংস্থাসমূহের বদলি ও পদায়নসহ সার্বিক কর্তৃত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকতে হবে।
অন্যদিকে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল অংশীজনের প্রতিবন্ধকতাবিহীন অংশগ্রহণ ও নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, প্রচার ও প্রকাশকে অবাধ ও মুক্ত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে কঠোরভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।’
ইভিএম বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত বিতর্কিত ও দৃশ্যত পূর্বনির্ধারিত উল্লেখ করে ড. জামান এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ইভিএম ব্যবহারের রাজনৈতিক, কারিগরি ও আর্থিক লাভ-ক্ষতির বস্তুনিষ্ঠ ও চুলচেরা বিশ্লেষণপূর্বক সকল অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত কর্ম-পরিকল্পনাকে চলমান খসড়া হিসেবে বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণ সাপেক্ষে চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
জাপানের রাষ্ট্রদূতের অভিযোগের ব্যাখা দিল টিআইবি
৭১ শতাংশ পরিবার দুর্নীতির শিকার: টিআইবি
দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ পরিবারকে ঘুষ দিয়ে সরকারের বিভিন্ন খাত থেকে সেবা নিতে হয়। বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিবার জরিপ করে এ তথ্য তুলে ধরে।
‘সেবাখাতে দুর্নীতি: জাতীয় পরিবার জরিপ-২০২১’ শিরোনামে চালানো জরিপে উঠে আসে যে সেবাখাতের আইন-শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার বর্হিগমন ও পাসপোর্ট বিভাগ(ডিআইপি) সবচেয়ে বেশি চুয়াত্তর দশমিক ৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআরটিএ)আটষট্টি দশমিক ৩ শতাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত।
অন্যান্য খাতগুলোর মধ্যে বিচার বিভাগ ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ, স্বাস্থ্য ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ, স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ভূমি সেবায় ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত।
জরিপ প্রতিবেদন বলছে, পাসপোর্ট, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিআরটিএ- এই শীর্ষ তিনটি খাতে দেশের সার্বিক ঘুষের প্রচলন ৪০ দশমিক ১ শতাংশ।
ঘুষ দিতে বাধ্য হওয়া ৭২ দশমিক ১ শতাংশ ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, ‘ঘুষ ছাড়া সেবা নাই’ ফলে তারা ঘুষ দেয়। নিয়মিত ঘুষ দেয়ায় তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিটি পরিবার বীমা, বিচার ও গ্যাস এই তিনটি খাতের সেবা নিতে গড়ে বার্ষিক ছয় হাজার ৬৩৬ টাকা ঘুষ দিয়ে থাকে।
জরিপকালীন ২০২০-২০২১ সালের এই সময়ে ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যা দেশের ২০২০-২১ অর্থবছরের জিডিপির শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ এবং একই অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশ।
টিআইবি ১৯৯৭ সাল থেকে নয়টি জাতীয় খানা জরিপ করেছে।
জরিপ মতে, দুর্নীতির হার ২০১৭ সালের তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে একই খাতে দুর্নীতির হার ছিল সত্তর দশমিক ৮ শতাংশ যখন ২০১৭ সালে একই খাতে দুর্নীতির হার ছিল ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ। তুলনামূলক ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ঘুষ বা বেনামী লেনদেনের হার কমলেও বৃদ্ধি পেয়েছে ঘুষের পরিমাণ।
সরকারের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার মধ্যেও অনেকগুলো খাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, পাসপোর্ট, বিআরটিএ ইত্যাদি) দুর্নীতির হার একই রকম রয়েছে। কিছু খাতে(স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা ও বীমা ইত্যাদি) দুর্নীতি বেড়েছে। উপরন্তু ২০১৭ সালের তুলনায় ঘুষের হার বেড়েছে কিছু খাতে(স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহ) এবং ২০২১ সালে কিছু খাতে (কৃষি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য) দুর্নীতি কমেছে ।
পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
২০২১ সালের জরিপে দেখা যায়, সেবাখাতের দুর্নীতির ঘনটনাগুলো শহরাঞ্চলের তুলনায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি হয়েছে যার হার ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বেশি
উপার্জনক্ষম মানুষের চেয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে দুর্নীতির ঊর্ধ্বগতি বেশি। বিভিন্ন সেবা গ্রহীতা নিম্ন আয়ের মানুষদের তাদের বার্ষিক আয়ের বড় একটি অংশ ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায় স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবা খাত থেকে সেবা গ্রহীতা নারীরা পুরুষ সেবা গ্রহীতাদের চেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হন। এবং পুরুষ সেবাগ্রহীতারা শিক্ষা, সরকারি সেবা খাতে
নারীদের চেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হন। এছাড়া ৩৫ বছরের কম বয়সী সেবাগ্রহীতাদের তুলনায় ৩৬ বছরের ঊর্ধ্বের সেবাগ্রহীতারা বেশি দুর্নীতির শিকার হন।
জরিপে অংশ নেয়া পরিবারগুলোর মতামতের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন দশ দফা সুপারিশ করেছে। এরমধ্যে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা, সরকারি সকল সেবা ডিজিটালাইজেশন, সেবা প্রদানকারীদের বিধির আওতায় পরিচালনা এবং সরকারের বিভিন্ন
অভিযোগের পদ্ধতি ও প্রতিকার পাওয়ার বিষয়ে অধিক প্রচারণা চালানো।
আরও পড়ুন: টিসিবির পণ্য বিক্রি নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই পারিবারিক সমীক্ষার সঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি উপলব্ধি সূচকের (সিপিআই) কোন সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংস্থাটি সিপিআই তৈরি করার সময় এই জরিপ এবং টিআইবি দ্বারা পরিচালিত অন্যান্য গবেষণার ফলাফলগুলো ব্যবহার করে না।
টিসিবির পণ্য বিক্রি নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের নিম্নআয়ের এক কোটি পরিবারের মাঝে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রয় নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়নি। টিআইবি যে কোন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতেই পারে, তবে তা সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
বুধবার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে টিআইবির প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ‘টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে টিআইবি জানিয়েছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে প্রকৃত উপকারভোগী অনেকে বাদ পড়েছেন।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে এক কোটি পরিবারের মাঝে নির্ধারিত ডিলারদের মাধ্যমে কার্ডধারী পরিবারগুলোর মাঝে এ পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। প্রায় একশত ভাগ ভর্তুকি দিয়ে পরিবার কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। কিউআর কোর্ড ব্যবহার করে পণ্য বিক্রয়ের কারণে শৃঙ্খলা এসেছে। খুব কম সময়ের মধ্যে পণ্য বিক্রয় করা যাচ্ছে। এখন পণ্য ক্রয়ে আর কষ্ট করতে হয় না। এখন আর একই ব্যক্তির দু’বার পণ্য ক্রয়ের সুযোগ নেই। কার্ডধারী ব্যক্তি তার সুবিধাজনক সময়ে ডিলারদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করছেন। এক্ষেত্রে কোন ধরনের অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকায় অল্প কিছু ছাড়া সারা দেশে এ কার্ড বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। কার্ডধারী মানুষ এখন সুশৃঙ্খলভাবে টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে পাচ্ছেন। আমারা চেষ্টা করছি সঠিক নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে টিসিবির পণ্য করতে। টিসিবির মাধ্যমে তেল, চিনি, সোলা, মশুর ডাল, পবিত্র রমজান মাসে চিনি, খেজুর বিক্রয় করা হয়।
তিনি বলেন, আগে ট্রাক সেলের মাধ্যমে এ পণ্য বিক্রয় করা হতো, এতে একই ব্যক্তি একাধিকবার লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য ক্রয় করতো, অনেকে পেতো না। এজন্য কার্ডের মাধ্যে এক কোটি পরিবারের মাঝে পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। যাতে প্রকৃত নিম্নআয়ের মানুষ এ পণ্য ক্রয়ের সুবিধা পান। টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশব্যাপী প্রায় ৩ হাজার ৩০০ ডিলারের মাধ্যমে এ পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। ডিলারের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হচ্ছে।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত অক্টোবরে: আইএমএফ
ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লি. এর নতুন নাম ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসি