থাইল্যান্ড
ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক প্রকল্পে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তকরণে একমত ভারত ও থাইল্যান্ড
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, ভারত ও থাইল্যান্ড ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক প্রকল্পে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করতে সম্মত হয়েছে।
তবে, মিয়ানমার এখনও এ বিষয়ে তাদের মতামত জানায়নি।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তৃতীয় 'ফরেন অফিস কনসালটেশন' বৈঠকের পর সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র সচিব এ কথা বলেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে যোগ দিতে আমাদের আগ্রহ দেখিয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে ভারতীয় এবং থাইদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা এটিতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রশ্ন হলো মিয়ানমার কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে। কারণ, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের এই বিষয়ে জড়িত করার সুযোগ পাইনি।’
বৈঠকে মহাসড়ক সংযোগ ছাড়াও বিমান ও সামুদ্রিক যোগাযোগের সমস্যাগুলোও আলোচনা করা হয়।
মাসুদ বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বিমান যোগাযোগ বাড়াতে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য প্রস্তুত।
প্রেস ব্রিফিংয়ে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ঢাকা-ব্যাংকক রুটে সাপ্তাহিক ৩৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।
এর আগে, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব সারুন চারোয়েনসুওয়ানের নেতৃত্বে একটি থাই প্রতিনিধিদল থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা ও অন্বেষণ করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে।
আরও পড়ুন: ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক পুনস্থাপনকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: মোমেন
থাইল্যান্ডকে একটি সময়ের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘আমরা আমাদের সম্পর্কের সম্ভাবনা দেখেছি এবং আমরা বিশ্বাস করি যে যদিও বর্তমান বাণিজ্যের মাত্রা প্রায় এক বিলিয়নের কিছু বেশি, তবে অদূর ভবিষ্যতে এটি সহজেই দ্বিগুণ হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশে ব্যবসা করার সুযোগ ও প্রয়োজনীয় শর্ত তৈরি করতে সরকার কাজ করছে।
এদিকে, থাই পররাষ্ট্র সচিব সারুন চারোয়েনসুওয়ান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেছেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে এলডিসি থেকে উন্নীত হতে চলেছে, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পেরে খুব খুশি। কারণ, আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরকে সমর্থন করার সম্ভাবনার দিক দেখতে পাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সড়ক ও বন্দর ব্যবহারে ভুটানকে অনুমোদন
থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর: ঢাকার আঞ্চলিক সংহতির আহ্বান
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় থাইল্যান্ডের অব্যাহত সহায়তার প্রশংসা করেছেন। তিনি আঞ্চলিক সংহতির আহ্বান জানান।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও যোগ্য নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক, উন্নত দেশে রূপান্তরের জন্য এর ধারাবাহিকতা কামনা করেন। মাসুদ এশীয় উন্নয়নের গতির সুফল পেতে বৃহত্তর আঞ্চলিক সংহতির ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বন্ধুত্বের ৫০ বছর: সম্ভাবনা ও এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ। সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এবং বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড ও আসিয়ানের সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
সেমিনারে বক্তারা ছিলেন- রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন (চেয়ারম্যান, বিআইএসএস), অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) এবং জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় (পরিচালক, বিডা)।
পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে থাইল্যান্ড কর্তৃক বাংলাদেশকে প্রাথমিক স্বীকৃতির কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রশংসা করার সময় তিনি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি এই অঞ্চলে ও এর বাইরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উভয় দেশের যৌথ অঙ্গীকার ও সহযোগিতার প্রশংসা করেন।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক দ্বিপক্ষীয় কর্মকাণ্ডের গতি ধরে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে উভয় দেশ।
উভয় পক্ষ দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য কাজে লাগানো হয়নি এমন সম্ভাবনাগুলো খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড এই বছর জুড়ে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।
এই উদযাপনের অংশ হিসেবে রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন এবং একটি ই-বুক উন্মোচনের অনুষ্ঠান হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং সফররত থাইল্যান্ডের স্থায়ী সচিব-মনোনীত সারুন চারোয়েনসুওয়ান যৌথভাবে স্মারক ডাকটিকিট এবং ই-বুক উন্মোচন করেন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলি, নিহত ৩০
পররাষ্ট্র সচিব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য থাইল্যান্ডের প্রয়াত রাজা ভূমিবলের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পররাষ্ট্র সচিব এবং স্থায়ী সচিব উভয়েই বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য আনন্দ প্রকাশ করেন। যা গত পাঁচ দশক ধরে বিকাশ লাভ করেছে এবং শক্তিশালী থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে যে কয়েকটি দেশ স্বাধীনতার খুব প্রথম দিকে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। ১৯৭২ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় থাইল্যান্ড।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে দিবাযত্ন কেন্দ্রে হামলা, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬
থাইল্যান্ডে দিবাযত্ন কেন্দ্রে হামলা, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬
থাইল্যান্ডের একটি দিবাযত্ন কেন্দ্রে সাবেক এক পুলিশ অফিসারের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির ইতিহাসে মারাত্মক তাণ্ডব চালানো এই ঘটনায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গুলি করে হত্যা করা হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে আরও অনেকেই নিহত হয়।
এ বছরের শুরুর দিকে হামলাকারীকে বরখাস্ত করা হয় এবং তিনি নিজ ঘরে সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যা করার পর আত্মহত্যা করেন।
থাই পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিসকে (থাই পিবিএস) এক শিক্ষক বলেন, হামলাকারী গাড়ি থেকে নেমে এসে বাইরে দুপুরের খাবার খাওয়া একজনকে গুলি করে। এরপর আরও গুলি চালায়। পুনরায় গুলি চালানোর জন্য যে বিরতি নিয়েছিল হামলাকারী, সে সময়ের মধ্যে শিক্ষক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
নাম না জানিয়ে রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় এই নারী বলেন, ‘আমি দৌড়ে ফিরে যেয়ে দেখি শিশুরা ঘুমিয়ে আছে। শিশুদের বয়স দুই-তিন বছর হবে।’
অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দিবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মীরা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু বন্দুকধারী দরজায় গুলি চালাতে থাকে।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলি, নিহত ৩০
নাম না জানানো এই প্রত্যক্ষদর্শী থাইল্যান্ডের কম চাদ লুয়েক টেলিভিশনকে বলেন, ‘যে শিক্ষিকা মারা গেছেন, তার কোলে একটি শিশু ছিল। আমি ভাবিনি যে সে শিশুদের হত্যা করবে! তবে সে দরজায় গুলি করে এবং ঠিক সেদিক থেকেই গুলি চালায়।’
পুলিশের মুখপাত্র আর্চায়ন ক্রাইথং বলেন, অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
দেশটির অন্যতম দরিদ্র অঞ্চল থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নংবুয়া লাম্পুর গ্রামীণ শহর উথাই সাওয়ানে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ হামলাকারীকে সাবেক পুলিশ অফিসার পানিয়া কামরাপ (৩৪) হিসেবে শনাক্ত করে। পুলিশের মেজর জেনারেল পাইসাল লুয়েসমবুন পিপিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মাদকের অভিযোগের কারণে তাকে এ বছরের শুরুতে বাহিনী (পুলিশ) থেকে বরখাস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
এক ফেসবুক পোস্টে থাই পুলিশ প্রধান জেনারেল ডুমরংসাক কিত্তিপ্রপাস বলেন, পুলিশের সার্জেন্ট হিসেবে কর্তব্য পালন করা এই ব্যক্তির শুক্রবার আদালতে মেথামফেটামিন জড়িত মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। এবং অনুমান করা হচ্ছে, যেহেতু দিবাযত্ন কেন্দ্রটি তার বাড়ির কাছে তাই তিনি এটি বেছে নিয়েছেন।
এর আগে ডুমরংসাক সাংবাদিকদের বলেছেন যে ব্যবহৃত প্রধান অস্ত্রটি ছিল একটি ৯ এমএম পিস্তল এবং এটি সে নিজেই কিনেছিল। পয়সাল জানান, তার কাছে একটি শটগান ও একটি ছুরিও ছিল।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রয়ুথ চ্যান-ওচা সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল বলে প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা আছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা ঘটা ঠিক হয়নি। আমি নিহত ও তাদের স্বজনদের প্রতি গভীর শোক বোধ করছি।’
পুলিশ নিহতের সংখ্যার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দেয়নি। তবে তারা বলেছে যে দিবাযত্ন কেন্দ্রে অন্তত ২২ শিশু ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছে। অন্যত্র আরও অন্তত দুই শিশু নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোর দক্ষিণে সিটি হলে মাদক চক্রের হামলায় ২০ জন নিহত
থাই টিবিএস টেলিভিশন অনুসারে, হামলায় নিহতদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য রাত পর্যন্ত হামলার ঘটনাস্থলেই ছিলেন। মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের সাথেই বসে ছিলেন, তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
থাইল্যান্ডে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যুর হার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের তুলনায় বেশ কম। তবে জাপান ও সিঙ্গাপুরের তুলনায় বেশি, যেখানে কঠোর বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে। ২০১৯ সালে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যুর হার প্রতি এক লাখে প্রায় ৪টি ছিল, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি এক লাখে জনে প্রায় ১১টি এবং ব্রাজিলে প্রতি এক লাখে জনে প্রায় ২৩টি৷
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে মিউজিক পাবে আগুন, নিহত অন্তত ১৩
থাইল্যান্ডে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলি, নিহত ৩০
থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃহস্পতিবার একটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলিতে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের মেজর জেনারেল আচায়ন ক্রাইথং বলেন, নোং বুয়া লাম্পু শহরের কেন্দ্রে বিকালে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, হামলাকারী ৩০ জনকে হত্যা করেছে। তিনি আর বিস্তারিত কিছু জানান নি।
আঞ্চলিক পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন শিশু, দু’জন শিক্ষক এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন।
থাই গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, হামলায় বন্দুকধারী ছুরি ব্যবহার করে। পরে ভবন থেকে পালিয়ে যায়।
ছবিতে সাদা চাদরে ঢাকা কেন্দ্রের মেঝেতে কমপক্ষে দুটি লাশ দেখা গেছে।
বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম আততায়ীকে একজন সাবেক পুলিশ অফিসার হিসাবে চিহ্নিত করেছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
পড়ুন: গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু, ভারতের তৈরি সিরাপ নিয়ে ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তা
ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
ভারতের উত্তরাখণ্ডে বরযাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ২৫
নারী এশিয়া কাপ: পাকিস্তানকে হারিয়ে দিল থাইল্যান্ডের মেয়েরা
সিলেটে চলমান নারী এশিয়া কাপে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে চার উইকেটে হারিয়েছে থাইল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি থাইল্যান্ডের প্রথম জয়।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে পাঁচ উইকেটে ১১৬ রানের মাঝারি মানের স্কোর করে পাকিস্তান। ওপেনার সিদরা আমীন ৬৪ বলে ছয় চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন।
থাইল্যান্ডের পক্ষে সোর্ননারিন টিপ্পোচ দুটি এবং থিপাচা পুত্থাওং একটি উইকেট নেন।
থাইল্যান্ডের ঐতিহাসিক জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন ন্যাথাকান চান্থাম। তিনি ৫১ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ৬১ রান করেন।
ম্যাচটি শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নেয় পাকিস্তানের বোলাররা। তবে মাত্র এক বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় থাইল্যান্ড।
নিদা দার এবং তুবা হাসান দুটি করে উইকেট শিকার করলেও হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
চলমান এশিয়া কাপে এটি ছিল পাকিস্তানের তৃতীয় ম্যাচ। প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে তারা। তিন ম্যাচে তিনটি জয় নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় নারী দল।
শ্রীলঙ্কাও তিনটি ম্যাচ খেলে দুটিতে জয়লাভ করেছে। বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলে একটি জিতেছে। আজ দুপুরে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
পড়ুন: নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ: পাকিস্তানের কাছে বড় পরাজয় বাংলাদেশের
নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ: পাকিস্তানের কাছে বড় পরাজয় বাংলাদেশের
নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ: থাইল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ
নারী এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শনিবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় সিলেটে বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় থাইল্যান্ড। কিন্তু বাংলাদেশের বোলিং আঘাতে তারা বড় স্কোর করার সুযোগ পায়নি।
থাই নারী দল ১৯ ওভার ৪ বল খেলে মাত্র ৮২ রানে গুটিয়ে যায়। এরমধ্যে ফন্নিতা মায়া ২৬ রান করেন এবং রোজেনান কানহ ১১ রান করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে রুমানা তিনটি এবং নাহিদা আক্তার, সানজিদা আক্তার মেঘলা ও সোহেলী আক্তার দুটি করে উইকেট নেন।
আরও পড়ুন: নারী এশিয়া কাপ: সিলেটে পৌঁছেছে ৬ দল, আজ আসছে ভারত
জবাবে, ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১১ ওভার ৪ বল খেলেই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করে বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশের পক্ষে শামীমা সুলতানা সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন। এছাড়া ফারজানা হক ও নিগার যথাক্রমে ২৬ ও ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।
বর্তমান সময়ে টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত ফর্মে আছে বাংলাদেশ নারী দল। বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা বলেছেন, তারা ঘরের মাঠে শিরোপা ধরে রাখতে আগ্রহী।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে ভারত।
৩ অক্টোবর নিজেদের পরের ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপ খেলতে সিলেটে জাহানারা-জ্যোতিরা
নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ: বাংলাদেশের দল ঘোষণা
ঢাকা-ব্যাংকক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে: থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি পার্মানেন্ট সেক্রেটারি এইচ ই সারুন চারোয়েনসুওয়ান বলেছেন, বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেল এবং থাইল্যান্ডের বায়ো-সার্কুলার-গ্রিন ইকোনমি মডেলের অধীনে দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্কের সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সারুন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারটিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি পার্মানেন্ট সেক্রেটারি এইচ ই সারুন চারোয়েনসুওয়ান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্যাংককস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ ডিঅ্যাফেয়ার্স মিজ মালেকা পারভীন।
আরও পড়ুন: ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা বাংলাদেশকে একা বহন করতে হবে না’
মিজ মালেকা পারভীন তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, থাইল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দেশ, যারা স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেন।
তিনি দুই দেশের ব্যবসায়ীদেরর মধ্যে আরও বেশি যোগাযোগ স্থাপনের গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সেমিনারের মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের উভয় দেশের সরকারের আলোচিত সেক্টর ভিত্তিক সুবিধা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও নিবিড়ভাবে জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চারটি সেশনে অনুষ্ঠিত সেমিনারটিতে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক, বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে বক্তারা আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানে চুলালংকর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মি. পিতি শ্রীসঙ্গম, বিনিয়োগ বোর্ড, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, থাই হালাল খাবার উৎপাদক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রতিনিধিসহ থাই সরকারি বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ উন্নয়ন অনুবিভাগ এর পরিচালক জনাব মো. আরিফুল হক ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
তিনি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ, সম্ভাবনা, বিনিয়োগ প্রণোদনা, বিনিয়োগকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বাংলাদেশের বিনিয়োগের ক্ষেত্র সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, দূতাবাসের কর্মকর্তারা, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট থাই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ব্যাংকক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিবিএএ গঠনে স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হৃদয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত: দোরাইস্বামী
দশ বছর মেয়াদী ভিসা দিচ্ছে থাইল্যান্ড: কারা যোগ্য?
চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে থাইল্যান্ডের ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষ দেশটিতে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য দশ বছর মেয়াদী অভিবাসী ভিসার আবেদন গ্রহণ শুরু করছে।
টিএটি নিউজ জানায়, এছাড়াও এর আরেকটি সুবিধার দিক হলো দশ বছর মেয়াদী ভিসাধারীরা ভ্রমণকালে থাইল্যান্ডের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম শ্রেণির সেবা পাবেন এবং পুনপ্রবেশের অনুমতি দরকার হবে না।
দশ বছর মেয়াদী ভিসার জন্য কারা যোগ্য?
