রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৭ জন মারা গেছে: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
নিরাপদ সড়কের জন্য প্রচারণা চালানো সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন (আরএসএফ)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে ৪৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪৮৭ জন নিহত এবং ৭১২ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার প্রকাশিত এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারাদেশে ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৬ জন নিহত হয়েছে; যা মোট মৃত্যুর ৪০ দশমিক ২৪ শতাংশ।
নিহতদের মধ্যে ৫৪ জন নারী এবং ৬৮ জন শিশু।
৯টি নৌপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন এবং একই সময়ে ১৭টি রেল দুর্ঘটনায় অন্তত ১৪ জন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আরএসএফ ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৪০৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জনের প্রাণহানি: আরএসএফ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১০৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট মৃত্যুর ২২ দশমিক ১৭ শতাংশ। প্রায় ৭২ জন চালক ও তাদের সহকারী নিহত হয়েছেন; যা মোট মৃত্যুর ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
আরএসএফ-এর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ অনুসারে, জাতীয় সড়কে সর্বোচ্চ ১৬৮টি (৩৮ দশমিক ২৬ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে, ১৭৭টি (৪০ দশমিক ৩১ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৬১টি (১৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ২৯টি (৬ দশমিক ৬০ শতাংশ) শহরের সড়কে।
অন্যদিকে, মোট দুর্ঘটনার মধ্যে সর্বোচ্চ ২০১টি (৪৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৬৮টি (১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ) সংঘর্ষের কারণে, ১১২টি দুর্ঘটনা (২৫ দশমিক ৫১ শতাংশ) ঘটেছে পথচারীদের চাপা/ ধাক্কা দিয়ে, ৪৭টি দুর্ঘটনা (১০ দশমিক ৭০ শতাংশ) গাড়ির পিছনের দিকে আঘাত করায় এবং ১১টি (২ দশমিক ৫০ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ঘটেছে, যার পরিমাণ ২৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ; রাজশাহী বিভাগে ১৯ দশমিক ৭১ শতাংশ মৃত্যু; চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং খুলনা বিভাগে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে সড়কে ৩৭৬ জনের প্রাণহানি: আরএসএফ
এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৪৩: আরএসএফ
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এ বছর ২০৯৭ জনের প্রাণহানি
বাংলাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১৯.২৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দুই হাজার তিনটি দুর্ঘটনায় দুই হাজার ৯৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১
রবিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি নতুন প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
গত বছর প্রথম ১০ মাসে এক হাজার ৬৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক হাজার ৭৫৮ জন নিহত হয়েছে।
এটি বলেছে যে এই বছরের তুলনায় এই সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনার সংখ্যা ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৭৬৪ জন ছাত্র, যা মোট মৃত্যুর ৩৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং চার দশমিক ৩৮ শতাংশ মোটরসাইকেলের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত পথচারী।
আরও পড়ুন: বরগুনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ কিশোরের মৃত্যু
৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সড়ক নিরাপত্তা ফাউন্ডেশন এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
মোট দুর্ঘটনার মধ্যে ৩৭৪টি অন্য যানবাহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ৬২৯টি ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। ৯৫৮টি দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল অন্য যানবাহনের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে এবং ৪২টি অন্যান্যভাবে ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই হাজার তিনটি দুর্ঘটনার মধ্যে ৮৩৭টির ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল চালকরা ঘটনার জন্য দায়ী ছিল।
গ্রুপের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, আঞ্চলিক সড়কে ৮৭৯টি, জাতীয় সড়কে ৬৯৫টি এবং গ্রামের সড়কে ১০২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরএসএফ বিশ্লেষণ অনুসারে, দুর্ঘটনার ২৬ দশমিক ৮০ সকালে এবং ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ রাতে ঘটেছে।
আরও পড়ুন: সাভারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬ বছরের কিশোর নিহত
কারণ
আরএসএফ যুবক, কিশোরদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো, দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের সহজলভ্যতা, শিথিল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, নজরদারিতে অসঙ্গতি, সব যানের বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক, মোটরসাইকেল চালকদের ট্রাফিক নিয়ম না মানার প্রবণতা, যুবকদের অতিরিক্তগতিতে গাড়ি চালানোর উৎসাহমূলক ভাষা বিজ্ঞাপনে ব্যবহারা করা। সড়ক ও মহাসড়কে ডিভাইডারের অভাব এবং বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর সংস্কৃতি তৈরিতে রাজনৈতিক মদদই দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
আরও পড়ুন: ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
সুপারিশ
গ্রুপটি তাদের প্রতিবেদনে যুবকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে এবং দ্রুতগতির যানবাহনের বিক্রি নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে।
