বন্যা
আফগানিস্তানে বন্যায় ৩৫ জনের মৃত্যু, আহত ২৫০
আফগানিস্তানে বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছে ২৫০ জন।
সোমবার বিকালে পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
নানগারহারের তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রাদেশিক পরিচালক কুরিশি বাদলন জানান, প্রাদেশিক রাজধানী জালালাবাদ, সুখ রদ জেলা এবং পাকিস্তান সীমান্তবর্তী প্রদেশের আশপাশের এলাকাগুলোতে এই দুর্যোগ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার সকালে নানগারহারের পার্শ্ববর্তী কুনার প্রদেশেও একই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে গত মে মাস থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় চার শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
আরও পড়ুন: বন্যায় কুড়িগ্রামে কৃষিতে শত কোটি টাকার ক্ষতি
বন্যায় কুড়িগ্রামে কৃষিতে শত কোটি টাকার ক্ষতি
কুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় দফার দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। জেলার ৯ উপজেলায় শুধুমাত্র কৃষিতেই ক্ষতি হয়েছে ১০৫ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলার ৯ উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমির বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০৫ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি কৃষক।
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের গারুহারা এলাকার কৃষক কোবাদ আলী বলেন, ‘আমার এক বিঘা জমির পটলের আবাদ শেষ। এখনও বাড়ির চারিদিকে পানি। আমন বীজতলা করতে পারছি না। আমন আবাদও মনে হয় করা হবে না।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ বাড়ছে হাওরপাড়ের বাসিন্দাদের
একই এলাকার কৃষক আব্বাস বলেন, ‘বন্যার পানিতে এখনও সব জমি তলিয়ে। বীজতলা করার সময় শেষের দিকে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের এলাকার কৃষক কিভাবে আবাদ করবে সেই দুশ্চিন্তায় আছে সবাই।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যায় কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করছি। এছাড়াও কৃষকরা যেন আমন আবাদ ভালোভাবে করতে পারে সেই পরামর্শ দিচ্ছি।
অন্যদিকে বন্যার পানির প্রবল স্রোতে কাঁচা-পাকা সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে এসব সড়ক ও ঘরবাড়ির ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ পর ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে বন্যার কোনো পূর্বাভাস নেই।
আরও পড়ুন: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে: এফএফডব্লিউসি
আবারও বাড়ছে যমুনার পানি, সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি
উজানের ঢল ও বর্ষণে আবারও যমুনার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাতভর দফায় দফায় বৃষ্টি ও উজানের ঢলে যমুনার পানি আবারও বাড়ছে। এতে নদীর তীরবর্তী চৌহালী, বেলকুচি, শাহজাদপুর, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল আবারও বন্যার কবলে পড়েছে। বন্যার পানিতে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলের অনেক পরিবার স্থানীয় ওয়াপদা বাঁধ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে তৃতীয় দফায় বন্যা, লাখো মানুষ পানিবন্দি
স্থানীয়রা জানান, নদীর তীরবর্তী চৌহালী, বেলকুচি, শাহজাদপুর, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে বহু ঘরবাড়ি, গাছপালা ও জায়গাজমি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। বিশেষ করে চৌহালী উপজেলার ভূতের মোড় থেকে ময়নাল সরকারের কবরস্থান পর্যন্ত তীব্র ভাঙনে কবলে পড়েছে।
এছাড়া কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ি, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিস, শাহজাদপুর উপজেলার হাটপাচিল, জালালপুর, কৈজুড়ী ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ও বিষয়টি স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোর্য়াটার) নাজমুল হাসান বলেন, ‘যমুনায় পানি আবারও বাড়ছে। এতে নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নজর রাখছেন।’
জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, ‘যমুনায় আবারও পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় দেড় সপ্তাহ ধরে স্থানীয় এমপি, ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকার বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন।’
আরও পড়ুন: যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশঙ্কা
বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
প্রতিবারের মতো এ বছরের বর্ষা মৌসুমেও বন্যাগ্রস্ত অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি সামলাতে হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বের বিভাগ সিলেটের অধিবাসীদের। বন্যার পানি ও শিল্পকারখানার বর্জ্যের সঙ্গে মিশ্রিত পানি সৃষ্টি করছে অস্বাস্থ্যকর বিপজ্জনক পরিবেশ। ফলে শঙ্কা বাড়ছে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড ও হেপাটাইটিস এ-এর মতো রোগের সংক্রমণের। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পর্যাপ্ত সেবা নিশ্চিত করতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রগুলোকে। এমন ক্রমবর্ধমান সঙ্কটে প্রতিটি মহল্লা বা পাড়া, পরিবার, এমনকি ব্যক্তি পর্যায় থেকেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলুন, বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে দূরে থাকার উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে করণীয়
পানি ফুটিয়ে নেওয়া
পানি থেকে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও অন্যান্য পরজীবীর মতো ক্ষতিকারক রোগজীবাণু নির্মূল করার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে পানি ফুটানো। এর জন্য কমপক্ষে এক মিনিট থেকে সর্বোচ্চ তিন মিনিট পর্যন্ত পানি গরম করা উচিৎ। অতঃপর ঠান্ডা করে পান করা সহ প্রয়োজনীয় কাজে এই পানি ব্যবহার করা যাবে। ফুটানোর বিকল্প হিসেবে পানি পরিশোধন ট্যাবলেট বা পানির ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এগুলোর থেকে ফুটানোর মাধ্যমেই সবচেয়ে কার্যকরী ভাবে জীবাণু নির্মূল হয়। সর্বত ভাবে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে বন্যার পর ডায়রিয়া বা কলেরার সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়।
আরও পড়ুন: বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
বন্যার পানি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা
পয়ঃনিষ্কাশন, রাসায়নিক পদার্থ এবং অন্যান্য আবর্জনার কারণে বন্যার পানি দূষিত হয়। প্লাবিত রাস্তাঘাটে যাতায়াতের সময় এবং ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়লে হরহামেশাই মানুষ এই দূষিত পানির সংস্পর্শে আসে। আর এ থেকেই তৈরি হয় নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি। বন্যার পানিতে থাকে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু, যা বিভিন্ন ভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তাই সংস্পর্শ যতটা সম্ভব কমানোর জন্য পানিরোধী বুট এবং গ্লাভ্স পরা যেতে পারে। এছাড়া সংস্পর্শের সঙ্গে সঙ্গেই সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে সংস্পর্শে যাওয়া শরীরের স্থানটি ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই সাবধানতা ত্বকের সংক্রমণের মতো গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।
ঘরবাড়ির মেঝে জীবাণুমুক্ত করা
অতিরিক্ত বন্যায় দূষিত পানি বাড়ির আঙ্গিনা সহ ঘরের ভেতরে ঢুকে যেয়ে সর্বত্রে রোগজীবাণু ছড়াতে পারে। গ্রামের ঘরবাড়ি এবং শহরের নিচ তলার বারান্দা ও ঘরগুলো এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। তাই বাড়ির চারপাশ সহ ঘরের মেঝে, ফার্নিচার, দরজার হাতল এবং পানির কলগুলো জীবাণুমুক্ত করা আবশ্যক। এর জন্য এক গ্যালন পানিতে এক কাপ পরিমাণ ব্লিচ মিশিয়ে তৈরিকৃত দ্রবণ দিয়ে স্থানগুলো মুছতে হবে। পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার আগে দ্রবণটিকে কমপক্ষে ১০ মিনিটের জন্য ভালভাবে মিশতে দিতে হবে। এ সময় হাতে ডিস্পোজেবল গ্লাভ্স পরতে হবে, আর ধোয়া-মোছার সময় জানালা খুলে দিয়ে ঘরে বায়ুচলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
শুকনো খাবার, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রী সংরক্ষণ
ভারী বর্ষণে এবং পরবর্তীতে বন্যার সময় দীর্ঘ সময় যাবৎ পানিবন্দি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় তাৎক্ষণিক ভাবে খাদ্যসামগ্রী, খাবার পানি এবং ঔষধপত্র সংগ্রহের উপায় থাকে না। তাই আগে থেকেই মুখবন্ধ পানিরোধী পাত্রে জরুরি খাবার এবং খাবার পানি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। টিনজাত এবং শুকনো খাবারের মতো অ-পচনশীল খাবার বা যেগুলোর জন্য খুব বেশি রান্নার প্রয়োজন হয় না এমন খাবার জমিয়ে রাখতে হবে। পানীয় এবং স্যানিটেশনের প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পানি সঞ্চয় করতে হবে। সঞ্চয়ের তালিকায় প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য দরকারি প্রতিটি ঔষধও রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
বর্জ্য অপসারণ
নর্দমা এবং বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সামগ্রী বা ধ্বংসস্তূপের ময়লা-আবর্জনার যথাযথ নিষ্পত্তি দরকার। বর্জ্যের জন্য নির্দিষ্ট বিন ব্যবহার এবং তা সময়মতো অপসারণ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। ধোঁয়া ছড়াতে পারে এমন পোড়া উপকরণগুলোর নিষ্পত্তির সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। সিটি করপোরেশনের নিয়োজিত আবর্জনা সংগ্রহকারী কর্মীরা যথাসম্ভব দ্রুত বর্জ্য অপসারণে সক্রিয় থাকছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই বিষয়ে এলাকার সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কেননা অব্যবস্থাপনার শিকার হওয়া বর্জ্য হেপাটাইটিস ই এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটায়।
বৃষ্টির পানি কাজে লাগানো
বন্যার সময় যখন পানির প্রায় সব কৃত্রিম উৎসগুলো দূষিত হয়ে যায়, তখন বৃষ্টির পানি হতে পারে সব থেকে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। খোলা জায়গায় মুক্ত ভাবে পড়ন্ত বৃষ্টির পানি সরাসরি একটি পরিষ্কার পাত্রে সংগ্রহ করা যায়। যেখানে এই সুযোগ নেই সেখানে পানি সংগ্রহের পর তা একটি পরিষ্কার কাপড়ের মাধ্যমে ফিল্টার করতে হবে। অতঃপর কমপক্ষে এক মিনিট সিদ্ধ করে যাবতীয় রোগজীবাণু মেরে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুন: স্পঞ্জ সিটি: ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বন্যা-জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান
স্পঞ্জ সিটি: ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বন্যা-জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান
অনিয়ন্ত্রিত নগর ও শিল্পায়নের নিষ্পেষণে প্রতি বছরই বৃষ্টির মৌসুমে দেশের অধিকাংশ শহরগুলোর প্রধান সমস্যা থাকে বন্যা ও জলাবদ্ধতা। সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি, যাতায়াত সমস্যা, মশা ও রোগের উপদ্রব- সব মিলিয়ে জনজ্জীবন রীতিমতো স্থবির হয়ে পড়ে। এই স্থবিরতায় গতি ফেরাতে পারে ‘স্পঞ্জ সিটি’। উদ্ভাবনী ধারণাটি ইতোমধ্যে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কার্যকরভাবে পানি অপসারণের কাঙ্ক্ষিত সুফলও মিলছে সেই সঙ্গে। কী এই স্পঞ্জ সিটি, এই ধারণার উৎপত্তিই বা কোথায়- সেসব বিষয়ে বিশদ আলোচনার পাশাপাশি চলুন জেনে নেই কীভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে বাংলাদেশের বন্যা ও জলাবদ্ধতা সমস্যা মোকাবিলা করা যেতে পারে।
স্পঞ্জ সিটি কী
বন্যা ও জলাবদ্ধতা প্রশমিত করার জন্য প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও অপসারণের বিভিন্ন পদ্ধতিকে সামগ্রিকভাবে ‘স্পঞ্জ সিটি’ বলা হয়। এখানে মূলত পানি নিষ্কাশনের উপযোগী রাস্তাঘাট নির্মাণ, সবুজায়ন ও পানি সঞ্চয় ব্যবস্থার মাধ্যমে পৃথিবীর পানিচক্রকে অনুসরণের চেষ্টা করা হয়।
স্পঞ্জ সিটি ধারণার প্রবর্তন করেন চীনা ল্যান্ডস্কেপ স্থপতি ও অধ্যাপক কংজিয়ান ইউ। শৈশবে একবার তিনি ধানখেতে কাজ করার সময় বন্যায় প্রায় ডুবে যাওয়া থেকে বেঁচে যান। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতাটিই মূল রসদ জুগিয়েছে পরবর্তীতে তার প্রকৃতি-বান্ধব নগরায়ন নিয়ে কাজ করার।
পূর্বে এ নিয়ে তার বেশ বিশদ গবেষণা থাকলেও ধারণাটি দৃশ্যমান হয় ২০০০ সালে বেইজিং ঝংগুয়ানকুন লাইফ সায়েন্স পার্ক নির্মাণের সময়। এখানে ব্যবহৃত ব্যবস্থাটির নাম ছিল ‘আর্থ-লাইফ সেল্স’, যেখানে জলাভূমি তৈরির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে তা বিশুদ্ধ করা হয়েছিল। এর ফলে শহরের নির্ভরযোগ্য পানি ব্যবস্থাপনা গঠনে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক রচিত হয়।
আরও পড়ুন: সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ঢাকায় জলাবদ্ধতার ভয়ংকর রূপ
স্পঞ্জ সিটি যেভাবে কাজ করে
এখানে জলাবদ্ধতা বা বন্যা সমস্যা নিরসণ এবং পানির গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বৃষ্টির পানিকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগানো হয়। স্পঞ্জ নগরায়নের একটি পদ্ধতি হচ্ছে একদিকে রাস্তাঘাট পানি প্রবেশের উপযোগী করে তোলা, অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণ করা। এতে করে নানা দুর্যোগে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের স্থানগুলো দিয়ে সরাসরি সেই জলাধারে জমা হতে পারে। এই পানি পরবর্তীতে শহরের বিভিন্ন কাজে লাগার পাশাপাশি উষ্ণ মৌসুমগুলোতে শহরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখে।
আরেকটি উপায় হচ্ছে সড়ক ও ভবন সবুজায়ন। এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদগুলো বৃষ্টির পানি শোষণ করে ও পানি অপসারণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় নেয়। ফলশ্রুতিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে না।
এছাড়া কৃত্রিম জলাভূমি বানিয়ে তার চারপাশে রেইন গার্ডেন বা বৃষ্টি বাগান সাজানো হলে, তা ঝড়-বৃষ্টির সময় পানি বিশোধনে কাজে লাগে। এই বাগানগুলো গড়ে তোলা হয় বাড়ির ছাদ, ফুটপাত ও গাড়ি চলাচলের পার্শ্ব রাস্তা এবং পার্কিং লটসহ বিভিন্ন সংকীর্ণ এলাকায়।
বৃষ্টি বাগান সাধারণত জলাভূমির চারপাশজুড়ে সাজানো হয়, যেখানে থাকে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। এগুলো পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টি সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্প ছেড়ে দিয়ে চিরায়ত শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এ সময় উদ্ভিদগুলো আশেপাশের পরিবেশ থেকে তাপ টেনে নেয় বিধায় পরিবেশ ঠান্ডা থাকে।
আরও পড়ুন: জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস নেদারল্যান্ডসের
বিশ্বব্যাপী স্পঞ্জ সিটির প্রভাব
স্পঞ্জ সিটি ধারণার প্রবর্তক দেশ হিসেবে অভিনব কৌশলটি বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিক পালন করে আসছে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন। উহান ও শেনঝেনসহ দেশটির ৩০টিরও বেশি শহর এই পদ্ধতি সফলভাবে প্রয়োগ করেছে। ফলে এই শহরগুলোতে বন্যার মাত্রা আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। একই সঙ্গে ব্যবহার্য পানির গুণগত মান উন্নয়নে সারা বিশ্বে তারা দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে।
উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডস অনেক আগে থেকেই তাদের দক্ষ পানি ব্যবস্থাপনার জন্য পরিচিত ছিল। সেখানে এই স্পঞ্জ সিটি আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে রটারড্যামের তৈরি জল প্লাজাগুলো ভারী বৃষ্টির সময় পানি ধরে রাখার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই পানি শুষ্ক আবহাওয়ায় নগরের ভূ-ত্বকের তাপমাত্রা আরামদায়ক করে রাখে।
