কৃষক
সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চর আঙ্গারু গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সুলতান প্রামাণিক (৬০) একই গ্রামের মৃত ফয়জাল প্রামাণিকের ছেলে।
কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শনিবার সকালে অন্য দিনমজুরদের সঙ্গে সুলতান প্রামাণিক গ্রামের এক কৃষকের জমিতে ধান কাটতে যায়। ধান কাটার এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে মেঘের গর্জন শুরু হয়। এ সময় সকলেই দৌড়ে গ্রামের দিকে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সুলতান প্রামাণিক।
আরও পড়ুন: টেকনাফে বজ্রপাতে ২ জন নিহত
দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে নিহত ৯
মাগুরায় কৃষকের ২শ’ কলাগাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা
মাগুরার শ্রীপুরে রাতের আধারে ইসরাফিল হোসেন নামে এক কৃষকের ২০ শতাংশ জমির দুই শতাধিক ধরন্ত কলাগাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের চরচাকদাহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ হাবিব মোল্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ইসরাফিল হোসেন।
অভিযুক্ত হাবিব মোল্যা বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলাও রয়েছে। আমাদের ধারণা তারা এ ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য নিজেদের গাছ নিজেরাই কেটে উল্টো আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’
নেক্কারজনক এ ঘটনায় এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও গিয়েছিল। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: মাগুরা ও রাজবাড়ীতে বজ্রপাতে নিহত ৫
মাগুরায় উচ্চ তাপমাত্রা, বৃষ্টির অভাবে লাভজনক লিচু উৎপাদন হুমকির মুখে
রাণীশংকৈল মিষ্টি আলু চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টি আলু চাষ করছেন কৃষকেরা। বিশেষ করে নদীর তীরে চরাঞ্চলের কৃষক মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকেছেন। অল্প খরচে ও কম পরিচর্যায় বেশি ফলন এবং অধিক লাভ হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী বেশি এ অঞ্চলের কৃষকদের। ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা জগদল নাগর নদীর পতিত বালুর চরে মিষ্টি আলু চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কৃষক হাসান আলী।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহায়তায় কৃষকরা জমিতে মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেন। কৃষক হাসান আলীর জমিতে যে আলু হয়েছে তার মধ্যে কোনো কোনো আলুর ওজন তিন থেকে চার কেজি। উৎপাদিত এতো বড় আকারের মিষ্টি আলু দেখতে গ্রামের মানুষ ভিড় করছেন। দূর দূরান্ত থেকেও আসছেন অনেকে। তারা আলু দেখছেন ও পরামর্শ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: আলু চাষের কথা বলে নিষিদ্ধ মাদক পপি চাষ!
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মিষ্টি আলু চাষের ভালো ফলনের চিত্র দেখা যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাণীশংকৈল উপজেলায় মোট পাঁচ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
ধর্মগড় এলাকার কৃষক জমির উদ্দীন জানান, চরের বালু মাটিতে এত সুন্দর ফসল হবে ভাবতেও পারিনি। এতো বড় মিষ্টি আলু জীবনেও দেখিনি। দেখে খুব ভালো লাগছে। যত্ন করলে যে রত্ন পাওয়া যায় হাসান আলী তার উদাহরণ।
কৃষক হাসান আলী জানান, প্রথমে যখন শুরু করি হতাশা কাজ করছিল। এমন ফলনে আমি সত্যিই আনন্দিত। প্রথম বারেই এতো সাফল্য পাব ভাবতে পারিনি। এ যাবত ৫০ হাজার টাকার মিষ্টি আলু বিক্রি করেছি। জমিতে আরও তিনশ’ মনের বেশি আলু রয়েছে, যার বাজার দর তিন লাখ টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। তবে পানির সেচ বেশি দিতে হয়েছে কারণ চরের জমি মানেই বালু। আশা রাখি এবারও মিষ্টি আলু চাষে লাভবান হয়ে লাভের টাকায় কিছু একটা করবো।’
একই এলাকার দেলদার হোসেন বলেন,আমাদের এলাকা চরাঞ্চল হওয়ায় এখানে অনান্য ফসলের চেয়ে মিষ্টি আলু চাষ করলে ফলন বেশি হয়। মিষ্টি আলু চাষে পরিশ্রম কম ও লাভ বেশি। ফলন ভালো হওয়ায় আশা রাখি এবারও লাভবান হবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, মিষ্টি আলু চাষে তেমন রোগবালাই নেই। এতে লেদা পোকা নামের এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়, যা থেকে পরিত্রাণের জন্য অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
তিনি বলেন, কৃষক হাসান আলী তিন থেকে চার কেজি ওজনের মিষ্টি আলু উৎপাদন করে উপজেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বাজারে এ বিশেষ পুষ্টি গুণ সম্পন্ন মিষ্টি আলুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আশা করছি অন্য কৃষকেরা উদ্বুদ্ধ হবেন।
তিনি আরও বলেন, ভালো ফলন পেতে হলে আগাছা পরিষ্কার, সুষম সারের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় সেচ দিতে হয়। সাধারণত বেলে-দোঁ-আশ মাটিতে মিষ্টি আলুর চাষ ভালো হয়। বীজ রোপণের ১৫০ থেকে ১৬০ দিন পর মিষ্টি আলুর ফলন ঘরে তোলার উপযোগী হয়। প্রতি শতকে ৬০০ থেকে ৬৫০ আলুর কাটিং ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। এবার জেলায় মিষ্টি আলুর ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হবেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: যশোরে বিপাকে আলু চাষিরা
পাবনায় বজ্রপাতে ১৪ গরুসহ প্রাণ গেল কৃষকের
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় বজ্রপাতে ১৪টি গরুসহ এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের কামালপুরের চরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কৃষক সজিব হোসেন (২৫) লক্ষ্মীকুণ্ডার কামালপুর গ্রামের আলহাজ প্রামাণিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সজিব প্রতিদিন বাবার খামারের গরু নিয়ে কামালপুরের প্রত্যন্ত চরে পতিত জমিতে ঘাস খাওয়াতে যান। প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার সকালে খামারের ৪১টি গরু নিয়ে কামালপুরের চরের উদ্দেশে বের হয়ে যান।
আরও পড়ুন: ১৩ মাসে বজ্রপাতে ৩৪০ জনের মৃত্যু: এসএসটিএফ
সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে ফিরে আসার সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে ব্যাপক বজ্রপাত শুরু হলে ১৪টি গরুসহ ঘটনাস্থলেই কৃষকে সজিব মারা যান।
বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া ১৪টি গরু মারা যাওয়ায় ১০ লক্ষাধিক টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
নিহত সজিবের বাবা আলহাজ প্রামাণিক জানান, মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকালে যখন বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয় তখন আমি ফোনে ছেলেকে তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে আসতে বলি।
বাড়ি ফেরার পথে আমার ছেলের জীবন চলে গেল। কোনোভাবেই বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বজ্রপাতে ১৪টি গরুসহ এক কৃষক নিহত হয়েছে। নিহতের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরা ও রাজবাড়ীতে বজ্রপাতে নিহত ৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় নিহত ৩
নাটোরে কৃষকের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস
নাটোরের নলডাঙ্গায় সাইদুল ইসলাম নামে এক কৃষকের বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেন।
এলাকাবাসী জানায়, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পঞ্চগড় থেকে রাজশাহীগামী বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর স্টেশন অভিমুখে আসতে থাকে।
এ সময় স্টেশনের উত্তর প্রান্তে একটি অননুমোদিত রেল ক্রসিংয়ের সময় ধানবাহী একটি ট্রলি রেললাইনের ওপর আটকে যায়।
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয় কৃষক সাইদুল ইসলাম তার গলার লাল গামছা খুলে ট্রেনটিকে থামার সংকেত দেয়। পরে এলাকার আরও কিছু লোক তার সঙ্গে যোগ দেয়।
আরও পড়ুন: নাটোরে প্রতিপক্ষের হামলায় ৭ আ.লীগ নেতাকর্মী আহত
বিষয়টি বুঝতে পেরে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন ট্রলিটি অপসারণ করলে ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ করে।
মাধনগর স্টেশন মাস্টার আব্দুল হামিদ জানান, উভয়পক্ষের সচেতনতার কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেন ও ট্রলিটি।
আরও পড়ুন: নাটোরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু
‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
দেশের উত্তরের কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার আবহাওয়া অন্য জেলার তুলনায় আলাদা বলে প্রায় সব ধরনের শস্য, সবজি ও ফলের আবাদ হয় এখানে।
এছাড়া এখানকার উৎপাদিত খাদ্য শস্য ও সবজিসহ নানা রকম ফলের গুণগত মানও যথেষ্ট ভালো।
এবার মধ্যপ্রাচ্যের ফল শাম্মাম চাষে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল ইসলাম।
কৃষক মণ্ডল ইসলাম জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে শাম্মাম চাষ শুরু করেন তিনি। এটির চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো। মূলত লাভের আশায় তিনি এই ফলটি চাষ শুরু করেন। তিন বিঘা জমিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের আশা করেছেন।
তিনি আরও জানান, আগে ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে ‘শাম্মাম’ বিক্রি করতেন, এখন খেত থেকেই পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মণ্ডল ইসলামের খেত থেকে ‘শাম্মাম’ কিনতে আসা পাইকার মইদুল বলেন, এ বছর প্রথমবার আমি শাম্মাম ফলের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। এখনও স্থানীয়ভাবে এই ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে নতুন এই ফলটি ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শাম্মাম বা রকমেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে চার কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। ফলটি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে খেত থেকে এই ফলটি কিনেছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন, অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদাও পুরণ হবে। বাজারেও যুক্ত হবে এই নতুন ফলটির। আমাদের দেশে এটি নতুন হলেও সুপারশপ গুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও ‘শাম্মাম’ চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া ‘শাম্মাম’ চাষে উপযোগী।
এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান এই কৃষিবিদ।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চিয়া সিড
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনপ্রিয় একটি ফলের নাম ‘শাম্মাম।’ অনেকেই এই ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন।
ইউটিউবে দেখে এই শাম্মাম ফলটি বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করে সফল হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মণ্ডল ইসলাম।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই মণ্ডল ইসলাম।
পীরগঞ্জের তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলটির চাষ শুরু করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার দ্বিতীয় বারের মতো ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গতবছর সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক প্রথম শাম্মাম চাষ শুরু করেন।
এছাড়া এবার জেলায় মোট দুই একর জমিতে ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে।
‘শাম্মাম’ নামের এই ফলটির চাষ সচরাচর ঠাকুরগাঁও জেলায় করতে দেখা যায় না। এই ফলটি চাষ করতে খরচ একটু বেশি হয়। মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলের চারা রোপণ করা হয়।
আর ছিদ্রকরা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠে ‘শাম্মাম’ ফলের গাছ। চারা রোপণের মাত্র ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ‘রকমেলন বা শাম্মাম’ ফল কর্তন (হারভেস্ট) করে বাজারে নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার বোরো চাষের আওতায় ২০০ বিঘা জমি
শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু
খেতের ফসল রক্ষা করতে গিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদীতে বন্য হাতির আক্রমণে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার হাতিবর টিলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল হামিদ (৫০) ওই এলাকার ছামেদ আলীর ছেলে।
এ নিয়ে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে শেরপুরের পাহাড়ি জনপদে বন্য হাতির আক্রমণে তিন কৃষক নিহত হলেন।
এর আগে হাতির আক্রমনে গত ১৪ এপ্রিল শ্রীবরদীর জুলগাঁও এলাকায় আব্দুল করিম (৩৫) এবং ২৬ এপ্রিল নালিতাবাড়ি উপজেলার পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের বিজয় সাংমা (৫২) নামে আরও দুই কৃষক প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে যুবক নিহত
এই কৃষকরা সবাই বন্য হাতির কবল থেকে আধপাকা বোরো ধানখেত পাহারা দেওয়ার সময় উন্মত্ত হাতির কবলে পড়ে নিহত হন।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় শ্রীবরদী সীমান্তে বন্যহাতির ৪০/৫০ টির একটি দল শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ী রেঞ্জ এলাকার হালুয়াহাটি গ্রামের বোরো ধানখেতে নেমে আসে এবং পাকা ধান বিনষ্ট করে।
এ সময় ধানখেত বাঁচাতে এলাকাবাসী হাতি তাড়াতে লাঠি-মশাল নিয়ে হাতির দলকে ধাওয়া করে। এতে ক্ষুব্ধ হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে হাতিবর টিলাপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ গুরুতর আহত হন।
এলাকাবাসী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হামিদকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. নোমান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুর হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ধানখেতে বন্যহাতির দল নেমে এলে হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির আক্রমণে কৃষক আব্দুল হামিদের মৃত্যু ঘটেছে।
বন বিভাগের বালিজুড়ীর রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু হাতির দলকে তাড়াতে গিয়ে মানুষ মৃত্যুর মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে পাহাড়ি জনপদে বনবিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যাতে হাতির দলকে উত্যক্ত করা না হয়। এজন্য এলাকায় এলাকায় এলিফেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়মানুযায়ী আবেদনের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে আহত কৃষকের মৃত্যু
শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির আক্রমণে কৃষক নিহত, আহত ১
চৌগাছায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
যশোরের চৌগাছায় ধানখেতের কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার তেঘরী গ্রামের দুয়ালের মাঠে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বছির উদ্দীন (৫২) উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: চৌগাছায় মাঠে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
জানা যায়, বিকালে বসির উদ্দীন ধানখেতে কাজ করতে যান। সন্ধ্যার দিকে আকাশে মেঘ দেখে বাড়ি ফিরে আসছিলেন। তিনি গ্রামের মোড়ে পৌঁছালে বজ্রাঘাতের শিকার হন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. লুৎফুন্নেছা লতা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই বছির উদ্দীন মারা গেছেন।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাবনায় পৃথক বজ্রপাতে কলেজ ছাত্রসহ ৩ জনের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ২, আহত ২
শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে আহত কৃষকের মৃত্যু
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্যহাতির লাথির আঘাতে আহত এক গারো কৃষকের মৃত্যু ঘটেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেরপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে।
নিহত বিজয় সাংমা (৫২) নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের স্টীপেন মারাকের ছেলে।
জানা যায়, শুক্রবার দুপুরের পর পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এসময় নিহত কৃষক বিজয় সাংমার বাড়িতে হাজির হয়ে নালিতাবাড়ীর ইউএনও খ্রস্টফার হিমেল রিছিল উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। এসময় গারো নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার কৃষকেরা ফসল রক্ষা করতে রাত জেগে ধানখেত পাহারা দিয়ে থাকেন। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) গভীর রাতে বন্যহাতির দলটি পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের কৃষক বিজয় সাংমার আবাদকৃত বোরো ধানখেতে হানা দেয়।
আরও পড়ুন: শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির আক্রমণে কৃষক নিহত, আহত ১
এসময় বিজয় সাংমা ফসল রক্ষা করতে হাতির দলটিকে তাড়া করেন। তাড়া খেয়ে এক পর্যায়ে বন্যহাতির দলটি উন্মত্ত হয়ে বিজয় সাংমার ওপর পাল্টা আক্রমণ করে। এসময় হাতির দলের একটি হাতি বিজয় সাংমার বুকে ও পেটে পা দিয়ে লাথি মারে এবং তলপেটে চাপা দেয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকোপার্ক সংলগ্ন কালাপানি এলাকার সীমান্ত সড়কের পাশে নিজ আবাদি বোরো ধানখেত পাহারা দেওয়ার সময় বিজয় সাংমা বন্যহাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হন।
ওসি আরও বলেন, স্বজনেরা হাতির দলটিকে তাড়িয়ে দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় বিজয় সাংমাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা বিজয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৃষক বিজয় সাংমার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে যুবক নিহত
শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত
সিরাজগঞ্জে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
সিরাজগঞ্জের যমুনার চরাঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এবার কাঁচা মরিচ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। সেইসঙ্গে বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
বিশেষ করে যমুনার চরাঞ্চলে উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষাবাদ করা হয়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে এ লাভজনক মরিচের চাষ বেশি হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। ফলন ভাল হওয়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় এ মরিচ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকেরা।
যমুনা নদীর তীরবর্তী কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে এ মরিচ চাষাবাদ বেশি হয়েছে।
চরাঞ্চলের কৃষকেরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরবর্তীতে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের চাষ শুরু করা হয়। পলিমাটির উর্বরতার কারণে কম খরচে মরিচ চাষাবাদে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফলন ভালো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধরলার বুকে নতুন স্বপ্ন জাগিয়েছে পটল চাষ
তারা জানান, ঈদকে সামনে রেখে এ মরিচ উত্তোলনে নারী-পুরুষেরা ব্যস্ত সময় পার করছে এবং খেত থেকেই ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি এ মরিচ কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। আর বর্তমানে স্থানীয় হাট-বাজারে এ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় এবং এ কাঁচা মরিচের দাম ওঠা-নামা করলেও লোকসান নেই কৃষকের। চরাঞ্চলের হাটবারের দিনগুলোতে কৃষক ও ব্যবসায়ীর অবস্থান জমজমাট। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে।
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মরিচ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও মরিচের ব্যবসা করতে চরাঞ্চলে এসেছেন তারা। মরিচের বাজার মূল্য এখন ভালো থাকায় কৃষকের পাশাপাশি তারাও লাভবান হচ্ছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর বলেন, সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এবার ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষাবাদ করা হয়েছে। এ চাষাবাদ চরাঞ্চলে বেশি হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিচের বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখেও হাসি ফুটেছে।
আগামীতে এ লাভজনক চাষাবাদে কৃষকেরা ঝুঁকে পড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুর্গম চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ, ভাগ্য পরিবর্তনের আশা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে