বাজেট
উচ্চশিক্ষার কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান ইউজিসি চেয়ারম্যানের
মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষার কৌশলগত পরিকল্পনা (২০১৮-২০৩০) বাস্তবায়ন করতে হলে জাতীয় বাজেটে উচ্চশিক্ষা খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
দেশের উচ্চশিক্ষার সংকট সমাধানে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চশিক্ষা খাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) 'পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন'- শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগ শনিবার দিনব্যাপী এই কর্মশালা আয়োজন করে।
ইউজিসি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার স্বাগত বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সে অনুপাতে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ইউজিসি প্রণীত ‘অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা’-সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিকখাতে শৃঙ্ক্ষলা নিশ্চিত করতে ইউজিসি ইতোমধ্যে এ নীতিমলিা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি আর্থিক খাতে ‘আমব্রেলা নীতিমালা' হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম বন্ধ হবে এবং অডিট আপত্তির খড়গ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর আবু তাহের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ ব্যয়ে সরকারি বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ ও প্রতিপালনের জন্য হিসাব পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাবিপ্রবির ৪ গবেষক
তিনি বলেন, সরকারি বিধি-বিধান না মানলে অডিট আপত্তি বাড়তে থাকবে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসরণ এবং যথাযথ যোগ্যতা ব্যতিত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়ন না দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এছাড়া, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা (অডিট আপত্তিযোগ্য) দেখিয়ে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের অবৈধ সুবিধা না দেওয়ার আহ্বান জানান। এই অতিরিক্ত সুবিধার অডিট আপত্তি হলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এর দায়ভার বহন করতে হবে বলে তিনি জনান।
প্রফেসর আবু তাহের তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সরকারি অর্থের সদ্ব্যব্যবহার এবং আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সকল লেনদেন ইএফটির মাধ্যমে করার পরামর্শ দেন।
এছাড়া, ইউজিসি প্রতিবছর আর্থিক বিষয়ে যে সব পরিপত্র জারি করে সেগুলো যথাযথ বাস্ববায়নে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এছাড়া, সরকারি রাজস্ব বাজেটের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এনডাউমেন্ট ফান্ড গঠনের পরামর্শ দেন।
ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহামান- এর উপস্থাপনায় কর্মশালায় দেশের ৫৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের প্রধান এবং বাজেট শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মোট ১০৫ জন কর্মকর্তার অংশ নেন।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় নতুন ফরম্যাট অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সেশন পরিচালনা করেন অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার, উপপরিচালক (বাজেট) মো. এমদাদুল হক ও মো. হাফিজুর রহমান।
আরও পড়ুন: জবির ৩ শিক্ষার্থী পেলেন বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি
ইএমকে সেন্টারে শিক্ষা মেলার আয়োজন করেছে এডুকেশন ইউএসএ বাংলাদেশ
১৫ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেটের আকার বেড়েছে ১২ গুণ: মন্ত্রী
গত ১৫ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত জনকল্যাণমূলক সেবাখাতে বাজেটের আকার ১২ গুণ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, বিগত পনেরো বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত জনকল্যাণমূলক সেবাখাতগুলোর বাজেটের আকার ১২ গুণ বাড়ানো হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট ছিল ১ হাজার ১৩ কোটি ৩১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেট ১২ হাজার ২১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি, অর্জন ও কার্যক্রম অবহিতকরণ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: আট বিভাগে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী
সচিবালয় বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা খাতে জনপ্রতি মাসিক ২৫০ টাকা হারে ২০ লাখ প্রবীণ ব্যক্তির জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬০০ কোটি টাকা। জনপ্রতি ৬০০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৮ লাখ প্রবীণ ব্যক্তির জন্য বার্ষিক বাজেট উন্নীত হয়েছে ৪ হাজার ২০৫ কোটি টাকায়।
মন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের দরিদ্রপ্রবণ ১১২টি উপজেলাকে শতভাগ বয়ষ্কভাতা কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও ১৫০টি উপজেলাকে শতভাগ বয়স্ক ভাতার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ২৬টি উপজেলায় ভাতা পাওয়ার উপযোগী শতভাগ লোক ভাতার আওতায় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর বর্তমান মেয়াদ পর্যন্ত সময়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে বাজেট, উপকারভোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে বলেও জানান সমাজকল্যাণমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা খাতে জনপ্রতি মাসিক ২৫০ টাকা হারে ৯ লাখ বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীর জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ২৭০ কোটি টাকা। তা মাথাপিছু মাসিক ৫৫০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জনের জন্য বাজেট বরাদ্দ ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতা খাতে জনপ্রতি মাসিক ২৫০ টাকা হারে ২ লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬০ কোটি টাকা। বর্তমানে মাথাপিছু ভাতা মাসিক ৮৫০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ লাখ জনের জন্য বাজেট ২ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী শিক্ষা-উপবৃত্তিখাতে ১৩ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়েছে ১১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: মুনাফালোভীদের কারণে ইলিশের দাম বেশি: মৎস্যমন্ত্রী
সংসদে বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস করেছে সংসদ। এতে সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার লক্ষ্য নির্ধারণ করে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি রাখা হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।
সোমবার জাতীয় সংসদে এই বাজেট পাস করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১১ লাখ ১০ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার বাজেটে বরাদ্দ চেয়ে বরাদ্দকরণ বিল-২০২৩ উত্থাপন করেন যা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে আজ, সংসদ কিছু পরিবর্তনসহ অর্থ বিল-২০২৩ পাস করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাবি’র ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৯১৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
সরকারের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মেটানোর জন্য অর্থ বরাদ্দের সংসদীয় অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংসদে উত্থাপিত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা অনুদানের জন্য ৫৯টি দাবির মাধ্যমে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের ব্যয়ের যৌক্তিকতা পেশ করেন।
এর আগে, সংসদ কণ্ঠভোটে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য অনুদানের জন্য ৫৯টি দাবিতে বিরোধী সদস্যদের নামে দাঁড়িয়ে থাকা মোট ৫০৩টি কর্তন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
জাতীয় পার্টি ও গণফোরামসহ মোট ১০ জন সংসদ সদস্য বাজেটে তাদের ছাঁটাই প্রস্তাব পেশ করেন। তারা হলেন- কাজী ফিরোজ রশীদ, রুস্তম আলী ফরাজী, মুজিবুল হক, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বেগম রওশন আরা মান্নান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মোকাব্বির খান ও রেজাউল করিম বাবলু।
তবে তাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী দুপুরের খাবারের বিরতি না দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুদানের দাবি পাসের প্রক্রিয়া দ্রুততর করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৮৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
বরাদ্দ বিল পাশ হওয়ার সময় বিরোধী ও স্বতন্ত্র সাংসদরা হাউসে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা বিলটি পাস করতে আপত্তি তোলেননি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন, যা জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, জ্ঞানভিত্তিক, এবং ২০৪১ সালের মধ্যে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' নিশ্চিত করার দর্শন রয়েছে।
বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ৬ শতাংশ রাখার প্রত্যাশা সহ জিডিপি বৃদ্ধির হার সাড়ে ৭ শতাংশ।
পরিচালন ও অন্যান্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।
মোট রাজস্ব ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ৭০ হাজার কোটি টাকা অন্যান্য উৎস থেকে সংগ্রহ করবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাক ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বাইরের উৎস থেকে অর্থায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে বিদায়ী অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৮৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৮৮৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে করপোরেশনের আন্দরকিল্লার কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এই বাজেট ঘোষণা দেন তিনি।
এবারের বাজেট নিজস্ব উৎসে সর্বোচ্চ ৯৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে। গত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট ছিল অনুদান নির্ভর।
আরও পড়ুন: ২৭ জানুয়ারী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন
নতুন অর্থবছরের বাজেটের পাশাপাশি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়।
ওই অর্থ বছরে মোট ২১৬১ কোটি ২৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৪ দশমিক ৪২ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেটে তিন ধরনের কর বাবদ মোট আয় ধরা হয়েছে ৬৪০ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বকেয়া কর ও অভিকর খাতে সর্বোচ্চ ২২২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে।
হাল কর ও অভিকর খাতে ২২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য কর বাবদ ১৯৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে।
গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) তিন ধরনের করে মোট আয় ধরা হয়েছিল ৫৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুসারে ওই তিন ধরনের আয়কর বাবদ চসিকের আয় হয়েছে ৩৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন অনুদান খাতে ৮৯৪ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে ৩৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা আয় ধরা হয়।
ঘোষিত বাজেটে নগরের উন্নয়ন খাতে সর্বোচ্চ ৯৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেটে উন্নয়ন খাতে ১২৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয়েছে ৬৪৩ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এবারের বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে বেতন, ভাতা ও পারিশ্রমিক খাতে ৩১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
বাজেট উপস্থাপনকালে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিকাদার ও অন্যান্য বকেয়া থোক বরাদ্দ খাতে ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা সহ প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
৭০ কোটি ২৭ লাখ টাকা আয়কর ও ৮৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্য সংযোজন কর সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
চসিকের ২ লাখ ৬ হাজার ১৪৯টি হোল্ডিং রয়েছে। বহদ্দারহাট বারইপাড়া খালের ৪ হাজার ৫০০ ফুট প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ, ২৫০০ ফুট ড্রেন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
সরকারের ভিশন হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ। এই রূপকল্পের ভিত্তি হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার।
সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে বেশিরভাগ কার্যক্রম এখন অনলাইন ভিত্তিক করা হচ্ছে।
পর্যায়ক্রমে করপোরেশনের প্রশাসনিক সব কাজ ইলেকট্রনিক সিস্টেমের আওতায় আনা হবে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে বাজেট বিবরণী উপস্থাপন করেন অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. ইসমাইল।
এ সময় সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২৯ মার্চ
চসিকের প্রশাসক পদে নিয়োগ পেলেন আ’লীগ নেতা সুজন
বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখতে শিশুদের আহ্বান
জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখার জন্য শিশুরা ও ইউনিসেফ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার (৭ জুন) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ইউনিসেফ ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের (পার্লামেন্টারি ককাস অন চাইল্ড রাইটস) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২০২৪ এবং শিশু অধিকার- শীর্ষক ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।
সারাদেশ থেকে আসা শিশু এবং ককাস ও অর্থ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা থেকে আসা ১৪ বছর বয়সী শিশু সাংবাদিক মাইশা আঞ্জুম আরিফা বলেন, ‘আমি অনেক শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি যাদের দিনে তিনবেলা খাবারের জন্য কাজ করতে হয়। তাদের বেশিরভাগই আর স্কুলে যায় না এবং অনেককে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।’
গত কয়েক দশক ধরে শিশুদের জন্য সরকারি অর্থায়নের কল্যাণে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে এবং টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে এই অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরও লক্ষ্যকেন্দ্রীক বিনিয়োগ প্রয়োজন।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এবং শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ার শামসুল হক টুকু বলেন, ‘আজ শিশুদের কথা শুনে এটা পরিষ্কার যে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। আমি তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং তাদের মতামত তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। একই কাজ করার জন্য আমি আমার সহকর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানাই।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিকভাবে কমেছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে বিদায়ী অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের অধিকার পূরণে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে/ উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বজায় না থাকলে এই অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’
ইউনিসেফের বিশ্লেষণ তুলে ধরে, স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ এ বছর জিডিপির ০ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজ বা সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২ শতাংশ বাড়ানোর দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন হবে।
এ ছাড়াও, ইউনিসেফের উপস্থাপনা তুলে ধরে, বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তবে, বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলো প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো।
প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ। পাশাপাশি সুবিধার প্রকৃত মূল্যের উল্লেখযোগ্য পতন রোধে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
শিশুদের স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সরকার ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেলডন ইয়েট তার বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বলেন, ‘সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। বাজেটে শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য ইউনিসেফ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানায়।’
আরও পড়ুন: অপর্যাপ্ত শিক্ষা বাজেট প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে, বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি শিক্ষার্থীদের
বাজেট: নাগরিকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এটি জনবিরোধী, জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠনের জন্য তৈরি করা হয়েছে: ২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে নিয়ে বিএনপি
বিএনপি অর্থবছরের ২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে গণবিরোধী ও প্রতারণামূলক আখ্যায়িত করে বলেছে, এটি একটি দুর্নীতিবাজ সরকারের আশ্রয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের জাতীয় সম্পদ লুটপাটের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, অবাস্তব ও কাল্পনিক বাজেট দিয়ে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, ‘সদ্য পেশ করা বাজেট বর্তমান ‘ফ্যাসিস্ট লুটেরা’ সরকারের অর্থনৈতিক দুর্নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বার্ষিক ইশতেহার মাত্র।
অর্থনীতির সাবেক শিক্ষক ফখরুল বলেন, বাজেট অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী এবং বাস্তবায়নযোগ্য।
তিনি বলেন, বর্তমান দুর্নীতিবাজ সরকারের আশ্রয়ে কোটি কোটি ডলার লুটপাটের লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা লুণ্ঠনকারীদের বাজেট মাত্র।
অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে পেশ করার ছয় দিন পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের পরিণতি: ফখরুল
বাজেট নিয়ে ফখরুল বলেন, চলমান অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস, ব্যাপক অর্থপাচার এবং দেশের জনগণের কাঁধে বিপুল ঋণের বোঝাকে অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেননি।
তিনি বলেন, কীভাবে অর্থনৈতিক সংকট ও চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হবে সে বিষয়ে সরকার বাজেটে কোনো রূপরেখা দেয়নি এবং সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ধারণাকে পুরোপুরি এড়িয়ে গেছে।
‘ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে বাজেটে কোনো নির্দেশনাও নেই। এই গণবিরোধী বাজেট সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কোনো ভূমিকা রাখবে না’ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, গত এক দশকে নীতিগত সমস্যা, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রাজস্ব খাত বা আর্থিক খাতসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতে কোনো বড় কাঠামোগত সংস্কার করা হয়নি। ‘এই বাজেটেও এই সংস্কারের কোন ইঙ্গিত নেই।’
স্মার্ট বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, সরকার এবার স্মার্টলি টাকা লুটপাটের জন্য বাজেট দিয়েছে। ‘তারা (সরকার) ভোট চুরি, ব্যাংক চুরি এবং অর্থ পাচারসহ চুরি করতে বুদ্ধিমান।’
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নির্বাচন ও প্রচারণা প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা বিএনপি মহাসচিবের
বিএনপি নেতা আরও বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা স্মার্টলি লুটপাট, ব্যাংক ও জনগণের টাকা লুট করার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে বাজেটে।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট দেশের প্রধান জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকার ছাড়া জনগণ ও অর্থনীতির কল্যাণে বাজেট প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, চলমান জাতীয় সংকট থেকে মুক্তির জন্য একটি জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ‘এটি করার একমাত্র উপায় হলো
একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা।’
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ৮ জুন দেশব্যাপী বিএনপি’র অবস্থান কর্মসূচি
জাতীয় সংসদে বিদায়ী অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস
সংসদ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে বর্ধিত ব্যয় মেটাতে মঙ্গলবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১৭ হাজার ২৯৯ কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস করেছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১ জুন জাতীয় বাজেটের সঙ্গে সম্পূরক বাজেট সংসদে উত্থাপন করেন।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে মোট বাজেট ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
সম্পূরক বাজেটে ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ব্যয় বেড়েছে ১০১ হাজার ২৫৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং ৪০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ব্যয় কমেছে ৪২ হাজার ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
ফলে এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাজেট বরাদ্দ কমেছে ১৭ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা এবং মোট বরাদ্দ এখন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।
এর ওপর সাধারণ আলোচনা শেষে মঙ্গলবার সংসদে সম্পূরক বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান অনুদানের জন্য ৩৯টি দাবিতে বর্ধিত পরিমাণ চেয়েছে।
১৬৩টি কাট-মোশন ১১ সদস্য দ্বারা সরানো হয়েছিল।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়- এ তিনটি কাট-মোশন নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: সংসদে দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক, ফখরুল ইমাম, রওশন আরা মান্নান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, পীর ফজলুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, রুস্তম আলী ফরাজী, গণফোরামের সাংসদ মোকাব্বির খান ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোঃ রেজাউল করিম এই কাট মোশন আনেন।
তবে সেই কাট-মোশন কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সর্বনিম্ন ২৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
অর্থ বিভাগ প্রাইম ৫০৪ কোটি ০৫ লাখ টাকা, পরিকল্পনা কমিশন ২ হাজার ২৪৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১১২ কোটি ০৫ লাখ টাকা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৮৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৭০৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৩৫২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩ হাজার ৪৯১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয় ৭০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা, খনিজ সম্পদ বিভাগ ৩২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ৫৮৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা, খাদ্য মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৮৮৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৫৩৫ কোটি ০৮ লাখ টাকা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ৫৫১ কোটি ৬১ লাখ টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৬২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগ ১ হাজার ১১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৭৭ কোটি ০৮ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী
সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু
অপর্যাপ্ত শিক্ষা বাজেট প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে, বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি শিক্ষার্থীদের
২০২৩-২৪ অর্থবছর যতই ঘনিয়ে আসছে, শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এবারের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবি), কারিগরি প্রতিষ্ঠান এবং মাদরাসার ছাত্রদের সঙ্গে কথা হয়।
বাজেট প্রসঙ্গে কথা হয় ঢাবি’র একাউন্টিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইমন ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “গত বছরের পরিসংখ্যানের তুলনায় শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়লেও প্রস্তাবিত বাজেটে তা জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের তুলনায় আর্থিক মূল্য বৃদ্ধি পেলেও প্রকৃত অর্থে তা বাড়েনি। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির আশংকাজনক ঊর্ধগতির সময়ে শিক্ষাখাতে মোট জিডিপির ওপর বাজেটের পরিমাণ আরও বাড়ানো উচিত।”
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদী ভিসা প্রদানের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা
ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক রিয়াদ বলেন, “বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষাখাতকে আরও ভালো করে সাজাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তাই অন্যান্য খাতের পাশাপাশি এই খাতকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। বাড়াতে হবে বাজেট বরাদ্দ।”
ঢাবি’র তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী সিদ্দিক ফারুক জানান, “একটি দেশের মোট বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা উচিত। বিপরীতে আমাদের দেশের শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ১০ শতাংশ। এটিকে আরও বাড়ানো উচিত। আমাদের দেশের যে অর্থনীতি তাতে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা অসম্ভব। তবে ধীরে ধীরে এটি বাড়বে বলে আশা করা যায়।”
তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য বরাদ্দ অনেক কম। শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও বেশি গবেষণা হবে। সামনের দিনের অর্থনীতি হবে 'নলেজ ইকোনমি' অর্থাৎ ‘জ্ঞানভিত্তিক’। আর জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে দেশকে এগিয়ে রাখতে হলে আমাদের শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ শুধু সাধারণ শিক্ষাকেই প্রভাবিত করে না, কারিগরি শিক্ষাকেও বাধাগ্রস্ত করে।”
চট্টগ্রাম পলিট্যাকনিকাল ইন্সটিটিউট থেকে সদ্য ডিপ্লোমা শেষ করা কাজী শাহাদাত হোসেন সাকিব বলেন, “বর্তমান সময়ে যুগের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হলে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে এই খাতটি।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা তথা বাস্তবমুখি করার জন্য এই কারিগরি সেক্টরে বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো ও বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা অবশ্যক।”
তিনি আরও বলেন, “বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই। অথচ আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক যন্ত্রপাতি অনেক পুরানো আমলের। এছাড়া অর্থ সংকটের কারণে সেগুলা নতুন করে কেনা সম্ভব হয় না অধিকাংশ সময়েই। আর এজন্য আরও বেশি বাজেটের প্রয়োজন এই খাতে।”
আরও পড়ুন: গণরুম বিলুপ্তির দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীর অনশন
ঈদুল আজহায় যশোর মাতাবে ‘ভাইজান’
আইএমএফের শর্তের ভিত্তিতে বাজেট করা হয়নি: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের ভিত্তিতে করা হয়নি।
বাজেট পরবর্তী ভাষণে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের মতো আইএমএফ বাংলাদেশে এসেছে এবং অর্থনীতিতে সহায়তা করার জন্য কিছু সুপারিশ করেছে। আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের প্রেসক্রিপশন নিয়েছি, কিন্তু বাজেট তৈরিতে সেগুলো অনুসরণ করিনি।’
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আইএমএফ শুধু অর্থ দিয়ে দেশগুলোকে সাহায্য করছে না, তারা অর্থনীতির ওপরও নজরদারি করছে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো।
মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বারবার করা প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ‘আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কিত, কিন্তু এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। আমরা জনগণকে খাওয়ানো বন্ধ করতে পারি না।’
তিনি বলেন, সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নমনীয় উপায়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সরবরাহ করে আসছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মুদ্রাস্ফীতির কারণ চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি এবং সেগুলোর সমাধান করার চেষ্টা করছি। আমাদের যদি কোনো ছাড় দিতে হয়, আমরা তা করব।’
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, নতুন বাজেটে মূলত দরিদ্র জনগণের সুবিধার দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে।
সবাইকে কর দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ট্যাক্স নেট প্রসারিত করেছি যাতে আরো কর সংগ্রহ করা যায়।’ অতীতের অন্যান্য বাজেটের মতো এটিও আগামী নির্বাচন এবং জনগণ উভয়কেই লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বাজেটের লক্ষ্য থেকে জনগণ বা নির্বাচনকে আলাদা করতে পারি না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত বাজেটে করা সব প্রকল্পই বাস্তবায়িত হয়েছে।
কামাল বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে রেমিট্যান্স আয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট: নাগরিকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
নিম্নমুখী প্রবণতার পর, রেমিট্যান্স আয় আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আমরা আমাদের রিজার্ভের মাধ্যমে আমাদের পাঁচ মাসের আমদানি বিল মেটাতে পারি।
তিনি বলেন, সরকারের কিছু পদক্ষেপের পর ধীরে ধীরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর অনুরোধে বাংলাদেশের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, রেমিট্যান্স এবং ব্যাংকিং খাত নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯ জুন তার মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে যেখানে এটি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স এবং রিজার্ভ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তৈরি করবে।
তিনি দাবি করেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ বাড়লেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রির মাধ্যমে বাজার থেকে বেশি অর্থ উত্তোলন করায় মূল্যস্ফীতি বাড়বে না।
আরও পড়ুন: উচ্চাভিলাষী জিডিপি ও মুদ্রাস্ফীতির অনুমান, বাজেট বাস্তবায়নে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে: সিপিডি
উচ্চাভিলাষী জিডিপি ও মুদ্রাস্ফীতির অনুমান, বাজেট বাস্তবায়নে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে: সিপিডি
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) শুক্রবার তার বাজেট-পরবর্তী পর্যালোচনায় বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি উভয় ব্যাপারে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ সংকটের আলোকে সেগুলো অর্জনের জন্য কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ না রেখে।
সিপিডি বলেছে, বাজেট কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেছে, তবে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়, তাই ঘাটতি অর্থায়নের পরিমাণ শেষ পর্যন্ত বাড়বে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বাজেট পরবর্তী পর্যালোচনার নেতৃত্ব দেন এবং কয়েকটি টিভি চ্যানেল তা সরাসরি সম্প্রচার করেন।
তিনি বলেন, বাজেট এমন এক সময়ে পেশ করা হয়েছে যখন বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তিগত ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশে অনুমান করা হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ সালে ছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
একটি প্রশ্নের উত্তরে সিপিডি’র বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ সালে রাজস্ব আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রাজস্ব অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বাড়াতে হবে। যা ‘একেবারে উচ্চাভিলাষী’ বা বলা যায় অতিউচ্চাভিলাষী। একটি ভুল ধারণার উপর ভিত্তি করে বাজেটের প্রবৃদ্ধি অনুমান করা হয়েছে।
মোস্তাফিজ বাজেটের আলোকে আর্থিক নীতি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মতো একটি মুদ্রানীতির আশা করেছেন।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেটে কৌশলগতভাবে পুঁজিবাজার উন্নয়ন নীতিকে এড়িয়ে গেছে, যা এ ধরনের উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বাস্তবসম্মত ও টেকসই পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিনিয়োগের অর্থায়ন বাড়তে পারে না, সরকারি প্রণোদনাভিত্তিক পুঁজিবাজার নতুন বিনিয়োগে ভূমিকা রাখতে পারে না।’
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বহিরাগত অর্থ বকেয়া বা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বিষয়ে কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
সিপিডি প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বর্তমান বাজেট অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হবে এবং ১ দশমিক ৪২ লাখ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ৭৫ হাজার কোটি টাকার কম রাজস্বে বাড়বে বাজেট ঘাটতি: সিপিডি
সম্পত্তি কর থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত কর আদায় করা যাবে: সিপিডি