পশ্চিমা ইউরোপীয় দেশ জার্মানিতে হামবুর্গের মতো শহরগুলো এখন স্পঞ্জ সিটির আওতাভূক্ত। হাফেনসিটি জেলায় ঝড়ের পানি ব্যবস্থাপনার জন্য রয়েছে সবুজ ছাদ, পানির প্রবেশযোগ্য গ্রীড ফুটপাত ও বৃষ্টি বাগান। এগুলো যে শুধু জলাবদ্ধতাই কমিয়েছে তা নয়, সেই শহরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকেও উন্নত করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস-অ্যাঞ্জেলেস, নিউ ইয়র্ক ও ফিলাডেলফিয়ার মতো উন্নত শহরগুলো তাদের নামের সার্থকতা বজায় রেখেছে। নিউ ইয়র্কের ব্লুবেল্ট প্রোগ্রাম প্রাকৃতিক নিষ্কাশন করিডোর ব্যবহার করছে ঝড়ের পানি ব্যবস্থাপনার জন্য। ফিলাডেলফিয়ার গ্রিন সিটি ও ক্লিন ওয়াটার্স উদ্যোগগুলো পানিসহ বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা ছাড়াই নিশ্চয়তা দিচ্ছে শিল্পায়নের।
যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম শহর লন্ডন নাইন এলমস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ-বান্ধব শহরায়ন নিশ্চিত করেছে।
ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী পূর্ব আফ্রিকার দুর্যোগপ্রবণ দেশ কেনিয়াও ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে সবুজ অবকাঠামো স্থাপনায়। তাদের আপ্রাণ চেষ্টার ফসল হচ্ছে কিটুই ও কাজিয়াদি শহরের রেইন গার্ডেন এবং সুপরিকল্পিত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাগুলো।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত দাবদাহে যেভাবে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখবেন
বাংলাদেশের বন্যা সমস্যা নিরসণে স্পঞ্জ সিটির কার্যকারিতা
ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণ
পানি না জমলে বা জমে থাকা পানি সরে গেলেই আর জলাবদ্ধতা বা বন্যার আশঙ্কা থাকে না। কিন্তু এই পানি সরে পড়ার জন্য প্রয়োজন বাধা-বিঘ্ন মুক্ত নির্দিষ্ট পথ, যেটি শেষ হবে নদীতে গিয়ে। পানি অপসারণের এই চ্যানেল তৈরিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে পারে ভূগর্ভস্থ জলাধার। এটি শুধু সরে পড়া পানিকে জায়গাই দিবে না, বরং সঞ্চিত পানিকে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য রীতিমতো সম্পদে রূপ দিবে। এই পানি ব্যবহার করা যাবে আগুন নেভানোর কাজে। গরমের প্রচণ্ড দাবদাহে পানি ভর্তি জলাধার সাহায্য করবে ভূ-ত্বকের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে।
পানি প্রবেশযোগ্য ফুটপাত তৈরি
ছোট-বড় যেমনি হোক না কেন, মহাসড়কের দু’পাশের ফুটপাত পানি অপসারণের উৎকৃষ্ট জায়গা হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে। পায়ে চলাচলের এই রাস্তার গড়নে ব্যবহার করা যেতে পারে ছিদ্রযুক্ত কংক্রিট, ভেদযোগ্য অ্যাস্ফাল্ট ও ইন্টারলকিং পেভারের মতো উপাদানগুলো। এটি ফুটপাত ও প্রধান সড়কের সংযোগস্থলে থাকা অকেজো উন্মুক্ত ড্রেনের বিকল্প হতে পারে। বর্তমান ড্রেন ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট দূরত্বে দুয়েকটি গর্ত থাকায় ময়লা-আবর্জনা জমে পানি অপসারণের পথ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু গ্রিড সিস্টেমের ফুটপাতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।
ছাদ সবুজায়ন
প্রতিদিন আকাশচুম্বী অট্টালিকা নির্মাণের কারণে এখন পথে ঘাটে গাছ লাগানোর জায়গা থাকে না। অবকাঠামো স্থাপনের জন্য উল্টো বরং অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে ভবনের ছাদকে সবুজ গাছপালা দিয়ে সাজিয়ে তোলা যেতে পারে। এই বাগানগুলোতে থাকা প্রতিটি উদ্ভিদ এবং মাটি পানি শোষণের প্রধান হাতিয়ার।
জলাবদ্ধতা দূরীকরণের পাশাপাশি সবুজ ছাদ বায়ুর গুণমান বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর। ঢাকার মতো উষ্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ শহরে এই সবুজায়ন পদ্ধতি হতে পারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত উপায়।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত গরমে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়
বৃষ্টি বাগান ও জলাভূমি তৈরি
ঢাকার মতো শহরগুলোতে বৃষ্টি বাগানসহ জলাভূমির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া বেশ মুশকিল। কিন্তু এরপরেও নগরের পরিবেশ রক্ষার্থে এই কার্যক্রমটি অবশ্য করণীয়। পূর্বাচলের ৩০০ ফুট ইতোমধ্যে একটি দারুণ দৃষ্টান্ত উপস্থান করেছে। দৃষ্টি নন্দন উদ্যানের পাশে জলাভূমি তৈরি না করলেও দু’পাশের ১০০ ফুট প্রশস্ত খালগুলো রিটেনশন পন্ডের কাজ করে। কেননা আশেপাশের ছোট ছোট খালগুলোর পানি এই খাল দুটোতে মিশে বালু নদী পর্যন্ত চলে গেছে। এতে করে চওড়া রাস্তা বন্যায় প্লাবিত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। অন্যদিকে সবুজ উদ্যান স্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য পুরো সড়কটিকে পরিণত করেছে দর্শনীয় স্থানে।
বায়োসওয়েলস ও উদ্ভিজ্জ স্ট্রিপস স্থাপন
বিভিন্ন ধরনের দূষণ প্রশমণের সময় গাছপালা দিয়ে তৈরি নির্দিষ্ট আকৃতির চ্যানেল হচ্ছে বায়োসওয়েলস। এর মাধ্যমে ঝড়ের পানি শোষণ বা নির্দিষ্ট দিকে পরিবাহিত করা হয়, যেগুলো জমা হয় ভূগর্ভস্থ জলাধারে। বায়োসওয়েল দিয়ে পানি দ্রুত প্রবাহিত হতে পারে না বিধায় পানিতে থাকা যাবতীয় দূষিত পদার্থ অপসারিত হয়ে যায়।
উদ্ভিজ্জ স্ট্রিপগুলোর উদ্দেশ্যও একই। খেতের সীমান্ত দিয়ে রোপণ করা স্ট্রিপগুলো আকৃতিতে আরও সংকীর্ণ হয়। এগুলোতে ব্যবহার করা উদ্ভিদগুলোর মধ্যে রয়েছে বহুবর্ষজীবী ঘাস বা শিম গাছ।
পরিশিষ্ট
ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বন্যা ও জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে স্পঞ্জ সিটি। পানি অপসারণে উপযোগী ফুটপাত, ভূগর্ভস্থ জলাধার, সবুজ ছাদ, বৃষ্টি বাগান, বায়োসওয়েলস ও উদ্ভিজ্জ স্ট্রিপগুলো সম্মিলিতভাবে উন্নত পরিবেশ গঠনের সহায়ক।
পানির গুণমান বৃদ্ধির পাশাপাশি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতিগুলো বাংলাদেশের জন্য অতীব জরুরি। সেই সঙ্গে ব্যবহারিকভাবে স্বীকৃত এই তত্ত্বের বাস্তবায়নের মধ্যে নিহিত রয়েছে পরিবেশ দূষণ এড়িয়ে শিল্পায়নের অপার সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
জামালপুরে বন্যার পানিতে ডুবে যুবকের মৃত্যু
জামালপুরে বন্যার পানিতে ডুবে সোহেল (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার নাংলা নইলা ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
সোহেল মেলান্দহ উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, বন্ধুরা মিলে স্থানীয় নাংলা নইলা ঘাটে বন্যার পানিতে গোসল করতে যায় সোহেল। এক পর্যায়ে অন্য বন্ধুরা তীরে উঠলেও সোহেল পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেয়। ডুবুরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মেলান্দহ থানার কর্মকর্তা মো. রাজু আহমেদ বলেন, জামালপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া সোহেলের লাশ উদ্ধার করেছে। অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্যার পানিতে ডুবে মাদরাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু
শেরপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি
বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে গাইবান্ধা সদর উপজেলাসহ ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের ৬৭ হাজার ৭২৯ পরিবার।
বন্যার পানিতে ডুবে গেছে পাট, আউশ ধান ও আমন বীজতলাসহ আড়াই হাজার হেক্টরের অধিক জমির ফসল। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের।
পানি ওঠায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি অর্ধলক্ষেরও বেশি মানুষ
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, শনিবার ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার বাড়লেও বিপৎসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নতুন-নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষ শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বড় আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: চলমান বন্যায় ১৫টি জেলার ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত: দুর্যোগমন্ত্রী
জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাইবান্ধার সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের ৯টি, সাঘাটার ৮টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে।
এই ২৯ ইউনিয়নে পানিবন্দি রয়েছে ৬৭ হাজার ৭২৯টি পরিবার।
তবে স্থানীয়দের দাবি বাস্তবে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা আরও বেশি। পানিবন্দি এসব মানুষের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে মোট ১৮১টি আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাঘাটা উপজেলায় রয়েছে ৩৬টি, সুন্দরগঞ্জে ৪৮টি, ফুলছড়িতে ২৩টি, সদরে ২৪টি, সাদুল্যাপুরে ৩৩টি, পলাশবাড়ীতে ৬টি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা রয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘চলমান বন্যায় ৪ উপজেলায় ২ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাকসবজি পানিতে ডুবে গেছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষতি কম হবে। অন্যথায় ফসল পচে নষ্ট হয়ে যাবে।’
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, ‘এ পর্যন্ত সদরসহ চার উপজেলার বন্যার্ত মানুষের মাঝে ৩ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬৫ টন জিআর চাল (প্রাকৃতিক দুর্যোগ), ১০ লাখ টাকা জিআর নগদ চারটি উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২৬৫ টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে।
চলমান বন্যায় ১৫টি জেলার ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত: দুর্যোগমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, ‘উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ১৫টি জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী মাস (আগস্ট) কিংবা তার পরের মাসেও (সেপ্টেম্বর) এরকম আরেকবার বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বন্যার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।’
এছাড়া প্রতিদিনই বন্যা বিস্তৃতি লাভ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালে ২০ জেলায় ৬৮৮০ কোটি টাকার ক্ষতি: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
শনিবার (৬ জুলাই) সচিবালয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রংপুর, জামালপুর, গাইবান্ধা, ফেনী, রাঙ্গামাটি, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কক্সবাজার জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যাকবলিত ১৫ জেলায় এ পর্যন্ত নগদ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা, ৮ হাজার ৭০০ টন ত্রাণের চাল, ৫৮ হাজার ৫০০ বস্তা শুকনো ও অন্যান্য খাবার, শিশু খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা ও গো-খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
দুর্যোগমন্ত্রী বলেন, ‘পুরো ১৫ জেলায় মানুষ পানিবন্দি নয়। কোনো কোনো জেলা আংশিকভাবে প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ২২৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বন্যায় এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। তবে কেউ মারা যায়নি।’
বন্যাকবলিত অঞ্চল নিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বন্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে, সেই জায়গাগুলোকেও আমরা চিহ্নিত করব। বন্যার কারণে দক্ষিণ দিকেও প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া সবার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। তারপরও বিভিন্ন সময় পত্রিকায় দেখি কোন কোন জায়গায় খাদ্য পায়নি। এজন্য আমরা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব।’
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্য, ডিসি, ইউএনও- যখন যেটা চাচ্ছে আমরা দিচ্ছি। তারপরও ঘাটতি থাকার কোনো কারণ নেই। আমরা মনে করি বন্যাদুর্গত এলাকায় যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত।’
এছাড়া টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের বন্যা সরেজমিনে দেখতে রবিবার (৬ জুলাই) সেখানে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন মহিববুর রহমান।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে ডিআরএফ প্রণয়ন করা হবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
সব মন্ত্রণালয়ের ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা ৯ জুন চূড়ান্ত করব: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটের শিক্ষাব্যবস্থা
চলতি বছরে টানা তৃতীয় দফা বন্যায় সিলেটের অবস্থা বিপর্যস্ত। সড়ক, কৃষি, মৎস্য, অবকাঠামোসহ নানা খাতে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের উত্তর-পূর্বের এই জেলা। ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষা খাতেও।
বন্যার কারণে জেলার প্রায় ৫০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ আছে। এর মধ্যে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি জমে আছে আর বাকিগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ অবস্থায় ঈদের ছুটির পর থেকেই বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান।
শিখন ঘাটতি কমাতে ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি কমিয়ে ২ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৬ জুন থেকে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান শুরু হয়। তবে সিলেটের অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঈদের পর আর পাঠদান শুরু হয়নি। একই অবস্থা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোরও। ঈদের ছুটির পর ৩ জুলাই থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও বন্যার কারণে সিলেটে তা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে জানা গেছে, বন্যার কারণে সিলেট জেলায় ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে ৭৮টি। এছাড়া কয়েকটি কলেজে পানি উঠে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার মোট ১ হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯৮টিই এখন বন্ধ। এর মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৩৭, বিশ্বনাথে ২, বালাগঞ্জে ৫৫, ফেঞ্চুগঞ্জে ৩২, গোলাপগঞ্জে ২৭, বিয়ানীবাজারে ৫৪, জকিগঞ্জে ২৩, কানাইঘাটে ৪, জৈন্তাপুরে ৩, গোয়াইনঘাটে ২, কোম্পানীগঞ্জে ৬৫, দক্ষিণ সুরমায় ২২ ও ওসমানীনগরে ৭২টি বিদ্যালয় রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশাদ বলেন, ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আর বাকিগুলোতে পানি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাইদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বন্যার কারণে জেলায় ৭৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয় রয়েছে ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। কুশিয়ারা অববাহিকার এসব এলাকায় বন্যার পানি কমছেই না।’
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পানি কমলে বাড়তি ক্লাসের মাধ্যমে এই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’
সিলেটে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় গত ২৯ মে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় সিলেটের সীমান্তবর্তী ৬ উপজেলা। ৮ জুনের পর থেকে এই বন্যার পানি কিছুটা কমে আসে।
তবে ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা শুরু হয়। এতে সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায়ই বন্যা দেখা যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ। ২৫ জুন দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমা শুরু হয়।
১ জুলাই থেকে ফের অতিবৃষ্টিতে ঢল নামলে আবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে ফের দেখা দিয়েছে বন্যা
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে: এফএফডব্লিউসি
বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)।
এতে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদীর পানি কিছুটা বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এছাড়া কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে।আরও পড়ুন: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত ১৬
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকতে পারে। একই সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, ভূগাই ও কংশ নদীতে পানি কমছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা কুশিয়ারা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।আরও পড়ুন: সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