দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণে প্রশাসনের দায়িত্বশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় তিনি দেশের নদী, পাহাড় ও বন রক্ষায় জেলা প্রশাসকদের কঠোর ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সড়কের পাশে পাহাড়ের ঢালে সংরক্ষিত বন ঘোষিত এলাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ৫১ একরের আবাসন প্রকল্পটি বাতিল করা হবে। এ সময় তিনি বনের জায়গায় স্থাপিত রাজা কাশিমের শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড উচ্ছেদের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এমন দিকনির্দেশনা দেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘শতবর্ষী, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ চিহ্নিত করে সংরক্ষণ করতে হবে, নদীর তালিকা ধরে প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সমুদ্র সৈকত, হাওড়, দ্বীপ, বনাঞ্চলে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: শিল্পখাতকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে স্থানান্তরের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বনাঞ্চল সংরক্ষণে মধুপুর শালবনের সীমানা চিহ্নিতকরণ, অবৈধ দখলমুক্তকরণ ও সংরক্ষিত বন এবং নদী ও জলাশয়ের রেকর্ড সংশোধনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘বালু ও পাথর উত্তোলনের আগে অবশ্যই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে।’
দূষণবিরোধী অভিযানে পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও প্রয়োজনে যৌথ বাহিনীর সহায়তা গ্রহণের ওপরও জোর দেন সৈয়দা রিজওয়ানা। দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন এবং বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণের আহ্বান জানান।
হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, পরিবেশ অপরাধীদের তালিকা প্রণয়ন, পরিবেশ স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকা তৈরি এবং পরিবেশ পদক ও বৃক্ষরোপণ পদকের জন্য ব্যক্তি ও সংস্থা নির্বাচন করার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা।