বিচার বিভাগ
বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ইদানীং সবার মধ্যে কেমন যেন একটা অসহনশীলতা দেখা যাচ্ছে। এ অসহিষ্ণুতা বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, রাষ্ট্রের অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাহলে আমরা আইনের শাসনের জন্য যে সংগ্রাম করে যাচ্ছি, তা প্রতিষ্ঠা করতে পারব না।
আরও পড়ুন: স্বল্প সময়ে বিচারকাজ সম্পন্ন করা বিচারক ও আইনজীবীদের দায়িত্ব: প্রধান বিচারপতি
রবিবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর আইনজীবী সমিতি ভবনে আইনজীবীদের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওহিদুজ্জামান। সভা পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনাদের ভাবতে হবে, আপনারা আদালতের অংশ। আপনাদের সাহায্য ছাড়া আদালত ঠিকমতো সচল রাখা সম্ভব নয়। আমরা আইনজীবী ও বিচারকেরা মিলে একসঙ্গে চেষ্টা করতে চাই, যেন মামলার জট ছেড়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি মনে করি জুডিশিয়ালিতে বিচারক যদি হয় ডান হাত, তাহলে আইনজীবী বাম হাত। এক হাত যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে কাজ ঠিকমতো হবে না।
তিনি বলেন, দেশের তিনটি স্তম্ভ বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগি ও আইন বিভাগ। এর কোনো একটা যদি দুর্বল হয় তাহলে সে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, গণতন্ত্র দুর্বল হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় না। তাই আসুন আমরা সকলে সম্মেলিত চেষ্টায় বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
এর আগে প্রধান বিচারপতি ফরিদপুরে জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নামে একটি বিচার নিতে আসা ব্যক্তিদের জন্য একটি বিশ্রামাগার স্থাপনের জন্য ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেন।
এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশে ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় কমপক্ষে চার কোটি লোক জড়িত। তাদের কথা চিন্তা করে এ বিশ্রামাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এখানে পানি পান ও শৌচাগারের সুবিধা থাকবে। বিচার চাইতে এসে যেন কাউকে এলোমেলো ঘোরাফেরা করে দুর্ভোগে পড়তে না হয়, এজন্য এই ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, এসব বিশ্রামাগার নির্মাণের জন্য আইন মন্ত্রণালয় ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতিটি জেলা এ বিশ্রামাগার নির্মাণের জন্য ৫০ লাখ টাকা পাবে।
এছাড়া কাজ যাতে ঠিক মত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঠিকাদার যেন চুরি না করে। কম লাভ করে তারা যেন এ কাজ করে দেয়।
প্রধান বিচারপতি ফরিদপুরের মামলার নিষ্পত্তির হার বেশি হওয়ায় বিচারক ও আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ফরিদপুরে ২৫ হাজার ৫৫৭টি মামলা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি মামলা। নিষ্পত্তির হার ১১৪ শতাংশ। এ ঘটনা আমাদের আশা জাগায়।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় চাই শক্তিশালী বিচার বিভাগ: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জন্য বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি বলেন, আসুন ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জন্য জুডিশিয়ারিকে (বিচার বিভাগকে) শক্তিশালী করি। জুডিশিয়ারি যাতে মসৃণভাবে চলতে পারে, স্বাধীনভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করতে পারে, আপনারা বিচার বিভাগকে সহায়তা করবেন। তাহলে বিচার বিভাগ এগিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বাগেরহাটের পিসি কলেজের সাবেক ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বর্তমানে বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা বেড়েছে: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে সবার আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। জুডিশিয়ারিকে গতিশীল করতে হবে। আমি বার বার বলি যদি জুডিশিয়ারি ফেল করে গণতন্ত্র ফেল করবে। আর গণতন্ত্র ফেল করলে রাষ্ট্র অকার্যকর হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি এই বিচার বিভাগের চাকাটা কীভাবে একটু সচল করা যায়।
তিনি বলেন, আমাদের পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। কারণ পরাজয়ই একজনকে জয়ী করার পথ সুগম করে দেয়।
বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের সেই গ্রাম থেকে উঠে আসা। তারা যখন আদালতের বারান্দায় ঘোরে, আমাদের উচিত তাদের যত কম খরচে পারা যায় বিচার দেয়া। সকলের সহযোগিতা ছাড়া একা জুডিশিয়ারিকে এগিয়ে নেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন। তারা যখন আদালতের বারান্দায় ঘোরেন, আমাদের উচিত তাদের যত কম খরচে বিচার দেয়া। তাদেরকে যদি একদিন আগেও আদালতের বারান্দা থেকে বাড়ি ফেরাতে পারি তাহলে তারা একদিন ঘোরা থেকে বাঁচলেন।
প্রধান বিচারপতি বলে, ১৯৭১ সালে যে উদ্দেশ্য নিয়ে ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছেন, আমরা তার সুবিধাভোগী। যারা বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করে দিয়েছেন তাদেরকে বুকে ধারণ করতে হবে। এখন যদি আমরা কাজে গাফিলতি করি, কোনো প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করি, তাহলে তাদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা হবে। আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন। পি সি কলেজিয়ানস অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন-প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাজাফফর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে মো. নূরুজ্জামান
প্রতি বছর ‘প্রধান বিচারপতি পদক’ প্রদানের সিদ্ধান্ত, নীতিমালা প্রণয়ন
২ বছরের মধ্যে বিচারিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাইজড করা হবে: পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আগামী ২ বছরের মধ্যে বিচারিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাইজড করা হবে।
তিনি বলেন, সারা দেশের জুডিশিয়াল সিস্টেমকে সম্পুর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর, আরও স্বল্পসময় ও খরচে যাতে মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেয়া যায় এবং বিচারক ও আইনজীবীরা সহজে বিচারিক কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে ২ হাজার ২শ’ ২৪ কোটি টাকার "ই-জুডিশিয়ারি" নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
শনিবার আইন ও বিচার বিভাগ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে অনলাইন কারণ তালিকা, বিচার বিভাগীয় মনিটরিং ড্যাশবোর্ড এবং মাই কোর্ট অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতার নয়, সহযোগিতার: পলক
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার কোর্টরুম ডিজিটাইজ করা হবে। আদালতে অডিও রেকর্ডিং পুল সিস্টেম থাকবে। পাশাপাশি ভার্চুয়াল টার্মিনাল করা হবে। এছাড়া ১৪টি সেন্ট্রাল জেল ডিজিটাল করা হবে। আসামিরা যেন জেল থেকে শুনানীতে অংশ নিতে পারে এজন্য ৯টি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ৬৪টি জেলা কারাগারে ক্যামেরা ট্রায়াল রুম করা হবে।প্রতিমন্ত্রী বলেন, গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে বৈঠক অ্যাপস ব্যবহার করা হবে। বিচারিক তথ্যের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে জেআরপি’র অধীনে সুপ্রিম কোর্টে একটি ফোর ট্রায়াল ডেটাসেন্টার স্থাপন করা হবে। পলক বলেন, ডিজিটাল বিচারিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিচারকদের ২ হাজার ল্যাপটপ, অফিস স্ট্যাফদের জন্য ডেস্কটপ এবং ৭৫ হাজার আইনজীবী ও বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেমসহ প্রত্যেকটি বার অ্যাসেোসিয়েশনে একটি করে সাইবার ক্যাফে প্রতিষ্ঠা করা হবে।প্রতিমন্ত্রী বলেন এটুআই, ইউএনডিপি ও আইসিটি বিভাগ মিলে এই অবকাঠামোগুলো তৈরির পর এই অর্থবছরে বিচার ও স্বাস্থ্য বিভাগে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে: পলক
বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে কার্পণ্য করবে না সরকার: আইনমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে কোন কার্পণ্য করবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের অবকাঠামো ও লজিস্টিক সমস্যা দূরীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এ সমস্যা দূর না হওয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ নিতে থাকবে।’
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটগণের জন্য আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী চলমান রিফ্রেসার কোর্সের আজকের (বুধবার) এক অধিবেশনে মামলাজটের কারণ ও তার সমাধানের সুপারিশ শীর্ষক দলগত উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মানব নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি সন্ত্রাসবাদ: আইনমন্ত্রী
মামলাজট নিরসনের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য মামলাজট কমিয়ে এনে জনগণকে দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদান করা। তাই মামলাজট যে একটি বড় সমস্যা সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে এবং এই চিন্তা মাঠ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমানে যে হারে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে মামলাজট কমে আসবে।
বিচার ও সালিস এক নয় এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনিসুল হক বলেন, আইনের পরিসীমার মধ্যে থেকেই জনগণের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দিতে হবে এবং মামলা জট নিরসন করতে হবে। জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারলে বিচার বিভাগের সাফল্য সমৃদ্ধ হবে।
দলগত উপস্থাপনায় ছয়টি গ্রুপে বিভক্ত ৩০ জন বিচারক মামলাজটের কারণ ও তার সমাধানের সুপারিশ তুলে ধারেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, কোর্স পরিচালক মীর মো. এমতাজুল হক সহ আইন ও বিচার বিভাগ এবং ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় খালেদা জিয়াকে দাওয়াত দিতে আইনি বাধা নেই: আইনমন্ত্রী
সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টির জন্য এমন কোনো আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
বিচার বিভাগও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সব সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিচারকর্ম বিভাগও এ উন্নয়নের অংশীদার। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা প্রতিটি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য স্বীয়, মেধা, মনন ও কৌশল প্রয়োগ করবেন। কীভাবে হয়রানিমূলক মামলা কমিয়ে দ্রুত বিচারিক সেবা নিশ্চিত করা যায় তার প্রতি লক্ষ্য রাখা বিচারকদের দায়িত্ব।শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ২৩ তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।নারী বিচারদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, একজন জজ (বিচারক) যখন মামলা পরিচালনা করেন তখন তিনি নারী বা পুরুষ থাকেন না, তখন তিনি জজ-ই থাকেন। তাই শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষের কথা চিন্তা না করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।আনিসুল হক বলেন, নব্য স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর দেয়া সংবিধানে নারীর অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনুচ্ছেদ ১৯, ২০, ২৮ - এ সকল প্রকার কর্মে ও পেশায় সমতার বিধান যুক্ত করা হয়। সংবিধানে প্রদত্ত এ বিধান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীদের বিচার বিভাগে অংশগ্রহণের সকল বাঁধা দূর করে বিচারকাজে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেন। এরপর ১৯৭৫ সালে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রথমবারের মত দু’জন নারী বিচারক বাংলাদেশের বিচার বিভাগে যোগদান করেন।
আরও পড়ুন: মানব পাচার প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সেদিনের নারী মুক্তির অভিনব পদক্ষেপে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে এখন বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে নারী বিচারকের পদচারণা ঘটেছে। যার অগ্রপথিক ও জীবন্ত সাক্ষী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।
আনিসুল হক বলেন, আজ বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে নারীদের শুধু পদচারণাই ঘটেনি বিচার বিভাগে তাদের অংশগ্রহণ লক্ষণীয় হারে বাড়ছে। বর্তমানে জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারী বিচারকের সংখ্যা ৫৪৪ জন যা মোট বিচারকের শতকরা ২৮ ভাগ। এ সংখ্যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও উৎসাহমূলক।তিনি বলেন, বিচার বিভাগে নারীদের সংখ্যাই শুধু বাড়েনি তারা সেখানে মেধা ও যোগ্যতারও স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তার প্রমাণ, ত্রয়োদশ বিজেএস পরীক্ষার মাধ্যমে ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া বিচারকদের মেধা তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান দখল করেছে দু’জন নারী বিচারক।বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশনের সভাপতি হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, আইন সচিব মো. গোলাম সাওয়ার, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম, এসোসিয়েশনের মহাসচিব জিনাত সুলতানা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: শ্রমিকের অধিকার ও কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: আইনমন্ত্রী
দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম কমে আসবে: আইনমন্ত্রী
উচ্চ আদালতে বিচারপতির নিয়োগ সংক্রান্ত আইন অপরিহার্য: প্রধান বিচারপতি
উচ্চ আদালতে বিচারপতির নিয়োগ সংক্রান্ত আইন করা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বুধবার তাঁর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জেনে খুশি হয়েছি যে, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে।
বিদায় সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, দেশে বিদ্যমান মামলার পরিসংখ্যান থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, বিচারের অভিগম্যতা অনেক বেড়েছে। একথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, এখনও বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ জনগণের প্রবল আস্থা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আগে জীবন পরে জীবিকা: প্রধান বিচারপতি
তিনি বলেন, একথা অনস্বীকার্য যে, মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আমাদের বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। মামলার জট নিরসনে দেশের অধস্তন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন।