. বিশ্বের ধনাঢ্য ব্যক্তি যার সম্পদের পরিমাণ এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার, দুই বছরের মধ্যে ব্যক্তিগত আয় ৮০ হাজার মার্কিন ডলার বা এর চেয়ে বেশি এবং পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার বা এর বেশি বিনিয়োগ থাইল্যান্ডে আছে।
আরও পড়ুন:নিউজিল্যান্ডে তিমির সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাডুবে নিহত ২, নিখোঁজ ৩
. অবসরপ্রাপ্ত বিদেশি নাগরিক যিনি বছরে ব্যক্তিগতভাবে কমপক্ষে ৮০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করেন।
. থাইল্যান্ডের কর্মজীবী মানুষ, যার পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং বিগত দুই বছরে বার্ষিক আয় ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এবং আইনগতভাবে নিবন্ধিত কোম্পানির বিগত তিন বছরের আয় কমপক্ষে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
. পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসহ নির্দিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পর্যায়ের দক্ষতা সম্পন্ন অভিজ্ঞ পেশাজীবী যার বার্ষিক ব্যক্তিগত আয় ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
. এলটিআর ভিসাধারীর স্ত্রী ও ২০ বছরের কম বয়সী সন্তান-সন্তানাদির সর্বোচ্চ চারজন এই সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
থাইল্যান্ডের এলটিআর ভিসার কতিপয় সুবিধা-
. ১০ বছর মেয়াদী ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ
. প্রতি নব্বই দিনের পরিবর্তে বছরে একবার ইমিগ্রেশনকে অভিবাসন তথ্য জানানো।
. থাইল্যান্ডের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম শ্রেণির সেবা
. একাধিক ভ্রমণে অনুমতি
. থাইল্যান্ডের কাজের সুযোগ(ডিজিটাল কাজের অনুমতি)
. সর্বোচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আয়ের কর কমিয়ে ১৭ শতাংশ নির্ধারণ।
. চার থাই নাগরিক সমান একজন বিদেশি কর্মচারীর অনুপাত থেকে অব্যাহতি।
থাই এলটিআর ভিসা সম্পর্কে আরও তথ্য: https://ltr.boi.go.th/index.html
আরও পড়ুন:৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের টিকার অনুমোদন কানাডার
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি বিশিষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এখন কি করা হবে?
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্পর্কে ১০টি বিষয়
ব্রিটেনের দীর্ঘ মেয়াদী রাজত্বকারী সম্রাজ্ঞী
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২০২২ সালে তার সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পূর্ণ করেছেন। এরমধ্য দিয়ে তিনি ব্রিটিনের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক ও দীর্ঘ মেয়াদী রাজত্বকারী সম্রাজ্ঞীর খেতাব অর্জন করেছেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি তার প্রপিতামহী রানী ভিক্টোরিয়ার রেকর্ড ভঙ্গ করেন, যিনি ৬৩ বছর সাত মাস রাজত্ব করেছিলেন।
২০১৬ সালে, থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের মৃত্যুর পর এলিজাবেথ ছিলেন বিশ্বের দীর্ঘ মেয়াদী রাজত্বকারী সম্রাজ্ঞী।
২০২২ সালে তিনি ১৭ শতকের ফরাসি রাজা চতুর্দশ লুই এর পরে বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয়-দীর্ঘকাল-শাসনকারী সম্রাজ্ঞী হন। চতুর্দশ লুই, মাত্র ৪ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেছিলেন।
এলিজাবেথ ও ভিক্টোরিয়া ছাড়াও ব্রিটিনের ইতিহাসে অন্য চারজন রাজা ৫০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে রাজত্ব করেছেন। তারা হলেন- তৃতীয় জর্জ (৬৯ বছর), তৃতীয় হেনরি (৫৬ বছর), এডওয়ার্ড তৃতীয় (৫০ বছর) ও স্কটল্যান্ডের ষষ্ঠ জেমস (৫৮ বছর)।
বাড়িতে শিক্ষাগ্রহণ
