টানা কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে ঢাকার পরিবেশ যেন পুরোনো রূপে ফিরতে শুরু করেছে। বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকদিন ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়ে ছিল। তবে আজ শহরটির বাতাস বাসিন্দাদের জন্য হয়ে উঠেছে ‘অস্বাস্থ্যকর’।
সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ১৫২। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ঢাকা।
যেখানে গতকাল এই সময়ে ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ৬২। ‘ভালো’ না হলেও মোটামুটি কাছাকাছিই ছিল, তবে আজ সকালেই শহরটির বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে উঠেছে।
বৃষ্টির প্রভাবে টানা কয়েকদিন ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়ে ছিল। কখনো কখনো তা ‘ভালো’ হয়ে ওঠার কাছাকাছি চলে গেলেও বৃষ্টি না হওয়ায় আবার বেড়েছে বায়ুদূষণ। মাঝারি থেকে একদিনের ব্যবধানে শহরটির বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে উঠেছে।
ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার যে আরও দুটি শহর দূষিত বাতাসের তালিকার শীর্ষে রয়েছে, সেগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর। এ দুটি শহরে কিন্তু ঢাকার মতো এত অবনতি দেখা যায়নি বায়ুমানের ক্ষেত্রে। ৯৯ স্কোর নিয়ে তালিকার ১০ম স্থানে রয়েছে দিল্লি।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে দিল্লিকে টেক্কা দিয়েছে কলকাতা, ঢাকার চেয়ে ভালো অবস্থানে মুম্বাই
অন্যদিকে, ১১৮ স্কোর নিয়ে তালিকার ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে লাহোর। যেখানে গতকাল ১৪৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল লাহোর। সে তুলনায় আজ লাহোরের বায়ুমানে কিছুটা উন্নতি লক্ষ করা গেছে।
এদিকে, আজ একই সময়ে ১৫৯ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর ছিল উগান্ডার কাম্পালা। ১৫৪ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও চতুর্থ স্থানে ছিল যথাক্রমে চিলির সান্তিয়াগো ও ইন্দোনেশিয়ার জার্কাতা।
সাধারণত, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ এবং ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ বলে গণ্য করা হয়। এরপর এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো— স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।