বিচার বিভাগের সংকটের দিক তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার নিরন্তর কাজ করলেও অনেক জেলায় এখনো জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি বিল্ডিং নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়নি। ফলে একই এজলাসে একাধিক বিচারককে কাজ করতে হয়। এতে সময়ের অপচয় হয়। সংগত কারণে বিচারকদের কাজের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন তরান্বিত করা বাঞ্ছনীয়। মামলার জট কমাতে করণীয় তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ফিজিকেল এবং ভার্চুয়াল কোর্ট যুগোপতভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করলে বিচার নিষ্পত্তি আরও দ্রুততর হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
উল্লেখ্য, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না: প্রধান বিচারপতি
বিচার বিভাগ স্বাধীন, রোজিনার জামিন বিষয়ে কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন প্রমাণ করে যে বিচার বিভাগ স্বাধীন।
রবিবার কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন প্রমাণ করে যে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সরকার এই বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার গ্রেপ্তারে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
এর আগে রবিবার সকালে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত জামিন শুনানি শেষে রোজিনাকে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত জামিন প্রদানের আদেশ দেয় আদালত।
তবে তাকে ৫ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে জামিন প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: রোজিনা ইস্যুতে সাংবাদিকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
এর আগে গত বৃহস্পতিবর তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হলেও, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে জামিন না দিয়ে রবিবার রায় প্রদানের দিন ধার্য করা হয়।
৪২ বছর বয়সী এই নারী সাংবাদিক অত্যন্ত সুপরিচিত তার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য। সোমবার দুপুর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা তাকে সচিবালয়ে আটকে রাখার পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ৬৩.২ শতাংশ কাজ শেষ: কাদের
গত সোমবার রাতেই রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট এর আওতায় মামলা দায়ের করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
মঙ্গলবার অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের মামলায় অভিযুক্ত রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠায় আদালত। অপরদিকে পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনও বাতিল করে দেয়া হয়। ওইদিন ই তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের নারী সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
করোনার বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, আন্ত:জেলাসহ সকল গণপরিবহন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা বজায় রেখে ও অর্ধেক যাত্রী বহন করে এখন থেকে চলাচল করতে পারবে।
বাঁশখালীতে শ্রমিকদের প্রাণহানি: বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
রিটে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ৩ কোটি টাকা ও আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন এ রিট দায়ের করেন।
সৈয়দা নাসরিন বলেন, আগামী সপ্তাহে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ: ২ মামলায় আসামি আড়াই হাজার
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে তিন কোটি টাকা ও আহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া নোটিশে নিহত ও আহত শ্রমিকের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন এ নোটিশ পাঠান।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করা হয়।
গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছয় শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
বেতন ভাতা নিয়ে অসন্তোষ থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত বেশ কয়েকজনকে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে এস আলম বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৫
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আবদুল কাদের, ইয়াসির আহমেদ, আসাদুজ্জান নামে তিন পুলিশ কনস্টেবলও আহত হন।
বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: মন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীর সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে অনেক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিচার বিভাগে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই: কাদের
দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উচ্চ ও নিম্ন আদালতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।