কৃষিখাত
বাংলাদেশের কৃষি উন্নত ও আধুনিক হচ্ছে: বার্লিনে কৃষিমন্ত্রী
বাংলাদেশের কৃষিখাত উন্নত ও আধুনিকতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সনাতন ও খোরপোষের কৃষিকে রূপান্তরের মাধ্যমে লাভজনক, সহনশীল ও টেকসই কৃষিব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে। এটিকে ত্বরান্বিত করতে বিশ্বব্যাংক ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার আরও বেশি অনুদান ও বিনিয়োগ প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকালে জার্মানির বার্লিনে সিটি কিউবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
বিশ্বব্যাংক এবং যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এই সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি’র ‘আন্দোলন-আন্দোলন খেলা’ চলতে থাকবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী বাংলাদেশের কৃষিখাতে অর্জিত অভাবনীয় সাফল্য তুলে ধরে বলেন, দেশের কৃষিতে প্রথম বিপ্লব ঘটে স্বাধীনতার পরপরই। কৃষির উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কৃষি বিপ্লবের সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু। আর দ্বিতীয় বিপ্লব ঘটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬-২০০১ সালে। আর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ১৯৯৯-২০০০ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের কৃষিতে এখন প্রবৃদ্ধি বছরে শতকরা চার ভাগের বেশি। ১৯৭১ সালের তুলনায় এখন চার গুণ বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়। ২০০৮ সালের তুলনায় সাত গুণ বেশি সবজি উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশ আজ বিভিন্ন সবজি, ফলমূল ও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের একটি।
উন্নত ও টেকসই কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা একটি টেকসই কৃষিব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। যার মাধ্যমে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই হবে, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত হবে, কৃষকরা উন্নত জীবন পাবেন। তবে এক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হলো জমি হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
তিনি বলেন, দেশের কৃষির উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক ও ইফাদের সহযোগিতায় পার্টনার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আরও বেশি অনুদান ও বিনিয়োগ প্রয়োজন।
পরে কৃষিমন্ত্রী জার্মানির পার্লামেন্টারি স্টেট সেক্রেটারি ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ক্লদিয়া মুলারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
বৈঠকে ক্লদিয়া মুলার বাংলাদেশের কৃষি খাতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার মো. সাইফুল ইসলাম, বিশ্বব্যাংক ও এফসিডিওর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (বিএমইএল) আয়োজনে চার দিনব্যাপী (১৮-২১ জানুয়ারি) ‘১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার (জিএফএফএ)’ এবং বার্লিন কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক অংশগ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন: ব্রয়লার মুরগির মাংস জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কিছু না: কৃষিমন্ত্রী
সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটছে, বছরে সাশ্রয় হবে ১০ হাজার কোটি টাকা: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিখাতের উৎকর্ষ সাধনে ডাচ অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আহ্বান
বাংলাদেশ কৃষিখাতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও পণ্যের বহুমুখীকরণে ডাচ উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত অ্যানে ভেন লিওভেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার অত্যন্ত বৃহৎ ও সম্ভাবনাময়। স্থানীয় জনগণের চাহিদা মেটাতে বিশেষ করে কৃষিখাতের আধুনিকায়ন খুবই জরুরি। সারা পৃথিবীতে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নেদারল্যান্ডসের অবস্থান দ্বিতীয়। তাই বাংলাদেশ কৃষিখাতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও পণ্যের বহুমুখীকরণে ডাচ উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিতে পারে।
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগের আহবান কৃষিমন্ত্রীর
বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর অফিসে ডিসিসিআই’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে রাষ্ট্রদূত এই আহ্বান করেন। এসময় উভয়েই দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যক্রম বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৩৮ মিলিয়ন এবং ১.০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ মূলত তৈরি পোশাক, হিমায়িত মাছ এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নেদারল্যান্ডসে রপ্তানি করে এবং বাংলাদেশে থেকে আরও বেশি হারে তৈরি পোশাক ও পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত প্রভৃতি পণ্য বেশি হারে আমদানির আহ্বান জানান। এছাড়াও বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নদী ব্যবস্থাপনা ও নদী শাসন, ডিজিটাল শিল্পখাত এবং সমুদ্র অর্থনীতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করে, এখাতগুলোতে বিনিয়াগের জন্য নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
আরও পড়ুন: মেধা বিকাশে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে হুয়াওয়ে
বাংলাদেশের সমুদ্র অর্থনীতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে উল্লেখ করে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, এ খাতের সুফল ভোগ করতে নেদারল্যান্ডস এর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
রিজওয়ান রাহমান আরও বলেন, ডিসিসিআই এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলন’ আয়োজন করবে এবং এ সম্মেলনের বিটুবি সেশনগুলোতে ডাচ বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত অ্যানে ভেন লিওভেন বলেন, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বেশ সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে, তবে সেটাকে আরও উন্নীত করতে হলে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যকার যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং বাংলাদেশ সরকার গৃহীত‘ডেল্টা প্ল্যান’-এর কার্যকর বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে বৃহৎ বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: ফিনল্যান্ডকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এছাড়াও বিশেষ করে বাংলাদেশে নদীপথের টেকসই উন্নয়ন, নদীশাসন, নদীখনন ও সর্বোপরি জলজ অবকাঠামো নির্মাণে ডাচ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ এবং সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কুড়িগ্রামে কৃষকের আশার আলো কমিউনিটি, ভাসমান বীজতলা
তিন দফা বন্যায় কুড়িগ্রামে আমন বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর জমি তৈরি, বীজ সংগ্রহ ও বপনে বাড়তি অর্থ ব্যয় নিয়ে যখন কৃষক দিশেহারা তখন তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে সরকারি উদ্যোগে ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি বীজতলা, ভাসমান বীজতলা ও বাড়ির ভেতর প্লেট পদ্ধতিতে বীজতলা। সরকারি প্রণোদনায় এসব বীজ বিনামূল্যে পেয়ে নতুন উদ্যোমে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভারতের সহযোগিতা চাইলেন কৃষিমন্ত্রী
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।