তার সময়ের ও আগের অনেক রাজপরিবারের সদস্যদের মতো, এলিজাবেথও কখনই কোনো পাবলিক স্কুলে যাননি। তিনি তার ছোট বোন মার্গারেটের সঙ্গে বাড়িতেই শিক্ষা গ্রহণ করেন।
তিনি তার বাবার কাছেও শিক্ষা গ্রহণ করেন। এছাড়া তার শিক্ষকদের মধ্যে ইটন কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন ফরাসি ও বেলজিয়ান গভর্নেস তাকে ফরাসি শিখিয়েছিলেন এবং ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ তাকে ধর্ম শিখিয়েছিলেন।
এছাড়াও এলিজাবেথ বাইক চালানো, সাঁতার কাটা, নাচ, ফাইন আর্টস ও সঙ্গীত শেখেন।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাক্রম
‘নং ২৩০৮৭৩’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, প্রিন্সেস এলিজাবেথ সংক্ষেপে ‘নং ২৩০৮৭৩’ নামে পরিচিত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের হয়ে কাজ করার জন্য এলিজাবেথকে অক্সিলারি টেরিটোরিয়াল সার্ভিসে একজন সাবল্টার্ন (জুনিয়র অফিসার) করা হয়।
যুদ্ধের কাজে সম্পৃক্ত হতে তার বাবা-মায়ের অনুমতিতে তিনি অ্যাম্বুলেন্স ও ট্রাক চালাতে ও প্রয়োজনে সেগুলো মেরামত করতে শিখেছিলেন।
‘গ্রেট মিমিকার'
এলিজাবেথ প্রায়ই চেহারায় ভারিক্কি অভিব্যক্তি বজায় রাখতেন, তাই অনেকেই তাকে ‘জুজু মুখো’ বলে অভিহিত করতেন। কিন্তু যারা তাকে কাছে থেকে চিনতেন, তারা তাকে একটি দুষ্টু, হাস্যরসিক ও অন্যের অভিব্যক্তি নকল করার অসামান্য প্রতিভাধর বলে বর্ণনা করতেন।
ক্যান্টারবারির সাবেক আর্চবিশপ রোয়ান উইলিয়ামস বলেছেন, রানি ‘ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত মজা করতে পারে। কেউ তার এ বিষয়টির প্রশংসা করে না যে, তিনি কতটা মজা করতে পারেন।’
রানির পারিবারিক যাজক বিশপ মাইকেল মান একবার বলেছিলেন যে ‘রানির কনকর্ড অবতরণ করাকে অনুকরণ করা আপনাদের দেখা সবচেয়ে মজার কাজগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে।’
এছাড়াও ইয়ান পাইসলি নামের একজন আইরিশ পাদ্রী ও রাজনীতিবিদ বলেছেন, এলিজাবেথ একজন ‘দারুন অনুকরণকার’ ছিলেন।
রাজকীয় করদাতা
তিনি রানি হয়েও ১৯৯২ সালে থেকে ট্যাক্স দিতেন।
১৯৯২ সালে যখন রানির অবকাশ যাপনের বাসভবন উইন্ডসর ক্যাসেল আগুনে পুড়ে যায়, তখন জনসাধারণ মেরামতের জন্য কয়েক লাখ পাউন্ড দেয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ (১৯২৬-২০২২) : ইতিহাসের দ্বিতীয় দীর্ঘমেয়াদী রাজত্বকারী সম্রাজ্ঞীর বিদায়
তখনন তিনি স্বেচ্ছায় তার ব্যক্তিগত আয়ের ওপর কর দিতে রাজি হয়েছেন।
রানি বলেছিলেন, মেরামত কাজের ব্যয়ের ৭০ শতাংশ তিনি পূরণ করবেন এবং তিনি অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে প্রথমবারের মতো বাকিংহাম প্যালেসে তার বাড়িটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ছোট্ট লিলিবেট
তার মা, মাতামহী ও প্রমাতামহীর সম্মানে রানিকে ইয়র্কের এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি উইন্ডসর নামে নামকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু শৈশবে তার পরিবাররের সদস্যদের কাছে তিনি ছোট্ট লিলিবেট নামেই পরিচিত ছিলেন। কারণ তিনি সঠিকভাবে ‘এলিজাবেথ’ নামটি উচ্চারণ করতে পারতেন না।
তার নানী কুইন মেরির কাছে একটি চিঠিতে, তরুণ রাজকুমারী লিখেছেন: ‘প্রিয় ঠাকুরমা। সুন্দর ছোট্ট জার্সির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা আপনার সঙ্গে স্যান্ড্রিংহামে থাকতে পছন্দ করি। আমি গতকাল সকালে সামনের একটি দাঁত হারিয়ে ফেলেছি।’ চিঠিটির শেষে লেখা- ‘লিলিবেটের পক্ষ থেকে ভালবাসা।’
প্রিন্স হ্যারি ও সাসেক্সের ডাচেস মেগান ২০২১ সালে তাদের মেয়ের নাম লিলিবেট ডায়ানা রাখার পরে রানির ডাকনামটি আরও ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
দীর্ঘ দাম্পত্যজীবন
এলিজাবেথ ও তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপ ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক উপভোগ করেছেন। তাদের এই বন্ধনের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে তার চার সন্তানের মধ্যে তিনজন দীর্ঘ বৈবাহিক জীবন কাটান। তারা হলেন- চার্লস, অ্যান ও অ্যান্ড্রু।
রানী তাদের ৫০তম বিবাহ বার্ষিকীতে ফিলিপ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তিনি খুব আন্তরিকভাবে এত বছর ধরে আমার অবলম্বন হয়ে আছেন।’
তাদের গল্প শুরু হয়েছিল ১৯৩৯ সালে, যখন গ্রিসের ১৮ বছর বয়সী সুদর্শন নৌ ক্যাডেট প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে ১৩ বছর বয়সী এলিজাবেথের দেখা হয় একদিনের জন্য। এর বেশ কয়েক বছর পরে ফিলিপকে ক্রিসমাসে উইন্ডসর ক্যাসেলে রাজপরিবারে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এই দম্পতি ১৯৪৭ সালে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে বিয়ে করেন।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে দেখতে যাচ্ছেন স্বজনরা
তার ছেলে অ্যান্ড্রুর মতে, ফিলিপ যখন ২০২১ সালে ৯৯ বছর বয়সে মারা যান, তখন এলিজাবেথ তার জীবনে একটি ‘বিশাল শূন্যতা’ তৈরি হওয়ার কথা বলেছিলেন।
একাধিক জন্মদিন
এলিজাবেথ ১৯২৬ সালের ২১শে এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কবে তার জন্মদিন উদযাপন করা হবে তা জনসাধারণের জন্য কখনও কখনও বিভ্রান্তির বিষয়ে পরিণত হতো। কেননা তার ‘অফিসিয়াল জন্মদিন’ এর জন্য সর্বজনীনভাবে কোনো তারিখ নির্ধারিত ছিল না- এটা জুনের প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় শনিবার হতো, তবে কবে উদযাপিত হবে সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিত।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় তার জন্মদিন জুনের দ্বিতীয় সোমবার উদযাপিত হতো।
শুধুমাত্র রানি ও তার কাছের মানুষেরা পারিবারিক পরিসরে তার প্রকৃত জন্মদিন উদযাপন করতেন।
অনেকগুলো কর্গির মালিক
এটি সর্বজনবিদিত যে এলিজাবেথ কর্গি (এক ধরনের ছোট জাতের কুকুর) ভালোবাসতেন। এমনকি প্রিন্সেস ডায়ানা এই কুকুরগুলোকে রানির ‘চলন্ত কার্পেট’ বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এগুলো তার সঙ্গে সর্বত্র চলাফেরা করতো।
তিনি অনেক বছর ধরে ৩০ টিরও বেশি কর্গির মালিক ছিলেন। তার দুটি ‘ডরগিস’ ছিল-ড্যাচসুন্ড ও কর্গির ক্রস ব্রিড। যাদের নাম ছিল- ক্যান্ডি ও ভলকান।
এলিজাবেথ ১৯৩৬ সালে ১০ বছর বয়সে একটি কুকুরকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলেছিলেন এবং তার ১৮ তম জন্মদিনে সুসান নামে তাকে একটি কর্গি দেয়া হয়েছিল।
১৯৩৩ সালে স্থানীয় ক্যানেল থেকে ডুকি নামে একটি পুরুষ কর্গি কেনার মধ্য দিয়ে তার বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জ রাজপরিবারের সঙ্গে এই প্রাণীর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
রানি হিসেবে তিনি ব্রিটেনের উন্মুক্ত জলাশয়ের কয়েক হাজার রাজহাঁসের মালিক ছিলেন এবং ১৩২৪ সালের একটি আইন অনুসারে তার সমস্ত স্টার্জন, পোর্পোইজ, তিমি ও ডলফিন দাবি করার অধিকার ছিল।
‘এ প্রিটি নাইস গার্ল’
রানী অনিবার্যভাবে পপ গানের বিষয় হয়ে ওঠে।
দ্য বিটলসের পল ম্যাককার্টনির গাওয়া ‘হার ম্যাজেস্টি’ গানটি সেসময় মানুষের মুখে মুখে ফিরেছিল। রানিকে নিয়ে পল গেয়েছিলেন ‘হার ম্যাজেস্টি এ প্রিটি নাইস গার্ল, বাট শি ডাজেন্ট হ্যাভ আ লট টু সে…’। ১৯৬৯ সালে রেকর্ড করা সংক্ষিপ্ত এই গানটি ‘অ্যাবে রোড’ অ্যালবামের শেষে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
তবে তাকে নিয়ে রচিত অন্যান্য গানগুলো অবশ্য এতটা মধুর ছিল না। ১৯৭৭ সালে তার রজত জয়ন্তীর ঠিক আগে প্রকাশিত `দ্য সেক্স পিস্তল’ ব্যান্ডের রাজতন্ত্রবিরোধী ‘গড সেভ দ্য কুইন’ গানটি ব্রিটিশ টেলিভিশনে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।