এতে ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ, মোটরসাইকেল ও কম গতির যানবাহনের জন্য মহাসড়কে সার্ভিস রোড নির্মাণ, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার স্থাপন, গতি নিরীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আরএসএফ সুপারিশ করে যে রাস্তাগুলোতে এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু বন্ধ করতে গণপরিবহনের উন্নতি এবং আরও সহজলভ্য করে মোটরসাইকেল চালানোকে নিরুৎসাহিত করা উচিত।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চবির শিক্ষক নিহত
আগস্টে ৪৫৮ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫১৯
গেল আগস্ট মাসে দেশে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৯ জন নিহত এবং ৯৬১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এ সময়ে ১১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত এবং ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। ২৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছে।
নিহতের মধ্যে নারী ৬৪, শিশু ৬৯। ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৭২ জন, যা মোট নিহতের ৩৩.১৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৯.৯৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯৪ জন, অর্থাৎ ১৮.১১ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ১৭২ জন চালক ও আরোহী, ২১ জন বাস যাত্রী, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ, ট্রলি, লরি আরোহী ৪৫ জন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, জিপ যাত্রী ২৯ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক, সিএনজি, অটোরিকশা, অটোভ্যান, লেগুনা, হিউম্যান হলার) ১০১ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, টমটম, ইটভাঙ্গার মেশিন গাড়ি) ২৩ জন এবং বাইসাইকেল, প্যাডেল রিকশা, প্যাডেল ভ্যান আরোহী ১৯ জন রয়েছে।
পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলশিক্ষকসহ নিহত ২
এতে বলা হয়, আগস্ট মাসে মোট দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮৭টি (৪০ দশমিক ৮২ শতাংশ ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৫২টি (৩৩ দশমিক ১৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৯টি (১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৩১টি (৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৯টি অর্থাৎ এক দশমিক ৯৬ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১০ দশমিক চার শতাংশ, বরিশাল বিভাগে চার দশমিক ৮০ শতাংশ, সিলেট বিভাগে চার দশমিক ১৪ শতাংশ, রংপুর বিভাগে আট দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে সাত দশমিক ৪২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরএসএফ সড়ক দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান প্রবণতার পিছনে বেশ কয়েকটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
আরএসএফ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমস্যার সমাধানের জন্য এবং সেগুলো ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
পড়ুন: বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশ নিহত
জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭৩৯: প্রতিবেদন
গেল জুলাই মাসে দেশের সড়ক ও মহাসড়কে ৬৩২টি দুর্ঘটনায় ৭৩৯ জন নিহত এবং ২০৪২ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
একই সময় ১৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত এবং সাত জন নিখোঁজ রয়েছে। ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় (রেলক্রসিং দুর্ঘটনাসহ) ৪১ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার নিহত ৪৩৯: প্রতিবেদন
এতে বলা হয়, জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ১৩৭ জন চালক ও সহকারী, ২৫১ জন মোটরসাইকেল আরোহী, নারী ১০৫, শিশু ১০৯ এবং ১১৮ জন পথচারী রয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, জুলাই মাসে মোট দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৫২টি (৩৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৯৯টি (৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ১০৯টি (১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৬৪টি (১০ দশমিক ১২ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৮টি ১ দশমিক ২৬ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬৩১ দশমিক ৬১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা পাঁচ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা চার দশমিক ৯০ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ছয় শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ছয় দশমিক ৯৬ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে বরে দাবি করছেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
হবিগঞ্জে ট্রাক-বাস-মাইক্রোবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, নিহত ৪
সিলেটের মাধবপুরে সোমবার ঢাকাগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে সিলেটগামী একটি বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনায় আরও সাতজন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- দিলনাহার (৫৫), হেলেনা (২২) ও মুরাদ মিয়া (২২)। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত আরেকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আহতরা হলেন-মহিউদ্দিন (৩৫), ইমরুল (৩৫), আকাশ (২৫), আতিকুর (৩৫), আনোয়ার (২৫), ফয়জুল (৩০) ও কামরুল (২৬)।
তাদের সবার বাড়ি নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামে।
খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে জানান, শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ।
ওসি জানান, হাসপাতালে নেয়ার পথে দিলনাহার ও হেলেনার মৃত্যু হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুরাদের মৃত্যু হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সারাদেশে দুই হাজার ১৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯১ নারী ও ৩৮১ শিশুসহ অন্তত দুই হাজার ৩২৯ জন নিহত এবং চার হাজার ৩৬১ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত ১৫
সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া সেই শিশুর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবিতে রিট
জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২৪ জনের মৃত্যু
জুন মাসে সারাদেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৩ শিশুসহ ৫২৪ জন নিহত ও ৮২১ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৪ জন মারা গেছে, যা মোট মৃত্যুর ৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এছাড়া দুর্ঘটনায় ১০৭ জন পথচারী, ৮৬ জন চালক ও তাদের সহকারী নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৪ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এ সময়ে ৮টি নৌদুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত হয়েছে এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৯টি (৩৪.০৪ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৭৪টি (৩৭.২৫ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৭২টি (১৫.৪১ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৫৬টি (১২ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬টি ১.২৮ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে ২৫.০৫ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৫.৪১ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৬.৪৮ শতাংশ, খুলনায় ১৪.৩৪ শতাংশ, বরিশালে ৯ শতাংশ, সিলেটে ২.৭৮ শতাংশ, রংপুরে ১০.৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬.৪২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে, ১১৭টি দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত।
আরএসএফ সড়ক দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান প্রবণতার পিছনে বেশ কয়েকটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
আরএসএফ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমস্যার সমাধানের জন্য এবং সেগুলো ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮ মাসে ১৬৭৪ শিশুর মৃত্যু
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ৬৭৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশন (আরএসএফ) তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে ৩৩১ শিশু, যা মোট নিহতের ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। রাস্তা পারাপার ও রাস্তা ধরে হাঁটার সময় যানবাহনের চাপায় বা ধাক্কায় নিহত হয়েছে ১০২৭ শিশু, যা মোট নিহতের ৬১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় অটোরিকশার চাপায় শিশুর মৃত্যু
ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টর, ড্রাম ট্রাক ইত্যাদি পণ্যবাহী যানবাহনের চালক ও সহকারী হিসেবে নিহত হয়েছে ৪৮ শিশু, অর্থাৎ দুই দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ২৬৮ শিশু, অর্থাৎ ১৬ শতাংশ।
জরিপে দেখা গেছে, বাস যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে ৭২ শিশু (২১.৭৫ শতাংশ) প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী হিসেবে ২৫ শিশু (৭.৫৫ শতাংশ), থ্রি-হুইলার (সিএনজি, অটোরিকশা, ইজিবাইক ইত্যাদি) যাত্রী হিসেবে ১৮৩ শিশু (৫৫.২৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের (নসিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, টমটম ইত্যাদি) যাত্রী হিসেবে ৫১ শিশু (১৫.৪০ শতাংশ) নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিদ্যুৎ অফিসের দেয়াল ধসে এক শিশুর মৃত্যু, আহত ২
মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৯ জনের প্রাণহানি
সারাদেশে মার্চে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৯ জন নিহত এবং ৬৪৭ জন আহত হয়েছেন যা ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
এছাড়া এ সময়ে পাঁচটি নৌ-দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৯ জন নিহত এবং ১১টি ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন।
নিরাপদ সড়কের জন্য প্রচারণা চালানো সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন (আরএসএফ) সোমবার চলতি বছরে বাংলাদেশের সড়কে দুর্ঘটনা নিয়ে নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: রামপুরা ও গুলশানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দুর্ঘটনার খবরের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চে প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নিহত হয়েছেন যেখানে ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ১৬ দশমিক ৭৫।
এছাড়া গত মাসে ২২১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয় যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আরএসএফের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৬২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন যা মোট মৃত্যুর ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত
প্রায় ৭৩ জন চালক ও তাদের সহকারী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান যা মোট মৃত্যুর ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
আরএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় মহাসড়কে ১৬৭টি, আঞ্চলিক মহাসড়কে ১৭৯টি, গ্রামীণ সড়কে ৬৮টি, শহরের রাস্তায় ৩৯টি ও অন্যান্য স্থানে পাঁচটি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে।
২০২১ সালে দেশে ৫৩৭১ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬২৮৪
২০২১ সালে সারা দেশে মোট পাঁচ হাজার ৩৭১ টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এসময় নিহত হয়েছেন ছয় হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন সাত হাজার ৪৬৮ জন। দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে ৯২৭ নারী,৭৩৪ শিশু।
এর মধ্যে দুই হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুই হাজার ২১৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫২৩ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৯৮ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এই সময়ে ৭৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৫৯ জন নিহত, ১৯২ জন আহত এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছে। ঝালকাঠির সুগন্ধ্যা নদীতে একটি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৫১ জন নিহত, ২৩ জন চিকিৎসাধীন এবং অজ্ঞাত সংখ্যক নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়ার ঈদে ঘরমুখো যাত্রায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি ঘাটে তাড়াহুড়া করে নামার সময় ছয়জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছে। ১২৩ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত এবং ৩৯ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পিকনিক থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
যানবাহনভিত্তিক দুর্ঘটনায় নিহতের চিত্র:
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী দুই হাজার ২১৪ জন (৩৫ দশমিক ২৩শতাংশ), বাস যাত্রী ৩৮৯ জন (৬ দশমিক ১৯শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি যাত্রী ৪৫৭ জন (৭ দশমিক ২৭শতাংশ), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ যাত্রী ২৭৬ জন (৪ দশমিক ৩৯শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-মিশুক-টেম্পু-লেগুনা) ৯৩৪ জন (১৪.৮৬শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-পাখিভ্যান-চান্দের গাড়ি-বোরাক-মাহিন্দ্র-টমটম)৩৫৯ জন (৫ দশমিক ৭১শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-ঠেলাগাড়ি আরোহী ১৩২ জন (২ দশমিক ১০শতাংশ) নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন:
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে দুই হাজার ১৪ টি (৩৮ দশমিক ৪৯শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, এক হাজার ৬৭০ টি (৩১ দশমিক ০৯শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৫৪ টি (১৭ দশমিক ৭৬শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৬৬৫ টি (১২ দশমিক ৩৮শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬৮ টি (১ দশমিক ২৬শতাংশ)দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ধরন:
দুর্ঘটনাগুলোর এক হাজার ৫৭ টি (১৯ দশমিক ৬৭শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, এক হাজার ৮১৩ টি (৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, এক হাজার ৫৬৬ টি (২৯ দশমিক ১৫শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৮২২ টি (১৫ দশমিক ৩০শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১৩ টি (২ দশমিক ১০শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-কন্টেইনার ২৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রাম ট্রাক-তেলবাহী ট্যাংকার-লং ভেহিকেল ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-পুলিশ পিকআপ-জীপ ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-মিশুক-লেগুনা-টেম্পু) ১৮ দশমিক ১৯ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-চান্দের গাড়ি-মেসিগাড়ি-আলগানন) ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং অন্যান্য মোটরযান ০ দশমিক ৫৮ শতাংশ (কোস্ট গার্ডের ট্রাক, রেকার, ডিসিসি’র ময়লাবাহী ট্রাক, হ্যান্ড ট্রলি, ডাম্পার, পাওয়ারটিলার, মাটি কাটার ট্রাক্টর, ইটভাঙ্গার মেশিন গাড়ি, রোড রুলার, রোড কাটার মেশিন, নির্মাণ সামগ্রীর মিকচার মেশিন)।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা আট হাজার ৩১৫টি। (ট্রাক এক হাজার ৪২৬, বাস ৮১৩, কাভার্ডভ্যান ২৫৪, পিকআপ ৩৭৯, ট্রলি ১৬৭, লরি ৮৩, ট্রাক্টর ১৩২, মাইক্রোবাস ১৯৭, প্রাইভেটকার ১৫৫, এ্যাম্বুলেন্স ৬৬, জীপ ১৮, মোটরসাইকেল ২১২৯, পুলিশ ও র্যাবের পিকআপ ১৬, ড্রাম ট্রাক ২৪, তেলবাহী ট্যাংকার ১৩, লং ভেহিকেল ৪, কন্টেইনার ৫, থ্রি-হুইলার ১৫১৩ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-মিশুক-লেগুনা-টেম্পু), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৬৯১ (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু- পাখিভ্যান- বোরাক-মাহিন্দ্র-টমটম-চান্দের গাড়ি- মেসিগাড়ি- আলগানন), বাইসাইকেল- প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-ঠেলাগাড়ি ১৮১ এবং অন্যান্য মোটরযান ৪৯টি (কোস্টগার্ডের ট্রাক ২, রেকার ৪, ডিসিসি’র ময়লাবাহী ট্রাক ৫, হ্যান্ডট্রলি ৩, ডাম্পার ৭, পাওয়ারটিলার ৯, মাটি কাটার ট্রাক্টর ৩, ইটভাঙ্গার মেশিন গাড়ি ৪, রোড রুলার গাড়ি ৩, রোড কাটার মেশিন গাড়ি ২, নির্মাণ সামগ্রীর মিকচার মেশিন গাড়ি ৩ টি)।
আরও পড়ুন: পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলের মৃত্যু
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ:
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৩১৫টি (৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ), সকালে এক হাজার ৬৪১টি (৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ), দুপুরে ৯৩৬টি (১৭ দশমিক ৪২ শতাংশ), বিকালে এক হাজার পাঁচটি (১৮ দশমিক ৭১ শতাংশ), সন্ধ্যায় ৪৮৯টি (৯ দশমিক ১০ শতাংশ) এবং রাতে ৯৮৫টি (১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ)।
নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৩ জনের প্রাণহানি
দেশে গত নভেম্বর মাসে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৩ জন নিহত ও ৫৩২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে সাতটি নৌ দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত ও পাঁচ জন নিখোঁজ হয়েছেন এবং ১১টি ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন।
শনিবার নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন (আরএসএফ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দুর্ঘটনার খবরের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংঠনটি
এছাড়া আরএসএফ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অক্টোবরে ৩৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন মারা যান।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত