কাজ
বঙ্গভবনের ইতিহাস সমুন্নত রাখতে জনগণের জন্য কাজ করুন: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তাদের দায়িত্বের প্রতিটি স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গভবনের সুনাম বাড়ানোর কথা আমাদের ভাবতে হবে কারণ এর দীর্ঘ ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। আপনারা সবাই বঙ্গভবনের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। আপনারাও বঙ্গভবনের প্রতিনিধি।’
বুধবার সকালে বঙ্গভবনের দরবার হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি এ নির্দেশনা দেন।
রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম তিনি বঙ্গভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে বিডিইউ উপাচার্যের অভিনন্দন
তারা জনগণের সেবক, তাদের প্রভু নয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে জনগণ তাদের প্রত্যাশিত সেবা সহজে পায়।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং আপনার (বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের) প্রতিটি কর্মকাণ্ড সেবামুখী হওয়া উচিত যাতে জনগণ আপনার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারে।
বঙ্গভবনের ইতিহাস তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঙ্গভবনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সততা ও ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক ও আলোকিত জনপ্রশাসনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা সরকারের আইন, বিধি-বিধান দ্বারা পরিচালিত হবেন।
তিনি আরও বলেন, মনে রাখবেন সব আইন জনগণের কল্যাণের জন্য প্রণীত হয়।
বঙ্গভবনকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে কর্মরত প্রতিটি কর্মীর কঠোর শ্রম, মেধা ও আন্তরিকতা মিশে আছে।
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গভবনের ইতিহাস শুধু গৌরব ও মর্যাদারই নয়, কিছু জঘন্য অপরাধেরও সাক্ষী। খুনি চক্রের সদস্যরা এই বঙ্গভবনে বসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র করেছিল।’
তারা জনগণের সেবক, তাদের প্রভু নয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে জনগণ তাদের প্রত্যাশিত সেবা সহজে পায়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলার মাটি ও মানুষের হৃদয় থেকে তার আদর্শকে মুছে দিতে চেয়েছিল কিন্তু তারা তা করতে পারেনি।
সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজ শুধু বাংলাদেশিদের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ভূমিকা রাখতে বলেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যোগ দিয়েছে।
উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বানও জানান রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীনসহ বঙ্গভবনের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতকে আরও বড় ভূমিকা রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের
সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতির গভীর শ্রদ্ধা
দেশের বিষয়ে বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেওয়া ‘দেশবিরোধী’ কাজ: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক নেতারা ক্ষণে ক্ষণে যে দেশের বিষয় নিয়ে বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেয়; বিদেশিদের হাতে পায়ে ধরে, সেটি দেশবিরোধী কাজ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটি আমাদেরকেই সমাধান করতে হবে। অতীতেও আমরাই সমাধান করেছি। বিএনপির কোনো বক্তব্য থাকলে তারা নির্বাচন কমিশনে বলতে পারে। তাদের যদি কোনো বক্তব্য থাকে যে তারা সরকারের সঙ্গে কথা বলতে চায় সেটাও তারা বলুক। কিন্তু বিদেশিদের কাছে গিয়ে আমাদের বিষয়াদি নিয়ে ধর্ণা দেওয়া দেশবিরোধী কাজ।’
আরও পড়ুন: রমজানের পবিত্রতাও নষ্ট করতে চায় বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক বিষয়ে বিদেশিদের মধ্যস্থতা নিয়ে বিএনপির প্রস্তাবের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ আমাদের। এই দেশের মালিক দেশের জনগণ। এ দেশের সরকার নির্বাচিত করার, সরকারকে বিদায় দেওয়ার দায়িত্ব কিংবা ক্ষমতা বা এখতিয়ার শুধু এ দেশের জনগণের।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যদি এটা বলে থাকে, তাহলে এটা রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য।’
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দুই পূর্ণ মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় একজন সফল রাষ্ট্রপতির বিদায় এবং নতুন রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ সম্ভব হয়েছে।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সোমবার বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। ২১তম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সফলভাবে তার দুটি পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতি ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর মর্যাদার সঙ্গে অবসরে গেলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে দেশে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
ঈদে দেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রা ও বিশ্ব মুসলিমের কল্যাণ কামনা তথ্যমন্ত্রীর
নমনীয় কাজের সময়সূচি সবার জন্য লাভজনক: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
নমনীয় কর্মঘণ্টা যখন কর্মচারী এবং পরিবারকে আরও ভাল কর্ম-জীবনের ভারসাম্য অর্জনে সহায়তা করে, তখন তা অর্থনীতি এবং ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
শুক্রবার জাতিসংঘের শ্রম সংস্থার একটি নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার(আইএলও) ইনওয়ার্ক-এর প্রধান ফিলিপ মার্কাডেন্ট ‘পৃথিবীজুড়ে কাজের সময় এবং কর্ম-জীবনের ভারসাম্য’-বিষয়ে বলেছেন, কর্মঘণ্টা এবং অবস্থার আশেপাশের সমস্যাগুলো আজ বিশ্বের বেশিরভাগ শ্রমবাজার সংস্কার এবং বিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।’
‘কর্ম ঘন্টার সংখ্যা, সেগুলো যেভাবে সংগঠিত হয় এবং বিশ্রামের সময়কালের প্রাপ্যতা শুধুমাত্র কাজের মানকেই নয়, কর্মক্ষেত্রের বাইরের জীবনকেও উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
কর্ম-জীবনের ভারসাম্যের ওপর প্রথম পরিচালিত এই গবেষণাটি ব্যবসা এবং তাদের কর্মীদের কর্মক্ষমতার ওপর কাজের সময় এবং সময়সূচির প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে।
কোভিডের আগে এবং চলাকালীন সময়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। যে সমস্ত কর্মচারীদের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি নিয়মিতভাবে প্রতি সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি কাজ করছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী কর্মশক্তির এক পঞ্চমাংশ প্রতি সপ্তাহে খণ্ডকালীন ভিত্তিক সময়ে ৩৫ ঘন্টারও কম কাজ করছে।
প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক জন মেসেঞ্জার বলেছেন, ‘তথাকথিত 'মহান পদত্যাগ' ঘটনাটি মহামারি-পরবর্তী বিশ্বে সামাজিক এবং শ্রমবাজারের সমস্যাগুলোর অগ্রভাগে কর্ম-জীবনের ভারসাম্য বজায় রেখেছে।’
প্রতিবেদনটি বিভিন্ন কাজের সময়সূচি এবং কাজের-জীবনের ভারসাম্যের ওপর তাদের প্রভাব বিশ্লেষণ করে, যার মধ্যে স্থানান্তর, কলে থাকার ব্যবস্থা, সংকুচিত ঘন্টা এবং ঘন্টা-গড় সূচিসমূহ রয়েছে।
মেসেঞ্জার বলেছেন যে উদ্ভাবনী কাজের সময় ব্যবস্থা, যেমন কোভিড সংকটের সময় প্রবর্তিত, বৃহত্তর উৎপাদনশীলতা এবং উন্নত কর্ম-জীবনের ভারসাম্যসহ দুর্দান্ত সুবিধা আনতে পারে।
আরও পড়ুন: শ্রমজীবীদের অধিকার রক্ষায় আইএলও’র সহযোগিতা কামনা আইনমন্ত্রীর
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিবেদনটি দেখায় যে আমরা যদি কোভিড সংকটের কিছু শিক্ষা প্রয়োগ করি এবং কাজের সময়গুলো কীভাবে গঠন করা হয়, সেইসঙ্গে তাদের সামগ্রিক দৈর্ঘ্যের দিকে খুব যত্ন সহকারে দেখি, আমরা উভয় ব্যবসার উন্নতি এবং একটি সন্তোষজনক কর্মক্ষমতা এবং কর্মজীবনের ভারসাম্য (সকলের জন্য) তৈরি করতে পারি।’
কোভিড সঙ্কটের ব্যবস্থাগুলো শক্তিশালী নতুন প্রমাণও দিয়েছে। এতে দেখা যায় যে শ্রমিকরা কীভাবে, কোথায় এবং কখন কাজ করে সে সম্পর্কে আরও নমনীয়তা দেয়া এবং তাদের উল্লেখযোগ্য উৎপাদনশীলতা লাভের সঙ্গে ব্যবসা উভয়ের জন্যই ইতিবাচক হতে পারে।’
বিপরীতভাবে, নমনীয়তা সীমাবদ্ধ করার ফলে উচ্চ কর্মীদের চলে যাওয়াসহ যথেষ্ট খরচ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রচুর পরিমাণে প্রমাণ রয়েছে যে কর্ম-জীবনের ভারসাম্য নীতিগুলো এন্টারপ্রাইজগুলোতে উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করে, এই যুক্তিকে সমর্থন করে যে এই ধরনের নীতিগুলো নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারী উভয়ের জন্যই একটি 'লাভজনক’।
এতে বলা হয়েছে, আইন ও প্রবিধান যা কাজের ঘন্টা এবং বিধিবদ্ধ বিশ্রামের সময়সীমার একটি উচ্চ সীমা নির্ধারণ করে। সমাজের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য এবং মঙ্গলে অবদান রাখে।
আরও পড়ুন: আইএলওর কোভিড-১৯ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ার নির্বাচিত বাংলাদেশ
কাজের সময় অনুসারে, দেশগুলোকে মহামারি যুগের উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করা উচিত। যেমন অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বল্প-সময়ের কাজের স্কিমগুলো, যা কেবল চাকরিই বাঁচায়নি বরং ক্রয় ক্ষমতাও বাড়িয়েছে এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রভাবগুলোকে উপশম করতে সহায়তা করেছে।
এটি অনেক দেশে কাজের ঘন্টার সংখ্যা কমাতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর কর্ম-জীবনের ভারসাম্যকে উন্নীত করার জন্য একটি জননীতি পরিবর্তনের পক্ষেও সমর্থন করে।
এছাড়াও, প্রতিবেদনটি কর্মসংস্থান বজায় রাখতে এবং কর্মীদের আরও এজেন্সি দেয়ার জন্য টেলিওয়ার্কিংকে উৎসাহিত করে।
আরও পড়ুন: আইএলও’র পরিচালনা পরিষদের উপ সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
বসবাস উপোযোগী দৃষ্টিনন্দন ঢাকা গড়ে তুলতে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সুন্দর ও নিরাপদ জীবন যাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সবার জন্য বসবাস উপোযোগী দৃষ্টিনন্দন ঢাকা গড়ে তুলতে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সকল শ্রেণির মানুষ ঢাকায় বসবাস করে। তাই সবার বিষয়কে বিবেচনায় রেখেই ঢাকাকে গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এবং ইউএন হ্যাবিট্যাট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, যেকোন শহরেই সকল শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন রয়েছে। একইভাবে রাজধানী ঢাকায়ও সকল শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন রয়েছে। তাই সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সুন্দর ও নিরাপদ জীবন যাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। রাজধানীতে শ্রেণিভেদে মানুষের আয়ের তারতম্য রয়েছে। পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণে মানুষের আয়ের বিষয়কে বিবেচনায় রাখতে হবে। এজন্য জোনভিত্তিক পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের দাম নির্ধারণ করা যৌক্তিক।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
তিনি জানান, গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ অভিজাত এলাকায় বসবাসরত মানুষ যে নাগরিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন যাত্রাবাড়ী অথবা পুরান ঢাকার মানুষ তা পায় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমতাভিত্তিক উন্নয়নের কথা বলেছেন। সমাজ ও মানুষের মধ্যে বৈষম্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেননি বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, নগরে মানুষের অভিবাসন কমাতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে হবে। এজন্য বর্তমান সরকার প্রতিটি গ্রামকে শহরে পরিণত করার নির্বাচনী অঙ্গীকার করেছে এবং সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মানুষ গ্রামেই উন্নত সকল সুযোগ-সুবিধা পেলে শহরমুখী হবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কাজ করে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস অ্যাওয়ার্ড-২০২২ অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
ঢাকা শহরে উন্মুক্ত স্থান ও গাছপালা ধ্বংস করে একের পর এক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নগরে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা করা হচ্ছে।
মেয়র বলেন, এগুলো কেন করা হচ্ছে, কার পরামর্শে হচ্ছে? সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এখন সময় এসেছে নগরে ভবন নির্মাণ করতে গেলে অবশ্যই সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিতে হবে। সবুজ এলাকা ও উন্মুক্ত স্থান ধ্বংস করে কিছু করতে দেয়া হবে না এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম। অন্যান্যের মধ্যে সেন্টার অব আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জাতিসংঘ উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তাসহ বিশিষ্টজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পানির অপচয় রোধে রিসাইক্লিং করার উদ্যোগ নিতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
রাজধানীর প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
মশা মারার কাজ স্বাস্থ্যখাতের নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনও হাত থাকেনা। স্বাস্থ্যখাত চিকিৎসা দিতে পারে, কিন্তু মশা মারার কাজ স্বাস্থ্যখাতের নয়।
