দক্ষিণ
চাঁদপুরে ট্রাকচাপায় শিশু নিহত
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় একটি মালবাহী ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে তাসফিয়া আক্তার নামে পাঁচ বছরের একটি শিশু নিহত হয়েছে।
সোমবার বেলা দেড়টায় উপজেলার ধনারপাড় জোড়পুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় আহত হয়েছে রুনিয়া আক্তার (৭) নামের আরেক শিশু। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই ট্রাকসহ এর চালককে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহীর
নিহত তাসফিয়া ধনারপাড় এলাকার অটোরিকশাচালক মো. ইব্রাহিমের মেয়ে। আহত রুনিয়া ওই এলাকার রাকিবুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুর দেড়টায় ধনারপাড় এলাকার প্রধানীয়া বাড়ির ওই দুই শিশু তাদের বাড়ির পাশে একটি দোকানে যাওয়ার জন্য বের হয়। সেখানকার সড়কের ওপর দিয়ে হাঁটার সময় আচমকা পেছন দিক থেকে একটি মালবাহী ট্রাক তাদের দুজনকেই চাপা দেয়।
এতে তাসফিয়ার মাথা, বুক, পিঠ, পা ও মুখমণ্ডল রক্তাক্ত জখম হয়। পরে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।
অপর শিশু রুনিয়া আক্তারের শরীরের বেশ কিছু অংশও জখম হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ওই ট্রাকসহ এর চালককে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক চাপায় ভ্যান চালক নিহত
ময়মনসিংহে ট্রাক চাপায় ২ জন নিহত
কর্ণফুলী টানেলের দক্ষিণ পাশের কাজ শেষ করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে যাওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের সাধারণ কাজ সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার এ উপলক্ষে সেতু বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন (গণভবন) থেকে যোগ দিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
কর্ণফুলী টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এবং টানেলের উত্তর প্রান্তের ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদীর তলদেশের টানেল, যা কর্মসংস্থান, পর্যটন এবং শিল্পায়ন বৃদ্ধির সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতি বৃদ্ধিতে শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। কর্ণফুলী টানেল চট্টগ্রামের যানজট পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দুটি পাঁচ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। টানেলের দৈর্ঘ্য তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় এটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
কর্মকর্তাদের মতে, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৪ শতাংশ। বাকি কাজ শেষ করতে আরও দুই মাস সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: কর্ণফুলী টানেলের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে কর্ণফুলী টানেল। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের (জি টু জি) যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। চীনের এক্সিম ব্যাংক পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বাকি অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রামকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। চীনের সাংহাইয়ের মতো ‘এক নগরী দুই শহর’ মডেল অনুসরণ করে নির্মিত এই টানেলটি উত্তরের বন্দর শহরটিকে দক্ষিণে আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করবে।চীন এই প্রকল্পে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে, টানেলের ভিতরে অগ্নিনির্বাপণ, আলো এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও, ৫২টি সেচ পাম্পও স্থাপন করা হচ্ছে যাতে বর্ষাকালে পানির স্তর বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে টানেলটি আটকে না যায়, প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল সংলগ্ন দুটি টিউব নির্মাণ করা হয়েছে। টানেলে একই সঙ্গে লাইট, পাম্প এবং ড্রেনেজ সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে এবং একটি ৭৭২ মিটার ফ্লাইওভারও নির্মিত হয়েছে।
বর্তমানে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ পুরোদমে চলছে।
কর্ণফুলী টানেল ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় টানেলের অ্যাপ্রোচ রোডের দুই পাশে নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে এরই মধ্যে ভাগ্যের পরিবর্তনের সাক্ষী হতে শুরু করেছে।
কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, কর্নফুলীর দক্ষিণ তীরে অন্তত ১০টি বড় শিল্প গ্রুপ এবং ১৫০ জন ব্যবসায়ী বিভিন্ন সেক্টরে - বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম, পোশাক, জাহাজ নির্মাণ, মাছ প্রক্রিয়াকরণ, ইস্পাত, সিমেন্ট এবং তেল শোধনাগার - কারখানা স্থাপনের জন্য অগ্রিম জমি কিনেছে।
টানেলটি কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে কর্ণফুলী টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
২০১৫ সালের নভেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মাল্টি-লেন রোড টানেল প্রকল্পটি অনুমোদন করে এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়েছিল।পরবর্তীতে খরচ বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকা করা হয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
প্রকল্পের সর্বশেষ সংশোধনীতে ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং ব্যয় ১৬৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
২০১৩ সালে পরিচালিত জরিপ অনুসারে টানেল নির্মাণের আগে বছরে ৬৩ লাখ যানবাহন টানেল দিয়ে চলাচল করতে সক্ষম হবে। সে হিসাবে দিনে প্রায় ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি চলতে পারে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন কর্ণফুলী টানেল দিয়ে যাতায়াত করবে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকটের আশঙ্কা করছেন না প্রধানমন্ত্রী
কালনা সেতুর নাম এখন মধুমতি সেতু: সেতুমন্ত্রী
কালনা সেতুর নাম এখন মধুমতি সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এই সেতুর নামকরণ করা হয়েছে ‘মধুমতী সেতু’ বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনায় মধুমতি নদীর ওপর ৯৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি পরিদর্শনকালে এসব কথা জানান তিনি।
তিনি জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পদ্মা সেতুর সুফল পৌঁছে দিবে মধুমতি সেতু। এছাড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনায় মধুমতি নদীর ওপর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বহু প্রতীক্ষিত সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের মধ্যেদিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। এছাড়া সেতুর কাজ জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। যথাসময়ই শেষ হয়েছে। কালনা সেতু যত ছোট হোক না কেন এর উল্লেখযোগ্য দিক রয়েছে। এটা হলো পদ্মা সেতুর মিসিং লিংক। কাজেই পদ্মা সেতুর সব সুফল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে এ সেতু নির্মাণের কোন বিকল্প ছিল না। একইসঙ্গে নড়াইলবাসীর জন্য সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নড়াইল থেকে যশোর, বেনাপোল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের যোগাযোগ সহজ হবে। ফলে গোটা অঞ্চল উপকৃত হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করবে সরকার: সেতুমন্ত্রী
ওবায়দুর কাদের বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। এখনও বড় অঞ্চলটি আমরা কানেক্ট করতে পারিনি। এ সেতুটির উদ্বোধনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রধামন্ত্রীকে একটি সামারি পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি সেতুটির নামকরণ করেছেন ‘মধুমতি সেতু’। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে তিনি উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করবেন। তবে আক্টোবর মাসেই তিনি সেতুটি উদ্বোধন করবেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্যই-প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য। এ সরকারের আমলে এত বেশি সড়ক সংযোগ হয়েছে, যার নজির অন্য কোথাও নেই। সমতল থেকে পাহাড় পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন হয়েছে।
সম্প্রতি সীমান্তে উত্তেজনা ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টায় মিয়ানমারের কার্যকালাপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্লের উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সতর্ক ও সংযমী হয়ে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা সবাই প্রস্তুত আছে। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করব না। আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত হবো না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাই লেটারাল কো-অপারেশন। টেবিলে বসে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করব।
প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে তার বক্তব্যে বিষয়টি উত্থাপন করবেন।
মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে মূদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট ও জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়েছে। আমাদের জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হয়েছে। তাই এখন যুদ্ধ করার সময় নয়। আমরা শান্তির পক্ষে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সেনাবাহিনী, পুলিশ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পরিচালিত হবে, সরকার কেবল রুটিন দ্বায়িত্ব পালন করবেন। বিএনপি তত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে পানি ঘোলা করলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না এসে কোন বিকল্প থাকবে না।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মতুর্জা, নড়াইল, লোহাগাড়া ও কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠন এবং যোগাযোগ ও সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অক্টোবর-নভেম্বরে দুই ভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: সেতুমন্ত্রী
রাজধানীর যানজট নিরসনে সাবওয়ে নির্মাণের বিকল্প নেই: সেতুমন্ত্রী
গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫ জেলার মানুষ উদ্বিগ্ন
যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলার মানুষ সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিসিএল) এর গ্যাসের দাম বৃদ্ধির শুনানির দিকে তাকিয়ে আছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি, পাঁচটি জেলায় গৃহস্থালীর কাজে ভোক্তা পর্যায়ে দুই চুলার জন্য গ্যাসের দাম বর্তমান ৯৭৫ টাকা থেকে ১০৮০ টাকা এবং এক চুলার জন্য ৯২৫ টাকা থেকে ৯৯০ টাকা সুপারিশ করেছে।
যদিও এসজিসিএল দুই চুলার জন্য গ্যাসের দাম ২১০০ টাকা (১১৫ শতাংশ বৃদ্ধি) এবং এক চুলার জন্য ২০০০ টাকা (১১৬ শতাংশ বৃদ্ধি) করতে চেয়েছিল।
মঙ্গলবার নগরীর বিয়াম মিলনায়তনে বিইআরসির গণশুনানির দ্বিতীয় দিনে এসজিসিএল কর্মকর্তারা এ প্রস্তাব দেন।
শুনানিতে বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল, সদস্য মকবুল-ই-এলাহী চৌধুরী, বজলুর রহমান ও মোহাম্মদ আবু ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব: গণশুনানিতে তোপের মুখে পেট্রোবাংলা
সূচনা বক্তব্যে আবদুল জলিল গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সম্ভাব্য সামাজিক প্রভাব আমলে না নেয়ায় গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, সবার আগে জনগণের স্বার্থ। মূল্যবৃদ্ধির আগে এর সামাজিক প্রভাব বিবেচনা করা উচিত ছিল। কিন্তু গ্যাস কোম্পানিগুলো এগুলো উপেক্ষা করছে।
বিইআরসি কারিগরি কমিটি প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম বিদ্যুৎ খাতের জন্য বর্তমান ৪ দশমিক ৪৪ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩৪ টাকা, ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য ১৩ দশমিক ৮৫ টাকা থেকে ১৫ দশমিক ৫০ টাকা, সার কারখানার জন্য ৪ দশমিক ৪৪ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩৪ টাকা, চা শিল্পের জন্য ১০ দশমিক ৭০ থেকে ১২ দশমিক ৬৫ টাকা, বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য ২৩ টাকা থেকে ২৭ দশমিক ৬০ টাকা, ৪৩ টাকা থেকে ৪৯ দশমিক ৫০ টাকা এবং গৃহস্থালী গ্রাহকদের জন্য মিটারযুক্ত গ্যাস ওভেনের জন্য ১২ দশমিক ৬০ টাকা থেকে ১৮ টাকা করার সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ৩ দিনের গণশুনানি শুরু সোমবার
গ্যাসের দাম আরও বাড়লে জনগণের জন্য বড় চাপ হবে: জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা
আন্দোলন সফলে কার্যকরী ভূমিকা থাকবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির: রবিন
আসন্ন আন্দোলন সফলে কার্যকরী ভূমিকা রাখার মতো করেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৬৫টি ওয়ার্ডের কর্মী সভাও হয়ে গেছে।
সম্প্রতি ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-
ইউএনবি: দীর্ঘদিন পর হওয়া মহানগরের কমিটির বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
রবিন: এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। ২০১৮ সালের বা এর আগের কমিটি দীর্ঘ মেয়াদে ছিল। এর ফলে বিভিন্ন থানায় ১৫ বছর, ২০ বছর একটি কমিটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। যেসব কমিটি ছিল তাও রি-শাফল করা হয়নি। কিন্তু এখন সংগঠন চলমান হচ্ছে, গতিশীল হচ্ছে। যা ভালো একটা উদ্যোগ। যদি এইভাবে কমিটিগুলো চলমান থাকে। প্রতি দুই বছর পরপর নতুন একটি কমিটি আসার কথা। দুই বছরে না হোক আড়াই বছরে- তিন বছরের মাথায় যদি কমিটি রি-শাফল হয়, তাহলে নতুন নেতৃত্ব আসবে। ফলে যে গ্যাপটা তৈরি হয়েছে, তা দূর হতে বেশি সময় লাগবে না।
আরও পড়ুন: সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র: রুমিন ফারহানা
বর্তমান কমিটির দ্রুতগতির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, একের পর এক কর্মী সভা হচ্ছে। মহানগর দক্ষিণের ৭৫টি ওয়ার্ড; ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৬৫টি ওয়ার্ডের কর্মী সভা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তাবিত আটটি সাংগঠনিক টিমকে প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। এই আটটি টিমের কাজও ইতিবাচক গতিতে এগিয়েছে।
ইউএনবি:এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকার আন্দোলন কার্যকর করতে না পারার কারণ কী?
রবিন:এই প্রশ্নের উত্তর অনেক দীর্ঘ। বিবেচনার অনেক বিষয় আছে। আন্দোলন একেবারে হয়নি এটা সঠিক না। অন্যান্য জেলা শহরের তুলনায় দেখতে হবে ঢাকাতে কত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছে, গুম-খুন তো কোনো কিছুই বাকি রাখেনি তারা। নেতাকর্মীদের পরিবারের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি করেছিল। আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছিল সরকার। দলের সঙ্গে যারা জড়িত তাকে না পেয়ে তার বাবা-মা-বোনকে ধরে নিয়ে গেছে। দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের পর্যন্ত ধরে নিয়ে গেছে। ভীতির বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অনেককে গুম করেছে, এর তো কোনো হিসাব হয় নাই। ব্যাপক ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। এরপরেও এখানে আন্দোলন হয়েছে। মূলত পুলিশের বন্দুকের গুলির বিপরীতে নিরস্ত্রভাবে সফল হওয়া সম্ভব হয়নি। আর ঐতিহাসিকভাবে একটা বিষয় স্বীকৃত যে, সফলতা না এলে ব্যর্থদের ওপরে যা চাপানো হয় তা মেনে নিতে হয়।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনে সরকারের পদক্ষেপ আরেকটি ‘উপহাস’: বিএনপি
ইউএনবি: চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপির এখন পর্যন্ত আন্দোলন কি যথেষ্ট মনে করেন?
তানভীর: এই আন্দোলন চলমান। সফল হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আর এতদিনে এই আন্দোলন সফলও হতো। কিন্তু ম্যাডামের নির্দেশনার কারণেই তা এখন পর্যন্ত হয়নি। ম্যাডামকে যখন অবৈধভাবে সাজা দেয়া হলো, ম্যাডামের নির্দেশনা ছিল, আন্দোলন করতে গিয়ে যেন দেশের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। অনেকে বলে, আমরা ম্যাডামের জন্য কিছুই করতে পারিনি। কথাটি ঠিক নয়। আমরা ম্যাডামের আদেশ পালন করেছি।
তিনি আরও বলেন, ম্যাডাম হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, যাতে আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর দোষারোপ করতে না পারে। অতীতে আপনারা দেখেছেন পঙ্কজ আওয়ামী লীগের এমপি, উনারা নিজের বাসে আগুন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারাই প্রকাশ করেছে। আমরা চাইনি আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আওয়ামী লীগ ভুল ব্যাখ্যা করুক। এ সুযোগটা এবার আওয়ামী লীগ পায়নি। আমরা সরকারকে চাপে রেখেছি। সারা বাংলাদেশে কর্মসূচি হচ্ছে।
রবিন বলেন, একদিকে ম্যাডাম অসুস্থ, আমাদের দলীয় কার্যক্রম ও দলকে সুসংগঠিত করা, দলকে গতিশীল করার কাজ কিন্তু থেমে নেই। আমাদের নেতা তারেক রহমান নিরলসভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদেরকে নির্দেশনা দিচ্ছেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। উনি কিন্তু আমাদেরকে রেডি করছেন। আমরা কিন্তু রেডি আছি। আমাদেরকে নির্দেশনা দিলে সরকার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
আরও পড়ুন: বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের অভিযোগ প্রত্যাখান বিএনপির