পর্যটক
কুয়াকাটায় পর্যটকদের মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের মারধর করে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। শনিবার (৬ মে) সন্ধ্যায় এ হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই সাব্বির হোসেন নামের এক পর্যটক মহিপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: শেরপুরে চালককে খুন করে ইজিবাইক ছিনতাই
গ্রেপ্তারেরা হলেন-মহিপুরের আব্দুস সালামের ছেলে মো. বাইজিদ ও ফোরকান দফাদারের ছেলে তানভির ওরফে শান্ত।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাইন পারভেজ জানান, শনিবার সন্ধ্যায় কুয়াকাটা পৌর শহরের আনন্দবাড়ি গেস্ট হাউজের সামনে কয়েকজন নারী ও পুরুষ পর্যটকের পথরোধ করে তাদের মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা ১৩ হাজার সাতশ’ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সংঘবদ্ধ ওই গ্রুপের সদস্যদের বয়স ১৭ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকরা বিষয়টি মুঠোফোনে ট্যুরিস্ট পুলিশের অভিযোগ কক্ষে জানালে তাৎক্ষণিক তারা অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করে মহিপুর থানায় সোপর্দ করেন।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার আবুল খায়ের বলেন, দুইজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রবিবার (৬ মে) আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া এ চক্রের পলাতক অপর সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে পুলিশের এএসআই আহত
রাজশাহীতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
সিলেটের জৈন্তাপুর-জাফলং ঈদে পর্যটক বরণে প্রস্তুত
প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি খ্যাত সিলেটের জৈন্তাপুর ও জাফলং। সবুজ সমারোহে বেষ্টিত সীমান্তবর্তী উপজেলা জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট। ছায়া সুনিবিড় ছোট ছোট পাহাড় আর স্বচ্ছ জলের নদী ও ছড়ার সমন্বয়ে জৈন্তাপুর-জাফলং। দীর্ঘকাল ধরে এই জনপদ তাই পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় জায়গা।
ঈদ উপলক্ষে লালাখাল-জাফলংকে গড়ে তুলা হয়েছে সবুজ শ্যামল আর অপরূপ সাজে সজ্জিত করে। প্রাচ্যের রাণী সিলেটের নীল নদ খ্যাত সারী নদী, জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট৷ এসব নিয়ে কবি সাহিত্যিকরা রচনা করেছেন শত সহস্র কবিতা, গান আর গল্প। মনের মাধুর্য দিয়ে শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় এঁকেছেন অপরূপ ছবি।
সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী জনপদ জৈন্তাপুর। এক সময় জৈন্তিয়া একটি স্বাধীন রাজ্য নামে পরিচিত ছিল। কালের বিবর্তনে জৈন্তিয়া রাজ্য আজ প্রাকৃতিক শোভা মন্ডিত পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিত।
সিলেট থেকে জৈন্তা-জাফলং যাত্রা শুরু করলেই দেখা যাবে মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সবুজের সমারোহ ও খাসিয়া জৈন্তা পাহাড় বেষ্টিত জৈন্তাপুর জাফলংয়ের অপরূপ সৌন্দর্য্য ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বিলিয়ে দিচ্ছে।
প্রকৃতিগতভাবে এঁকেবেঁকে যাওয়া সড়ক উঁচু-নিচু পাহাড় আর পাহাড়ী নদী ঘেষা ঝর্ণা, সেই সঙ্গে রয়েছে নীলনদ নামে পরিচিত সারী নদীর স্বচ্ছ জলরাশি। এসব দৃশ্য বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণীয়, বিশেষত রূপের নগরী জাফলংয়ের সৌন্দর্য।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন
জাফলংয়ে পর্যটকের লাশ উদ্ধার, স্ত্রীসহ আটক ৪
সিলেটের জাফলংয়ে রিসোর্টের পাশ থেকে পর্যটকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ওই পর্যটকের স্ত্রী এবং তার কথিত পরকীয়া প্রেমিকসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে জাফলংয়ে রিসোর্টের পাশ থেকে পর্যটকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করে বিষয়টি জানিয়েছেন-সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি জানান, ভিকটিমের নাম আলে ইমরান (৩২)। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার গুরই গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।
এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
তিনি জানান, গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে গোয়াইনঘাট থানাধীন ৩ নম্বর পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের জাফলং বল্লাঘাট রিভারভিউ রিসোর্ট এর পাশে এক অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ পাথরচাপা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানায় সংবাদ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ১২০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ, আটক ১
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামিদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তারে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাতে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা শাখা পরিচালিত পৃথক দুটি অভিযানে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার বেলদি গাজীরটেক গ্রামের মো. জিন্নাতের ছেলে নাদিম আহমেদ নাঈমকে (১৯) নিজ বাড়ি থেকে ও ভিকটিম আলে ইমরানের স্ত্রী কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার ছেত্রা গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে খুশনাহারকে (২১) ঢাকার বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া গ্রেপ্তার নাদিম খুশনাহারের পরকীয়া প্রেমিকের বন্ধু বা সহযোগী।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম আলে ইমরানের স্ত্রী খুশনাহারের সঙ্গে হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি মাহিদুল হাসান মাহিনের (২৪) দীর্ঘ দুই থেকে আড়াই বছরের প্রেম চলছে।
আসামি মাহিন ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে জিএম পদে কর্মরত।
ভিকটিম আলে ইমরানের সঙ্গে গত ৫ বছর আগে খুশনাহারের বিয়ে হয়। মাহিনের সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর পর থেকেই ভিকটিমের স্ত্রী খুশনাহার এবং তার প্রেমিক মাহিন বিভিন্ন সময় ভিকটিম আলে ইমরানকে হত্যা করার চেষ্টা করে আসছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় হত্যা করার উদ্দেশে খুশনাহার তার স্বামী আলে ইমরানকে নিয়ে বেড়ানোর কথা বলে গত ১৫ এপ্রিল রাতে ভৈরব থেকে ট্রেনযোগে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন।
অন্যদিকে একই দিনে প্রেমিক মাহিন, মাহিনের অফিসে কর্মরত গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাদিম এবং অপর পলাতক সহযোগী ঢাকার কমলাপুর থেকে ট্রেনযোগে সিলেটের উদ্দেশে রওয়ানা হন।
গত রবিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৮টা থেকে জাফলংয়ের বল্লাঘাটস্থ ‘রিভারভিউ রিসোর্ট অ্যান্ড আবাসিক হোটেল’ এর ১০১ নম্বর কক্ষে ভিকটিম আলে ইমরান এবং তার স্ত্রী খুশনাহার অবস্থান করেন এবং অন্য তিন আসামি জাফলংয়ের বল্লাঘাটে হোটেল শাহ আমিনে অবস্থান করেন।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমের স্ত্রী খোশনাহার হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পূর্বে কৌশলে তাদের অবস্থানরত হোটেল কক্ষের সামনের সিসিটিভি ক্যামেরা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন। পরবর্তীতে মাথাব্যথার ওষুধের কথা বলে রাত ১০টার সময় ভিকটিম আলে ইমরানকে তার স্ত্রী খুশনাহার ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর যখন ভিকটিম আলে ইমরান ঘুমিয়ে যান, তখন স্ত্রী খুশনাহার তার প্রেমিক মাহিনকে হোটেল রিয়ারভিউ রিসোর্ট অ্যান্ড আবাসিক হোটেলে আসার জন্য বলেন।
রাত আনুমানিক ১২টায় হত্যাকারী মাহিন তার অপর দুই সহযোগীকে নিয়ে হোটেল রিয়ারভিউ এর ১০১ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে এবং রাত ২টায় আলে ইমরানের স্ত্রী খুশনাহার ও প্রেমিক মাহিন গলায় গামছা পেঁচিয়ে আলে ইমরানকে হত্যা করেন।
এ সময় গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি নাদিম আলে ইমরানের পা চেপে ধরেন এবং পলাতক অপর সহযোগী রুমের বাইরে পাহারা দেন। একসময় আলে ইমরানের মৃত্যু নিশ্চিত হলে আনুমানিক রাত ৩টায় হত্যাকারী মাহিন ও অপর দুই সহযোগী আলে ইমরানের লাশ লুকিয়ে রাখার উদ্দেশে হোটেলের পাশে পাথরচাপা দিয়ে রাখে।
পরবর্তীতে হত্যাকারীরা হোটেল থেকে রাত আনুমানিক সাড়ে ৪টায় বের হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে পালিয়ে যায়।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তার আসামিরা উক্ত হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট জেলা পুলিশ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে আসামি খুশনাহার ও নাদিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তবে প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় খুশনাহারের পরকীয়া প্রেমিক মাহিন ও তার আরেক সহযোগী রাকিবকে গ্রেপ্তারে কিশোরগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করছিলো পুলিশ।
এছাড়া প্রেস ব্রিফিং শেষ হওয়া মাত্র খবর আসে-ওই দুইজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসময় সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তার ওই দুইজনকে সিলেট নিয়ে আসা হবে এবং আগে গ্রেপ্তার হওয়া দুইজনকে আজই আদালতে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বিদ্যুৎ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০০ জনের নামে মামলা, আটক ১
শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার রায়: আদালত চত্বরে বিক্ষোভ, ছাত্রদল নেতা আটক
জাফলংয়ে পর্যটকের লাশ উদ্ধার, ‘স্ত্রী’ পলাতক
সিলেটের জাফলংয়ে একটি হোটেলের পাশ থেকে এক পর্যটকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্ত্রী পরিচয় দেওয়া নারী পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে হোটেল রিভার ভিউ এর পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আল ইমরান (৩৩) কিশোরগঞ্জের নিকলীর আব্দুল জব্বারের ছেলে।
আরও পড়ুন: শাহবাগ থেকে রিকশাচালকের লাশ উদ্ধার
তার কথিত স্ত্রীর নাম খোশনাহার (২০)।
পুলিশ জানায়, আল ইমরান তার স্ত্রী খোশনাহারকে সঙ্গে নিয়ে জাফলংয়ে ঘুরতে আসেন। সেখানে তারা দুজন বল্লাঘাটের হোটেল রিভার ভিউ এর ১০১ নম্বর কক্ষে অবস্থান করেন। সোমবার দুপুরে ওই হোটেলের পাশে আল ইমরানের লাশ পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। এরপর থেকেই ওই নারী পলাতক রয়েছেন।
হোটেলের রেজিস্ট্রার থেকে জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম আল ইমরান। তার সঙ্গে থাকা নারীর নাম লেখা হয়েছে খোশনাহার। তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই হোটেলে ওঠেন।
জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ জানান, হোটেল রিভার ভিউয়ের অবস্থান নদীর একদম কাছেই। দুপুরের দিকে আমরা হোটেলের নিচে নদীর পাড়ে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পাই।
তিনি আরও বলেন, ওই যুবকের লাশ পাওয়া গেলেও, তার স্ত্রীর পরিচয় দেওয়া নারী পলাতক রয়েছেন। আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি।
আরও পড়ুন: পাবনায় ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার
সিলেটে নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর কুশিয়ারা থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারে পর্যটককে ছুরিকাঘাত, আটক ৫
কক্সবাজার শহরে দুই পর্যটককে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত টিপ ছুরি, মোটরসাইকেল এবং লুট করা মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন- চাঁদপুরের মনোহরকান্দি বিষ্ণুপুর এলাকার স্বাগতম চন্দ্র দের ছেলে শুভ দে এবং তার বন্ধু আতিক হাসান।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ১৪৮ মণ সরকারি চাল জব্দ, আটক ১
আতিক হাসান এখনও কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আটকরা হলেন-কক্সবাজার শহরের ১০নং ওয়ার্ড উত্তর বাহারছড়া এলাকার বেলাল উদ্দিনের ছেলে আশরাফ উদ্দিন আরিফ (১৯), টেকপাড়া সিকদার মহল এলাকার মো. ফরিদের ছেলে ইরফান ফারদিন (২০), মধ্যম বাহারছড়া এলাকার এম.এ বাদশার ছেলে তাসনিমুল হাসান নাবিল (২১), একই এলাকার মো. গিয়াসের ছেলে মো. সাঈদ (২০) এবং মো. নাছির উদ্দিনের ছেলে আবরার উদ্দিন (১৯)।
রবিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ নাছির উদ্দিন।
তিনি জানান, এই ঘটনায় রবিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে এজাহার দায়ের করেন শুভ দের বাবা স্বাগতম চন্দ্র দে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়-ঢাকা ধামরাই উপজেলার সূয়াপুর ইউনিয়ন ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ফোরামের পক্ষ থেকে গত ১৬ মার্চ প্রায় ৯০ জনের একটি দল কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। এরমধ্যে শুভ দে ও মো. আতিক হাসান গত ১৮ মার্চ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের রাস্তা দিয়ে ঘুরতে যান। ওই সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে পাঁচ জন ছিনতাইকারী তাদের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা তাদের মারধর ও ছুরিকাঘাত করে দুটি মোবাইল সেট ও কিছু নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে অবগত করলে শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে ডিবি পুলিশ।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ নাছির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি, দুটি মোটর সাইকেল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় 'ভুল চিকিৎসায়' কলেজছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগে আটক ৩
রামগতিতে ৪ হাজার কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, আটক ৯
সুন্দরবনের আগুনঝরা নদীর বুকে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’, পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে
সুন্দরবনের দুবলার চর অভিমুখে আগুনঝরা নদীর মোহনায় জেগে উঠেছে একটি দ্বীপ। এই দ্বীপটি জেগেছে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে। বন বিভাগ দ্বীপটির নাম দিয়েছে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’।
সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদেরকে দ্বীপটি আকর্ষণ করবে। দ্বীপটি কেবলই কেওড়া গাছের বন। এটিতে পর্যটক নামার কোনও সুযোগ নেই। কারণ এখানে ঘন বন। জোয়ার ভাটায় পানি ওঠার কারণে চরের মাটি নরম ও কর্দমাক্ত।
জানা গেছে, ২২-২৫ বছর আগেও জাহাজ নিয়ে এ স্থান পার হওয়া ছিল ঝুঁকির। কারণ এ মোহনা ছিল প্রচণ্ড খরস্রোতা। দ্বীপের কারণে এখন স্থানটি ধীরে ধীরে অতিক্রম করতে হয়। বামের নদীটিই আগুনঝরা নদী। যা এখন ভরাট হয়ে কাঁদার স্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে আগুনঝরা নদী পার হওয়ার সময় এই দ্বীপটির নয়নাভিরাম দৃশ্য নজর কাড়বে পর্যটকদের।
সুন্দরবনে পর্যটকবাহী লঞ্চের সুকানি শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সুন্দরবনের বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চালাচ্ছি। আগুনঝরা নদীর এই মোহনাটি ছিল বিশাল ও অত্যন্ত খরস্রোতা। ২০-২২ বছর হলো দ্বীপটি সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে এর এক পাশের নদী মরে যাচ্ছে। অপরপাশ এখনও সচল আছে। ক’দিন সচল থাকবে তা বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে পর্যটকের খরা, হতাশায় ট্যুর অপারেটররা
পর্যটক গোলাম হোসেন বলেন, দূর থেকে দেখলে দ্বীপটি ভালোই লাগে। যেন সুন্দরবনের মাঝে আরেক টুকরো সুন্দরবন। যত কাছাকাছি আসে ততই আকর্ষণ বাড়ে।
পর্যটক মোমিন মিয়া বলেন, দুবলার চর এলাকায় বিভিন্ন চরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এ দ্বীপটিও বেশ ভালো লাগে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘দ্বীপটি বেশ পুরানো। আগুনঝরা নদীর মোহনায় এ দ্বীপের কারণে নদীর দুটি ধারা সৃষ্টি হয়েছে। একটিতে নৌযান চলাচল করছে। অপরটি পলি জমে জমে ভরাট হয়ে উঠছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া খননের কোনও পরিকল্পনা নেই। ফলে ওই অংশটিও ভবিষ্যতে গাছপালায় ভরে জঙ্গলে পরিণত হতে পারে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলছে ১ সেপ্টেম্বর
প্রমোদতরি ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’: ষাট গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শনে ২৫ বিদেশি পর্যটক
খুলনার বাগেরহাটের ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ ঘুরে দেখলেন ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’ প্রমোদতরিতে করে বাংলাদেশে আসা ২৫জন বিদেশি পর্যটকের একটি দল। শনিবার বিকাল ৪টার দিকে ওই পর্যটকেরা ষাট গুম্বুজ মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেন এবং পরবর্তী এক ঘন্টা ধরে তারা মসজিদের ভিতর এবং বাইরের অংশ ঘুরে দেখেন।
২৫জন বিদেশি পর্যটকের মধ্যে ২৪ জন সুইজারল্যান্ড এবং একজন জার্মান নাগরিক।
প্রথমে তারা ষাট গম্বুজ মসজিদ চত্বরের জাদুঘরে গিয়ে খানজাহানের সময়ের বিভিন্ন প্রত্নতত্ত্ব দেখেন। এরপর তারা ষাট গম্বুজ মসজিদ ঘুরে দেখেন। এসময় তাদের অনেকেই ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে মসজিদের ছবি ধারণ করেন।
ষাট গম্বুজ মসজিদের অনন্য স্থাপত্যশৈলী এবং লাল পোড়া ইটের উপরে নয়নাভিরাম কারুকার্য ও ইটের দেয়ালে দৃষ্টিনন্দন টেরাকোটা দেখে মুগ্ধতার কথা জানান বিদেশি পর্যটকরা।
তারা জানান, বহুপুরাতন এই মসজিদের স্থাপত্যশৈলী অসাধারণ, যা তাদের মুগ্ধ করেছে। তারা মসজিদের ইতিহাস জানার চেষ্টা করেছেন।
ষাট গম্বুজ মসজিদে তাদেরকে ফুল দিয়ে অভ্যার্থনা জানান বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজ আল-আসাদ, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বাগেরহাট যাদুঘরের কাস্টোডিয়ান যায়েদ, ষাট গম্বুজ মসজিদের ইমাম মো. হেলাল উদ্দিন এবং ট্যুর অপারেটর জার্নি প্লাসের প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান।
আরও পড়ুন: গঙ্গা বিলাস প্রমোদতরি বাংলাদেশ ও ভারতকে সংযুক্ত করতে নদীর শক্তি প্রদর্শন করেছে: প্রণয় ভার্মা
সৈকতে দাঁড়িয়ে বছরের শেষ সূর্যকে বিদায় জানালেন লাখো পর্যটক
বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করতে ৩১ ডিসেম্বর লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিখ হয় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
শীতের হিমেল হাওয়ায় চারপাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। সামনে ঢেউয়ের গর্জন। এরই মাঝে ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যায় ২০২২ সালের শেষ সূর্য।
অনেক প্রাপ্তি, হতাশা, ক্লান্তি ও নানা ঘটনা আর অঘটনকে ছাপিয়ে শেষ হলো আরও একটি বছর।
সমুদ্রের পানিতে অস্তমিত সূর্যের অপরূপ রোমাঞ্চকর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন পর্যটকরা।
আরও পড়ুন: টানা তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল
উচ্ছ্বসিত পর্যটক সহ স্থানীয় মানুষ ২০২২ সালকে সূর্যাস্তের মাধ্যমে বিদায় জানিয়েছেন। আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেন। পড়ন্ত বিকালে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
কক্সবাজারের সূর্যাস্তের দৃশ্য ছবির ফ্রেমে আটকে রেখেছে পরিবার পরিজন প্রিয় জনকে সঙ্গে নিয়ে। এছাড়া কক্সবাজারের সৈকতে উপস্থিত পর্যটকরা হাত নেড়ে বিদায় বছরের শেষ সূর্যকে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি মাসুদ চৌধুরী ও সামান্তা রহমান জানান, ২০২২ সালে জীবনের কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ২০২২ সালের সূর্যাস্তের সঙ্গে হতাশা, দুঃখ ও না পাওয়ার বেদনাকে বিসর্জন দিতে এবং আনন্দ উল্লাসে ২০২৩ সালকে বরণ করবো কক্সবাজারে ভ্রমনের মাধ্যমে।
নরসিংদী থেকে আগত পর্যটক নেওয়াজ আলী বলেন, তিন বন্ধু মিলে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন।
প্রাকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই কক্সবাজার। এখানকার বৈচিত্র্যময় সমুদ্রের বিশালতা ও প্রশান্তি মন টানে বার বার।
তা এই শীত মৌসুমে এখানে তেমন বেশি শীত নেই। তাই এখানে ভ্রমনের মজাটাই আলাদা।
শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়াতে পযর্টন নগরী কক্সবাজারে বেশ কয়েকদিন ধরেই পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো।
সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে গোধূলি বেলার সূর্যাস্ত দেখে বিমোহিত পর্যটকরা।
দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চোখে পরছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি শহরের বার্মিজ মার্কেট, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়াটেক সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতে রয়েছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ২ জানুয়ারি পর্যন্ত হোটেলের ৯০ ভাগ রুম বুকিং রয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের আতিথেয়তায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা, বীচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের আগমনে কক্সবাজার যেন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষের ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি প্রকৃতি আর সমুদ্রপ্রেমী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ইংরেজি ২০২২ সালকে স্মৃতিময় করে রাখতে আর ২০২৩ সালকে স্বগত জানাতে কক্সবাজার সৈকতে জড়ো হয়েছে লাখো পর্যটক।
তাদের সেবায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান জানান, কক্সবাজারের প্রত্যেক পর্যটন জোনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া ভ্রাম্যমান পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড়
কক্সবাজারের মিষ্টি পান যাচ্ছে বিদেশেও
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড়
এবারও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজার। ৩১ ডিসেম্বরকে ঘিরে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজার যেন পর্যটকের মেলায় পরিণত হবে।
বছরের এই দিনটিতে তরুণ-তরুণীরা হইচই আর আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। বাদ যান না শিশু আর প্রবীণরাও।
আর তাই শহরের হোটেল-মোটেল ও পর্যটন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আলাদা করে প্রস্তুত রয়েছে। ইংরেজি নতুন বছরকে বরণে বিভিন্ন হোটেলে থাকছে ইনডোর আয়োজন। তবে কয়েক বছরের মতো এবারও সমুদ্রসৈকতসহ আউটডোরে কোনো আয়োজন নেই।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম আনু জানান, ইংরেজি বছরের শেষ দিন মানে থার্টি ফার্স্ট। দেশের সব পর্যটকদের দৃষ্টি থাকে কক্সবাজারে। কারণ সৈকতে ২০২২ সালের শেষ সূর্যাস্ত উপভোগ এবং বিদায় জানাতে এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রোমাঞ্চকর অনুভূতি কক্সবাজার থেকে পাওয়া যায়। তাই ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটকরা চলে এসেছে। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজারও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাইরে বড় কোনো অনুষ্ঠান না থাকলেও বিভিন্নভাবে বড় পরিসরে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন হবে কক্সবাজারে। শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় ও রাতে বিভিন্ন হোটেলের ইনডোরে নতুন বছরকে বরণ করতে থাকছে নানা আয়োজন।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে। সে বিষয়কে কেন্দ্র করে হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসগুলো আলাদা করে প্রস্তুতি নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, নববর্ষের সাজসজ্জাসহ নানা ধরনের কারুকার্য সম্পন্ন করেছে। থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে ২৯ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকরা আসছেন। ৩০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৭০ ভাগ হোটেলের রুম বুকিং হয়ে গেছে। তবে অন্যান্য বছর থার্টি ফাস্ট নাইটের, অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বরের আগে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বুকিং হয়ে যায়। আউটডোরে অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকলে শতভাগ পর্যটক ভরপুর থাকতো।
আবুল কাশেম সিকদার জানান, তারকামানের হোটেলগুলোতে বরাবরের মতোই ফুল বুকিংয়ের প্রত্যাশা রয়েছে। সবকটি তারকা হোটেল থার্টি ফার্স্ট নাইটের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম টিকিটও বিক্রি শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ইনানীর তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপের এজিএম নাভেদ চৌধুরী বলেন, ১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের হোটেল শতভাগ অগ্রিম বুকিং রয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট ও নতুন বছর বরণে নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। দুইজন তারকা শিল্পী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন।
একইভাবে তারকামানের হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইস, কক্স টুডে, সায়মন বিচ ও লং বিচেও নানা জমকালো আয়োজন থাকবে বলে জানা গেছে। এছাড়া আরও কিছু বড় মানের হোটেলেও নানা অনুষ্ঠান থাকবে।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে, নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। একইভাবে জেলা প্রশাসন বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবারও উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজারেও কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, কক্সবাজারে সাড়ে চারশ’ আবাসিক হোটেলে প্রায় দেড় লাখ লোক রাত্রিযাপন করতে পারেন। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, ১ জানুয়ারি থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল শুরু হলে সেখানে ও হিমছড়ি, ইনানী ও পাটুয়ারটেক জোনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজার শুধু দেশের নয় পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। তাই যেকোনো বিশেষ দিন উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকে। এবারও পর্যটকরা থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারমুখী হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মনিটরিং কমিটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে।
আরও পড়ুন: নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বড়দিন উদযাপনে পাহাড়ে খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
সাজেকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়, খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন
মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে টানা তিন দিনের ছুটিত এবং বড়দিনকে ঘিরে পর্যটকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ধারণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ পর্যটক সাজেকে প্রবেশ করায় কটেজ-রিসোর্টে রুম সংকট দেখা দিয়েছে।
শীতের এই মৌসুমে হাজারো পর্যটককে মেঘের রাজ্যখ্যাত পর্যটন স্থান রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে কটেজ না পেয়ে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) দর্শনার্থীদের রিসোর্টের বারান্দায় ও রাস্তায় রাত কাটাতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাজেক থেকে ফেরার পথে ‘চান্দের গাড়ি’ খাদে পড়ে পর্যটক নিহত
সাজেকে বছর জুড়েই থাকে পর্যটকের চাপ। ছুটির দিনগুলোতে সেই চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সাপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিনের টানা ছুটিতে পর্যটকমুখর হয়ে উঠেছে সাজেক ভ্যালি। তবে পাহাড়ের রূপ উপভোগ করতে গিয়ে এবারের টানা ছুটিতে পর্যটকের চাপে দেখা দিয়েছে আবাসন সংকট। ফলে বাধ্য হয়েই অনেক পর্যটককে রাত কাটাতে হচ্ছে গাড়িতে কিংবা মসজিদে অথবা স্থানীয় ক্লাবে।
ঢাকা থেকে আসা শাহ আলি (৩০), ময়মনসিংহ থেকে স্বপরিবারে আসা সুলতান মিয়া (২৮) ও নেত্রকোনার পর্যটক আশরাফ আলি জানান, ছেলে-মেয়েদের ছুটির কারণে চলে এসেছেন।
এসে দেখেন কোনো হোটেলে রুম খালি নেই। এমন অবস্থায় বিশাল বিপাকে পড়েছেন তারা।
সাজেকের নীল পাহাড়ি রিসোর্ট ও মর্নিং স্টার রিসোর্টের মালিক আলফার্ড লুসাই জানান, বড়দিনকে সামনে রেখে প্রায় একমাস আগে রুম বুক হয়েছে। আজ (শনিবার) অনেক পর্যটক পথে পথে ঘুরেও রিসোর্ট পাচ্ছেন না, এটা সত্যি কষ্টের।
সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, শনিবার প্রায় সাত হাজারের মতো পর্যটক সাজেকে এসেছেন। যদিও সাজেকের ১১২টি কটেজে পর্যটক থাকতে পারেন চার হাজারের মতো।
সাজেকে আসা পর্যটকদের অনেকেরই ছিল না আগাম বুকিং। ফলে রুম না পাওয়ায় অনেক পর্যটক বিকালেই ফেরত আসেন। যারা থেকে গিয়েছেন তাদের অনেকেই বিভিন্ন কটেজের বারান্দায় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে রুম ভাড়া নিয়ে রাত পার করেছেন।
সাজেকের হিল রিসোর্টের ম্যানেজার সুব্রত চাকমা বলেন, বুধবার থেকেই সাজেকে অসংখ্য পর্যটক আসছেন। এই মুহূর্তে কোনো রিসোর্টেই রুম খালি নাই। আমাদের রিসোর্টও দুই মাস আগে থেকেই শতভাগ বুকিং হয়ে আছে রোববার পর্যন্ত।
রুম না পেয়ে পর্যটকদের গাড়িতে রাত কাটানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, যখন খুব বেশি পর্যটকদের চাপ থাকে, তখন যারা আগাম বুকিং না দিয়ে সাজেক আসেন তাদের রুম পেতে বেগ পেতে হয়। তখন তাদের হয়তো স্থানীয়দের বাড়িতে বা গাড়িতে থাকতে হয়।
সাজেক হিল ভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে সাজেকে ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি পর্যটক এসেছেন। সবগুলো কটেজ মিলিয়ে সাজেকে আড়াই হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারেন না, কিন্তু এই কদিন পর্যটক সংখ্যা সব সময় চার হাজারের ওপরে।
বাড়তি পর্যটকদের এই চাপ সামাল দেয়া কষ্টকর। তাই অগ্রিম বুকিং না করে সাজেক না আসার পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: সাজেকে চাঁদের গাড়ি ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পর্যটকের মৃত্যু
সাজেকে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ১, আহত ১