বুধবার সকালে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের অডিটোরিয়াম হলে জাতির পিতার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মাল্টি পারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী ।
মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুততম সময়ে ঢাকার ডিএনসিসি হাসপাতালের এক হাজার বেড থেকে ৫০০ এবং বিএসএমএমইউ এর নতুন নির্মিত ফিল্ড হাসপাতালের ৪০০ বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও লাগলে আরও বৃদ্ধি করা হবে। তবে মশা কমাতে হবে, এবং একই সঙ্গে দেশের মানুষকে মশা যাতে না কামড়াতে পারে সে বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। বাড়িতে রাতে ঘুমানোর আগে মশাড়ি লাগিয়ে ঘুমাতে হবে এবং বাসা বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে পারবে কিন্তু মশা মারতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত বর্তমান সরকারের কোনও উন্নয়নই চোখে দেখতে পায়না। তারা শুধু ক্ষমতায় যাবার জন্যই রাজনীতি করে। তারা দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভেবে রাজনীতি করে না। ক্ষমতার লোভে তারা পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুরিয়ে মারতেও দ্বিধা করেনা। তারা সামান্য অজুহাতেই মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। সিলেটে বন্যার সময় তারা বন্যার্ত মানুষের জন্য কিচ্ছু করেনি। তাদের সময় বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে আসতো, বিদ্যুৎ থাকতোই না। তারা অফিসে, ঘরে এবং কল কারখানায় কোথাও বিদ্যুৎ দিতে পারে নাই। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য কয়েক ঘন্টা লোড শেডিং নিয়েই বিরাট রাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। ইউকে'তে এখন মানুষ খাবার বাঁচাতে দুই বেলা খাচ্ছে। কই আমাদের দেশে তো এরকম হয়নি। দেশের মানুষ যাতে অর্থনৈতিক চাপে না পড়ে এজন্য বিদ্যুতের কিছু লোড শেডিং হচ্ছে। এগুলো তো সাময়িক সমস্যা। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের মতো দেশ এখন কোনও অকার্যকর, ব্যর্থ ও দুর্নীতিতে পরপর চার বার চ্যাম্পিয়ন নয়। করোনার এত বড় ধাক্কার পরও বাংলাদেশের মানুষ অভাবে না খেয়ে নেই। দেশের মানুষকে খাবার বাঁচাতে দু’বেলা খেতে হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভালো থাকা নিয়ে ভাবেন, আর বিএনপি জামায়াত দেশকে লুটেপুটে খাবার জন্য ক্ষমতায় যেতে চায়। এগুলো দেশের মানুষ বোঝে। আর বোঝে বলেই দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সঙ্গেই আছে। দেশের মানুষ আবারও শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় এনে সেটাই প্রমাণ করে দেবে।
শেখ রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের ১৮ জন সদস্যের নির্মম হত্যাকাণ্ডে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার যোগসূত্র উল্লেখ করতে গিয়ে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট ভবনে অবস্থিত বহুতল মাল্টি পারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর মাহমুদ হাসান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সিরাজুল ইসলাম শিশির, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান, এবং গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. গোলাম কিবরিয়া সহ অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বৃন্দ।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতে এখন সুবাতাস বইছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ফি নির্ধারণ করবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মাজহারুল আনোয়ার তার কাজের মাঝে যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আকস্মিকভাবে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও মাজহারুল আনোয়ার তার কাজের মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন। তিনি যদি আরও বেঁচে থাকতেন, আমাদের চলচ্চিত্র, গান তথা সংস্কৃতি অঙ্গনকে আরও সমৃদ্ধ করে যেতে পারতেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন-বিএফডিসিতে সদ্যপ্রয়াত বরেণ্য গীতিকার-চলচ্চিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও প্রার্থনা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করুন: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, কালজয়ী গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের 'জয় বাংলা, বাংলার জয়' এবং এমন আরও গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ও মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা দিয়েছে। তার সৃষ্টিকর্ম চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে সংরক্ষিত থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কিংবদন্তী গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রায় ২০ হাজার গান রচনা করেছেন।
বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের মধ্যে তার তিনটি গান রয়েছে। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক, ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা নজিরবিহীন।
এছাড়া তার মৃত্যু আমাদের পুরো জাতির জন্য, সংস্কৃতির জন্য অপুরণীয় ক্ষতি। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।
আরও পড়ুন: ২ মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠিত হবে:তথ্যমন্ত্রী
মাজহারুল আনোয়ারের কীর্তি সংরক্ষণের বিষয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন যে, এফডিসির নতুন ভবন হচ্ছে। দেশের সেরা সুরকার, গীতিকার, চলচ্চিত্রকারদের কর্মগুলো সেখানে সংরক্ষিত থাকবে। এজন্য একটি জায়গা নির্ধারণের বিষয়েও আমরা ইতোমধ্যেই আলোচনা করেছি।
বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, শাহ আলম কিরণ, প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম খসরু, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা ও নেতাদের মধ্যে অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক রোজিনা, দিলারা, অরুণা বিশ্বাস, মীযান রহমান প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে আ.লীগ প্রতিহত করবে: তথ্যমন্ত্রী
‘বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় এবার ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে’
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, সুনামগঞ্জে এ বছর ২০১৭ সালের চেয়েও বেশি পানি হয়েছে। তবে বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পূর্ব) মাহবুবর রহমান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) এস এম শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কর্মচারীর বাঁধ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শত শত শ্রমিকও প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বাঁধের গোড়ায় মাটি ভর্তি বস্তাও ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ রক্ষায়ও কাজ করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, মার্চ মাসের ৩০ তারিখ প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। নদ-নদী ও হাওরে ব্যাপক পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পায়। উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওড়ে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঢলের পানি হাওড়ের পাড় উপচে তাহেরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওড়ে ঢুকছে। সর্বশেষ রবিবার রাতে দিরাই উপজেলায় হুরামন্দিরা হাওরে পানি ঢোকে। এখানে জমি আছে এক হাজার হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ২০০ হেক্টরের।
আরও পড়ুন: ভোলাসহ উপকূল রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে সমীক্ষা চলছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। আগামী বোরো মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার দেয়া হবে। এছাড়া,সারা বছর ধরে ভিজিএফসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে, যাতে খাদ্যের জন্য কেউ কষ্ট না করে। কৃষকবান্ধব সরকার হাওর অঞ্চলে ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার কৃষকদের দিচ্ছে যাতে করে উৎপাদন খরচ কম লাগে।কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ১৭টি ছোট–বড় হাওর ও বিলের পাঁচ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। প্রথম দফা পাহাড়ি ঢলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার দ্বিতীয় দফায় ঢল নামতে শুরু করেছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় ধান কাটা হয়েছে ৮৪ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমির। যা মোট ধানের ২৪ ভাগ। এবার হাওর ধান চাষাবাদ হয়েছে দুই লাখ ২২ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টন। আমরা কৃষকদেরকে বলছি, ৮০ ভাগ ধান পাকলে কাটার জন্য।উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ে ৭২৭টি প্রকল্পে ১শ২২ কোটি টাকায় ৫শ৩৬ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজ হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সময় বাড়িয়েও বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। এছাড়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দুই-তিন দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় ১৩৯ পোল্ডার তৈরি করা হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
দেশে ১০০০ খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
কপ-২৭ সম্মেলনের আগে প্রতিশ্রুতিগুলো কাজে পরিণত করতে হবে: রবার্ট ডিকসন
জলবায়ু প্রশ্নে বাংলাদেশকে একটি ‘আস্থাভাজন ও গুরুত্বপূর্ণ’ কণ্ঠস্বর উল্লেখ করে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেছেন, আমাদের হাতে এখন ‘বিশাল’ কাজ, কপ-২৭ সম্মেলনের আগ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে হবে। যাতে জলবায়ু বিপর্যয় রোধে বিভিন্ন দেশের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলোকে ‘কাজে পরিণত’ করা যায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা কপ-২৬-এ অংশগ্রহণকারী জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে সত্যিকারে আশা জন্মাতে পেরেছি। এখন মাত্র আট মাসের মধ্যে মিশরে অনুষ্ঠিতব্য কপ-২৭-এর আগে যে সমস্ত অগ্রাধিকারমূলক জলবায়ু পদক্ষেপ নেয়া দরকার তার ওপর ফোকাস করতে হবে।’
চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মিশরের শার্ম এল-শেখে ইউএনএফসিসিসি-এর কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (কপ-২৭) এর ২৭তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত ‘বিল্ডিং অন দ্যা আউটকামস অব কপ-২৬: প্রায়োরিটি ক্লাইমেট অ্যাকশনস এহেড অব কপ-২৭’ শীর্ষক ওয়েবিনারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার ডিকসন এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য অংশীদারিত্ব: বিশেষজ্ঞদের অগ্রাধিকারমূলক জলবায়ু পদক্ষেপ বিষয়ক আলোচনা শুক্রবার
পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণের কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুতে কাজ করছে সরকার
পরিবেশবান্ধব আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন এবং কারখানা নির্মাণের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুতে কাজ করছে সরকার। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং ইইউ-স্যুইচএশিয়া যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করে।প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মো. মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কম কার্বন নিঃসরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এজন্য দেশের সকল স্থান ও জনগণের প্রয়োজন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের বিষয়গুলো বিবেচনা করে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এবিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সকলকে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সাফারি পার্কের প্রাণী মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, ভবনের আশেপাশে খোলা জায়গা ও সূর্যের আলো থাকতে হবে। ইট, রড এবং সিমেন্টসহ সকল নির্মাণসামগ্রী পরিবেশ বান্ধব হতে হবে। পরিবেশ বান্ধব ভবন ব্যয়সাশ্রয়ী ও টেকসই হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(উন্নয়ন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন ) মো. মিজানুল হক চৌধুরী। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের পরিবেশ ও এনার্জি বিষয়ের অধ্যাপক ডক্টর মো. আশিকুর রহমান জোয়ার্দার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ধরিত্রী কুমার সরকার প্রমুখ।
এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: সরকার দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে: পরিবেশমন্ত্রী
যেকোনো মূল্যেই হাতি হত্যা বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মংলা-খুলনা রেললাইন প্রকল্প: ১০ বছরেও কাজ শেষ হয়নি, ব্যয় বেড়েছে ১২১ শতাংশ
মংলা বন্দর থেকে সড়কপথে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুলনা পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয় ২০১০ সালে। শুরুতে তিন বছরের মধ্যে ওই প্রকল্পের সকল কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত তিন দফা সময় বাড়িয়ে ১০ বছরেও শেষ হয়নি চলমান রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি।